ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্
ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত
দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে-
একজন কুতুবুয্ যামান উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-
তিন দিনব্যাপী অঝোর ধারার বৃষ্টি
নেক দুআ’র উসীলায় নিমিষেই বন্ধ
ঘটনার বিবরণ: ১৯৯১ ঈসায়ী
সালের দিকের কথা। আমার (লেখক) পরিচিত অসুস্থ এক ব্যক্তি হাসপাতালে
ভর্তি আছেন বেশ কিছুদিন। বিশেষজ্ঞ একাধিক ডাক্তার
চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। মেডিকেল বোর্ডও গঠন করা হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও রোগীর অবস্থার কোন উন্নতি হয়নি; বরং
ক্রমান্বয়ে অবনতি হচ্ছে। অবস্থা অত্যন্ত জটিল। সুস্থতা লাভের ক্ষেত্রে রোগী নিজে এবং তার আত্মীয়-স্বজন
নিরাশাগ্রস্ত। দু-একদিন পর পর আমি হাসপাতালে
তাকে দেখতে যাই। আমি নিজেও দেখি, রোগীর
অবস্থা মারাত্মক। নিখুঁতভাবে ব্যান্ডিজে আবৃত তার
ক্ষতস্থান থেকে দুর্গন্ধ বেরোয়।
একদিন বিকেল বেলা আমি তাকে
দেখতে গিয়েছি। তার চোখে পানি। জীর্ণ-শীর্ণ শরীরে ক্ষীণ কণ্ঠে আমার কাছে তার নিবেদন: “আপনি কত
বলেছেন, আমি যাইনি। যাওয়ার কথা কখনো মনেও আসেনি। আজ আমি যেতে চাই। এখনই
যেতে চাই। দয়া করে আমাকে রাজারবাগ শরীফ-এর
সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালামউনার মুবারক ক্বদমে
তাড়াতাড়ি নিয়ে চলুন। আমি উনার কাছে নেক দুআ’ চাইবো। উনার মুবারক চেহারা দেখবো।” তার
চলাফেরার সামর্থ্য নেই। তাকে কোথাও নিয়ে যাওয়া
কেবল কষ্টসাধ্য নয়,
প্রায় অসাধ্য। তাই তার
কথায় আমি চুপ করে থাকি। আমার অনীহভাব বুঝতে পেরে
তিনি সকাতরে অনুরোধ করেন: “যে কোন উপায়ে আমাকে মুজাদ্দিদ আ’যম, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা মামদূহ
হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার ক্বদম মুবারকে নিয়ে চলুন। আমি বুঝে গেছি, ডাক্তারী চিকিৎসা আমার শেষ হয়েছে। জীবনের অন্তিম দশায় এখন উনার মুবারক সান্নিধ্যই আমার
একমাত্র প্রয়োজন।”
রোগীর প্রকৃতি, সমঝ্ ও
উপলব্ধি সাইয়্যিদুনা হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা, মুজাদ্দিদে মাদারজাদ, আওলাদে
রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কে আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ার, উনার
মুবারক ছোহবতে আসার,
উনাকে জানাবার ও বুঝাবার আদৌ কাছাকাছি নয়। অনেক বলা সত্ত্বেও তিনি কোনদিনও উনার মুবারক ছোহবতে আসেননি। নছীহত মুবারক শোনেননি। সম্ভবত “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ”ও কখনো পড়ে দেখেননি। আমার
কাছে শুনে শুনে একটি প্রচ্ছন্ন ধারণা হয়েছে মাত্র। তার জন্য তা’ইবা কম কিসে?
তা না হলে তো প্রায় অন্তিম মুহূর্তে মুবারক ছোহবতে এসে নেক
দুআ’র ব্যাকুল প্রত্যাশাও তিনি পোষণ করতে পারতেন না।
তার অনুরোধে আমি হতবাক হই। আমি বেকায়দায় পড়ে যাই। হাঁটা-চলায় অসমর্থ ব্যক্তিকে হাসপাতালের বিছানা থেকে কী করে সাইয়্যিদুনা
মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালামউনার মুবারক খিদমতে আনা সম্ভব! কিছুক্ষণ
আমি নিরুত্তর থাকি। শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণাকাতরতায়
নিদারুণ আক্রান্ত একজন মুমূর্ষু রোগীর হাসপাতাল থেকে খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু
রসূলিল্লাহ, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল
আলম, মুজাদ্দিদে আয’ম, হুজ্জাতুল ইসলাম,
সাইয়্যিদুল আউলিয়া, গাউছুল আ’যম, ইমামে আ’যম, ফারুকে আ’যম, মুর্শিদে
আ’যম, হাবীবে আ’যম, ছাহিবু সুলত্বানিন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা
ইমাম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক ছোহবতে যাওয়ার
ব্যাকুল আগ্রহে আমি রোগী এবং উপস্থিত অন্যান্যদের অলক্ষ্যে ভাবনামগ্ন হই। জীবনের বিচিত্র সোপানগুলোয় মানুষের ভাব ও ভাবনার রূপান্তর
নিরন্তর ঘটেই চলে। প্রেক্ষিত কারণে রোগীর পরিবর্তিত
বর্তমান ভাবনা আমার অন্তর বারবার ছুঁয়ে যেতে থাকে।
(চলবে)
আবা-২০৭
0 Comments:
Post a Comment