৩৩ নং- সুওয়াল: গীবত কাকে বলে? কাদের গীবত করা জায়িয?



সুওয়াল: গীবত কাকে বলে? কাদের গীবত করা জায়িয?
জাওয়াব: কোনো মুসলমানের অুপস্থিতিতে তার সম্বন্ধে এমন কোনো কথা বলা যা শুনলে সে মুনঃক্ষুণ্ন হবে, এটারই নাম গীবত। গীবত মুখেও হয়, হাত বা চক্ষু প্রভৃতির ইঙ্গিতেও হয়। যেমন, কাউকে বুদ্ধিহীন ও বোকা বলা। কারও মান সম্ভ্রম, বংশগৌরব, কাজকর্ম, বাড়িঘর প্রভৃতি যে কোনো জিনিস যা তার সাথে সম্পর্কযুক্ত ওটার কোনো দোষত্রুটি প্রকাশ করা যা শুনলে তার মনে কষ্ট টায়। গীবত করা শক্ত কবীরাহ গুনাহ। আর গীবতের দ্বারা হক্কুল ইবাদতও নষ্ট হয়। মহান আল্লাহ পাক গীবত সম্বন্ধে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, ‘তোমরা কি তোমাদের মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া পছন্দ করবে? অবশ্যই করবে না।অর্থাৎ গীবত করা আর মৃত মুসলমানের গোশত খাওয়া উভয়ই সমান।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ  মুবারক করেছেন, “গীবত জ্বিনা হতেও শক্ত গুণাহ।অতএব, এমন জঘন্য গুণাহ হতে আত্মরক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমারে জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য। তথাপিও নিম্নোলিখিত কয়েক প্রকার লোকের দোষত্রত্রুটি বর্ণনা করলে গীবত হয় না।
(১) রাজ-বাদশাহ, আমীর-উমরাহদের ইসলাহ বা সংশোধনের জন্য তাদের দোষত্রুটিগুলি বর্ণনা করা হয়েছে গীবত হবে না। কেননা, তাদের দোষত্রুটি বর্ণনা না করলে তারা ইসলাহ হবে না।
(২) ফতওয়ার জন্য মুফতী ছাহেবের নিকট কারো দোষত্রুটি বর্ণনা করলে গীবত হবে না কারণ, সত্য কথা না বললে সঠিক ফতওয়া পাওয়া যাবে না।
(৩) কাজী ছাহেবের নিকট যদি কোনো ব্যক্তি বিচারপ্রার্থী হয়ে বিপরীত পক্ষের দোষত্রুটি বর্ণনা করে, তবে গীবত হবে না। কারণ, বিপরীত পক্ষের পূর্ণ বিবর না দিলে সঠিক বিচার হবে না।
(৪) ফাসিকের দোষত্রুটি বর্ণনা করলে গীবত হয় না। ফাসিক বলা হয় তাদেরকে যারা ফরয-ওয়াজিব ও সুন্নতে মোয়াক্কাদা তরক করে। বা সব সময় কবীরা গুনাহ করে।
(৫) কোন ব্যক্তি যদি মশহুর হয়ে যায় এমন কোনো নামে যা দোষত্রুটিযুক্ত। যেমন, বোবা, তোতলা, লুলা, ল্যাংড়া বলে ডাকা হয় তাহলে সেটা গীবত হবে না। যেমন, একজন বড় আলিমের নাম ছিল আমাশ (অর্থ- যার চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ে)। বাদশাহ নাম ছিলো তৈমুর লঙ্গ (অর্থ ঘোড়া)।
(৬) উলামায়ে সূএর দোষত্রুটি বর্ণনা করলে গীবত হয় না। কেননা, আলেম দ্ইু প্রকার। এক প্রকার উলামায়ে হক্ব ও দ্বিতীয় প্রকার উলামায়ে সূবা বিদয়াতী মাওলানা। উলামায়ে হক্ব হলো উনারা, যাঁরা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টির মাধ্যমে দ্বীন যিন্দা করার জন্য দুনিয়া বিসর্জন দিতে প্রস্তুত থাকেন। আর উলামায়ে সূহলো তারা, যারা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টির গুরুত্ব না দিয়ে, দ্বীনকে বিসর্জন দিয়ে দুনিয়া হাছিল করে।
(৭) কোনো পিতা যদি তার ছেলেকে বিয়ে করাতে চায় বা মেয়েকে বিয়ে দিতে চায়; তাহলে বিপরীত পক্ষের ছেলে বা মেয়েদের প্রতিবেশীদের কাছে সেই ছেলে বা মেয়ে সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করে এবং প্রতিবেশীরা যদি সত্য কথা বলতে গিয়ে কিছু দোষত্রুটি বর্ণনা করে তাহলে সেটা গীবত হবে না।
 ্আবা-৫

0 Comments: