كَمَثَلِ الشَّيْطَانِ
إِذْ قَالَ لِلْإِنسَانِ اكْفُرْ فَلَمَّا كَفَرَ قَالَ إِنِّي بَرِيءٌ مِّنكَ إِنِّي أَخَافُ اللَّـهَ رَبَّ الْعَالَمِينَ
অর্থ: তারা শয়তানের মতো, যে
মানুষদের বলে কুফরী কর। এরপর যখন তারা কুফরী করে তখন শয়তান বলে তোমাদের সাথে আমার
কোন সম্পর্ক নেই। আমি জগত সমূহের প্রতিপালক মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করি। (পবিত্র
সূরা হাশর শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ- ১৬)
অর্থাৎ মালউন ইবলিস সে জ্বীন-ইনসানদের ধোঁকা
দিয়ে কুফরী শিরকী করায়। যখন সে দেখতে পায় মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে
মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের পক্ষ থেকে তাদের উপর
অসন্তুষ্টি ও লা’নত বর্ষন হচ্ছে, তা দেখে সে ঐ স্থান ত্যাগ
করে এবং বলে এখন তোমরা তোমাদের নিকৃষ্ট কাজের ফল ভোগ করো। আমি তোমাদের সাথে নেই।
নাউযূবিল্লাহ! হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের জন্য
সাহায্যকারী হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের দেখতে পেয়ে অভিশপ্ত ইবলীস বদর
জিহাদ থেকে পালিয়ে যায়। সে ছিলো যুদ্ধক্ষেত্র থেকে প্রথম পলায়নকারী। অথচ সেই ছিলো
তাদের সাহস দানকারী ও তাদের সহযাত্রী। সে
তাদেরকে প্রতিশ্রুতি বা ওয়াদা দিয়েছিলো উপকার করার কথা বলে। কিন্তু ইবলীস শয়তানের ওয়াদা প্রতারণা
ব্যতীত আর কিছুই নয়।
স্বরণীয় যে, অতীতের
ন্যায় কুরাইশরা পবিত্র মক্কা শরীফ থেকে অভিযানে বের হওয়ার সময় দলবলসহ পবিত্র কা’বা
শরীফ উনার গিলাফ মুবারক ধরে কেঁদে কেঁদে প্রার্থণা করেছিলো এ বলে,
اللهم انصر أقرانا للضيف وأوصلنا للرحم وأفكّنا للعاني إن كان محمد على حقّ فانصره وإن كنا على حقّ فانصرنا ، وروي أنهم قالوا : اللهم انصر أعلى الجندين وأهدى الفئتين وأكرم الحزبين
অর্থ: হে মহান আল্লাহ পাক! আপনি সাহায্য করুন
আমাদের মধ্যকার সর্বাধিক অতিথি আপ্যায়নকারী, সর্বাধিক আত্œীয়তা রক্ষাকারী এবং বন্দি মুক্তি দানকারী
দলকে। হে বারী ইলাহী! নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যদি হক্বের উপর থেকে থাকেন তবে আপনি উনাকে
সাহায্য করুন। আর যদি আমরা সত্যের উপর থেকে থাকি তবে আমাদেরকে সাহায্য করুন। হে
বারী ইলাহী! আপনি সাহায্য করুন আমাদের দু’দলের মধ্যকার সেরা দলকে, শ্রেষ্ঠতম হিদায়াতপ্রাপ্ত ও সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মানিত দলকে। সুবহানাল্লাহ!
(তাফসীরে কাশশাফ, বাহরুল মুহীত্ব, আবনু
কাছীর, ইবনে হিশাম, বায়াক্বী, দালায়েলুন নবুওওয়াত, যাদুল মা’আদ, আল বিদায়া)
প্রসিদ্ধ তারিখ বা
ইতিহাস গ্রন্থ সমূহে উল্লেখ রয়েছে, হযরত ইবনে ইসহাক্ব
রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেছেন,
معهم مائتا فرس يقودونها ومعهم القيان يضربن بالدفوف ويغنين بهجاء المسلمين. وذكر المطعمين لقريش يوما يوما، وذكر الاموي أن أول من نحر لهم حين خرجوا من مكة أبو جهل نحر لهم عشرا، ثم نحر لهم أمية بن خلف بعسفان تسعا، ونحر لهم سهيل بن عمرو بقديد عشرا، ومالوا من قديد إلى مياه نحو البحر فظلوا فيها وأقاموا بها يوما فنحر لهم شيبة بن ربيعة تسعا، ثم أصبحوا بالجحفة فنحر لهم يومئذ عتبة بن ربيعة عشرا، ثم أصبحوا بالابواء فنحر لهم نبيه ومنبه ابنا الحجاج عشرا، ونحر لهم حضرت العباس بن عبد المطلب عليه السلام عشرا، ونحر لهم الحارث بن عامر بن نوفل تسعا ونحر لهم على ماء بدر أبو البختري عشرا،
অর্থ: এই অভিযানে কুরাইশদের সাথে ছিলো দু’শ ঘোরা
এবং কয়েকজন গায়িকা। যারা দফ বাজিয়ে গান গাইত এবং মুসলমান উনাদের বিরুদ্ধে কুৎসা
মূলক কবিতা আবৃতি করতো। নাউযূবিল্লাহ! এই অভিযানে যে সব কুরাইশ কাফির এক এক দিন
করে সকল সৈন্যের খাদ্য সরবরাহ করে তাদের নাম হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি
তিনি উল্লেখ করেছেন। হযরত উমাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, পবিত্র
মক্কা শরীফ থেকে বের হওয়ার পর সর্বপ্রথম কাট্টা কাফির আবূ জাহেল (মিনায়) দশটি উট
যবেহ করে। এরপর উমাইয়া ইবনে খলফ সে উসফানে নয়টি উট যবেহ করে। কুদায়দে পৌঁছলে
সুহায়ল ইবনে আমর তাদের জন্য দশটি উট যবেহ করে। কুদায়দ থেকে তারা পথ পরিবর্তন করে
লোহিত সাগরের দিকে অগ্রসর হয়। সেখানে তারা একদিন অবস্থান করে। এ সময় শায়বা ইবনে
রবীআ নয়টি উট যবেহ করে সকলকে আপ্যায়ন করে। এরপর তারা জুহফায় পৌঁছে। সেখানে উতবা
ইবনে রবীআ দশটি উট যবেহ করে। এরপর তারা আবওয়া পর্যন্ত পৌঁছে। সেখানে হাজ্জাজের
দুই পুত্র নাবীহ ও মুনাব্বীহ দশটি উট যবেহ করে। সাইয়্যিদুনা হযরত খতিমুল মুহাজিরীন
হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনিও যোদ্ধাদের জন্য দশটি উট যবেহ করেন তাদেরকে
আপ্যায়ন করেন। তাছাড়া হারিছ ইবনে আমির ইবনে নাওফিল নয়টি উট যবেহ করে। বদর কুপের
সন্নিকটে আবুল বুখতারী দশটি উট যবেহ করে। (এরপর থেকে তারা প্রত্যেকে নিজ নিজ খরচে
পানাহার করে।) (আস সীরাতুন নাবীয়্যি -ইবনে কাছীর, আল বিদায়া
ওয়ান নিহায়া, আল মাগাযিউ লিল ওয়াকিদী)
হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার গতিবিধি
পর্যবেক্ষণ:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মদীনা শরীফ থেকে বের হওয়ার সময় কোনো যুদ্ধের
প্রস্তুতি গ্রহণ করেননি। কেননা উনার উদ্দেশ্য মুবারক ছিলো শুধুমাত্র হযরত আবূ
সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কাফিলার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা এবং
ক্ষেত্রবিশেষে তাদেরকে পাকড়াও করা। কারণ কুরাইশদের এই কাফিলা মুসলমান উনাদের ক্ষতি
করার জন্য যুদ্ধাস্ত্র ও যুদ্ধের মাল-সামানা বহন করে নিয়ে যাচ্ছিল। নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন শুনলেন কুরাইশদের
এই কাফিলা পবিত্র মক্কা শরীফের দিকে প্রত্যাবর্তন করেছে, তখন
তিনি আর বিলম্ব না করে তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ ও তাদের পাকড়াও করার জন্য অল্প
কিছু সংখ্যক হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের নিয়ে পবিত্র
মদীনা শরীফ থেকে বের হলেন। সুবহানাল্লাহ! এ সময়টি ছিলো সম্মানিত হিজরত মুবারক উনার
১৯ মাস পর।
মাশহুর বা প্রসিদ্ধ ইতিহাস গ্রন্থসমূহে উল্লেখ
রয়েছে,
قَالَ حضرت ابْنُ إسْحَاقَ رحمة الله عليه : وَخَرَجَ رَسُولُ اللّهِ صَلّى اللّهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ فِي لَيَالٍ مَضَتْ مِنْ شَهْرِ رَمَضَانَ
فِي أَصْحَابِهِ – قَالَ حضرت ابْنُ هِشَامٍ رحمة الله عليه : خَرَجَ يَوْمَ الِاثْنَيْنِ لِثَمَانِ لَيَالٍ خَلَوْنَ مِنْ شَهْرِ رَمَضَانَ - وَاسْتَعْمَلَ عَمْرَو ابْنَ أُمّ مَكْتُومٍ عَلَى الصّلَاةِ بِالنّاسِ ثُمّ رَدّ أَبَا لُبَابَةَ مِنْ الرّوْحَاءِ ، وَاسْتَعْمَلَهُ عَلَى الْمَدِينَةِ .
অর্থ: হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি
তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার কিছু দিন অতিবাহিত
হওয়ার পর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের নিয়ে বের হলেন।
হযরত ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সে দিন ছিলো
পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার ৮ তারিখ, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম
(সোমবার)। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি হযরত আমর ইবনে উম্মে মাকতূম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে হযরত ছাহাবায়ে
কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের নামাযের ইমামতি করার দায়িত্বে রেখে যান।
সুবহানাল্লাহ! (কেউ কেউ বলেন, হযরত উম্মে মাকতূম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নাম ছিলো, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।) এরপর নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রাওহা নামক
স্থান থেকে হযরত আবূ লূবাবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে পবিত্র মদীনা শরীফ
উনার অস্থায়ী প্রতিনিধি বানিয়ে ফেরত পাঠান। সুবহানাল্লাহ! (আস সীরাতুন নববিয়্যাতু
লি ইবনে হিশাম, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)
উল্লেখ্য যে, যখন
মক্কা শরীফের কুরাইশ কাফির-মুশরিকরা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ক্ষতি করার জন্য
হর-হামেশা তৎপর; কি করে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়া
যায়, উনার সম্মানিত শান-মান খাটো করা যায় এবং উনাকে কি করা
শহীদ করা যায়। (নাউযূবিল্লাহ! নাউযূবিল্লাহ! নাউযূবিল্লাহ!) অন্যদিকে মদীনা শরীফের
ইহুদীদের চক্রান্ত এবং মুনাফিক সর্দার উবাই বিন সুলূলের গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত,
এমতাবস্থায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি খুবই হুযনী শা’ন মুবারক প্রকাশ করেছিলেন। এ সম্পর্কে উম্মুল
মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন,
এ সময় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি তিনি
প্রায়ই বিনিদ্র রজনী মুবারক কাটাতেন।
পবিত্র হাদীছ শরীফ
উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حضرت عَائِشَةَ
عليها السلام قَالَتْ أَرِقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ لَيْلَةٍ فَقَالَ لَيْتَ رَجُلاً صَالِحًا مِنْ أَصْحَابِى يَحْرُسُنِى اللَّيْلَةَ. قَالَتْ وَسَمِعْنَا صَوْتَ السِّلاَحِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ هَذَا ؟ قَالَ حضرت سَعْدُ بْنُ أَبِى وَقَّاصٍ رضى الله تعالى عنه يَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه و سلم جِئْتُ أَحْرُسُكَ.
قَالَتْ حضرت عَائِشَةُ عليه السلام فَنَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى سَمِعْتُ غَطِيطَهُ.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা সাইয়্যিদাতুনা
হযরত ছিদ্দীকা¡ আলাইহাস
সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক রাত্রি মুবারকে নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার সম্মানিত ঘুম মুবারক আসছিলেন না। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক
করলেন, আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম
উনাদের মধ্য থেকে যদি কোন একজন নেককার সম্মানিত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
তিনি আজ রাত্রি মুবারকে আমার পাহাড়ায় থাকতেন! (তবে আমি অবশ্যই ঘুমাতাম।
সুবহানাল্লাহ!)। উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস
সালাম তিনি বলেন, এমন সময় আমরা অস্ত্রের ঝনঝনানি শব্দ শুনতে
পেলাম। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জিজ্ঞাসা করলেন এখানে কে? জবাব এলো, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম! আমি হযরত সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। আমি এসেছি
আপনাকে পাহাড়া দেয়ার জন্য। সুবহানাল্লাহ! উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা সাইয়্যিদাতুনা
হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, এরপর নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন। এমনকি উনার সম্মানিত নাক মুবারক ডাকার শব্দ মুবারক
শুনতে পেলাম”। সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ,
সুনানে তিরমিযী, সুনানে নাসায়ী, মিশকাত শরীফ)
অর্থাৎ এরপর থেকে এরূপ পাহাড়াদারির ব্যবস্থা
নিয়মিত চলতে থাকে। যতক্ষন না নি¤œক্ত
পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হয়-
وَاللَّـهُ
يَعْصِمُكَ مِنَ النَّاسِ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে মানুষের
হামলা থেকে রক্ষা করবেন”। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা মায়িদা: পবিত্র আয়াত শরীফ-৬৭)
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হওয়ার পর নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত হুজরা শরীফ থেকে মাথা মুবারক বের করে পাহাড়াদানে রত
হযরত ছাহাবয়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ
মুবারক করলেন,
يَا أَيُّهَا النَّاسُ انْصَرِفُوا
فَقَدْ عَصَمَنِي اللَّهُ
অর্থ: হে পাহাড়াদারগণ! আপনারা পাহারা থেকে চলে
যান। কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনিই আমার হিফাযতের দায়িত্ব নিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
(তিরমিযী শরীফ- পবিত্র হাদীছ শরীফ নং-৩০৪৬)
সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের নিয়ে পবিত্র
মদীনা শরীফ থেকে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার পথ ধরে চলতে লাগলেন এবং পবিত্র মদীনা শরীফ
উনার বাইরের পার্বত্য পথ ধরে পর্যায়ক্রমে আকীক, যুল-হুলায়ফা,
উলাতুল জায়শ, তুরবান, মালাল,
গীমাসুল হাম্মাম, পরে সাখীরাতুল ইয়ামাম ও
সাইয়ালা হয়ে ফজজুর রাওহাতে পৌঁছেন। এরপর তিনি শানুকায় পৌঁছে সমতল রাস্তা ধরে
চলতে লাগলেন। সেখান থেকে তিনি আরকুয-যাবিয়া নামক স্থানে পৌঁছলে এক বেদুঈনের সাথে উনাদের
দেখা হয়। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা তাকে কুরাইশদের
সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। কিন্তু উনারা তার থেকে কোন খবর পেলেন না। তখন ঐ বেদুঈনকে
বলা হলো তুমি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সালাম করো। তখন সে জিজ্ঞেস করলো আপনাদের মধ্যে কি আখিরী
নবী, নূরে মুজাসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আছেন? তাকে বলা হলো,
হ্যাঁ। এরপর সে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সালাম করে বললো, আপনি যদি মহান আখিরী নবী, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হয়ে থাকেন, তাহলে দয়া করে বলুনতো আমার এই উষ্ট্রীর গর্ভে কি আছে? তখন হযরত সালামা ইবনে সুলামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি তাকে বললেন,
তুমি এ কথা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞেস করো না। আমার কাছে আসো
আমি তোমাকে তা বলে দিচ্ছি। তুমি ঐ উষ্ট্রীর সাথে মিলিত হয়েছিলে তাই তার পেটে তোমার
ঔরসের একটা উটের বাচ্চা আছে। নাউযূবিল্লাহ! (এখান থেকে বুঝা যায় হযরত ছাহাবায়ে
কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারাও গায়িব বা অদৃশ্যের সংবাদ দিতেন)।
সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রাওহা-এর সাজসাজ নামক কূপের নিকট
গিয়ে সফর মুবারক বিরতি করলেন। সেখান থেকে আবার সামনে রওয়ানা হলেন। একটা মোড়ে
পৌঁছে তিনি পবিত্র মক্কা শরীফ উনার পথ বামে ছেড়ে নাযিয়া স্থানকে ডান দিকে রেখে,
বদর অভিমুখে চলতে লাগলেন। বদরের নিকটবর্তী একটি উপত্যকা আড়াআড়ি ভাবে
পাড়ি দিলেন। এ উপত্যকাটি নাযিয়া ও সাফরা গিরি পথের মাঝখানে অবস্থিত। এরপর
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাফরার নিকটবর্তী পৌঁছলেন। এখানে পৌঁছে তিনি হযরত
বাসবাস ইবনে আমর জুহানী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং হযরত আদি ইবনে আবূ যাগফা
জুহানী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাদেরকে হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু উনার কাফিলা এবং কুরাইশদের সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিতে বদর এলাকায় পাঠান।
উনাদেরকে পাঠিয়ে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সে স্থান থেকে রওয়ানা হলেন। যখন দুই পর্বতের
মধ্যবর্তী জনপদ সাফরার কাছে উপস্থিত হলেন, তখন তিনি
পর্বতদ্বয়ের নাম জিজ্ঞেস করলেন। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম
উনারা বললেন, একটির নাম মুসাল্লাহ, অপরটির
নাম মুখরী। এরপর তিনি সেখানকার অধিবাসীদের সম্পর্কে জানতে চাইলেন। তখন সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনাকে বলা হলো তারা হলো বনূ গাফফারের দু’টি শাখা-বনূ নার এবং বনূ হুরাক।
এই নাম দুটি শুনে তিনি অসন্তুষ্ট হলেন এবং এই দুই পর্বতের মাঝখান দিয়ে গেলেন না।
বস্তুত সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এ পর্বতদ্বয়ের এবং এর অধিবাসীদের নামকে অপছন্দ করেছেন।
এরপর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উভয় পর্বত এবং সাফরা জনপদটিকে বামে রেখে, ডানদিকের যাফরান নামক উপত্যকা আড়াআড়ি পাড়ি দিয়ে অপর পারে গিয়ে যাত্রা
বিরতি করলেন। সুবহানাল্লাহ! এ সময় তিনি জানতে পারলেন যে কুরাইশরা তাদের
যুদ্ধাস্ত্র ও যুদ্ধের মাল-সামানার কাফিলা
রক্ষা করতে সদলবলে পবিত্র মক্কা শরীফ থেকে রওয়ানা করেছে। সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি এ খবর শুনে হযরত মুহাজির ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম
এবং হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সাথে পরামর্শ
করার জন্য একত্র করলেন এবং কুরাইশ বাহিনীর অগ্রসর হওয়ার সংবাদ দিলেন। (সীরাতুন নবী
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- লি ইবনে হিশাম, আল বিদায়া
ওয়ান নিহায়া)
সম্মানিত বদর জিহাদ
উনার বিবরণ: মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব
নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আবূ সুফিয়ান
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার অস্ত্র-সস্ত্র ও যুদ্ধের মাল-সামানা বহনকারী
কাফিলার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ এবং তাদেরকে পাকড়াও করার জন্য ২য় হিজরী ৮ই রমাদ্বান
শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (বা সোমবার) পবিত্র মদীনা শরীফ থেকে বের হন। পথিমধ্যে
যখন জানতে পারেন কুরাইশরা দলবলে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে বদর প্রান্তরের দিকে এগিয়ে
আসছে তখন তিনি উনার সাথে ৩১৩ জন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম
উনাদের কাছে সম্মানিত জিহাদ উনার প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ!
এ প্রসঙ্গে পবিত্র
হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
عن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنه قال كان المهاجرون
يوم بدر سبعة وسبعين رجلا وكان الأنصار مائتين وستة وثلاثين رجلا
অর্থ: হযরত ইবনে
আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সম্মানিত
বদর জিহাদে হযরত মুহাজির ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেও সৈন্য
সংখ্যা ছিলো ৭৭ জন। আর হযরত আনসার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম
উনাদের সংখ্যা ছিলো ২৩৬ জন। সুবহানাল্লাহ! (তারিখুল উমাম ওয়াল মুলূক্ব, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ফাদ্বায়িলুছ ছাহাবাহ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে,
عن حضرت الْبَرَاءَ
رَضِيَ اللَّهُ تعالى عَنْهُ ، يَقُولُ حَدَّثَنِي
أَصْحَابُ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم مِمَّنْ شَهِدَ بَدْرًا أَنَّهُمْ كَانُوا عِدَّةَ أَصْحَابِ حضرت طَالُوتَ عليه السلام الَّذِينَ جَازُوا مَعَهُ النَّهَرَ بِضْعَةَ عَشَرَ وَثَلاَث مِائَةٍ قَالَ حضرت الْبَرَاءُ رضى الله تعالى عنه لاَ وَاللَّهِ مَا جَاوَزَ مَعَهُ النَّهَرَ إِلاَّ مُؤْمِنٌ.
অর্থ: হযরত ইবনে
বারা’ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাম উনার যে সমস্ত
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সম্মানিত বদর জিহাদে
উপস্থিত ছিলেন উনারা আমার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, উনাদের
সংখ্যা হযরত ত্বালূত আলাইহিস সালাম উনার যে সব
উম্মত নদী পার হয়েছিলেন তাদের সমান ছিলেন। উনাদের সংখ্যা ছিল তিনশ’ দশেরও
কিছু বেশি। হযরত বারা’ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! ঈমানদার ব্যতীত আর কেউই উনার সাথে নদী পার
হতে পারেনি। সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ: পবিত্র হাদীছ নং- ৩৯৫৭, দালায়িলুন নবুওওয়াহ, শরহুস সুন্নাহ, মা’রিফাতুছ ছাহাবা, আস সীরাতু লি ইবনে হাব্বান,
ক্বাছাছুল আম্বিয়া, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া,
তারিখুল উমাম ওয়াল মুলূক)
সম্মানিত বদর
জিহাদে মুসলমান উনাদের নিকট ৩ টি অশ্ব বা ঘোড়া মুবারক ছিলো। প্রথমটিতে নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরোহণ মুবারক
করেছিলেন। দ্বিতীয় ঘোড়ায় আরোহণ করেন হযরত মুসআব ইবনে উমাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু তিনি এবং তৃতীয় ঘোড়ায় আরোহণ করেন হযরত যুবাইর ইবনে আওওয়াম রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু তিনি। সুবহানাল্লাহ! এ ছাড়া মুসলমান উনাদের ৭০ টি উট, ৬
টি বর্ম মুবারক এবং ৮ টি তরবারী মুবারক ছিলো। অধিকাংশ অস্ত্র ছিলো লাঠি মুবারক।
সুবহানাল্লাহ! এক একটি উটের পিঠে কয়েকজন পালা করে আরোহণ মুবারক করে উনারা সম্মানিত
জিহাদে গমন করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে
প্রসিদ্ধ ইতিহাস গ্রন্থ সমূহে উল্লেখ রয়েছে,
قَالَ حضرت ابْنُ إسْحَاقَ رحمة الله عليه وَكَانَتْ
إبِلُ أَصْحَابِ رَسُولِ اللّهِ صَلّى اللّهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ يَوْمَئِذٍ سَبْعِينَ بَعِيرًا، فَكَانَ رَسُولُ اللّهِ صَلّى اللّهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ وَ حضرت عَلِيّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ عليه السلام، وَ حضرت مَرْثَدُ بْنُ أَبِي مَرْثَدٍ الْغَنَوِيّ رضى الله تعالى عنه يَعْتَقِبُونَ بَعِيرًا ، وَكَانَ حضرت حَمْزَةُ بْنُ عَبْدِ الْمُطّلِبِ عليه السلام، وَ حضرت زَيْدُ بْنُ حَارِثَةَ رضى الله تعالى عنه ، وَ حضرت أَبُو كَبْشَةَ رضى الله تعالى عنه ، و حضرت َأَنَسَةَ رضى الله تعالى عنه مُولِيًا رَسُولَ اللّهِ صَلّى اللّهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ - يَعْتَقِبُونَ بَعِيرًا ، وَكَانَ حضرت أَبُو بَكْرٍ عليه السلام وَ حضرت عُمَرَ عليه السلام وَ حضرت عَبْدُ الرّحْمَنِ
بْنُ عَوْفٍ رضى الله تعالى عنه يَعْتَقِبُونَ بَعِيرًا .
অর্থ: হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি
তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বাহিনীতে সেদিন ৭০ টি উট ছিলো।
উনারা পালাক্রমে এগুলোতে আরোহণ করতে লাগলেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, সাইয়্যিদুনা
হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম এবং হযরত মারছাদ ইবনে আবি মারছাদ আল গানাওয়ী
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনারা একটি উটের উপর পালাক্রমে চড়তে লাগলেন।
সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদুশ শুহাদা হযরত হামযা আলাইহিস সালাম, হযরত যায়িদ ইবনে হারিছা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত
আবূ কাবশা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত আনাসা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
উনারা একটি উট মুবারকে চড়তে লাগলেন। আর একটিতে চড়তে লাগলেন সাইয়্যিদুনা হযরত
ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূকে
আ’যম আলাইহিস সালাম, ও হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আওফ
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনারা। সুবহানাল্লাহ! (আস সীরাতুন নববী- ইবনে হিশাম,
আস সীরাতুল হালাবিয়্যাহ, আর রহীকুল মাখতূম,
আব বিদায়া ওয়ান নিহায়া)
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার পদব্রজে চলার পালা আসলে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ
আলাইহিস সালাম এবং হযরত মারছাদ ইবনে আবি মারছাদ আল গানাওয়ী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু উনারা উভয়ে নিবেদন করতেন ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
আপনি বাহন মুবারকে অবস্থান মুবারক করুন। আমরা আপনার সৌভাগ্য-সংস্পর্শে হেটে চলি।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি উনাদেরকে বলতেন আপনারা আমার থেকে বেশি শক্তিশালী নও।
সুবহানাল্লাহ!
0 Comments:
Post a Comment