মহাসম্মানিত সুন্নতী খাদ্যসমূহ- সিরকা,যয়তুন ও কদু
সিরকার আরবি শব্দ خَلٌّ (খ্বল) যা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে। আর
ইংরেজিতে Vinegar (সিরকা)
হিসেবে পরিচিত। সিরকা হল এক ধরণের তরল যা সাধারণত রান্নার কাজে বা খাদ্যে স্বাদ
বাড়াতে ও পচনরোধে ব্যবহার করা হয়। সিরকা ইতিহাসের প্রাচীনতম খাবারসমূহের অন্যতম।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার
মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ
حَضْرَتْ اُمِّ سَعْدٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهَا قَالَتْ دَخَلَ رَسُوْلُ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلٰى حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ
الثَالِثَةِ الصِّدِّيْـقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَاَنَا عِنْدَهَا فَـقَالَ
هَلْ مِنْ غَدَاءٍ قَالَتْ عِنْدَنَا خُبْـزٌ
وَتَـمْرٌ
وَخَلٌّ
فَـقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نِعْمَ
الاِدَامُ الْـخَلُّ اللّٰهُمَّ بَارِكْ فِي الْـخَلِّ
فَاِنَّه كَانَ اِدَامَ الْاَنْبِيَاءِ قَـبْلِي وَلَـمْ يَـفْتَقِرْ بَـيْتٌ
فِيْهِ خَلٌّ.
অর্থ: “হযরত উম্মে সা’দ
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার হুযরা
শরীফ-এ তাশরীফ মুবারক নিলেন। তখন উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীক্বা
আলাইহাস সালাম উনার মুবারক খিদমতে আমি উপস্থিত ছিলাম।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সকালের নাস্তা আছে কি?
উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন,
আমাদের নিকট রুটি, খেজুর ও সিরকা আছে। নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সিরকা
কতোইনা উত্তম খাদ্য। হে মহান আল্লাহ পাক! আপনি সিরকায় বরকত দান করুন। কেননা এটি
আমার পূর্ববর্তী সকল নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের তরকারী ছিল। যে ঘরে সিরকা
থাকবে সে ঘর কখনো দারিদ্রতার মুখ দেখবেনা।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে মাজাহ শরীফ:
কিতাবুত ত্ব‘য়ামাহ্: হাদীছ শরীফ নং ৩৩১৮)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার
মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ
حَضْرَتْ طَلْحَةَ بْنِ نَافِعٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ اَنَّه سَـمِعَ حَضْرَتْ
جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ يَـقُوْلُ اَخَذَ
رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِيَدِيْ ذَاتَ يَـوْمٍ اِلَى
مَنْزِلِه فَأَخْرَجَ اِلَيْهِ فِلَقًا مِنْ خُبْزٍ فَـقَالَ مَا مِنْ اُدُمٍ
فَـقَالُوْا لَا اِلَّا شَىْءٌ مِنْ خَلٍّ قَالَ فَاِنَّ
الْـخَلَّ
نِعْمَ الْاُدُمُ قَالَ حَضْرَتْ جَابِرٌ
رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ فَمَا زِلْتُ اُحِبُّ الْـخَلَّ مُنْذُ
سَـمِعْتُـهَا مِنْ نَّبِيِّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ
طَلْحَةُ مَا زِلْتُ اُحِبُّ الْـخَلَّ مُنْذُ سَـمِعْتُـهَا مِنْ حَضْرَتْ
جَابِرٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ.
অর্থ: “হযরত ত্বলহা ইবনে
নাফি’ রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণিত। তিনি হযরত জাবির ইবনে ‘আবদুল্লাহ
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বলতে শুনেছেন যে, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একবার আমার হাত ধরে স্বীয় হুজরা শরীফ উনার
মধ্যে তাশরীফ মুবারক রাখলেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে কিছু
রুটির টুকরা পেশ করা হলে, তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কোন
তরকারী কি নেই? উনারা বললেন, না। তবে
অল্প কিছু সিরকা রয়েছে। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
সিরকা কতইনা উত্তম তরকারী। হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে এ পবিত্র
হাদীছ শরীফ শুনার পর আমি সিরকা পছন্দ করতে থাকি। হযরত ত্বলহা ইবনে নাফি’
রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমিও হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু উনার কাছে এ কথা শুনার পর হতে সিরকা পছন্দ করতে লাগলাম।” (মুসলিম
শরীফ: কিতাবুশ শারাবাহ: হাদীছ শরীফ নং ৫২৪৮)
বিভিন্ন ধরণের ফলের রস, দানা জাতীয় শস্য অথবা তরল থেকে প্রক্রিয়াজাত করে সিরকা তৈরী করা যায়।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে সরাসরি এলকোহল/শরাব থেকে সিরকা তৈরী নিষেধ করা
হয়েছে। প্রাকৃতিক ইস্ট থেকে যথেষ্ট বাতাসের উপস্থিতিতে হালাল সিরকা তৈরী হয়।
খেজুর থেকে তৈরী সিরকা সারা
মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে বহু প্রাচীন কাল থেকে ঐতিহ্যগতভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সিরকা ৫%
এ্যসিটিক এসিড আছে যা সামান্য টক স্বাদ যুক্ত হয়ে থাকে। রান্নায় স্বাদ-গন্ধ
বাড়ানোর জন্য ইহা সালাদ, মাছ, সব্জী ও আচার তৈরীতে
ব্যবহার করা হয়। এটি anti-microbial (জীবাণু বিরোধী), anti-bacterial (ব্যাকটেরিয়া বিরোধী) এবং anti-fungal (ছত্রাক বিরোধী) বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন।
সিরকার PH মান
২.৪ পর্যন্ত হয়ে থাকে। সিরকায় ৫-২০% পর্যন্ত এ্যসিটিক এসিড (Acetic Acid-CH3COOH), পানি ও অন্যান্য গৌণ রাসায়নিক পদার্থ থাকে যা সুগন্ধিযুক্ত (Flavouring
agent) করতে ব্যবহৃত হয়। সিরকা অল্পমাত্রায় এসিড থাকায় রান্না-বান্না ছাড়াও
বিভিন্ন ওষুধ শিল্পে,
মেডিকেল ও গবেষণার কাজে ব্যবহৃত হয়।
সিরকা হচ্ছে সর্বোত্তম ব্যঞ্জন/সালন/তরকারী: এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ
حَضْرَتْ اُمِّ هَانِئِ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْـهَا قَالَتْ دَخَلَ عَلَيَّ
النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَـقَالَ اَعِنْدَكِ شَيْءٌ؟
فَـقُلْتُ لَا اِلَّا خُبْـزٌ يَابِسٌ وَخَلٌّ
فَـقَالَ هَاتِـيْ مَا اَقْـفَرَ بَـيْتٌ
مِنْ اُدُمٍ فِيْهِ خَلٌّ
অর্থ: “হযরত উম্মে হানী
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একবার আমার
ঘরে এসে জিজ্ঞেস করলেন,
তোমার নিকট খাবার কিছু আছে কি? আমি
বললাম, না। আমার নিকট শুকনো রুটি এবং সিরকা ছাড়া কোন কিছুই নেই। তিনি বললেন, নিয়ে
আসুন, যে ঘরে সিরকা আছে সে ঘর তরকারীশূন্য নয়।” (তিরমিযী শরীফ: কিতাবুত
ত্বয়ামাহ্: হাদীছ শরীফ নং ১৮৪১)
১৬(১) রুটি-সিরকা: এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ
حَضْرَتْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ كُنْتُ
جَالِسًا فِيْ دَارِيْ فَمَرَّ بِـيْ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ فَأَشَارَ اِلَىَّ فَـقُمْتُ اِلَيْهِ فَأَخَذَ بِيَدِيْ فَانْطَلَقْنَا
حَتّٰى اَتَى بَعْضَ حُجَرِ نِسَائِه فَدَخَلَ ثُـمَّ اَذِنَ لِيْ فَدَخَلْتُ
الْـحِجَابَ عَلَيْهَا فَـقَالَ هَلْ مِنْ غَدَاءٍ. فَـقَالُوْا نَـعَمْ.
فَاُتِـيَ بِثَلَاثَةِ اَقْرِصَةٍ فَـوُضِعْنَ عَلٰى نَبِيٍّ فَأَخَذَ رَسُوْلُ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قُـرْصًا فَـوَضَعَهٗ
بَيْنَ يَدَيْهِ وَاَخَذَ قُـرْصًا اٰخَرَ فَـوَضَعَهٗ
بَيْنَ يَدَىَّ ثُـمَّ اَخَذَ الثَّالِثَ فَكَسَرَه بِاثْـنَيْنِ فَجَعَلَ نِصْفَهٗ
بَيْنَ يَدَيْهِ وَنِصْفَهٗ بَيْنَ يَدَىَّ
ثُـمَّ قَالَ هَلْ مِنْ أُدُمٍ. قَالُوْا لَا اِلَّا شَىْءٌ
مِنْ خَلٍّ. قَالَ هَاتُوْهُ فَنِعْمَ الأُدُمُ هُو
অর্থ: “হযরত জাবির
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি
একদা আমার বাড়ীর সীমানায় বসা ছিলাম। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি আমাকে
ইঙ্গিত করলেন অতঃপর আমি উঠে এসে উনার মুবারক খিদমতে উপস্থিত হই। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার হাত ধরলেন। অতঃপর আমরা সামনে
অগ্রসর হলাম। পরিশেষে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একজন উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম
উনার সম্মানিত হুজরা শরীফ উনার মধ্যে তাশরীফ মুবারক নিলেন। অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে প্রবেশাধিকার দিলে তিনি পর্দার
ভিতরে ঢুকলেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, সকালে
নাস্তা আছে কি?
উনারা বললেন, হ্যাঁ। পরে তিন টুকরো রুটি
আনা হলো এবং তা দস্তরখানায় রাখা হলো। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একটি টুকরো নিয়ে উনার সম্মুখে রাখলেন।
অপর একটি নিয়ে আমার (হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার) সম্মুখে
রাখলেন। অতঃপর তৃতীয় টুকরোটি দু’খণ্ড করলেন এবং এটির অর্ধেক উনার সামনে, অবশিষ্ট
অর্ধেক আমার (হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার) সামনে রাখলেন। এরপর
ইরশাদ মুবারক করলেন,
কোন সালুন-তরকারী আছে কি? উনারা বললেন,
সামান্য পরিমাণ সিরকা আছে। তিনি বললেন, তাই নিয়ে আসেন। সেটা কতইনা
উত্তম তরকারী।” (মুসলিম শরীফ: কিতাবুশ শারাবাহ: হাদীছ শরীফ নং ৫২৫০)
উপকারিতা:
ক) বিভিন্ন প্রকার রোগের
চিকিৎসায়:
১. সিরকা খেলে দ্রুত দেহের
ওজন কমে
২. ব্রণ ও রোদে পোড়া ভাব
দূর করে
৩. ক্ষুধা কম লাগে
৪. পেটের চর্বি কমায়
৫. উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি
কমায় এবং হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখতে
৬. ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে
কার্যকরী
৭. হজমে সহায়তা করে,
কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়াসহ অন্ত্রের অন্যান্য রোগে উপকারী।
৮.
২ চা চামচ সিরকা ও ২ চা চামচ গোলাপ পানি দিয়ে ব্রণযুক্ত স্থানে লাগালে ব্রণ দূর
হয়।
খ) বিভিন্ন রান্নায়:
৮. চর্বিযুক্ত খাবার
রান্নার সময় কিছু সিরকা ব্যবহার করলে খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি পায়।
৯. রান্নার সময় গোশতে একটু
সিরকা মিশিয়ে দিলে গন্ধ দূর হয়ে যায়।
১০. আচার তৈরীর সময় সিরকা
ব্যবহার করলে,
সেই আচার অনেকদিন ভালো থাকে; তাতে পচন ধরে না।
১১. রান্নার পর যদি দেখা
যায় ঝাল বেশি হয়েছে,
তখন খানিকটা সিরকা মিশিয়ে দিন। দেখবেন ঝালের তীব্রতা কমে
যাবে।
১২. সিরকা খাবারকে সুস্বাদু
করার পাশাপাশি এর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, এর উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
১৩. আলু রান্নার আগে আপনি
প্রথমে সিরকাযুক্ত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর রান্নার সময় পাত্রে আলু দেয়ার পর, আপনি
পর্যাপ্ত সিরকা দিন। তারপর দেখবেন রান্না করা আলু মুখে দিলে কেমন মিশে যাবে।
১৪. গরু বা ছাগলের গোশত
রান্নার সময় ব্যবহার করলে,
রান্না দ্রুত শেষ হবে। সিরকা ছাড়া রান্না করলে এক্ষেত্রে
যে সময় লাগবে,
সিরকা ব্যবহার করলে সে সময় অর্ধেকে নেমে আসবে।
১৫. রান্নার সময় মাছ বা
গোশতের হাড় নরম হতে সাহায্য করে সিরকা।
১৬. প্রাত্যহিক জীবনের
বিভিন্ন রান্নায়,
আচারে কিংবা সালাদে বানানো ইত্যাদি অনেক কিছুতেই সিরকা
ব্যবহার করা হয়।
১৭. অনেক সময়ই খাবার
ভুলক্রমে পঁচে যায়। পাত্র ধোঁয়ার পরেও এই খাবার পঁচা গন্ধ যেতে চায় না। এই গন্ধ
দূর করতে চাইলে একটি কাপড়ে সিরকা লাগিয়ে তা ঘণ্টাখানেক বাটিতে রেখে দিলে পঁচা
গন্ধ দূর হয়ে যাবে।
১৮. বাসনপত্রে কিংবা
রান্নার প্যানে অনেক সময় তেল চিটচিটে ভাব চলে আসে যা খুবই বিরক্তিকর। কিন্তু
সিরকার মাধ্যমে এই তেল চিটচিটে ভাব দূর করা যায় সহজেই। একটি মাজুনিতে সিরকা দিয়ে
বাসন বা প্যানটি মেজে, ৫ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে নিলে তেল চিটচিটে ভাব দূর হয়ে
যায়।
১৯. মাছের আঁশ ছাড়ানো বেশ
কষ্টসাধ্য কাজ। কিন্তু এই কষ্টসাধ্য কাজটিও সহজ করবে সিরকা। মাছের গায়ে কিছু সাদা
সিরকা ঘষে লাগিয়ে, ৫ মিনিট পর থেকে আঁশ ছাড়ানো শুরু করলে বেশ সহজেই আঁশ উঠে আসে।
২০.
গোশত
জীবাণু মুক্ত ও গোশতের ফ্লেভার তৈরিতে: প্রয়োজনীয় মসলা সিরকা দিয়ে মাখিয়ে ২-২৪ ঘন্টা রেখে রান্না করলে স্বাদ
ও সুগন্ধ বেড়ে যায়।
২১.
ভাঙ্গা
ডিম সিদ্ধ করা সহজ করে:
পানিতে
২ চামচ সিরকা দিয়ে সিদ্ধ করলে ডিমের ভিতরের অংশ সহজে বের হয়।
২২. ফল ও শাক-সবজি ধৌতকরণ: ২ চা চামচ সিরকা ১ লিটার পানির
সাথে মিশিয়ে ভাল করে ধুয়ে ফেললে লেগে থাকা কীট ও বালাই নাশক মুক্ত হয়।
২৩.
সালাদ, সস ও সুপের স্বাদ বৃদ্ধি করতে: সালাদ, সস ও সুপে সিরকা ব্যবহার করলে
স্বাদ, সুগন্ধ
বৃদ্ধি পায় এবং দুর্গন্ধ ও পচন রোধ করে।
২৪. খাবার বাসন-কোসন
পরিস্কার রাখতে:
সিরকা দিয়ে থালা-বাসন মাজলে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন
ও উজ্জ্বল থাকে এবং জীবাণুমুক্ত হয়।
গ) পরিষ্কারক হিসেবে: রান্না ছাড়াও বিভিন্ন গৃহস্থালি কাজে কিংবা কোনো কিছু পরিষ্কার করতেও সিরকা
ব্যবহার করা হয়।
১. রেফ্রিজারেটরকে সজীব রাখতে: ফ্রিজের দেয়াল ও তাকে অর্ধেক
পানি ও অর্ধেক সিরকা মিশিয়ে পরিস্কার করলে ফ্রিজ পরিস্কার ও তরতাজা থাকে।
ঘ) দুর্গন্ধ দূর করার কাজে:
১. ঘামের দুর্গন্ধ
সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া প্রতিহত করে।
২.
দাঁত
উজ্জ্বল ও মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে:
এক
চা চামচ সিরকায় ব্রাশ ডুবিয়ে তা দিয়ে ব্রাশ করলে দাঁত উজ্জ্বল হয় এবং দাঁতের দুর্গন্ধ
দূর হয়।
৩. টুথব্রাশ
জীবাণুমুক্তকরণ:
আধাকাপ পানিতে ২ চামচ সিরকা মিশিয়ে আধা ঘন্টা রেখে অতঃপর
পরিস্কার পানি দিয়ে ধৌত করলে ব্রাশের দুর্গন্ধ দূর হয়।
৪.
বোতলের
দুর্গন্ধ দূর করার কাজে:
সিরকা
দিয়ে ধৌত করলে প্লাস্টিক বোতলের দুর্গন্ধ দূর হয়।
৫.
বাথরুমের
দুর্গন্ধ দূর করতে: পূর্ণশক্তির সিরকা
দিয়ে বেসিন, সিংক ভেজা কাপড়
দিয়ে ধৌত করলে বাথরুমের দুর্গন্ধ দূর হয় ও চকচকে উজ্জ্বল হয়।
ঙ) অন্যান্য:
১.
জামা
কাপড়ের দাগ দূর করতে:
জামা
কাপড়ের দাগ দূর করতে এক টুকরা পরিস্কার কাপড় নিয়ে সিরকায় ভিজিয়ে নিয়ে দাগযুক্ত
জায়গায় ঘষলে দাগ দূর হয়।
২.
কার্পেটের
দাগ দূর করতে: ৪ চামচ সিরকার সাথে
আধা কাপ বেকিং সোডা/খাবার লবণ দিয়ে
পেস্ট তৈরি করে দাগযুক্ত স্থানে ব্রাশ দিয়ে ঘষে একরাত ভিজিয়ে পরের দিন
ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করতে হয়।
৩.
পুরানা
রংয়ের ব্রাশকে নতুন করা:
ব্রাশকে
সিরকার দ্রবণে ১ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে দ্রবণ দিয়ে ধুয়ে পরিস্কার করলে ব্রাশের দুর্গন্ধ
দূর হয় এবং জীবাণু মুক্ত হয়।
৪.
ঘর্মাক্ত
পোষাক ও পায়ের মোজা এবং কাপড়ে দাগ-ময়লা দূর করা: এক কাপ সিরকার সাথে এক বালতি পানি
মিশিয়ে গরম করে তাতে কাপড়গুলো একরাত ভিজিয়ে রেখে সকালে ধুলে দাগমুক্ত, নতুন, ফ্রেশ এবং উজ্জ্বল হবে।
৫. ফুলদানিতে রাখা ফুলের পাপড়ির ঝড়ে পরা রোধে: ২ চা চামচ সিরকার সাথে ১ চামচ
চিনি ও পরিমাণমত পানি মিশিয়ে ফুলদানিতে দিলে ফুলের ঝরে পড়া রোধ হয়।
৬.
গাড়ির
কাচের জানালাতে বরফ জমা প্রতিরোধ
করা: তিন ভাগ সিরকায় এক ভাগ পানি
মিশিয়ে রাখলে দরজা জানালায় বরফ জমতে পারে না।
৭.
মাথার
খুশকি দূর করতে: পানি মিশ্রিত সিরকা দিয়ে মাথার তালু ম্যাসাজ করলে খুশকির জন্য
দায়ী ফাঙ্গাস দূর হয়।
৮.
কাপড়ে
ও চুলে আঠা ও গাম দূর করতে:
সিরকা
হালকা গরম করে নির্দিষ্ট স্থানে কিছুক্ষণ রেখে দিলে আঠা ও গাম দূর হয়। ফার্নিচারে মোম লাগলে ৫০: ৫০ পানির সাথে মিশিয়ে ঘষলে মোমের
দাগ উঠে যায়।
৯.
মাউথ
ওয়াশ হিসাবে: সিরকার
এন্টিব্যাকটেরিয়াল ও এ্যন্টি ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্যের কারণে মুখের জীবাণু ধ্বংস করে। ১
কাপ পানিতে ১ চা চামচ সিরকা ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার দাঁতের
এনামেলের ক্ষতি করতে পারে।
১০. দাঁত উজ্জ্বল করা:
একটি
পরিস্কার কাপড় সিরকাতে ভিজিয়ে ময়লা,
দাগ
যুক্ত দাঁতে ঘষলে দাগ দূর হয় তবে তার জন্য কয়েকবার ব্যবহার করতে হবে। যেহেতু এটি
এসিডিক স্বভাবের, তাই অতিরিক্ত
ব্যবহারে দাঁতের ও এনামেলের ক্ষয় হতে পারে।
খাওয়ার নিয়ম:
১. এক চা চামচ সিরকা ১
কাপ/বাটি পানিতে মিশিয়ে নিতে হবে। চাইলে পানির পরিমাণ বাড়ানো যায়।
২. প্রাথমিকভাবে দিনে একবার
যথেষ্ট। স্বাদের সাথে অভ্যস্থ হয়ে গেলে দিনে তিনবার পর্যন্ত খাওয়া যায়।
৩. ২ টেবিল চামচ সিরকা আধা
কাপ পানির সঙ্গে মিশিয়ে রাতে ঘুমানোর আগে খেলে সকালে রক্তে শর্করা প্রায় ৪ থেকে
৬ শতাংশ কমে।
৪. মাথা ব্যাথায় এক টেবিল
চামচ সিরকা আর কয়েক ফোঁটা মধু এক গ্লাস গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন।
সিরকার বিভিন্ন মিশ্রণ:
* সিরকার সাথে লেবু *
সিরকার সাথে সোডা
* সিরকার সাথে সোডা ও লেবু * সিরকার সাথে
মধু।
সিরকার অনেক স্বাস্থ্য
উপকারিতাও আছে।
১. পিঁপড়ার যন্ত্রণায়
অনেক সময় ফ্রিজের বাইরে খাবার রাখা যায় না। কিন্তু ফ্রিজের খাবার খেতে তেমন ভালো
লাগে না। এই সমস্যা সমাধান করবে সিরকা। একটি স্প্রে বোতলে অর্ধেক পানি এবং অর্ধেক
সিরকা নিয়ে ঝাঁকিয়ে যেখানে পিঁপড়ার আনাগোনা বেশি সেই সকল স্থানে স্প্রে করলে পিঁপড়ার
সমস্যার চিরস্থায়ী সমাধান পাওয়া যাবে।
২. কোনো জিনিসের গায়ে লেগে
থাকা কাগজের স্টিকার বেশ বিরক্তিকর। এটি তুলতে সাহায্য করে সিরকা। একটি পাত্রে
সামান্য সিরকা গরম করে, এই গরম সিরকা একটি পরিষ্কার কাপড়ের সাহায্যে স্টিকারের
গায়ে লাগাতে হবে। স্টিকারটি ভালো করে ভিজে গেলে আস্তে করে টান দিয়ে স্টিকার তুলে
ফেলা যায়।
৩. চামড়ার জিনিস ব্যবহারকারীরা
চামড়ায় সাদা সাদা ছিতি পরার সমস্যায় পড়েন। এই সমস্যারও সমাধান করবে সিরকা। ১/২
টেবিল চামচ সিরকা নিয়ে এতে সামান্য তিসির তেল মিশিয়ে, মিশ্রণটি দিয়ে চামড়ার
জিনিসটি ঘষে নিলে চামড়া নতুনের মতো চকচকে হয়ে যাবে।
৪. যারা বাগান করতে পছন্দ করেন তারা আগাছার উপদ্রবের কথা ভালো করেই জানেন। এই আগাছার উপদ্রব থেকে বাঁচতে চাইলে একটি স্প্রে বোতলে সিরকা নিয়ে আগাছার গোঁড়ায় স্প্রে করে দিলে, দেখা যাবে আগাছা দূর হয়ে গিয়েছে কিছুদিনের মধ্যেই।
১৭.যয়তুন (اَلزَّيْـتُـوْنُ)
মহান আল্লাহ পাক তিনি যয়তুন বিষয়ে সরাসরি শপথ করে ইরশাদ মুবারক করেছেন-
وَالتِّيْنِ
وَالزَّيْـتُـوْنِ
অর্থ: “শপথ তীন এবং যয়তুনের।” (পবিত্র সূরা তীন শরীফ:
পবিত্র আয়াত শরীফ ১)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন- “এটি ত্বক ও চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারি, বার্ধক্যকে দূরে সরিয়ে দেয় এবং পেটের জন্য তেমন শীতল যেমন আগুনের সামনে
বরফ।”
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ
عُمَرَ بْنِ الْـخَطَّابِ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَكُلُوْا الزَّيْتَ وَادَّهِنُـوْا بِه فَاِنَّه مِنْ
شَجَرَةٍ مُبَارَكَةٍ
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ,
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা যয়তুন খাও এবং যয়তুনের তেল মাখো। কেননা এটি একটি মুবারক বৃক্ষ থেকে তৈরী।”
(ইবনে মাজাহ শরীফ: কিতাবুত
ত্ব‘য়ামাহ: হাদীছ শরীফ নং ৩৩১৯; তিরমিযী শরীফ)
উপকারিতা:
প্রসাধনী হিসেবে: ১. চোখের কালোদাগ দূর করে
২. রোদে পোড়া থেকে রক্ষা করে
৩. ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
৪. ত্বকে বয়সের ভাজ পড়া থেকে
রক্ষা করে
৫. চুল পড়া রোধ করে
৬. খুশকির জন্য প্রতিষেধক
৭. হৃদরোগের প্রতিষেধক
৮. ত্বক ফাটা রোধ করে
৯. ত্বকের রুক্ষতা দূর করে উজ্জলতা
বাড়ায়।
খাদ্য হিসেবে : ১. ডায়াবেটিক প্রতিরোধ করে
২. ওজন কমায় ৩. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
১৮.কদু (اَلدُّبَّاءُ) দুব্বা
কদু একটি লতা জাতীয় উদ্ভিদের ফল। হযরত ইউনূস আলাইহিস সালাম তিনি যেখানে মাছের
পেট থেকে বের হয়েছেন সেখানে মহান আল্লাহ পাক তিনি একটি কদু গাছ উদ্গত করে
দিয়েছিলেন।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
فَـنَـبَذْنَاهُ
بِالْعَرَاءِ وَهُوَ سَقِيْمٌ. وَاَنْـبَۢتْـنَا عَلَيْهِ شَجَرَةً
مِّنْ يَّـقْطِيْنٍ
অর্থ: “অতঃপর আমি (হযরত ইউনূস আলাইহিস সালাম) উনাকে এক বৃক্ষলতা শূন্য উপকূলে
(মাছের পেট থেকে) বের করলাম, তখন তিনি ছিলেন মারিদ্বী শান মুবারকে। আমি উনার উপর (ছাউনী হিসেবে) এক
লতাবিশিষ্ট বৃক্ষ (কদু গাছ) উদগত করলাম।” (পবিত্র সূরা ছফফাত শরীফ: পবিত্র
আয়াত শরীফ ১৪৫-১৪৬)
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তরকারী
হিসেবে কদুকে পছন্দ করেছেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে
মুহম্মদ ইবনে জাফর ইবনে হাইয়ান আসবাহানী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিলাদত শরীফ ২৭৪
হিজরী – বিছাল শরীফ ৩৬৯ হিজরী) তিনি উনার কিতাবে এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ
বর্ণনা করেন-
عَنْ حَضْرَتْ
اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُكْثِـرُ مِنْ اَكْلِ الدُّبَّاءِ. فَـقُلْتُ يَا رَسُوْلَ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ! اِنَّكَ تُكْثِرُ مِنْ اَكْلِ الدُّبَّاءِ
قَالَ اِنَّه يُكْثِرُ الدِّمَاغَ وَ يَزِيْدُ فِي الْعَقْلِ.
অর্থ: “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রচুর পরিমাণে কদু তরকারী খেতেন। আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি তো প্রচুর পরিমাণে কদু
তরকারী খাচ্ছেন! নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, কদু মগজের শক্তি বৃদ্ধি করে এবং স্মরণশক্তি প্রখর করে।” (কানযুল উম্মাল ১৫তম খণ্ড ৪৫৫ পৃষ্ঠা:
হাদীছ শরীফ নং ৪১৮০৮; আখলাকুন নবী ওয়া আদাবুহ ৩য় খণ্ড ৩৩৭ পৃষ্ঠা:
হাদীছ শরীফ নং ৬৭০)
অন্য বর্ণনায় বর্ণিত রয়েছে- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস
সালাম উনাকে বলেন যে, তরকারীর সাথে অধিক পরিমাণে
কদু রান্না করুন। কারণ এতে বিষন্ন মনে শক্তি আসে। কদু বুদ্ধি তীক্ষ্ণ করে ও
মস্তিস্ককে শক্তিশালী করে।
আরো বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـي
الْـحَسَنِ مُوْسٰى رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ كَانَ فِيْمَا اَوْصٰى بِهٖ
رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
حَضْرَتْ عَلِيّاً عَلَيْهِ السَّلَامُ اَنَّهُ
قَالَ لَهُ يَا حَضْرَتْ عَلِيُّ عَلَيْهِ السَّلَامُ عَلَيْكَ بِالدُّبَّاءِ
فَكُلْهُ فَاِنَّهُ يَزِيْدُ فِي الدِّمَاغِ وَ الْعَقْلِ .
অর্থ: “হযরত আবুল হাসান মুসা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত কাররামাল্লাহু
ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে যে ওছিয়ত মুবারক করেছিলেন তাহলো, হে হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ
আলাইহিস সালাম! আপনি কদুকে আবশ্যক করে নিন এবং তা আহার করুন। কেননা কদু মগজকে এবং আকলকে
বৃদ্ধি করে।” (কিতাবুল কাফী ১৪/১৫৮)
0 Comments:
Post a Comment