৪৯ নং-সুওয়াল: আমরা জানি মসজিদের ভিতর আযান দেয়া মাকরূহ তানযীহী অথচ দেখা যায় জুমুয়ার ছানী আযান সবসময় মসজিদের ভিতর দেয়া হয়, এটা কি সুন্নত? অনেকে বলে থাকেন, মসজিদের ভিতর ছানী আযন দেয়া বিদয়াত ও হারাম। এ সম্পর্কে পবিত্র শরীয়ত উনার মাসআলা কি?


সুওয়াল: আমরা জানি মসজিদের ভিতর আযান দেয়া মাকরূহ তানযীহী অথচ দেখা যায় জুমুয়ার ছানী আযান সবসময় মসজিদের ভিতর দেয়া হয়, এটা কি সুন্নত?
অনেকে বলে থাকেন, মসজিদের ভিতর ছানী আযন দেয়া বিদয়াত ও হারাম। এ সম্পর্কে পবিত্র শরীয়ত উনার মাসআলা কি?
জাওয়াব: হ্যাঁ, পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের আযান মসজিদের ভিতর দেয়া মাকরূহ তানযীহী, আর জুমুয়ার ছানী আযান মসজিদের ভিতর দেয়াই পবিত্র সুন্নত মুবারক। মূলত যারা বলে মসজিদের ভিতর ছানী আযান দেয়া বিদয়াত ও হারাম তাদের এ কথাটি শুদ্ধ নহে। কারণ, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যামানায় জুমুয়াতে একটি আযান দেয়া হত। হযরত আবু বকর ছিদ্দীক আলাইহিস সালাম ও হযরত ওমর ফারুক আলাইহিস সালাম উনাদের যামানায়ও মাত্র একটি আযানই জারী ছিল। হযরত ওসমান আলাইহিস সালাম উনার যামানায় মুসল্লীদের সংখ্যা অত্যাধিক বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে জুমুয়ার একটি আযান বৃদ্ধি করা হয়। মূলত বর্তমানে জুমুয়ার প্রথমে যে আযান দেয়া হয় তাই হযরত ওসমান যিন নুরাইন আলাইহিস সালাম উনার সময় মজলিশে শুরার পরামর্শক্রমে বৃদ্ধি করা হয়। আর যা মসজিদের ভিতর দেয়া হয়, তা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত আবু বকর ছিদ্দীক আলাইহিস সালাম ও হযরত ওমর ফারুক আলাইহিস সালাম উনার যামানায় মসজিদের দরজায় দেয়া হতো। এটাই হযরত ওসমান যিন নুরাইন আলাইহিস সালাম উনার যামানায় মজলিশে মুরার পরামর্শক্রমে মিম্বরের নিকট ইমামের সম্মুখে দেয়া শুরু করা হয়।
সুতরাং এটা সুন্নতে ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমাদের জন্য আমার সুন্নত ও আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সুন্নত মুবারক অবশ্যই পালনীয়। তোমরা মাড়ির দাঁত দিয়ে ওটা আঁকড়িয়ে ধরে রাখ।যেহেতু এটা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনাদের ইজমা হয়েছে, সেহেতু জুমুয়ার আযান দুটোই দিতে হবে। প্রথমটি মসজিদের বাইরে লোকজনকে ডাকার জন্যে এবং দ্বিতীয়টি বা ছানী আযান মসজিদের ভেতরে ইমামের সম্মুখে মিম্বরের নিকটে দিতে হবে। আর এটাই আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনার ফতওয়া। যারা বলে যে, মসজিদের ভিতরে ছানি আযান দেয়া বিদয়াত ও নাজায়িয মূলত তারা ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগণ উনারাই অস্বীকার করল; আর যারা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনারাই অস্বীকার করলো, তারা মূলত মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অস্বীকার করলো, আর মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অস্বীকার করা মহান আল্লাহ পাক উনাকে অস্বীকার করার নামান্তর এবং এটা কুফরী হবে। কাজেই তারা গুমরাহ ও বাতিল ফিরকার অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে সিরাজুম মুনীরা, ইনায়া, বাহরূর রায়েক, কাযীখান, আলমগীরী, ক্বাফী, ফতওয়ায়ে গিয়াসী, মারাকিউল ফালাহ ইত্যাদি কিতাব)
আবা-৭

0 Comments: