৪০৮ নং- সুওয়াল -রোজা অবস্থায় ইঞ্জেকশন ব্যবহার করলে রোজা ভাঙ্গবে কি?

সুওয়াল - মাসিক আত্ তাওহীদ মে/৯৫ইং সংখ্যায় সমস্যা-সমাধান ফতওয়া বিভাগে নিম্নোক্ত প্রশ্নোত্তর ছাপা হয়-
প্রশ্নঃ- রোজা অবস্থায় ইঞ্জেকশন ব্যবহার করলে রোজা ভাঙ্গবে কি?
উত্তরঃ- রোজা অবস্থায় যেকোন ইঞ্জেকশন গোশ্ত বা শিরায় ব্যবহার করা হোক না কেন রোজা ভাঙ্গবেনা। (ইমদাদুল মুফ্তীন, ৪৮৯)
উপরোক্ত উত্তর সঠিক হয়েছে কিনা, জানায়ে উপকৃত করবেন।

জাওয়াব - রোজা অবস্থায় ইন্জেকশন ব্যবহার প্রসঙ্গে মাসিক আত্ তাওহীদ-এর উপরোক্ত উত্তর শুদ্ধ হয়নি। মূলতঃ এ ব্যাপারে তারা “ইমদাদুল ফতওয়ার” বক্তব্যকেই অনুসরণ করেছে। আর ইন্জেকশন সম্পর্কে “ইমদাদুল ফতওয়ার” বক্তব্য যে সম্পূর্ণই ভুল, তা আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকার ২১ ও ২২তম সংখ্যায় বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
মোটকথা হলো- রোজা অবস্থায় ইন্জেকশন নেওয়ার সহীহ্ ও গ্রহণযোগ্য ফতওয়া হলো- রোজা অবস্থায় ইন্জেকশন নিলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। এখন তা যে স্থানেই দেয়া হোক না কেন। (যেমন রগ, শিরা, গোশ্ত, রক্ত ইত্যাদি) কারণ সর্বসম্মত মতে ইন্জেকশনের দ্বারা ব্যবহৃত ঔষুধ মগজে পৌঁছে থাকে। শরীয়তের হুকুম হলো- ঔষুধ ইত্যাদি যদি (دماغ) মগজ অথবা (معده) পেটে পৌঁছে, তবে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। তা যে রাস্তা বা স্থান দিয়েই প্রবেশ করানো হোক না কেন। কারণ আমাদের হানাফী মায্হাবের ইমাম, ইমামে আযম, হযরত আবূ হানীফা  রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মতে মূল রাস্তা গ্রহণযোগ্য নয়, বরং ঔষুধ ইত্যাদি মগজ অথবা পেটে পৌঁছা শর্ত। তাছাড়া  হাদীছ শরীফে উল্লেখ আছে,
الفطر مما دخل ليس مما خرج
অর্থাৎ (সাধারণতঃ) “কিছু ভিতরে প্রবেশ করলে রোজা ভঙ্গ হবে, বের হলে ভঙ্গ হবেনা।”
উপরোক্ত সংক্ষিপ্ত আলোচনা দ্বারা এটাই সাব্যস্ত হলো যে, রোজা অবস্থায় যেকোন স্থানে, যেকোন ইন্জেকশনই নেওয়া হোক না কেন, তাতে অবশ্যই রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। কারণ ইন্জেকশনের  দ্বারা ব্যবহৃত ঔষুধ মগজে পৌঁছার ব্যাপারে চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মধ্যে কোন মতভেদ নেই। অর্থাৎ সকলের মতেই উহা মগজে পৌঁছে।
অতএব, রোজা অবস্থায় ইন্জেকশন ব্যবহারের ব্যাপারে মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকার ফতওয়াই গ্রহণযোগ্য ও অনুসরণীয়, এর বিপরীত মত বা বক্তব্য গ্রহণ করা ও অনুসরণ করা সম্পূর্ণ হারাম ও নাজায়েয। (তিবরানী শরীফ, মুছান্নেফ ইবনে আবী শায়বা, ফতওয়ায়ে আলমগীরী, খোলাছাতুল ফতওয়া, ফতহুল ক্বাদীর, মাবছুত, বাদায়েউস্ সানায়ে ইত্যাদি) 
বিস্তারিত জানতে হলে, “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকার ২১ ও ২২তম সংখ্যা দু’টি পড়ৃন। সেখানে কোরআন শরীফ,  হাদীছ শরীফ, ইজমা, ক্বিয়াস ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের অকাট্য দলীল দ্বারা প্রমাণ করা হয়েছে যে, ইন্জেকশন নিলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে।
আবা-২৬

রোজায় ইনজেকশন ফতোয়া- 

0 Comments: