একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-১৫১

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে-

একজন কুতুবুয্ যামান উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-

তিন দিনব্যাপী অঝোর ধারার বৃষ্টি

নেক দুআর উসীলায় নিমিষেই বন্ধ

না বুঝে হলেও রোগীকে সাইয়্যিদুনা হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা, মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার ক্বদম মুবারকে নিয়ে যাওয়ার কারণে তিনি এবং উনার বুযূর্গ পিতা ওলীয়ে মাদারজাত, আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি আমার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছেন ভেবে আমি চিন্তিত হই, ভয়ে শঙ্কিত হই। সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার ক্বদম মুবারকে আমি সবিনয় ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং রোগীর জন্য দুআচাই। তিনি বলেন: দুআর সময় আর আছে কী? তছবির বাঁধন ছিঁড়ে গেলে সব দানাই নিঃশেষে পড়ে যায়। একটিও অবশিষ্ট থাকে না। তুমি রোগীকে খালিছ তওবা-ইস্তিগফার করতে বলো। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার বান্দা-বান্দিকে ক্ষমা করার মালিক। তুমি রোগীর অবস্থা লক্ষ্য করতে থাকো।কোন কথা না বলে আমি সাইয়্যিদুনা হযরত মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা, মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম এবং সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাদের ক্বদমবুছি করে আপন গন্তব্যে  ফিরে আসি।

ওলীয়ে মাদারজাত, মুসতাজাবুদ দাওয়াত, আফদ্বালুল আওলিয়া, ফখরুল আওলিয়া, ছাহিবুল ইলহাম, ছাহিবে ইসমে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, মিছদাক্বে কুরআন ওয়াল হাদীছ, ছাহিবে ইলম ওয়াল হিকাম ওয়াল কাশফ ওয়াল কারামত, আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা হযরতুল আল্লামা শাহ ছূফী সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার মুবারক নছীহতপূর্ণ আদেশ আমার ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। দুনিয়ার মোহগ্রস্ততায় নফসের বল্গাহীন চাহিদা পূরণে আমরা যারা সর্বক্ষণ শরীয়তবিরোধী কুকর্মে লিপ্ত, জীবন সায়াহ্নে তাদের আক্ষেপের আয়তন এবং দুর্ভোগের পরিধি কতো বিস্তৃত! এছাড়া আখিরাতে অনন্তকালের সীমাহীন আযাব-গযব তো রয়েছেই। মহান আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আদেশ-নির্দেশ পালনে এবং উনাদের মতে-পথে জীবন নির্বাহে অজ্ঞ, অনীহ ও নাফরমান মানুষের জীবনের অন্তিম দশায় ক্ষমা, নাজাত ও মুক্তি পাওয়ার কতো আকুলতা!

সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক নির্দেশ পালনে আমি ক্লিনিকে রোগীর কাছে যাই। তার কাছে বসি। রোগীর কাছে তার পরিবার-পরিজনের ভিড়। তার চেহারা, আকৃতি, সামগ্রিক অবস্থা দেখে আমি আতঙ্কিত হই। মনে হয়, তিনি আমার পরিচিত কেউ নন। আমার কথা শোনা, উপলব্ধি করা এবং তওবা-ইস্তিগফার করার সামর্থ্য তার নেই বললেই চলে। তবু সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার সদয় নির্দেশানুযায়ী আমি রোগীকে তওবা-ইস্তিগফার করতে বলি। মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা উনার নিকট জীবনে কৃত অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার, তওবা-ইস্তিগফার করার গুরুত্ব ও অপরিহার্যতা তাকে বুঝাতে চেষ্টা করি। আমার কথা শুনে তিনি নির্লিপ্ত থাকেন। কোন কথা বলেন না। রোগীর অনাগ্রহ দেখে আমি বুঝতে পারি, তিনি আমার কথা উপলব্ধি করতে পারেননি অথবা অন্যকিছু। একান্ত মুমূর্ষু অবস্থায় তখন তাকে আর কিছু বলার অবকাশ নেই।

রোগীর সামগ্রিক অবস্থা বিবেচনায় ক্লিনিকে বসেই আমি গভীর ভাবনায় আচ্ছন্ন হই। মনে মনে ভাবতে থাকি, পাপ পঙ্কিলতায় আচ্ছন্ন জীবনের সব আয়োজন, অপকর্মের বোঝা মানুষের জীবন সায়াহ্নে মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। মন ও মস্তিষ্কে তখন কেবলই বিগত জীবনের মন্দ কাজের প্রতিচ্ছবি। নেক কাজের প্রতি মনঃসংযোগ তখন বিলুপ্ত। জিহ্বা তখন অসার। তওবা-ইস্তিগফার করার ইচ্ছা ও উদ্দীপনা তখন তিরোহিত। মৃত্যুর পূর্বে কোন মানুষের জীবনেই এর চেয়ে নিকৃষ্ট ও কঠিন অবস্থা আর নেই। আমি আরো ভাবতে থাকি, সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার অন্তর্দৃষ্টি ও সূক্ষ্মদর্শিতার গভীরতা কতো সুগভীর এবং কতো সীমাহীন উচ্চতায় উনার মাক্বাম! রোগীর অতীত, বর্তমান ও পরিণতির সামগ্রিক বিষয় মুবারক এক নজরেই তিনি বুঝে ফেলেছেন এবং বিষয়টি অতি সংক্ষেপে তিনি আমাকে বলেছেন। (চলবে)

 আবা-২১১

 

0 Comments: