ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার স্মরণে-
একজন কুতুবুয্ যামান-উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-
রাতের গভীরে অদৃশ্য স্থান থেকে গায়িবী
আওয়াজে দুআ’ কবুলের স্বীকৃতি
দ্বিতীয় প্রকার হলো: যা
অবহিত হওয়া বা অনুভব করার জন্য দলীল-প্রমাণ রয়েছে। যেমন মহান আল্লাহ পাক-উনার জাত
এবং উনার ছিফতসমূহ। কুরআন শরীফ-এ বর্ণিত
يؤمنون بالغيب (অদৃশ্যে
বিশ্বাস স্থাপন)-এ আয়াত শরীফ দ্বারা আমভাবে দ্বিতীয় প্রকার গইবকেই বুঝানো হয়েছে।
আর খাছভাবে সর্বপ্রকার গইবকে বুঝানো হয়েছে।
গইব যত প্রকারই হোক না কেন, মহান
আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনিই হলেন عالم الغيب (আলিমুল গইব)। অর্থাৎ সর্বপ্রকার গইব বা অদৃশ্য বস্তু বা
বিষয়ের ইল্ম আল্লাহ পাক-উনারই রয়েছে। আল্লাহ পাক তিনি বিনা মধ্যস্থতায়, অর্থাৎ
কারো মাধ্যম ছাড়াই ইল্মে গইব-এর অধিকারী। আর এরূপ ইল্মে গইব সম্পর্কেই মহান আল্লাহ
পাক তিনি কালাম পাক-এ ইরশাদ করেন:
لا يعلم من فى السموت والارض الا الله
অর্থ: “ আসমান-যমীনে আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কারো ‘ইল্মে গইব’ নেই।” (সূরা নমল
: আয়াত শরীফ-৬৫) অর্থাৎ বিনা মধ্যস্থতায় বা কারো মাধ্যম ব্যতীত যে ইল্মে গইব, তা শুধু
আল্লাহ পাক উনারই রয়েছে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি
কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ করেন:
وما اتيتم من العلم الا قليلا
অর্থ: “আমি তোমাদেরকে সামান্যতম ইল্ম দান
করেছি।” (সূরা বনী ইসরাইল: আয়াত শরীফ-৮৫) এ
আয়াত শরীফ-এ বর্ণিত ইল্মের স্বল্পতা আল্লাহ পাক-উনার সাধারণ বান্দাদের ক্ষেত্রে
প্রযোজ্য। আল্লাহ পাক-উনার বিশেষ বা খাছ বান্দা, অর্থাৎ আম্বিয়া আলাইহিমুস
সালাম-উনারা এ হুকুমের বাইরে। বিশেষত সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, ছাহিবুল ওহী ওয়াল কুরআন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনি
মহান আল্লাহ পাক-উনার খাছ হাবীব বা বন্ধু হওয়ার কারণে স্বয়ং আল্লাহ পাক-তিনিই উনাকে
সমুদয় ইল্ম হাদিয়া করেছেন। আল্লাহ পাক তিনি عالم الغيب (আলিমুল গইব)। আর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন,
মাশুকে মাওলা, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হলেন-
مطلع على الغيب
অর্থাৎ “মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার
প্রিয়তম হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনাকে সর্বপ্রকার ইল্ম হাদিয়া করেছেন।” কুরআন শরীফ-এ আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন:
وما هو على الغيب بضنين
অর্থ: “তিনি (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গইব-এর সংবাদ প্রকাশে কৃপণতা করেন না।” এরূপ আরো অনেক আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফ দ্বারা সুস্পষ্টরূপে
প্রমাণিত যে, ছাহিবুল ওহী ওয়াল কুরআন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-
তিনি পরিপূর্ণরূপে ইল্মে গইব-এর অধিকারী।
وما اتيتم من العلم الا قليلا
অর্থ: “আমি তোমাদেরকে সামান্যতম ইল্ম দান
করেছি।” (সূরা বনী ইসরাইল : আয়াত শরীফ-৮৫)
এ আয়াত শরীফ-এ বর্ণিত
ইলম-এর স্বল্পতার হুকুমের বিষয় হাক্বীক্বী নায়িবে নবী, ওয়ারাসাতুল
আম্বিয়া, অর্থাৎ খাছ ওলীআল্লাহ-উনাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য নয়। উনারা এ আয়াত শরীফ-এর
হুকুমের বাইরে। হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে: “আমি উনার চোখ হয়ে যাই,
যা দ্বারা তিনি দেখেন।” সুতরাং
উনার দেখা আল্লাহ পাক প্রদত্ত অসাধারণ শক্তি বলেই সম্পন্ন হয়ে থাকে। তাই উনার গইব
সম্পর্কে অবহিত হওয়াটা বিস্ময়কর কোন বিষয় নয়।
ওলীআল্লাহ উনাদের ইল্মে
গইব সম্পর্কে-
من لدنا علما
অর্থ: “আর আমি আমার পক্ষ থেকে উনাকে, অর্থাৎ
আমার ওলী হযরত খিজির আলাইহিস সালাম-উনাকে ইল্মে লাদুন্নী (গইব-এর ইল্ম) দান করেছি।” এ আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যা ইতোপূর্বে বর্ণনা করা হয়েছে। উক্ত
ব্যাখ্যা সংবলিত অর্থাৎ দলীলভিত্তিক আলোচনা দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, হযরত
আওলিয়ায়ে কিরাম আলাইহিস সালামম-উনারা ইল্মে গইব-এর অধিকারী। (চলবে)
আবা-২০০
0 Comments:
Post a Comment