একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-১২৯

 

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার স্মরণে-

একজন কুতুবুয্ যামান-উনার দিদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-

রাতের গভীরে অদৃশ্য স্থান থেকে গায়েবী

আওয়াজে দুআ কবুলের স্বীকৃতি

সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম ক্ষমা করায় আমি পরম প্রশান্তি লাভ করলাম। আমার মন ও মননে চেপে থাকা অনড় পাষাণের দুঃসহ ভার নিমিষেই  নেমে গেলো। আমি ভয়ার্ত মনে পুনরায় উনাকে মিনতি জানাই: দাদা হুযূর ক্বিবলা! আপনার বাহ্যিক জালালের অভ্যন্তরে অনুপম জামালের সুষমায় আপনি তো অনুক্ষণ সবাইকে ক্ষমা করে দিয়ে থাকেন। তাইতো মেহেরবানী করে আমাকেও ক্ষমা করে দিলেন। আপনার ক্ষমা না পেলে আমার চলার পথ সুগম হবে কীভাবে? গন্তব্যপানে ধাবমানতায় আমি উদ্দীপনা পাবো কী করে? ক্ষমা পাওয়ার সঙ্গে আপনার দয়া ও দুআও আমার প্রয়োজন। আমি আপনার নেক দুআ চাই, দাদা হুযূর ক্বিবলা!

আমি নিবেদন করতেই থাকি: দাদা হুযূর ক্বিবলা! সেদিন রাতের গভীরে দুআ করার অনুপম মুহূর্তে নেদা হয়, আপনি যেনো আমার জন্য দুআ না করেন। আপনাকে বলা হয়: এখন দুআ করার প্রয়োজন নেই। এতে তো দুআ করার দরজা বন্ধ হয়ে যায়নি। বেয়াদবী ক্ষমা চাই দাদা হুযূর ক্বিবলা! একথা তো বলা হয়নি যে, আমার বিষয়ে আর কখনো দুআ করা যাবে না। তাই আপনার ক্বদম মুবারকে আমি মিনতি জানাই, যদি দয়া করে আমার জন্য আবারো দুআ করতেন দাদা হুযূর ক্বিবলা! আমার বিনীত নিবেদনে তিনি নির্বাক থাকেন। একটিও কথা বলেন না। উনার কিছু না বলার তাৎপর্য আমি বুঝিনি। বুঝার কথাও নয়। তবে এতোটুকু আমার মনে হয়েছে যে, মুবারক স্বভাব-সঞ্জাত কোমলান্তকরণময়তায় সম্ভবতঃ তিনি আমার প্রতি দয়ার্দ্র হবেন। পুনরায় আমার জন্য দুআ করবেন।

ক্বদমবুছী করে সেদিনের মতো আমি ওলীয়ে মাদারজাদ, মুস্তাজাবুদ্ দাওয়াত, আফ্যালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, ফখ্রুল আউলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, কুতুবুয্ যামান, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা শাহ ছূফী সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম-উনার মুবারক ছোহ্বত থেকে চলে আসি। তিনি পুনরায় আমার জন্য নেক দুআ করবেন, এ প্রত্যাশায় আমি আশ্বস্ত হতে চেষ্টা করি। কিন্তু অতলান্ত মনোবেদনা অনুক্ষণ আমাকে দগ্ধ করতে থাকে। এভাবে নিয়মিত উনার মুবারক ছোহ্বতে বসি। প্রতিদিনই নছীহত শুনি। কতো কথা বলি! কতো কিছুই জানতে চাই! বেয়াদবীর ভয়ে মূল বিষয়ে কিছু বলা থেকে আমি নিশ্চুপ থাকি। মনে মনে ভাবতে থাকি, আবার কখন সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার ক্বদম মুবারকে আমার আরজি পেশ করবো, যখন তিনি নারাজ হবেন না।

নিয়মিত ছোহ্বত ইখ্তিয়ার-উনারপর্যায়ে আমার স্থূল বিবেচনায় একদিন মনে হলো, উনার তবিয়ত অত্যন্ত জামালী। নিত্যদিনের মতো আমি ক্বদমবুছী করলাম।  তিনি মেহেরবানী করে আমার কুশল জানতে চান। আমি নিবেদন করি: দাদা হুযূর ক্বিবলা! আপনার নেক দুআয় ভালো আছি। তবে সমস্যা দূর হয়নি। অতঃপর সবিনয়ে প্রার্থনা জানাই: সদয় অনুমতি পেলে আপনার মুবারক খিদমতে আমি কিছু বলতাম, দাদা হুযূর ক্বিবলা! তিনি অনুমতি দিলেন। আমি পুনরায় দুআ প্রার্থনা করি। আমার প্রার্থনায় কথা না বলে কিছুক্ষণ তিনি নীরব থেকে মৃদু হাসেন। আমার দিকে লক্ষ্য করে তিনি বলতে থাকেন: যাবতীয় বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনারসদয় ইচ্ছা ও ইহ্সানই চূড়ান্ত।

আমি সাধ্যমতো বিনম্রভাবে এবং আগ্রহভরে সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনারমুবারক নছীহত শুনতে থাকি। তিনি বলতে থাকেন: আল্লাহ পাক এবং রহমতুল্লিল আলামীন, রউফুর রহীম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনারসদয় ইচ্ছা এবং ফায়সালার বিরুদ্ধে মাহবুব ওলীগণ কখনোই কোন বিষয়ে দুআ করেন না। দানকারী আল্লাহ পাক এবং নিয়ামত বণ্টনকারী মাশুকে মাওলা, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনারসঙ্গে ওলীআল্লাহগণ অনুক্ষণ একমত পোষণ করে থাকেন। (চলবে)

আবা-১৮৯

0 Comments: