সাইয়্যিদাতুন নিসায়িল আলামীন, বাহরুল আলিমা ,নূরে মদিনা
' গুলে মুবিনা, আফদ্বালুন নিসা, ফক্বীহাতুন নিসা, রাহনুমায়ে দ্বীন,ছিদ্দীকায়ে কুবরা ,
আন নি'মাতুল কুবরা আলাল আলাম, মাশুকায়ে ইলাহী ,
কায়মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু'মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদাতুন নিসা, মুতহহারাহ্, মুতহিরাহ,
হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম
উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মহামূল্যবান নসিহত
মুবারক থেকে সংগৃহীত
شاهد النبي صلى الله عليه وسلم
পর্ব-৩
|সাইয়্যিদাতুন নিসা, মুতহহারাহ, মুতহহিরাহ, উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার
নসীহত মুবারক থেকে আমরা যা বুঝতে পেরেছি – আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনার
আক্বীদা হলাে- বান্দা মহান আল্লাহ পাক উনাকে দেখুক বা না দেখুক তিনি অবশ্যই
হাজির-নাযির অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনাকে না দেখলে ও বান্দাকে বিশ্বাস করতে হবে
যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি হাজির-নাযির তথা সব জায়গায় উপস্থিত এবং সবকিছু দেখে
থাকেন। ঠিক তদ্রুপ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি সালাম
উনাকে উম্মত দেখুক বা না দেখুক তিনিও হাযির-নাযির তথা সব জায়গায় উপস্থিত এবং
সবকিছু দেখে থাকেন ।
এ সম্পর্কে সাইয়্যিদাতুন নিসা, মুতহহারাহ, মুতহহিরাহ, উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম
তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
انا ارسلناك شاهدا
অর্থ: “নিশ্চয়ই আমি আপনাকে প্রত্যক্ষদর্শী তথা হাজির-নাযির হিসাবে প্রেরণ করেছি ।
সাইয়্যিদাতুন নিসা, মুতাহহারাত, মুতাহহিরাহ, উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার
নসীহত মুবারক থেকে আমরা যা বুঝতে পেরেছি -সমস্ত লুগাতের মধ্যে شاهدا শব্দের অর্থ
প্রত্যক্ষদর্শী তথা হাজির-নাযির। আর উসূলের কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, একটি শব্দের
একাধিক অর্থ থাকলে ব্যক্তির শান অনুযায়ী অর্থ গ্রহণ করতে হবে। তাই নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ, শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ক্ষেত্রে এমন অর্থ মুবারক
গ্রহণ করতে হবে যেটা উনার শান মুবারক উনার ক্ষেত্রে প্রযােজ্য এবং এমন কোন অর্থ
মুবারক গ্রহণ করা যাবেনা যা উনার শান মুবারক উনার খিলাফ। সুতরাং شاهدا শব্দের
” অর্থ যদি সাক্ষ্যদাতা গ্রহণ করা হয় এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ শহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ক্ষেত্রে এভাবে বলা হয় যে, যিনি সাক্ষ্যদানকারী হবেন, উনার
জন্য অবশ্যই হাযির-নাজির হওয়া শর্ত। তাই তিনি হাযির-নাযির। এভাবে ঘুরিয়ে অর্থ
মুবারক গ্রহণ করাই উনার শান মুবারক উনার খিলাফ বরং شاهدا শব্দ মুবারক উনার দ্বারা
প্রত্যক্ষদর্শী তথা হাজির-নাজির, উপস্থিত অর্থ মুবারক গ্রহণ করতে হবে। যে বিষয়টি
সাইয়্যিদাতুন নিসা, মুতহহারাহ, মুতহহিরাহ, উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি
; আমাদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। (সুবহানা উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম!)।
সাইয়্যিদাতুন নিসা, মুতহহারাহ, মুতহহিরাহ, উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি
বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি সূরা তওবা শরীফ উনার ১০৫ নং আয়াত শরীফ উনার
মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
قُلِ اعْمَلُواْ فَسَيَرَى اللّهُ عَمَلَكُمْ وَرَسُولُهُ وَالْمُؤْمِنُونَ
অর্থ মুবারক: “(হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি বলুন, তােমরা
আমল কর।
অবশ্যই মহান আল্লাহ পাক ও উনার রসূল নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, শাহিদুন নবী
ছল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা এবং যারা হাক্বাক্বী মু'মিন উনারাও তােমাদের আমল
দেখেন।" সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া মুরশিদিনাল আ'যম আলাইহিস সালাম।
মহান আল্লাহ পাক তিনি সূরা তওবা শরীফ উনার ৯৪ নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে
আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
وَسَيَرَى اللّهُ عَمَلَكُمْ وَرَسُولُهُ
অর্থ মুবারক: অবশ্যই মহান আল্লাহ পাক ও উনার রসূল শাহিদুন নবী, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা তােমাদের আমল দেখেন।"
এখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
কিভাবে দেখেন এ প্রসঙ্গে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত
রয়েছে,
عن حضرت عبد الله ابن عمر رضي الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم
إن الله عز وجل قد رفع إلى الدنيا فانا انظر اليها وإلى ما هو كائن فيها إلى يوم القيامة كانا یا
انظر إلى كافي هذه
অর্থ মুবারক: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে
বর্ণিত-
তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি এ দুনিয়াকে আমার
সামনে এরূপভাবে তুলে ধরেছেন যে, এই দুনিয়া ও উনার মধ্যে যা কিছু সৃষ্টি হয়েছে এবং
কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু সৃষ্টি হবে, সবকিছু এরূপভাবে দেখি, যেভাবে আমি আমার হাতের
তালু মুবারক (নুরূল মাগফিরাত) উনাকে দেখে থাকি। (তাবারানি শরীফ)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সমস্ত
কায়িনাতকে এমন স্পষ্টভাবে দেখে থাকেন, যেভাবে উনার নুরুল মাগফিরাত (হাত)।
মুবারক উনার তালু মুবারক দেখে থাকেন।
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার নছীহত মুবারক উনার
থেকে আমরা যা বুঝতে পেরেছি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মূলত হায়াতুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, শাহিদুন নবী
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বসিমুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুত্ত্বলা
আলাল গাইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ছাদিকুল মাছদ্বাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম । যা নিম্নোক্ত সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা আরাে প্রমাণিত হয়।
আবু জুরাই ইবনে সুলাইম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি মদিনা শরীফ
আসলাম, আমি দেখলাম লােকেরা উনার মত গ্রহণ করে চলে যাচ্ছে তিনি যে বিষয়ে
ফায়সালা মুবারক দিয়েছেন, সে বিষয়ে কোন মত প্রকাশ না করে। আমি বললাম, উনি
কে? তিনি বললেন, আমি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ,
শাহিদুন নবী ছলাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম । আমি বললাম, عليك السلام তিনি বললেন
عليك السلام বলবেন না। কারণ এটা মৃত ব্যক্তির অভিবাদন-সম্বােধন। বরং বলুন السلام عليك আমি বললাম, আপনি কি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ?
তিনি বললেন,
أنا رسول الله الذي إذا أصابك ضُرٌّ فدعوته كشفه عنك، وإذا أصابك عام سَنَةٍ فدعوته أنْبَتَهَا لك، وإذا كنت بأرض قَفْرٍ أو فَلَاةٍ فَضَلَّتْ راحلتك، فدعوته ردها عليك
অর্থ - আমি সেই সম্মানীত রসূল শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম । যদি আপনার কাছে দুঃখ-কষ্ট, বিপদ-আপদ, মুছিবত পৌঁছে আর আপনি যদি উনাকে
ডাকেন বা উনার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন তিনি আপনার থেকে সেই দুঃখ-কষ্ট, মুছিবত ,
দূর করে দিবেন। আর যদি আপনার কাছে কোন দুর্ভিক্ষ, অভাব-অনটন পৌছে অর্থাৎ
আপনি যদি দুর্ভিক্ষ অভাব-অনটনে পরেন। তিনি ফসল (খাদ্য-শস্য) উৎপন্ন করে দুর্ভিক্ষ দূর করে দিবেন ।যখন আপনি কোন তৃণ , পানি শূন্য মরু প্রান্তরে অর্থাৎ কোন জনমানহীন শূন্য ময়দানে অবস্থান করেন এবং সেখানে আপনার বাহনটি হারিয়ে যায় আর আপনি তখন উনাকে ডাকেন বা উনার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন , তিনি তা আপনার কাছে ফিরিয়ে দিবেন ।
তাই বান্দা বান্দী প্রত্যেকের উচিত হবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ শাহিদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হাযির নাযির হিসেবে বিশ্বস করা এবং সমস্ত কুফুরি মূলক আক্বিদা বর্জন করা