ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্
দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ,
ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল,
আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার স্মরণে-
একজন কুতুবুয্ যামান-উনার দিদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-
রাতের গভীরে অদৃশ্য স্থান থেকে গায়েবী
আওয়াজে দুআ’ কবুলের স্বীকৃতি
বিলম্ব না করে আমি আমার দাদা হুযূর ক্বিবলা ওলীয়ে মাদারজাদ,
ফখ্রুল আওলিয়া, লিসানুল হক্ব, মুস্তাজাবুদ্ দা’ওয়াত, অওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা
হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম-উনার কাছে ছুটে গেলাম।
কদমবুছী করলাম। সদয় অনুমতি নিয়ে সমস্যার বিষয় সবিস্তার জানালাম এবং তা অনুকূল সমাধানে
দুআ’র জন্য বিনীত নিবেদন পেশ করলাম। জালাল ও জামালের মাত্রানুপাত
সমন্বয়ে অনুপম ব্যক্তিত্ব মুবারকের অধিকারী হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম
প্রত্যয়ী কণ্ঠে বললেন: “দুআ’র জন্য আমি কেন? এ জন্য আমার কাছে কেন এলে? তুমি মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম-উনার কাছে যাও। সকল সমস্যার সমাধান তো সেখানেই।” একটু থেমে অতঃপর তিনি বললেন: “দুনিয়ার জন্য তুমি এতো পেরেশান
কেন? দুনিয়া হাছিলের জন্য এতো কোশেশ এবং দুআ’ চাওয়া কেন? দুআ’ ও কোশেশতো কেবল আল্লাহ পাক-উনার উনারপ্রিয়তম হাবীব, মাশুকে মাওলা, নবীগণের
নবী, রসূলগণের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সন্তুষ্টি লাভের
জন্য হওয়া বাঞ্ছনীয়।”
পুনরায় কদম মুবারক স্পর্শ করে আমি নিবেদন করলাম: “দাদা হুযূর ক্বিবলা! বেয়াদবী ক্ষমা চাই। আপনার মুজাদ্দিদ আ’যম সন্তান, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, কুতবুল
আলম, হুজ্জাতুল ইসলাম, সুলত্বানুল আরিফীন, ক্বায়িম মক্বামে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম-উনার কদম মুবারকে এ বিষয়ে দুআ’র জন্য আমি সবিনয় আরজু পেশ করেছি।
আমি আপনার দুআ’ও চাইছি। কারণ, আপনি কামিয়াবীর
অত্যুঙ্গ সোপানে অধিষ্ঠিত নৈকট্যধন্য বেমেছাল ওলীআল্লাহ। আপনি মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম-উনার বুযুর্গ পিতা, আপনি মুসতাজাবুদ, দা’ওয়াত। তাই আপনার নেক দুআ’ও আমি চাই।” আমি বলতে থাকলাম: “দাদা হুযূর ক্বিবলা! বেয়াদবী ক্ষমা
চাই। দুনিয়া থেকে বিরাগ হওয়া সম্পর্কে আপনি যে নছীহত করলেন, তাতো আপনার মতো ওলীআল্লাহ-উনার
ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আমি দুনিয়াদার মানুষ। দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করা আমার পক্ষে এতোই কী
সহজ ও সম্ভব? দুনিয়ার চেয়ে আখিরাত যে উত্তম, তা বিশ্বাস করে মুখে বললেও আখিরাতের স্থায়িত্ব
ও তাৎপর্যের গুরুত্ব হাক্বীক্বীভাবে আমার উপলব্ধিতে তো এখনো আসেনি। তবে মুজাদ্দিদে
আ’যম আলাইহিস সালাম এবং আপনার মুবারক ছোহ্বতের ওছীলায় একসময়
দুনিয়া বিরাগী মানসিকতায় আমি আল্লাহ পাক এবং উনারপ্রিয়তম হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং আমার প্রাণ প্রিয়তম মুর্শিদ ক্বিবলা, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম-উনার পরিপূর্ণ সন্তুষ্টি হাছিলের লক্ষ্যে মনোযোগী হতে
পারবো ইনশাআল্লাহ। এ লক্ষ্যে আপনার নেক দৃষ্টি চাই দাদা হুযূর ক্বিবলা।”
আমার কথায় তিনি কতটুকু খুশি অথবা নারাজ হলেন তা আমি বুঝিনি।
কারণ, ইল্হাম, ইল্কা এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সার্বক্ষণিক মুবারক আদেশ নির্দেশ ও
সদয় ইহ্সানে পরিচালিত নৈকট্যধন্য ওলী আল্লাহগণের ধ্যান-ধারণা, প্রয়োজন, আয়োজন, কথা
ও কাজ উলব্ধি করা আমার পক্ষে কেবল দুঃসাধ্য নয়, একান্তই অসাধ্য। আমি কদম মুবারক ধরে
নিশ্চুপ বসে থাকলাম। দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার মুবারক নছীহতে আমার
অন্তহীন অযোগ্যতা ও অবাধ্যতার দুঃসহ ভাবনারাশি এ মুহূর্তে আমার মনকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে।
ভাবছি ক্ষণিক জীবনের অবিরাম প্রবহমান মহামূল্যবান সময়গুলোর মুহূর্তকালও আমি নেক কাজে
ব্যয় করতে পারিনি।
ভাবান্তর ঘটলো এক পর্যায়ে যখন আমার মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস
সালাম সম্পর্কে দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি বললেন: “আল্লাহ পাক এবং উনারপ্রিয়তম হাবীব, রহমতুল্লিল আলামীন, রউফুর রহীম হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক খাছভাবে মনোনীত এবং গায়েবী মদদ প্রাপ্ত
মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম-উনার কাছে দুআ’ চাওয়ার পর অন্য কারো কাছে দুআ’ চাওয়ার প্রয়াজন আর অবশিষ্ট থাকে
না। তিনি আল্লাহ পাক এবং উনারপ্রিয়তম হাবীব, আকরামুল আওয়ালীন ওয়াল আখিরীন, মাশুকে মাওলা
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সার্বক্ষণিক খাছ লক্ষ্যস্থল। তিনি ওলীগণের
ওলী, তিনি মুজাদ্দিদগণের মুজাদ্দিদ। তিনি খাজিনাতুর রহমত, তিনি মুস্তাজাবুদ্ দা’ওয়াত। তিনি ছাহিবে সুল্ত্বানিন নাছীর। জগৎ সংসারের জটিল ও দুরূহ সব সমস্যা
এবং গূঢ় তত্ত্ব ও যাবতীয় রহস্যপূর্ণ কার্যকলাপ মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম-উনার মুবারক ওছীলায় বিচিত্র ও বিস্ময়করভাবে সম্পাদিত
ও ফায়সালা হয়।
কাজেই তিনি দুআ’ করার পর একই বিষয়ে আবার অন্যের দুআর প্রশ্ন অবান্তর।” (চলবে)
আবা-১৮৫
0 Comments:
Post a Comment