ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে-
একজন কুতুবুয্ যামান উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-
বন্য পশুরাও উনার তাঁবেদার
দার্জিলিং-এর অনেকাংশ
বনজঙ্গলে ভরা। উঁচু উঁচু পাহাড়-পর্বতও সেখানে
রয়েছে অনেক। সরকারি প্রয়োজনে একবার গহীন
জঙ্গলের পাশে এক নির্দিষ্ট জায়গা পরিষ্কার করে সেখানে সাময়িক কর্মস্থল স্থাপনের
প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এ কাজ দেখাশুনার দায়িত্ব
দেয়া হয় হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদুনা দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে। তিনি উনার অধীনস্থ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে
উদ্দিষ্ট কাজ দ্রুত সুচারুরূপে সম্পন্ন করতে মুবারক নির্দেশনা দান করেন। সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার
মুবারক তত্ত্বাবধানে নির্দেশিত ব্যক্তিবর্গ ওই জঙ্গলের নিকটবর্তী নির্দিষ্ট
জায়গায় তাঁবু টাঙ্গান। বিষয়টি তত্ত্বাবধান শেষে সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর
ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি উনার নির্দিষ্ট অফিসে চলে আসেন। অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী উনারাও সকলে কাজ শেষে মূল অফিসে ফিরে আসেন।
বেশ কিছু
সময় পর সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে একজন
প্রত্যক্ষদর্শী (মূল অফিসের একজন কর্মচারী) তিনি জানান যে, টাঙ্গানো
তাঁবু সেখানে নেই। তাঁবু- সংশ্লিষ্ট অন্যান্য
দ্রব্যসামগ্রীরও কিছু অংশ সেখানে নেই। অবশিষ্টগুলো
ইতস্তত বিক্ষিপ্ত অবস্থায় এখানে সেখানে পড়ে রয়েছে। সংবাদ পেয়ে তৎক্ষণাৎ তিনি সেখানে গিয়ে দেখতে পান, সত্যি
টাঙ্গানো তাঁবু নেই। তিনি বুঝে ফেলেন যে, বন্য
হাতিরা তাঁবু ভেঙ্গে অন্য কোথাও নিয়ে গেছে। সে
জঙ্গলে অন্যান্য আরো অনেক পশু রয়েছে। ইতোমধ্যে
তিনি বন্য হাতির দেখা পান। ওই হাতি
সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার অদূরে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে
থাকে।
ওই
হাতিকে লক্ষ্য করে ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদুর রসূল, আফদ্বালুল
আওলিয়া হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি
বলেন: “এখানে সরকারি প্রয়োজনে আমরা তাঁবু টাঙ্গিয়েছি এবং আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র রেখেছি। এখানে অনেক জরুরি কাজ রয়েছে আমাদের। ওই তাঁবু তোমরা কেন অন্যত্র নিয়ে গেছো এবং দ্রব্যসামগ্রী এলোমেলো করে ফেলেছো? এ কাজ
তোমাদের ঠিক হয়নি। অবিলম্বে তাঁবু ও অন্যান্য
জিনিসপত্র এখানে ফেরত দিয়ে যাও। নইলে
তোমরা অসুবিধায় পড়বে। দেরি করার সময় নেই। তাড়াতাড়ি করো।”
মহান
আল্লাহ পাক উনার মাহবূব ওলী উনাদেরকে সাধারণ মানুষ চিনেনা, চিনতে
পারেনা। কিন্তু জীব-জন্তু-পশুরা চিনতে ভুল
করেনা। কাজেই ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে
রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার
মুবারক নির্দেশনা বুঝতে বন্য হাতির কোন কষ্ট হয়নি। নিগূঢ় নৈকট্য হাছিলকারী সূক্ষ্মদর্শী ওলীআল্লাহ উনাদের কামিয়াবীর চূড়ান্ত
পর্যায় এই যে, উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে ছাড়া সব কিছুই
ভুলে যান। উনাদেরকে ছাড়া অন্য সব কিছুকেই
উনারা তুচ্ছ জ্ঞান করেন।
“ইলমে
তাছাওউফ উনার একখানা ছবক রয়েছে যা হলো মহান আল্লাহ পাক উনাকে ছাড়া সবকিছুকেই ভুলে
যাওয়া।”
আপন বৈরী
সত্তা-সম্পৃক্ত জগৎ-সংসার পরিহার করেই উনারা মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা
উনার এবং রহমতুল্লিল আলামীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বত-মা’রিফাত
এবং রিযামন্দী-সন্তুষ্টিলাভে সমর্থ হয়ে থাকেন। কামিয়াবীর এমন পর্যায়ে উনাদের কাছে দুনিয়া ও আখিরাত একাকার হয়ে যায় এবং
জান্নাত-জাহান্নামসহ কুল-কায়িনাতের সব কিছুই গায়রুল্লাহ হিসেবে গণ্য হয়। এ মর্মে মুবারক ক্বওল শরীফ রয়েছে যে :
من له الـمولى فله الكل
অর্থ : “যিনি
মহান আল্লাহ পাক উনার হয়ে যান, সমস্ত মাখলূক্বাত উনার অধীন হয়ে যায়।” সুবহানাল্লাহ!
এ
প্রসঙ্গে একখানা গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপযর্মণ্ডিত ঘটনা
মুবারক রয়েছে। এ মুবারক ঘটনা ৭ম হিজরী
শতকের মহান মুজাদ্দিদ,
সুলত্বানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে
রসূল, হাবীবুল্লাহ হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সঙ্গে
সংশ্লিষ্ট। উনার বয়স মুবারক তখন আনুমানিক বিশ। আনুষ্ঠানিক পবিত্র ইলম মুবারক অর্জন শেষে তিনি বিভিন্ন দেশ
ও জনপদ ছফর করছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি এক বিজন
প্রান্তর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। তিনি
দেখতে পেলেন সামনে একটি ঘর। ঘরের
ভেতর বসা একজন বুযুর্গ ব্যক্তি উনার মুবারক হাতের ইশারায় হযরত খাজা ছাহিব
রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে ডাকছেন। (চলবে)
আবা-২২২
0 Comments:
Post a Comment