১২০ নং- সুওয়াল: আযানে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মোবারক শ্রবণ করে বৃদ্ধাঙ্গুলি চুমো খাওয়া জায়েয আছে কিনা?


সুওয়াল: আযানে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মোবারক শ্রবণ করে বৃদ্ধাঙ্গুলি চুমো খাওয়া জায়েয আছে কিনা? বৃদ্ধাঙ্গুলি চুম্বন করার যে পবিত্র হাদীছ শরীফ বলা হয়, ওটা কি ছহীহ্ হাদীছ শরীফ, না মওজু হাদীছ শরীফ? সম্প্রতি এক ইসলামী মাসিক পত্রিকায় আযানে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মোবারক শুনে অঙ্গুলি চুম্বন দেয়া সম্পর্কে উল্লেখ করেছে যে, এ সম্বন্ধে কোন সহীহ্ হাদীছ শরীফ নেই। আরও উল্লেখ করেছে ফেরদাউস কিতাবে অঙ্গুলি চুমো দিয়ে চোখে বুছা সম্বন্ধে পবিত্র হাদীছ শরীফ রয়েছে। তবে হযরত শাহ্ আবদুল আযীয মুহাদ্দেস দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি  তিনি বলেছেন, এ কিতাবে অনেক মওজু হাদীছ শরীফ রয়েছে।
আরো উল্লেখ্য যে, বৃদ্ধাঙ্গুলি চুম্বন খাওয়া সম্পর্কে কানজুলিবাদ ও ফতওয়ায়ে সুফিয়া গ্রন্থে হাদীছ উল্লেখ করা হয়েছে। তবে আল্লামা শামী  রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একে সহীহ্ মনে করেন না এবং আল্লামা ইবনে জয়নুল আবেদীন রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, বৃদ্ধাঙ্গুলি চুম্বন করা সম্পর্কে সুন্নত বা মোস্তাহাব বলা সম্বন্ধে কোন পবিত্র হাদীছ শরীফ পাওয়া যাবে না।
জাওয়াব: আযানে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মোবারক শ্রবণ করে অঙ্গুলি চুম্বন করে চোখে বুছা দেয়া সুন্নতে ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম। আযানে প্রথম নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মোবারক শুনে চোখে বুছা দেন হযরত আবু বকর ছিদ্দীক আলাইহিস সালাম। যিনি
افضل الناس بعد الانبياء.
অর্থাৎ হযরত নবী-রসূল আলাইহিস সালামগণ উনাদের পরে শ্রেষ্ঠ মানুষ। জেনে রাখা উচিত, পবিত্র হাদীছ শরীফটিকে কেউ জয়ীফ বললেও কেউ মওকুফ বলেছেন। কেউ মওকুফ হিসেবে সহীহ্ বলেছেন। এছাড়াও দায়লামী শরীফ ও মারাকিউল ফালাহ কিতাবে মরফু হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও উল্লেখ্য যে, হযরত আল্লামা ছাকাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত মোহাম্মদ তাহের ফাত্তানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা স্বস্ব কিতাবে মরফু হিসেবে সহীহ্ বলে উল্লেখ করেছেন।
অনেক ছহীহ্ হাদীছ শরীফ উনার কিতাবেও মওজু হাদীছ শরীফ উল্লেখ করা হয়েছে। হ্যাঁ, কোন কোন কিতাবে মওজু হাদীছ শরীফ উনার সংখ্যা বেশী রয়েছে। তবে সে কারণে সেই কিতাবের অন্যান্য সহীহ্ ও হাসান হাদীছ শরীফকে মওজু হিসেবে উল্লেখ করা যাবে না। তাতে হাদীছ গ্রন্থের অনির্ভরযোগ্যতা প্রমাণিত হয় না। অনেক ইমাম মুজতাহিদগণই অনেক কিতাবকে নির্ভরযোগ্য বলে মনে করেননি, কিন্তু অনেক ইমাম মুজতাহিদগণ সেই কিতাবকে নির্ভরযোগ্য বলে প্রমাণ করেছেন। যেমন, সীহাহ সিত্তাহ্ উনার ইমামগণ কেউ কেউ কোন কোন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে সহীহ্ হিসেবে গ্রহণ করেননি অথচ সীহাহ সিত্তাহ শরীফ উনারই অন্য ইমামগণ আবার সেই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে সহীহ্ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। কাজেই কোন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার গ্রহণযোগ্যতা বা অগ্রহণযোগ্যতা সমষ্টিগতভাবে দেখতে হয়। আমলের জন্য ছহীহ্ হাদীছ শরীফ হওয়া শর্ত নয়। তবে ছহীহ্ হাদীছ শরীফ হলে উত্তম। আমলের ক্ষেত্রে পবিত্র হাদীছ শরীফ জয়ীফ হলেও তা গ্রহণযোগ্য (উসুলে হাদীছ)।           আযানে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মোবারক শুনে অঙ্গুলি চুম্বন করে চোখে বুছা দেয়া সম্পর্কে বিস্তারিত ফতওয়া উল্লেখ করা হয়েছে, আমাদের মাসিক আল বাইয়্যিনাতের ১ম বর্ষ ৩য় সংখ্যায়। সেটা সংগ্রহ করে পড়ৃন। সমস্ত সুওয়ালের জাওয়াব পাবেন।
আবা-১২

0 Comments: