ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্
ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত
দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে-
একজন কুতুবুয্ যামান উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-
বন্য পশুরাও উনার তাঁবেদার
দার্জিলিং-এর গহীন জঙ্গলের
বন্য হাতিকে লক্ষ্য করে ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদুনা
হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক নির্দেশনাদান-এর প্রেক্ষিতে
কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই হাতি সংশ্লিষ্ট তাঁবু ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র গহীন জঙ্গলের
ভেতর থেকে ফেরত নিয়ে আসে এবং যথাস্থানে রাখে। এক পর্যায়ে হাতিটি মাথা নিচু করে
সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে সালাম জানায়। অতঃপর হাতিটি
উনার অদূরে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে কী যেনো নিবেদন করে। প্রিয় পাঠক! তা আমরা
জানিনা বলে আপনাদেরকে জানানো সম্ভব নয়। তবে আমরা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি, বেয়াদবীর
জন্য হাতিটি অনুনয়-বিনয়সহযোগে ক্ষমা প্রার্থনা করে। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার
মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে: এক ইহুদী একদা এক হরিণীকে শিকারের পর গাছের নিচে আটক
করে রেখেছে। একেতো বন্দি হওয়ার দুর্বিষহ যন্ত্রণা, তদুপরি ছোট বাচ্চার মমতায় ওই
হরিণী উদ্বেলিত। ক্ষুধার্ত ছোট বাচ্চাদেরকে দুধ পান করাতে হবে। তাই সে মুক্তি চায়।
কিন্তু মুক্তির উপায় কী?
হরিণীর চোখে পানি। অঝোর ধারায় সে কাঁদছে। ওই পথ দিয়ে
যাচ্ছিলেন নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি। তিনি হরিণীর নিদারুণ যন্ত্রণাকাতরতা জানেন। তবু কায়িনাতবাসীর ইবরত-নছীহতের
লক্ষ্যে হরিণীর কাছ থেকে জানার জন্য তিনি জিজ্ঞেস করেন: “কী হয়েছে
তোমার?” হরিণীর বিনীত নিবেদন: “ইয়া রহমতুল্লিল আলামীন,
রউফুর রহীম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এক ইহুদী আমাকে আটক করেছে। আমার ছোট বাচ্চারা
ক্ষুধার্ত। ওদেরকে দুধ পান করাতে হবে। দয়া করে যদি আপনি কিছু সময়ের জন্য আমার
বাঁধন খুলে দেন, তবে বাচ্চাদেরকে দুধ পান করিয়েই আমি আপনার মুবারক খিদমতে এখানে চলে আসবো।”
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ওই হরিণীকে মুক্ত করে দেন। হরিণী
অতি দ্রুত বাচ্চাদের কাছে গিয়ে বলে: “আজ এক মুবারক ঘটনার অবতারণা
হয়েছে। এক ইহুদী আমাকে আটক করেছে। আমার খোশ নছীব। ইতোমধ্যে আমি রহমতুল্লিল আলামীন, রউফুর
রহীম, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
মুবারক সাক্ষাৎ লাভ করি। তোমাদেরকে দুধ পান করানোর লক্ষ্যে সাময়িক মুক্তির জন্য
আমি উনার ক্বদম মুবারকে সবিনয়ে প্রার্থনা জানাই। তিনি অল্প সময়ের জন্য আমাকে
বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে দেন। তখন ইহুদী সেখানে উপস্থিত ছিলো না। অতি দ্রুত ফিরে
যাবো বলে আমি উনাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে। তোমরা সত্বর
দুধপান করে আমাকে যেতে দাও। বাচ্চারা বলে: “মাগো! আমাদের দুধ পান-এর প্রয়োজন
নেই। এতে বিলম্ব হবে। বিলম্ব হলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে চরম বেয়াদবি হবে। আমরা দুধ পান করবো না। চলো আমরা
একসঙ্গে এখনই উনার মুবারক খিদমতে গিয়ে হাজির হই।” ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট ইহুদী ঘটনাস্থলে
ফিরে দেখতে পায়, তার আটককৃত হরিণী যথাস্থানে নেই। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইহুদীকে বলেন: “বাচ্চাকে দুধ পান করানোর জন্য হরিণীকে আমি অল্প সময়ের জন্য ছেড়ে দিয়েছি। সে
প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরে আসবে।”
বিষয়টি ইহুদীর বিশ্বাস হয়
না। ক্ষুব্ধ ইহুদী মনে মনে ভাবে, হরিণী কী মানুষ? সে কীভাবে প্রতিশ্রুতি দিবে? কীভাবে
প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে?
আর কেনোইবা সে ফিরে আসবে? আসলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে ওই হরিণীরও রসূল ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হরিণী উনার একান্ত আজ্ঞাবহ, তা অজ্ঞ ইহুদী বুঝবে কী করে? ইহুদীর
ক্ষোভ মিশ্রিত দুর্ভাবনা শেষ না হতেই হরিণী তার বাচ্চাদেরকে দুধ পান না করিয়েই
বাচ্চাসহ নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
মুবারক খিদমতে ফিরে আসে। এ অভাবিত ঘটনা দেখে ইহুদী মুসলমান হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
(চলবে)
আবা-২২৬
0 Comments:
Post a Comment