ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার স্মরণে-
একজন কুতুবুয্ যামান-উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-
রাতের গভীরে অদৃশ্য স্থান থেকে গায়িবী
আওয়াজে দুআ’ কবুলের স্বীকৃতি
“ইলমে গইব” সম্পর্কে
দলীলভিত্তিক সবিস্তার আলোচনায় সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, বাতিন
সম্পর্কে লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহগণ-উনাদের সম্যক অবহিতি, স্বজ্ঞানতা, দৃশ্যমানতা
যাহিরকে প্রত্যক্ষ ও উপলব্ধি করার মতোই। উনাদের দৃষ্টির সম্মুখে একাকার হয়ে থাকা
যাহির ও বাতিন যুগপৎ অবলোকন এবং এর হাক্বীক্বত উপলব্ধিতে উভয়ের (যাহির ও বাতিন)
মধ্যে কোন অন্তরাল নেই। জান্নাত, জাহান্নাম, ফেরেশতা, হাশর, মিজান, পুলসিরাতসহ যাবতীয় বাতিন বিষয় প্রত্যক্ষ না করে এবং এসবের
কার্যকারণ অবহিত না হয়ে এমন স্তরের মাহবুব ওলীআল্লাহগণ-উনারা নিজেদেরকে মু’মিনে কামিল মনে করেন না। উনাদের
কামিয়াবীর প্রথম এবং চূড়ান্ত সোপান হলো সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন,
মাশুকে মাওলা, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সঙ্গে নিগূঢ় তায়াল্লুক-নিসবত এবং দায়িমীভাবে
উনার দিদারে মশগুল থাকা। তুলনাহীন এই দিদার-নিমগ্নতায় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সদয় আদেশ ও নিষেধ মুতাবিক সমুদয়
কাজ নির্বাহ করা।
রসূলু রব্বিল আলামীনা, সাইয়্যিদুল
ক্বউনাইনি, ছাহিবু ক্বাবা ক্বওসাইনি আও আদনা, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সঙ্গে পর্দার অন্তরালবিহীন সন্নিধান লাভে ধন্য
ওলীআল্লাহগণ উনাদের নিকট ইহকাল ও পরকালের সমুদয় বিষয় প্রত্যক্ষকরণ, সেসব
সম্পর্কে অবহিতিলাভ এবং পরিমিত ইলম হাছিল স্বাভাবিক ও সহজ। যদিও অজ্ঞ, বাতিল, ধর্মব্যবসায়ী
দুনিয়ালোভী আলিম ও ভ-রা এ বিষয়ে সন্দেহ পোষণ এবং অবিশ্বাস করে থাকে।
আপেক্ষিক যোগ্যতা অনুযায়ী
সকল লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ-উনাদের সঙ্গে রহমতুল্লিল আলামীন, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার দায়িমী দিদার সংঘটিত হয়। এ
প্রসঙ্গে অগণিত আউলিয়ায়ে কিরাম আলাইহিস সালামম-উনাদের অনেক মুবারক ঘটনা উল্লেখ করা
যায়। হযরত ইমাম আহমদ আবূল আব্বাস মারাসি আলাইহিস সালাম-তিনি উনার নিজের সম্পর্কে
বর্ণনা করেন: “বিগত
চল্লিশ বছর ধরে কখনোই আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার থেকে পৃথক থাকিনি। যদি ক্ষণিকের জন্যও আমি
পর্দার আড়ালে চলে যাই এবং এতে যদি রউফুর রহীম, আকরামুল আউয়ালীন ওয়াল আখিরীন, হাবীবুল্লাহ, হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সঙ্গে আমার দিদার নছীব না হয়, তবে
নিজেকে আমি মুসলমানের অন্তর্ভুক্ত মনে করি না।” সুবহানাল্লাহ!
(হাক্বীক্বতে মুহম্মদী মীলাদে আহমদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বুঝতে কষ্ট
হওয়ার কথা নয়, এ মুবারক দিদার-এর অংশ বিশেষ নিদ্রায় হলেও মূলত এ দিদার প্রকৃতপক্ষে জাগ্রত
অবস্থার। অর্থাৎ সর্বক্ষণের। এমন বেমেছাল তায়াল্লুক-নিসবত মাহবুব
ওলীআল্লাহগণ-উনাদের মহা শান, মর্যাদা, মর্তবা ও মাক্বামাত নির্দেশ করে। এই তায়াল্লুক-নিসবতের
কারণেই ওলীআল্লাহগণ-উনাদের নিকট যাহির, বাতিন, দৃশ্য, অদৃশ্য
যাবতীয় বিষয়ের পর্দা অপসারিত হয়ে যায়।
বিশেষত যিনি রহমতুল্লিল
আলামীন, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার ক্বায়িম
মক্বাম, প্রিয়তম আওলাদ,
আখাছ্ছুল খাছ প্রতিনিধি, তিনি যদি দায়িমীভাবে, অর্থাৎ
নিদ্রা ও জাগরণে খইরুল আলামীন, রউফুর রহীম, ছাহিবুল ওহী ওয়াল কুরআন, হাবীবুল্লাহ, হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সঙ্গে দায়িমীভাবে দিদারে মশগুল না থাকেন, তবে তিনি
ইমামে আ’যম, গাউছুল আ’যম, মুর্শিদে আ’যম, হাবীবে আ’যম, মুজাদ্দিদে আ’যম হবেন কিভাবে? তবে তিনি
যাহির ও বাতিন যুগপৎ দর্শনে এবং যাবতীয় বিষয়ের হাক্বীক্বী অবগতিলাভে পারঙ্গমতালাভ
করবেন কিভাবে?
মূল কথা, সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খাতামুন নাবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সঙ্গে তায়াল্লুক-নিসবতের সোপান অনুপাতে
ওলীআল্লাহগণ-উনাদের মান,
শান,
মর্যাদা ও মাক্বাম নিরূপিত হয়। তায়াল্লুক-নিসবতের মাত্রা
অনুযায়ী অদৃশ্য বিষয়ের দৃশ্যমানতা এবং সেসবের হাক্বীক্বত উপলব্ধির জন্য
ওলীআল্লাহগণের যোগ্যতা হাছিল হয়।
এর বাস্তব উদাহরণ হলেন
পঞ্চদশ হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, মুর্শিদে আ’যম, গাউছুল আ’যম, ইমামে আ’যম, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু
রসূলিল্লাহ, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল
আলম, ছাহিবু সুলত্বানিন নাছীর, হুজ্জাতুল ইসলাম, ওলীয়ে মাদারজাত, খাজীনাতুর
রহমত, লিসানুল উম্মাহ,
সুলতানুল আরিফীন, মাখযানুল মা’রিফাত, মঈনুল
মিল্লাত, ক্বইয়ূমুয্ যামান,
আল জাব্বারিউল আউয়াল, আল ক্ববিউল আউয়াল, তাজুল
মুফাস্সিরীন, রঈসুল মুহাদ্দিসীন,
ফখ্রুল ফুক্বাহা, হাকিমুল হাদীছ, জামিউল
আলক্বাব, রসূলে নো’মা, আওলাদে
রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী ওয়াল কুরাঈশী ওয়াল
হানাফী ওয়াল ক্বাদিরী ওয়াল চিশতী ওয়ান নকশবন্দী ওয়াল মুহম্মদী ওয়াল মাতুরিদী
আলাইহিস সালাম- তিনি। (চলবে)
আবা-২০১
0 Comments:
Post a Comment