১৫৮ নং- সুওয়াল : দ্বীন ইসলাম উনার অনুসারীরা শুধুমাত্র চার মাযহাব মানবে, না হযরতের (নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উনার পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অর্থাৎ সমস্ত কার্যকলাপ মানবে? যদি কেউ মাযহাব অস্বীকার করে তাহলে সে কি কাফির হবে?


সুওয়াল : মাসিক মদীনা জুলাই-১৯৯৪ ইং সংখ্যায় নিন্মোক্ত প্রশ্ন-উত্তর চাপা হয়-
প্রশ্ন: দ্বীন ইসলাম উনার অনুসারীরা শুধুমাত্র চার মাযহাব মানবে, না হযরতের (নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উনার পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অর্থাৎ সমস্ত কার্যকলাপ মানবে? যদি কেউ মাযহাব অস্বীকার করে তাহলে সে কি কাফির হবে?
উত্তর: মাযহাব মান্য করা ফরয নয়, কুরআন শরীফ উনার হুকুম মান্যকরা ফরয। হযরতের সুন্নাহ বা কার্যকলাপ মান্যকরা জরুরী। কেউ মাযহাব অস্বীকার করলে সে কাফির হবেনা। মাযহাব এবং কুরআন শরীফ, সুন্নাহ শরীফ বা হযরতের সমস্ত কার্যকলাপ পরস্পর প্রতিদ্বন্দ্বী কোন বিষয় নয়। কুরআন শরীফ উনার নির্দেশ এবং হযরতের (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওযা সাল্লাম) উনার জীবনের কার্যকলাপ সঠিকভাবে মান্য করার পন্থাটা কি শুধু সেটুকু ব্যাখ্যা করাই মাযহাবের কাজ। পবিত্র কোরআনেই স্পষ্ট ভাষায় বলে দেয়া হয়েছে, “তোমরা যা জান না [বা বুঝতে সমর্থ্য না হও, সে বিষয়ে যাঁরা জানেন, উনাদের কাছ থেকে জেনে নিও। অন্যদিকে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এ ব্যাপারে বিশেষ তাগিদ দেয়া হয়েছে যে, যাঁরা জানেন, উনারা যেন যারা জানে না, তাদের জানিয়ে দেন। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার উক্ত আয়াত শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার তাকিদের ভিত্তিতেই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনার যুগ থেকে অপেক্ষাকৃত কম জানা লোকেরা উম্মতের জ্ঞানীগুণী লোকদের নিকট থেকে জেনে নেয়ার রেওয়াজ প্রচলিত হয়েছে। হযরত ছাহাবাযে কিরাম উনাদের যুগ শেষ হওয়ার পরবর্তী সময়ে হিজরী দ্বিতীয় শতকে দ্বীন ইসলাম বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র সুন্নাহ শরীফ মন্থন করে তাদের জন্য করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়াদির বিস্তারিত ব্যাখ্যা সংকলিত হয়, যার নাম হয়েছে ফেকাহশাস্ত্র। ফেকাহশাস্ত্র যাঁরা সংকলন করেছেন উনাদের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের ভিত্তিতেই এক একটি মাযহাবের সৃষ্টি হয়েছে। প্রসঙ্গত দাড়ির মাসয়ালাটিই ধরা যাক। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে, তোমরা মুশরিক ও অগ্নিউপাসকদের অনুসরণ না করে দাড়ি লম্বা কর এবং গোঁফ ছেটে রাখ।
          এই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার পরিপ্রেক্ষিতেই দাড়ি রাখা ওয়াযিব সাব্যস্ত হয়েছে। এখন প্রশ্ন দাড়ি; কতটুকু লম্বা রাখতে হবে? হযরত ইমাম আবু হানিফার রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অভিমত হচ্ছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যতটুকু লম্বা রাখতেন, ততটুকু লম্বা রাখতে হবে। বর্ণনা প্রমাণ করে যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক মুঠ পরিমাণ লম্বা রাখতেন এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারাো তাই অনুসরণ করেছেন। হযরত ইমাম আহমদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অভিমত হচ্ছে, দাড়ি বাড়াতে বলা হয়েছে। কিন্তু কতটুকু লম্বা করতে হবে, তার উল্লেখ যেহেতু পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নেই সেমতে কিছুটা লম্বা রাখলেই উক্ত নির্দেশই পালিত হয়ে যাবে।
লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, দাড়ি রাখতে হবে এবং রাখা ওয়াজিব, এ ব্যাপারে কারো কোন মত পার্থক্য নেই। কারণ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সুস্পষ্টবাক্য দ্বারা তা প্রমাণিত হয়েছে। কতটুকু লম্বা রাখতে হবে, দুটি মত বা মযহাবের সৃষ্টি হয়েছে। মোটকথা, মযহাবের যে পার্থক্য তা পবিত্র কুরআন শরীফ উনার আদেশ-নিষেধ মুবারক বা পবিত্র হাদীছ শরীফ বাক্যের মধ্যে নয়, ব্যাখ্যা ও মর্মঅনুধাবনের পার্থক্যের ভিত্তিতে হয়েছে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, মাযহাব  পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনার পাশাপাশি কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বিশেষের সৃষ্ট কোন নিয়ম-কানুন নয়, পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্য-বিশ্লেষণের ভিত্তিতেই গড়ে উঠা আইন-কানুন মাত্র।
          এটা কতটুকু শরীয়তসম্মত, জানায়ে বাধিত করবেন?


জাওয়াব:  উক্ত পত্রিকার উত্তর হতে তিনটি বিষয়ে ভুল বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয়- প্রথমতঃ মাযহাব মান্য করা ফরজ নয়। দ্বিতীয়তঃ ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল  রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অভিমত। তৃতীয়তঃ  মাযহাবের যে পার্থক্যতা পবিত্র কুরআন শরীফ উনার আদেশ-নিষেধ মুবারক বা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বাক্যের মধে নয়, ব্যাখ্যা ও মর্ম অনুধাবনের পার্থক্যের ভিত্তিতে হয়েছে।
          এখন উল্লিখিত বিষয়সমূহের বিশ্লেষনে ইমামগণ এবং মুহাক্কিক ও মুদাক্কিক আলেমগণ উনাদের অভিমতসমূহ নিম্নোক্ত বর্ণনা করা হলো-
প্রথমতঃ উক্ত মদীনা পত্রিকায় বলা হয়েছে, মাযহাব মান্য করা ফরজ নয়। অথচ ইমামগণ বলেন-
১। হযরত ইমাম ফখরুদ্দিন রাজী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “ইসলামী শরীয়ত উনার নতুন বিষয়সমূহে সাধারণদের জন্য আলেমগণকে অনুসরণ করা ওয়াজিব। (তাফসীরে কবীর)
২। মুছাল্লাম কিতাবে আছে, “যে ব্যক্তি মুজতাহিদে (মতলক নয়) যদিও সে আলেম, তথাপি তার জন্য তাকীদ অর্থাৎ কোন এক মাযহাবের অনুসরণ করা ফরজ।
৩। হযরত মুল্লা জিয়ূন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “সাধারণদের জন্য আলেমগণকে এবং আলেমদের জন্য মুজতাহিদগণ উনাদেরকে অনুসরণ করা ওয়াজিব। তিনি আরো বলেন, “চার  মাযহাবের কোন একটাকে অনুসরণ করা ওয়াজিব। (তাফসীরে আহদিয়াত)
‌৪। হযরত আল্লামা জালালুদ্দিন মহলি রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “যারা ইজতিহাদে (মতলক্ব-এর ক্ষমতা রাখে না, তাদের জন্য কোন একজন ইমাম উনার মাযহাবকে অনুসরণ করা ওয়াজিব। (জামেউল জাওয়ামে)
৫। হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “কোন এক  মাযহাবের অনুসরণ করা ওয়াজিব। (ইহ্ইয়াউল উলুম)
          এছাড়াও হযরত মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আল মালুমা কিতাবে, হযরত জালালুদ্দিন সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি যাজিযুল মাযাহেব কিতাবে, হযরত আল্লামা বাহরূল উলুম  রহমতুল্লাহি আলাইহি তাহির কিতাবে, হযরত আল্লামা ইবনে আব্দুন্ নূর  রহমতুল্লাহি আলাইহি হারী কিতাবে, হযরত শাহ্ ওয়ালিউল্লাহ্ মুহাদ্দিস দেহলবী  রহমতুল্লাহি আলাইহি ইকদুল জিদইনসাফ কিতাবে, তাফসীরে আযীযী, ছফরুছ ছাআদাত কিতাবে, ফয়জুল হারামাইন কিতাবে কোন এক মাযহাব অনুসারে চলা ওয়াজিব বলা হয়েছে। অন্যথায় গুণাহ্ হবে। হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কিমিয়ায়ে সাআদাত কিতাবে বলেন, কোন এক মাযহাব মান্য না করলে মহাপাপি হবে। সংক্ষিপ্তভাবে মাযহাব মান্য করা ফরজ বা ওয়াজিবের বর্ণনা করা হলো। ভবিষ্যতে বিস্তারিতভাবে দলীল-আদীল্লাহসহকারে মাযহাব মান্য করা ফরজ বা ওয়াজিবের ফতওয়া মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ পত্রিকায় দেয়ার ইচ্ছা আছে ইন্শাআল্লাহ।
দ্বিতীয়তঃ বলা হয়েছে যে, ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি দাড়ি কি পরিমাণ রাখতে হবে, সে ব্যাপারে ইখতিলাফ করেছেন এটাও ভুল। দাড়ি এক মুষ্টি পরিমাণ রাখতে হবে, এর কম কাটলে হারাম হবে। দাড়ি এক মুষ্টি পরিমাণ রাখতে হবে, এ ব্যাপারে চারি মাযহাবের ইমামগণ একমত। আওজাযুল মাসালিক, কিতাবুল উম্ম, বজলুল মজহুদ, ফতহুল মুলহিম, তোহফাতুল আহওয়াজি, হাম্বলী  মাযহাবের ফিক্বহী কিতাব, শরহুল মুনতাহা ও শর?মানজুমাতুল আদব ইত্যাদি কিতাব অনুসরণযোগ্য।
তৃতীয়তঃ  মাযহাবের যে পার্থক? তা পবিত্র কুরআন শরীফ উনার আদেশ-নিষেধ  মুবারক বা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বাক্যের মধ্যে নয়। ব্যাখ্যা ও মর্ম অনুধাবনের পার্থক্যের ভিত্তিতে হয়েছে। মদীনা পত্রিকার এ তৃতীয় বিষয়টিও শুদ্ধ নয়। ইলমে হাদীছ ও মাযহাব সম্পর্কে কিল্লতে ইলম ও কিল্লতে ফাহামের কারণেই এটা হয়েছে। শুধু পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মর্ম অনুধাবনই নয় বরং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার পার্থক্যের কারণেও মাযহাবের ইমামগণ উনার মধ্যে মত-পার্থক্য পরিলক্ষিত। এ ব্যাপারে আমরা আলেম, মুমিন মুসলমান সকলের সঠিক বুঝ পয়দা হওয়ার জন্য দুটি পরস্পর বিরোধী হাদীছ শরীফ তুলে দিচ্ছি, যা হতে বুঝা যাবে, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার পার্থক্যের কারণেও মাযহাবের ইমাম উনাদের মতানৈক্য হয়েছে।
        লজ্জাস্থান স্পর্শ করলে পূণরায় ওযু করতে হবে কি না?
হযরত ইমাম আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “ওযু করে লজ্জাস্থান স্পর্শকরলে ওযু ভঙ্গ হয়না। তার সমর্থনে পবিত্র হাদীছ শরীফ হলো-
عن قيس بن طلق ان اباه حدئه ان رجلا سئل رسول الله صلى الله عليه وسلم عن رجل مسى ذكره ايتوضاء؟ قال هل هوا لا بضعة من جسد ك.
অর্থঃ- হযরত কায়স বিন তালক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত- উনার পিতা উনাকে বলেছেন যে, জনৈক ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞেস করলো, কোন এক ব্যক্তি স্বীয় লজ্জাস্থান স্পর্শ করলো, সে কি পূণরায় ওযু করবে? তিনি বললেন, “এটা তোমার শরীরের গোস্তের একটি টুকরা মাত্র।
হযরত ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, এটাই আমাদের মত এবং এ প্রসঙ্গে আরো পবিত্র হাদীছ শরীফ রয়েছে।
          হযরত ইমাম শাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মত হলো- লজ্জাস্থান স্পর্শ করলে ওযু ভঙ্গ হয়ে যাবে। এ প্রসঙ্গে উনার দলীল হলো-
عن مصعب بن سعد قال: كنت امسك المصحف على سعد فا حتككت فقال لعلك مسست ذكرك قلت نعم قال قم فتوضاء قال فقمت فقوضاءت.
অর্থঃ- হযরত মুসআব বিন সাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন- আমি (আমাম পিতা) সাদ-উনার জন্য পবিত্র কুরআন মজীদ উঠায়েছিলাম, আমি আমার শরীর চুলকালাম, তিনি (পিতা) বললেন, তুমি সম্ভবত তোমার লজ্জাস্থান স্পর্শ করেছো। আমি বললাম, হ্যাঁ। পিতা বললেন, দাঁড়াও এবং ওযু কর, অতঃপর আমি দাঁড়ালাম এবং ওযু করলাম।
          হযরত ইমাম শাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি এ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ভিত্তিতে লজ্জাস্থান স্পর্শ করলে ওযু করতে হবে বলেন। এছাড়াও অনেক বিষয়েই পরস্পর বিরোধী পবিত্র হাদীছ শরীফ রয়েছে, যার কারণে চার  মাযহাবের সৃষ্টি হয়েছে।
          পাঠক! তথা সমস্ত মুমিন-মুসলমানগণের অবগতির জন্য উল্লেখ করা হচ্ছে যে, হযরত ইমাম আবূ ইউসূফ রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত ইমাম যুফার রহমতুল্লাহি আলাইহি ওনাদের মুজতাহিদে মতলক হওয়ার যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাক্বলীদ করেছেন। এরাই যদি তাক্বলিদ করেন,  উনাদের পর এমন কোন আলেম পয়দা হয়েছে, যে তাদেরকে তাক্বলীদ করতে হবেনা। তাক্বলীদ করা যদি ফরজ বা ওয়াজিব না হবে, তাহলে উনারা তাক্বলীদ করলেন কেন? সিহাহ্ সিত্তার ইমামগণও মাযহাব অনুসরণ করেছেন। হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম মুসলীম রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম নাসাঈ রহমতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন শাফী মাযহাবের অনুসারী। হযরত ইমাম শারানী রহমতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন মালেকী মাযহাবের অনুসারী। হযরত ইমাম আবূ দাউদ  রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম তিরমিযী  রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম ইবনে মাযাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন হাম্বলী  মাযহাবের অনুসারী। (বুস্তানুল মুহাদ্দিসীন, সায়েকাতুল মুসলিমীন, ইয়াম্বু, ইনসাফ, তাইছিরুল উসুল, ইকমাল, ইবনে খালকান ইত্যাদি।)
          চারি তরীকার ইমামগণ  মাযহাবের অনুসারী ছিলেন, ইমামুল আইম্মা, গাউসুল আ’যম হযরত বড় পীর আব্দুল ক্বাদীর জিলানী হমতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন হাম্বলী মাযহাবের অনুসারী। ওনার গুনিয়াতুত্ তালেবীন কিতাবের মাসয়ালা-মাসায়েল হাম্বলী মাযহাব অনুযায়ী লিখিত।
ইমামুল আইম্মা, মুহিয়্যূস সুন্নাহ্, হাবিবুল্লাহ্ হযরত খাজা মুঈনুদ্দিন হাসান চিশতী আজমেরী  রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত্ তরীক্বত, ইমামুল আইম্মা, হযরত শায়খ বাহাউদ্দিন নকশ্বন্দ বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমামে রাব্বানী, গাউসে সামদানী, মুহিয়্যূস সুন্নাহ্, ইমামুল আইম্মা হযরত শায়খ আহমদ ফারূকী সেরহিন্দী মুজাদ্দিদে আলফে সানী রহমতুল্লাহি আলাইহি, শায়খুল ইসলাম, ফক্বিহুল উম্মত, রঈসুল মুহাদ্দিসিন হযরত শায়খ নিজামুদ্দিন আওলিয়া  রহমতুল্লাহি আলাইহি ওনাদের সকলেই হানাফী মাযহাবভূক্ত ছিলেন এবং হানাফী হওয়ার কারণে মহান আল্লাহ পাক উনার শুকরিয়া আদায় করেছেন।
          হযরত ইমাম দারুকুত্বনী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম বায়হাক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ূতী  রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি ওনারা শাফী  মাযহাবের অনুসারী ছিলেন।
          হযরত ইমাম আব্দুর রহমান বিন জাওযী  রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম মহিউস সুন্নাত্ বাগবী রহমতুল্লাহি আলাইহি ওনারা হাম্বলী মাযহাবভুক্ত ছিলেন।
          জগৎবিখ্যাত মুহাদ্দিস ইয়াহ্ইয়া বিন মুঈন  রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত ইয়াহ্ইয়া কাত্তান  রহমতুল্লাহি আলাইহি, শামসুল আইম্মা হালওয়ানি  রহমতুল্লাহি আলাইহি, সামসুল আইম্মা সুরুখসী  রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম ত্বাহাবী  রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম ইবনে হুমাম  রহমতুল্লাহি আলাইহি, আমিরুল মুমিনীন ফিল হাদীছ ইমাম আব্দুল্লাহ্ বিন মুবারক  রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম বদরুদ্দিন আইনী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত মুল্লা আলী ক্বারী  রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত মুল্লা জিয়্যূন রহমতুল্লাহি আলাইহি, শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি সকলেই হানাফী মাযহাবভূক্ত ছিলেন।
          এ সমস্ত ইমামগণ যাঁরা সকলেই মাযহাবের তাক্বলীদ করেছেন এবং বলেছেন, “মাযহাব মান্য করা ফরজ বা ওয়াজিব। অথচ কিছু সংখ্যক লোক যাদের ইলম, আমল উপরিউক্ত ইমামগণের তুলনায় বিন্দু পরিমাণও নেই, অথচ বলে দিচ্ছে- মাযহাব মান্য করা ফরজ নয়। যারা মাযহাব মানবে না, তারা বিদয়াতী, গোমরাহ্ এবং নাকেস।
আবা-১৬

0 Comments: