মহাসম্মানিত সুন্নতী খাদ্যসমূহ- গমের (লাল আটার) রুটি,রুটি-গোশত ও রুটি-খেজুর


 
মহাসম্মানিত সুন্নতী খাদ্যসমূহ- গমের (লাল আটার) রুটি,রুটি-গোশত ও রুটি-খেজুর

১৩. গমের (লাল আটার) রুটি (خُبْـزُ الْبُرِّ) খ্বুবযুল বুর্

এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ اَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَادَ رَجُلًا فَقَالَ لَهٗ مَا تَشْتَهِىْ فَقَالَ اَشْتَهِىْ خُبْزَ بُرٍّ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ كَانَ عِنْدَهُ خُبْزُ بُرٍّ فَلْيَبْعَثْ اِلٰى اَخِيْهِ‏ ثُـمَّ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ‏ اِذَا اشْتَهٰى مَرِيْضُ اَحَدِكُمْ شَيْئًا فَلْيُطْعِمْهُ.‏

অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে গেলেন এবং উনাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি আকাঙ্খা করেন? তিনি বলেন, আমি গমের রুটি খেতে চাই। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যাঁর কাছে গমের রুটি আছে তিনি যেন উনার ভাইকে তা পাঠিয়ে দেন। অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনাদের কোন রোগী কিছু খেতে চাইলে উনাকে যেন তা খাওয়ানো হয়।” (ইবনে মাজাহ শরীফ: কিতাবুত ত্বিব: হাদীছ শরীফ নং ৩৪৪০) 

লাল আটার উপকারিতা:

১. দেহের ৭০ শতাংশ আঁশ পূরণ করে,    ২. হজম শক্তি বৃদ্ধি করে,

৩. এন্টি অক্সিডেন্টে ভরপুর যা কলেস্টরেল কমাতে সহায়তা করে,

৪. দেহের চর্বি নিয়ন্ত্রণ করে ও ওজন কমায়, ৫. ক্ষুধামন্দাভাব দূর করে,

৬. রক্তে কলেস্টরেল কমিয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে,

৭. ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে ফলে ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণে সহায়ক,

৮. হাড়ের ক্ষয়রোধ করে হাড়কে শক্তিশালী করে,      ৯. ভিটামিন-বি সমৃদ্ধ,

১০. এ্যাজমা (শ্বাসকষ্ট) সমস্যায় উপকারী,

১১. ম্যাগনেশিয়াম, জিংক ইত্যাদি মিনারেল সমৃদ্ধ যা সুস্থাস্থ বজায় রাখে,

১২. কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ যা সুস্বাস্থ্যের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ,

১৩. ভিটামিন-সি সম্পূরক,

১৪. অনেক লাল আটাতে ক্যান্সার প্রতিরোধক এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে,

১৫. প্রদাহ প্রতিষেধক হিসেবে কার্যকরী।



১৪. রুটি-গোশত

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রুটি-গোশত পছন্দ করতেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ رَبِيْـعَةَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ اَنَّهٗ سَـمِعَ حَضْرَتْ الْقَاسِمَ بْنَ مُـحَمَّدٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ يَقُوْلُ كَانَ فِي حَضْرَتْ بَرِيرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهَا ثَلَاثُ سُنَنٍ اَرَادَتْ حَضْرَتْ اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةُ الصِّدِّيْـقَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ اَنْ تَشْتَرِيَهَا فَـتُـعْتِقَهَا فَـقَالَ اَهْلُهَا وَلَنَا الْوَلَاءُ فَذَكَرَتْ ذٰلِكَ لِرَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَـقَالَ لَوْ شِئْتِ شَرَطْتِيْهِ لَـهُمْ فَاِنَّـمَا الْوَلَاءُ لِمَنْ اَعْتَقَ قَالَ وَاُعْتِقَتْ فَخُيِّرَتْ فِيْ اَنْ تَقِرَّ تَـحْتَ زَوْجِهَا اَوْ تُـفَارِقَهٗ وَدَخَلَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَـوْمًا بَـيْتَ حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ الصِّدِّيْـقَةِ عَلَيْـهَا السَّلَامُ وَعَلٰى النَّارِ بُـرْمَةٌ تَـفُوْرُ فَدَعَا بِالْغَدَاءِ فَأُتِـيَ بِـخُبْزٍ وَاُدْمٍ مِنْ اُدْمِ الْبَـيْتِ فَـقَالَ اَلَـمْ اَرَ لَـحْمًا قَالُوْا بَـلٰى يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلٰكِنَّهٗ لَـحْمٌ تُصُدِّقَ بِهٖ عَلٰى حَضْرَتْ بَرِيرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهَا فَأَهْدَتْهٗ لَنَا فَـقَالَ هُوَ صَدَقَةٌ عَلَيْهَا وَهَدِيَّةٌ لَنَا

অর্থ: “হযরত কাসিম ইবনে মুহম্মদ রহতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত বারীরাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার ঘটনায় সম্মানিত শরীয়ত উনার তিনটি বিধান প্রতিষ্ঠিত হয়। উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাকে ক্রয় করে মুক্ত করতে চাইলে উনার মালিকেরা বলল, ‘ওলা’ (উত্তরাধিকার) আমাদের থাকবে। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বিষয়টি পেশ করলেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনি ইচ্ছে করলে তাদের জন্য ওলীর শর্ত মেনে নিতে পারেন। কারণ প্রকৃতপক্ষে ওলীর অধিকারী হল মুক্তিদাতা। তাকে আযাদ করে ইখ্‌তিয়ার দেয়া হলো, ইচ্ছে হলে পূর্ব স্বামীর সংসারে তাকে থাকতে কিংবা ইচ্ছে করলে তার থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারে। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একদিন উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার হুজরা শরীফ উনার মধ্যে তাশরীফ মুবারক আনলেন। সে সময় চুলার উপর ডেকচি ফুটছিল। তিনি সকালের খাবার আনতে বললে উনার কাছে রুটি ও ঘরের কিছু তরকারী আনা হল। তিনি বললেন, আমি কি গোশ্‌ত দেখিনি?

উনারা বললেনঃ হ্যাঁ (গোশ্‌ত রয়েছে) ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কিন্তু তা ওই গোশ্‌ত যা হযরত বারীরাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনাকে ছদক্বাহ করা হয়েছিল। এরপর তিনি তা আমাদেরকে হাদিয়া মুবারক করেছেন। তিনি বললেন, এটা উনার জন্য ছদক্বাহ, কিন্তু আমাদের জন্য হাদিয়া স্বরূপ।” (বুখারী শরীফ: কিতাবুত ত্বয়ামাহ্: হাদীছ শরীফ নং ৫৪৩০)

১৫. রুটি-খেজুর

এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ يُـوْسُفَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ سَلَامٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ رَاَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَخَذَ كِسْرَةً مِنْ خُبْزِ شَعِيْرٍ فَـوَضَعَ عَلَيْهَا تَـمْرَةً وَقَالَ هٰذِه اِدَامُ هٰذِهٖ.‏

অর্থ: “হযরত ইউসুফ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে আমি যবের এক টুকরো রুটির উপর একটি খেজুর রাখতে দেখেছি। তারপর তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, এটিই এটার সালন-তরকারী।” (আবূ দাঊদ শরীফ: কিতাবুত ত্বয়ামাহ্: হাদীছ শরীফ নং ৩৮৩০)



0 Comments: