কদমবুছী করা খাছ সুন্নত



পিডিএফ লিংক- https://drive.google.com/open?id=1KYVz2gLjR2Wr_1Sj13nY-rVxympgppZK
Image result for কদম মুবারককদমবুছী করা খাছ সুন্নত

cweÎ KziAvb kixd, cweÎ nv`xQ kixd †_‡K msKwjZ `wjjmg„× †imvjv




কদমবুছীর সংজ্ঞাঃ কদমবুছী (بوسي قدم)-এর কদম (قدم) শব্দটি আরবী যার অর্থ পা, আর বুছী (بوسي) শব্দটি ফার্সী যার অর্থ চুম্বন করাসুতরাং কদমবুছী অর্থ হলো পায়ে চুম্বন করাঅর্থাৎ সরাসরি মুখ দিয়ে পায়ে চুম্বন দেয়াকে কদমবুছীবলে। কিন্তু প্রচলিত অর্থে কদমবুছী বলতে আমাদের দেশে হাত দিয়ে পা স্পর্শ করে হাতে চুমু খাওয়ার যে প্রচলন তা মূলতঃ কদমবুছী নয় বরং তা দস্তবুছী।
কদমবুছীর প্রকৃষ্ট উদাহরণ দেখিয়েছেন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ। আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্‌, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কদম মুবারকে সরাসরি চুম্বন করতেন বা বুছী দিতেন উনারা, এমনকি উনারা একে অপরকেও কদমবুছী করেছেন। আর তাই কদমবুছী হচ্ছে খাছ সুন্নত।

কদমবুছী পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত

পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে,হযরত ওযায়ে ইবনে যারে, তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমরা আব্দুল কায়েস গোত্রে থাকা অবস্থায় যখন মদীনা শরীফে আসতাম তখন তাড়াতাড়ি করে নিজেদের সওয়ারী হতে নেমে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্‌, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাত মুবারক এবং কদম মুবারকে চুম্বন করতাম। (আবূ দাউদ শরীফ, ২য় জিলদ্‌, পৃষ্ঠা ৭০৯; বযলুল মাজহুদ, ৬ষ্ঠ জিলদ্‌, পৃষ্ঠা ৩২৮; ফতহুল বারী, ১১ জিলদ্‌, পৃষ্ঠা ৫৭; মিশকাত শরীফ, মিরকাত শরীফ, ৭ম জিলদ্‌, পৃষ্ঠা ৮০; আশয়াতুল লুময়াত, মুযাহিরে হক্ব)

পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো বর্ণিত আছে, এক ব্যক্তি আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্‌, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, ইয়া রসূলাল্লাহ্ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমাকে এমন কোন বিষয়ে আদেশ করেন, যা আমার বিশ্বাসকে আরো বৃদ্ধি করবেতখন আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্‌, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন, “তুমি গাছটিকে ডেকে আনোঅতঃপর সে ব্যক্তি গাছটির নিকটে গিয়ে বললো, নিশ্চয় রসূলাল্লাহ্ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তোমাকে ডেকেছেনসুতরাং গাছটি এসে আল্লাহ্পাক-এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সালাম করলোআল্লাহ্পাক-এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে চলে যেতে বললেন, গাছটি তখন চলে গেলঅতঃপর ব্যক্তি অনুমতি সাপেক্ষে আল্লাহ্পাক-এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মাথা মুবারক উভয় কদম মুবারক বুছী দিল (মুস্তাদিরেকে হাকিম; ফতহুল বারী, ১১ জিলদ্‌, পৃষ্ঠা ৫৭; তুহফাতুল আহওয়াযী শরহে তিরমিযী, ৭ম জিলদ্‌, পৃষ্ঠা ৫২৮; আল কালামুল মুবীন, পৃষ্ঠা ১৪৬)

হযরত বুরাইদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, “(গাছের সিজদা দেয়ার ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পর) একদিন আমি আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্‌, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খিদমতে আরজ করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ্‌, ইয়া হাবীবাল্লাহ্‌ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমাক আপনার উভয় হাত মুবারক এবং পা মুবারকে বুছী দেয়ার অনুমতি দিন। আল্লাহ্‌ পাক-এর হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনুমতি দিলেন। অতঃপর তিনি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উভয় হাত মুবারক এবং পা মুবারকে বুছী দিলেন। (নাসীমুর রিয়াজ শরহে কাজী আয়াজ ৩য় জিলদ্‌, পৃষ্ঠা ৫০; কিতাবুল আযকার লিন্‌ নববী)

হযরত যায়েদ বিন সাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণনা রয়েছে যে,নিশ্চয়ই তিনি হযরত  আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর হাত মুবারকে বুছী দিয়েছেন। তিনি এটাও বর্ণনা করেন যে, নিশ্চয়ই হযরত  আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর হাত ও পা মুবারকে বুছী দিয়েছেন। (ফতহুল বারী, ১১ জিলদ্‌, পৃষ্ঠা ৫৭; তুহফাতুল আহওয়াযী শরহে তিরমিযী, ৭ম জিলদ্‌, পৃষ্ঠা ৫২৮)

শুধু তাই নয় বরং পবিত্র হাদীছ শরীফে মাকেও কদমবুছী করার ফযীলত বর্ণনা করা হয়েছে, যেমন এ প্রসঙ্গে ফিক্বাহের কিতাবে উল্লেখ আছে, আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্‌, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি তার মায়ের কদমবুছী করলো সে যেন জান্নাতের চৌকাঠে চুম্বন করলো। (মাবসূত লিস্‌ সারাখ্‌সী, ১ম জিলদ্‌, পৃষ্ঠা ১৪৯)
ইমাম-মুজতাহিদ তথা আউলিয়ায়ে কিরাম রহ্‌মতুল্লাহি আলাইহি উনাদের জীবনীতে কদমবুছীঃ

বস্তুত গভীর শ্রদ্ধা, আদব, মুহব্বত এবং আনুগত্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটে কদমবুছীর মাধ্যমে। আর তাই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্‌, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কদম মুবারকে সরাসরি চুম্বন দিয়ে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা, মুহব্বত, তাযীম এবং আনুগত্যের চরম পরাকাষ্ঠা প্রকাশ করেছেন। এই ধারাবাহিকতায় মুরীদও তাঁদের অনুসরণে একইভাবে স্বীয় মুর্শিদ ক্বিবলার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা, পরম মুহব্বত এবং আনুগত্য প্রকাশ করে থাকে কদমবুছীর মাধ্যমে। কেননা পবিত্র হাদীছ শরীফে এসেছে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, শায়খ (বা মুর্শিদ বা পীর ছাহেব) তাঁর ক্বওম তথা মুরীদের কাছে তেমন; নবী (আলাইহিস্‌ সালাম) তাঁর উম্মতের মাঝে যেমন। (দাইলামী শরীফ, মাকতুবাত শরীফ, আত্‌ তায্‌কিরাহ ফি আহাদীসিল মুশ্তাহিরাহ, মাকাছিদুল হাসানা)

পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো এসেছে, হযরত  আনাছ বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমরা পীর-মাশায়িখকে সম্মান করবে। পীর-মাশায়িখকে সম্মান করা আল্লাহ্‌ পাককে সম্মান করারই নামান্তর। কাজেই যে ব্যক্তি তাঁদের যথাযথ সম্মান করে না সে আমাদের দলভূক্ত নয়। (দাইলামী শরীফ, আত্‌ তায্‌কিরাহ ফি আহাদীসিল মুশ্তাহিরাহ)

আর তাই চিশ্‌তীয়া তরীক্বার মাশায়িখ (রহ্‌মতুল্লাহি আলাইহিম)-এর মাঝে কদমবুছীর এতো অধিক প্রচলন ছিল যে, তাঁরা স্বীয় মুর্শিদ ক্বিবলার কদমবুছী করতে পারাকে বিশেষ নিয়ামত প্রাপ্তি মনে করতেন। যখনই কোন সালিক মুর্শিদ ক্বিবলার দরবার শরীফে যেতেন তখনই মুর্শিদ ক্বিবলার কদমবুছী করতেন।

শায়খুল মাশায়িখ, সুলতানুল আউলিয়া, হযরত কুতুবুদ্দীন বখতিয়ার কাক্বী রহ্মতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “বুধবার আমার পীর ছাহেব সুলতানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ, হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতী রহ্মতুল্লাহি আলাইহি-এর কদমবুছী বরকত নছীব হলো (দলীলুল আরিফীন)











0 Comments: