৩৬নং-সুওয়াল : মানুষ মৃত্যুর পরে পুনরায় অন্য কোনো রূপ ধারণ করে পৃথিবীতে আসে কিনা? জানতে বাসনা রাখি।


 সুওয়াল : মানুষ মৃত্যুর পরে পুনরায় অন্য কোনো রূপ ধারণ করে পৃথিবীতে আসে কিনা? জানতে বাসনা রাখি।
জাওয়াব: নিশ্চয়ই মানুষ একবারই মৃত্যুবরণ করে। মানুষ মৃত্যুর পর কোনো ছূরত ধারণ করে পুনরায় দুনিয়াতে আগমন করে না। কেউ কেউ পূর্ণজন্ম ও জন্মান্তরের কথা বলে থাকে। কিন্তু পূর্নজন্ম হলো হিন্দুদের আক্বীদা। পূর্ণজন্ম শব্দের অর্থ হলো, মানুষ মরে গেলে তার পাপ অনুযায়ী সে গরু, ছাগল, ভেড়া, কীটপতঙ্গা, শুকর, কুকুর ইত্যাদি ছূরতে পুনরায় দুনিয়াতে আগমন করে। আর জন্মান্তর হলো বৌদ্ধদের আক্বীদা। জন্মান্তর শব্দের অর্থ হলো, মানুষ মরে গেলে তার পাপ অনুযায়ী লুলা, ল্যাংড়া, অন্ধ, খঞ্জ, বোবা, বধির ইত্যাদি ছূরতে দুনিয়াতে আগমন করে।
কিন্তু ইসলাম পূণর্জন্ম ও জন্মান্তর কোনো আক্বীদাই বিশ্বাস করে না। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র সূরা মুমিনুন শরীফউনার ৯৯ ও ১০০ নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “যখনতাদের কারো কাছে মৃত্যু আসে বা তাদের কারো মৃত্যু হয়, তখন সে বলে, হে আমার প্রতিপালক আমাকে পুনরায় দুনিয়াতে প্রেরণ করুন। যাতে আমি সৎ কাজগুলো করতে পারি, যা আমি করিনি। কখনই নয়, এটা তো একটি অবান্দর কথা মাত্র। তাদের সামনে পর্দা রয়েছে পুনরূত্থান বা ক্বিয়ামত দিবস পর্যন্ত।” (অর্থাৎ কোনো ব্যক্তিই দুনিয়াতে দ্বিতীয়বার আসবে না।)
উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীর মুবারক উনার মধ্যে সমস্ত মুফাসসিরীনে কিরাম, মুহাক্কিকীনে কিরাম, মুদাক্কিকীনে কিরাম একমত যে, মানুষের মৃত্যু একবাই হয়। কাজেই পুনর্জন্ম বা জন্মান্তরের কোনো প্রশ্নই উঠতে পারে না।
কেউ কেউ পবিত্র কুরআন শরীফ উনার পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ উনার ২৮ নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনাকে পুনর্জন্মের দলীল হিসেবে পেশ করে থাকে। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ভুল ও কুফরী পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা। ২৮ নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার অর্থ হলো, “কী করে তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে অস্বীকার করো বা মহান আল্লাহ পাক উনার ব্যাপারে কুফরী মত পোষণ করো? অথচ তোমরা ছিলে অস্তিত্বহীন, অতঃপর তোমাদেরকে মৃত্যু দান করবেন। (অর্থাৎ দুনিয়াতে মৃত্যুবরণ করবে)। পুনরায় তোমাদেরকে পুনরূত্থান দিবসে (হাশরের ময়দানে দুনিয়াতে নয়) জীবিত করবেন। অতঃপর তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে প্রত্যাবর্তন করবে।
উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় সমস্ত মুফাসসিরীনে কিরামগণ উনারা বলেন, এটা পুনর্জন্ম বা জন্মান্তর বুঝানোর জন্য নয় বরং এটাতে মানুষের যে অস্তিত্ব ছিলো না তা বলা হয়েছে। আর অস্তিত্বের মাধ্যমে দুনিয়াতে আগমন এবং আগমনের পর তার মৃত্যু। মৃত্যুর পর হাশরের ময়দানে তার পুনরূত্থান অতঃপর হিসাব নিকাশের শেষে তার মূল গন্তব্যস্থলে অর্থাৎ বেহেশত বা দোযখে প্রত্যাবর্তন।
 আবা-৫

0 Comments: