সুন্নতি খাবার গোশত
Related image২.গোশত( লা’হম)

গােশত হচ্ছে খাদ্যের সাইয়্যিদ বা সর্দার।

এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে

عن حضرت أبي الدرداء رضی الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله
علي وتلم سيد طعام أهل الدنيا وأهل الجنة الخ.

অর্থ : “হযরত আবু দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, দুনিয়াবাসী ও জান্নাতবাসীদের খাদ্যের মধ্যে
গোশত হলো সাইয়্যিদ।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে মাজাহ শরীফ : কিতাবুত
ক্বিয়ামাহ : হাদীস শরীফ নং ৩৩০৫)।
 ২(১) তাদের গোশত  লাহুমুল কাতিফ : নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি গােশতের মধ্যে
কাধের গোশতকে উত্তম বলেছেন এবং খাসির বা বকরীর কাধের গোশতে সর্বাধিক
পছন্দ করতেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে

عن حضرت أبي هريرة رضي الله تعالى عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم
يعجبه في الشاة إلا الكيف

অর্থ : “হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি বকরীর কাধের গোশতে সর্বাধিক পছন্দ করতেন।” (আখলাকুন নবী)।
২(২) পিঠের গােশত  লাহমুয যাহর : এ সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ
শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে

عن حضرت عبد الله بن جعفر رضى الله تعالى عنه يحدث ابن البير رضى الله
تعالى عنه وقد تكر لهم جورا أو بعيا أنه سمع رسول الله صلى الله عليه وسلم
قال والقوة يلقون لرسول الله صلى الله عليه وسلم اللحم يقول أطيب اللخم لخه                                                         ১৪


অর্থ : “হযরত আবদুল্লাহ ইবনে জা'ফর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার
থেকে তিনি হযরত ইবনে যুবায়ির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা।
করেন- তিনি উনাদের জন্য একটি মেষ অথবা উট যবেহ করেছিলেন। নরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে তিনি
ইরশাদ মুবারক করতে শুনেছেন, যখন লোকেরা উনার জন্য গোশত বললেন,
তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করছিলেন, গোশতের মধ্যে অপেক্ষাকৃত উত্তম হচ্ছে পেটে
গোশত।" (ইবনে মাজাহ শরীফ : কিতাবুত ক্বিয়ামাহ : হাদীস শরীফ নং ৩৩০৮)
২(৩) বাহুর গােশত লাহমুয যিরা' : এ সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ।
শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে

صلى الله عليه وسلم

عن حديث أبي هريرة رضي الله تعالى عنه قال أتي الله
بلحم فرفع إليه الدرة وكانت تعجبه فتهم منها

অর্থ : “হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার জন্য! গোশত আনা হল এবং উনাকে বাহুর গোশত পরিবেশন করা
হল। তিনি এটা পছন্দ করেছেন। তিনি তা নুরুল্লাহ মুবারক (দাত মুবারক) দিয়ে।
ছিড়ে ছিড়ে চিবিয়ে খেলেন।” (তিরমিযী শরীফ : কিতাবুত ক্বিয়ামাহ : হাদীছ
শরীফ নং ১৮৩৭, ইবনে মাজাহ শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ৩৩০৭)।
অন্য বর্ণনায় বর্ণিত রয়েছে

বাহুর গ হু আলাইহি।
বিয়ে খেলেছেন তাকে

عن حضرت أم المؤمنين الثالثة الصديقة عليها السلام قالت ما كان الذرا أخب
اللحم إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم ولكن كان لا يجد اللخم الا غبا فگان
عجل اليه لأنه أجلها ضجا.

অর্থ : “হযরত উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার
থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার নিকটে বাহুর গােশত অন্য সব অংশের গােশতের চেয়ে বেশী প্রিয়।
ছিল তা নয়, বরং প্রকৃত ব্যাপার এই যে, অনেক দিনের ব্যবধানে তিনি গােশত
খেতেন। এই জন্য উনাকে বাহু গোশত পরিবেশন করা হতো। কেননা বাহুর
গােশত তাড়াতাড়ি সেদ্ধ হয় এবং গলে যায় ।" (তিরমিযী শরীফ; কিতাবুত।
স্বয়ামাহ : হাদীছ শরীফ নং ১৮৩৮)।
২(8) ভুনা গােশত লাহমুন মাশউয়ী : নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ভুনা গােশতও গ্রহণ করেছেন।

إن حضرت أم المؤمنين السادسة أم سلمة عليها السلام أخبرته أنها قت إلى
با مشويا فأكل منه ثم قام إلى الصلاة وما توضا
رسول الله صلى                                                                                                                                  ১৫


মহাসম্মানিত সুন্নতী খাদ্যসমূহ

অর্থ : “হযরত উম্মুল মু'মিনীন আস সাদিসাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে
বর্ণিত। নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল
উনার মুবারক খেদমতে তিন (ছাগলের) পাজরের ভুনা গোশত পেশ করলেন
* নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি না।
হতে খেলেন, তারপর নামাযে দাড়িয়ে গেলেন কিন্তু (পুনরায়) ওযূ করেননি।”
(তিরমিযী শরীফ : কিতাবুত ক্বিয়ামাহ : হাদীস শরীফ নং ১৮২৯)
২(৫) নেহারী আল কুরা’ : এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার
মধ্যে বর্ণিত রয়েছে

عن حضرت عبد الرحمن بن عابس رحمه الله عليه عن أبيه قال سألت خضر
أم المؤمنين الثالثة الصديقة عليها السلام عن لحوم الأضاحي؟ قالت تا تخبأ
الا رسول الله صلى الله عليه وسلم شهرا

অর্থ : “হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আবিস রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার
থেকে বর্ণিত, উনার পিতা বলেন, উম্মুল মুমিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীকা
আলাইহাস সালাম উনাকে কুরবানীর গােশত সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলাম। উম্মুল
মু'মিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, আমরা
এক মাস পর্যন্ত নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক পেশ করার জন্য কুরবানীর পশুর পা তুলে
রাখতাম। এরপর তিনি তা খেতেন।” (নাসায়ী শরীফ : কিতাবুদ দহিয়্যা : হাদীছ
শরীফ নং ৪৪৩৩)।
নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
যেসব প্রাণীর গোশত গ্রহণ করেছেন সেসব কতিপয় প্রাণীর গোশত বিবরণ :
২(৬) উটের গােশত লাহমুল বায়ীর  বা লাহমুল বুদনাহু : হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন

ثم انصرف إلى المنكر فنحر ثلاثا وسيين بيده ثم آغطى عليا فنحر ما غبر
كلا من
وأشركه في هذه ثم آمر من كل بذرة ببضعة قعلث في قدر قطبخ
لحمها وشرب من مرقها.

অর্থ : “অতঃপর নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি কুরবানী উনার স্থানে এসে নিজ হাত মুবারকে (১০৫টি উটের
মধ্য থেকে) ৬৩ টি উট নহর করেন আর হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ।
আলাইহিস সালাম উনাকে বাকী (৩৭টি) উট নহর করার দায়িত্ব দেন এবং
উনাকে উনার কুরবানীর মধ্যে শরীক করে নেন। অতঃপর প্রত্যেকটি উট থেকে
এক টুকরা করে গোশত পাতিলে একত্রিত করে রান্না করতে বলেন। অতঃপর
উনারা উভয়ে উক্ত গোশত থেকে আহার করে এবং সুরুয়া পান করেন।”
(মুসলিম শরীফ : কিতাবুল হজ্জ : হাদীছ শরীফ নং ২৮৪০)।                                                       ১৬

২(৭) বকরীর গােশত - লাহমুশ শাত : এ সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে

عن حضرت عمرو بن أمية رضى الله تعالى عنه أخبره أنه رأى النبي صلى الله علیه
ولم يځت من كتف شاة في يده فدعي إلى الصلاة فألقاها والسكن التي يخت
بها ثم قام فصلى ولم يتوضأ


অর্থ : “হযরত আমর ইবনে উমাইয়্যাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার।
থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনাকে তিনি নিজ হাত মুবারক-এ বকরীর কাধের গােশত থেকে কেটে
খেতে দেখেছেন। তারপর নামাযের সময় হলে তিনি তা রেখে দিলেন এবং
ছুরিটিও (রেখে দিলেন) যা দিয়ে তিনি কেটে খাচ্ছিলেন। তারপর উঠলেন এবং
নামায আদায় করলেন। তিনি (নতুন) ওযু করলেন না।” (বুখারী শরীফ :
কিতাবুত ক্বিয়ামাহ : হাদীস শরীফ নং ৫৪০৮)
২(৮) মুরগীর গােশত - লাহমুদ দাজাজাহ:  বর্ণিত রয়েছে

عن حضرت ابن موسی رضی الله تعالى عنه قال رأيت رسول الله صلى الله عليه
وسلم يأكل لحم دجاج

অর্থ : “হযরত আবু মূসা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাকে আমি মুরগির গোশত গ্রহণ করতে দেখেছি।” (তিরমিযী শরীফ :
কিতাবুত ক্বিয়ামাহ : হাদীস শরীফ নং ১৮২৭)।
 ২(৯) হুবারা নামক পাখির গােশত - লাহমুল হুবারা : বর্ণিত রয়েছে

عن حضرت ابراهيم بن عمر بن سفينة زخمه الله عليه عن أبيه عن جده قال
بالی
أكلت مع رسول الله صلى الله عليه وسلم لحم

অর্থ : “হযরত ইবরাহীম ইবনে উমর ইবনে সাফিনা রহমতুল্লাহি আলাইহি
(তিনি বুরাইদা ইবনে উমর ইবনে সাফিনা নামেও পরিচিত) উনার থেকে
পর্যায়ক্রমে উনার পিতা ও দাদার সুত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নূরে।
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে।
হুবারা গোস্ত খেয়েছি।" (আবু দাউদ শরীফ; কিতাবুত ক্বিয়ামাহ : হাদীছ শরীফ।
নং ৩৭৯৭, তিরমিযী শরীফ : কিতাবুত ক্বিয়ামাহ : হাদীস শরীফ নং ১৮২৮)।
২(১০) খরগােশের গােশত - লাহমুল আঝনাব : বর্ণিত রয়েছে

عن حضرت انس بن مالك رضي الله تعالى عنه قال انفجنا أرنبا يمر الظهران
ی آخدها فجئت بها إلى ابن طلحة
فسعوا عليها حتى تغوا فسعت عليها
فبعث إلى النبي صلى الله عليه وسلم يوركيها آؤ فخذيها فقبله 17                                                        ১৭

অর্থ : “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে।
বর্ণিত। তিনি বলেন, মাররুয যাহরান নামক স্থানে আমাদের পাশ দিয়ে একটি
খরগোশ লাফিয়ে চলে গেল। দৃশ্য দেখে আমার সঙ্গীরা খরগোশ কে ধাওয়া
করেন, কিন্তু উনারা সেটিকে পাকড়াও করতে না পেরে ক্লান্ত ও ব্যর্থ হয়ে ফিরে
আসেন। তবে আমি ধাওয়া করে এর নাগাল পাই এবং ধরে হযরত আবু তালহা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কাছে নিয়ে আসি। (তিনি খরগােশটি জবাই
করে) নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার মুবারক খিদমতে আমাকে দিয়ে উরু অথবা পেছনের অংশ পাঠান । নুরে।
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেগুলাে
গ্রহণ করেন।" (বুখারী শরীফ : কিতাবুয যাবীহা ওয়াল সাঈদ : হাদীস শরীফ নং
৫৪৮৯)
 গোশত খাওয়ার উপকারিতা :
১. গােশত শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে। এ প্রসঙ্গে বর্ণিত রয়েছে


قال خطرت الهري رحمة الله عليه اكل اللحم يزيد منبعین قوة

আর্থ : “ইমাম হযরত যুহরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, গোশত ভক্ষণ
দেহে ৭০ গুণ শক্তি বৃদ্ধি করে। সুবহানাল্লাহ! (যাদুল মা'য়াদ ফি হাদয়ি খাইরিল
ই'বাদ ৪র্থ খণ্ড ৩৪০ পৃষ্ঠা)।
২. গােশত চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে । এ প্রসঙ্গে বর্ণিত রয়েছে

قال حضرت محمد بن واسع رحمة الله عليه الله يزيد في البصر

অর্থ : “মুহম্মদ ইবনে ওয়াসি' রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, গােশত
চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে। সুবহানাল্লাহ! (যাদুল মা'আদ ফী হাদয়ি খাইরিল
ই’বাদ ৪র্থ খণ্ড ৩৪০ পৃষ্ঠা) ।
৩. গোশত শরীরের রং ফর্সা করে।
8. পেটের ক্ষুধা নিবারণ করে।
৫. আকৃতি সুন্দর করে ।
এ প্রসঙ্গে বর্ণিত রয়েছে

عن حضرت علی بن ابي طالب عليه السلام كلوا اللحم فانه يصفي اللون
يخمص البطن وحسن الخلق

| অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তােমরা গােশত খাও। কেননা গােশত শরীরের রং
ফর্সা করে, পেটের ক্ষুধা নিবারণ করে এবং আকৃতি সুন্দর করে।" (যাদুল মা'য়াদ
ফি হাদয় যাহারল হবাদ ৪র্থ খণ্ড ৩৪০ পৃষ্ঠা: তিব্বে নববী লি ইবনে কাইয়্যিম।
১ম খন্ডের ২৭৬ পৃষ্ঠা)
অন্য বর্ণনায় বর্ণিত রয়েছে

عن حضرت علی علیه السلام من تركه أربعين ليلة سناء خلقه 18                                                             ১৮

অর্থ : “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি ৪০ রাত গােশত খাওয়া পরিত্যাগ করবে
সে ব্যক্তির চরিত্র মন্দ হয়ে পড়বে।” (যাদুল মা'য়াদ ফি হাদয়ি খাইরিল ইবাদ
৪র্থ খণ্ড ৩৪০ পৃষ্ঠা; তিব্বে নববী লি ইবনে কাইয়্যিম ১ম খণ্ড ২৭৬ পৃষ্ঠা)।
| অন্যত্র বর্ণিত রয়েছে

قال حضرت نافع رحمة الله علیه گان حضرت ابن عمر رضی الله تعالی عنه
إذا كان رمضان لم يفته اللحم واذا سافر لم يفثة اللحم

অর্থ : “হযরত ইমাম নাফে রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত যে,
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি পবিত্র রমাদ্বান
শরীফে এবং সফরে গোশত পরিত্যাগ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (যাদুল মা'য়াদ
ফি হাদয়ি খাইরিল ই’বাদ ৪র্থ খণ্ড ৩৪০ পৃষ্ঠা; তিব্বে নববী লি ইবনে কাইয়্যিম
১ম খন্ডের ২৭৬ পৃষ্ঠা)                                                                                                                ১৯
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-১৮
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-১৮
অনন্তকালব্যাপী পবিত্র সায়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল জারি এবং উনার কার্যক্রম।
ওহাবী, সলাফী আর লা মাযহাবীরা ছাড়া সকল সুন্নি মুসলমান বিশেষভাবে যারা কোন সিলসিলা ভূক্ত উনারা পবিত্র ১২ ই রবীউল আউয়াল শরীফ এই মর্যাদাবান দিবস কমপক্ষে ১ দিনের জন্যে হলেও পালন করে থাকেন। এই দিনে মাহফিলের আয়োজন করে তবারুকের ব্যবস্থা করেন। বাংলাদেশে পর পর ৩ দিন বা এক নাগাড়ে ১২ দিন পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার অনুষ্ঠান পালন করা সহজেই চোখে পরে। কিন্তু যিনি যামানার লক্ষ্যস্থল ওলী আল্লাহ যামানার ইমাম ও মুস্তাহিদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম তিনি বিশ্বে সর্ব প্রথম এই কায়িনাতের বুকে প্রথমে মাস ব্যাপী, পরে ৪৫ দিন ব্যাপী , পরে ৬৩ দিন ব্যাপী পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ উনার মাহফিল চালু করেন।
কিন্তু যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হূযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার সঙ্গে নিবিড় ভাবে নিসবত মুবারক প্রাপ্ত তিনিতো কেবল কয়েকদিন বা মাস বা বছর ব্যাপী অনুষ্ঠান পালন করেই তৃপ্ত হবে না এটাই স্বাভাবিক। সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আযম হযরত মুরশিদ কিবলা আলাইহিস সালাম তিনি যেহেতু পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ এবং পবিত্র হাদিস শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক তাই তিনি বিশ্ববাসীর হিদায়েত লাভের উদ্দেশ্যে, নাজাতের উদ্দেশ্যে প্রকাশ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ইজতিহাদ । " পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ পালন করা সকলের জন্য সকল সময়ের জন্য ফরয"।
মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ঘোষণা মুবারক করেন , ‘হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা ২৪ ঘণ্টা তথা দায়িমীভাবে সারা জীবন সম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করেছেন" ফলে তিনিও হযরত সাহাবায়ে কিরাম রদিয়াল্লাহু আনহু উনাদের অনুসরণে সারা বছর তথা আজীবনব্যাপী সম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানিত মাহফিল মুবারক জারী করেন। আর এই অনন্তকাল ব্যাপী জারীকৃত মুবারক মাহফিল উনাকে আরও স্পস্ট করার জন্য জারী করেন বিশেষ ৬৩ দিন মাহফিল। সুবহানাল্লাহ।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি সমস্ত জিন-ইনসান, কায়িনাতবাসীকে জানিয়ে দিন, মহান আল্লাহ পাক তিনি যে, ফযল, করম ও রহমত মুবারক হিসেবে উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠিয়েছেন, সেজন্য তারা যেন খুশি প্রকাশ করে, ঈদ পালন করে তথা মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে। এই খুশি প্রকাশ করাটা, ঈদ পালন করাটা, মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করাটা সবকিছু থেকে উত্তম; যা তারা দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা ইউনূস শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ ৫৮)
এই সম্মানিত আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা প্রত্যেক মুসলমান, জিন-ইনসান, কায়িনাতবাসীর জন্য ফরয করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে এখন বলার বিষয় হচ্ছে, এই মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ কতক্ষণ সময় ধরে পালন করতে হবে? এই সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّـاۤ اَرْسَلْنٰكَ شَاهِدًا وَّمُبَشّـِرًا وَّنَذِيْرًا. لِتُؤْمِنُوْا بِاللهِ وَرَسُوْلِهٖ وَتُعَـزِّرُوْهُ وَتُوَقّـِرُوْهُ وَتُسَبّـِحُوْهُ بُكْرَةً وَّاَصِيْلًا.
“নিশ্চয়ই আমি আমার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে শাহিদ তথা (উপস্থিত, হাজির, নাযির) সাক্ষ্যদানকারী, সুসংবাদদানকারী ও ভীতি প্রদর্শনকারী হিসেবে সৃষ্টি করেছি, প্রেরণ করেছি। যেন তোমরা ঈমান আনতে পারো মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি। অতএব, তোমরা যথাযথভাবে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দাও, উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করো এবং সকাল-সন্ধ্যা তথা দায়িমীভাবে অনন্তকাল যাবৎ উনার ছানা-ছিফত মুবারক করো তথা উনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করো।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা ফাতহ শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ : ৮-৯)
এই সম্মানিত আয়াত শরীফ উনার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত জিন-ইনসান ও কায়িনাতবাসীর জন্য উনার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে সকাল-সন্ধ্যা, দায়িমীভাবে অনন্তকাল মহাসম্মনিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার নির্দেশ মুবারক প্রদান করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
শুধু তাই নয়, মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীকে নির্দেশ দেয়ার পূর্বেই তিনি নিজেই উনার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সৃষ্টি করার পর থেকে অদ্যবধি দায়িমীভাবে মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে যাচ্ছেন এবং অনন্তকাল যাবৎ মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করতেই থাকবেন। (সুবহানাল্লাহ)
আর যখন থেকে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে, তখন থেকে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারাও নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে যাচ্ছেন। (সুবহানাল্লাহ)
সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اُبَـىِّ بْنِ كَعْبٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنّـِىْ أُكْثِرُ الصَّلٰوةَ عَلَيْكَ فَكَمْ اَجْعَلُ لَكَ مِنْ صَلٰوتِىْ فَقَالَ مَا شِئْتَ قُلْتُ اَلرُّبُعَ قَالَ مَا شِئْتَ فَاِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَّكَ. قُلْتُ اَلنّـِصْفَ قَالَ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَّكَ قُلْتُ فَالثُّلُثَيْنِ قَالَ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَّكَ قُلْتُ اَجْعَلُ لَكَ صَلٰوتِىْ كُلَّهَا قَالَ اِذًا تُكْفٰى هَمُّكَ وَيُكَفَّرُ لَكَ ذَۢنبُكَ .
অর্থ: “হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নিশ্চয়ই আমি আপনার উপর বেশি বেশি ছলাত মুবারক পাঠ করতে চাই, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করতে চাই তথা আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করতে চাই। তাহলে আমি কী পরিমাণ সময় আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো, আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবো? অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমি কত ঘণ্টা আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো তথা আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবো? আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনার যতক্ষণ ইচ্ছা। আমি বললাম, এক চতুর্থাংশ সময় তথা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৬ ঘণ্টা আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো, আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবো? আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনার যতক্ষণ ইচ্ছা, আপনি করুন। তবে যদি এর চেয়ে বেশি সময় করেন, তাহলে তা আপনার জন্য উত্তম হবে। আমি বললাম, তাহলে আমি অর্ধেক সময় তথা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১২ ঘণ্টা আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো, আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবো? আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনার যতক্ষণ ইচ্ছা, আপনি করুন। তবে যদি এর চেয়ে বেশি সময় করেন, তাহলে তা আপনার জন্য উত্তম হবে। আমি বললাম, তাহলে আমি আমার তিন ভাগের দুই ভাগ সময় তথা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৬ ঘণ্টা আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো, আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবো? আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনার যতক্ষণ ইচ্ছা, আপনি করুন। তবে যদি এর চেয়ে বেশি সময় করেন, তাহলে তা আপনার জন্য উত্তম হবে। তখন আমি বললাম, তাহলে আমি আমার সম্পূর্ণ সময় তথা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২৪ ঘণ্টাই আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো, আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবো? তখন আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, যদি আপনি এরূপ করতে পারেন, তাহলে আপনার সমস্ত নেক মাক্বছূদগুলো পূর্ণ করে দেয়া হবে এবং আপনার সমস্ত গুনাহখতাগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, মুস্তাদরকে হাকিম শরীফ ২/৪২১, শুয়াবুল ঈমন শরীফ ৩/১৩৮, মিশকাত শরীফ, জামিউল আহাদীছ শরীফ ৩২/৩৭৩, জামিউল উছূল শরীফ ১১/৮৪৬৭, রিয়াদুছ ছালিহীন ১/৩৪৭ ইত্যাদি)
মূলত: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূর্ন ইত্তেবা করার মাধ্যমেই হাক্বীকী ভাবে উনার সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা সম্ভব।
নূরে মুজাসসাম , হাবীবুল্লাহ , হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরন প্রসঙ্গে, আল্লাহ পাক ইরশাদ মুবারক করেন,
وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانتَهُوا ۚ وَاتَّقُوا اللَّـهَ ۖ إِنَّ اللَّـهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
অর্থাৎ: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ , হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা এনেছেন, তা আঁকড়িয়ে ধর, যা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন, তা থেকে বিরত থাক।
সুরা হাশর শরীফ: আয়াত শরীফ-৭
আর অনুসরনটা যে ২৪ ঘন্টা এবং সারাজীবনব্যপী করতে হবে তা হযরত উবাই বিন ক্বাব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত উপরোক্ত হাদীছ শরীফ থেকে সুস্পষ্ট।
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-১৭
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-১৭
অনন্তকালব্যাপী পবিত্র সায়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল জারি এবং উনার কার্যক্রম।
নামকরণে চরম পরিশুদ্ধ অন্তর মুবারকের বহিঃপ্রকাশঃ

আমাদের দেশসহ অনেক মুসলিম দেশে পবিত্র ১২ রবীউল আউয়াল শরীফ পালিত হয় অত্যন্ত ভাব গাম্ভীর্যের সাথে। অবশ্য অনেক তথকথিত মুসলিম দেশ এই সুমহান দিনের মর্যাদা বুঝতে অক্ষম থাকায় তারা এই বিশেষ দিন পালন করার নিয়ামত অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ। একটি বিষয় দিবালোকের মত স্পষ্ট যে "পবিত্র ১২ রবীঊল আউয়াল শরীফ " পালন আসলে অন্তরের পরিশুদ্ধতা, আকিদার বিশুদ্ধতার উপর নির্ভরশীল। চাইলেই কেউ অনুষ্ঠান পালন করতে পারেনা এবং পারবে না। কোন দেশ, জাতি, সমাজ,গোত্র, সিলসিলা সম্পর্কে ধারণা করতে চাইলে কেবল এই একটি মাপকাঠিই যথেস্ট। যারা এই বিশেষ দিনের প্রতি মর্যাদাবান উনারাই সকল দিক থেকে শ্রেষ্ঠ। সুবহানাল্লাহ।
আমাদের দেশের তথাকথিত মৌলভী শ্রেণী এই বিশেষ দিন পালন করতো "সীরাতুন্নবী সল্লাল্লাহু আলাইহিসসালাম" হিসেবে। কিন্তু এই নামকরণের মধ্যেই ছিল চরম পর্যায়ের মূর্খতা ও বেয়াদবী কেননা সীরাত শব্দ দ্বারা কেবল "চরিত্র মুবারক" কে বোঝায় অর্থাৎ চরিত্র মুবারক আলোচনার অনুষ্ঠানই ছিল "সীরাতুন্নবী সল্লাল্লাহু আলাইহিসসালাম" পালনের অনুষ্ঠান। নাউযুবিল্লাহ। অথচ মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই ইরশাদ মুবারক করেন " তোমাদের জন্য তোমাদের রসূল উনার মাঝে রয়েছে সকল বিষয়ের সর্বোত্তম আদর্শ" সুবহানাল্লাহ। তাই হক্কানী রব্বানী আউলিয়া কিরামগণ পবিত্র ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ দিবসের অনুষ্ঠান পালন করতেন " পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম" হিসেবে, অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনি যে দিন এই যমীনে তাশরীফ মুবারক এনেছেন সেই দিন খুশীর দিন । কিন্তু যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার লক্ষ্যস্থল ওলী আল্লাহ, যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাহি ওয়াসাল্লাম উনার সঙ্গে গভীর নিসবত প্রাপ্ত, ১৫ শতকের সুমহান মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম তিনি কেবল "ঈদে মিলাদুন্নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম" এই নাম মুবারক দ্বারা তৃপ্ত নন। হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার অন্তর মুবারকের সেই ব্যাকুলতার কারণেই মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনাকে চরম পর্যায়ের পরিতৃপ্তি দান করেন ফলে তিনি পবিত্র ১২ই রবিউল আউয়াল শরীফ দিবসকে ঘোষণা দেন " পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ দিবস" অর্থাৎ সহজ অর্থ করলে দাড়ায় " শ্রেষ্ঠ দিন সমূহের মধ্যে যে দিন শ্রেষ্ঠতম"। আর পবিত্র ১২ তম সংখ্যাকে তিনি সম্মানিত করেন " সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আদাদ" শরীফ হিসেবে। " সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আদাদ" অর্থ হচ্ছে সংখ্যার দিক থেকে যে সংখ্যা শ্রেষ্ঠতম। সুবহানাল্লাহ। এই শ্রেষ্ঠতম দিন মুবারক পালনের অনুষ্ঠান হচ্ছে পবিত্র "সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ মাহফিল"। আবার পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই নাম মুবারককে আরও সম্পূর্ণতা দান করেন " পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম" হিসেবে ঘোষণা দিয়ে । সুবহানাল্লাহ।
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-১৬
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-১৬
বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি মাদরাসা, মাসজিদ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা
বলা হয় "মহান আল্লাহ পাক হচ্ছেন বান্দার ধারণা অনুযায়ী" অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি মানুষের যত সুন্দর-বিশুদ্ধ-স্বচ্ছ বিশ্বাস থাকবে মহান আল্লাহ পাক সেই বান্দাকে সেভাবেই ধরা দেবেন। তাই যখন কোন নেক নিয়ত করার প্রয়োজন হয় তখন সরবোচ্চ নিয়তই করতে হয় আর এতে দেখা যায় মানুষ কোন নেক কাজ সম্পূর্ণ করতে না পারলেও কেবল নেক নিয়তের কারণে তিনি কাজটি সম্পূর্ণ হবার সকল সওয়াব পান, সুবহানাল্লাহ। কেউ যদি পবিত্র কুর‍য়ান শরীফ হেফজ করার নিয়ত করেন এবং তা শেষ না করেই ইন্তিকাল করেন তখন সেই ব্যাক্তিকে কবরে হাফেজ হিসেবেই তৈরি করে কিয়ামতের ময়দানে তোলা হবে। সুবহানাল্লাহ।
সারা বিশ্বে কোটি কোটি মাসজিদ মাদরাসা নির্মাণ করার পরিকল্পনা হচ্ছে সেই সরবোচ্চ, বিশুদ্ধ নিয়ত যার প্রতিদান কেবল মহান আল্লাহপাকই দান করতে থাকেন কারণ তিনি হচ্ছে সর্বোত্তম দাতা ও গণী।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন- المسجد بيت الله و المدرسة بيتى
অর্থ : নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সম্মানিত মসজিদ হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার ঘর এবং সম্মানিত মাদরাসা হচ্ছেন- আমার ঘর।” সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুল মুরসালীন,ইমামুল মুরসালীন ,নূরে মুজাসসাম ,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ بَنى لِلّهِ مَسْجِدًا بَنى اللهُ لَه بَيْتًا فِيْ الْجَنَّةِ অর্থ : “যে ব্যক্তি মহান আল্লাহপাক উনার জন্য মসজিদ তৈরী করবে মহান আল্লাহপাক তিনি সম্মানিত জান্নাতে তার জন্য বালাখানা তৈরি করবেন।” সুবহান্নাল্লাহ।“হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইরশাদ মুবারক করতে শুনেছি- “যে ব্যক্তি মহান আল্লাহপাক উনার জন্য পবিত্র মসজিদ তৈরী করবে, মহান আল্লাহপাক তিনি সম্মানিত জান্নাতে তার জন্য অনুরূপ (বালাখানা) তৈরি করবেন।” (মিশকাত শরীফ) সুবহান্নাল্লাহ।
ক্বিয়ামত পর্যন্ত পবিত্র মসজিদ ও পবিত্র মাদরাসায় যত নেক আমল হবে, সমস্ত নেক আমলের ছওয়াব তার আমলনামায় পৌছতেই থাকবে। অপরদিকে উক্ত পবিত্র মসজিদ-মাদরাসার মাধ্যমে যতো ইলমী খিদমত হবে, তার ছওয়াবও উক্ত মসজিদ মাদরাসা নির্মাণের অংশ গ্রহনকারীগণ ক্বিয়ামত পর্যন্ত পেতেই থাকবেন। সুবহানাল্লাহ।
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-১৫
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-১৫
রাজারবাগ শরীফে দশ তলা বিশিষ্ট সুন্নতী মসজিদ ও মাদরাসা ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে
স্মরনীয় যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম নির্দেশক্রমে ঢাকার রাজারবাগ শরীফে মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ (মাদরাসা) প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই সুন্নতী জামে মসজিদ ও তৎসংশ্লিষ্ট মাদরাসায় তখন থেকেই অনেক আশিকীন, মুহিব্বীন, যাকিরীন, মুরীদীন ও ত্বলিবুল ইলমগণ উনারা অধ্যয়ন, যিকির-ফিকির, ইবাদত-বন্দিগী পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস মুতাবিক ইলম মুবারক চর্চা ও গবেষণা করে আসছেন।

উল্লেখ্য যে, পবিত্রতম সুন্নতী জামে মসজিদ ও তৎসংশ্লিষ্ট মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ (মাদরাসা) প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত হুবহু মসজিদে নববী শরীফ উনার আদলে ও আদর্শে সমস্ত পবিত্র দ্বীনি কার্যক্রম সমগ্র কায়িনাতবাসীর মাঝে পৌঁছে দেয়ার আপ্রাণ কোশেশ করা হচ্ছে। বর্তমানে পবিত্র দ্বীনি কার্যক্রম সারা বিশ্বব্যাপী প্রচার-প্রসার ও বিশ্বব্যাপী মহান নেতৃত্বদান এবং আরো অধিক সংখ্যক মাদরাসার ছাত্রগণের ইলিম হাছিলের সুবিধার্থে এবং তৎসঙ্গে প্রতিষ্ঠিত মুহম্মদিয়া গবেষণা কেন্দ্রে আরো ব্যাপকভাবে গবেষণার আঞ্জাম এবং গবেষকগণের সুবিধার্থে সুন্নতী জামে মসজিদ ও তৎসংশ্লিষ্ট মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ মাদরাসা ও গবেষণাকেন্দ্রকে আরো ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ১৬ তলা বিশিষ্ট মসজিদ-মাদরাসা ভবন নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। আর সেটাও করা হয় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক নির্দেশক্রমে, পবিত্র সুন্নত পালনের সুমহান লক্ষ্যেই। সুবহানাল্লাহ! কেননা পবিত্র মসজিদে নববী শরীফ উনাকেও প্রয়োজনে সংস্কার ও সম্প্রসারণ করা হয়। মূলত উক্ত সুন্নত অনুসরণে সুন্নতী মসজিদ ও মাদরাসা সম্প্রসারন ও সংস্কারের মাধ্যমে আরেকখানা পবিত্র সুন্নত মুবারকও পালন হয়ে যাচ্ছে। সুবহানাল্লাহ! 

শুধু তাই নয় এই পবিত্র মসজিদ উনার মধ্যে যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম ও সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা নামায আদায় করবেন, উনারা জুমুয়া শরীফ উনার নামায আদায় করবেন, খুতবা শরীফ পাঠ করবেন, পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার ইবাদত বন্দেগী করবেন, ছলাতুত তারাবীহ, পবিত্র ইতেক্বাফ করবেন, পবিত্র শবে ক্বদর, পবিত্র শবে বরাতে উনারা সারারাত জেগে ইবাদত বন্দেগী করবেন। পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আদ্বহা উনার জামায়াত আদায় করবেন। অনন্তকাল ব্যাপী পবিত্র সুমহান সম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার মাহফিল দায়িমীভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, হবে এবং হতেই থাকবে। সুবহানাল্লাহ! অনন্তকাল ব্যাপী মহাসম্মানিত হযরত উম্মাহাতুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, হযরত আহলে বাইতি হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত খূলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের আলোচনা, ছানা-ছিফত চলতেই থাকবে। যে পবিত্র সুন্নতী জামে মসজিদে প্রতিদিন দফায় দফায় পবিত্র সুমহান মীলাদ শরীফ পাঠ হচ্ছে ও হতেই থাকবে। সুবহানাল্লাহ! সেই পবিত্র সুন্নতী মসজিদের কতবড় শান মান, মর্যাদা ফাযায়িল-ফযীলত, গুরুত্ব তা আমাদেরকে চিন্তা ফিকির করে উপলব্ধি করতে হবে। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ ও আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ফযীলত
Image result for সম্মানিত আহলু বাইত শরীফসম্মানিত আহলু বাইত শরীফ ও আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ফযীলত:

খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

قل لا اسئلكم عليه اجرا الا الـمودة فى القربى
অর্থ: “(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি জানিয়ে দিন, আমি তোমাদের নিকট কোনো বিনিময় চাচ্ছি না। আর চাওয়াটাও স্বাভাবিক নয়; তোমাদের পক্ষে দেয়াও কস্মিনকালে সম্ভব নয়। তবে তোমরা যদি ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে চাও; তাহলে তোমাদের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- আমার হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনাদের খিদমত মুবারক উনার আনজাম দেয়া।” (পবিত্র সূরা শূরা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৩)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার পবিত্র বংশধরগণ উনাদের ফযীলত সম্পর্কে রঈসুল মুফাস্সিরীন, ওলীয়ে কামিল আল্লামা কাযী ছানাউল্লাহ পানিপথি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার প্রণিত ‘তাফসীরে মাযহারী শরীফ উনার ৮ম জিঃ ৩২০ পৃষ্ঠায় উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় লিখেন-
لا اسئلكم اجرا الا ان تودوا اقربائى واهل بيتى وعترتى
অর্থ: “আমি তোমাদের নিকট প্রতিদান চাইনা তবে তোমরা আমার নিকটাত্মীয়, হযরত আহলে বাইত শরীফ ও পবিত্র বংশধরগণ উনাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন কর বা উনাদের হক্ব আদায় কর।
এ সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন-
والله لادخل قلب امرئى مسلم ايـمان حتى يحبكم لله ولقرابتى
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! ততক্ষণ পর্যন্ত কোন মুসলমান ব্যক্তির অন্তরে পবিত্র ঈমান দাখিল হবে না (হাক্বীক্বীভাবে ঈমানদার হবে না) যতক্ষণ পর্যন্ত সে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক উনার জন্য আমার সম্মানিত বংশধরগণ উনাদেরকে মুহব্বত না করবে।” (মুসনাদে আহমদ শরীফ, তাফসীরে ইবনে কাছীর ৭/১৮০)
স্মরণীয় যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরানী বংশধারা সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত দুই আওলাদ ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম এবং ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী জারী রয়েছে। সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম শরীফ, ইবনে কাছীর শরীফ, মাযহারী শরীফ, মাআরেফুল কুরআন ইত্যাদি)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
الحسن والحسين عليهما السلام سيدا شباب اهل الجنة
অর্থ: “হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম ও হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনারা হচ্ছেন বেহেশতের যুবক উনাদের সাইয়্যিদ।” সুবহানাল্লাহ! (মিশকাত শরীফ)
অতএব, যারা ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের বংশধর বা আওলাদ উনারাই ‘সাইয়্যিদ বা আওলাদুর রসূল’ নামে পরিচিত।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
انا تارك فيكم الثقلين اولـهما كتب الله فيه الـهدى والنور فخذوا بكتب الله واستمسكوا به فحث على كتب الله و رغب فيه ثم قال واهل بيتى اذكركم الله فى اهل بيتى اذكركم الله فى اهل بيتى
অর্থ: “আমি তোমাদের জন্য দু’টি নিয়ামত মুবারক রেখে যাচ্ছি। প্রথম নিয়ামত মুবারক হলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র কিতাব। উনার মধ্যে রয়েছে হিদায়েত ও নূর মুবারক। তোমরা পবিত্র কিতাবুল্লাহ উনাকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়িয়ে ধর। “তিনি কিতাবুল্লাহ উনার প্রতি উৎসাহ প্রদান করলেন। অতঃপর বললেন, “দ্বিতীয় নিয়ামত মুবারক হলেন, আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ বা (আওলাদগণ) বংশধরগণ। আমি তোমাদেরকে আমার হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ হতে বিশেষ নছীহত মুবারক করছি। (মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
تركت فيكم امرين لن تضلوا ما تمسكتم بهما كتاب الله وعترتى اهل بيتى
অর্থঃ “আমি তোমাদের নিকট দু’টি নিয়ামত মুবারক রেখে যাচ্ছি। যদি তোমরা উক্ত নিয়ামত নিয়ামত মুবারকদ্বয়কেআঁকড়িয়ে ধর তবে পথভ্রষ্ট হবে না। প্রথমতঃ মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র কিতাব ও দ্বিতীয়তঃ আমার বংশধর বা আওলাদ আলাইহিমুস সালামগণ উনারা।”
তিনি অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন-
ان اولادى كسفينة نوح من دخلها نجا
অর্থ: “নিশ্চয়ই আমার হযরত আওলাদ আওলাইহিমুস সালাম উনাদের উদাহরণ হলো হযরত নূহ আলাইহিস্ সালাম উনার কিস্তির ন্যায়। যে তাতে প্রবেশ করেছে বা আরোহন করেছে সেই নাযাত পেয়েছে।” সুবহানাল্লাহ! (সিররুশ শাহাদাতাইন) অর্থাৎ হযরত আওলাদুর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে যারা মুহব্বত করবে তারা সকলেই নাজাত লাভ করবে। সুবহানাল্লাহ!
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
ان اولادى كحطة بنى اسرائيل من قالـها نجا
অর্থ: “নিশ্চয়ই আমার হযরত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনারা বণী ইসরাইলের হিত্তাতুন-এর ন্যায়। যারা তা বলেছে তারা নাযাত লাভ করেছে।” সুবহানাল্লাহ! (সিররুশ্ শাহাদাতাইন)
অর্থাৎ হযরত আওলাদুর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে যারা মুহব্বত করবে তারা সকলেই নাজাত লাভ করবে। সুবহানাল্লাহ!
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
النجوم امان لاهل السماء واهل بيتى امان لاهل الارض فاذا ذهب اهل بيتى ذهب اهل الارض
অর্থ: “তারকাসমূহ আসমানবাসীদের জন্য নিরাপত্তা দানকারী আর আমার বংশধর বা আওলাদ আলাইহিমুস সালামগণ উনারা হচ্ছেন যমীনবাসীদের জন্য নিরাপত্তা দানকারী। সুতরাং যখন আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ বা হযরত আওলাদ আলাইহিমুস সালামগণ উনারা (দুনিয়া থেকে) চলে যাবেন অর্থাৎ বিদায় গ্রহণ করবেন তখন দুনিয়াবাসী সকলেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। অর্থাৎ তখন ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে।” (মুসনাদে আহমদ শরীফ, মিশকাত শরীফ, হাশিয়ায়ে মিশকাত শরীফ)
কাজেই, বিশ্ববাসীর জন্য নিরাপত্তা দানকারী, নাযাত দানকারী, ধ্বংস থেকে রক্ষাকারী, পবিত্র ঈমান ও আমল হিফাযতকারী হযরত আওলাদুর রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করলে মহান আল্লাহ পাক উনার ও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক পাওয়া যাবে। এ মর্মে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
احبوا الله لـما يغذوكم من نعمة احبونى لحب الله واحبوا اهل بيتى لحبى
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদেরকে খাওয়া পরার যে নিয়ামত মুবারক দিয়েছেন সেজন্য মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহব্বত করো। আর আমাকে মুহব্বত করো মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক লাভ করার জন্য। আর আমার হযরত আহলে বাইত শরীফ উনাদেরকে মুহব্বত করো আমার সন্তুষ্টি মুবারক উনার জন্য।” (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
আর তাই অতীতের সকল ইমাম-মুজতাহিদ, আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক পাওয়ার জন্য মন প্রাণ উজাড় করে এমনকি সর্বস্ব হাদিয়া দিয়ে হযরত আওলাদে রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করেছেন, উনাদের খিদমত করেছেন।
যেমন এ প্রসঙ্গে “আনওয়ারুল আরিফীন” কিতাবে হযরত রবি বিন সুলাইমান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার খিদমতের, তা’যীম-তাকরীমের, মুহব্বতের বিরল ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। তিনি হজ্জে যাওয়ার পথে একজন মহিলা আওলাদুর রসূল আলাইহাস সালাম উনার পরিবারের অসহায় অবস্থা দর্শনে ব্যথিত হয়ে হজ্জে যাওয়ার সমস্ত টাকা উনাদের খিদমতে হাদিয়া করেছিলেন। ফলশ্রুতিতে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার ছূরতে একজন ফেরেশতা আলাইহিস সালাম সৃষ্টি করেন যিনি ঐ বছর থেকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত হজ্জ করবেন যার ছাওয়াব উনার আমলনামায় জমা হতেই থাকবে। শুধু তাই নয় তিনি উনাদের মুবারক খিদমতে রৌপ্য মুদ্রা হাদিয়া করেছিলেন তার বিনিময়ে উনাকে স্বর্ণ মুদ্রা হাদিয়া করা হয়েছিল এবং স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তরফ থেকে সুসংবাদ দিয়ে বলা হয়েছিল যারা আমাদের সাথে ব্যবসা করে তারা কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। সুবহানাল্লাহ!
হযরত আওলাদুর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে বর্ণনাতীত মুহব্বত, তা’যীম-তাকরীম ও সম্মান প্রদর্শনের নজীর স্থাপন করেছেন ইমামুল আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, হাকিমুল হাদীছ হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি।
একবার তিনি একস্থানে বসে স্বীয় ছাত্রদেরকে র্দস দিচ্ছিলেন। তিনি কিছুক্ষণ পর পর র্দস বন্ধ করে দাঁড়িয়ে যেতেন। যার কারণে ছাত্রদের পড়া বুঝতে ও ধরতে অসুবিধা হতো। যখন র্দস শেষ হলো, তখন ছাত্ররা প্রশ্ন করল, “হে ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি! বেয়াদবী ক্ষমা করবেন, আমরা লক্ষ্য করেছি যে, আপনি বারবার র্দস বন্ধ করে দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলেন এর পিছনে কি কারণ রয়েছে?” উত্তরে তিনি বললেন যে, “তোমরা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছ যে, আমাদের র্দসগাহের পাশেই কিছু ছোট ছেলেরা দৌঁড়াদৌঁড়ি করছিল। তন্মধ্যে অমুক ছেলেটি বার বার আমার নিকটবর্তী হলেই আমি দাঁড়িয়ে যেতাম।” ছাত্ররা বললো যে, “হ্যাঁ, আমরা তা লক্ষ্য করেছি। তবে এ ছোট ছেলেটি আপনার নিকটবর্তী হলে কেন দাঁড়িয়ে যেতেন, অনুগ্রহ করে তার কারণ আমাদেরকে বলবেন কি?” তখন ইমামে আ’যম হযরত আবূ হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন যে, “দেখ, এ ছেলেটি আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। উনার সাথে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরুল আহমার মুবারকের সম্পর্ক রয়েছে। সেজন্য যখনই তিনি আমাদের র্দসগাহের নিকটবর্তী হয়েছেন তখনই আমি উনার সম্মানার্থে দাঁড়িয়েছি। কেননা, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে তা’যীম-তাকরীম ও সম্মান প্রদর্শন করা পবিত্র ঈমান উনার অঙ্গ। শুধু তাই নয় মহান আল্লাহ পাক উনার ও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বত ও সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলেরও কারণ।”
সুন্নতী খাবার ছারীদ
Image result for ছারীদ
১. ছারীদ (الثريد )
ছারীদ হলাে গোশতের শুরুয়াতে ভেজানো টুকরো টুকরো রুটি দিয়ে তৈরী।
এক প্রকার বিশেষ খাদ্য। নরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি।
সর্বপ্রকার খাদ্য সামগ্রীর উপর ছারাদের প্রাধান্য দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি।
ইরশাদ মুবারক করেন
عن حضرت انس رضی الله تعالى عنه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال
قضاء أم المؤمنين الثالثة الصديقة عليها السلام على النساء كفضل الثريد
على سائر الطعام .
অর্থ : “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সকল নারীর উপর উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছা
হযরত সিদ্দিকা আলাইহাস সালাম উনার মর্যাদা মুবারক এমন, যেমন সর্বপ্রকার।
খাদ্য সামগ্রীর উপর ছাত্রীদের মর্যাদা।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ : কিতাবুত
ক্বিয়ামাহ : হাদীস শরীফ নং ৫৪২৮, মুসলিম শরীফ : হাদীস শরীফ নং ৬১৯৩,
নাসায়ী শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ৩৯৪৭)
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি।
দুই প্রকার ছারীদ গ্রহণ করেছেন বলে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনা পাওয়া
যায়। যেমন- ১. রুটির ছারীদ ও ২. হাইসের ছারীদ।।
এ সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে
عن حضرت ابن عباس رضي الله تعالى عنه قال كان أحب الطعام إلى رشول
الله صلى الله عليه وسلم الثريد من الخبز والثريد من الكيس.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে রুটির ছারীদ এবং হাইসের ছারীদ ছিল অত্যন্ত
প্রিয় খাদ্য।” সুবহানাল্লাহ! (আবু দাউদ শরীফ : কিতাবুত ত্বয়ামাহ : হাদীছ শরীফ নং ৩৭৮৩)

প্রস্তুত প্রণালী : ছারীদ তৈরীর বিভিন্ন পদ্ধতি আছে।
 ১টি পদ্ধতি বর্ণনা করা হলো :
উপকরণ : ১. তেহারী সাইজ গরুর গোশত (২৫০)গ্রাম)।
২. তেল (১৫০ গ্রাম) ।
৩. আদা (১০০ গ্রাম)
৪. রসুন (১০০ গ্রাম)
৫. পেঁয়াজ (২৫০ গ্রাম)।
৬. মিষ্টি কুমড়া (১ কেজি)
৭. এলাচ (৭টি)।
৮. দারুচিনি (১৫ গ্রাম)
৯, তেজপাতার (৫ পিস)
১০. হলুদ (১০ গ্রাম)।
১১. মরিচ (৫ গ্রাম)
১২. ধনিয়া (১৫ গ্রাম)
তৈরীর পদ্ধতি: একটি পাত্রে গােশত দিয়ে তেল দিন। আদা, রসুন, পেঁয়াজ,
এলাচ বাটার সাথে দারুচিনি, হলুদ, মরিচ, ধনিয়া, তেজপাতা, লবণ দিতে হবে।
কিছুক্ষণ অল্প আগুনে গোস্ত জাল দিতে হবে। এরপর ভালোভাবে কষিয়ে নিতে
হবে। গােশত হয়ে গেলে পর্যাপ্ত পানি ও সেদ্ধ করা মিষ্টি কুমড়ার মন্ড দিয়ে ৩০
মিনিট পর চুলা থেকে নামিয়ে ভাসমান তেল উঠিয়ে নিতে হবে। শুরুয়াটি পাতলা।
হবে। এরপর রুটিকে অনেকগুলো টুকরো করে খাবার পাত্রে নিয়ে তাতে শুরুয়া
ঢেলে দিলেই তৈরী হয় সুন্নতী খাবার ছারীদ।।
বাল্যবিবাহ খাছ সুন্নত ২


    কল কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদাত
 অনন্তকালব্যাপী জারীকত মহাপবিত্রসাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ        উনার সুমহান সম্মানার্থে প্রকাশিত

কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে 
    বাল্যবিবাহ খাছ সুন্নত 

হওয়ার প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে
        শর’য়ী ফায়ছালা ও ফতোয়া 

গবেষণা কেন্দ্র : মুহম্মদিয়া জামিয়া                শরীফ


বাল্যবিবাহ খাছ সুন্নত হওয়ার প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে শরয়ী ফায়ছালা ও ফতওয়া।

عن حضرت أم المؤمنين المالية الدقة عليها السلام قال توخئ رسول
سنن ولی ب وأنا بنت تسع سنين

الله صلى الله عليه وسلم لس


অর্থ : “উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমার আকৃদ বা নিসবাতুল আযীম
মুবারক সম্পন্ন হয় যখন আমার বয়স মুবারক ছিল ৬ বছর। আর ৯ বছর বয়স
মুবারকে নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার পবিত্র হুজরা শরীফে আমি তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করি।” সুবহানাল্লাহ!
(সহীহুল মুসলিম কিতাবুন নিকাহ বাবু তাবীল আবুল বিকরাছ ছগিরা)।

تجيني التي
أم المؤمنين الثالثة الصديقة عليها السلام قال
صلى الله عليه وسلم وأنا بنت ست سنين وبنى بي وأنا بنت تسع سنين .

নরে মজা আকুপ বা

অর্থ : “উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমার আকুদ বা নিসবাতুল আযীম
মুবারক সম্পন্ন হয় যখন আমার বয়স মুবারক ছিল ৬ বছর। আর ১৯ বছর বয়স
মুবারকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার পবিত্র হুজরা শরীফে আমি তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করি।” সুবহানাল্লাহ!
(সহীহুল মুসলিম কিতাবুন নিকাহ বাবু তাবীল আবুল বিকরাছ ছগিরা)

عن حضارة أم المؤمنين الحلقة الضيقة عليها السلام قالت تزوجني رشول
ست ودخل بئ وأنا بنت تسع.
الله صلى الله عليه وسلم وأنا ي

অর্থ : “উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু।
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমার আকৃদ বা শাদী মুবারক সম্পন্ন হয় যখন।
আমার বয়স মুবারক ছিল ৬ বছর। আর ৯ বছর বয়স মুবারকে নূরে মুজাসসাম,।
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হুজরা শরীফে
আমে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করি।” সুবহানাল্লাহ! (সুনানে আবী দাউদ কিতাবু।
নিকাহ বাবু ফী তাবীজিছ ছিগার)।

ع حضرت ابو سلمة ويخی قالا فرجها إياه وأم المؤمنين المالية الدقة
عليها السلام يوميا بنت سي سي ... وبئی بن رسول الله صلى الله عليه                                                              ২৫


অর্থ : “হযরত আবু সালামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত ইয়া
রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা বলেন, উম্মুল মু'মিনীন হযরত সিদ্দিকা আল
সালাম উনার বয়স মুবারক যখন ৬ বছর তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুলাহ।
পাক ছলাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সাথে আকৃদ মুবারক সম্পন্ন করে
উযুল মু'মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, আর আয়াত
মুবারক যখন ৯ বছর তখন আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল।
আলইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হুজরা শরীফে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ কট
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সনদ হাসান পর্যায়ের।" (ছহীহ মুসনাদে আহমাদ ইবন।
হাম্বল, হাদীস আস সাইয়্যিদ ছিদ্দিকীয়া আলাইহাস সালাম ৬ষ্ঠ খন্ড, ২১০ পৃষ্ঠা)

عن حضرت أم المؤمنين الثالثة الصديقة عليها السلام قالت توج رؤل
ي سنين وبنى بي وأنا بنت تسع سنين .
الله صلى الله عليه وسلم ل

অর্থ : “উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত সিদ্দিকা আলাইহাস সালাম।
উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমার আকৃদ বা শাদী মুবারক।
সম্পন্ন হয় যখন আমার বয়স মুবারক ছিল ৬ বছর । ....... আর ৯ বছর বয়স।
মুবারকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার পবিত্র হুজরা শরীফে আমি তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করি।” সুবহানাল্লাহ!
(ছহীহ ইবনু হিব্বান বি তারতীবে বিলবান যিকরি আয়েশা উম্মুল মু'মিনীন
আলাইহাস সালাম ও আন আবীহা)

عن حضرت أم المؤمنين الممالة اللاصقة عليها السلام، قالت توج رؤل
الله صلى الله عليه وسلم وأنا بنت ست سنين، .... المني إليه، وأنا
يومئذ بنت تسع سنين .

| অর্থ : “উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমার আকৃদ বা নিসবাতুল আযীম
মুবারক সম্পন্ন হয় যখন আমার বয়স মুবারক ছিল ৬ বছর। ....... আর ৯ বছর
বয়স মুবারকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার পবিত্র হুজরা শরীফে আমি তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করি।”
সুবহানাল্লাহ! (সুনানু ইবনে মাজাহ কিতাবুন নিকাহ বাবু নিকাহে শিগার
ইউযাউয়্যিজু হুন্নাল আবাউ)                                                                                                      ২৬


عن حضرت أم المؤمنين الثالثة المدينة عليها السلام قالت ترخى رسول الله
... ست بمگه وینی بی المدينة وانا بنت بشه
صلی الله عليه وسلم وأنا بن

" অর্থ : “উম্মুল মুমিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার।
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমার আকৃন্দ বা নিসবাতুল আযীম
মুবারক সম্পন্ন হয় যখন আমার বয়স মুবারক ছিল ৬ বছর। আর তা সম্পন্ন
হয়েছিল পবিত্র মক্কা শরীফ-এ। .... আর ৯ বছর বয়স মুবারকে পবিত্র মদীনা
শরীফ-এ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার পবিত্র হুজরা শরীফে আমি তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করি।” সুবহানাল্লাহ!
(মুসনাদে আবু দাউদ তাইয়ালাসী যিকরি উরওয়াহ ইবনে যুবাইর আন ছিদ্দিক্বা
আলাইহাস সালাম)

عن حضرت أم المؤمنين الثالثة الصدقة عليها السلام أن رسول الله صلی
. ع س
الله عليه وسلم تتركها وهي ست سني وبنى بها وهي س

| অর্থ : “উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার
থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার সাথে (হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম) উনার সাথে আকৃদ বা
নিসবাতুল আযীম মুবারক সম্পন্ন হয় যখন উনার বয়স মুবারক ছিল ৬ বছর। আর
৯ বছর বয়স মুবারকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হুজরা শরীফে আমি তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন।”
সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আবু ইয়ালা তাবে' মুসনাদে আয়েশা আলাইহাস সালাম,
৮ম খণ্ড, ১৩২ পৃষ্ঠা)

عن حضارة أم المؤمنين العمالقة اليرقة عليها السلام قال
.
الله صلى الله عليه وسلم وأنا بنت سين سنين وي بن وانا ي يع
إسناد صحيح

অর্থ : “উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত সিদ্দিকা আলাইহাস সালাম
উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমার আকৃদ বা নিসবাতুল আযীম।
মুবারক সম্পন্ন হয় যখন আমার বয়স মুবারক ছিল ৬ বছর। আর ৯ বছর বয়স।
মুবারকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার পিবত্র হুজরা শরীফে আমি তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করি।” সুবহানাল্লাহ!
এর সনদ সহীহ। (মুসনাদে আবু ইয়ালা তাবে' মুসনাদে আয়েশা আলাইহাস
সালাম, ৮ম খণ্ড, ৩০১ পৃষ্ঠা)                                                                                                    ২৭



و حضرت زهري رحمه الله عليه قال تزوج رسول الله صلی الله عنه وس
إرث أم المؤمنين الثالثة عليها السلام بعد حضرت أم المؤمنين الكثبای
ن قال هي امرأتك أم المؤمنين م في النوم
عليها السلام وكان قد أرى
الصديقة عليها السلام يومئذ بنت ست سنين. يمك ثم أن رسول الله صلی
الله عليه وسلم بني أم المؤمنين الثالثة الصديقة عليها السلام بعد ما قدم
ع سيين.
المدينة و أم المؤمنين الصديقة عليها السلام يوم بی بها بنت

অর্থ : “হযরত হিশাম ইবনে উরওয়াহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি।
উম্মুল মু'মিনীন হযরত আল উলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার পর (উন্মল।
মুমিনীন হযরত আছ ছালিছা) হিসেবে হযরত সিদ্দিকা আলাইহাস সালাম।
উনাকে গ্রহণ করেন। তখন উনার বয়স মুবারক ছিল ৬ বছর। উনাকে স্বপ্ন
মুবারকে দুবার দেখানাে হয় এবং বলা হয় ইনি আপনার মহাসম্মানিতা হযরত
আযওয়াজুম মুবৃহহারাত আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। আর তা
সংঘটিত হয় পবিত্র মক্কা শরীফে। আর উনার বয়স মুবারক যখন ৯ বছর তখন
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
পবিত্র মদীনা শরীফ তাশরীফ মুবারক নেয়ার পর উনাকে নিজ হুজরা শরীফে
নিয়ে আসেন।” সুবহানাল্লাহ! (সুনানুল কুবরা লিল বাইহাকী, কিতাবুন নিকাহ,
বাবু তাসমিয়াতু আযওয়াজিন নাবিয়্যি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।

عن حضرت أم المؤمنين الالة اللصقة عليها السلام قالت زوجى رؤل
سيرين .. فاشن إليه وأنا يوم
الله صلى الله عليه وسلم وأنا إبنته س
بنت تسع سنين

অর্থ : “উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছা সিদ্দিকা
আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমার আকৃদ
বা নিসবাতুল আযীম মুবারক সম্পন্ন হয় যখন আমার বয়স মুবারক ছিল ৬
বছর। আর ৯ বছর বয়স মুবারকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হুজরা শরীফে আমি তাশরীফ
মুবারক গ্রহণ করি।” সুবহানাল্লাহ! এর সনদ ছহীহ। (সুনানুল কুবরা লিল।
বাইহাক্বী, কিতাবুন নিকাহ বাবু মা নিসওয়াতু লিল আরুস)                                                        ২৮

عن حضرت هشام بن عروة رحمه الله علیه ونگ رسول الله صلى الله عليه
... حضرت أم المؤمنين الصديقة عليها السلام وكان
رسول الله صلى الله عليه وسلم أراها في المنام ثلاث مزار يقال لهذم إمراثك
حضرت ام المؤمنين الصديق عليها السلام وكانت أم المؤمنين الصديقه
عليها السلام يوم تگها رسول الله صلى الله عليه وسلم بنت ست سنين
ه بی بها وقدم المدينة وهي بنت تسع سنين .

| অর্থ ; “হযরত হিশাম ইবনে উরওয়াহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
উম্মুল মু'মিনীন হযরত আল উলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার পর (উম্মুল।
মু'মিনীন হযরত আছ ছালিছা) হিসেবে হযরত সিদ্দিকা আলাইহাস সালাম।
উনাকে গ্রহণ করেন। তখন উনার বয়স মুবারক ছিল ৬ বছর । উনাকে স্বপ্ন।
মোবারকে তিন বার দেখানো হয় এবং বলা হয় ইনি আপনার মহাসম্মানিত হযরত
আযওয়াজুম মুতাহহারাত আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। আর তা
সংঘটিত হয় পবিত্র মক্কা শরীফে । আর উনার বয়স মুবার যখন ৯ বছর তখন।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
পবিত্র মদীনা শরীফ তাশরীফ মুবারক নেয়ার পর উনাকে নিজ হুজরা শরীফে।
নিয়ে আসেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল মুস্তাদরিক আলা ছহীহাইন তাসমিয়াতু
আযওয়াযি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৪র্থ খণ্ড, ৫ পৃষ্ঠা)

ري رحمه الله عليه قال ثم تزوج رسول الله صلى الله عليه وسلم
حضرت أم المؤمنين الثانية عليها السلام بعد حضرت أم المؤمنين الأولى عليها
السلام وكان قد أرى في الدم متي يقال هي امراتاق أه المؤمنين البال عليها
أن رسول الله صلى الله عليه وسلم بنی
السلام يومئذ بنت ست سنين يمكنه
أم المؤمنين التالية عليها السلام بعد ما قدم الميرين و حضر أ
المؤمنين الاله الصديق عليها السلام يوم بنى بنها بنت تشع سینی .

অর্থ : “হযরত যুহরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন । নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু'মিনীন হযরত আল
"জলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার পর (তৃতীয় উম্মুল মু'মিনীন) হিসেবে উম্মুল।
মু'মিনীন আছ ছালিছা হযরত সিদ্দিকা আলাইহাস সালাম উনাকে গ্রহণ করেন।                     ২৯



তখন উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছাহ হযরত  ছিদ্দিক্বা আলাইহাস সালাম উনার বয়স মুবারক ছিলো ৬ বছর । উনাকে স্বপ্ন মুবারকে দুবার দেখানো হয়। এবং বলা হয় ইনি আপনার মহাসম্মানিতা হযরত
আযওয়াজুম মুতাহহারাত আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। আর (আকদ মুবারক) সংঘটিত হয়  পবিত্র মক্কা শরীফ। আর উনার যখন ৯ বছর বয়স মুবারক তখন নুরে মুজাসসাম হবিবুল্লাহ হুযুরপাক ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মদীনা শরীফ তাশরীফ মুবারক নেয়ার পর উনাকে নিজ হুজরা শরীফ নিয়ে আসেন ।  (সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, কিতাবুন নিকাহ ,
কিতাবুন নিকাহ বাবু তাসমিয়াত
আযওয়াজিন নাবিয়্যি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।

: حضرة أم المؤمنين الثالثة الصديقة عليها السلام والث تزوجه ومن
الله صلى الله عليه وسلم وأنا بنت ست سنين .. قالي إليه وأنا يومئذ
بنت تسع سنين.

অর্থ : “উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক
আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম।
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমার আকদ
বা নিসবাতুল আযীম মুবারক সম্পন্ন হয় যখন আমার বয়স মুবারক ছিল ৬
বছর। ..... আর ৯ বছর বয়স মুবারকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক।
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হুজরা শরীফে আমি তাশরীফ
মুবারক গ্রহণ করি।” সুবহানাল্লাহ! (সুনানুল কুবরা লিল বাইহাকী, কিতাবুন।
নিকাহ বাবু তাসমিয়াতুল আযওয়াযিনা নাবিয়্যি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।
عن حضرت چشام بن عروة رحمه الله عليه ونكح رسول الله صلى الله عليه
وسلم عند تو حضرت أم المؤمنين الأولى الكبرى عليها السلام خير أم
المؤمنين الثالثة الصقة عليها السلام وكان رسول الله صلى الله عليه وسلم
أريها في يتقا
الصديقة عليها السلام وكانت أم المؤمنين القالة الصقه عليها السلام يوم
نگها رسول الله صلى الله عليه وسلم بنت ست سنين · بني بها وقدم

ث يشع سنين .                                                                                                                                  ৩০
   

অর্থ  : “হযরত হিশাম ইবনে উরওয়াহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন ।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মল।
'মিনীন আল উলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার পর তৃতীয় উম্মল।
মু'মিনীন আছ ছালিছা আলাইহাস সালাম হিসেবে উনাকে গ্রহণ করেন। তখন।
উম্মুল মু'মিনীন আছু ছালিছাহ হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার বয়স
মুবারক ছিলাে ৬ বছর। উনাকে স্বপ্ন মুবারকে দুবার দেখানাে হয় এবং বলা হয়।
ইনি আপনার সম্মানিতা আহলিয়া। আর সংঘটিত হয় পবিত্র মক্কা শরীফ। আর।
উনার বয়স মুবারক যখন ৯ বছর তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক।
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মদীনা শরীফ তাশরীফ মুবারক নেয়ার
পর উনাকে নিজ হুজরা শরীফ নিয়ে আসেন।” (সুনানুল কুবরা লিল বাইহাকী ৪র্থ
খণ্ড ৫ পৃষ্ঠা : কিতাবুন নিকাহ বাবু তাসমিয়াতুল আযওয়াযিনা নাবিয়্যি ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।

عن حضرت عبد الله رضي الله تعالى عنه قال تزوج التى صلى الله عليه
وسلم حضرت ام المؤمنين الثالثة الصديقة عليها السلام وهي ي ت
سنين ودخل بها وهي بنت تشع

অর্থ : “হযরত আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত।
নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার সাথে (উম্মুল মু'মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম) উনার আকুদ
বা নিসবাতুল আযীম মুবারক সম্পন্ন হয় যখন উনার বয়স মুবারক ছিল ৬ বছর ।।
আর তিনি ৯ বছর বয়স মুবারকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক।
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হুজরা শরীফে তাশরীফ মুবারক
গ্রহণ করেন এবং ৯ বছর বয়স মুবারকেই তিনি উনার সাথে অবস্থান মুবারক
করেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল মু'জামুল কাবীর লিত তুবারানী ৪র্থ খণ্ড ৪৯০ পৃষ্ঠা) ।

عن حضرت عروة بن الير رضى الله تعالى عنه قالت أم المؤمنين الصديقه
عليها السلام تزوج رسول الله صلى الله عليه وسلم وأنا بنت ست سنين
عا هلك رسول الله عنده
وأدخلت عليه وانا بنت تسع سنين ومكث
صلى الله عليه وسلم وأنا بنت ثماني عشرة.

অর্থ : “হযরত উরওয়া ইবনে যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার।
থেকে বর্ণিত। উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছা সাইয়্যিদাতুনা হযরত সিদ্দিকা।
আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমার আকৃদ বা নিসবাতুল আযীম।
মুবারক সম্পন্ন হয় যখন আমার বয়স মুবারক ছিল ৬ বছর।                                                     ৩১

আর আমি ৯ বছর বয়স মুবারকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুলাহ ভয়।
চলালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হুজরা শরীফে তাশরীফ মন
গ্রহণ করি। আর আমি উনার সাথে অবস্থান মুবারক করি ৯ বছর। তিনি
পবিত্র বিছালী শান মুবারক গ্রহণ করেন তখন আমার বয়স মুবারক ১৮ মা'।
সুবহানাল্লাহ! (আল মুজামুল আওসাত লিত তাবারানী ৭ম জিলদ, ৯৪ পৃষ্ঠা)।

أم المؤمنين الصديقة عليها السلام قالت تﺅجئ رسول الله
: خضر
صلى الله عليه وسلم وأنا بنت ست سنين وي بن وانا بنت تشع منين

কাছে ছাও নি বলেন সাবেক ছিল ছল্লাল্লাহু

অর্থ : “উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছা সাইয়্যিদাতুনা হযরত সিদ্দীকা।
আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম ।
হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমার আকুদ বা
নিসবাতুল আযীম মুবারক সম্পন্ন হয় যখন আমার বয়স মুবারক ছিল ৬ বছর।
...আর ৯ বছর বয়স মুবারকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু।
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হুজরা শরীফে আমি তাশরীফ মুবারক গ্রহণ
করি।" সুবহানাল্লাহ! (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা কিতাবুত তারিখ)।

و رحمة الله عليه قال تک الل صلى الله عليه وسلم حضرث أم
المؤمنين الصديقة عليها السلام وهي بنت ست وأهديت إليه وهي بنت تشع.

অর্থ : “হযরত উরওয়াহ ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে
বর্ণিত । উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছা সাইয়্যিদাতুনা হযরত সিদ্দিকা আলাইহাস
সালাম উনার সাথে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার আকৃন্দ বা নিসবাতুল আযীম মুবারক সম্পন্ন হয় যখন উনার বয়স
মুবারক ছিল ৬ বছর। ...আর ৯ বছর বয়স মুবারকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হুজরা শরীফে তিনি
তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক বাবু
নিকাহের ছগীরা)।

عن حضارة أم المﺅمنين التالتة الصديقة عليها السلام قال
الله صلى الله عليه وسلم وأنا

অর্থ : “উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছা সাইয়্যিদাতুনা হযরত সিদ্দিকা
আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমার আকৃদ বা
নিসবাতুল আযীম মুবারক সম্পন্ন হয় যখন আমার বয়স মুবারক ছিল ৬ বছর।
...আর ৯ বছর বয়স মুবারকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হুজরা শরীফে আমি তাশরীফ মুবারক গ্রহণ
করি।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে ইবনে রাহওয়াইহি ২য় জিলদ ২১৩ পৃষ্ঠা)                                    ৩২

عن حضرت أم المؤمنين الصديقة عليها السلام قالت تتروني رسول الله ص
الله عليه وسلم وأنا بنت ست سنين فالمتنى اليه وأنا يومئذ بنت تسع سنين

বছর বন্ধুম উনার পবিত্ররফ, কিতাবুন
আলাহ সুন্ন শরীফ ভ

অর্থ: “উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছা সাইয়্যিদাতুনা হযরত সিদ্দীকা
আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নিশ্চয়ই নুরে মুজাসসাম ।
হাবীবলাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমার আকুদ বা
নিসবাতল আযীম মুবারক সম্পন্ন হয় যখন আমার বয়স মুবারক ছিল ৬ বছর ।।
_ আর ৯ বছর বয়স মুবারকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লালাহু।
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হুজরা শরীফে আমি তাশরীফ মুবারক গ্রহণ।
করি।” সুবহানাল্লাহ! (সুনানে দারেমী শরীফ, কিতাবুন নিকাহ বাবু ফি তাবীজ
ছিগার ইযা যাওওয়াজা হুন্না আবাউহুন্না)
উল্লিখিত সহীহ ও নির্ভরযোগ্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের বর্ণনা দ্বারা সুস্পষ্ট
ও অকাট্য ভাবে প্রমাণিত হলো যে, স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং নিজেই বাল্যবিবাহ মুবারক করেছেন।
কাজেই বাল্যবিবাহ উনার বিরােধিতা করার অর্থ হলাে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরােধিতা করা, যা।
কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া।
সাল্লাম তিনি স্বয়ং নিজেই বাল্যবিবাহ দিয়েছেন।
| পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে

ان زوج رسول الله
عن حضرت عبد الله بن شداد رضى الله تعالى عنه قال
صلى الله عليه وسلم أم سلمة عليها السلام إبنها سلمة فتركه رسول الله صلی
الله عليه وسلم بنت خميرة وهما صبيان صغيرا فلم يجتمعا حتى ماتا

| অর্থ : “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে শাদ্দাদ রদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু তিনি
বলেন,নরে মজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
উম্মুল মু'মিনীন আস সাদিসাহ আলাইহাস সালাম উনার আওলাদ হযরত সালামাহ
আলাইহিস সালাম উনার নিসবাতুল আযীম শরীফ সম্পন্ন করেন হযরত হামযাহ
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বানাত (মেয়ের) উনার সাথে । সেসময় উনারা।
দুজনই ছিলেন অল্প বয়স মুবারকের অধিকারী। উনারা দুজন মিলিত হওয়ার
আগেই পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” (আহকামুল কুরআন লিল
জাসসাস ২য় খণ্ড ৩৪৪ পৃষ্ঠা)
| শুধু তাই নয়, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি উনার দুই বানাত অর্থাৎ আন নূরুছ ছানিয়াহ (হযরত রুকাইয়া)
আলাইহাস সালাম ও আন নূরুছ ছালিছাহ (হযরত উম্মে কুলসুম) আলাইহাস সালাম
উনাদের আকৃত মুবারক ও বাল্য বয়স মুবারক করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ!                               ৩৩

হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস ও হযরত ছাহাবায়ে
কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনেকেই
" বাল্যবিবাহ মুবারক দিয়েছেন ও করেছেন।
| প্ৰথম খলীফা আফদ্বালুন নাস বা'দাল আম্বিয়া, খলীফাতু রসূলিল্লাহ হযরত
সিদ্দিকে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি অভিভাবক হিসেবে নিজ বানান।
(কন্যা) উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছা ছিদ্দিক্বা আলাইহাস সালাম উনাকে ৬
বছর বয়স মুবারক আকীদা ও ৯ বছর বয়স মোবারক নিসবাতুল আযীম (শাদী)।
মুবারক করিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! যা উপরে বর্ণিত অসংখ্য পবিত্র ছহীহ হাদীছ
শরীফ দ্বারা আকট্যভাবে প্রমাণিত হয়েছে। যেমন- এ প্রসঙ্গে “তাফসীরে
আহকামুল কুরআন লিল জাসসাস” উনার ২য় খণ্ড ৩৬৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে

إن النبي صلى الله عليه وسلم توج حضرة أم المؤمنين الثالثة الصديقة عليها
السلام وهي بنت ست سنين زوجها إياه أبو بكر الصديق عليه السلام

অর্থ : “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
তিনি সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আলামীন উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছা আলাইহাস
সালাম উনার ৬ বছর বয়স মুবারকের আকৃত মুবারক করেন। আর খলীফাতুল
মুসলিমীন হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি স্বয়ং নিজে (অভিভাবক
হিসেবে) এ পবিত্র আকুন্দ মুবারক সম্পন্ন করেন।” সুবহানাল্লাহ!
| দ্বিতীয় খলীফা আমীরুল মু'মিনীন হযরত ফারূকু আ'যম আলাইহিস সালাম।
তিনি স্বয়ং নিজেই বাল্যবিবাহ মুবারক করেছেন। আর চতুর্থ খলীফা আমীরুল
মু'মিনীন হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম তিনি স্বয়ং নিজেই
উনার বানাত বা কন্যা হযরত উম্মে কুলসুম আলাইহাস সালাম উনাকে ছােট বা
ব্যবস্থায় নিসবাতুল আযীম বা শাদী মোবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
_ এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ উনার মশহুর কিতাব “মুছান্নিফ ইবনে আবি শায়বা
শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ আছে

حنا إلي غلبية عن يونس عن الحسن أ… حضرت عمر بن الخطاب عليه
السلام خطب إلى حضرت علي كرم الله وجهه عليه السلام إبنته ضرث
أم كلثوم عليها السلام فقال حضرت علي كرم الله وجهه عليه السلام إنها
صيه فانظر إليها. فأرسلها إليه برسالة فماها. فقال لؤلا إنك شيخ أو
لؤك نيك أمير المؤمنين فاعجب حضرت عمر بن الخطاب عليه السلام
مصاهرته فخطبها فانكحها إياه.   ৩৪

অর্থ : “হযরত ইবনে উলাইয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত ইউনুস
রহমতলাহি আলাইহি উনার থেকে এবং তিনি হযরত হাসান বছরী রহমতলাহি।
আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করেন। নিশ্চয়ই হযরত ফারূকু আযম আলাইহিস।
সালাম তিনি হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার নিকট উনার।
বানাত (কন্যা) হযরত উম্ম কুলছুম আলাইহাস সালাম উনাকে নিসবাতল আযীম না।
শাদী মুবারক করার প্রস্তাব দিলেন। তখন হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহ।
আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হে আমীরুল মু'মিনীন! আমার বানাত (কন্যা)।
তিনি তাে ছােট (অল্প বয়স্কা নাবালিগা) অতএব, আপনি সংবাদ পাঠিয়ে উনাকে
দেখুন। তখন তিনি উনাকে সংবাদ পাঠালেন এবং উনার সাথে আনন্দদায়ক কথা
বার্তা বললেন। হযরত উম্মু কুলছুম আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, আপনি যদি
প্রতাসমলায় তিনি বললেন আলত।
উম্মতের প্রধান ও আমীরুল মু'মিনীন না হতেন (তবে আমি রাজি হতাম না)।
অতঃপর উনার সাথে নিসবাতুল আযীম মুবারক সম্পন্ন করার ব্যাপারে তিনি অতি ।
আগ্রহী হলেন। তাই তিনি উনাকে প্রস্তাব দিলেন এবং নিসবাতুল আযীম মুবারক
সম্পন্ন করলেন।” সুবহানাল্লাহ!

অন্যান্য হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম।
উনাদের মধ্যে অনেকেই বাল্যবিবাহ দিয়েছেন ও করেছেন।

এ প্রসঙ্গে ফিকাহের বিখ্যাত কিতাব “আল মাবসূত লিস সুরুখসী” উনার মধ্যে।
উল্লেখ আছে
وكذلك سائر ما ذكرنا من الأثار قاين قدامة بن مظعون تزوج بنت التي
رضى الله تعالى عنه يوم ولدت وقال إن م فهي خي ورني وان عش
فهي بنت البير رضي الله تعالى عنه. وتروج إبن عمر رضی الله تعالى عنه بنا
له صغيره من غزوة بن الژيير رضی الله تعالى عنه و عروه ب البير رضی
الله تعالى عنه بنت ايه بين الحية وهي صغيران ووهب رجل إبنته الصغيرة
من عبد منِ
السلام ورؤث إمراة بن مسعود رضی الله تعالى عنه بنتا لها صغيرة إثنا

:عن تعَالی اللة رضى الله رضي الله تعالى عنه.
অর্থ : “আমরা আছার থেকে যা বর্ণনা করেছি অনুরূপ আরাে বহু বর্ণনা।
রয়েছে। যেমন হযরত কদামাহ ইবনে মাযউন রহমতল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত
যুবাইর রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বানাত বা কন্যাকে পবিত্র বিলাদতী শান।
মুবারক প্রকাশ করার (অর্থাৎ জনের) দিনেই বিবাহ করেন এবং বলেন,                                      ৩৫

যদি আমি ইন্তেকাল করি তবে তিনি আমার উত্তম উত্তরাধিকারীনী হবেন। আর
যদি আমি বেঁচে থাকি তবে তিনি হযরত যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার
মেয়ে অথাৎ আমি উনার উত্তরাধিকারী হবে। সুবহানাল্লাহ! হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে
উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনার এক নাবালিগা মেয়েকে হযরত উরওয়া ।
ইবনে যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নিকট বিবাহ দিয়েছেন। আর হযরত
উরওয়া ইবনে যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনার ভাইয়ের মেয়েকে
উনার বোনের ছেলের সাথে বিবাহ দিয়েছে। তখন উনারা দুজনেই ছিলেন
নাবালক ও নাবালিকা। অনুরূপ এক ব্যক্তি উনার নাবালিকা মেয়েকে হযরত
আব্দুল্লাহ ইবনে হাসান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নিকট বিবাহ দেন। আর।
এটা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম তিনি সমর্থন করেন।
হযরত ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার আহলিয়া তিনি উনার
আজ ১২ মে " নাবালিকা মেয়েকে হযরত মুসাইয়্যিব ইবনে নুখবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার
ছেলের সাথে বিবাহ দেন। আর এতে সম্মতি দান করেন ফকীহুল উম্মত হযরত
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি স্বয়ং নিজেই।”
সুবহানাল্লাহ!
বাল্যবিবাহ জায়িয বা বৈধ হওয়ার ব্যাপারে সকল ইমাম
মুজতাহিদ উনাদের মধ্যে ইজমা বা ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে
এ প্রসঙ্গে “তাফসীরে আহকামুল কুরআন লিল জাসসাস” উনার ২য় খণ্ড
৩৬৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে

وفي هذه الأية دلالة أيضا على أن الأب تزويج ابنته الصغيرة من حيث ل
على جواز ترویج سائر الأولياء إذ كان هو أقرب الأولياء ولا تعلم في جواز
ذلك خلافا بين السلف والخلف من فقهاء الأمصار

অর্থ : “এ পবিত্র আয়াত শরীফ থেকে এ কথার প্রতিও ইঙ্গিত পাওয়া যায়
যে, পিতার জন্যে নিজের নাবালিগ কন্যাকে বিয়ে দেয়ার ইখতিয়ার রয়েছে।
কেননা এ পবিত্র আয়াত শরীফ থেকে সকল অভিভাবকের জন্য বিবাহ দেয়ার
বৈধতা বুঝা যায়। আর পিতা যিনি অভিভাবকদের মধ্যে নিকটতম তার তাে
আরাে আগেই থাকবে। এ মাসয়ালায় পৃথিবীর কোনাে দেশের পূর্ববর্তী যুগ ও
পরবর্তী যুগের ফুকাহাদের মাঝে কোনাে মতিবিরােধ আমরা পাইনি। অর্থাৎ এ
বিষয়ে সকলে ইজমা বা ঐক্যমত পোষণ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ!
| এ প্রসঙ্গে কিতাবে আরাে উল্লেখ আছে

عبد البر رحمه الله عليه الجمع العلماء على أين يلآب آن
حضرت ابن
قال
زوج ابنته الصغير ولا يشاورها                                                                                                             ৩৬

অর্থ : “হযরত ইবনে আব্দুল বার রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সমস্ত।
ওলামায়ে কিরাম উনারা এ ব্যাপারে ইজমা বা ঐক্যমতে পৌঁছেছে যে, পিতার।
জন্য তার নাবালিগা মেয়েকে তার সাথে পরামর্শ ছাড়াই বিবাহ দেয়া জায়িয।”
(আল ইশতিয়াক ৪৯ পৃষ্ঠা) বিখ্যাত মুহাদ্দিস হযরত ইবনে হাজার আসকালানী রহমতল্লাহি আলাইহি
তিনি উনার বিখ্যাত কিতাব ফাতহুল বারী শরহে বুখারী উনার ৯ম জিলদ ২৩৯
পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে

والبكر الصغيرة زوجها أبوها اتفاقا

| অর্থ : “সকলের ঐক্যমতে পিতা তার নাবালিকা মেয়েকে বিবাহ দিতে
পারবে।"
সম্মানিত ইসলাম উনার সােনালী যুগে
ঘরে ঘরে বাল্যবিবাহ হতাে
পবিত্র হাদীছ শরীফ ও ইতিহাস গ্রন্থসমূহে ছহীহ সনদসহ এমন অসংখ্য বর্ণনা
রয়েছে যে, একজন নানী বা দাদীর বয়সই হতাে ২১ বছর। অর্থাৎ বাল্যবিবাহ ঘরে
ঘরে বিরাজমান ছিলাে। হযরত ইমাম বায়হাক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার
বিখ্যাত কিতাব “সুনানে কুবরা বায়হাক্কীতে বর্ণনা করেছেন

وأخبرنا أبو عبد الله الحافظ قراءة عليه حدثني أبو أحمد محمد بن أحمد
الشئ حدثنا محمد بن عبدالرحمن الآژژنانی حدثنا محمد بن طاهر بن
حملة دي جي حي الشافع قال رات بصنعاء جدة بنت الحدی
وعشرين سنة، خاضت إبنة يشع وولدت ابنة عشر وخاضت البنت إبنة
تسعه ولدت إبنة عشر. {ت} ويذكر عن الحسن بن صالح اله قال
جارتنا صارت جدة بنت إحدى وعشرين سنة. عن مغيرة الضي
الله قال إختلفت وأنا ابن اثنتي عشرة سنة. وروينا عن أم المؤمنين الثالثة
إذا بلغت الجارية تسع سنين فهي امرأة .
الصديقة عليها السلام أنها قال

| অর্থ : “হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করছেন।
“আমি (ইয়ামানের) সানা শহরে এক নানীকে দেখেছি, তখন উনার বয়স ছিল ২১
বছর। ৯ বছর বয়সে উনার স্বাভাবিক মাজুরতা শুরু হয় অর্থাৎ তিনি বাগেলা হন
এবং ১০ বছর বয়সে তিনি এক মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন । এবং উক্ত মেয়ে সন্তান
তিনিও ৯ বছর বয়সে বালিগা হন এবং ১০ বছর বয়সে এক সন্তানের জন্ম দেন।                         ৩৭

হযরত হাসান বিন সালেহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, আমাদের এক
কিশােরীকে পেলাম যিনি ২১ বছরে নানী হয়েছেন। হযরত মগীরাতা দ্বব্বী।
রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, আমি কখন বালেগ হয়, তখন আমার বয়স।
ছেলে ১২ বছর। উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছা সাইয়্যিদাতুনা হযরত সিদ্দিকা
আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, মেয়েদের বয়স (৯) নয় বছর হলে সে মহিলা।”
(সুনানে কুবরা বায়হাকী ১ম খন্ড ৪৭২ পৃষ্ঠা হাদীছ নং ১৫৩১ প্রকাশনা: দারুল
কুতুবুল ইসলামিয়া বৈরুত লেবানন, জাওয়াহিরুল নাকি ১/৩১৯)।
| উপরােক্ত দলীল দ্বারা আমরা দেখতে পেলাম যে, পূর্ববর্তী সময়ে বাল্যবিবাহ
সব খানেই বিরাজমান ছিল। ছেলে ও মেয়ে উভয়ের বাল্য বিবাহ হতে। এরই
ধারাবহিকতায় আমাদের দেশে আমাদের দাদী নানীদের কম বয়সে বিবাহ
হয়েছে। তবে কেন আজ বাল্য বিবাহের বিরোধিতা?
৯৮ ভাগ মুসলমান ও রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম উনার দেশ বাংলাদেশ সহ
পৃথিবীর কোন দেশেই ব্রিটিশ কাফিরদের প্রণীত বাল্যবিবাহ।
| বিরোধী আইন বহাল থাকতে পারে না ।
কট্টর ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী ব্রিটিশ খ্রিষ্টান কাফের গুলো প্রথম ১৯২৯।
সালে বাল্যবিবাহ বিরোধী আইন প্রণয়ন করে। নাউযুবিল্লাহ!
মূলত তাদের বাল্যবিবাহ বিরোধী আইন প্রণয়নের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে
১) নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার মানহানি ও বিরোধিতা করা। এই আইন করে তারা এটাই বুঝাতে।
চেয়েছে যে, নূরে মুজাসাসম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি এবং উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছা হযরত সিদ্দিকা আলাইহাস
সালাম উনারা বাল্যবিবাহ মুবারক করে এবং আফদ্বালুন নাস বা'দাল আম্বিয়া
হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি অভিভাবক হিসেবে বাল্যবিবাহ
মুবারক সম্পন্ন করে শাস্তি যোগ্য ও দণ্ডনীয় অপরাধ করেছেন। নাউযুবিল্লাহ!
নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ!
| ২) সম্মানিত পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরােধিতা করা। যেহেত দ্বীন
ইসলামে বাল্যবিবাহ বৈধ। তাই তারা দ্বীন ইসলাম উনার বিরােধিতা করতেই এ
আইন প্রণয়ন করে। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ!
৩) মুসলমান যুবক যুবতীদের চরিত্র নষ্ট করে অবৈধ সন্তান জন্ম দেয়া,
নচেৎ তারা অবৈধ মেলামেশা বন্ধে আইন করেনি কেন?
৪) মুসলমানদের জন্মহার হ্রাস করা। কারণ বাল্যবিবাহ জারী থাকলে
মুসলমানদের সন্তান বেশি হবে। মুসলমানদের সংখ্যা দ্রুত বেড়ে যাবে। যা
কাফিরদের জন্য ভয়ের কারণ।
| এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কাফিরদের দ্বারা প্রণীত এরূপ একটি জঘন্য ও কুফরী
আইন ৯৮ ভাগ মুসলমান ও রাষ্ট্র দ্বীন ইসলাম উনার দেশে, যে দেশে রাষ্ট্রপতি
মুসলমান, প্রধানমন্ত্রী মুসলমান, প্রধান বিচারক মুসলমান, অধিকাংশ মন্ত্রী,                               ৩৮

এমপি প্রশাসনের কর্মকর্তা কর্মচারী ও জনগণ মুসলমান। যে দেশের প্রধান।
মন্ত্রীর নির্বাচনী ওয়াদা হলে- ক্ষমতায় গেলে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র
সুন্নাহ শরীফ বিরােধি কোনাে আইন পাশ হবে না। সে দেশে কি করে বৃটিশ
কাফিরদের প্রণীত এ কুফরী আইন জারী বা বহাল থাকতে পারে? কস্মিনকালেও
বহাল থাকতে পারে না।
তাই ৯৮ ভাগ মুসলমান ও রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম উনার দেশের সরকারের জন্য ফরয
হচ্ছে- কাল বিলম্ব না করে এ কুফরী আইন প্রত্যাহার করে নেয়া এবং যারা বাল্য
বিবাহের বিরোধিতা করছে বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের সকল
কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তি দেয়া।
| সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে বাল্য বিবাহের বিরোধিতা
| করা কুফরী, যে কুফরী করে সে মুরতাদ।
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের সুস্পষ্ট ও অকাট্য দলীল
দ্বারা প্রমাণিত হলাে যে, স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ইসলাম উনার
মধ্যে বাল্যবিবাহকে বৈধতা দান করেছেন। আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং নিজেই বাল্যবিবাহ মুবারক
করেছেন ও দিয়েছেন, যা মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক । হযরত।
খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহুম উনারা ও ইমাম মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা
বাল্যবিবাহ করেছেন, দিয়েছেন ও সমর্থন করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
| অতএব, বলার অপেক্ষা রাখে না যে, পবিত্র বাল্য বিবাহের বিরোধিতা করার
অর্থ হলাে, স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম
উনাদের, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের এবং হযরত
ইমাম মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের বিরোধিতা করার উনাদের
বিরোধিতা করার স্পষ্ট কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
| এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন

বাল্যবিবাহে, সু আল্লাহ পাক

وما كان المؤمن ولا مؤمنة إذا قضى الله ورسوله أما أن يكون له الخيره من
ومن يعص الله ورسوله فقد ضل ضلالا با

অর্থ : “কোন মুমিন নর-নারীর জন্য জায়িয হবেনা, মহান আল্লাহ পাক এবং
উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনারা যে ফায়ছালা করেছেন, সে ফায়ছালার মধ্যে চু-চেরা, কৃীল ও কাল করা।
অথাৎ নিজস্ব মত পােষণ করা। আর যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার।
রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাদের নাফরমানী বা বিরোধিতা করে সে প্রকাশ্য গােমরাহীতে গোমরাহ হবে ।
অর্থাৎ কাট্টা কাফির হবে।" (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৬)                  ৩৯

এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার শানে নুযুল সম্পর্কে বলা হয়, নুরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ফুফাতাে।
বােন হযরত যয়নব বিনতে জাহাশ আলাইহাস সালাম, তিনি পরবর্তীতে উম্মুল।
মুমিনীন আলাইহাস সালাম উনার অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। হযরত যয়নাব বিনতে
জাহাশ আলাইহাস সালাম উনাকে বিয়ে দিতে হবে।
| নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
উনার জন্য একজন ছেলে খুঁজছেন। এদিকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর।
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চিন্তা করলেন, হযরত যায়েদ রদ্বিয়াল্লাহু।
তায়ালা আনহু উনাকেও বিয়ে করাতে হবে, আর হযরত যয়নাব বিনতে জাহাশ
আলাইহাস সালাম উনাকে বিয়ে দিতে হবে। এখন একজন ছেলে দরকার এবং
একজন মেয়ে দরকার। আর যদি এই ছেলে-মেয়ে উনাদেরকে পরস্পর বিয়ে।
করায়ে দেয়া হয়, তাহলে তাে আর ছেলে-মেয়ের দরকার হয় না।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি।
শুধু মনে মনে চিন্তা করলেন যে, হযরত যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার
কাছে হযরত যয়নাব বিনতে জাহাশ আলাইহাস সালাম উনাকে বিয়ে দেয়া হবে।
এ সংবাদ গিয়ে পৌছলাে হযরত যয়নাব বিনতে জাহাশ আলাইহাস সালাম
উনার এবং উনার ভাই হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জাহাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
উনাদের কাছে। তখন উনারা কুফু বা সমকক্ষতার বিষয়টা চিন্তা করে বললেন,
আমরা কুরাইশ বংশীয়, আমরা অভিজাত ব্যক্তি। আর হযরত যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু তিনি হলেন খাদিম। এ বিয়ে কি করে সম্ভব হয়। উনারা শুধু
এতটকু চিন্তা করলেন, এ চিন্তা করার সাথে সাথেই মহান আল্লাহ পাক তিনি
পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল করে দিলেন

وما كان لمؤمن ولا مؤمنة إذا قضى الله ورسوله أمرا أن يكون لهم الخير من
أمرهم * ومن يعص الله ورسوله فقد ضل ضلالا مبينا

অর্থ : “কোন মু'মিন নর-নারীর জন্য জায়িয হবেনা, মহান আল্লাহ পাক এবং
উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনারা যে ফায়ছালা করেছেন, সে ফায়ছালার মধ্যে চু-চেরা, কৃীল ও কৃাল করা
অর্থাৎ নিজস্ব মত পােষন করা। আর যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার
রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাদের নাফরমানী বা বিরোধিতা করে সে প্রকাশ্য গােমরাহীতে গোমরাহ হবে ।

সূল, মুজাসসাম, তাই আর যে মহান আলাল ও কাল করা
অর্থাৎ কাট্টা কফির বিরােধিতা করবে সেইল্লাল্লাহু ওয়া

| হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জাহাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং হযরত যয়নাব
বিনতে জাহাশ আলাইহাস সালাম উনাদের কাছে গিয়ে যখন পবিত্র আয়াত শরীফ
পৌছলাে, তখন উনারা বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম! আমরা কখনাে দ্বিমত পােষণ করিনি। তবে চিন্তা করেছিলাম ‘কুফু
হবে কিনা?                                                                                                                                     ৪০

এখন এ বিষয়টা ফিকির করুন, মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার রসূল
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা যে ফায়ছালা করেছেন, সে বিষয়ে সামান্য
ব্যতিক্রম ফিকির করলেই যদি হাকীকী মু'মিন থাকা না যায়, তাহলে যারা
প্রকাশ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ।
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আদেশ নির্দেশের বিরোধিতা।
করছে অর্থাৎ বাল্য বিবাহের বিরোধিতা করছে তারা কি করে ঈমানদার বা
মুসলমান থাকতে পারে?
| এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে
আরো ইরশাদ মুবারক করেন

فلا وربك لا يؤمنون حتى يحكموك فيما شجر بينهم ثم لا يجدوا في
أنفسهم حرجا مما قضيت ويسلموا تسليما

অর্থ : “আপনার রব উনার কসম, তারা কখনই ঈমানদার হতে পারবে
। যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে আপনাকে ফায়সালাকারী
হিসাবে মেনে না নিবে। অতঃপর আপনি যা ফায়সালা করেছেন, আপনার
সেই ফায়সালার ব্যাপারে তারা তাদের নিজেদের অন্তরে কোন রকম চু-চেরা,
কৃীল ও কাল অর্থাৎ কোন প্রকার সংকীর্ণতা অনুভব করবে না। বরং
আনুগত্যের সহিত আনন্দচিত্তে মেনে নিবে।” (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ :
পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৫)
| এ পবিত্র আয়াত শরীফ কেন নাযিল হয়েছিলাে? হযরত মুফাসসিরীনে কিরাম
উনারা বলেন, এক ব্যক্তি ছিল মুনাফিক, তার নাম ছিল বিশর। সে মুসলমান দাবী
করতাে, হাক্বীকৃীত সে ছিলাে মুনাফিক। এই মুনাফিক বিশরের সাথে এক ইহুদীর
কোনো এক বিষয়ে গন্ডগোল হয়। তখন ফায়সালার জন্য নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে আসলাে। নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিচার।
করলেন। মুনাফিক বিশর এর বিরুদ্ধে, ইহুদীদের পক্ষে রায় পড়লে। মুনাফিক বিশর
সেখানে তা বাহ্যিকভাবে মেনে নিলেও দরবার শরীফ থেকে বের হয়ে বললাে,
বিচারটা আমার মনঃপূত হচ্ছে না। নাউযুবিল্লাহ! সে ইহুদীকে নিয়ে পূনরায়
বিচারের জন্য গেল সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূকু আ'যম আলাইহিস সালাম উনার
কাছে। কারণ তিনি অনুমতিক্রমে বিচারকাজ করতেন। বিশর ভেবেছিলেন,
সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূকে আ'যম আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন

آشآء على الكفار.

অর্থাৎ “হযরত ফারূক্বে আ'যম আলাইহিস সালাম তিনি কাফিরদের প্রতি
কঠোর।” (পবিত্র সূরা ফাতহ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৯)                                                   ৪১

তাই বিচারের রায় হয়তাে তার পক্ষেই আসবে। ইহুদী খুব চালাক ছিল সে
শুরুতেই বললাে, হে হযরত ফারূৰ্কে আ'যম আলাইহিস সালাম! এই ত
আমাকে নিয়ে এসেছে আপনার কাছে বিচারের জন্য, অথচ এই মাত্র নৰে
মজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে
বিচার করে দিয়েছেন। রায় আমার পক্ষে হওয়ায় বিশর সে বিচার মানতে।
নারাজ। সেজন্য পুনরায় বিচার করার জন্য আপনার কাছে এসেছে। সাইয়িদ।
হযরত ফারূকে আ'যম আলাইহিস সালাম তিনি একথা শুনে বললেন, ঠিক আছে
তােমরা বস, আমি তােমাদের বিচার করবাে। উনি ঘরে প্রবেশ করে সবচেয়ে
ধারালাে তরবারী এনে মুনাফিক বিশরকে এক কোপে দু'ভাগ করে দিলেন এবং
বললেন, এটাই তােমার বিচার। কারণ, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি যে বিচার করেছেন, সেটা তুমি মাননি। তােমার একমাত্র শাস্তি ও
বিচার মৃত্যুদণ্ড । যখন উনি তাকে হত্যা করে ফেললেন, তখন নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে গিয়ে
মুনাফিক বিশর এর আত্মীয়-স্বজন হযরত ফারুকে আ'যম আলাইহিস সালাম
উনার কর্তৃক বিশ্ব কে হত্যার অভিযোগ করলে । নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, এটা কি করে সম্ভব?
হযরত ফারূকে আ'যম আলাইহিস সালাম তিনি তাে বিশেষ ব্যক্তিত্ব।
উনার প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে

عن حضرت عقبة بن عامر رضي الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله
عليه وسلم لو كان بعيرين لكان حضرت عمر بن الخطاب علیه السلام.

অর্থ : “হযরত উকবা ইবনে ‘আমির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু।
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার পরে যদি কেউ নবী
হতেন, তাহলে হযরত ফারূকে আ'যম আলাইহিস সালাম তিনি নবী হতেন।”
সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ)
কাজেই উনার পক্ষে এটা সম্ভব নয়, ঠিক আছে উনাকে ডাকা হােক।
সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূকে আ'যম আলাইহিস সালাম উনাকে ডেকে আনা
হলাে। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি বললেন, “হে ফারূকে আ'যম আলাইহিস সালাম! আপনি নাকি
একজন মুসলমানকে হত্যা করেছে?” সাইয়্যিদুনা হযরত ফারুকে আযম
আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি আমাকে বিচারের দায়িত্ব দিয়েছেন সে অনুযায়ী
আমি তার বিচার করেছি। অর্থাৎ বিচারে তার মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। তাই আমি তাকে
শাস্তি স্বরূপ হত্যা করেছি। কারণ হচ্ছে- সে মুনাফিকী করেছে।                                                     ৪২

আপনি যে বিচার করেছিলেন, সে বিচার সে মানেনি, সেজন্য আমি তাকে
শাস্তি স্বরূপ হত্যা করেছি। তখন মুনাফিকৃ বিশরের আত্বীয়-স্বজন বললাে, “হে
ফারুকে আ'যম আলাইহিস সালাম! আপনি যাকে হত্যা করেছেন, সে যে।
মুনাফিকী করেছে, তার প্রমাণ কি? কোথায় আপনার দলীল, আপনার সাক্ষী
কোথায়?” যেহেতু সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে সাক্ষী ছাড়া কোনাে কথা
গ্রহণযোগ্য নয়।
| সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূকে আ'যম আলাইহিস সালাম তিনি চুপ করে
রইলেন । সাথে সাথে মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং নিজে সাক্ষী হয়ে আয়াত
শরীফ নাযিল করে জানিয়ে দিলেন

فلا وربك لا يؤمنون حتى يحكموك فيما شجر بينهم ثم لا يجدوا في
أنفسهم حرجا مما قضيت ويسلموا تسليما

অর্থ : “আপনার রব উনার কসম, তারা কখনই ঈমানদার হতে পারবে
। যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে আপনাকে ফায়সালাকারী
হিসাবে মেনে না নিবে। অতঃপর আপনি যা ফায়সালা করেছেন, আপনার
সেই ফায়সালার ব্যাপারে তারা তাদের নিজেদের অন্তরে কোন রকম চু-চেরা,
কৃীল ও কাল অর্থাৎ কোন প্রকার সংকীর্ণতা অনুভব করবে না। বরং
আনুগত্যের সহিত আনন্দচিত্তে মেনে নিবে।” (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ :
পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৫)।
| এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র সূরা নিসা শরীফ উনার ১৪ নং
আয়াত শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক করেন

ومن يعص الله ورسوله ويتعد حدوده يدخله نارا خالدا فيها وله عذاب مهين

অর্থ : “যে ব্যক্তি খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং ।
উনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন নাবিইয়ীন নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের।
নাফরমানী বা বিরােধিতা করে এবং উনার সীমা অতিক্রম করে তিনি তাকে
জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন। সে সেখানে চিরকাল থাকবে। এবং তার জন্য
রয়েছে অপমানজনক শাস্তি।"
| মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ উনার ৪৪ নং পবিত্র
আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন

ومن لم يحكم بما أنزل الله فأولئك هم الكافرون

অর্থ : “মহান আল্লাহ পাক তিনি যা নাযিল বা ফায়ছালা করেছেন সে
মুতাবিক যারা আদেশ নির্দেশ করেনা অর্থাৎ বিপরীত করে তারা কাফির।"                                ৪৩

উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ সমূহ ও শানে নুযূল উনাদের বর্ণনা দ্বারা।
যে বিষয়ে সুস্পষ্ট ও অকাট্য ভাবে প্রমাণিত হয়েছে, তাহলাে- মহান আল্লাহ।
পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি।
ওয়া সাল্লাম উনারা যে ফায়ছালা মুবারক দিয়েছেন তার বিরােধিতা করা তাে।
দূরের কথা বরং সে বিষয়ে সামান্যতম দ্বিমত পোষণ চিন্তা করাটা কাট্টা
কফরীর অন্তর্ভুক্ত। আর কোনাে মুসলমান যখন কুফরী করে তখন সে মসলমান।
থাকে না বরং সে মুরতাদ হয়ে যায়। নাউযুবিল্লাহ!
সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে মুরতাদের ফায়ছালা
মুরতাদের ফায়ছালা সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন

তম কেন বিশ্লোল্লাহু আল্লাহ

حبطت أعمالهم في وهو كافر فأولئك
ومن يرتدد منكم عن دينه في
هم فيها خالدون
الدنيا والأخرة * أولئك أصحاب النار

অর্থ : “তােমাদের মধ্যে যারা নিজের দ্বীন থেকে ফিরে যাবে অর্থাৎ মুরতাদ
হবে এবং মুরতাদ বা কাফির অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে, দুনিয়া ও আখেরাতে তাদের
যাবতীয় আমল বিনষ্ট হয়ে যাবে। আর তারাই হলো দোযখ বাসীর। তাতে তারা
চিরকাল বাস করবে।” (পবিত্র সূরা বাকারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২১৭)।
এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত ও মশহুর ‘তাতারখানিয়া কিতাবে উল্লেখ আছে

أجمع أصحابنا على أن اللذة بطل عصمة النكاح واقع الفقه بينهما نفس

অর্থ : “আমাদের ইমাম-মুজতাহিদ ও ফকীহ উনাদের সর্বসম্মত মত এই
যে, মুরতাদ হলে তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায় এবং আহাল (স্বামী) আহলিয়া
(স্ত্রী) হতে পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।”
| নির্ভরযোগ্য ও প্রসিদ্ধ ‘দুররুল মুখতার' কিতাবে উল্লেখ আছে

گفزا إتفاقا يبطل العمل واليكا و أولاده أولاد الزنا وما فيه . خلاف
ما يمحو
يؤمر بالإستغفار والتوبة وتجديد النكاح.

অর্থ : “সর্বসম্মত মতে যদি কেউ মুরতাদ বা কাফির হয়ে থাকে, তবে তার।
নিকাহ বা বিবাহ ও আমলসমূহ বাতিল হবে। ওই অবস্থায় সন্তান সন্ততি
জন্মগ্রহণ করলে অবৈধ হবে। যদি কারণে মুরতাদ ও কাফের হওয়া সম্পর্কে
মতভেদ থাকে, তবুও তার কর্তব্য যে, তওবা-ইস্তিগফার করতঃ নিকাহ বা বিবাহ
দোহরিয়ে নেয়া।”                                                                                                                          ৪৪

‘মিয়াতে মাসায়িল’ নামক কিতাবে উল্লেখ আছে

أو يرى شيئا بين الحرام فيه
من سمع البناء من المغني وآمن غير الممغ
ا في الحال بناء على الله أبطل حكم م
ذلك باعتقاد أو غير اعتقاد يصير
الشريعة ومن أبطل لحكم الشريعة لا يكون مؤمنا عند كل مجتهد ولا يقبل الله
طاعته وأبط گل حسناته وبات من إمراثة فان تاب لا يجب القتل والا

অর্থ : “যদি কোনাে ব্যক্তি গায়ক কিংবা গায়িকা ব্যতীত কোনাে লােকের গান
শ্রবণ করা হালাল মনে করে, কিংবা কোন হারাম কাজ দেখে ভাল মনে করে,
সেটা বিশ্বাস সহকারে হোক বা অবিশ্বাসে হোক, সে ব্যক্তি মুরতাদ হবে। যেহেতু
সে সম্মানিত শরীয়ত উনার হুকুম বাতিল করলাে। যে ব্যক্তি সম্মানিত শরীয়ত
উনার হুকুম বাতিল করে অর্থাৎ হারামকে হালাল জানে কিংবা হালালকে হারাম
জানে সকল মুজতাহিদ উনাদের মতানুসারে সে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট
মু'মিন থাকবে না এবং মহান আল্লাহ পাক তার ইবাদত কবুল করবেন না। তার
যাবতীয় নেক কাজ বিনষ্ট হবে এবং তার আহলিয়া (স্ত্রী) তালাক হবে। এরূপ।
অবস্থায় যদি তওবা করে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট ক্ষমা চায়, তবে তাকে
কৃতল করা সম্মানিত শরীয়তে ওয়াজিব নয় । অন্যথায় তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হবে।
(যদি ইসলামী খিলাফত বা আইন জারী থাকে)
কেননা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে

عن حضرت ابن عباس رضي الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله
عليه وسلم من بدل دينه فاقتلوه

অর্থ : “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,যে ব্যক্তি মুরতাদ হয়ে গেছে বা দ্বীন হতে ফিরে গেছে।
তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন।” (নাসায়ী শরীফ)।
| ‘ফতওয়ায়ে আনকারােবিয়াতে উল্লেখ আছে

ځكم التركية الخ إلى قوله ويوا له إمري أه مطلقا وبطلان وقفه مطلقا واذا
مات أو قل على ردته لم يذف مقابر أهل الملة وإنما يلي في تحفيزة

الكلب

অর্থাৎ, “সম্মানিত শরীয়ত উনার ফায়ছালা হলাে, মুরতাদ হয়ে গেলে তার
আহলিয়া (স্ত্রী) তালাকে বায়িন প্রাপ্ত হবে এবং মুরতাদ ব্যক্তি ওয়াকফ করে থাকলে তা ।              ৪৫

বাতিল হবে। মুরতাদ অবস্থায় মারা গেলে বা নিহত হলে মু'মিনদের কবরস্থানে দাফন
করা যাবে না। বরং তাকে কুকুরের ন্যায় একটি গর্তের মধ্যে পুঁতে রাখতে তা
বিখ্যাত ফিকাহ কিতাব ‘কাজীখান উললেখ আছে

عليه الإسلام في الحال فإن أسلم والا تا الا أن يطلب
واذا ارتد يعرض
التأجيل فيول ثلاثة أيام لينظر في أمره ولا يوكل أكثر من ذالك ويغرض
عليه الإسلام كل يوم من أيام التأجيل قان آلم يسقط عند القتل وان آبی آن

অর্থাৎ, “কোন লােক মুরতাদ হওয়া মাত্রই তাকে (তওবা করে) মুসলমান।
হতে হবে। যদি এতে সে মুসলমান হয় তবে তাকে কোনো কথাই নেই। অন্যথায়।
সম্মানিত শরীয়তে তার প্রতি প্রাণদণ্ডের আদেশ (যদি সে ব্যক্তি সময় বা অবকাশ
প্রার্থনা করে তবে তাকে বিবেচনা করার জন্য মাত্র তিন দিন সময় দিবে, এর
অধিক সময় দেয়া যাবে না) এ অবকাশের প্রতিদিন তাকে মুসলমান হতে বলতে
হবে। যদি সে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম কবুল করে তবে সম্মানিত শরীয়ত মতে
তার প্রতি প্রাণদণ্ডের আদেশ হবে না। আর যদি এ সময়ের মধ্যে সম্মানিত দ্বীন
ইসলাম কবুল না করে তখন তার মৃত্যুদণ্ড হবে। (প্রকাশ থাকে যে, মৃত্যুদণ্ডের
আদেশ, ইহা ইসলামী খিলাফতে সম্মানিত শরীয়ত উনার বিধান ।)”
কাজেই, উপরোক্ত দলীল ভিত্তিক আলোচনা দ্বারা অকাট্য ভাবে প্রমাণিত হলে
যে, সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে মুরতাদের ফায়সালা হলাে, সে ঈমানহারা
হবে। তার বিগত জীবনের সমস্ত নেকী বাতিল হবে। বিয়ে করে থাকলে বিয়ে
বাতিল হবে, হজ্জ করলে বাতিল হবে, সে মারা গেলে তার জানাযা পড়া জায়িয
হবে না। তাকে মুসলমানের কবরস্থানে দাফন করা যাবে না। তাকে কুকুর,
শৃগালের মত মাটিতে পুঁতে রাখতে হবে। ৩ দিনের মধ্যে তওবা না করলে তার
একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, যদি সম্মানিত ইসলামী খিলাফত থাকে।

উপসংহার
| পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র
কিয়াস শরীফ উনাদের অকাট্য দলিলের ভিত্তিতে খাছ সুন্নতি বাল্যবিবাহ
সম্পর্কিত উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা যে বিষয়গুলো সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে
তাহলে
১. মহান আল্লাহ পাক তিনি মানবজাতির থেকেই মানজাতির জন্য জোড়া।
সৃষ্টি করেছেন। অর্থাৎ বংশ বিস্তারের জন্য পুরুষ ও মহিলার মধ্যে নিকাহ বা
বিবাহের বিধান দিয়েছেন।
২. নিকাহ বা বিবাহ পুরুষ ও মহিলার চরিত্র ও ইজ্জত আবরু হিফাযতের
একটি অন্যতম মাধ্যম।                                                                                                              ৪৬

৩ আমভাবে নিকাহ বা বিবাহ করা হচ্ছে খাছ সুন্নত উনার অন্তর্ভুক্ত।
৪. যাদের নিকাহ বা বিবাহ করার সামর্থ আছে এবং চরিত্র নষ্ট হওয়ারও
ভয় আছে তাদের জন্য নিকাহ বা বিবাহ করা ফরয।
 ৫. যাদের নিকাহ বা বিবাহ করার সামর্থ নেই অর্থাৎ আহলিয়া বা স্ত্রীর হক
আদায় করতে অক্ষম তার জন্য বিবাহ করা হারাম। তাকে বেশি বেশি রােযা।
রাখতে হবে ।
৬. সম্মানিত শরীয়ত নিকাহ বা বিবাহের ক্ষেত্রে পুরুষ ও মহিলার জন্য
বয়স নির্দিষ্ট করে দেয়নি। অর্থাৎ যেকোনাে বয়সের পুরুষ ও মহিলার মধ্যে
নিকাহ বা বিবাহ জায়িয।
 ৭. পবিত্র কুরআন শরীফ উনার একাধিক পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারা
প্রমাণিত হয়েছে যে, স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও
বয়স্কা পুরুষ ও মহিলার বিবাহকে অর্থাৎ বাল্যবিবাহকে বৈধতা দান করেছেন।
৮. অসংখ্য পবিত্র হাদীস শরীফ দ্বারা অকাট্য ভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে,
স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি নিজেই বাল্যবিবাহ মুবারক করেছেন। অর্থাৎ উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছাহ
হযরত ছিদ্দিক্বা আলাইহাস সালাম উনার ৬ বছর বয়স মোবারক আকদ মুবারক
করেছন আর ৯ বছর বয়স মুবারকে হুজরা শরীফ এনেছেন।
৯. হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের অনেকেই
বাল্যবিবাহ মুবারক করেছেন, করিয়েছেন এবং সমর্থন করেছেন।
১০. হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনেকেই
বাল্যবিবাহ মুবারক করেছেন ও করিয়েছেন।
১১. বাল্যবিবাহ জায়িয বা বৈধ হওয়ার ব্যাপারে ইমাম মুজতাহিদ উনাদের
মাঝে ইজমা বা ঐক্যমত প্রতিষ্টিত হয়েছে। অর্থাৎ বাল্যবিবাহ সম্মানিত শরীয়ত
অনার্স তৃতীয় দলিল ‘ইজমা শরীফ দ্বারা জায়েয প্রমাণিত।
১২. বাল্যবিবাহ বিরোধী আইন করার, উক্ত আইনকে সমর্থন করার, বাস্তবায়ন
করার, প্রচার প্রসার করার, বাল্যবিবাহ বন্ধে কার্যক্রম গ্রহণ করার অর্থ হচ্ছে
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র
কিয়াস শরীফ অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, হযরত
খুলাফায়ে রাশেদীন এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
উনাদের ও হযরত ইমাম মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের
বিরোধিতা করা, উনার বিরুদ্ধে আইন করা। যা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
| ১৩, সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে কোনো মুসলমান যদি একটিও কুফরী
করে তবে সে মুরতাদ বা দ্বীন ত্যাগীর অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ কাফির। ইসলামী
খিলাফতের বিধান অনুযায়ী ৩ দিনের মধ্যে খালিছ তওবা না করলে তার।
একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।                                                                                                           ৪৭

অতএব, প্রশাসন সহ যারা খাছ সুন্নতি বাল্যবিবাহ বিরোধী আ৯
কার্যক্রমের সাথে জড়িত তাদের জন্য ফরয ওয়াজিব হচ্ছে খালিছড়া
ইস্তগফার করতঃ অবিলম্বে উক্ত কুফরী আইন প্রত্যাহার করে নেয়া যায়।
বিরােধী সর্বপ্রকার কার্যক্রম থেকে বিরত থাকা। যারা বাল্য বিবাহের নি।
প্রচারণা চালাচ্ছে তাদেরকে গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা।
তাদেরকে ইহকালে ও পরকালে অর্থাৎ উভয়কালেই কঠিন কাফফারা আ
করতে হবে।
মনে রাখতে হবে যে, কোনো ব্যক্তিগত বিদ্বেষ বা ব্যক্তি স্বার্থ হাছিলের জন্য
এ ফতওয়া বা কিতাব প্রকাশ ও প্রচার করা হয়নি। মুসলমান উনাদের ঈমান
আমল হিফাযত ও ইহকাল ও পরকালে নাজাতের জন্যই এ উদ্যোগ। কেননা।
প্রেসিডেন্ট হােক, প্রধানমন্ত্রী হােক, প্রধান বিচারক হােক, এম.পি হােক আর।
সাধারণ মুসলমান হোক সবাইকে মৃত্যু বরণ করতে হবে, কবরে যেতে হবে।
হাশরের ময়দানে উঠতে হবে। মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার সম্মানিত
রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার সামনে দাঁড়াতে হবে। তাই বিষয়টি ফিকির করে সকলকে খালিছ।
তওবা ইস্তিগফার করতে হবে।
_ মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে প্রতি ক্ষেত্রে পবিত্র কুরআন।
শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র কিয়াস শরীফ।
মুতাবিক আকীদা পোষণ করার ও আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন।

বাল্যবিবাহ বিরোধীদের প্রতি প্রকাশ্য বাহাসের চ্যালেঞ্জ
বাল্যবিবাহ বিরোধীদের প্রতি রাজারবাগ শরীফ উনার পক্ষ থেকে প্রকাশ্য
বাহাছের চ্যালেঞ্জ ঘােষণা করা হচ্ছে। যদি বুকে সাহস থাকে আর মিথ্যাবাদী না
হও তবে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে জনসম্মুখে এসে বাল্যবিবাহকে নাজায়িয প্রমাণ
করে।
প্রাথমিক শর্ত সমূহ:
(১) বাহাছ প্রকাশ্য ও সুবিধাজনক স্থানে ব্যাপক প্রচার-প্রসার করে নির্দিষ্ট |
সময়ে হতে হবে।
 (২) বাহাসের দু'মাস পূর্বে চুক্তিনামা আবদ্ধ হতে হবে ।
(৩) নিরপেক্ষ লোকের তত্ত্বাবধানে বাহাস অনুষ্ঠানে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা
রাখতে হবে। 
(৪) বাহাছের মানদণ্ড হবে পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ
শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র কিয়াস শরীফ।
 (৫) বিরোধী পক্ষের
আকীদা ও আমলের দলীল পেশ করতে হবে।
 (৬) বাহাসের বিষয় সমূহের
ব্যাপারে বাহাছের পনের দিন পূর্বে প্রত্যেককেই তার বিপরীত পক্ষের কাছে
দলিল ভিত্তিক লিখিত ফয়সালা পেশ করতে হবে।
 (৭) বাহাসের অন্যান্য
শর্তসমূহ উভয় পক্ষের আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারণ হবে।                                                        ৪৮