ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার স্মরণে-
একজন কুতুবুয্ যামান-উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-
রাতের গভীরে অদৃশ্য স্থান থেকে গায়িবী
আওয়াজে দুআ’ কবুলের স্বীকৃতি
বর্তমান বিষয়ে ইতঃপূর্বে
ওলীআল্লাহগণ-উনারাও যে ইল্মে গইব-এর অধিকারী, সে সম্পর্কে কিঞ্চিৎ আলোকপাত করা
হয়েছে। এর দলীল হিসেবে সূরা কাহফ-এর ৬৫ নম্বর আয়াত শরীফ-এর উদ্ধৃতি দেয়া হয়েছে। ঐ
আয়াত শরীফে আল্লাহ পাক-তিনি ইরশাদ করেন:
وعلمنه من لدنا علما
অর্থ: আর আমি আমার পক্ষ
থেকে উনাকে, অর্থাৎ আমার ওলী হযরত খিজির আলাইহিস সালাম-উনাকে ইল্মে লাদুন্নী (গইব-এর ইল্ম)
দান করেছি।” ইল্মে লাদুন্নী প্রসঙ্গে সূরা
কাহফ- এর ৭১, ৭৪ ও ৭৭ নম্বর আয়াত শরীফে তিনটি সবিশেষ ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। তা হলো- ১.
হযরত খিজির আলাইহিস সালাম-তিনি একটি চলমান নৌকা ছিদ্র করে দিলেন। ২. তিনি একজন
বালককে হত্যা করলেন,
যার চেহারা ছিলো লাবণ্যম-িত এবং সে ছিলো মিষ্টভাষী, ৩. তিনি
একটি ভাঙ্গা দেয়াল মেরামত করে দিলেন।
বিষয়গুলো সংঘটনের কারণ
সম্পর্কে জলীলুল ক্বদর রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম- তিনি প্রশ্ন
করলে জবাবে হযরত খিজির আলাইহিস সালাম- তিনি বললেন: ছিদ্র না করলে ঐ এলাকার যালিম
বাদশা- সে নৌকাটি তার অবৈধ দখলে নিয়ে নিতো। বালকটিকে হত্যা করা সম্পর্কে তিনি
বললেন: বালকটি ছিলো জন্মগতভাবে কাফির। বড় হয়ে সে তার পিতা-মাতাকে নিদারুণ কষ্ট
দিতো এবং তাদেরকে কাফির বানিয়ে ছাড়তো। ভাঙ্গা প্রাচীর মেরামত করা প্রসঙ্গে হযরত
খিজির আলাইহিস সালাম- তিনি বললেন: ঐ প্রাচীরের নিচে গচ্ছিত ছিলো ইয়াতীম বালকদের
গুপ্ত ধনরাশি। প্রাচীরটি মেরামত না করলে গুপ্তধন ভা-ার প্রকাশিত হয়ে পড়তো। অন্য
মানুষেরা ঐ সম্পদ নিয়ে নিতো।
কালামুল্লাহ শরীফ-এ
উল্লিখিত উপরোক্ত তিনটি ভবিষ্য ঘটনা থেকে প্রতিভাত হয় যে, হযরত
খিজির আলাইহিস সালাম- তিনি ইল্মে গইব-এর অধিকারী। আর এ ইল্মে গইব-এর বিষয়টিকেই
আল্লাহ পাক- তিনি উনার পবিত্রতম ভাষায় ইল্মে লাদুন্নী” হিসেবে কালামুল্লাহ শরীফ-এ প্রকাশ করেছেন। হযরত খিজির
আলাইহিস সালাম-উনাকে অনেকে নবী হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকে। তাদের ধারণা আদৌ সঠিক
নয়। তিনি মাশহুর ওলীআল্লাহ হযরত সিকান্দার যুলকারনাইন আলাইহিস সালাম-উনার উযীরে আ’যম ছিলেন। একজন নবী আলাইহিস
সালাম-উনার পক্ষে একজন ওলীআল্লাহ-উনার অধীনে উযীর হওয়া উনার মুবারক শানের খিলাফ।
তাই নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম-উনাদের পক্ষে উযীর হওয়া কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। এতে
সুষ্পষ্টরূপে প্রমাণিত হয় যে, হযরত খিজির আলাইহিস সালাম-তিনি কোন নবী-রসূল নন। মূলত: তিনি
ওলীআল্লাহ। হাদীছ শরীফ-এর মুবারক বর্ণনায়ও প্রমাণ পাওয়া যায় যে, তিনি
বেমেছাল মর্যাদার একজন ওলীআল্লাহ।
নবী-রসূল আলাইহিমুস
সালাম-উনারা সকলেই যে পরিপূর্ণরূপে ইল্মে গইব-এর অধিকারী, সে
বিষয়েতো সূরা জ্বিন-এর ২৬ ও ২৭ নম্বর আয়াত শরীফ এবং সূরা আলে ইমরান-এর ১৭৯ নম্বর আয়াত শরীফসহ আরো
অনেক আয়াত শরীফই তার সুষ্পষ্ট প্রমাণ। একইভাবে ওলীআল্লাহগণ-উনারাও যে ইল্মে গইব-এর
অধিকারী, সে বিষয়ও কুরআন শরীফ-এবং হাদীছ শরীফ-দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত।
মিশকাত শরীফ-এর শরাহ্ মিরকাত
শরীফ”-এ উল্লেখ আছে:
العبد ينقل فى الاحوال حتى يصير الى نعت الروحانية فيعلم الغيب.
অর্থ: যখন কোন বান্দার
আধ্যাত্মিক অবস্থা উন্নত হয়, তখন তিনি রূহানিয়তের গুণে গুণান্বিত হন এবং ‘গইব’ সম্পর্কে অবগতিলাভ করেন।”
يطلع العبد على حقائق الاشياء ويتجلى له الغيب وغيب الغيب
অর্থ: কামিল বান্দা-উনারা
যাবতীয় বস্তুর হাক্বীক্বত (নিগূঢ় তত্ত্ব ও রহস্য) সম্পর্কে অবহিত হয়ে থাকেন এবং
উনাদের নিকট অদৃশ্য বিষয়গুলোও প্রকাশিত হয়ে পড়ে।”
(চলবে)
আবা-১৯৮
0 Comments:
Post a Comment