ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত
দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে-
একজন কুতুবুয্ যামান উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-
বন্য পশুরাও উনার তাঁবেদার
ঘরের দরজা মুবারক-এর দু’প্রান্তে দুটি বাঘ বসা রয়েছে। তিনি মনে
মনে ভাবলেন, বাঘের সামনে দিয়ে কীভাবে ঘরের ভেতর যাওয়া সম্ভব? ঘরের ভেতর থেকে বুযূর্গ ব্যক্তি ডেকেই
যাচ্ছেন। সুলত্বানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ
হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি স্থির সিদ্ধান্তে উপনীত
হলেন যে, বাঘ দুটি নিশ্চয়ই ওই বুযূর্গ ব্যক্তি উনার খাদিম হবে। নইলে ঘরের দরজায় বসে থাকবে কেন?
ঘরের ভেতর
যাওয়ার জন্য তিনি নিমিষেই মনস্থির করলেন এবং দৃঢ় প্রত্যয়ে বাঘ দু’টিকে অতিক্রম করে ভেতরে প্রবেশ করলেন। দেখলেন সেখানে
সৌম্যকান্তি ধ্যানমগ্ন এক বুযূর্গ বসে রয়েছেন।
সুলত্বানুল
হিন্দ, সুলত্বানুল আরিফীন,
মাহবূবে সুবহানী, ছাহিবুল আসবার, মাখযানুল
মা’রিফাত, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ, হযরত খাজা
সাইয়্যিদ মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে লক্ষ্য করে ঘরের ভেতর বসে
থাকা ওই বুযুর্গ ব্যক্তি বললেন: “আপনাকে দেখে
মনে হয়, আপনি মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তা’য়ালা এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মনোনীত মাহবূব ওলীআল্লাহ। সীমাহীন উচ্চতায় আপনার মুবারক মাক্বাম। আপনার মুবারক
মাধ্যমে পবিত্র দ্বীন-ইসলাম যিন্দা হবে। বিদয়াত-বেশরা
অপসারিত হবে। অবলুপ্ত সুন্নত যিন্দা হবে। জিন-ইনসান সকলে সুন্নত পালনে অভ্যস্ত হবে। ইসলাম ধর্ম উনার হাক্বীক্বী আবাদ শুরু হবে।”
ওই বুযুর্গ
ব্যক্তি বলতে থাকেন: “আপনি ঘরের সামনে দিয়ে অতিক্রম করাকালে দূর থেকেই আপনাকে দেখে আমি আপনার তুলনাহীন
শান, মান ও মুবারক মাক্বাম উনার অতুল গভীরতা উপলব্ধি করেছি। ঘরের দু’পাশে বসে থাকা দু’টি বাঘ আমার আজ্ঞাবহ খাদিম। সর্বক্ষণ
আমাকে পাহারাদানের মাধ্যমে এরা এদের জনম ও জীবন স্বার্থক করে। মূলত: এদের পাহারার কোন প্রয়োজনই নেই আমার। হে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং রহমতুল্লিল আলামীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আখাছছুল খাছ মাহবূব ওলীআল্লাহ! আপনাকে
আমি দু’টি মূল্যবান নছীহত করি। নছীহত মুবারক দু’টি আজীবন
মনে রাখবেন। আপনার মুবারক জীবন উনার সকল ক্ষেত্রেই
কাজে লাগবে।” নছীহত মুবারক
দুটি হলো:
১. মহান আল্লাহ
পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা উনাকে যথার্থরূপে ভয় করলে কুল মাখলূক্বাত তার অনুগত হয়ে যায়। এ মর্মে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, মাশুকে মাওলা
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ
মুবারক করেন:
من هاب
الله تعالى هابه كل شىء
অর্থ: “যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করেন, সমস্ত মাখলূক্বাত
উনাকে ভয় করে থাকে (মূলতঃ উনার একান্ত আজ্ঞাবহ হয়ে পড়ে)।
২. নিয়ামত
উনার জন্য মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা উনার কাছে আরজু করতে হয়। নইলে নিয়ামত হাছিলের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। এ মর্মে কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে:
انلزمكموها
وانتم لـها كارهون
অর্থ: “তোমরা চাইবেনা
আর আমি তোমাদেরকে নিয়ামত-সমৃদ্ধ করবো, তা কী করে হয়?” (পবিত্র সূরা
হুদ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৮)
হাদীছ শরীফ
উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে:
من لـم
يسئل الله يغضب عليه
অর্থ: “যে ব্যক্তি
মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে চায়না, সে ব্যক্তির উপর মহান আল্লাহ পাক তিনি অসন্তুষ্ট হন।” অসন্তুষ্টির অসংখ্য কারণের মধ্যে একটি
মূল কারণ হলো, কুল মাখলূক্বাত মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা উনার প্রতি পরিপূর্ণরূপে
মুখাপেক্ষী। মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে না চাইলে
বান্দার স্বভাব-সঞ্জাত দায়িমী মুখাপেক্ষিতার সবিনয় প্রকাশ ঘটেনা। এতে বান্দার অজ্ঞানতাজনিত ফখর মিশ্রিত অমুখাপেক্ষিতা প্রকাশ
পায়। নাউযুবিল্লাহ!
হাদীছ শরীফ
উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
السعى
منا والاتمام من الله
অর্থ: “মানুষ মহান
আল্লাহ পাক উনার নিকট আরজু করবে, আর তিনি বান্দা-বান্দির সকল আরজু পূরণ করে দিবেন।” অর্থাৎ বান্দা কোশেশ করবে আর পুরা
করবেন মহান আল্লাহ পাক। সুবহানাল্লাহ! (চলবে)
আবা-২২৩
0 Comments:
Post a Comment