ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফদ্বালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার স্মরণে-
একজন কুতুবুয্ যামান-উনার দীদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-
রাতের গভীরে অদৃশ্য স্থান থেকে গায়িবী
আওয়াজে দুআ’ কবুলের স্বীকৃতি
মূল যা’ বিষয় তা’ হলো, হাবীবুল
আউয়ালীন ওয়াল আখিরীন,
ছাহিবুল ওহী ওয়াল কুরআন, রউফুর রহীম, মাশুকে
মাওলা, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সঙ্গে
দায়িমী তায়াল্লুক ও নিছবতের তোফায়েলে সৃষ্টির আরম্ভ, প্রবাহ ও পরিণতিসহ কুল-কায়িনাতের
যাবতীয় রহস্যসমূহের হাক্বীক্বতের অবিকল নক্শা লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহগণের নিকট
স্পষ্ট ও দৃশ্যমান হয়ে যায়। এ কারণে অর্থহীন জল্পনা-কল্পনা ও ভিত্তিহীন
ধ্যান-ধারণা উনাদের ধারে কাছেও আসতে পারে না। আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক উনারা পরিপূর্ণরূপে সংরক্ষিত ও হিফাযত
হয়ে যান।
এমন অবস্থায় নৈকট্যপ্রাপ্ত
সূক্ষ্মদর্শী ওলীআল্লাহগণের নিকট অদৃশ্য বিষয় আর অদৃশ্য থাকে না। আল্লাহ পাক এবং
রউফুর রহীম, মাশুকে মাওলা,
নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহগণের অন্তর মুবারকে
সত্যকে এবং সত্যের হাক্বীক্বতকে পরিপূর্ণরূপে ঢেলে দিয়ে থাকেন। অন্তরে উদ্ভাসিত
নূরের আলো উনাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেও প্রকাশিত হয়ে পড়ে। মূল বস্তুর চেহারা দেখায় তখন
আর কোন বাধা-বিপত্তি থাকে না। এমন অবস্থাকেই ওলীআল্লাহগণের প্রকৃত কাশফ্ নামে
অভিহিত করা হয়। মাহবুব ওলীগণের মেধা, মন ও মননসহ সমুদয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ
তখন আল্লাহ পাক এবং ছাহিবুল ইহসান, ছাহিবু সুলত্বানিন নাছীর, ছাহিবু
লাওলাক, রহমতুল্লিল আলামীন,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি-উনার
মুবারক আদেশ-নির্দেশে পরিচালিত হয়।
ওলীআল্লাহগণের পূর্ণতম
কামিয়াবীর এমন অন্তর্গূঢ় স্তর সম্পর্কে হাদীছে কুদসীতে আল্লাহ পাক বলেন:
لا يزال العبد يتقرب الى بالنوافل حتى احبه فاذا احببته كنت سمعه الذى يسمع به كنت بصره الذى يبصر به كنت لسانه الذى ينطق به كنت يده التى يبطش بها وكنت رجله التى يمشى بها وان سالنى لاعطيته ولان استعاذ بى لاعيذنه.
অর্থ: “নফল ইবাদতের দ্বারা বান্দা আমার
এতোটুকু নৈকট্য লাভ করে যে,
আমি তাকে মুহব্বত করি। আর যখন আমি তাকে মুহব্বত করি, তখন আমি
তার কান হই, সে আমার (কুদরতী) কানে শ্রবণ করে। আমি তার চোখ হই, সে আমার
(কুদরতী) চোখে দেখে। আমি তার যবান হই, সে আমার (কুদরতী) যবানে কথা বলে।
আমি তার হাত হই, সে আমার (কুদরতী) হাতে ধরে। আমি তার পা হই, সে আমার (কুদরতী) পায়ে চলে। আর সে
বান্দা যদি আমার নিকট কিছু চায়, তবে সঙ্গে সঙ্গেই আমি তা’ তাকে দিয়ে থাকি এবং যদি সে আমার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে, আমি
নিশ্চয়ই তা’ তাকে দান করি।” (বুখারী শরীফ, ফতহুল বারী, উমদাতুল
ক্বারী)
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম
রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগণ-উনার মর্যাদা, মর্তবা, মান, শান, ইয্যত, ঐতিহ্য
অতুলনীয়। পরবর্তী কারো সঙ্গে বা কোন কিছুর সঙ্গেই উনাদের তুলনা হতে পারে না। উনারা
তুলনার সীমাহীন ঊর্ধ্বে। অন্তর মুবারকের অনুপম পবিত্রতা ও স্বচ্ছতায় হাক্বীক্বতের
অবিকল নক্শা প্রত্যক্ষকরণ সম্পর্কে আশিদ্দাউ আলাল কুফ্ফার হযরত উমর ইবনুল খত্তাব
রদ্বিয়াল্লাহু আনহু সম্পর্কিত অনুধাবনীয় একটি বিশেষ ঘটনা এখানে দৃষ্টান্তযোগ্য।
মদীনা শরীফ থেকে সুদূরে অবস্থিত পারস্যের নাহাওয়ান্দের জিহাদে মুসলিম সেনাপতি এবং
সৈন্যগণকে তিনি খুৎবা দানকালে সুস্পষ্টরূপে দেখেছিলেন এবং নির্দেশ দিয়েছিলেন:
يا سارية الجبل
অর্থাৎ “হে হযরত সারিয়া রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু! পাহাড়ের দিকে লক্ষ্য করুন”। অথচ তিনি তখন মদীনা শরীফ-এ ছিলেন এবং মসজিদে নববী শরীফ-এ
খুৎবা দিচ্ছিলেন। উনার মুবারক নির্দেশ সুস্পষ্টরূপে শুনে মুসলিম সৈন্যদল সতর্কতা
অবলম্বন করায় বিজয় সুনিশ্চিত হয়েছিল। সুবহানাল্লাহ! (চলবে)
আবা-১৯৩
0 Comments:
Post a Comment