একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-১৪২

 

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার স্মরণে-

একজন কুতুবুয্ যামান-উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-

রাতের গভীরে অদৃশ্য স্থান থেকে গায়িবী

আওয়াজে দুআ কবুলের স্বীকৃতি

ওলীয়ে মাদারজাত, মুসতাজাবুদ দাওয়াত, ফখরুল আওলিয়া, আফদ্বালুল ইবাদ, ছাহিবে ইসমে আযম, লিসানুল হক, ছূফীয়ে বাতিন, গরীবে নেওয়াজ, মিছদাক্বে কুরআন ওয়াল হাদীছ, ছাহিবে কাশফ ওয়া কারামত, কুতুবুয যামান, আশিকুল্লাহ, আশিকে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ওয়ালীদে মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম, আওলাদুর রসূল, আলহাজ্ব, শাহ ছূফী সাইয়্যিদুনা হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম তিনি যে ইলমে গইব জানতেন, সে বিষয়টি বুঝতে গিয়ে আমরা আলোচনার অনেক দূর এসেছি। উনার মুবারক উপলব্ধি, অবহিতি ও দৃষ্টিতে দৃশ্য ও অদৃশ্য বস্তু ও বিষয়ের মধ্যে কোন অন্তরাল ছিলো না। অর্থাৎ তিনি ইলমে গইব-এর পরিমিত হিস্যালাভে কামিয়াব ছিলেন। ঈমানের মূল এবং যাবতীয় বিষয়গুলোই গইব-এর অন্তর্ভুক্ত। যাহির, বাতিন ও গইব যার অনুভব, অবহিতি ও দৃষ্টিতে সমান্তরাল হয় না, তিনি মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের দায়িমী তায়াল্লুক নিছবত হাছিলে ধন্য হবেন কী করে? হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার ইলমে গইব-সমৃদ্ধ উচ্চতম মাক্বামের প্রেক্ষিতে রাতের গভীরে অদৃশ্য স্থান থেকে দুআ কবুলের স্বীকৃতিলাভ, এটি অতি সহজ ও স্বাভাবিক বিষয়। সমঝদার মানুষের কাছে বিষয়টি অতি স্বাভাবিক। কিন্তু সাধারণের কাছে দুর্বোধ্য এবং অনেকের কাছে অবোধ্য। তাই এ সম্পর্কে সবিস্তার আলোচনার প্রয়াস।

দীর্ঘ বর্ণনার পর ঘটনার পুনরুল্লেখ প্রয়োজন। মূল বিষয়টি এরকম: আমার (লেখক) বেশ কজন আত্মীয় ইউরোপে থাকেন। তাদের দুজন পৃথকভাবে সেখানে গিয়ে বসবাসের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের অনুমতির অপেক্ষায় দীর্ঘকাল অতিবাহিত করেন। দীর্ঘ অপেক্ষায় অনেক চেষ্টার পরও প্রত্যাশিত অনুমতি পাওয়া যাচ্ছিলোনা। তাদেরকে অনুমতি দেয়া হবে না মর্মে ওই দেশের সরকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছিলো। অবশেষে অবস্থা এতোই প্রকট হলো যে, বাধ্য হয়ে সহসাই শূন্য হাতে তাদের দেশে ফিরে আসতে হবে। জীবনে সচ্ছল হওয়ার স্বপ্নীল আশায় বিপুল টাকা খরচ করে বিদেশে গিয়ে বিফল হয়ে ফিরে আসার যাতনা তাদের জন্য ছিলো দুর্বিষহ। বিদেশ থেকে ফিরে আসার সিদ্ধান্তের প্রায় প্রান্তিক পর্যায়ে বিষয়টি তারা আমাকে জানান এবং ঢাকা রাজারবাগ পাক দরবার শরীফ-এ পঞ্চদশ হিজরী শতকের মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার মুবারক দুআ ও নেক দৃষ্টি প্রার্থনা করেন। তদনুযায়ী দুআর জন্য উনার ক্বদম মুবারক-এ আমি বিনীত আরজু পেশ করি। অতঃপর আমি উনার বুযুর্গ পিতা ওলীয়ে মাদারজাত, মুসতাজাবুদ দাওয়াত, ছাহিবে ইসমে আযম, ছাহিবে কাশফ ওয়া কারামত, আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার মুবারক দুআর জন্য ও সবিনয় প্রার্থনা জানাই। প্রথমে তিনি দুআ করতে অস্বীকৃতি জানান এবং বলেন: আমার বুযূর্গ পুত্র মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম তিনি থাকতে আমার কাছে দুআ চাওয়া কেন? যাও তুমি উনার নিকট দুআ চাও। আমি নিবেদন করি: সাইয়্যিদুনা দাদা হুযূর ক্বিবলা! আমি উনার কাছে পূর্বেই দুআ চেয়েছি। উনার কাছে দুআ চাওয়ার পর আপনার কাছে দুআ চাইতে তো নিষেধ নেই। তিনি বলেন: যাও, দেখবো।

এভাবে কদিন চলে যায়। ইতোমধ্যে একদিন বিকেলে আমি উনার মুবারক ছোহবতে যাই। ক্বদমবুছী করে আমি নির্বাক বসে থাকি। উনার অনুপম চরিত্র মুবারক মাত্রানুপাত জামাল ও জালালের সমন্বিত রূপ হলেও মুবারক গুণ-বৈশিষ্ট্যে প্রাধান্য বিস্তার করেছে উনার জামাল। এক পর্যায়ে তিনি অত্যন্ত জামালী হালতে স্মিতহাস্যে আমাকে বলেন: তোমার প্রার্থীত বিষয়ে ফায়সালা হয়ে গেছে। এ বিষয়ে চিন্তার আর প্রয়োজন নেই। তোমার আত্মীয়-স্বজন যারা ইউরোপে বসবাসের জন্য পারমিশনের অপেক্ষায় ছিলো, সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার তাদেরকে সে পারমিশন দিয়েছে। তাদের পারমিশন হয়ে গেছে। এখন সে দেশে থাকতে তাদের আর কোন অসুবিধা নেই। মনে রেখো, কুল-কায়িনাত এবং ইহকাল ও পরকালের সমুদয় বিষয়ের আদেশদানকারী, ফায়সালাকারী ও বণ্টনকারী হলেন মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা এবং রসূলু রব্বিল আলামীন, মাশুকে মাওলা, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনারা। উনাদের সদয় ইচ্ছায় উনাদের মনোনীত ও লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ এবং মুজাদ্দিদ-উনাদের মুবারক মাধ্যমে সেসব বিষয়গুলো যমীনে বাস্তবায়িত হয়। (চলবে)

আবা-২০২

0 Comments: