আফদ্বালুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, বিনতু রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত শান-মান ও ফাযায়িল-ফযীলত মুবারক
কত বেমেছাল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং পবিত্র কালামুল্লাহ
শরীফ উনার মধ্যে মহাসম্মানিত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বেমেছাল শান-মান
ও ফাযায়িল-ফযীলত মুবারক আলোচনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اِنَّـمَا يُرِيْدُ الله لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَاَهْلَ
الْبَيْتِ وَيُـطَـهِّـرَكُمْ تَطْهِيْرًا.
অর্থ: “হে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত
আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি চান আপনাদের থেকে সমস্ত
প্রকার অপবিত্রতা দূর করে আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করতে। অর্থাৎ তিনি আপনাদেরকে
পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র
সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)
এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে স্বয়ং
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক
করেন,
هُمْ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ الله مِنَ السُّوْءِ وَاخْتَصَّهُمْ
بِرَحْمَتِهٖ.
অর্থ: “উনারা হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে সমস্ত প্রকার
অপবিত্রতা ও পাপ থেকে পূত-পবিত্র রেখেছেন এবং উনার সম্মানিত রহমত মুবারক দ্বারা খাছ
করে নিয়েছেন, উনার সম্মানিত খাছ রহমত
মুবারক দ্বারা আবৃত করে নিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
فَاَنَا وَاَهْلُ بَيْتِىْ مُطَهَّرُوْنَ مِنَ الذُّنُوْبِ.
অর্থ: “আমি এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম আমরা সকলেই যুনূব তথা সমস্ত প্রকার ছগীরা-কবীরা
এবং যাবতীয় অপছন্দনীয় কাজ থেকে পূত-পবিত্র।” সুবহানাল্লাহ! (দালায়িলুন নুবুওওয়াহ লিল
বায়হাক্বী, শিফা, সীরাতে হালবিয়্যাহ, আল মা’রিফাতু ওয়াত তারীখ,
খছাইছুল কুবরা, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ,
তাফসীরে দুররে মানছূর লিস সুয়ূত্বী, তাফসীরে ইবনে
আবী হাতিম ইত্যাদি)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ
মুবারক হয়েছে,
اَنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُوْلُ
نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ
الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ
الْعِلْمِ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন, আমরা মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে (আমাদেরকে)
সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক
উনার স্থান, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের,
উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত
রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত
কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।”
সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর, ইবনে আবী হাতিম)
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ ও ইমাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম, হাবীবুল্লাহ
সাইয়্যিদুনা হযরত মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
“আলোচ্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে- اَهْلُ بَيْتٍ نَـحْنُ (আমরা মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম) বলেÑ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে উনার নিজের
অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আর طَهَّرَهُمُ الله - মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত
শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে পবিত্র করেছেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থ হলো- মহান আল্লাহ
পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে ছমাদ
তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস
সালাম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুহতাজ ও উনাদের সম্মানার্থে উনারা সম্মানিত
এবং উনাদের প্রতিই উনারা দায়েমীভাবে রুজু। সুবহানাল্লাহ! ফলে উনারা সমস্ত কিছু থেকেই
বেনিয়াজ। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই সম্মানিত নুবুওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক,
বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের ও উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক,
সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি
মুবারক ইত্যাদি বরকতময় নিয়ামত মুবারক উনাদের প্রতি রুজু হওয়ার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কোন সুযোগ নেই। অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সমস্ত কিছু থেকে পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কারণেই সম্মানিত
নুবুওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা, সম্মানিত
রহমত মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারকসহ সমস্ত কিছুই ফযীলতপ্রাপ্ত হয়েছেন, সম্মানিত হয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اَلله الصَّمَدُ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত
ও পবিত্র সূরা ইখলাছ শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২)
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ ও ইমাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম, হাবীবুল্লাহ
সাইয়্যিদুনা হযরত মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
“যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি
যেমন সমস্ত মাখলূকাত থেকে, সমস্ত কিছু থেকে ছমাদ
তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! ঠিক তেমনিভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একমাত্র যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত সমস্ত মাখলূকাত থেকে, সমস্ত কিছু থেকে ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ!
আর ঠিক একইভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা
যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি
এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা
ব্যতীত সমস্ত কায়িনাত থেকে, সমস্ত কিছু থেকে ছমাদ তথা বেনিয়ায
(অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! উনারা সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস
সালাম উনাদের ও উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত
মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম উনার খনি মুবারক ইত্যাদি সমস্ত কিছু থেকে পবিত্র,
ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযুর্গী-সম্মান
মুবারক এক কথায় উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি নন। এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত,
বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছে, সমস্ত শান-মান,
ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের
অধিকারী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু
বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কত বেমেছাল, তা এখান থেকেই স্পষ্ট
হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে যিনি মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিশেষ ব্যক্তিত্ব মুবারক আফদ্বালুন
নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, বিনতু রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক, শান-মান,
ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল,
সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা
ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। যা কস্মিনকালেও ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ! তবে এক
কথায় তিনি শুধু যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি
নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত,
বুযূর্গী-সম্মান রয়েছে, সমস্ত কিছুর অধিকারী হচ্ছেন
তিনি। সুবহানাল্লাহ! কাজেই উনার সাথে সৃষ্টি জগতের কারোই তুলনা করা যাবে না। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে
ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ
رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا
يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা
আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক
করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস
সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো ক্বিয়াস বা তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী, জামি‘উল আহাদীছ, কানযুল উম্মাল, জাম‘উল জাওয়ামি’, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা লিমুহিব্বে ত্ববারী,
সুবুলুল হুদা ওার রশাদ ইত্যাদি)
স্মরণীয় যে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের এবং হযরত
আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের শান মুবারক-এ বলা হয় ‘মাহ্ফূয’। হযরত নবী-রসূল
আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ বলা হয় ‘মা’ছূম’। আর স্বয়ং সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক হচ্ছেন উনার
এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত
শান মুবারক-এ ‘মুত্বহ্হার ও মুত্বহ্হির’ বলা। সুবহানাল্লাহ!
مَحْفُوْظٌ(মাহ্ফূয) শব্দ মুবারকখানা আরবী ব্যাকরণ অনুযায়ী اسم
مفعول (ইসমে মাফ‘ঊল) উনার ছীগাহ। যা حِفْظٌ (হিফ্যুন) ক্রিয়ামূল হতে এসেছেন। অর্থ: সংরক্ষিত। যেহেতু হযরত ছাহাবায়ে
কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার অর্থাৎ উনাদের কর্তৃক সংরক্ষিত, তাই উনাদের শান মুবারক-এ
‘মাহ্ফূয’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ!
অনুরূপভাবে مَعْصُوْمٌ (মা’ছূম)
শব্দ মুবারকখানা আরবী ব্যাকরণ অনুযায়ী اسم مفعول (ইসমে
মাফ‘ঊল) উনার ছীগাহ। যাعَصْمٌ (‘আছমুন)
ক্রিয়ামূল থেকে এসেছেন।عَصْمٌ (‘আছমুন)
অর্থ- রক্ষা করা, বিরত রাখা।
আর مَعْصُوْمٌ (মা’ছূম) অর্থ- নিষ্পাপ।
যেহেতু সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস
সালাম উনারা ছগীরাহ-কবীরাহ (ছোট-বড়), কুফরী-শিরকী এবং যাবতীয়
অপছন্দীয় কাজ থেকে পবিত্র। তাই উনাদেরকে ‘মা’ছূম’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে আক্বাইদের কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
اَلْاَنْبِيَاءُ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ كُلُّهُمْ مَعْصُوْمُوْنَ
অর্থ: “সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস
সালাম উনারা মা’ছূম তথা নিষ্পাপ।” সুবহানাল্লাহ!
আক্বাইদের কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,
اَلْاَنْبِيَاءُ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ كُلُّهُمْ مُنَزَّهُوْنَ
عَنِ الصَّغَائِرِ وَالْكَبَائِرِ وَالْكُفْرِ وَالْقَبَائِحِ.
অর্থ: “সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস
সালাম উনারা ছগীরাহ-কবীরাহ (ছোট-বড়), কুফরী এবং যাবতীয় অপছন্দীয়
কাজ থেকে পবিত্র।” সুবহানাল্লাহ!
এটা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের
সম্মানিত খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর উনারা এই সম্মানিত খুছূছিয়াত
বা বৈশিষ্ট্য মুবারক লাভ করেছেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে। সুবহানাল্লাহ! কেননা হযরত
নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের কাউকে সম্মানিত নুবুওওয়াত-রিসালাত মুবারক দেয়া হয়নি
যতক্ষণ পর্যন্ত উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান না এনেছেন, উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম
মুবারক করার, সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার
এবং সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করার প্রতিশ্রুতি মুবারক না দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَاِذْ اَخَذَ اللهُ مِيْثَاقَ النَّبِـيّٖنَ لَمَاۤ اٰتَيْتُكُمْ
مِّنْ كِتٰبٍ وَّحِكْمَةٍ ثُـمَّ جَآءَكُمْ رَسُوْلٌ مُّصَدِّقٌ لِّـمَا مَعَكُمْ
لَتُؤْمِنُنَّ بِهٖ وَلَتَنْصُرُنَّهٗ قَالَ ءَاَقْرَرْتُـمْ وَاَخَذْتُـمْ عَلـٰى
ذٰلِكُمْ اِصْرِىْ قَالُوْاۤ اَقْرَرْنَا قَالَ فَاشْهَدُوْا وَاَنَا مَعَكُمْ
مِّنَ الشّٰهِدِيْنَ. فَمَنْ تَوَلّٰى بَعْدَ ذٰلِكَ فَاُولٰٓـئِكَ هُمُ
الْفٰسِقُوْنَ.
অর্থ: “আর (আমার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
আপনি স্মরণ করুন ঐ সময়ের কথা) যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস
সালাম উনাদের থেকে অঙ্গীকার মুবারক গ্রহণ করলেন যে, আপনাদেরকে
সম্মানিত কিতাব মুবারক ও হিকমত মুবারক দেয়া হবে। অতঃপর আপনাদের নিকট একজন মহাসম্মানিত
রসূল তথা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করবেন এবং তিনি আপনাদেরকে ও আপনাদের কাছে যা কিছু
রয়েছে সমস্ত কিছুর তাছদীক্ব বা সত্যায়ন করবেন। আপনারা অবশ্যই অবশ্যই উনার প্রতি সম্মানিত
ঈমান মুবারক আনবেন এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবেন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, আপনারা কি তা স্বীকার করে নিলেন
এবং এ মর্মে আমার সম্মানিত ওয়াদা মুবারক গ্রহণ করলেন? উনারা বললেন,
আমরা স্বীকার করে নিলাম। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, তাহলে আপনারা সকলে সাক্ষী থাকুন এবং আমিও আপনাদের সাথে সাক্ষী রইলাম। সুবহানাল্লাহ!
অতঃপর যে এই সম্মানিত ওয়াদা মুবারক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে অর্থাৎ ওয়াদা মুবারক উনার
খিলাফ করবে, তারাই হচ্ছে ফাসিক্ব তথা চরম নাফরমান, কাট্টা কাফির।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আল ইমরান শরীফ : সম্মানিত
ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৮১-৮২)
আর مُطَهَّرٌ (মুত্বহ্হার) শব্দ মুবারকখানা আরবী ক্বাওয়াইদ অনুযায়ী اسم
مفعول (ইসমে মাফ‘ঊল) উনার ছীগাহ। অর্থ- পূত-পবিত্র।
আর مُطَهِّرٌ (মুত্বহ্হির) শব্দ
মুবারকখানা আরবী ক্বাওয়াইদ অনুযায়ী اسم فاعل (ইসমে ফায়িল) উনার ছীগাহ। অর্থ- পূত-পবিত্রতাদানকারী। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্মানিত শব্দ মুবারকদ্বয় উনাদের উৎপত্তি হচ্ছেন طُهْرٌ (তুহ্রুন) মূল ধাতু থেকে। অর্থ- পবিত্রতা। যেহেতু সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত
আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সৃষ্টিগত বা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওজূদ মুবারকগত
দিক থেকেই পূত-পবিত্র, পূত-পবিত্রতাদানকারী এবং উনাদের সম্মানার্থেই
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত কায়িনাতবাসী সকলেই
পবিত্রতা মুবারক হাছিল করেছেন, করছেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত পবিত্রতা
মুবারক হাছিল করবেন। সুবহানাল্লাহ! তাই স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
নিজেই উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের
সম্মানিত শান মুবারক-এ ‘মুত্বহ্হার তথা পূত-পবিত্র’ এবং ‘মুত্বহ্হির তথা পূত-পবিত্রতাদানকারী’
বলার জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন,
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার মহাসম্মানিত নূর মুবারক উনার একখানা অংশ মুবারক থেকে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস
সালাম উনারা সৃষ্টি। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম
উনারা একই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক থেকে, মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র মূল নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি। সুবহানাল্লাহ! এ সম্পর্কে পবিত্র হাদীছে কুদসী
শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
فَخَلَقْتُكَ وَخَلَقْتُ اَهْلَ بَيْتِكَ مِنَ النُّوْرِ الْاَوَّلِ
অর্থ: “আমি আপনাকে এবং আপনার মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
প্রথম ভাগ নূর মুবারক তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র একই নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি মুবারক
করেছি।” সুবহানাল্লাহ!
অপর বর্ণনায় রয়েছে,
فَخَلَقْتُكَ وَاَهْلَ بَيْتِكَ مِنَ الْقِسْمِ الْاَوَّلِ
অর্থ: “আমি আপনাকে এবং আপনার মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
প্রথম ভাগ নূর মুবারক তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র একই নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি মুবারক
করেছি।” সুবহানাল্লাহ! (নুয্হাতুল মাজালিস, আল বারাহীন)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক
হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَلْـمِسْوَرِ بْنِ مَـخْرَمَةَ رَضِىَ اللهُ
تَعَالـٰى عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ
حَضْرَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِضْعَةٌ مِّنِّىْ فَمَنْ اَغْضَبَهَا
اَغْضَبَنِـىْ
অর্থ: “হযরত মিসওয়ার ইবনে মাখরমাহ রদ্বিয়াল্লাহু
তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি
‘আলাল আলামীন, উম্মু আবীহা আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত
যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন, আমার সম্মানিত নূর মুবারক উনার
একখানা সম্মানিত টুকরো মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তাই যে ব্যক্তি উনাকে অসন্তুষ্ট করলো,
সে মূলত আমাকেই অসন্তুষ্ট করলো।” নাঊযুবিল্লাহ! (বুখারী শরীফ,
মুসলিম শরীফ, মুছান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ শরীফ,
শরহুস সুন্নাহ শরীফ ইত্যাদী)
উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফখানা বিশুদ্ধ হওয়ার
ব্যাপারে কারো কোনো দ্বিমত নেই। সমস্ত হযরত ইমাম মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি
আলাইহিম উনারা একবাক্যে এই পবিত্র হাদীছ শরীফখানা উনাকে বিশুদ্ধ হিসেবে মেনে নিয়েছেন।
সুবহানাল্লাহ! এই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্পষ্টভাবে ইরশাদ মুবারক করেছেন যে,
حَضْرَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِضْعَةٌ مِّنِّىْ
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, উম্মু আবীহা আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস
সালাম তিনি হচ্ছেন, আমার সম্মানিত জিসম মুবারক উনার সম্মানিত
নূর মুবারক উনার একখানা সম্মানিত টুকরো মুবারক।” সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু
বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা একই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক থেকে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মূল নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি। সুবহানাল্লাহ!
তাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত
পবিত্রতা মুবারক উনার যেই হুকুম মুবারক, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক উনাদেরও ঠিক
একই হুকুম মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
এ প্রসঙ্গে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই ইরশাদ মুবারক করেন,
فَاَنَا وَاَهْلُ بَيْتِىْ مُطَهَّرُوْنَ مِنَ الذُّنُوْبِ.
অর্থ: “আমি এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম আমরা সকলে যুনূব তথা সমস্ত প্রকার ছগীরা-কবীরা
এবং যাবতীয় অপছন্দনীয় কাজ থেকে পূত-পবিত্র।” সুবহানাল্লাহ!
এখানে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার নিজের এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক উনার বিষয়টি
একই হুকুমের আওতাভুক্ত করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
জলীলুল ক্বদর নবী ও রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ
আলাইহিস সালাম তিনি যখন তূর পাহাড়ে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিবেন, তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেছিলেন,
فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ اِنَّكَ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى.
অর্থ: “আপনি আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ
খুলুন। কেননা আপনি সম্মানিত (তূর পাহাড়ের) পবিত্র তুয়া উপত্যকায় তাশরীফ মুবারক গ্রহণ
করতে যাচ্ছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ত্বহা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র
আয়াত শরীফ ৫)
তূর পাহাড়ে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত
ও পবিত্র আরশে আযীম মুবারক থেকে ৭০ হাজার ভাগের এক ভাগ সম্মানিত নূর মুবারক বর্ষিত
হয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে সেই স্থানটি সম্মানিত ও পবিত্র হয়ে গেছেন। সুবহানাল্লাহ!
তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে তূর পাহাড়ে উনার নূরুল
ফখর (তথা সম্মানিত না’লাইন শরীফ) খুলে তাশরীফ মুবারক নেয়ার জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক
করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরুল ফখর বা সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন
শরীফ উনাদের স্পর্শকৃত নূরুশ শরাফাত তথা (সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক) উনাদের
পবিত্রতা, মর্যাদা সম্মানিত মূল আরশে আযীম মুবারক থেকেও লক্ষ
কোটি গুণ বেশি। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, নূরুল ফখর মুবারক
উনাদের নূরুশ শরাফত মুবারক তথা সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে সম্মানিত মূল
আরশে আযীম মুবারক আরো পবিত্রতা হাছিল করেছেন, মর্যাদাবন হয়েছেন
এবং অন্য সকলের উপর ফখর করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
সেটাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মি’রাজ
শরীফ উনার রাতে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছিলেন,
يَا حَضْرَتْ مُـحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا
تَـخْلَعْ نَعْلَيْكَ فَاِنَّ الْعَرْشَ يَتَشَرَّفُ بِقُدُوْمِكَ مُتَنَعِّـلًا
وَّيَفْتَخِرُ عَلـٰى غَيْرِهٖ مُتَـبَـرِّكًـا.
অর্থ: “আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম, দয়া করে আপনি আপনার
নূরুল ফখর মুবারক তথা সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ খুলবেন না। অর্থাৎ আপনি আপনার
নূরুল ফখর মুবারকসহ আমার সম্মানিত ও পবিত্র আরশে আযীম মুবারক উনার মধ্যে সম্মানিত তাশরীফ
মুবারক গ্রহণ করুন। সুবহানাল্লাহ! কেননা আমার সম্মানিত ও পবিত্র আরশে আযীম মুবারক আপনার
নূরুল ফখর মুবারক উনাদের পরশ মুবারক পেয়ে, নূরুল ফখর মুবারক উনাদের
নূরুশ শরাফাত মুবারক তথা সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক উনাদের স্পর্শ মুবারক
লাভ করে ধন্য হবেন, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত,
বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাছিল করবেন। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়,
আমার সম্মানিত ও পবিত্র আরশে আযীম মুবারক আপনার নূরুল ফখর মুবারক উনাদের
স্পর্শ মুবারক পাওয়ার কারণে, নূরুল ফখর মুবারক উনাদের নূরুশ শরাফাত
মুবারক লাভ করে বরকতময় হয়ে আরো পবিত্রতা হাছিল করবেন এবং অন্য সবার উপর ফখর করবেন।”
সুবহানাল্লাহ! (ফাতহুল মুত‘য়াল ফী মাদহি খইরিন নি‘য়াল শরীফ)
আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত
শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা যেহেতু একই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক থেকে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মূল নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি এবং স্বয়ং
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই উনার
এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত
পবিত্রতা মুবারক উনার বিষয়টি একই সম্মানিত হুকুম মুবারক উনার আওতাভুক্ত করে দিয়েছেন,
তাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের
নূরুল ফখর মুবারক তথা সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের স্পর্শকৃত নূরুশ শরাফাত
মুবারক বা সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক উনাদের পবিত্রতা, মর্যাদা মুবারকও সম্মানিত ও পবিত্র মূল আরশে আযীম মুবারক থেকে লক্ষ কোটি গুণ
বেশি। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, উনাদের নূরুল ফখর তথা সম্মানিত
ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের সম্মানিত ও নূরুশ শরাফাত বা পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক
পেলেও সম্মানিত ও পবিত্র মূল আরশে আযীম মুবারক আরো পবিত্রতা হাছিল করবেন, মর্যাদাবান হবেন এবং অন্য সকলের উপর ফখর করবেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনাদের
সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক উনার বিষয়টি কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত
জিন-ইনসান ও তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! উনারা
হলেন- মুত্বহ্হার তথা পূত-পবিত্র এবং মুত্বহ্হির তথা পূত-পবিত্রতাদানকারী। সুবহানাল্লাহ!
0 Comments:
Post a Comment