২৪ নং- সুওয়াল : আউলিয়া কাকে বলে? কিরূপে আউলিয়া হওয়া যায়? বিস্তারিত জানতে চাই।


সুওয়াল : আউলিয়া কাকে বলে? কিরূপে আউলিয়া হওয়া যায়? বিস্তারিত জানতে চাই।
জাওয়াব : আউলিয়া শব্দটি বহুবচন। তার অর্থ হলো, বন্ধুগণ। আর আউলিয়া উল্লাহ শব্দের অর্থ হলো মহান আল্লাহ পাক উনার বন্ধু। তার একবচন হলো ওলী। ওলী শব্দের অর্থ হলো বন্ধু। আর ওলীআল্লাহ শব্দের অর্থ হলো মহান আল্লাহ পাক উনার বন্ধু।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ আছে, “মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ইলম দুপ্রকার। প্রথম প্রকার হলো, ইলমে তাছাউফ বা ক্বালবী ইলম। যা ফায়দাজনক বা উপকারী ইলম। দ্বিতীয় প্রকার ইলম হলো, ফিক্বাহ বা জবানী ইলম, যা মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে বান্দার জন্য দলীলস্বরূপ।
এ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যায় হযরত মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, যা মিশকাত শরীফ কিতাব উনার ব্যাখ্যা মিরকাত শরীফকিতাব উনার মধ্যে হযরত মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেছেন, যে ব্যক্তি শুধু ইলমে ফিক্বাহ শিখলো, ইলমে তাছাউফ শিখলো না সে ফাসিকের অন্তর্ভুক্ত। আর যে ব্যক্তি ইলমে তাছাউফের বা মারিফাতের দাবীদার অথবা ইলমে ফিক্বাহকে গুরুত্ব দেয় না সে ব্যক্তি যিন্দীক বা কাফির। আর যে উভয়টিই শিক্ষা করলো, তিনি মুহাক্কিক বা আল্লাহওয়ালা।
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করেন বান্দার মধ্যে যারা আলিম।আর মিশকাত শরীফউনার পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, আল্লাহওয়ালা আলিম উনারাই যারা ইলম অনুযায়ী আমল করেন।
দুনিয়ার লোভ আলিমের অন্তর থেকে ইলম বের করে দেয়। হযরত হাসান বসরী রহমতুল্লাহি আলাইহি আল্লাহওয়ালা আলিমগণের সংজ্ঞায় বলেন, যিনি দুনিয়া থেকে বিরাগ, পরকালের প্রতি আসক্ত, গুণাহ সম্পর্কে সদা সতর্ক, সর্বদা ইবাদতে মশগুল, পরহেযগার বা সুন্নতে পাবন্দ, কোন মুসলমানের মান সম্ভ্রম নষ্ট করেন না এবং তাদের মালের প্রতিও লোভ করেন না, সব সময় নছীহত করেন। যার মধ্যে এ সমস্ত গুণ থাকবে তিনিই আল্লাহওয়ালা।
সুতরাং উপরোক্ত গুণ সম্পন্ন ব্যক্তিই মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী।
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, যারা আমাকে পাওয়ার জন্য কোশেশ করে, অবশ্যই অবশ্যই আমি তাদেরকে আমাকে পাওয়ার রাস্তাগুলি জানিয়ে দেই। নিশ্চয়ই যারা মুহসিন (নেককার) মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের সাথে আছেন।
মহান আল্লাহ পাক অন্য এক পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা নেক (আল্লাহওয়ালা) লোকের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করো।
উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহওয়ালা বা মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী হতে হলে মহান আল্লাহ পাক উনার ওলীগণ উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করে ইলমে তাছাউফ অর্জন করলে মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী হওয়া যায়।
আবা-৪

0 Comments: