হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সম্মানিত
বদর জিহাদে যারা বন্দী হয়েছিল। তারা হলো-
বানূ হাশিম থেকে:
১. আকীল ইবনে আবী
ত্বালিব ইবনে আব্দুল মুত্তালিব ইবনে হাশিম।
২. নাওফাল ইবনে
হারিছ ইবনে আব্দুল মুত্তালিব ইবনে হাশিম।
বানূ মুত্তালিব
থেকে:
১. সায়িব ইবনে
উবাইদ ইবনে আব্দে ইয়াযীদ ইবনে হাশিম ইবনে মুত্তালিব।
২. নু’মান ইবনে আমর
ইবনে আলকামা ইবনে মুত্তালিব।
বানূ আব্দে শামস ও
তাদের মিত্রদের থেকে:
১. আমর ইবনে আবূ
সুফিয়ান ইবনে হারব ইবনে উমাইয়া ইবনে আব্দে শামস।
২. হারিছ ইবনে আবূ
উয্যা ইবনে আবূ আমর ইবনে উমাইয়া ইবনে আব্দে শামস।
হযরত ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, মতান্তরে
ইবনে আবূ ওয়াহরা।
৩. আবুল আস ইবনে রাবী’
ইবনে আব্দুল উযযা ইবনে আব্দে শামস।
৪. আবুল আস ইবনে
নাওফাল ইবনে আব্দে শামস।
৫. তাদের মিত্রদের
থেকে আবূ রীশাহ ইবনে আবূ আমর।
৬. আমর ইবনে আযরাক
এবং।
৭. উকবা ইবনে
আব্দুল হারিছ ইবনে হাযরামী।
বানূ নাওফাল ও তাদের মিত্রদের থেকে:
১. আদী ইবনে খিয়ার
ইবনে আদী ইবনে নাওফাল।
২. উছমান ইবনে
আব্দে শামস ইবনে উখায় গাযওয়ান ইবনে জাবির (মাযিন ইবনে মানসূর বংশীয় তাদের মিত্র।
এবং
৩. আবূ ছাওর (তাদের
মিত্র)
বানূ আব্দুদ্দার
ইবনে কুসায়ী থেকে:
১. আবূ আযীয ইবনে
উমাইর ইবনে হাশিম ইবনে আব্দে মানাফ ইবনে আব্দুদ্দার। এবং
২. আসওয়াদ ইবনে
আমির (তাদের মিত্র)। তারা বলেছিল, আমরা আসওয়াদ ইবনে আমির
ইবনে আমর ইবনে হারিছ ইবনে সাব্বাকের বংশধর।
বানূ আসাদ ও তাদের মিত্রদের থেকে:
১. সায়িব ইবনে আবূ
হুবাইশ ইবনে মুত্তালিব ইবনে আসাদ।
২. হুয়াইরিস ইবনে
আব্বাদ ইবনে ঊছমান ইবনে আসাদ।
হযরত ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সে
হলো হারিছ ইবনে আয়ীয ইবনে উছমান ইবনে আসাদ।
৩. হযরত ইবনে
ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সালিম ইবনে শাম্মাখ,
তাদের মিত্র।
বানূ মাখযূম থেকে:
১. খালিদ ইবনে
হিশাম ইবনে মুগীরা ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর ইবনে মাখযূম।
২. উমাইয়া ইবনে আবূ
হুযাইফা ইবনে মুগীরা।
৩. ওয়ালীদ ইবনে
ওয়ালীদ ইবনে মুগীরা।
৪. উছমান ইবনে
আব্দুল্লাহ ইবনে মুগীরা ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর ইবনে মাখযূম।
৫. আবুল মুনযির
ইবনে আবূ রিফায়া ইবনে আবিদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে মাখযূম।
৬. সায়ফী ইবনে আবূ
রিফায়া ইবনে আবিদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর ইবনে মাখযূম।
৭. আবূ আতা
আব্দুল্লাহ ইবনে আবূ সায়ীব ইবনে আবিদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর ইবনে মাখযূম।
৮. মুত্তালিব ইবনে
হানতাব ইবনে হারিছ ইবনে উবাইদ ইবনে আমর ইবনে মাখযূম এবং
৯. খালিদ ইবনে
আ’লাম, তাদের মিত্র। লোকেরা তার সম্পর্কে এরূপ বলে থাকে যে, সেই প্রথম পরাজিত হয়ে পৃষ্ট প্রদর্শন পূর্বক পালিয়েছিল এবং এই কাবিতা
আবৃত্তি করেছিল।
و لسنا على الأدبار تدمى كلومنا- و لكن على أقدامنا يقطر الدم-
“আমরা এমন যোদ্ধা নই যে, আমাদের
পৃষ্ঠদেশের যখম থেকে রক্ত প্রবাহিত হবে এবং আমাদের রক্ত প্রবাহিত হয় সামনের দিক
থেকে।”
বানূ সাহম থেকে:
১. আবূ বিদায়া ইবনে
যুবাইরা ইবনে সায়ীদ ইবনে সা’দ ইবনে সাহম। সম্মানিত বদর জিহাদের মধ্যে সেই ছিল
প্রথম বন্দী কাফির। যাকে মুক্তিপণ দিয়ে মুক্ত করা হয়েছিল। আর তার মুক্তিপণ তার
ছেলে মুত্তালিব ইবনে আবূ বিদায়া আদায় করেছিল।
২. ফরওয়া ইবনে কাইস
ইবনে আদী ইবনে হুযাফা ইবনে সা’দ ইবনে সাহম।
৩. হানযালা ইবনে
কাবাইসা ইবনে হুযাফা ইবনে সা’দ ইবনে সাহম ও
৪. হাজ্জাজ ইবনে
কাইস ইবনে আদী ইবনে সা’দ ইবনে সাহম।
বানূ জুমাহ ইবনে
আমর ইবনে হুসাইস ইবনে কা’ব- এর পাঁচ জন।
১. আব্দুল্লাহ ইবনে
উবাই ইবনে খালফ ইবনে ওয়াহহাব ইবনে হুযাফা ইবনে জুমাহ।
২. আবূ ইয্যা আমর
ইবনে আব্দ ইবনে উছমান ইবনে উহীব ইবনে হুযাফা ইবনে জুমাহ।
৩. ফাকিহ। উমাইয়া
ইবনে খালফ- এর আযাদকৃত গোলাম। তার আযাদ হওয়ার পর রাবাহ ইবনে মুগতারিফ তাকে নিজের
বংশভুক্ত বলে দাবি করে। আর সে নিজে দাবি করত যে, সে
শাম্মাখ ইবনে মুহারিব ইবনে ফিহর বংশের লোক। অনেকের মতে, ফাকিহ
ছিলো জারওল ইবনে হিযম ইবনে আওফ ইবনে গাযব ইবনে শাম্মাখ ইবনে মুহারিব ইবনে ফিহরের
পুত্র।
৪. ওয়াহহাব ইবনে
উমাইর ইবনে ওয়াহহাব ইবনে খালফ ইবনে ওয়াহহাব ইবনে হুযাফা ইবনে জুমাহ।
৫. রবীয়া ইবনে
দাররাজ ইবনে আনবাস ইবনে উহবান ইবনে ওয়াহহাব ইবনে হুযাফা ইবনে জুমাহ।
বানূ আমির থেকে:
১. সুহাইল ইবনে আমর ইবনে আব্দে শামস ইবনে আব্দ
উদ্দ ইবনে নছর ইবনে মালিক ইবনে হিসল ইবনে আমির। তাকে বন্দী করেছিলেন সালিম ইবনে
আউফ বংশীয় হযরত মালিক ইবনে দুখ্শুম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি।
২. আব্দ ইবনে যাময়া
ইবনে কাইস ইবনে আব্দে শামস ইবনে আব্দে উদ্দ ইবনে নছর ইবনে মালিক ইবনে হিসল ইবনে
আমির।
৩. আব্দুর রহমান
ইবনে মাশনূ ইবনে ওয়াকদান ইবনে কাইস ইবনে আব্দে শামস ইবনে আব্দে উদ্দ ইবনে নছর ইবনে
মালিক ইবনে হিসল ইবনে আমির।
বানূ হারিছ ইবনে
ফিহর থেকে:
১. তুফাইল ইবনে আবী
কুনাই’।
২. উতবাহ ইবনে আমর
ইবনে জাহদাম।
হযরত ইবনে ইসহাক্ব
রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমাদের কাছে সর্বোমোট
৪৩ জান বন্দীর নাম সংরক্ষিত রয়েছে।
হযরত ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সর্বোমোট
সংখ্যায় একটি নাম বাদ পড়েছে। হযরত ইবনে
ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি তার নাম উল্লেখ করেননি। আর ইবনে ইসহাক্ব
রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বন্দীদের থেকে যাদের নাম উল্লেখ করেছেন তারা হলো।
বানূ হাশিম থেকে:
১. বানূ হাশিম ইবনে
আব্দে মানাফের একজন হলো উতবা। সে ফিহর বংশীয় এবং তাদের মিত্র ছিলো।
বানূ মুত্তালিব
থেকে:
১, আকীল
ইবনে আমর। সে তাদের মিত্র ছিলো।
২. আকীলের ভাই
তামীম ইবনে আমর।
৩. তামীমের ছেলে।
বানূ আব্দে শামস থেকে:
১, খালিদ
ইবনে উসাইদ ইবনে আবুল ঈস।
২. আস ইবনে
উমাইয়ারের আযাদকৃত গোলাম আবুল আরীয ইয়াসার।
বানূ নাওফাল থেকে:
১. তাদের আযাদকৃত
গোলাম নাবহান।
বানূ আসাদ থেকে:
১. আব্দুল্লাহ ইবনে
হুমাইদ ইবনে যুহাইর ইবনে হারিছ।
বানূ আব্দুদ্দার থেকে:
১. তাদের ইয়ামানী মিত্র আকীল।
বানূ তাইম ইবনে
মুররার দু’জন:
১. মুসাফি’ ইবনে
ইয়ায (ইবনে সাখর ইবনে আমির ইবনে কা’ব ইবনে সা’দ ইবনে তায়ম)।
২. জাবির ইবনে
যুবাইর, তাদের মিত্র।
বানূ মাখযূম থেকে:
১. কাইস ইবনে
সায়িব।
বানূ জুমাহ থেকে:
১. আমর ইবনে উবাই
ইবনে খালফ।
২. আবূ রুহম ইবনে
আব্দুল্লাহ, তাদের মিত্র।
৩. তাদের আর একজন
মিত্রের নাম আমার সংগ্রহ থেকে হারিয়েছে।
৪. উমাইয়া ইবনে
খালফ- এর আযাকৃত দু’জন যাদের মধ্যে একজনের নাম ছিলো নিসতাস।
৫. উমাইয়া ইবনে
খালফ- এর গোলাম আবূ রাফি’।
ঊানূ সাহম থেকে:
১. নুবাইহ ইবনে
হাজ্জাজ- এর আযাদকৃত গোলাম আসলাম।
বানূ আমির থেকে:
১. হাবীব ইবনে
জাবির।
২. সায়িব ইবনে
মালিক।
বানূ হারিছ থেকে:
১. শাফি’
২. শাফী’, তাদের
ইয়ামানী মিত্রদ্বয়।
(রহজুল উনূফ, সীরাতুন
নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি)
সম্মানিত বদরী ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম
উনাদের বেমেছাল মর্যাদা- মর্তবা মুবারক:
সম্মানিত বদর জিহাদ হচ্ছে হক্ব না হক্ব
পার্থক্যকারী জিহাদ। সুবহানাল্লাহ! এই সম্মানিত জিহাদে মুসলমানদের সংখ্যা ছিলো
অনেক কম বিপরিতে কাফির মুশরিকদের সংখ্যা ছিলো অনেক বেশি। এই সম্মানিত জিহাদে
মুসলমান উনারা বিজয় লাভ করেন। আর কাফির মুশরিকরা চরম ভাবে লাঞ্চিত ও পরাজিত হয়। এই
সম্মানিত বদর জিহাদে অংশগ্রহণকারী ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম
উনাদেরকে মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বেমেছাল শান- মান, মর্যাদা-
মর্তবা মুবারক দান করেন। সুবাহানাল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফ
উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ حُمَيْدٍ رحمة الله عليه قَالَ سَمِعْتُ حَضْرَتْ أَنَسًا رَضِيَ اللَّهُ تَعَالَى عَنْهُ ، يَقُولُ أُصِيبَ حَضْرَتْ حَارِثَةُ
رَضِيَ اللَّهُ تَعَالَى عَنْهُيَوْمَ بَدْرٍ وَهْوَ غُلاَمٌ فَجَاءَتْ أُمُّهُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللهِ قَدْ عَرَفْتَ مَنْزِلَةَ حَضْرَتْ حَارِثَةَ رَضِيَ اللَّهُ تَعَالَى عَنْهُمِنِّي فَإِنْ يَكُنْ فِي الْجَنَّةِ أَصْبِرْ وَأَحْتَسِبْ وَإِنْ تَكُ الأُخْرَى تَرَى مَا أَصْنَعُ فَقَالَ وَيْحَكِ أَوَهَبِلْتِ أَوَجَنَّةٌ وَاحِدَةٌ هِيَ إِنَّهَا جِنَانٌ كَثِيرَةٌ وَإِنَّهُ فِي جَنَّةِ الْفِرْدَوْسِ-
অর্থ: “হযরত হুমাইদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু উনার কাছ থেকে শুনেছি। তিনি বলেছেন, হযরত হারিছা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি ছিলেন অল্প বয়সী একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু। সম্মানিত বদর জিহাদে তিনি শহীদ হয়ে গেলে উনার মা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে গিয়ে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! হযরত
হারিছা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি আমার কত আদরের সন্তান ছিলেন তা আপনি সবই
জানেন। তিনি জান্নাতী হন তা হলে আমি অবশ্যই ধৈর্য্যধারন করবো এবং এজন্যে আপনাদের
সন্তুষ্টি ও রেজামন্দীর আশাপোষন করবো। আর যদি ভিন্ন কিছু হয় তা হলে আপনি দেখতে
পাবেন আমি কি করি। তখন নুরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, আপনার কি হলো, আপনি কি পাগল হয়ে গেলেন? সম্মানিত জান্নাত কি একটি?
অনেক জান্নাত আছে। তিনিতো সম্মানিত জান্নাতুল ফেরদাউসে রয়েছেন।”
সুবাহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ: পবিত্র হাদীছ শরীফ নং- ৩৯৮২, উমদাতুল
ক্বরী, সীরাতুল হালাবিয়্যাহ, আল বিদায়া
ওয়ান নিহায়া)
উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এক নিগূঢ়
তত্ত্ব লুকায়িত রয়েছে। হযরত হারিছা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সম্মানিত বদর
জিহাদের দিন হাওয থেকে পানি পান করার সময় হঠাৎ একটি তীর এসে উনারা শরীরে বিদ্ধ হয়।
এই তীর বিদ্ধ হওয়ায় তিনি শাহাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। পুরস্কার স্বরূপ মহান
আল্লাহ পাক তিনি উনাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করেন। সুবাহানাল্লাহ! যা হচ্ছে সব
জান্নাতের শ্রেষ্ঠ জান্নাত মুবারক। সর্বোত্তম জান্নাত মুবারক। সেখান থেকে নহর
সমূহ প্রবাহিত হয়ে চলে গেছে অন্যান্য জান্নাতে।
সেই জান্নাত সম্পর্কে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন,
إذَا سَألُوْا اللهَ الجَنَّةَ
أنْ يَسْألُوْهُ إيَّاهَا-
অর্থ: “তোমরা যখন
মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে জান্নাত উনার আর্জি করবে বা চাইবে তখন জান্নাতুল
ফিরদাউসের জন্য দোয়া করবে।”
তাহলে বুঝা যাচ্ছে
যে সম্মানিত বদরী ছাহাবায়ে কিরাম
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মর্যাদা-মর্তবা কতো বেমেছাল। তা বলার অপেক্ষা
রাখে না। সুবাহানাল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফ
উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ سَيِّدِنَا
عَلِيٍّ عَلَيْهِ السَّلَامِ، قَالَ بَعَثَنِي رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ وَ حَضْرَتْ أَبَا مَرْثَدٍ رَضِيَ اللَّهُ تَعَالَى عَنْهُوَ حَضْرَتْ الزُّبَيْرَ رَضِيَ اللَّهُ تَعَالَى عَنْهُوَكُلُّنَا فَارِسٌ قَالَ انْطَلِقُوا حَتَّى تَأْتُوا رَوْضَةَ خَاخٍ فَإِنَّ بِهَا امْرَأَةً مِنَ الْمُشْرِكِينَ مَعَهَا كِتَابٌ مِنْ حَضْرَتْ حَاطِبِ بْنِ أَبِي بَلْتَعَةَ رَضِيَ اللَّهُ تَعَالَى عَنْهُإِلَى الْمُشْرِكِينَ فَأَدْرَكْنَاهَا تَسِيرُ عَلَى بَعِيرٍ لَهَا حَيْثُ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ : فَقُلْنَا الْكِتَابُ فَقَالَتْ مَا مَعَنَا كِتَابٌ فَأَنَخْنَاهَا فَالْتَمَسْنَا فَلَمْ نَرَ كِتَابًا فَقُلْنَا مَا كَذَبَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ لَتُخْرِجِنَّ الْكِتَابَ، أَوْ لَنُجَرِّدَنَّكِ فَلَمَّا رَأَتِ الْجِدَّ أَهْوَتْ إِلَى حُجْزَتِهَا وَهْيَ مُحْتَجِزَةٌ بِكِسَاءٍ فَأَخْرَجَتْهُ فَانْطَلَقْنَا بِهَا إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ فَقَالَ سيدنا عُمَرُ عليه السلام يَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ قَدْ خَانَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالْمُؤْمِنِينَ فَدَعْنِي فَلأَضْرِبْ عُنُقَهُ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ مَا حَمَلَكَ عَلَى مَاصَنَعْتَ قَالَ حَاطِبٌ وَاللَّهِ مَا بِي أَنْ لاَ أَكُونَ مُؤْمِنًا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ أَرَدْتُ أَنْ يَكُونَ لِي عِنْدَ الْقَوْمِ يَدٌ يَدْفَعُ اللَّهُ بِهَا عَنْ أَهْلِي وَمَالِي وَلَيْسَ أَحَدٌ مِنْ أَصْحَابِكَ إِلاَّ لَهُ هُنَاكَ مِنْ عَشِيرَتِهِ مَنْ يَدْفَعُ اللَّهُ بِهِ عَنْ أَهْلِهِ وَمَالِهِ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ صَدَقَ، وَلاَ تَقُولُوا لَهُ إِلاَّ خَيْرًا فَقَالَ سيدنا عُمَرُ عليه السلام إِنَّهُ قَدْ خَانَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالْمُؤْمِنِينَ فَدَعْنِي فَلأَضْرِبَ عُنُقَهُ فَقَالَ أَلَيْسَ مِنْ أَهْلِ بَدْرٍ فَقَالَ لَعَلَّ اللَّهَ اطَّلَعَ إِلَى أَهْلِ بَدْرٍ فَقَالَ اعْمَلُوا مَا شِئْتُمْ فَقَدْ وَجَبَتْ لَكُمُ الْجَنَّةُ، أَوْ فَقَدْ غَفَرْتُ لَكُمْ فَدَمَعَتْ عَيْنَا عُمَرَ وَقَالَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ أَعْلَمُ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু
আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আবূ মারসাদ
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু এবং আমাকে এক স্থানে প্রেরণ করেছিলেন এবং আমরা সকলেই ছিলাম আশ্বারোহী।
তিনি আমাদেরকে বলেছিলেন, আপনারা যান। যেতে যেতে আপনারা রাওযা
খাখ নামক জায়গায় পেীঁছে সেখানে একজন স্ত্রীলোক দেখতে পাবেন। তার কাছে মুশরিকদের
প্রতি লিখিত হাতিব ইবনূ আবূ বালতার একটি চিঠি আছে। (সেটা নিয়ে আসবেন।) সাইয়্যিদুনা
হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আমরা
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
নির্দেশিত জায়গায় গিয়ে তাকে ধরে ফেললাম। সে তখন তার একটি উটের উপর চড়ে পথ অতিক্রম
করছিল। আমরা তাকে বললাম পত্রখানা আমাদের নিকট দিয়ে দাও। সে বলল, আমার নিকট কোন পত্র নেই। আমরা তখন তার উটটিকে বসিয়ে তল্লাশী করলাম। কিন্তু
পত্রখানা বের করতে পারলাম না। আমরা বললাম, নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কখনও সত্যের বিপরীত
বলেননি। তোমাকে চিঠিটি বের করতেই হবে। নতুবা আমরা তোমার কাপড় খুলে চিঠি বের করবো।
যখন আমাদের শক্ত মনোভাব বুঝতে পারলো তখন স্ত্রীলোকটি তার কোমরের পরিহিত বস্ত্রের
গিঁটের কাপড়ের পুঁটুলির মধ্য থেকে চিঠিটি বের করে দিল। আমরা তা নিয়ে নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে উপস্থিত
হলাম। সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তিনিতো
হযরত হাতিব ইবনে আবু বালতায়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়লা আনহু তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার
সাথে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে ও মু’মিন উনাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা
করেছেন। আপনি আমাকে অনুমতি দিন আমি উনার গর্দান উড়িয়ে দেই। তখন নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (হযরত হাতিব ইবনে আবূ
বালতায়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে ডেকে) বললেন, আপনাকে
এ কাজ করতে কিসে বাধ্য করলো? হযরত হাতিব রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! মহান
আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
প্রতি আমি অবিশ্বাসী নই বরং আমার মূল উদ্দেশ্য হল শত্রু দলের প্রতি কিছু অনুগ্রহ
করা যাতে মহান আল্লাহ পাক তিনি এ উছীলা মুবারকে আমার মাল এবং আমার পরিবার ও
পরিজনকে রক্ষা করেন। আর আপনার মুহাজির হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহুম উনাদের প্রত্যেকেরই কোন না কোন আত্মীয় পবিত্র মক্কা শরীফে রয়েছেন। মহান
আল্লাহ পাক তিনি উনাদের মাল-সম্পদ ও পরিজনকে রক্ষা করছেন। তখন নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন,
তিনি ঠিকই বলেছেন। সুতরাং আপনারা উনার সম্পর্কে ভালো ব্যতীত আর কিছু
বলবেন না। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিা বললেন,
তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার হাবীব হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং হযরত ছাহাবয়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহুম উনাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। সুতরাং আপনি আমাকে অনুমতি দিন আমি
উনার গর্দান উড়িয়ে দেই। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, তিনি কি বদরী ছাহাবী নন?
নিশ্চয়ই মহান
আল্লাহ পাক তিনি বদরী ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি
লক্ষ্য করেছেন এবং তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, আপনারা যা ইচ্ছে
করুন। আপনাদের জন্য জান্নাত ওয়াজিব এবং অবশ্যই আমি আপনাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছি।
এতে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার দু’চক্ষু মুবারক অশ্রু সিক্ত
হয়ে উঠল। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন,
মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবচেয়ে অধিক জানেন। সুবাহানাল্লাহ! (বুখারী
শরীফ- হাদীছ নং- ৩৯৮৩, উমদাতুল ক্বরী, সীরাতুল
হালাবিয়্যাহ, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)
0 Comments:
Post a Comment