খালিক্ব মালিক রব
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
يَوْمَ الْفُرْقَانِ
يَوْمَ الْتَقَى الْجَمْعَانِ
অর্থ: “সে (বদর জিহাদ উনার) দিন ছিলো হক্ব ও
বাতিলের মাঝে পার্থক্যের দিন, যে দিন দু’দল পরস্পর
মুখোমুখি হয়েছিলেন”। (পবিত্র সূরা আনফাল শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৪১)
মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন
নাবীইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুষ্ঠানিকভাবে যমীনে অবস্থানকালে
যতগুলি সম্মানিত জিহাদ মুবারক সংঘটিত হয়েছিলো তন্মধ্যে সম্মানিত বদর জিহাদ অন্যতম।
এই জিহাদ ছিলো সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ। যাকে ঐতিহাসিক বদর জিহাদ বলা হয়। এই
জিহাদের গুরুত্ব অপরিসীম ও বেমেছাল। কারণ এই জিহাদ উনার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সম্মান ইযযত ও শান-শওকত সূচনা হয় বিপরীতে কাফির-মুশরিক, ইহুদী-নাছারাদের
বেইযযতী, লাঞ্ছনারও সূচনা এই জিহাদের মাধ্যমে শুরু হয়। মূলত, বদর জিহাদ উনার
মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল
শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার ও প্রকাশ হতে
থাকে। সুবহানাল্লাহ! সমগ্র আরবসহ সারা পৃথিবীব্যাপী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান সুউচ্চ সম্মান ইযযত তথা
তিনি যে সমস্ত হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত
রসূর আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, তিনি মহান আল্লাহ পাক
উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং উনার সুমহান প্রভাব
প্রতিপত্তি বিস্তার লাভ করতে থাকে। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার
ছায়াতলে দলে দলে জিন-ইনসান আশ্রয় গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! সুতরাং এই ঐতিহাসিক
সম্মানিত বদর জিহাদ উনার দিনকে
يَوْمَ الْفُرْقَان
বা সত্য ও মিথ্যার
মধ্যে পার্থকারী দিন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সুববহানাল্লাহ! এই দিন স্বয়ং
খালিক্ব মালিক মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাধ্যমে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও মুসলমান
উনাদেরকে ঐতিহাসিক বিজয় দান করেছিলেন এবং কাফির-মুশরিকদেরকে চরমভাবে পরাজিত, পর্যুদস্ত
করে অপমানিত ও লাঞ্ছিত করেছিলেন। অথচ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহুম (তথা মুসলমান) উনাদের সংখ্যার চাইতে কাফির-মুশরিকদের সংখ্যা ছিলো অনেক বেশি।
উল্লেখ্য যে, মক্কার
কাফির-মুশরিকরা পূর্ণ যুদ্ধের প্রস্তুতিসহ অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অহংকারভরে
যুদ্ধের ময়দানে এসেছিলো। কিন্তু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মাত্র সামান্য কিছু হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহুম উনাদের নিয়ে কাফির-মুশরিকদের সাথে জিহাদের মুখামুখি হয়ে তাদেরকে
চরমভাবে পরাজিত ও নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ! অনন্তকালব্যাপী কাফির
মুশরিক তথা বিধর্মীরা পরাজয় হবেই হবে- সে বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়েছিলো।
মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ভিত্তি মজবুত ও সুদৃঢ় করে
তুলেছিলেন এই সম্মানিত জিহাদ উনার মাধ্যমে এবং সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার নূর বা
জ্যোতি মুবারক দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়েছিলো। সুবহানাল্লাহ! এবং নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরোধীতাকারীদের
অহংকার চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিয়ে তাদের মুখে কলংকের কালিমা লেপন করে দিয়েছেন।
(মাদারেজুন নবুওয়াত, সীরতুল মুস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)
ঐতিহাসিক বদর জিহাদ
ছিলো মুসলমান উনাদের জন্য এক বিশেষ নিয়ামত এবং মুসলমান উনাদের প্রতি
কাফির-মুশরিকদের নিশ্চিহ্ন করার এক নির্দেশিকা।
পবিত্র কালামুল্লাহ
শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
وَلَقَدْ نَصَرَكُمُ
اللَّـهُ بِبَدْرٍ وَأَنتُمْ أَذِلَّةٌ
অর্থ: “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাদেরকে
সম্মানিত বদর জিহাদ উনার দিন সম্মানিত বিজয় দিয়েছেন অথচ আপনারা ছিলেন সংখ্যায় কম
সংখ্যক।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান: পবিত্র আয়াত শরীফ ১২৩)
অর্থাৎ জয়-পরাজয় যিনি খালিক্ব মালিক মহান আল্লাহ
পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে এসে থাকে। সুবহানাল্লাহ! সৈন্য সংখ্যা কম বেশির উপর
জয়-পরাজয় নির্ভর করে না- সে বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার
মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
বদর জিহাদের
স্থানের নামকরণ:
বদর একটি কূপের
নাম। গিফার গোত্রের এক ব্যক্তি এই কুয়াটি খনন করে। তার নাম ছিলো ‘বদর’। পরবর্তীতে
তার নাম অনুসারে ওই কুপের নাম রাখা হয় বদর।
কারো মতে, খননকারীর নাম ছিলো
বদর ইবনে কুরাইশ ইবনে ইয়াখলাদ বা বদর ইবনে হারিছ। অথবা ‘বদর’ স্থানটি খুবই প্রসস্ত
এবং এই কূপের পানি অত্যন্ত পরিস্কার ও নির্মল, এমনকি ইহাতে
পূর্ণ চন্দ্র পরিলক্ষিত হতো, তাই উনার নামকরণ করা হয়েছে বদর।
বদর জিহাদের
সূত্রপাত:
দ্বিতীয় হিজরী
পবিত্র রমাদ্বান শরীফ-এ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি সংবাদ পেলেন যে হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
(তিনি তখনো সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেননি) তিনি কুরাইশদের একটি বাণিজ্য
কাফিলা ব্যাবসায়িক মাল-সামানা নিয়ে সিরিয়া থেকে পবিত্র মক্কা শরীফ-এ প্রত্যাবর্তন
করছেন।
সেটাই হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুলাহি আলাইহি তিনি
বর্ণনা করেছেন, হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু তিনি কুরাইশদের বিশাল এক কাফিলা নিয়ে সিরিয়া থেকে রওয়ানা হয়েছেন। উনার সাথে
রয়েছে বিভিন্ন প্রকার সম্পদ ও বাণিজ্য-সম্ভার। তিনি আরো জানলেন যে- এই কাফিলায়
ত্রিশ অথবা চল্লিশ জন লোক রয়েছে, যাদের মধ্যে মাখরামা ইবনে
নওফেল এবং আমর ইবনে আসও রয়েছে।
বদর জিহাদের সূত্রপাত:
এই কাফিলার আমীর
ছিলেন হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি। কাফিলায় ৩০টি বাহনের
পশুসহ যুদ্ধের অস্ত্রে-শস্ত্রে পরিপূর্ণ ছিলো। এই কাফিলা বদর নামক স্থানের নিকটে
পৌঁছলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
তাদের আগমন বার্তা অবগত হলেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের
সাথে পরামর্শ করে হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কাফিলার অবস্থা
পর্যাবেক্ষণ করার জন্যে হযরত ত্বলহা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং হযরত সায়ীদ
ইবনে যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাদেরকে প্রেরণ করলেন। উনারা যথাসময়ে
পবিত্র মদীনা শরীফে প্রত্যাবর্তন করে হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
উনার কাফিলার অবস্থা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে পেশ করলেন।
অপরদিকে হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু তিনি কাফিলাসহ বদর নামক স্থানের অদূরে পৌঁছে স্থানীয় লোকদের নিকট জিজ্ঞাসা
করলো যে, তোমরা কি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
উনাদের সম্পর্কে কিছু জানো? তারা বললো অমুক স্থানে দু’জন
উষ্ট্রারোহী এসেছিলেন বলে জানি। হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি
দ্রুতগতিতে সেই স্থানে গিয়ে উটের গবর পরীক্ষা করে দেখলেন যে, উহাতে খেজুরের বীচি রয়েছে। তারপর হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! এই উট পবিত্র
মদীনা শরীফ উনার খেজুর আহার করেছে। এতে নিশ্চিত হলেন যে, এখানে
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
গোয়েন্দা বাহিনী এসেছেন। সুতরাং তারা এইপথ বাদ দিয়ে উপকূলবর্তী পথে বদরের নিকট হয়ে
পবিত্র মক্কা শরীফের পথে যাত্রা করলো। এখান থেকে হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু উনার কাফিলা আরো দ্রুত গতিতে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার দিকে পালাতে
থাকলো এবং তারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার এবং উনার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের উদ্দেশ্য
সম্বন্ধে অবহিতও হলো। এরপর তারা সাহয্যের জন্য যুমযুম ইবনে আমর গিফারীকে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার দিকে পরিশ্রমের বিনিময়
প্রেরণ করলো। তাকে বলা হলো, সে মক্কা শরীফে গিয়ে প্রচার করবে যে, নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদেরকে পর্যূদস্ত
করতে চান! তিনি আমাদেরকে পাকড়াও করার লক্ষ্যে অভিযানে বের হয়েছেন। কাজেই তোমরা
নিজেদের অস্ত্র-সস্ত্র ও যুদ্ধের সরাঞ্জামাদি ও জানের নিরাপত্তার জন্যে যথাসম্ভব
শীঘ্রই অগ্রসর হও। যুমযুম গিফারী অতি দ্রুত পবিত্র মক্কা শরীফে পৌঁছে কুরাইশদের
নিকট কাফিলার বিশদ বিবরণ পেশ করলো। পাপিষ্ঠ কাট্টা কাফির আবূ জাহেল এই সংবাদ শুনে বলে উঠলো, নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা কি আমাদের কাফিলাকে আমর
ইবনুল হাযরামীর কাফিলার মতো মনে করেছেন? ক্বসম! তা এইরূপ নয়।
(মাদারেজুন নুবুওয়াত, সীরাতুল মুস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম, সীরাতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
ইবনে ইসহাক রহমতুল্লাহি
আলাইহি তিনি বলেন। হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং হযরত উরওয়া
ইবনে যুবাইর রহমতুল্লাহি উনাদের থেকে বর্ণিত রয়েছে যে, ‘যুমযুম
পবিত্র মক্কা শরীফ-এ পৌঁছার তিন দিন পূর্বে সাইয়্যিদাতুনা আতিক্বা বিনতে আব্দুল
মুত্তালিব আলাইহাস সালাম (তিনি তখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে সম্মানিত ঈমান প্রকাশ করেননি)
তিনি একটি ভয়াবহ স্বপ্ন দেখেন। এরপর তিনি উনার ভাই খতিমুল মুহাজিরীন সাইয়্যিদুনা
হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম (তিনি তখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে সম্মানিত ঈমান প্রকাশ
করেননি) উনাকে ডেকে বললেন, হে ভাই! মহান আল্লাহ পাক উনার
ক্বসম! গত রাত্রে আমি এক ভয়াবহ স্বপ্ন দেখেছি। এতে আমার আশংকা হচ্ছে আপনার
সম্প্রদায়ের উপর হয়তো কোন অনিষ্ট ও বিপদ আসতে পারে। সুতরাং আমি যা বলবো তা আপনি
গোপন রাখবেন, কাউকে বলবেন না। খতিমুল মুহাজিরীন সাইয়্যিদুনা
হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি স্বপ্ন দেখেছেন?
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আতিক্বা আলাইহাস সালাম তিনি
বললেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম একজন লোক উটে চড়ে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার
সংলগ্ন সমতল ভূমিতে এসে থামলো। তারপর সে উচ্চ:স্বরে চিৎকার দিয়ে ঘোষণা দিলো,
হে বিশ্বাসঘাতক কুরাইশরা! তিন দিনের মধ্যে ধ্বংসের জন্য প্রস্তুত
হয়ে যাও। এরপর দেখলাম কুরাইশরা ও সাধারণ লোকজন তার পাশে সমবেত হয়েছে। লোকটি পরে
পবিত্র মসজিদে হারাম শরীফ-এ প্রবেশ করলো, লোকজন তাকে অনুসরণ
করলো। এরপর উটনী তাকে পবিত্র কা’বা ঘরে নিয়ে উঠালো। সেখানেও সে অনুরূপ ঘোষণা দিলো।
সাবধান হে বিশ্বাসঘাতকের দল (কুরাইশরা)! তিন দিনের মধ্যে তোমরা ধ্বংসের জন্য
প্রস্তুত হও। এরপর উটনী সেখান থেকে তাকে নিয়ে আবূ কুবাইস পাহাড়ের শীর্ষে আরোহণ
করালো। সেখান থেকেও সে একই ঘোষনা দিলো। এরপর সে পাহাড়ের উপর একটি বড় পাথর গড়িয়ে
দিলো। পাথরটি গড়িয়ে পাহাড়ের পাদদেশে এসেই ভেঙ্গে টুকরো টুুকরো হয়ে ছিটকে পরলো। ফলে
পবিত্র মক্কা শরীফ উনার প্রত্যেক বাড়িতে তার কোন না কোন টুকরো গিয়ে পড়ল। তা শুনে,
হযরত খতিমুল মুহাজিরীন হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি বললেন,
মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! এটা এক ভয়াবহ স্বপ্ন। তবে আপনি এ
স্বপ্নের কথা গোপন রাখবেন, কাউকে বলবেন না। এরপর খতিমুল
মুহাজিরীন সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে পড়লেন।
পরে উনার সঙ্গী ওয়ালীদ ইবনে উতবার সাথে সাক্ষাত হলো। খতিমুল মুহাজিরীন সাইয়্যিদুনা
হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি তার নিকট স্বপ্নের কথা খুলে বললেন এবং তা গোপন রাখার
জন্য বললেন। কিন্তু ওয়ালীদ তার পিতা উতবার কাছে এ বিষয়টি বলে দিলো। এভাবে স্বপ্নের কথা ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং
কুরাইশদের ঘরে ঘরে এর আলোচনা চলতে থাকে। খতিমুল মুহাজিরীন সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস
আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, একদিন সকালে আমি বাইতুল্লাহ শরীফ
তথা পবিত্র কা’বা শরীফ তাওয়াফ করতে বের হলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম কাট্টা কাফির আবূ
জাহিল কুরাইশদের কয়েকজন লোকদের সাথে বসে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আতিক্বা আলাইহাস সালাম
উনার স্বপ্ন প্রসঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছে। কাট্র্রা কাফির আবূ জাহিল আমাকে দেখেই
বললো, হে আবুল ফযল! দয়া করে তাওয়াফ শেষ করে আমাদের কাছে
আসবেন। আমি তাওয়াফ শেষ করে তাদের পাশে গিয়ে বসলাম। আবূ জাহিল বললো, হে বনূ আব্দিল মুত্তালিব! আপনাদের মধ্যে মহিলা নবীর আবির্ভাব আবার কবে
থেকে হলো? নাউযূবিল্লাহ! আমি বললাম, তা
আবার কি? আবূ জাহিল বললো, কেন, ঐ যে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আতিক্বা আলাইহাস সালাম উনার স্বপ্ন! আমি বললাম,
তিনি আবার কি স্বপ্ন দেখেছেন? আবূ জাহিল বললো,
হে বনূ আব্দিল মুত্তালিব আলাইহিমুস সালাম! আপনারা কি আপনাদের
পুরুষদের নবুওয়াতীতে সন্তুষ্ট থাকতে পারছেন না যে, এখন
আপনাদের নারীরাও নবী দাবী করছেন? সাইয়্যিদাতুনা হযরত আতিক্বা
আলাইহাস সালাম তিনি নাকি স্বপ্নের মাধ্যমে জেনে বলেছেন তিন দিনের মধ্যে তোমরা
প্রস্তুত হও। আমরা এখন আপনাদের জন্যে এই তিন দিন অপেক্ষা করবো। এর মধ্যে যদি উনার কথা সত্যে পরিনত হয়, তবে আমরা আপনাদের বিরুদ্ধে ঘোষণা জারি করবো যে, গোটা আরব জাহানে
আপনারাই সবচেয়ে বড় মিথ্যাবাদী গোষ্ঠী। নাউযূবিল্লাহ! খতিমুল মুহাজিরীন সাইয়্যিদুনা
হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার
ক্বসম! আমি তাকে তেমন গুরুতর কিছুই বলিনি।। অতপর আমরা সেখান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে
গেলাম। বিকেল বেলা বনূ আব্দিল মুত্তালিব আলাইহিমুস সালাম উনাদের নারীরা আমার কাছে
এসে বললেন, এই জঘন্য পাপিষ্ঠ কাফিরটাকে আপনারা স্বাধীন ভাবে
ছেড়ে দিয়েছেন। সে আপনাদের তথা পুরুষদের যা খুশি তাই বলছে। এখন আপনাদের নারীদের সম্পর্কেও বিভিন্ন প্রকার
কটুক্তি করলো। আর আপনি সব শুনে চুপ করে বসে রয়েছেন। এটা আপনার আতœমর্যাদায় লাগছেনা? খতিমুল
মুহাজিরীন সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আমার প্রতিক্রিয়া অবশ্যই আছে। তবে আমার পক্ষ থেকে বড় ধরনের কিছু দেখাইনি
তথা বড় ধরনের কোন প্রতিশোধ নেইনি। মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! এবার আমি তার কঠোর
প্রতিবাদ করবো। সে যদি এর পুনারাবৃত্তি করে তবে আমি অবশ্যই তার সমুচিত জবাব দিবো।
খতিমুল মুহাজিরীন সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আতিক্বা আলাইহাস সালাম উনার স্বপ্ন দেখার তৃতীয় দিবসে
আমি গোস্সায় অধীর হয়ে সকাল বেলা ঘর থেকে বের হলাম। মনে মনে ভাবলাম তাকে ধরার একটা
সুবর্ণ সুযোগ আমার হাতছাড়া হয়ে গেছে। এসব
মনে করতে কাট্টা কাফির আবু জাহিলকে মসজিদুল হারাম শরীফ অর্থাৎ কা’বা শরীফ উনার
মধ্যে পেয়ে গেলাম। মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! আমি তার দিকে অগ্রসর হলাম এবং
প্রস্তুতি নিলাম, কোন কায়দায় সে যদি পূর্বের ন্যায় আচরণ করে
তবে তার উপর আক্রমন করবো। কাট্টা কাফির আবু জাহিল ছিলো হালকা পাতলা দেহ বিশিষ্ট।
কিন্তু তার চেহারা ছিলো রুক্ষ তার ভাষা ছিলো রূঢ় এবং দৃষ্টিশক্তি ছিলো তীক্ষè যা খারাপ দৃষ্টি। খতিমুল
মুহাজিরীন সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি বলেন হঠাৎ সে দ্রুত পায়ে
হেটে মসজিদে হারাম উনার দরজার দিকে বেরিয়ে আসছে। আমি মনে মনে ভাবলাম ওর কি হলো?
মহান আল্লাহ পাক তিনি তার উপর লা’নত বর্ষন করুন। সে কি আমার
গালমন্দের কারণে ভয়ে সরে যেতে চাচ্ছে? কিন্তু সহসাই বুঝতে
পারলাম সে যুমযুম ইবনে আমর গিফারীর চিৎকার শুনতে পেরেছে, যা
আমি শুনতে পাইনি। যুমযুম গিফারী পবিত্র মক্কা শরীফ উনার উপকন্ঠে বাতন ওয়াদীতে এসে
উটের নাক কেটে হাওদা উল্টিয়ে এবং জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলে উচ্চ:স্বরে চিৎকার দিয়ে
বলছিলো, হে কুরাইশরা! বিপদ! বিপদ!! হযরত আবূ সুফিয়ান
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুসহ তোমাদের ক্রয়কৃত যুদ্ধাস্ত্র এবং তাদের ধরার জন্য
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ও উনার
সম্মানিত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অভিযানে বেরিয়েছেন।
আমার মনে হয়, তোমরা আর তোমাদের অস্ত্র-সস্ত্র ও জান রক্ষা
করতে পারবে না। সাহয্যের জন্যে আগাও! অস্ত্র-সস্ত্র রক্ষার জন্যে আগাও! দ্রুত ছুটে
যাও! দ্রুত এগিয়ে যাও!
খতিমুল মুহাজিরীন
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, এ
ভয়াবহ পরিস্থিতির কারণে আমি কাট্টা কাফির আবূ জাহেলের দিকে মনোযোগী হতে পারলাম না।
সেও আমার দিকে মনোযোগী হলো না। যা হোক, কুরাইশরা দ্রুত
যুদ্ধের প্রস্তুতী নিয়ে ফেললো। কাফিরেরা বললো, মহান আল্লাহ
পাক উনার ক্বসম! উনারা এবার ভিন্ন রকম দেখবেন’। নাউযূবিল্লাহ!
হযরত মূসা ইবনে উকরা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি
আতিকার স্বপ্নের বর্ণনা হযরত ইবনে ইসহাক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মতই উল্লেখ
করেছেন। তবে তিনি বলেন, ‘যুমযুম ইবনে আমর যখন এরূপ অবস্থায় এসে
উপস্থিত হলো তখন কুরাইশরা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত্বীকা আলাইহাস সালাম উনার স্বপ্নের কথা স্বরণ করে ভয়ে ভীত হয়ে পড়লো এবং
ঘর থেকে উচ্চ ও নি¤œভূমিতে
বেরিয়ে আসলো’। (আল মু’জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী জিলদ-১৮ পৃষ্ঠা-৭৬, আল
বিদায়া ওয়ান নিহায়, জিলদ-৩ পৃষ্ঠা- ৩১৪, মাদারিজুন নবুওয়া, আল মা’রিফাতুছ ছাহাবা, মাজমাউল জাওয়ায়িদ ওয়া মানবাউল ফাওয়ায়িদ, মাউছূয়াতু
আত্বরাফিল হাদীছ, তারিখুল উমামি ওয়াল মুলূকি জিলদ-২
পৃষ্ঠা-২৪)
ঐতিহাসিকগণ যুমযুম গিফারীর একটি ভাষ্যও উদ্ধৃত
করেছেন। সে বলেছিলো যে আমি যখন কাফিলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার
পথে রওয়ানা করলাম, তখন স্বপ্নে দেখলাম যে, আমি আমার উটের উপর চড়ে রক্তপ্লাবিত একটি ঘাঁটি অতিক্রম করছিলাম। যখন ঘুম থেকে উঠলাম তখন আমার উপলদ্ধি হলো যে,
কুরাইশ কাফিরদের একটি ভীষণ বিপদ
ও তাদের ধ্বংস আসতেছে। যুমযুম গিফারীর এই স্বপ্নের কথা শুনে বনূ আব্দিল
মুত্তালিব উনারা খুবই খুশি প্রকাশ করলেন। কারণ তার স্বপ্ন সাইয়্যিদাতুনা হযরত
আতিক্বা আলাইহাস সালাম উনার স্বপ্নের সত্যতার সাক্ষ্য দিচ্ছে। (মাদারিজুন নবুওয়াত)
আরেকটি কারণ হচ্ছে, মুনাফিক
সর্দার উবাই বিন সুলুলের নিকট মক্কা শরীফের কাফিরদের পত্র প্রেরণ। তখনও উবাই বিন
সুলুল সে সম্মানিত দ্বীন ইসলামে প্রবেশ করেনি। পবিত্র মদীনা শরীফে নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরিফ
মুবারক নেয়ার কারণে মুনাফিক সর্দার উবাই বিন সুলূলের নেতৃত্ব ও কতৃত্ব হাতছাড়া হয়ে
যায় তাই সে মনে মনে দারুন ভাবে ক্ষুব্ধ। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি উবাই বিন সুলুলের ক্ষোভটাকেই
কুরাইশ কাফিরেরা কাজে লাগাতে চেয়ে কঠোর হুমকি দিয়ে তার নিকট পত্র লিখে পাঠায়।
সেটাই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ
মুবারক হয়েছে,
إِنَّكُمْ
آوَيْتُمْ صَاحِبَنَا وَإِنَّا نُقْسِمُ بِاللَّهِ لَتُقَاتِلُنَّهُ أَوْ لَتُخْرِجُنَّهُ أَوْ لَنَسِيرَنَّ إِلَيْكُمْ بِأَجْمَعِنَا حَتَّى نَقْتُلَ مُقَاتِلَتَكُمْ وَنَسْتَبِيحَ نِسَاءَكُمْ. فَلَمَّا بَلَغَ ذَلِكَ بْنَ أُبَىٍّ وَمَنْ كَانَ مَعَهُ مِنْ عَبَدَةِ الأَوْثَانِ اجْتَمَعُوا لِقِتَالِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا بَلَغَ ذَلِكَ النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم لَقِيَهُمْ فَقَالَ ্র لَقَدْ بَلَغَ وَعِيدُ قُرَيْشٍ مِنْكُمُ الْمَبَالِغَ
مَا كَانَتْ تَكِيدُكُمْ بِأَكْثَرَ مِمَّا تُرِيدُونَ أَنْ تَكِيدُوا بِهِ أَنْفُسَكُمْ تُرِيدُونَ أَنْ تُقَاتِلُوا أَبْنَاءَكُمْ وَإِخْوَانَكُمْ গ্ধ. فَلَمَّا سَمِعُوا ذَلِكَ مِنَ النَّبِىِّ
صلى الله عليه وسلم تَفَرَّقُوا-
অর্থ: “তোমরা আমাদের প্রতিবেশী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জায়গা দিয়েছো। এ জন্য আমরা শপথ
করে বলছি! হয় তোমরা উনার সাথে যুদ্ধ করো, অথবা উনাকে পবিত্র
মদীনা শরীফ থেকে বের করে দাও। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! অন্যথায়
আমরা সম্মিলিত ভাবে তোমাদের উপর আক্রমণ করে তোমাদের যোদ্ধাদের হত্যা করব এবং
তোমাদের আহলিয়াদেরকে আমাদের দখলে আনব। মুনাফিক সর্দার উবাই বিন সুলুল এবং তার
মূর্তিপূজারী সাথীরা পত্রের মধ্যে এ সংবাদ পাওয়ার পর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধে
যুদ্ধের প্রস্তুতী গ্রহণ করতে থাকে। এ খবর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট পৌঁছলে তিনি সেই সমস্ত
লোকদের সাথে সাক্ষাত দেন এবং ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা
কুরাইশদের নিকট থেকে উত্তেজনা সৃষ্টিকারী চিঠি পেয়েছো, কিন্তু
তা তোমাদের জন্য এতো মারাত্মক নয়, যত না ক্ষতি তোমরা নিজেরা
নিজেদের করবে। (অর্থাৎ তোমরা নিজেরা নিজেদেরকে যে পরিমাণ ক্ষতির মুখে ঠেলে দিতে
চাচ্ছো, কুরাইশ কাফিরেরা সে পরিমাণ তোমাদের ক্ষতি করতে পারবে
না)। কেননা, তোমরাতো তোমাদের সন্তান ও ভাইদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ
করার সংকল্প করছো। তারা যখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কথা মুবারক শুনলো তখন তাদের বৈঠক
ভেঙ্গে গেলো, তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লো।” (সুনানে আবূ দাউদ
শরীফ: পবিত্র হাদীছ নং- ২৯৯৪, দালায়িলুন নবুওওয়াহ, আল মুসনাদুল জামি’, মুছান্নিফে আব্দুর রাযযাক্ব)
0 Comments:
Post a Comment