“তোমরা চাঁদ দেখে ঈদ কর, চাঁদ দেখে রোযা রাখ”
সারা বিশ্বে এক দিনে
ঈদ পালন সম্ভব কি?
একটি দলিল ভিত্তিক বিশ্লেষণ....
সারা বিশ্বে এক দিনে ঈদ পালন
সম্ভব নয়,
যারা এ ধরনের দাবি করে থাকে তারা
মূর্খ ও অজ্ঞ
সারা বিশ্বে
যারা একই দিনে রোযা-ঈদসহ অন্যান্য ইবাদত পালন করার কথা বলে তাদের কথা সম্পূর্ণ ভুল।
ভুগোলের সামান্যতম জ্ঞানও তাদের নেই। আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘তোমরা চাঁদ দেখে
রোযা রাখ,
চাঁদ দেখে ইফতার (ঈদ) কর। ’অর্থাৎ রমযান শরীফের চাঁদ দেখা ওয়াজিবে ক্বিফায়া। কাজেই কিছু সংখ্যক লোক দেখলেই
সকলের জন্যে রোযা ফরয হয়ে যাবে। চাঁদ দেখা গেলেই রোযা ফরয হবে, চাঁদ দেখা না গেলে রোযা ফরয হবেনা।
যারা
সারাবিশ্বে একদিনে রোযা রাখা এবং একদিনে ঈদ করার কথা বলে থাকে, সামান্যতম ভৌগোলিক জ্ঞানও তাদের নেই। কেননা, পৃথিবীর এক প্রান্ত
থেকে আরেক প্রান্তের সময়ের পার্থক্য হচ্ছে ১৪ঘণ্টা। পৃথিবীর এক প্রান্তে যখন দিন, তখন অন্য প্রান্তে
পূর্ব বা পরের দিন অথবা রাত। কাজেই সেখানে তখন চাঁদ দেখার প্রশ্নই আসেনা।
তাহলে কি
করে একদিনে সারা বিশ্বে রোযা রাখা বা ঈদ করা যেতে পারে? এটা মূলতঃ নেহায়েত অজ্ঞতা ও জিহালত পূর্ণ কথা। তারা হানাফী
মাযহাবের ইমাম, ইমামে আ’যম, হযরত আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর উদয়স্থলের পার্থক্য
সংক্রান্ত ক্বওল না বুঝার কারণে বিভ্রান্তিতে পতিত হয়েছে। সেটা হচ্ছে “হানাফীদের নিকট একই উদয়স্থলের পার্থক্য গ্রহণ যোগ্য নয়।” একই উদয় স্থলের সীমা রেখা হচ্ছে ৫০০-৭০০ মাইলের মধ্যে। এর মধ্যে
যারা চাঁদ দেখবে তাদের রোযা রাখতে হবে। আর যারা এর বাইরে থাকবে কিন্তু চাঁদ দেখবেনা, তাদেরকে রোযা রাখতে
হবেনা। এটাই হচ্ছে উদয়স্থলের পার্থক্যের মূলকথা। একই উদয়স্থলের মধ্যে যারা চাঁদ দেখবে
তাদের সকলের জন্যে একই হুকুম হবে। কিন্তু শাফিয়ী মাযহাব মতে প্রত্যেক শহরে আলাদা আলাদা
চাঁদ দেখতে হবে। এটা আমাদের হানাফী মাযহাবে গ্রহণ যোগ্য নয়।
এমন যদি হয়
যে,
আলাদা উদয়স্থলে একদিনে একদেশের পর আরেক দেশ পর্যায়ক্রমে চাঁদ
দেখতে থাকে তাহলে সেসব দেশে একদিনে রোযা এবং ঈদ করতে পারবে। কিন্তু যেহেতু ভৌগোলিক
কারণে পৃথিবীর এক প্রান্তের সাথে আরেক প্রান্তের ১৪ঘণ্টা সময়ের পার্থক্য রয়েছে, সেহেতু সারাবিশ্বে একদিনে রোযা এবং ঈদ পালন করা আদৌ সম্ভব নয়।
হাদীছ শরীফে
রোযা ও ঈদের অনেক ফযীলতের কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু ইহুদী-নাছারাদের যোগসাজশে একটি
মহল মুসলমানদের রমযান শরীফ এবং ঈদের ফযীলত থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
এটা মুসলমানদের ঈমান, আমল ও নিয়ামত থেকে বঞ্চিত করার এক আন্তর্জাতিক চক্রান্ত। এ
থেকে সকলকে সাবধান থাকতে হবে।
নিজস্ব অঞ্চলের
উদয়স্থলে চাঁদ না দেখে রোযা, ঈদ ও অন্যান্য আমল
পালন করা জায়িয নয়। পৃথিবীর দুটি স্থানের সর্বোচ্চ সময়ের পার্থক্য ১৪ঘণ্টা। সুতরাং
কখনো একদিনে পৃথিবীর সবদেশে রোযা ও ঈদ পালন করা সম্ভব নয়। যারা সারা বিশ্বে এক দিনে
ঈদ পালন ও রোযা শুরুর কথা বলে তাদের শরীয়ত ও ভৌগোলিক জ্ঞানের অভাব রয়েছে।
পৃথিবীর এমনঅ
নেক স্থান আছে যেখানে সন্ধ্যা হলে অন্য স্থানে সকাল। আর আমরা জানি, শরীয়তের দিন শুরু হয় সন্ধ্যার পর থেকে। সুতরাং কোন স্থানের
সন্ধ্যায় চাঁদ দেখে, যে স্থানে সকাল
সেখানে যদি ঈদ পালন করতে হয় তবে ঐস্থানের দিনটি হবে অপূর্ণ। কেননা, ঈদ পালনের দিনটির রাতটি তাহলে কোথায়? অথচ হাদীছ শরীফ-এ রয়েছে ঈদের রাতে দোয়া কবুল হয়। তাহলে কোন
স্থানের সন্ধ্যায় চাঁদ দেখে পৃথিবীর সব দেশে ঈদ পালন করতে চাইলে পৃথিবীতে বহু দেশের
অধিবাসীরা এই দোয়া কবুলের রাত পাবেনা। শরীয়তের
পূর্ণদিন পাবেনা। আর এরকম অবস্থায় ঈদ, রোযা পালনকরা শরীয়ত কখনো সমর্থন করেনা।
শুধু ঈদ কেন, রোযার কথাই ধরা যাক। পৃথিবীতে এমন অনেক স্থান আছে যেখানে সন্ধ্যায়
রমাদ্বান শরীফ- এর চাঁদ দেখা গেলে অন্য স্থানে সকাল গড়িয়ে প্রায় দুপুর। যেঅঞ্চলে
সকাল সে অঞ্চলের অধিবাসীরা পূর্বে তারাবীহ পড়েননি, সাহরী ও খাননি বরং
সকালের নাস্তা শেষ করেছেন। তাহলে অন্য অঞ্চলের
সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা গেলে সেই চাঁদ দেখে কিভাবে তারা রোযা পালন করবেন? তাহলে দেখা যাচ্ছে, সারাবিশ্বে একদিনে ঈদ এবং রোযা পালনকারীদের শরীয়তের ইলমের যেমনি অভাব রয়েছে তেমনি
রয়েছে ভৌগোলিক জ্ঞানের অভাব।
অনেকেই বলে
থাকে- যদি পৃথিবীর সব দেশের শুক্রবারেই জুমুয়ার
নামায আদায় হয় তাহলে একদিনে ঈদ পালন করা সম্ভব নয় কেন? বলা হয়, প্রশ্ন হচ্ছে অর্ধেকজ্ঞান। এ প্রশ্নকারীদের প্রশ্নটিই
অবান্তর। পৃথিবীর সব দেশের জুমুয়ার দিনে যেমনি জুময়ার নামায আদায় হয় তেমনি সব দেশের
পহেলা শাওয়ালেই ঈদ পালিত হয়। অর্থাৎ একটি দেশের পহেলা শাওয়ালের সকালে অন্য অনেকস্থানে
৩০শে রমাদ্বান সন্ধ্যা আবার কোন দেশ পহেলা শাওয়ালের ঈদ পালন করে সন্ধ্যায় যখন
পৌঁছেছে তখন অন্য দেশে ঈদ পালন শুরু হয়েছে। যেহেতু পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে সময়ের
পার্থক্য রয়েছে এবং এই পার্থক্য ১৪ ঘণ্টারও বেশি সুতরাং কোন দেশে ঈদ পালিত হলে অন্য
দেশে ঈদ পালন শেষ হবে; এটাই স্বাভাবিক এবং
এটাই শরীয়তের নিয়ম। যার যার অঞ্চলে চাঁদ দেখে ঈদ এবং রোযা বা অন্যান্য দ্বীনী আমল
পালন করতে হবে। কোন স্থানের শাওয়ালের চাঁদ দেখে পৃথিবীর সব স্থানে ঈদ পালন সম্ভব নয়
বরং অবান্তর।
সমগ্র পৃথিবীতে
একই দিনে বা একদিনে ঈদ পালন করা অসম্ভব-এর বজ্ঞৈানকি ব্যাখ্যা
ওয়াহ্দাতাল
মাতলা সমর্থনকারীরা পৃথিবীর কোথাও বা কোন দেশে প্রথম চাঁদ দেখে সমগ্র বিশ্বে এক দিনে
ঈদ বা রোযা পালন করার পক্ষে জোর দাবী তুলছে। মূলত তাদের এই দাবী নিতান্তই মূর্খতার
পরিচায়ক ও বিভ্রান্তিকর। ওয়াহ্দাতাল মাতলা সমর্থনকারীরা যে বিভ্রান্ত তা স্পষ্টভাবে
বুঝার জন্য আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা ও প্রতিপাদ স্থান সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা আবশ্যক।
আন্তর্জাতিক
তারিখ রেখা :
কোনো নির্দিষ্ট
স্থান থেকে পূর্ব বা পশ্চিমে দীর্ঘপথ ভ্রমণ করার সময় স্থানীয় সময়ের পার্থক্যের সঙ্গে
সঙ্গে সপ্তাহের দিন বা বার নিয়েও গ-গোল বাঁধে বা গরমিল হয়। কোনো নির্দিষ্ট স্থান থেকে
পূর্ব বা পশ্চিম দিকে ১৮০ক্ক দ্রাঘিমারেখা অতিক্রম করলে সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা
সমাধানের জন্য ১৮০ক্ক দ্রাঘিমারেখাকে অবলম্বন করে সম্পূর্ণভাবে পানিভাগের উপর দিয়ে
উত্তর-দক্ষিণে প্রসারিত একটি রেখা কল্পনা করা হয়। এ কল্পিত রেখাটিকে আন্তর্জাতিক তারিখ
রেখা বলে।
আন্তর্জাতিক
তারিখ রেখার প্রয়োজনীয়তা :আমরা জানি, ১ক্ক দ্রাঘিমান্তরে ৪ মিনিট সময়ের ব্যবধান হয়। সুতরাং ১৫ক্ক দ্রাঘিমান্তরে সময়ের
ব্যবধান হবে ১ ঘণ্টা। এভাবে মূল মধ্যরেখা থেকে পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে থাকলে ১৮০ক্ক
দ্রাঘিমায় ১২ ঘণ্টা সময় বেশি হয় এবং পশ্চিম দিকে অগ্রসর হলে ১৮০ক্ক দ্রাঘিমায় ১২ ঘণ্টা
সময় কম হয়।
সূতরাং মূল
মধ্যরেখায় যখন ইছনাইনিল আযীম সকাল ১০টা তখন ১৮০ক্ক পূর্ব দ্রাঘিমায় স্থানীয় সময় ইছনাইনিল
আযীম রাত ১০টা। এভাবে আবার ঠিক পশ্চিম দিক দিয়ে দ্রাঘিমা গণনা করলে ১৮০ক্ক পশ্চিম দ্রাঘিমায়
স্থানীয় সময় হবে তার পূর্ব দিন অর্থাৎ আহাদবার রাত ১০ টা। কিন্তু১৮০ক্ক পূর্ব ও ১৮০ক্ক
পশ্চিম দ্রাঘিমারেখা মূলত একই রেখা। সুতরাং দেখা যায়, একই দ্রাঘিমায় স্থানীয় সময়ের পার্থক্য হচ্ছে ২৪ ঘণ্টা বা একদিন।
একই স্থানে কোথাও আহাদবার কোথাও ইছনাইনিল আযীম। কিন্তু একই দ্রাঘিমারেখায় একই সঙ্গে
আহাদওহঃবৎহধঃরড়হধষ উধঃব খরহববার রাত ১০টা ও ইছনাইনিল আযীম রাত ১০টা হতে পারে না। এ
অসুবিধা দূর করার জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির মাধ্যমে প্রশান্ত মহাসাগরেরপানি ভাগের
উপর মানচিত্রে ১৮০ক্ক দ্রাঘিমারেখাকে অবলম্বন করে একটি রেখা কল্পনা করা হয়েছে। এটিই
আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা। এ রেখা অতিক্রম করলে দিন এবং তারিখের পরিবর্তন হয় বলে এ রেখাটিকে
আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা বলে। পূর্বগামী কোন জাহাজ বা বিমান এ রেখা অতিক্রম করলে স্থানীয়
সময়ের সঙ্গে মিল রাখার জন্য তাদের বর্ধিত সময় থেকে একদিন বিয়োগ করে এবং পশ্চিমগামীজাহাজ
বা বিমান তাদের কম সময়ের সঙ্গে একদিন যোগ করে তারিখ গণনা করে থাকে।
বর্তমানে
প্রচলিত আন্তর্জাতিক তারিখ রেখাটি সাইবেরিয়ার উত্তর-পূর্ব অংশ অ্যালিউসিয়ান, ফিজি ও চ্যাথাম দ্বীপপুঞ্জের উপর দিয়ে গেছে। স্থানীয় লোকদের
সময়ের হিসেবে অসুবিধা দূর করার জন্য এ রেখা বেরিং প্রণালিতে ১২ক্ক পূর্ব, অ্যালিউসিয়ান দ্বীপপূঞ্জের কাছে ৭০ক্ক পশ্চিম এবং ফিজি ও চ্যাথাম
দ্বীপপুঞ্জের কাছে ১১ক্ক পূর্ব দিকে বেঁকে শুধু পানিভাগের উপর দিয়ে টানা হয়েছে। এ রকমভাবে
রেখা টানা না হলে একই দ্বীপের দুই অংশে দুই ধরনের সময় গণনা করতে হতো। কিন্তু এতে দিন
গণনায় সহজ হলেও প্রচলিত আন্তর্জাতিক তারিখ রেখাটি সাপের মত দেখতে একটি আঁকা-বাঁকা রেখায়
পরিণত হয়েছে, ঠিক যেন অবুঝ শিশুদের প্রথম হাতেখড়ি
নেয়ার সময়ের অবস্থা।
মুসলমান উনারা
যেহেতু সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহ পাক উনাকে স্মরণ করে থাকে তাই পৃথিবীর প্রথম ঘর- মানব
জাতির পথ প্রদর্শক পবিত্র কা’বা শরীফ উনার উপর দিয়ে মূল মধ্য রেখা কল্পনা করে এই আঁকা-বাঁকা
রেখায় সমাধান করতে পারেন।কেননা, পবিত্র কা’বা শরীফ
উনার উপর দিয়ে মূল মধ্যরেখা স্থির করা হলে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখাটি আলাস্কা এবং কানাডার
মাঝামাঝি স্থান দিয়ে (বর্তমান ১৪০ক্ক পশ্চিম দ্রাঘিমা রেখা বরাবর) উত্তর প্রশান্ত মহাসাগর
হয়ে নিচে নেমে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগর দিয়ে দক্ষিণ গোলার্ধে চলে যাবে। সম্পূর্ণ তারিখ
রেখাটি যাবে পানির উপর দিয়ে ফলে স্থলভাগের ডানে ও বামে তারিখ রেখা সরিয়ে দেয়ার কোন
প্রয়োজন পড়বে না।
প্রতিপাদ
স্থান :
ভূপৃষ্ঠের
উপর অবস্থিত কোনো বিন্দুর ঠিক বিপরীত বিন্দুকে সেই বিন্দুর প্রতিপাদ স্থান বলে। প্রতিপাদ
স্থান সম্পূর্ণভাবে একে অন্যের বিপরীত দিকে থাকে। প্রতিপাদ স্থান নির্ণয় করার জন্য
ভূপৃষ্ঠের কোনো বিন্দু থেকে পৃথিবীর কেন্দ্রের মধ্য দিয়ে একটি কল্পিত রেখা পৃথিবীর
ঠিক বিপরীত দিকে টানা হয়। ওই কল্পিত রেখা যে বিন্দুতে ভূপৃষ্ঠের বিপরীত পাশে এসে পৌঁছায়
সেই বিন্দুই পূর্ব বিন্দুর প্রতিপাদ স্থান।
কোনো স্থানের
অক্ষাংশ জানা থাকলে তার প্রতিপাদ স্থানেরও অক্ষাংশ নির্ণয় করা যায়। কোনো স্থানের অক্ষাংশ
যত ডিগ্রি, এর প্রতিপাদ স্থানের অক্ষাংশ তত ডিগ্রি
হবে।
টহঃরঃষবফ-ঝঃরঃপযবফ-০১১স্থান
দুইটি একটি নিরক্ষরেখার উত্তরে ও অপরটি দক্ষিণে অবস্থিত হবে। দুইটি স্থান দুই গোলার্ধে
হবে। একটি স্থানের অক্ষাংশ ৭০ক্কউত্তর হলে তার প্রতিপাদ স্থানের অক্ষাংশ ৭০ক্কদক্ষিণ
হবে।কোনো স্থানের দ্রাঘিমা এবং এর প্রতিপাদ স্থানের দ্রাঘিমা যোগ করলে ১৮০ক্কহবে। সুতরাং
১৮০ক্কথেকে কোন স্থানের দ্রাঘিমা বাদ দিলে এর প্রতিপাদ স্থানের দ্রাঘিমা পাওয়া যায়।
কোন স্থানের দ্রাঘিমা পূর্বে হলে এর প্রতিপাদ স্থানের দ্রাঘিমা পশ্চিমে হবে। যেমন, ৪০ক্ক পূর্ব দ্রাঘিমায় অবস্থিত স্থানের প্রতিপাদ স্থানের দ্রাঘিমা
হবে ১৮০ক্ক- ৪০ক্ক = ১৪০ক্ক পশ্চিম। স্থান দুইটির মধ্যে সময়ের পার্থক্য হবে ১২ ঘণ্টা।
পৃথিবীর প্রায়
৮০% ভূমির প্রতিপাদ স্থান সাগর বা মহাসাগরের মধ্যে পতিত হওয়ায় সরাসরি প্রতিপাদ স্থান
খুঁজে পাওয়া অত্যন্ত কঠিন, তাই পৃথিবীর কয়েকটি
শহর ও তার প্রতিপাদ স্থানের তালিকা দেয়া হলো-
সারণী : কয়েকটি
শহর ও তার প্রতিপাদ শহর
শহর
প্রতিপাদ
শহর
পালেম্বঙ্গ, ইন্দোনেশিয়া
নেইভা, কলম্বিয়া
প্যাদাং, ইন্দোনেশিয়া
ইস্মেরাল্ডাস, ইকুয়েডর
হোয়ানগারেই, নিউজিল্যান্ড
তানজিয়ার, মরক্কো
জাকার্তা, ইন্দোনেশিয়া
বগোতা, কলম্বিয়া
গুয়াকুইল, ইকুয়েডর
মেদান, ইন্দোনেশিয়া
দোহা, কাতার
পিটকেয়ার্ন
দ্বীপপুঞ্জ
কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া
কুইংকা, ইকুয়েডর
শার্ম এল
শেখ,
মিশর
রাপা ইতি, ফরাসি পলিনেশিয়া
ঢাকার প্রতিপাদ
স্থান দক্ষিণ আমেরিকার অন্তর্গত চিলির নিকট প্রশান্ত মহাসগরে অবস্থিত।
আন্তর্জাতিক
তারিখ রেখার দুই পাশে অবস্থিত দু’টি দেশ ভিন্ন তারিখে ঈদ পালন করে :সামওয়া ও নিউজিল্যান্ড
দু’টো দেশ আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার দুই পার্শ্বে অবস্থিত। সূর্য মোটামুটি একই সময় এই
দু’টো স্থানে উদিত ও অস্ত যায়। ১৪২৯ হিজরীর শাওওয়াল মাসের চাঁদ এই দু’টো দেশে একই দিনে
একই সময়ে দৃশ্যমান হয়। দেশ দু’টিতে চাঁদ দৃশ্যমান হওয়ার তথ্য উপস্থাপন করা হলো-
বিষয়
সামওয়া
নিউজিল্যান্ড
সময়
সন্ধ্যা ৭টার
কাছাকাছি
সন্ধ্যা ৭টার
কাছাকাছি
বার
ছুলাছা বা
মঙ্গলবার
আরবিয়া বা
বুধবার
তারিখ
৩০শে সেপ্টেম্বর
২০০৮ ঈসায়ী
১লা অক্টোবর
২০০৮ ঈসায়ী
একই সময়ে
এই দু’টো দেশের অধিবাসীরা ১৪২৯ হিজরীর শাওওয়াল মাসের চাঁদ দেখতে পেলেও আন্তর্জাতিক
তারিখ রেখার দু’পার্শ্বে অবস্থানের কারণে একই তারিখে ঈদ উদযাপন করতে পারেনি।
কাছাকাছি
অবস্থিত দুটি দেশেও একই তারিখে ঈদ পালন করা সম্ভব নয় :কাছাকাছি অবস্থিত হওয়ার পরও সামওয়া
ও নিউজিল্যান্ড যেমন ভিন্ন দুটি তারিখে ঈদ উদযাপন করেছে ঠিক তেমনি এই দু’টো দেশে কখনো
কখনো একই দিনেও ঈদ উদযাপন করা সম্ভব নয়।
১৪১৭ হিজরীর
শাওওয়াল মাসের চাঁদ সামওয়াতে যখন দৃশ্যমান হয় তখন চাঁদের বয়স ৪০ ঘণ্টারও বেশি। সেদিন
সূর্য অস্ত যাওয়ার প্রায় ১ ঘণ্টা ১৪ মিনিট পর চাঁদ অস্ত যায়।একই দিন সন্ধ্যায় নিউজিল্যান্ডে
যখন সূর্যাস্ত হয় তখন চাঁদের বয়স ২৪ মিনিট এবং সূর্য অস্ত যাওয়ার মাত্র ৮ মিনিট পর
চাঁদ অস্ত যায় ফলে চাঁদ দৃশ্যমান হয়নি। দেশ দু’টিতে চাঁদ দৃশ্যমান হওয়ার তথ্য নি¤œরূপ-
বিষয়
সামওয়া
নিউজিল্যান্ড
সময়
৭টা ৩০ মিনিট
৭টা ৩০ মিনিট
বার
সাবত্ বা
শনিবার
আহাদ বা রোববার
তারিখ
৮ই ফেব্রুয়ারি
১৯৯৭ ঈসায়ী
৯ই ফেব্রুয়ারি
১৯৯৭ ঈসায়ী
৯ই ফেব্রুয়ারি, রোববার সকালে সামওয়াবাসীরা যখন ঈদ উদযাপন করেছিল সেদিন নিউজিল্যান্ডবাসীরা
ঈদ পালন করতে পারেনি। নিউজিল্যান্ডে চাঁদ দেখা গিয়েছিলো ১০ই ফেব্রুয়ারি, চাঁদের বয়স যখন ৬৫ ঘণ্টারও বেশি।
সউদী আরবে
সর্বপ্রথম চাঁদ দেখা গেলেও সমগ্র পৃথিবীতে একদিনে ঈদ পালন সম্ভব নয় :১৪১৯ হিজরীর শাওওয়াল
মাসের চাঁদ সউদী আরবে দেখা গিয়েছিলো ইছনাইনিল আযীম বা সোমবার, ১৮ই জানুয়ারী। সেদিন অর্থাৎ ১৮ই জানুয়ারী, নিউজিল্যান্ডে সূর্য অস্ত যাওয়ার ১৩ মিনিট পর চাঁদ অস্ত যায়
এবং চাঁদের বয়স ছিল মাত্র ১৭ ঘণ্টা। নিউজিল্যান্ডে সেদিন চাঁদ দেখা যায়নি এবং দেখা
যাওয়াও ছিল অসম্ভব।
এখন প্রশ্ন
হলো যদি সউদী আরবের চাঁদ দেখা অনুযায়ী নিউজিল্যান্ডবাসী মুসলমানদেরকে ঈদ করতে হয় তবে
তারা কখন ঈদ পালন করবে? সউদী আরবে চাঁদ দৃশ্যমান
হওয়ার মুহূর্তে দেশ দু’টির স্থানীয় সময়ের তুলনামূলক চিত্র-
বিষয়
সউদী আরব
নিউজিল্যান্ড
সময়
সন্ধ্যা ৬টা
৩০ মিনিট
ভোর ৪টা ৩০মিনিট
বার
ইছনাইনল আযীম
বা সোমবার
ছুলাছা বা
মঙ্গলবার
তারিখ
১৮ই জানুয়ারি, ১৯৯৯ ঈসায়ী
১৯শে জানুয়ারি, ১৯৯৯ ঈসায়ী
যদি দাবী
করা হয় নিউজিল্যান্ডবাসীরা ভোর ৭টায় ঈদের নামায পড়বে। তাহলে দেখা যাচ্ছে নিউজিল্যান্ডবাসীর
ঈদ সউদী আরবের তারিখে হচ্ছে না। কেননা সউদী আরবে সেদিন ১৮ই জানুয়ারী আর নিউজিল্যান্ডে
১৯শে জানুয়ারী।
একদিনে ঈদ
পালনকারীদের যুক্তি অনুযায়ী ১৮ই জানুয়ারীর রাতে নিউজিল্যান্ডবাসী মুসলমানরা তারাবীহর
নামায পড়লেও, সাহরী খেলেও এসব আমল নষ্ট করে ৭টায়
নামায পড়তে হবে, যেহেতু সউদী আরবে সে সময় চাঁদ দেখা
গেছে অথবা ১৯শে জানুয়ারীর ভোরে যেহেতু সউদী আরব ঈদ পালন করবে সেই তারিখের সমতা রক্ষার
জন্যেই কি চাঁদ দেখতে না পেলেও রোযার সব আমল নষ্ট করে নিউজিল্যান্ডবাসীকে ঈদ পালন করতে
হবে?
কিন্তু পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার নির্দেশ রয়েছে, ২৯তম দিন শেষে চাঁদ দেখা না গেলে মাস ৩০ দিনে পূর্ণ করতে হবে।
অথচ নিউজিল্যান্ডবাসী
মুসলমানরা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার নির্দেশ অমান্য করে ৩০ দিনে মাস পূর্ণ না করে সকালে
নামায পড়লে তা কিসের অনুসরণ হবে?
আর যদি বলা
হয়,
সউদী আরবের ঈদের দিন নামাযের পর নিউজিল্যান্ডবাসীকে ঈদের নামায
পড়তে হবে তবে সউদী আরবের ঈদের দিনে যখন নামায অনুষ্ঠিত হয়েছে তখন নিউজিল্যান্ডে সময়
বিকাল ৫টা ৩০ মিনিট। সে সময় ঈদের নামায পড়া সম্ভব নয়। তাহলে দেখা যাচ্ছে সউদী আরবের
সাথে সমগ্র পৃথিবীতে একই দিনে ঈদ পালন করার যুক্তিটি হাস্যকর।
সউদী আরব
ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোথাও সর্বপ্রথম চাঁদ দেখা গেলেও সমগ্র পৃথিবীতে একদিনে ঈদ পালন
সম্ভব নয় :১৪১৮ হিজরীর শাওওয়াল মাসের চাঁদ সউদী আরবেরও আগে দৃশ্যমান হয় উত্তর আমেরিকাতে।
আরবিয়া বা বুধবার, ২৮শে জানুয়ারি, সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে। যখন টেক্সাসে চাঁদ দৃশ্যমান হয় সেদিন
নিউজিল্যান্ডে সূর্য অস্ত যাওয়ার ১৫ মিনিট পূর্বেই চাঁদ অস্ত যায় এবং সেদিন চাঁদের
বয়স ছিল মাত্র ৪৬ মিনিট।সুতরাং নিউজিল্যান্ডে চাঁদ দেখা ছিল অসম্ভব। উত্তর আমেরিকার
টেক্সাসে চাঁদ দৃশ্যমান হওয়ার খবর শুনে নিউজিল্যান্ডে ঈদ করা সম্ভব কিনা তা যাচাই করার
জন্য চাঁদ দৃশ্যমান হওয়ার মুহূর্তে দেশ দু’টির স্থানীয় সময়ের তুলনামূলক চিত্র উপস্থাপন
করা হলো-
বিষয়
উত্তর আমেরিকার
টেক্সাস
নিউজিল্যান্ড
সময়
সন্ধ্যা ৬টা
৩০ মিনিট
দুপুর ১টা
৩০ মিনিট
বার
আরবিয়া বা
বুধবার
খ¦মীস বা বৃহস্পতিবার
তারিখ
২৮শে জানুয়ারী, ১৯৯৮ ঈসায়ী
২৯শে জানুয়ারী, ১৯৯৮ ঈসায়ী
এখন দেখা
যাচ্ছে,
নিউজিল্যান্ডবাসী মুসলমানদের ঈদ উত্তর আমেরিকায় চাঁদ দৃশ্যমান
হওয়ার দিনে হচ্ছে না। অর্থাৎ ২৮ই জানুয়ারী হচ্ছে না।
টেক্সাসে
যখন চাঁদ দেখা গেল তখন নিউজিল্যান্ডে দুপুর ১টা ৩০ মিনিট। আর সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত
উনার বিধান অনুযায়ী দুপুর বেলা ঈদের জামায়াতের ওয়াক্ত থাকে না। আর যদি বলা হয় টেক্সাসে
তার পরের দিন খ¦মীস বা বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ২৯শে জানুয়ারী ভোর ৮টার দিকে যখন ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত
হবে সেই দিনের সঙ্গে সমতা রাখার জন্যে হলেও ২৯শে জানুয়ারী নিউজিল্যান্ডবাসী মুসলমানরা
ঈদের নামায পড়া উচিত। তাও সম্ভব নয়, কেননা টেক্সাসে চাঁদ দেখতে পাওয়ার খবরের সময় নিউজিল্যান্ডে সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়েছে।আর
টেক্সাসে যখন ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে সেমুহূর্তে দেশ দু’টির স্থানীয় সময়ের তুলনামূলক
চিত্র নিম্নরূপ:
বিষয়
উত্তর আমেরিকার
টেক্সাস
নিউজিল্যান্ড
সময়
সন্ধ্যা ৮টা
৩০ মিনিট
রাত ৩টা
বার
খ¦মীস বা বৃহস্পতিবার
জুমু‘আহ বা
জুমু‘আ বার
তারিখ
২৯শে জানুয়ারী
৩০শে জানুয়ারী
সুতরাং কোনভাবেই
উত্তর আমেরিকায় চাঁদ দেখা গেলে নিউজিল্যান্ডবাসী মুসলমানদের একই দিনে ঈদ পালন করা সম্ভব
হবে না। অর্থাৎ পৃথিবীর কোথাও সর্বপ্রথম চাঁদ দেখা গেলেই সারা পৃথিবীতে একই দিনে বা
একদিনে ঈদ উদযাপন নিতান্তই অজ্ঞতাপ্রসূত, নিরেট মূর্খতা ও হাস্যকর। তাই সারা পৃথিবীতে একই দিনে বা একদিনে ঈদ পালন করা অসম্ভব।
সউদী ওহাবী
সরকার নিজেই ভ্রান্তভাবে আরবী মাস গণনা করে থাকে
পবিত্র হাদীছ
শরীফ মুতাবিক প্রতি মাসেই ২৯তম দিন শেষে আকাশে খালি চোখে চাঁদ দেখে মাস শুরু করতে হয়।
কিন্তু অনেক নামধারী মুসলিম দেশ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অনুসরণ না করে মনগড়াভাবে চাঁদের
তারিখ ঘোষণা করছে।গভীরভাবে তলিয়ে দেখার পর জানা গেল- এই ষড়যন্ত্রের নেপথ্য নায়ক হচ্ছে
সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অনুসরণ বাদ দিয়ে এই সউদী ওহাবী ইহুদী
সরকার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে আরবী মাস উনার তারিখ ঘোষণা করছে। আর সেই ভ্রান্ত তারিখ
দেখেই কিছু কিছু মুসলিম দেশের সরকার সেটাকে অন্ধ অনুসরণ করছে। নাঊযুবিল্লাহ!
ক) সউদী ওহাবী
ইহুদী সরকার কর্তৃক মনগড়া পদ্ধতি অবলম্বন
পবিত্র হাদীছ
শরীফ উনার অনুসরণ না করে অর্থাৎ খালি চোখে চাঁদ দেখার চেষ্টা না করে সউদী ওহাবী ইহুদী
সরকার এ পর্যন্ত ৪টি মনগড়া পদ্ধতি অবলম্বন করেছে-
১) প্রথম মনগড়া পদ্ধতি (১৯৫০-১৯৭২ ঈসায়ী) : সূর্যাস্তের
সময় চাঁদ দিগন্তরেখার ৯ উপরে অবস্থান করলে মাস শুরু করতো। নাঊযুবিল্লাহ! অথচ সূর্যাস্তের
সময় চাঁদ দিগন্তরেখার ৯ উপরে অবস্থান করলেই আরবী মাস শুরু করা যায় না। চাঁদ শুধু ৯
নয়;
তারচেয়ে বেশি উচ্চতায় থাকলেও দৃশ্যমান নাও হতে পারে। সম্মানিত
শরীয়ত অনুযায়ী চাঁদ তালাশ করতে হবে এবং মাস শুরু করার জন্য খালি চোখে চাঁদ দেখতে হবে।
২) দ্বিতীয়
মনগড়া পদ্ধতি (১৯৭৩-১৯৯৮ ঈসায়ী) : মধ্য রাতের পূর্বে অমাবস্যা সংঘটিত হলে পরের দিন
থেকে নতুন মাস শুরু করতো। আবার সূর্যাস্তের সময় চাঁদের বয়স ১২ ঘণ্টার বেশি হলে নতুন
মাস শুরু করতো।নাঊযুবিল্লাহ!অথচ মহাকাশ বিজ্ঞানের তথ্যানুযায়ী ২৯তম দিন শেষে চাঁদ দেখতে
পাওয়ার সর্বনিম্ন বয়স হলো ১৭ ঘন্টা থেকে ২৩ ঘণ্টা, এর পূর্বে চাঁদ খালি চোখে দেখা যাওয়ার আকৃতিতে আসে না।
৩) তৃতীয়
মনগড়া পদ্ধতি (১৯৯৮/৯৯-২০০১ ঈসায়ী) : সূর্যাস্তের ১ মিনিট পরেও চন্দ্র অস্ত গেলে নতুন
মাস শুরু করতো।নাঊযুবিল্লাহ!অথচ সূর্যাস্তের পরে অমাবস্যার চাঁদও অস্ত যেতে পারে, তখন কোনভাবেই নতুন মাস শুরু হতে পারে না। আর যদি নতুন চাঁদও
অস্ত যায়,
সে সময় উক্ত চাঁদ খালি চোখে দেখা যাওয়ার আকৃতিতে নাও আসতে পারে, ফলে নতুন মাস কোনভাবেই গণনা সম্ভব নয়।
৪) চতুর্থ
মনগড়া পদ্ধতি (২০০৩ ঈসায়ী-বর্তমান সময় পর্যন্ত) : যদি সূর্যাস্তের পর চন্দ্র অস্ত যায়
এবং সূর্যাস্তের পূর্বে অমাবস্যা সংঘটিত হয়, তবে পরের দিন থেকে নতুন মাস শুরু করে। নাঊযুবিল্লাহ!
চাঁদ যদি
সূর্যাস্তের পর অস্ত যায় এবং অমাবস্যা যদি সূর্যাস্তের পূর্বেই সংঘটিত হয়, তারপরও চাঁদ খালি চোখে দেখা যাওয়ার আকৃতিতে নাও আসতে পারে। কেননা
উপরের কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করেই আরবী মাস শুরু করা সম্মানিত শরীয়ত উনার নির্দেশ নয়
বরং সম্মানিত শরীয়ত অনুযায়ী চাঁদ খালি চোখে দেখে মাস শুরু করতে হবে।
উপরোক্ত আলোচনার
প্রেক্ষিতে সমাজে তিন শ্রেণীর লোক দৃষ্টিগোচর হয়ে থাকে। এক শ্রেণীর লোক স্বাভাবিকভাবেই
উপরোক্ত আলোচনা বিশ্বাস করবেন, যাদের পবিত্র হাদীছ
শরীফ উনার জ্ঞান আছে এবং যারা সউদী ওহাবী ইহুদীদের অন্যান্য অপকর্ম সম্পর্কে জ্ঞাত
আছেন।
অন্য এক শ্রেণীর
লোক আছে,
যারা উপরোক্ত আলোচনা বিশ্বাস করার জন্য দলীল চাইবে। অর্থাৎ উপরোক্ত
আলোচনার সত্যতার প্রমাণ চাইবে।
আরেক গ-মূর্খ
শ্রেণী রয়েছে, যারা বলবে সউদী আরব কি কম বুঝে? সেখানে কি আলিম-উলামা নেই, মহাকাশ বিজ্ঞানী নেই? এই শ্রেণী সউদী ওহাবী
ইহুদী সরকারের অপকর্মগুলোকে নানা ভ্রান্ত যুক্তি দাঁড় করিয়ে হলেও বিশ্বাস করতে চায়।
দ্বিতীয় মনগড়া
পদ্ধতিতে মাস গণনার প্রমাণ :অনেকেই মনে করে থাকে যে, সউদীওহাবী ইহুদী সরকার হয়তো চাঁদ দেখে আরবী মাস শুরু করে,আসলে তা নয়। বিগত বছরগুলোতে মহাকাশ বিজ্ঞানীসহ সাধারণ মানুষের
কাছে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, যদি খালি চোখে চাঁদ
দেখে আরবী মাস শুরু করাকে বিবেচনায় আনা হয়, তাহলে সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার সঠিক তারিখে আরবী মাস শুরু করেনি।
উবংপৎরঢ়ঃরড়হ:
ঈ:॥টংবৎং॥ঁংবৎ॥চরপঃঁৎবং॥ঃবষব.লঢ়ম
চিত্র :
“মাজলিশ-আল-ইফতা আল আ’লা” কর্তৃক জর্দান মহাকাশ বিষয়ক সংস্থাকে প্রেরিতটেলিগ্রামের
নমুনা
ঘটনাক্রমেসউদীওহাবী
ইহুদী সরকারেরসর্বোচ্চ ধর্মীয় কাউন্সিল “মাজলিশ-আল-ইফতা আল আ’লা” থেকে জর্দান মহাকাশ
বিষয়ক সংস্থা একটি টেলিগ্রাম পায়, যাতে ধরা পড়ে সউদী
ওহাবীইহুদী সরকার খালি চোখে চাঁদ দেখে আরবী মাস শুরু করেনা; বরং তাদের নিজস্ব মনগড়া নিয়ম অনুযায়ী আরবী মাস ঘোষণা করে।তাদের
এই মনগড়া নিয়ম হচ্ছে সূর্যাস্তের সময় চাঁদের বয়স ১২ ঘণ্টার বেশি হলে নতুন আরবী মাস
শুরু হবে।কিন্তু বাস্তবে কোনোদিন এই নিয়মে চাঁদ দেখে আরবী মাস শুরু করা সম্ভব নয়।১৯৭৩
থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত তাদের এই মনগড়া নিয়ম বলবৎ ছিল।
তৃতীয় মনগড়া
পদ্ধতিতে মাস গণনার প্রমাণ :সাধারণত অমাবস্যার পর নতুন চাঁদের জন্ম হয়।সেই নতুন চাঁদ
যখন পশ্চিমাকাশে খালি চোখে দেখা যায়, তখন নতুন আরবী মাস গণনা শুরুহয় আর চাঁদ দেখানা গেলে পুরানো মাস ত্রিশ দিনে গণনা
করা হয়।
উবংপৎরঢ়ঃরড়হ:
ঈ:॥টংবৎং॥ঁংবৎ॥চরপঃঁৎবং॥হবপিৎর.লঢ়ম
চিত্র : সউদীশূরা
কাউন্সিলের বর্ণিত মনগড়া নিয়মের চিত্রিক নমুনা
সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার ১৯৯৯ সাল থেকে আরবী মাস গণনার
ক্ষেত্রে তৃতীয় মনগড়া নিয়ম চালু করে,যা ২০০১ সাল পর্যন্ত বলবৎ ছিল। এই মনগড়া নিয়মে বলা হয়- মাসের ২৯তম দিনে যদি পবিত্র
মক্কা শরীফ উনার আকাশে সূর্যাস্তের পরে চাঁদ অস্ত যায়, তবেই নতুন মাস শুরু হবে।এই নতুন মনগড়া নিয়মেও খালি চোখে চাঁদ
দেখে মাস শুরু করাকে গুরুত্ব দেয়া হয়নি। আর মহাকাশ বিজ্ঞানের তথ্য অনুযায়ী, চাঁদ অমাবস্যাতে পৌঁছানোর পূর্বেও এমন হতে পারে যে সূর্যাস্তের
পরেই চাঁদ অস্ত যাবে। অর্থাৎ শুধু সূর্যাস্তের পরে চাঁদ অস্ত যাওয়ার বিষয় বিবেচনা করে
মাস শুরু করা অর্থহীন।
সউদী ওহাবী
ইহুদী সরকার কর্তৃক দ্বিতীয় মনগড়া পদ্ধতি রহিত করে তৃতীয় মনগড়া পদ্ধতি চালু করার কারণে
তাদের নিজেদের ক্যালেন্ডারেই দুই রকম তারিখ পরিলক্ষিত হয়। ১৯৯৯ সালে যখন তৃতীয় মনগড়া
পদ্ধতি চালু করে, তখন তাদের পূর্ববর্তী
অর্থাৎ দ্বিতীয় মনগড়া পদ্ধতিতে রচিত (যা ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত অনুসরণ করা হয়েছে) ক্যালেন্ডারে
১৪২০ হিজরী সনের পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনারপহেলা তারিখ উল্লেখ আছে ৮ ডিসেম্বর।
আর নতুন নিয়মে বা তৃতীয় মনগড়া পদ্ধতিতে রচিত(যা ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত অনুসরণ
করা হয়েছে) ক্যালেন্ডারে ১৪২০ হিজরী সনের পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনারপহেলা তারিখ
উল্লেখ আছে ৯ ডিসেম্বর।
অর্থাৎ একই
বছরের (১৪২০ হিজরী সনের) পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনারপহেলা তারিখ পুরাতন বা দ্বিতীয়
মনগড়া পদ্ধতিতে ৮ ডিসেম্বর আর নতুন বা তৃতীয় মনগড়া পদ্ধতিতে ৯ ডিসেম্বর উল্লেখ আছে।
অথচ দুটো
তারিখই ভুল। চাঁদের সঠিক হিসাব অনুযায়ী ওই বছর পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার প্রথম
তারিখ শুরু করা উচিত ছিল ১০ ডিসেম্বর।
উবংপৎরঢ়ঃরড়হ:
ঈ:॥টংবৎং॥ঁংবৎ॥চরপঃঁৎবং॥পধষবহ.লঢ়ম
চিত্র : সউদী
ওহাবী ইহুদী সরকার কর্তৃক দুইটি আলাদা মনগড়া পদ্ধতিতে রচিত ১৪২০ হিজরী সনের পবিত্র
রমাদ্বান শরীফ মাস উনার ক্যালেন্ডারের দুইটি পাতা
উপরের ডান
দিকের ছবিতে দেয়া আছে- ১৪২০ হিজরী সনের পহেলা রমাদ্বান শরীফ ৮ ডিসেম্বর আর বাঁয়ের ছবিতে
দেয়া আছে ১৪২০ হিজরী সনের পহেলা রমাদ্বান শরীফ ৯ ডিসেম্বর।
চতুর্থ মনগড়া
পদ্ধতিতে মাস গণনার প্রমাণ : ২০০৩ ঈসায়ী (১৪২৩ হিজরী) থেকে সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার
নতুন বানানো একটি নিয়মে অর্থাৎ চতুর্থ মনগড়া পদ্ধতিতে আরবী মাস গণনা করে যাচ্ছে। তাদের
উম্মুল কুরার প্রশাসনিক ওয়েব সাইটে পদ্ধতিটি বর্ণিত হয়েছে এভাবে যে-
১.যদি সূর্যাস্তের
পূর্বে জিওসেন্ট্রিক অমাবস্যা সংঘটিত হয়,
২. আর সূর্যাস্তের
পর চন্দ্রাস্ত হয়,
তাহলে পরের
দিন থেকে নতুন মাসের প্রথম দিন শুরু হবে।
উবংপৎরঢ়ঃরড়হ:
ঈ:॥টংবৎং॥ঁংবৎ॥চরপঃঁৎবং॥ঁসসঁষয়ঁৎধয.লঢ়ম
চিত্র : উম্মুল
কুরার প্রশাসনিক ওয়েব সাইটে বর্ণিত চতুর্থ মনগড়া পদ্ধতির শর্তদ্বয়
লক্ষ্যণীয়
যে,
এ পদ্ধতিতেও খালি চোখে চাঁদ দেখাকে উপেক্ষা করা হয়েছে। পূর্বেই
উল্লেখ করা হয়েছে, সউদী ওহাবী ইহুদী
সরকারের চাঁদ নিয়ে ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সমাজে তিন শ্রেণীর লোক পরিলক্ষিত হয়। এক শ্রেণীর
লোক যাদের চাঁদ বিষয়ক পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার জ্ঞান রয়েছে এবং সউদী ওহাবী ইহুদীদের
অন্যান্য অপকর্ম সম্পর্কে উনারা জ্ঞাত আছেন। দলীল-প্রমাণ উপস্থাপন করায় স্বাভাবিকভাবেই
উনাদের বিশ্বাস আরো দৃঢ় হবে আশা করা যায়।
দ্বিতীয় শ্রেণীর
যারা দলীল-প্রমাণতলব করে থাকে তাদের জন্য যথেষ্ট ণ দলীল-প্রমাণ ইতোমধ্যে উপস্থাপিত
হয়েছে এবং সামনে আরো হবে।
তৃতীয় শ্রেণী
যারা চিন্তা-ভাবনা করে থাকে যে, সউদী সরকার কি কম
বুঝে?
সেখানে কি আলিম-উলামা নেই, মহাকাশ বিজ্ঞানী নেই? তাদের জ্ঞাতার্থে
বলতে হয়- উপরোক্ত তথ্যগুলো সউদী ওহাবী ইহুদী সরকারের মহাকাশ বিজ্ঞানীদের পক্ষ থেকেই
এসেছে। আর পবিত্র কুরআন শরীফ-পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের খিলাফ করে কোনো নামধারী আলিম-উলামার
মনগড়া ফতওয়া গ্রহণযোগ্য নয়।
সম্মানিত
দ্বীন ইসলাম উনার নাম দিয়ে কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী কোন কাজ করলেই তা ইসলামী কাজ বা সম্মানিত
শরীয়ত সমর্থিত কাজ হয়না। সম্মানিত শরীয়ত উনার জায়িয কাজগুলোর পেছনে থাকে পবিত্র কুরআন
শরীফ,
পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের সমর্থন। আর যখন কোন ব্যক্তি বা
কোন কর্তৃপক্ষের কাজ সম্মানিত শরীয়ত উনার সমর্থন হারায় অর্থাৎ সম্মানিত শরীয়ত উনার
আলোকে জায়িয প্রমাণিত হয় না, তখন অবশ্যই বলতে
হবে যে,
তার বা তাদের কাজগুলো নফস্ বা কুপ্রবৃত্তি দ্বারা প্ররোচিত এবং
কোন উদ্দেশ্য নিয়ে সংঘটিত। সেখানে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক
নেই বরং রয়েছে ইবলীস ও তার সহযোগি ইহুদী-নাছারাদের মনতুষ্টি।
সুতরাং সম্মানিত
শরীয়ত অনুযায়ী খালি চোখে চাঁদ দেখে আরবী মাস শুরু করা শর্তকে উপেক্ষা করে সউদী ওহাবী
ইহুদী সরকার যত পদ্ধতিই তৈরি করুক না কেন, সে অনুযায়ী আরবী মাস শুরু করলে মুসলমান উনাদের পবিত্র হজ্জ, রোযাসহ সম্মানিত শরীয়ত উনার অনেক আমল বরবাদ হয়ে যাবে এবং যাচ্ছে।
আর উক্ত মনগড়া নিয়মে আরবী মাস গণনা করায় সে দেশসহ অনুসারী সবার সমস্ত আমল নষ্টের দায়-দায়িত্ব
সউদী ওহাবীইহুদী সরকারকেই নিতে হবে।
ভুল পদ্ধতিতে
সউদী ওহাবী ইহুদী সরকারের আগাম ক্যালেন্ডার রচনা
চাঁদ দেখে
মাস গণনা করা সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার একটি অপরিহার্য বিধান। অথচ সউদী ওহাবী ইহুদী
সরকারের উম্মুল কুরা চাঁদ না দেখে তাদের মনগড়া পদ্ধতিতে সারা বছরের জন্য একটি ক্যালেন্ডার
রচনা করে এবং তা অনুসরণ করে তারিখ গণনা করে যাচ্ছে যা কখনোই সম্মানিত ইসলামী শরীয়তসম্মত
নয়। যে ক্রাইটেরিয়া বা শর্ত দিয়ে তারা এই ক্যালেন্ডার রচনা করে সেটাই ভুলে ভরা অর্থাৎ
সে অনুযায়ী আকাশে চাঁদ দৃশ্যমান অবস্থায় আসেনা ফলে সঠিক তারিখে মাস শুরু হয়না। চাঁদের
আগাম ক্যালেন্ডার রচনা করা সম্ভব কিন্তু তা করতে প্রথমত প্রয়োজন সঠিক ক্রাইটেরিয়া বা
শর্ত আর দ্বিতীয়ত প্রয়োজন চাঁদ দেখা না গেলে যে তারিখে মাস শুরু হবে তার উল্লেখ।
উল্লেখ্য, সঠিক শর্ত বা ক্রাইটেরিয়া অনুযায়ী চাঁদের আগাম ক্যালেন্ডার রচিত
থাকলেও আকাশে চাঁদ তালাশ করতেই হবে যেহেতু প্রতিমাসে চাঁদ তালাশ করা ওয়াজিবে কিফায়া।
মাত্র তিনটি
মাসে সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার
কর্তৃক নামেমাত্র
চাঁদ তালাশের আয়োজন
সম্মানিত
ইসলামী শরীয়ত উনার খাছ ফতওয়া অনুযায়ী প্রতি মাসেই চাঁদ তালাশ করা ওয়াজিবে কিফায়া। পবিত্র
রমাদ্বান শরীফ মাস উনার তারিখ সঠিক দিনে শুরু করতে হলে পূর্ববর্তী পবিত্র শা’বান শরীফ
মাস উনার তারিখ জানা প্রয়োজন। একইভাবে পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার তারিখ শুরু করার
পূর্বে পবিত্র যিলক্বদ শরীফ মাস উনার তারিখও জানা জরুরী। এ কারণে সকল মাসের চাঁদ তালাশ
করা সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী ওয়াজিবে কিফায়া। কিন্তু সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার
মূলত পবিত্র রমাদ্বান শরীফ, পবিত্র শাওওয়াল শরীফ
এবং পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ এই তিন মাস উনার চাঁদ তালাশের আয়োজন করে। বাকি মাসগুলো উম্মুল
কুরা ক্যালেন্ডারকে অনুসরণ করে। কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার এই
তিন মাসে চাঁদ তালাশের নামমাত্র আয়োজন করে বাস্তবে তারা তাদের আগাম রচিত উম্মুল কুরা
ক্যালেন্ডারকেই অনুসরণ করে। অথচ প্রতি মাসে চাঁদ তালাশ করা ওয়াজিবে কিফায়া হলেও প্রতিমাসে
সঠিক তারিখে মাস শুরু করা ফরয। কিন্তু সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার যে পদ্ধতিতে আরবী মাস
উনাদের তারিখ ঘোষণা করে তাতে চাঁদ দেখে আরবী মাস শুরু হয়না এমনকি অনেক মাস উনার ত্রিশতম
দিনেও চাঁদ দৃশ্যমান হয়না।
চাঁদনা দেখে
আরবী মাস শুরু করে আবার তারিখ পরিবর্তন
উবংপৎরঢ়ঃরড়হ:
ঈ:॥টংবৎং॥ঁংবৎ॥চরপঃঁৎবং॥ঈধঢ়ঃঁৎব.চঘএ১২.চঘএ১৪২৫ হিজরী সনে উম্মুল কুরা ক্যালেন্ডারে
পবিত্র পহেলা যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার তারিখ ছিলো ১২ জানুয়ারী ২০০৫ ঈসায়ী, ইয়াওমুল আরবিয়া বা বুধবার। কিন্তু হঠাৎ করেই সউদী জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট
জানুয়ারীর ১৪ তারিখে অর্থাৎ মাস শুরু হওয়ার কয়েকদিন পর পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার
তারিখ এগিয়ে নিয়ে আসে। নাঊযুবিল্লাহ!
উবংপৎরঢ়ঃরড়হ:
ঈ:॥টংবৎং॥ঁংবৎ॥চরপঃঁৎবং॥ঈধঢ়ঃঁৎব.চঘএ১১লধহ.চঘএপাশের চিত্রে দেখা যাচ্ছে, সউদী চাঁদ বিষয়ক কর্তৃপক্ষ প্রেস রিলিজটিতে ১২ জানুয়ারী ২০০৫
ঈসায়ী সালে ইয়াওমুল আরবিয়া বা বুধবার পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার পহেলা তারিখ ঘোষণা
করে এবং সে অনুযায়ী ২১ জানুয়ারী ২০০৫ ঈসায়ী ছিল পবিত্র ঈদুল আদ্বহা পালনের দিন। বাস্তবে
১১ জানুয়ারী ২০০৫ ঈসায়ী, ইয়াওমুছ ছুলাছা বা
মঙ্গলবার দিবাগত সন্ধ্যায় সউদী আরবের পবিত্র মক্কা শরীফ উনার আকাশে চাঁদ দেখাও গিয়েছিল।
কিন্তু ১৪ জানুয়ারী ২০০৫ ঈসায়ী তারিখে এসে তারা নতুন প্রেস রিলিজ দেয়। নাঊযুবিল্লাহ!
পাশের চিত্রে
প্রদর্শিত নতুন প্রেস রিলিজে সউদী কর্তৃপক্ষ বলে- পবিত্র যিলহজ্জ মাস উনার পহেলা তারিখ
হচ্ছে ১১ জানুয়ারী ২০০৫ ঈসায়ী, ইয়াওমুছ ছুলাছা বা
মঙ্গলবার। আর ঈদুল আদ্বহা পালন করতে হবে ২০ জানুয়ারী ২০০৫ ঈসায়ী, ইয়াওমুল খ¦মীস বা বৃহস্পতিবার। নাঊযুবিল্লাহ!
অথচ ১০ তারিখে
সূর্য অস্ত যাওয়ার পূর্বেই চাঁদঅস্ত গিয়েছিল। অর্থাৎ চাঁদদেখা যায়নি। তাহলে সঠিক তারিখে
মাস শুরু হওয়ার পর আবার মনগড়া তারিখে সউদী ওহাবী ইহুদী সরকারের মাস শুরু করার কোনো
ব্যাখ্যা কি কেউ দিতে পারবেন?
সউদী ওহাবী
ইহুদী সরকার কর্তৃক চাঁদ দেখার মিথ্যা সাক্ষী যোগাড়
১৪২৫ হিজরী
উম্মুল কুরার ক্যালেন্ডারে পহেলা যিলহজ্জ শরীফ উনার তারিখ ছিলো ১২ই জানুয়ারী। কিন্তু
সউদী জুডিশিয়াল ডিপার্টমেন্ট ১১ জানুয়ারী থেকে মাস শুরু করে। সে বছর ইয়াওমুল ইছনাইনিল
আযীম শরীফ ১০ই জানুয়ারী দিবাগত সন্ধ্যায় আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন, চাঁদ দেখা যায়নি। কিন্তু রাতে দুজন সাক্ষী এসে উপস্থিত হয় এবং
তারা চাঁদ দেখার দাবি করে। তাদের মিথ্যা সাক্ষ্য অনুযায়ী পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার
তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিলো।
এখন সউদী
আরবে এই মিথ্যা সাক্ষীর বিষয়টি একটি সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রিয়াদ থেকে মাঝে মাঝে
কয়েকজন সাক্ষী এসে এমন সময় চাঁদ দেখার খবর পরিবেশন করে যেদিন পৃথিবীর কোথাও চাঁদ দৃশ্যমান
হয় না।
উদাহরণ হিসেবে
১৪৩৫ হিজরী সনের পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার চাঁদের প্রতিবেদন এখানে উপস্থাপন করা
হলো।
২৪শে সেপ্টেম্বর
২০১৪ সউদী আরবে চাঁদের অবস্থান ছিল নিম্নরূপ-
চাঁদের বয়স
১০ ঘণ্টা
৫৭ মিনিট
চাঁদ দেখা
যায়নি এবং দেখা যাওয়ার কোনো সম্ভাবনাও ছিল না কিন্তু সউদী ওহাবী সরকার মিথ্যা সাক্ষীর
সাক্ষ্য অনুযায়ী পবিত্র যিলহজ্জ মাস উনার তারিখ
ঘোষণা করে। নাঊযুবিল্লাহ!
চাঁদের উচ্চতা
১৪ মিনিট
কৌণিক দূূরত্ব
৪ ২
চন্দ্রাস্ত
ও সূর্যাস্তের সময়ের পার্থক্য
৫ মিনিট
সউদী ওহাবী
ইহুদী সরকার কর্তৃক ৩১ দিনে আরবী মাস গণনা
আরবী মাস
হয় ২৯ বা ৩০ দিনে হবে। এটাই সম্মানিত শরীয়ত উনার বিধান। কিন্তু সউদী সরকার যেহেতু ওহাবী
এবং ইহুদী। ফলে তাদের শরীয়তভিন্ন। যদি তাই না হয়, তবে কেন আরবী মাস ৩১ দিনে গণনা করে? নাঊযুবিল্লাহ! ১৪২৮ হিজরী সনের পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস শুরু হয়েছিলো ১০ই ডিসেম্বর২০০৭
তারিখে। আর ৯ই জানুয়ারী, ইয়াওমুল আরবিয়া বা
বুধবার,
২০০৮-এ পবিত্র মুহররমুল হারাম শরীফ মাস উনার চাঁদ দেখতে পায়।
এই দুই তারিখের সময়ের ব্যবধান ছিল ৩১ দিন। নাঊযুবিল্লাহ! ৩১ দিনের একদিন গোপন করার
উদ্দেশ্যে তারা ২৮শে ডিসেম্বর এবং ২৯শে ডিসেম্বর এই উভয়দিনকে ১৯শে যিলহজ্জ শরীফ বলে
চালিয়ে দেয়।নাঊযুবিল্লাহ!
চিত্র :সউদী
ওহাবী ইহুদী সরকার কর্তৃক ১৪২৮ হিজরী সনের পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস হেরফেরের নমুনা
১৪২৮ হিজরী
সনে অর্থাৎ ২০০৭ ঈসায়ী সালে বাংলাদেশ পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার চাঁদ দেখতে পেয়েছে
১১ই ডিসেম্বর, ইয়াওমুছ ছুলাছা বা মঙ্গলবার। সউদীতে
চাঁদ দেখার কথা ছিল বাংলাদেশের প্রায় ৩ ঘণ্টা পর। অথচ সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার চাঁদ
না দেখেই ঘোষণা দিয়েছিল যে, তারা চাঁদ দেখতে
পেয়েছে ইয়াওমুল আহাদ বা রবিবার, ৯ই ডিসেম্বর। সে
অনুযায়ী অকুফে আরাফা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৮ই ডিসেম্বর এবং ঈদুল আদ্বহা পালিত হয়েছিল ১৯
ডিসেম্বর। প্রকৃতপক্ষে অকুফে আরাফা অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত ছিল ২০শে ডিসেম্বর, ইয়াওমুল খ¦মীস বাবৃহস্পতিবার এবং পবিত্র ঈদুল আদ্বহা পালিত হওয়া উচিত ছিল
২১শে ডিসেম্বর, ইয়াওমুল জুমু‘আহ বা জুমুয়াবার।
কেননা, ১.জিরোমুন অর্থাৎ অমাবস্যা সংঘটিত হয়েছিল ৯ই ডিসেম্বর, ইয়াওমুল আহাদ বারোববার, ১৭টা ৪০ মিনিট ২৫ সেকেন্ড (আন্তর্জাতিক সময় অনুযায়ী) এবং কে.এম.টি বা সউদী সময়
অনুযায়ী রাত ৮টা ৪১ মিনিটে।
২. সেদিন
অর্থাৎ ৯ই ডিসেম্বর ইয়াওমুল আহাদ বা রোববার পবিত্র মক্কা শরীফ উনার আকাশেচাঁদ অস্ত
যায় ৫টা ১৬ মিনিটে এবং সূর্য অস্ত যায় চাঁদ অস্তযাওয়ার ২২ মিনিট পর।সূর্য অস্ত যাওয়ার
পূর্বেই যে চাঁদ অস্ত যায়, সউদী আরব কি করে
সেইচাঁদ দেখতে পেয়েছিলো?
৩. অমাবস্যার
একদিন পূর্ব থেকেই যখন চাঁদ অদৃশ্য হয়ে যায় সেখানে অমাবস্যায় যাওয়ার ৩ ঘণ্টা পূর্বেই
কি করে সউদী সরকার চাঁদ দেখতে পেয়েছিলো?তাদের সৃষ্ট এ ভুলের কারণেই পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস ৩১ দিনে গুণতে হয়েছিলো। নাঊযুবিল্লাহ!
সউদীদের গণনাকৃত
ক্যালেন্ডারের সাথে ইহুদীদের ক্যালেন্ডারের সাদৃশ্যতা
সউদী ওহাবী
ইহুদী সরকার যুগ যুগ ধরে মনগড়াভাবে আরবী মাসের তারিখ গণনা করে যাচ্ছে। পবিত্র যিলহজ্জ
শরীফ মাস উনার তারিখ সঠিকভাবে শুরু না হওয়ার কারণে পবিত্র হজ্জ বাতিল হচ্ছে। তাদের
পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার তারিখ ঘোষণার সাথে ইহুদীদের ক্যালেন্ডারের মিল অবাক করার
মতো বিষয়। সঠিক তারিখে চাঁদ দেখে আরবী মাস শুরু হলে ইহুদীদের ক্যালেন্ডারের সাথে কোনোভাবেই
সাদৃশ্য হতো না। কেননা পবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ী আরবী মাস গণনা করা হয় নতুন বাঁকা
চাঁদ খালি চোখে দেখার মাধ্যমে আর ইহুদীরা চন্দ্রমাস গণনা করে অমাবস্যা থেকে। কিন্তু
ইহুদীদের ক্যালেন্ডারের সাথে মিল রেখে অমবস্যার হিসাব অনুযায়ী আরবী মাস গণনা করার কারণে
সউদী আরবে বিগত ১৫ বছরে মাত্র ২টি বছর ছাড়া বাকী সব বছরে পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস ইহুদীদের
ক্যালেন্ডার অনুযায়ী শুরু হয়েছে। নাঊযুবিল্লাহ! সউদী ওহাবীরা ইহুদীদের সাথে মিলের বিষয়
লক্ষ্য রাখে কিন্তু মুসলমান উনাদের পবিত্র হজ্জ বাতিলের বিষয়টি উপেক্ষা করে। এতে কি
আবারও প্রমাণিত হয় না যে, এরা আসলে ইহুদীদের
বংশধর এবং ইহুদী?
ইহুদী ক্যালেন্ডার
সউদী ক্যালেন্ডার
১লা তিসরি
১লা যিলহজ্জ
শরীফ ১৪৩৫ হিজরী
(২৫ সেপ্টেম্বর
২০১৪,
খ¦মীস বা বৃহস্পতিবার)
২রা চেশভান
১লা যিলহজ্জ
শরীফ ১৪৩৪ হিজরী
(৬ অক্টোবর
২০১৩,
আহাদ বা রোববার)
১লা চেশভান
১লা যিলহজ্জ
শরীফ ১৪৩৩ হিজরী
(১৭ অক্টোবর
২০১২,
আরবিয়া বা বুধবার)
১লা চেশভান
(সূর্যাস্তের পর)
১লা যিলহজ্জ
শরীফ ১৪৩২ হিজরী
(২৮ অক্টোবর
২০১১,
জুমু‘আ বা জুমুয়াবার)
১লা কিস্লেভ
(সূর্যাস্তের পর)
১লা যিলহজ্জ
শরীফ ১৪৩১ হিজরী
(৭ নভেম্বর
২০১০,
আহাদ বা রোববার)
১লা কিস্লেভ
১লা যিলহজ্জ
শরীফ ১৪৩০ হিজরী
(১৮ নভেম্বর
২০০৯,
আরবিয়া বা বুধবার)
২রা কিস্লেভ
১লা যিলহজ্জ
শরীফ ১৪২৯ হিজরী
(২৯ নভেম্বর
২০০৮,
সাবত বা শনিবার)
১লা তেভাত
১লা যিলহজ্জ
শরীফ ১৪২৮ হিজরী
(১০ ডিসেম্বর
২০০৭,
ইছনাইনিল আযীম বা সোমবার)
১লা তেভাত
(সূর্যাস্তের পর)
১লা যিলহজ্জ
শরীফ ১৪২৭ হিজরী
(২১ ডিসেম্বর
২০০৬,
খ¦মীস বা বৃহস্পতিবার)
১লা তেভাত
১লা যিলহজ্জ
শরীফ ১৪২৬ হিজরী
(১লা জানুয়ারী
২০০৬,
আহাদ বা রোববার)
১লা শেভাত
১লা যিলহজ্জ
শরীফ ১৪২৫ হিজরী
(১১ জানুয়ারী
২০০৫,
ছুলাছা বা মঙ্গলবার)
১লা শেভাত
১লা যিলহজ্জ
শরীফ ১৪২৪ হিজরী
(২৩ জানুয়ারী
২০০৪,
জুমু‘আহ বা জুমুয়াবার)
১লা আদার
১লা যিলহজ্জ
শরীফ ১৪২৩ হিজরী
(২রা ফেব্রুয়ারী
২০০৩,
আহাদ বা রোববার)
১লা আদার
১লা যিলহজ্জ
শরীফ ১৪২২ হিজরী
(১৩ ফেব্রুয়ারী
২০০২,
আরবিয়া বা বুধবার)
১লা আদার
১লা যিলহজ্জ
শরীফ ১৪২১ শরীফ
(২৪ ফেব্রুয়ারী
২০০১,
সাবত বা শনিবার)
ইহুদীদের
হিব্রু ক্যালেন্ডারে দিনগুলোর নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য নেই। সাধারণত সূর্যাস্ত থেকে সূর্যাস্ত
ধরা হলেও উঁচু অক্ষাংশের দেশে যখন সূর্য ডুবে না তখন দুপুর থেকে দুপুর। আর যখন সূর্য
দিগন্ত রেখার উপরে উঠে না তখন মধ্যরাত্রি থেকে মধ্যরাত্রি। আরো একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ
যে,
হিব্রু ক্যালেন্ডারকে বলা হয় লুনিসোলার (ষঁহরংড়ষধৎ)অর্থাৎ মাস
গণনা হয় চাঁদের সাপেক্ষে আর বছর গণনা হয় সূর্যের সাপেক্ষে। তারা অমাবস্যার চাঁদ অনুযায়ী
মাস শুরু করার কথা বললেও বর্তমানে গাণিতিকভাবে অমাবস্যার চাঁদের অবস্থান নির্ণয় করে
মাস শুরু করে। তাদের মাস গণনা পদ্ধতি হচ্ছে ৩০-২৯-৩০-২৯ এরকম। তাহলে মুসলমান উনাদের
আরবী ক্যালেন্ডারের সাথে মিল থাকার কোনো কারণই নেই। যদি মিলে যায় তাহলে বুঝতে হবে আরবী
মাসের গণনা সঠিক হচ্ছে না বা তা হিব্রু ক্যালেন্ডারের সাথে মিল রেখেই তৈরি করা হচ্ছে।
অমাবস্যার
দিন চাঁদ দেখার দাবী করে আরবী মাসের তারিখ ঘোষণা
প্রকৃতপক্ষে
সউদী আরবে কোনো মাসই চাঁদ দেখে শুরু হয় না, তাই মানুষের উপলব্ধির জন্য এখানে ২৬ বছরের তিনটি মাসের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে
দেখানো হলো।
১৪০০ হিজরী
থেকে ১৪২৫ হিজরী এই ২৬ বছরে পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস, পবিত্র শাওওয়াল শরীফ মাস, পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস এই তিন মাস যেদিন সউদী আরবে শুরু হয়েছে তা পর্যবেক্ষণ
করে নিচের তথ্য পাওয়া গেছে।
মাস
চাঁদ দেখা
একবারেই অসম্ভব ছিল
সম্ভব ছিল
না
সম্ভব ছিল
পরিমাণ
%
পরিমাণ
%
পরিমাণ
%
পবিত্র রমাদ্বান
শরীফ মাস :(মোট ২৬টি রমাদ্বান শরীফ)
১২ বার
৪৬%
৯ বার
৩৫%
৫ বার
১৯%
পবিত্র শাওওয়াল
শরীফ মাস :(মোট ২২টি শাওওয়াল শরীফ)
১১ বার
৫০%
৬ বার
২৭%
৫ বার
২৩%
পবিত্র যিলহজ্জ
শরীফ মাস :(মোট ২৬টিযিলহজ্জ শরীফ)
৮ বার
৩১%
১২ বার
৪৬%
৬ বার
২৩%
এখানে ‘একেবারেই
অসম্ভব’ বলতে সূর্যাস্তের পূর্বেই চাঁদ অস্ত গিয়েছিল। ‘সম্ভব ছিলো না’ বলতে সূর্যাস্তের
পর চাঁদ অস্ত গিয়েছিল। আর ‘সম্ভব ছিলো’ বলতে কখনো খালি চোখে কখনো যন্ত্রের সাহায্যে
দেখার সম্ভাবনা ছিল।
এখানে কতগুলো
বিষয় গুরুত্বপূর্ণ এই যে, সূর্যাস্তের পর চাঁদ
অস্ত গেলেই চাঁদ দৃশ্যমান হয় না। আবার যন্ত্রের সাহায্যে চাঁদ দেখতে পেলেও তা আরবী
মাস গণনা শুরু করার জন্য প্রযোজ্য নয়।
উদাহরণ হিসেবে
আরো বলা যেতে পারে,১৪২৮ হিজরী সনে সউদী
আরবের আকাশে পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার চাঁদ বাস্তবে দেখা গিয়েছিলো বাংলাদেশের সন্ধ্যার
তিন ঘণ্টা পর ১১ই ডিসেম্বর ইয়াওমুছ ছুলাছা বা মঙ্গলবার। কিন্তু সউদী সরকার মনগড়াভাবে
পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার চাঁদ দেখার দাবী করেছিলো ৯ই ডিসেম্বর অমাবস্যার দিন।
এরকম অনেক প্রমাণ রয়েছে।
প্রেক্ষিত
কারণেই বলতে হয়, অমাবস্যা হচ্ছে সেই দিন যেদিন চাঁদ
কখনোই দৃশ্যমান হয় না। ফলে সেদিন চাঁদ দেখার দাবী করার মতো এতো স্পষ্ট মিথ্যা সউদী
ওহাবী ইহুদী সরকার কিভাবে করতে পারে এটাই বিশ্ববাসীর প্রশ্ন।
সউদী ওহাবী
ইহুদী সরকার কর্তৃক নাসী করা বা তারিখ আগ-পিছ করা
পবিত্র কুরআন
শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোকে নাসী করা বা মাস আগে-পিছে করা কঠিন হারাম কাজ
ও সুস্পষ্ট কুফরী, বরং এ গর্হিত কাজটি
কুফরীকে আরো বৃদ্ধি করে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের নির্দেশ মুবারক
উপেক্ষা করে সউদী ওহাবী সরকার প্রতি বছরই প্রত্যেক মাসে নাসী করে যাচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ!
সউদী আরবে
১৪২৯ হিজরী সনের পবিত্র মুহররমুল হারাম শরীফ মাস শুরু হয়েছিলো ১০জানুয়ারী থেকে। ১০ই
জানুয়ারী থেকে পবিত্র মুহররমুল হারাম শরীফ মাস গণনা শুরু করার পর যখন প্রমাণিত হয় যে, পূর্বের মাসটি অর্থাৎ পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাসটি ৩১ দিনে পূর্ণ
হয়েছিলো তখন পবিত্র মুহররমুল হারাম শরীফ মাস উনার চতুর্থ দিনে সউদী আরবের সুপ্রীম জুডিসিয়াল
কাউন্সিলের তৎকালীন প্রধান শায়েখ সালেহ আল হাইদান ঘোষণা দেয় যে, ৯ই জানুয়ারী ছিল পবিত্র মুহররমুল হারাম মাস উনার প্রথম তারিখ।নাঊযুবিল্লাহ!
চিত্র : সউদী
আরবের ১৪২৯ হিজরী সনের প্রেস রিলিজ
সুতরাং মাস
শুরু করার কয়েকদিন পর আবার তারিখ পরিবর্তন করা সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে মোটেও
গ্রহণযোগ্য নয়, বরং হারাম ও কুফরী।এছাড়াও ১৪২৫ হিজরীতে
উম্মুল কুরা ক্যালেন্ডারে পহেলা যিলহজ্জ শরীফ ছিলো ইয়াওমুল আরবিয়া বা বুধবার, ১২জানুয়ারী। কিন্তু হঠাৎ করেই সউদী জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট জানুয়ারীর
১৪ তারিখে অর্থাৎ মাস শুরু হওয়ার কয়েকদিন পর পবিত্র যিলহজ্জ মাস উনার তারিখ এগিয়ে নিয়ে
আসে।নাঊযুবিল্লাহ!
বাস্তবে ২০০৮
সালের ১১ জানুয়ারী, ইয়াওমুছ ছুলাছা বা
মঙ্গলবার সউদী আরবের পবিত্র মক্কা শরীফ উনার আকাশে চাঁদ দেখা গিয়েছিলো এবং সে অনুযায়ী
১২ জানুয়ারী ছিল পবিত্র পহেলা যিলহজ্জ শরীফ এবং ২১ জানুয়ারী ছিল পবিত্র ঈদুল আদ্বহা
পালনের দিন। কিন্তু ১৪ জানুয়ারী এসে তারা নতুন প্রেস রিলিজ দেয়। এই নতুন প্রেস রিলিজে
সউদী কর্তৃপক্ষ উল্লেখ করে- পহেলা যিলহজ্জ শরীফ হচ্ছে ১১ জানুয়ারী, ইয়াওমুছ ছুলাছা বা মঙ্গলবার আর পবিত্র ঈদুল আদ্বহা পালন করতে
হবে ২০ জানুয়ারী, ইয়াওমুল খ¦মীস বা বৃহস্পতিবার।
নাঊযুবিল্লাহ! অথচ ১০ তারিখ, ইয়াওমুল ইছনাইনিল
আযীম শরীফ সূর্য অস্ত যাওয়ার পূর্বেই চাঁদ অস্ত গিয়েছিল। অর্থাৎ সেদিন চাঁদ দেখা যায়নি।
চিত্র : জর্দানের
১৪২৯ হিজরী সনের প্রেস রিলিজ
চিত্র : সিরিয়ার
১৪২৯ হিজরী সনের প্রেস রিলিজ
চিত্র : বাহরাইনের
১৪২৯ হিজরী সনের প্রেস রিলিজ
চিত্র : কুয়েতের
১৪২৯ হিজরী সনের প্রেস রিলিজ
সউদী আরব
এবং তার অনুসরণকারী দেশগুলো (বাহরাইন, জর্ডান, কুয়েত, সিরিয়া) ১৪২৮ হিজরী উনার পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস ভুল তারিখে
শুরু করার কারণে মাসটি ৩১ দিনে গণনা করতে বাধ্য হয়। যার ফলে তারা এ বিষয়ে প্রেস রিলিজ
দিতে বাধ্য হয়।
সউদী ওহাবী
ইহুদী সরকার কর্তৃক
মেঘাচ্ছন্ন
অবস্থায়ও নতুন চাঁদের তারিখ ঘোষণা
উবংপৎরঢ়ঃরড়হ:
ঈ:॥টংবৎং॥ঁংবৎ॥চরপঃঁৎবং॥সঁয২৯থশঁ.িমরভপবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ী আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে
মাস ত্রিশ দিনে পূর্ণ করার নির্দেশ মুবারক রয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে মাসের ২৯তম দিনে
আকাশ মেঘলা থাকায় চাঁদ দেখা না যাওয়ার পরও সউদী ওহাবী সরকার আরবী মাস ত্রিশ দিনে পূর্ণ
না করে পরের দিন থেকেই নতুন তারিখ গণনা শুরু করেছে।
উদাহরণ হিসেবে
বলা যেতে পারে, ১৪২৯ হিজরীসনের পবিত্র রবীউল আউওয়াল
শরীফ মাস উনার ২৯তম দিনে সউদী আরবের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় চাঁদ দেখা যায়নি বলে জানা
যায়। কিন্তু সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার সেদিন চাঁদ দেখার দাবী করে পরের দিন থেকে রবীউছছানী
মাস গণনা শুরু করে। নাঊযুবিল্লাহ!
এরকম উদাহরণ
অনেক দেয়া যাবে, কারণ সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার যেহেতুচাঁদ
দেখাকে গুরুত্বই দেয় না ফলে আকাশ মেঘলা বা পরিষ্কার তাতে তাদের কিছুই আসে যায় না। নাঊযুবিল্লাহ!
অথচ পবিত্র
হাদীছ শরীফ উনার স্পষ্ট নির্দেশ মুবারক হচ্ছে- “চাঁদ দেখে রোযা পালন করো, চাঁদ দেখে রোযা ভঙ্গ করো, আর আকাশ মেঘলা থাকলে মাস ত্রিশ দিনে পূর্ণ করো।”
চাঁদের তারিখ
ঘোষণায় অতীতের ভুলের প্রামাণ্য দলীল
প্রামাণ্য
দলীল১ :সউদী আরবের চাঁদ গবেষক আদনান খাদী ১৯৬১ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত মোট ৪৪ বছরের
শুধু পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার তারিখ ঘোষণার একটি চিত্র তুলে ধরেন-
১) পবিত্র
রমাদ্বান শরীফ মাস উনার ৪৬টিচাঁদের ঘোষণার মধ্যে ২৯টি মাসের তারিখ ঘোষিত হয়েছিলো যখন
আকাশে চাঁদের উপস্থিতিই ছিল না।অথচ সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার সেদিন নিশ্চিতভাবে চাঁদ
দেখতে পাওয়ার দাবী করেছিলো। অর্থাৎ ৬৩ ভাগ সময় আকাশে চাঁদের উপস্থিতই ছিলনা। নাঊযুবিল্লাহ!
২) ২২টি চাঁদের
ঘোষণা ছিল যখন আকাশে চাঁদের উপস্থিতি ছিল কিন্তু সেই চাঁদ টেলিস্কোপ ব্যবহার করেও দেখা
যায়নি।নাঊযুবিল্লাহ!
৩) ৬টি চাঁদের
ঘোষণা ছিল খালি চোখে চাঁদ দেখতে পাওয়ার অবস্থায়। অর্থাৎ মাত্র ১৩ ভাগ সময়ে চাঁদ দেখা
যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
প্রামাণ্য
দলীল২ :১৯৮৪ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত সউদী আরবে পবিত্র শাওওয়াল মাস, পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস (১৯৮০ থেকে ২০০৮) ও পবিত্র যিলহজ্জ
শরীফ মাস উনাদের চাঁদের তারিখ ঘোষণার দিন পর্যবেক্ষণ করে নীচের তথ্য পাওয়া যায়।
পবিত্র শাওওয়াল
মাস :
চাঁদ দেখা
যাওয়ার আকৃতিতেই পৌঁছেনি ১৪ বছর
বাইনোকুলার
ও টেলিস্কোপের সাহায্য প্রয়োজন হয়েছে ২ বছর
চাঁদ দেখতে
পাবার পরিবেশ ছিল ১ বছর মাত্র
চাঁদ অমাবস্যায়
যাওয়ার পূর্বেই তারিখ ঘোষিত হয়েছে ৮ বছর
পবিত্র রমাদ্বান
শরীফ মাস : (১৯৮০-২০০৮ পর্যন্ত)
চাঁদ দেখা
যাওয়ার আকৃতিতেই পৌঁছেনি ১৪ বছর
টেলিস্কোপেও
চাঁদ দেখা যায়নি ১ বছর
বাইনোকুলার
ও টেলিস্কোপের সাহায্য প্রয়োজন হয়েছে ২ বছর
দেখা যাওয়ার
আকৃতিতে ছিল ১ বছর
চাঁদ অমাবস্যায়
যাওয়ার পূর্বেই তারিখ ঘোষিত হয়েছে ১২ বছর
পবিত্র যিলহজ্জ
শরীফ মাস :
চাঁদ দেখা
যাওয়ার আকৃতিতেই পৌঁছেনি ১৯ বছর
বাইনোকুলার
ও টেলিস্কোপের সাহায্য প্রয়োজন হয়েছে ৫ বছর
চাঁদ দেখতে
পাবার পরিবেশ ছিল ১ বছর মাত্র
চাঁদের তারিখ
ঘোষণায় সউদী ওহাবী ইহুদী সরকারের
সিদ্ধান্তের
বিরুদ্ধে সউদী মুফতীদের ফতওয়া
মনগড়াভাবেসউদী
ওহাবী ইহুদী সরকারের চাঁদের তারিখ ঘোষণার বিরুদ্ধে দৈনিক আল ইহসান ও মাসিক আল বাইয়্যিনাত
সহ অন্যান্য পত্রিকায় অনেক লেখা প্রকাশিতহওয়ার পরেও বাংলাদেশ সহ অনেক দেশের উলামায়ে
সূ এবং সাধারণ মানুষের ধারণাএসকল বিরুদ্ধাচরণ হয়তো আক্রোশমূলক অথবা গোষ্ঠী ভিত্তিক।
কিন্তু খোদ সউদী আরবের মুফতী, প্রচারমাধ্যম, বিজ্ঞানীরা যে সউদী ওহাবী ইহুদী সরকারের এসব শরীয়ত বহির্ভূত
সিদ্ধান্ত এবং স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে সোচ্চার, তা অনেকেরই জানা নেই।
উদাহরণ হিসেবে
উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ১৪২০ হিজরী সনে সউদী
আরবে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হয় ৭ই জানুয়ারী, জুমু‘আ বার। অথচ ৬ই জানুয়ারী, ইয়াওমুল খ¦মীস বা বৃহস্পতিবার
পৃথিবীর কোথাও শাওওয়াল মাসের চাঁদ দৃশ্যমান হয়নি। ৬ইজানুয়ারী সউদী আরবে সূর্য অস্ত
গিয়েছিল ৫টা ৫৬ মিনিটে অথচ চাঁদ অস্ত যায় সূর্য অস্তযাওয়ার ৯ মিনিট পূর্বেই। আরও অবাক
বিষয় হচ্ছে,তাদের গণনাকৃত শাওওয়াল মাস শুরু হওয়ার
৪ ঘণ্টা পর চাঁদ অমাবস্যায় যায়। তাহলে যে চাঁদ অমাবস্যাতেই পৌঁছেনি সে চাঁদ যে দৃশ্যমান
হয়নি,
তা বলার অপেক্ষাই রাখেনা। ফলে সউদী আরবের কয়েকজন মুফতী এ ব্যাপারে
সোচ্চার হয়ে উঠে।
১৪২০ হিজরীতে
সউদী আরবের চাঁদের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে শায়েখ ডঃ ইউসুফ আল কারদায়ি ফতওয়া দেয় যে, “যারা ১৪২০ হিজরীতে জুম‘আ বারে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালন করেছে তারা
যেন একটি রোযা ক্বাযা আদায় করে নেয়”।
এছাড়াও শায়েখ
মুহম্মদ বিন সালেহ আল উথাইমিন ফতওয়া দেয়, “যদি পৃথিবীর কোথাও সূর্যাস্তের পর সূর্যগ্রহণ হয় তবে পরের দিন কখোনোই নতুন মাসের
নতুন দিন শুরু হবে না।”
চিত্র : শায়েখ
ডঃ ইউসুফ আল কারদায়ির ফতওয়া
খোদ সউদী
গণমাধ্যমেই চাঁদ নিয়ে ষড়যন্ত্রের তথ্য উপস্থাপন
এ যাবৎ চাঁদ
নিয়ে সউদী ওহাবী ইহুদী সরকারের ষড়যন্ত্রের অনেক দলীল-প্রমাণ উপস্থাপন করা হলো। তবে
সে দলীল-প্রমাণগুলোর অধিকাংশই ছিল মহাকাশ বিজ্ঞানের আলোকে। এছাড়াও সেখানকার মুফতীদের
ফতওয়া উল্লেখ করেও সউদী ওহাবী ইহুদী সরকারের চাঁদ নিয়ে ষড়যন্ত্রের প্রমাণ দেয়া হয়েছে।
তারপরেও হয়তো অনেকের বোধোদয় হচ্ছেনা। আর তাই সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার কর্তৃক চাঁদ নিয়ে
বিভ্রান্তির যে তথ্য সেখানকার গণমাধ্যমেই এসেছে, সে তথ্য এখন উপস্থাপন করা হবে ইনশাআল্লাহ।
প্রমাণ এক
: ১৪২০ হিজরীর পবিত্র ঈদুল ফিতর সঠিক তারিখে না হওয়ার কারণে“আরব নিউজ” ২০০০ সালের ১১ই
ফেব্রুয়ারী, জুমু‘আ বার এ বিষয়ে নিবন্ধ প্রকাশ
করে।
প্রমাণ দুই
: ১৪২০ হিজরীর ৬ই শাওওয়াল, ইয়াওমুল খ¦মীস, “আদ দাওয়া” ম্যাগাজিনে এ ব্যাপারে নিবন্ধ প্রকাশ করে।
প্রমাণ তিন
: শাইখ আল মানিয়া ১৯৯৯ সালের ১২ই ডিসেম্বর, ইয়াওমুল আহাদ “আল জাজিরাতে” চাঁদের বিভ্রান্তি নিয়ে মত প্রকাশ করে।
যঃঃঢ়://িি.িধষৎরুধফয.পড়স/২০০৭/১০/২১/ধৎঃরপষব২৮৮০৫৮.যঃসষ
প্রমাণ চার
: সউদী আরব যেদিন ১৪২৭ হিজরী সনের পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার চাঁদ দেখার ঘোষণা
দেয় সেদিন সূর্য অস্তযাওয়ার পূর্বেই চাঁদ অস্ত যায় এবং সউদী আরবের ৬টি চাঁদ দেখা কমিটিও
চাঁদ দেখতে পায়নি। যে সাক্ষীর ভাষ্য অনুযায়ী মাস ঘোষণা দেয়া হয় তাকে গণমাধ্যমের কারো
সাথে কথা বলতে নিষেধ করা হয়।
প্রমাণ পাঁচ
: ১৪২৫ হিজরী সনের পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস চাঁদ না দেখে শুরু হওয়াতে সউদী “আল ওয়াতান”
পত্রিকায় “ঞবংঃরসড়হরবং ড়ভ ঃযব ওসঢ়ড়ংংরনষব” শিরোনাম দিয়ে নিবন্ধ প্রকাশ করে সউদী লেখক
হামযা আল মুযাইনি। “আল হায়াত” পত্রিকা থেকে সাক্ষীর সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তাকে গণমাধ্যমের
সামনে আনা হয়নি আর কিং আব্দুল আযীয বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন গিয়ে
দেখতে পায় ৮০ বছরের এক বৃদ্ধ। অর্থ দিয়ে সাক্ষ্য নেয়া হয়েছিলো।
প্রমাণ ছয়
: মহাকাশ বিজ্ঞানীদের ভাষ্য অনুযায়ী (যা সঠিক ছিল) ২০০৭ সালের ১লা অক্টোবর,ইছনাইনিল আযীম শরীফে “আরব নিউজ”-এ পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হওয়ার
তারিখ ঘোষিত হয় ১৩ই অক্টোবর, ইয়াওমুস সাবত। কিন্তু
সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার তারিখ এগিয়ে এনে ১২ই অক্টোবর, জুমু‘আবারে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালন করতে জনগণকে বাধ্য করে। নাঊযুবিল্লাহ!
উপসংহার
রাতে সূর্য
দেখা যায় না, তাই কেউ রাতে সূর্য দেখতে পাওয়ার দাবীও
করে না। চাঁদ দেখতে পাওয়া নিয়েই জটিলতা। পূর্ণ জোছনার চাঁদ সবাই দেখলেও বাঁকা চাঁদ
বা হিলাল কেউ দেখতে পায় আর কেউ দেখতে পায় না। কিন্তু মহাকাশ বিজ্ঞানের মাধ্যমে বাঁকা
চাঁদ দৃশ্যমান হওয়ার আকৃতিতে আসার বিষয়ে নিশ্চিত জানা যায়। তাই চাঁদ যখন দেখা যাওয়ার
আকৃতিতেই আসে না, তখন দেখার দাবী করা
হচ্ছে চরম মিথ্যাচারিতা। আর সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার এই কাজটিই করে যাচ্ছে বছরের পর
বছর। নাঊযুবিল্লাহ!
সঙ্গত কারণেই
বলতে হয়,
সউদী ওহাবী ইহুদী সরকারের উচিত তারা যেন প্রকাশ্যে বিশ্ববাসীকে
এই বিষয়ে ঘোষণা দেয় যে, তারা পবিত্র হাদীছ
শরীফ উনার যে নির্দেশ চাঁদ দেখে মাস শুরু করা তা মান্য না করে বরং তাদের রচিত ‘উম্মুল
কুরা’ ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে আরবী মাসের তারিখ গণনা করছে।
তারা আরবী
মাস শুরু করবে নিজেদের ইচ্ছামতো আর মিথ্যা সাক্ষী যোগাড় করে প্রমাণ করার চেষ্টা করে
যে,
চাঁদ দেখা গেছে। নাঊযুবিল্লাহ! কেন এই মিথ্যাচারিতা? প্রতি বছর রিয়াদে কয়েকটি ভাড়া করা সাক্ষীর কোর্টে এসে সাক্ষ্য
দেওয়ার নাটক সাজিয়ে মাস গণনা করে যাচ্ছে। কেন এই প্রহসন? মাস সঠিক তারিখে গণনা শুরু হলে সউদী ওহাবীদের কি সমস্যা?
সউদী ওহাবীরা
চাঁদ নিয়ে যে জালিয়াতি করছে তা সাধারণ মানুষের উপলব্ধির বাইরে। ফলে তারা যখন চাঁদ দেখার
মিথ্যা দাবী করে, তখন অনেক মানুষ চাঁদ
না দেখলেও বলে বসে আমরা চাঁদ দেখেছি। কারণ তারা ভাবে সউদী আরব কি মিথ্যা বলতে পারে? কিন্তু ১৪২৫ হিজরী সনে ৮০ বছরের বৃদ্ধের সাক্ষ্য অনুযায়ী মাস
শুরুর ঘোষণা দিলে তাদের গেজেট পত্রিকা “আল ওয়াতান” এর সাংবাদিক এই বিষয়ে “ঞবংঃরসড়হু
ওসঢ়ড়ংংরনষব” শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করলে তাকে যে শাস্তি দেয়া হয়, সাধারণ মানুষের কাছেও তা গোপন করা হয়। কেন তারা এসব করছে? মানুষের হজ্জ নষ্ট করে তাদের কি লাভ হচ্ছে?
মূলত তারা
যেহেতু সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার শত্রু অর্থাৎ তারা জাতিগতভাবে ইহুদী বলেই এ সমস্ত
কুকর্মগুলো বছরের পর বছর ধরে করে যাচ্ছে। আর তাদের বংশ ধারার ইতিহাস গোপন করতেও তারা
চরম কুটকৌশল অবলম্বন করেছে। তাদের পূর্বপুরুষ ইহুদী হওয়া সত্ত্বেও তাদের জাতীয় গ্রন্থাগারের
প্রধান মিশরীয় ব্যক্তিকে দিয়ে মিথ্যা ইতিহাস রচনা করিয়েছে এবং তাকে পুরস্কৃতও করেছে।
সুতরাং এটা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট যে, তাদের দেহে ইহুদী রক্ত প্রবাহিত বলেই অর্থাৎ তারা খোলশধারী মুসলমান হলেও জাতিগতভাবে
ইহুদী বলেই এই কুকর্মগুলো অহরহ করে যাচ্ছে।
কাজেই সউদী
ওহাবী ইহুদী সরকারের এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে সারা বিশ্বের মুসলমান উনাদের সোচ্চার হতে
হবে,
তাদের এসব অপকর্ম বন্ধে জোড়ালো প্রতিবাদ করতে হবে। কারণ তারা
লক্ষ লক্ষ মুসলমান উনাদের পবিত্র হজ্জ, রোযাসহ বহু আমল বরবাদ করে দিচ্ছে।
0 Comments:
Post a Comment