একবার কিছু ইহুদী মহিলা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে হাযির হয়ে আরজি পেশ করলো যে, তাদের এক বিবাহের অনুষ্ঠানে তিনি যেন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে যাওয়ার অনুমতি দান করেন। যে অনুষ্ঠানটি শুধু মহিলাদের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইহুদী মহিলাদের আরজি কবুল করলেন।
ইহুদীদের কাজই হলো নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়া। নাউযুবিল্লাহ! তাই দাওয়াত দানকারিণী ইহুদী মহিলাদের উদ্দেশ্যও ভালো ছিল না। তাদের উদ্দেশ্য ছিল ইহুদী মহিলারা দামি দামি পোশাক-পরিচ্ছদ পরিধান করে এবং হীরা-মণি, মুক্তা ও স্বর্ণালঙ্কারে সুসজ্জিত হয়ে অনুষ্ঠানে যাবে। আর তাদের ধারণা হলো সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি তো তাদের মতো অতো সাজসজ্জা ও দুনিয়াবী রছম-রেওয়াজ পছন্দ করেন না। অতএব, তিনি স্বাভাবিক লেবাছ মুবারক-এ-ই অনুষ্ঠানে আসবেন। যার ফলে উনার কাছে তারা তাদের বড়ত্ব, মহত্ত্ব প্রকাশ করে উনাকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করবে। নাঊযুবিল্লাহ!
ইহুদী মহিলাদের এই কূট চক্রান্ত কেউ না জানলেও যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার যিনি রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা তো ঠিকই জানেন। ফলে বিবাহ অনুষ্ঠানের নির্দিষ্ট তারিখে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে বেহেশত থেকে বেহেশতী পোশাক ও অলঙ্কারাদি পাঠিয়ে দিলেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে। অর্থাৎ হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ পাক তিনি এই পোশাক ও অলঙ্কার আপনার মেয়ে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে হাদিয়া করেছেন এবং আরো বলেছেন, তিনি যেন এগুলো পরিধান করে ইহুদী মহিলাদের অনুষ্ঠানে যান। সুবহানাল্লাহ! সত্যিই বেহেশতী পোশাক ও অলঙ্কার পরিধান করে যথাসময়ে সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি ইহুদী মহিলাদের অনুষ্ঠানে গেলেন। আল্লাহু আকবার! বেহেশতী মানুষ উনার শরীর মুবারকে বেহেশতী পোশাক ও অলঙ্কার কী অপরূপ সৌন্দর্য প্রকাশ করবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না! তাও আবার সাধারণ বেহেশতী নন, বেহেশতবাসিনী মহিলাকুল উনাদের সাইয়্যিদাহ এবং পোশাক এবং অলঙ্কারও তদ্রƒপ মর্যাদাম-িত। সুবহানাল্লাহ!
শুধু কী তাই, তিনি হলেন সমস্ত সৌন্দর্যের মূল- আজমালুল কায়িনাত, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারই পবিত্র ও নূরানী দেহ মুবারকেরই অংশ মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই তিনি যখন উনার এই বেমেছাল শান ও সৌন্দর্য নিয়ে সেই অনুষ্ঠানে তাশরীফ নিলেন ইহুদী মহিলারা দেখতে পেলো সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার চেহারা মুবারক হতে নূর বিচ্ছুরিত হচ্ছে এবং উনার অসাধারণ পোশাক ও অলঙ্কার দেখে তারা বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো, হে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম! এ পোশাক ও অলঙ্কারগুলো আপনি কোথায় পেলেন? তিনি বললেন, কেন, আমার আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে হাদিয়া করেছেন। তারা পুনরায় জিজ্ঞেস করলো, আপনার সম্মানিত আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এগুলো কোথায় পেলেন? তিনি বললেন, আমার আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বয়ং মহান খালিক্ব মালিক রব আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে বেহেশত থেকে হাদিয়া পাঠিয়েছেন। এটা শুনে দাওয়াত দানকারিণী মূল যে ইহুদী মহিলা সে তার স্বামীসহ মুসলমান হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! উনাদের দেখাদেখি অনুষ্ঠানে উপস্থিত সমস্ত ইহুদী মহিলা তাদের স্বামীসহ মুসলমান হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
সেই সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ হয়েছে পবিত্র জুমাদাল উখরা মাস উনার ২০ তারিখে জুমুয়ার দিন ছুবহে সাদিকের সময় আর উনার সুমহান পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ হয়েছে পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার ৩ তারিখে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ (সোমবার) বাদ আছর।
কাজেই উনার শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা জেনে-বুঝে উনাকে উত্তমভাবে অনুসরণ করে হাক্বীক্বী মুসলমান হওয়ার জন্য প্রত্যেককেই উনার সম্মানার্থে পবিত্র মীলাদ শরীফ, ওয়াজ শরীফ ইত্যাদির ব্যবস্থা করে এই দিবস উনার যে বারাকাত, ফুয়ুজাত, নিয়ামত, রহমত, বরকত, সাক্বীনা, মাগফিরাত মুবারক রয়েছে তা লাভ করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
0 Comments:
Post a Comment