ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফদ্বালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার স্মরণে-
একজন কুতুবুয্ যামান-উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-
রাতের গভীরে অদৃশ্য স্থান থেকে গায়িবী
আওয়াজে দুআ’ কবুলের স্বীকৃতি
সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার মুবারক সন্তান, ওলীয়ে মাদারজাদ, ক্বায়িম মক্বামে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুশ্ শরীয়ত ওয়াত্ তরীক্বত, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, হুজ্জাতুল ইসলাম, ছাহিবু সুল্ত্বানিন নাছীর, আওলাদুর রসূল, আমার মুর্শিদ ক্বিবলা, সাইয়্যিদুনা মুর্শিদে আ’যম আলাইহিস সালাম-উনার মুবারক ওসীলায় উপরোক্ত সূক্ষ্ম বিষয়গুলোর উপর আমার বিশ্বাস অকাট্য। মহান আল্লাহ পাক-উনার সদয় ইচ্ছা এবং নূরে মুজাস্সাম, মাশুকে মাওলা, মুত্তালা আলাল গাইব, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সঙ্গে দায়িমী তায়াল্লুক ও নিস্বতের অবিচ্ছেদ্য সম্পৃক্ততায় মাহবুব ওলীগণও অদৃশ্য জগতের বিচিত্র সংবাদ ও রহস্যাবলী অবহিত হয়ে থাকেন। অর্থাৎ ইলমে গাইব-উনার পরিমিত হিস্যা হাছিল করে থাকেন। এ সম্পর্কেও আমার বিশ্বাস অটুট। তবুও সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম আমাকে যে আগাম সংবাদ জানালেন, সে বিষয়ে আমার জানতে ইচ্ছে করে।
আমার জানার ইচ্ছের
পূর্ণতার জন্য সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার ক্বদম
মুবারকে আরজি পেশ করতে হবে। যদি তিনি দয়া করে জানান। এ বিষয়ে মনে মনে আমি ভাবতে
থাকি, আল্লাহ পাক-উনার মাহবুব ওলীগণের অতুলনীয় মান, শান, মর্যাদা, মর্তবা, ইয্যত, ঐতিহ্য ও
মাক্বামত অজ্ঞরা জানে না,
বুঝে না এবং বিরোধীরা মানেনা। সাধারণ মুসলমানগণের প্রায়
সবাই বিষয়টি মেনে থাকে এবং বিশ্বাসও করে। এই মানা এবং বিশ্বাস তাদের জ্ঞান বা
অভিজ্ঞতাপ্রসূত নয়। অকৃত্রিম মুহব্বত এবং অনাবিল আন্তরিকতার কারণেও নয়।
কালামুল্লাহ শরীফ এবং হাদীছ শরীফে ওলীআল্লাহগণের মর্যাদা, মর্তবা, বৈশিষ্ট্য, নৈকট্য ও
সূক্ষ্মদর্শিতার কথা বহু আঙ্গিকে বহুবার উল্লেখ করা হয়েছে। হাদীছে কুদসীতে আল্লাহ
পাক ইরশাদ করেন,
من عاد لى وليا فقد اذنته بالحرب
অর্থ: “যে ব্যক্তি আমার ওলীর বিরুদ্ধাচরণ
করে বা বিদ্বেষ পোষণ করে,
আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করি।” নাঊযুবিল্লাহ! (বুখারী শরীফ)। বুঝে-শুনে না হলেও অন্তত ঈমান
বা মুসলমানিত্ব হিফাযতের লক্ষ্যে ওলীআল্লাহগণের বিরোধিতা থেকে সাধারণ মুসলমান বিরত
থাকে। সম্যক উপলব্ধিতে না হলেও ওলীআল্লাহগণের প্রতি কেবল এতোটুকু স্বীকৃতি প্রদান
ও সম্মান প্রদর্শনও তাদের জন্য অপরিসীম ফযীলতের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ওলীআল্লাহগণের
প্রতি ধর্মব্যবসায়ী উলামায়ে ছূ’দের অবিশ্বাসের বিষয়টি এখানে প্রাসঙ্গিক নয়। কারণ, তারা তো
মুসলমান থেকেই খারিজ। হাদীছ শরীফের ভাষায় তারা দুনিয়ার নিকৃষ্ট জীব এবং পরকালে
জাহান্নামের স্থায়ী ইন্ধন।
মুহব্বত ও মা’রিফাত হাছিলের অবিরাম প্রয়াস ও
আয়াসসাধ্য আয়োজন এবং সর্বোপরি আল্লাহ পাক ও উনার প্রিয়তম হাবীব, আকরামুল
আউয়ালীন ওয়াল আখিরীন,
মাশুকে মাওলা, নূরে মুজাস্সাম, হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার উদ্দিষ্ট ব্যবস্থায় ওলীআল্লাহগণ
কামিয়াবীর চূড়ান্ত সোপানে উপনীত হয়ে থাকেন। এমন অধিষ্ঠানে উনাদের দৃষ্টি মুবারকের
সম্মুখে কোনরূপ প্রতিবন্ধকতা থাকে না এবং উনাদের অন্তর মুবারক অতি মসৃণ দর্পণের
চেয়েও অধিকতর মসৃণ ও উজ্জ্বলতর হয়ে থাকে। তখন লওহো মাহফূজের সঙ্গে উনাদের অনুভব, অনুভূতি, যাবতীয়
কর্মপ্রয়াস, কর্মপ্রক্রিয়া ও কর্মনিযুক্তির একধরনের সেতুবন্ধন রচনা হয়ে যায়। নিগূঢ়
নৈকট্যপ্রাপ্ত ওলীআল্লাহগণকে তখন নিয়ামতরূপ লক্ববদানকারী আল্লাহ পাক এবং ঐ লক্বব
বণ্টনকারী সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাযিনাতুর রহমাহ, রউফুর
রহীম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম “ছাহিবু কুন ফাইয়াকুন” লক্বব দানে বিভূষিত করে থাকেন। (চলবে)
ক্ষেত্রভেদে ফেরেশতাকুলের
সম্মান ও মাক্বামের স্তর অতিক্রমকারী সূক্ষ্মদর্শী ওলীআল্লাহগণের মুবারক দৃষ্টি
সীমানায় এবং হৃদয়ের গভীরে কুল মাখলূক্বের যাবতীয় কার্যকলাপ এবং ইহকাল ও পরকালের
রহস্যপূর্ণ সকল বিষয়কর্ম,
কর্মপ্রবাহ অবলীলায় অনুক্ষণ প্রতিবিম্বিত হতে থাকে। ঐ
সোপানে অধিষ্ঠিত ওলীআল্লাহগণ বহুবিধ গুপ্তভেদ অবহিত হয়ে থাকেন। সাধারণের জন্য
হলাহলতুল্য বিধায় বিদগ্ধজন ছাড়া সেসব উনারা কারো কাছেই প্রকাশ করেন না। সাধারণ
ঈমানদারদের জন্য বিষয়গুলো জানা জরুরীও নয়। তবে অবিচ্ছেদ্য নৈকট্য ও সংযোগলাভকারী
ওলীআল্লাহগণের অনুসন্ধিৎসা নিবারণ এবং ইত্মিনানসম্ভূত বিশ্বাসের পরিপক্কতা সাধনের
লক্ষ্যে ফেরেশ্তা,
জান্নাত, জাহান্নাম, হাশর, নশর,
পুলসিরাত, মীযান ইত্যাদি গুপ্ত বিষয়সমূহ দেখা এবং এসবের হাক্বীক্বী
অবস্থান ও অবস্থা জানা উনাদের সদয় বিবেচনায় আবশ্যিক হয়ে পড়ে। কামিয়াবীর
মাত্রানুপাতে আল্লাহ পাক উনাদেরকে সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি প্রত্যক্ষ করিয়ে থাকেন এবং
ওসবের হাক্বীকী অবস্থা অবহিতও করে থাকেন। এটিই উনাদের মু’মিনে কামিল হওয়ার পরিণত স্তর।
(চলবে)
আবা-১৯১
0 Comments:
Post a Comment