ঈদ মুবারক ! ঈদ
মুবারক !! ঈদ মুবারক !!!
সুমহান পুত ও
পবিত্র ১১ ই জুমাদাল উলা শরীফ
ঈদে বিলাদতে ,
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম
উনার নুরুদ দরাজাত
মুবারকে জানাই লক্ষ কোটি বেশুমার ছলাত ও সালাম ।
গোলামীর আরজুতে ,
মুহম্মদ ইউসুফ রাজী
খাজা
ইয়া আম্মাজী , মমতাময়ী মা , রহনুমায়ে মা আপনি হলেন কুল কায়িনাতের মালিকা । হে
আমাদের মা, আপনি আমাদেরকে আপনার পাক ক্বদম মুবারকে গোলাম সন্তান হিসেবে ক্ববুল করে
নিন । আপনার শান মান মর্যাদা প্রকাশ করার
বর্ননা করার এই গোলাম অধমের কোনই যোগ্যতা নেই । আপনি আমাকে দয়া ইহসান মুবারক দান
করুন ।
আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সাওয়ানেহ উমরী মুবারক
আফদ্বলুন নাস
ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সবচেয়ে বড় পরিচয় মুবারক হচ্ছেন, তিনি হলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা লখতে জিগার মুবারক, মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে) আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
মহাসম্মানিতা হযরত বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে তিনি হচ্ছেন ‘আছ
ছালিছাহ তথা তৃতীয়া’। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান
মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত
মুবারকই হচ্ছেন ঈমান। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ:
মুজাদ্দিদে
আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ
আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা, বিনতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ
আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক প্রকাশের
৫ বছর পূর্বে ১১ই জুমাদাল ঊলা শরীফ লাইলাতুস্ সাব্ত শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স
মুবারক ছিলেন প্রায় ৩৫ বছর। আর উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা
আলাইহাস সালামউনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৫০ বছর।” সুবহানাল্লাহ! স্মরণীয় যে, দুনিয়ার কোনো কিতাবে উপরোক্ত বর্ণনাটি উল্লেখ নেই; বরং এটা মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা
সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার
একখানা অভূতপূর্ব বেমেছাল সম্মানিত তাজদীদ মুবারক, যা উনার বেমেছাল শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ। সুবহানাল্লাহ! এর
মাধ্যমেই প্রতিভাত হয় যে, মহান আল্লাহ পাক
উনার,
উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত
শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা
সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার কত
বেমেছাল আখাচ্ছুল খাছ সম্মানিত তাওয়াল্লুক-নিসবত মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশে সম্মানিত খুশি
মুবারক প্রকাশ:
সাইয়্যিদাতুন
নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, উম্মু আবীহা
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি, উম্মুল মু’মিনীন
আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা, হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং সমস্ত কায়িনাতবাসী
সকলেই সম্মানিত খুশি মুবারক প্রকাশ করেছেন, মহাসম্মানিত ‘ফালইয়াফরহূ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত আক্বীক্বাহ মুবারক দেয়া এবং সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক
রাখা:
নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিতা
আওলাদ,
লখতে জিগার সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস
সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের সপ্তম দিন
উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত আক্বীক্বাহ মুবারক দেন এবং উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা
নাম মুবারক রাখেন ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত উমাইয়্যাহ আলাইহাস সালাম’। সুবহানাল্লাহ!
এই
সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وَاسْمُ
سَيِّدَتِنَاحَضْرَتْ
اُمِّ كُلْثُوْمٍ
ۢبِنْتِ رَسُوْلِ
اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ حَضْرَتْ
اُمَيَّةُ عَلَيْهَا
السَّلَامُ.
অর্থ:
“সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক হচ্ছেন ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত
উমাইয়্যাহ আলাইহাস সালাম’।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম ৪/৫৩)
সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক
সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক ছিলেন ‘উম্মু
কুলছূম আলাইহাস সালাম’। সুবহানাল্লাহ! আরবী ‘কুলছূম’ শব্দ মুবারক উনার অর্থ মুবারক
হচ্ছেন- ‘এমন একজন সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক, যিনি পূর্ণ গোলাকার মুখম-ল মুবারক উনার অধিকারিণী’। সুবহানাল্লাহ! নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার
মহাসম্মানিতা আওলাদ, লখতে জিগার
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে অত্যন্ত মুহব্বত মুবারক
করে ‘উম্মু কুলছূম আলাইহাস সালাম’ বলে আহ্বান মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! তখন
থেকেই তিনি সকলের নিকট ‘উম্মু কুলছূম আলাইহাস সালাম’ কুনিয়াত মুবারক-এ পরিচিতি
মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস
সালাম তিনি সেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক যিনি নাম মুবারক দ্বারা সম্মানিত
পরিচিতি মুবারক গ্রহণ না করে, সম্মানিত
কুনিয়াত মুবারক দ্বারা সম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
এই
সম্পর্কে কিতাবে উল্লেখ রয়েছে,
وِهِىَ
مِـمَّنْ عُرِفَ
بِكُنْيَتِهٖ وَلَـمْ
يُعْرَفْ لَـهَا
اسْمٌ.
অর্থ:
“তিনি সেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক যিনি সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক
দ্বারা সম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ না করে সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক দ্বারা
সম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (যখাইরুল ‘উক্ববা ১/১৬৪, তারীখুল খমীস ১/২৭৫)
সম্মানিত লালন-পালন মুবারক
আফদ্বলুন
নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস
সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিতা মাতা উম্মুল
মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের সর্বাধিক সম্মানিত
আদর-যতœ মুবারক-এ, সম্মানিত তত্ত্বাবধান মুবারক-এ লালিত-পালিত হয়েছেন।
সুবহানাল্লাহ! তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিতা মাতা উম্মুল মু’মিনীন
আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের যাবতীয় সমস্ত খুছূছিয়াত ও
বৈশিষ্ট্য মুবারক উনার অধিকারিণী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ইলম মুবারক
নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক
করেন-
اِنَّـمَا
اَنَا قَاسِمٌ
وَاللهُ يُعْطِىْ.
অর্থ:
“মহান আল্লাহ পাক তিনি হচ্ছেন দাতা আর আমি হচ্ছি বণ্টনকারী।” সুবহানাল্লাহ!
(বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
মহান
আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা উম্মু
আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে সৃষ্টির শুরু থেকে
শেষ পর্যন্ত সমস্ত প্রকার সম্মানিত ইলম মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন।
সুবহানাল্লাহ! শুধু সম্মানিত ওহী মুবারক নাযিল হওয়া ব্যতীত সমস্ত প্রকার সম্মানিত
ইলম মুবারক উনার অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! মূলত উনার সম্মানার্থে
সমস্ত কায়িনাতবাসী ইলম-আমল, ইখলাছ, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারকসহ সমস্ত কিছু লাভ করেছে, করছে এবং অনন্তকাল যাবৎ করতেই থাকবে। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ছূরত মুবারক
বিদ্ব‘য়াতুম
মির রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুন
নিসায়ি ‘আলাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি
ছিলেন বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারিণী। সুবহানাল্লাহ!
আহলু
বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত
আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনারা প্রত্যেকেই প্রত্যেকের মাক্বাম মুবারক-এ অনন্যা।” সুবহানাল্লাহ!
তিনি আরো
ইরশাদ মুবারক করেন, “সাইয়্যিদাতুন
নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু
নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, বিনতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা
আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার
হুবহু নকশা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুবহু নকশা মুবারক।
সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের দুইজনেরই
নিসবত মুবারক ছিলো উভয় দিক থেকে। অর্থাৎ উনারা দু’জন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত
কুবরা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের থেকে সমানভাবে সম্মানিত নিসবত
মুবারক পেয়েছিলেন।” সুবহানাল্লাহ!
আর এ কারণেই কিতাবে বর্ণিত রয়েছে যে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার
এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের
মাঝে সম্মানিত সীরত-ছূরত মুবারক, আকার-আকৃতি
মুবারক,
চাল-চলন মুবারক সর্বদিক থেকে হুবহু মিল ছিলেন।
সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত
পবিত্রতা মুবারক
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اِنَّـمَا
يُرِيْدُ اللهُ
لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ
الرِّجْسَاَهْلَ الْبَيْتِ
وَيُـطَـهِّـرَكُمْتَطْهِيْرًا.
অর্থ:
“হে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম! নিশ্চয়ই মহান
আল্লাহ পাক তিনি চান আপনাদের থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা দূর করে আপনাদেরকে
পবিত্র করার মতো পবিত্র করতে। অর্থাৎ তিনি আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই
সৃষ্টি মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা আহযাব শরীফ: সম্মানিত আয়াত
শরীফ ৩৩)
এই
সম্মানিত আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন,
هُمْ
اَهْلُ بَيْتٍ
طَهَّرَهُمُ اللهُ
مِنَ السُّوْءِ
وَاخْتَصَّهُمْ بِرَحْـمَتِهٖ.
অর্থ:
“উনারা হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। মহান
আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা ও পাপ থেকে পূত-পবিত্র রেখেছেন
এবং উনার সম্মানিত রহমত মুবারক দ্বারা খাছ করে নিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اَنَّ
النَّبِـىَّ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ كَانَ
يَقُوْلُ نَـحْنُ
اَهْلُ بَيْتٍ
طَهَّرَهُمُ اللهُ
مِنْ شَجَرَةِ
النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ
الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ
الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ
الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ
الْعِلْمِ.
অর্থ:
“নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ
মুবারক করতেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে (আমাদেরকে)
সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক
(ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর ৬/৬০৬, ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)
অর্থাৎ
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সম্মানিত
নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত
মুবারক,
বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম
মুবারক উনার খনি মুবারক ইত্যাদি সমস্ত কিছু থেকে পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ!
সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! উনাদের কারণেই সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, সমস্ত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা, সম্মানিত রহমত মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারকসহ সমস্ত কিছুই ফযীলতপ্রাপ্ত
হয়েছেন,
সম্মানিত হয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
সুবহানাল্লাহ!
উপরোক্ত
সম্মানিত আয়াত শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের পরিপূর্ণ
মিছদাক্ব হচ্ছেন উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম
তিনি। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন
নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক
করেছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার কারণেই সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, সমস্ত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা, সম্মানিত রহমত মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারকসহ সমস্ত কিছুই ফযীলতপ্রাপ্ত
হয়েছেন,
সম্মানিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত আক্বদ শরীফ
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রকাশ পাওয়ার পূর্বে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আক্বদ শরীফ হয়েছিলো আবূ লাহাবের পুত্র উতবার
সাথে এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আক্বদ
শরীফ হয়েছিলো উতাইবার সাথে। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস
সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৭ বছরের কাছাকাছি। আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন
নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৫ বছরের কাছাকাছি।
এটি ছিল শুধু একটি আনুষ্ঠানিক আক্বদ শরীফ। উনাদেরকে তাদের গৃহে যেতে হয়নি।
সুবহানাল্লাহ! তার আগেই সম্মানিত সূরা ‘লাহাব শরীফ’ নাযিল হওয়ার পর আবূ লাহাব ও
তার স্ত্রীর কারণে উতবাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার
সম্মানিত খিদমত মুবারক থেকে মাহরূম হয়ে যায় অর্থাৎ সম্মানিত খিদমত মুবারক করার
ব্যাপারে অযোগ্য বলে প্রমাণিত হয়। এবং উতাইবাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক থেকে মাহরূম হয়ে যায়। অর্থাৎ
সম্মানিত খিদমত মুবারক করার ব্যাপারে অযোগ্য বলে প্রমাণিত হয়। নাঊযুবিল্লাহ!
অপর
বর্ণনায় রয়েছে, যখন কুরাইশরা অনুভব করলো যে, কোনো পরিকল্পনা করেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার দাওয়াত মুবারক
দেয়া থেকে বিরত রাখা যাচ্ছে না; তখন তারা নতুন
পরিকল্পনা করলো। কুরাইশরা বলে উঠলো, তোমাদের সর্বনাশ হোক, তোমরা নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা
আওলাদ আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সাথে নিজেদের ছেলেদের বিবাহ করিয়ে উনার দুশ্চিন্তা
নিজেদের ঘাড়ে তুলে নিয়েছো। নাঊযুবিল্লাহ! তোমরা যদি উনার মহাসম্মানিতা আওলাদ
আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের থেকে নিজেদের ছেলেদেরকে বিচ্ছিন্ন করে নাও, তাহলে তিনি উনাদেরকে নিয়েই ব্যস্ত থাকবেন। নাঊযুবিল্লাহ!
তাদের মধ্যে অনেকে এ কথা সমর্থন করে বললো, এ তো চমৎকার যুক্তি। নাঊযুবিল্লাহ! তারা দল
বেঁধে উতবাহ এবং উতাইবার নিকট গিয়ে বললো, “তোমরা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার এবং
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের থেকে
বিচ্ছিন্ন হয়ে যাও। যদি তোমরা তা করো, তাহলে উনাদের পরিবর্তে তোমরা তোমাদের পছন্দমত কুরাইশদের যেকোনো সুন্দরী নারীকে
বিবাহ করতে পারবে।” না‘ঊযুবিল্লাহ!
তারা
রাজি হয়ে যায়। ফলে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার
সম্মানিত খিদমত মুবারক থেকে উতবাহ মাহরূম হয়ে যায় অর্থাৎ সম্মানিত খিদমত মুবারক
করার ব্যাপারে অযোগ্য বলে প্রমাণিত হয় এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ
আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক থেকে উতাইবাহ মাহরূম হয়ে যায় অর্থাৎ
সম্মানিত খিদমত মুবারক করার ব্যাপারে অযোগ্য বলে প্রমাণিত হয়। নাঊযুবিল্লাহ! অতঃপর
তারা তাদের পছন্দমত কুরাইশদের দুইজন মহিলাকে বিবাহ করে নেয়। না‘ঊযুবিল্লাহ!
মূলত, এখান থেকে এই বিষয়টি অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, উতবাহ এবং উতাইবাহ তারা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস
সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার ব্যাপারে
চরম অযোগ্য ছিলো। মহান আল্লাহ পাক তিনি চাননি যে, তাদের মতো এরূপ অযোগ্য বর্বর সর্বনিকৃষ্ট কাফির ও মুশরিকদের ঘরে উনারা
সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন। যার কারণে মহান আল্লাহ পাক তিনি কুদরতীভাবে
উনাদেরকে এই অযোগ্য বর্বর সর্বনিকৃষ্ট কাফির ও মুশরিকদের ঘরে তাশরীফ মুবারক নেয়া
থেকে হিফাযত করেছেন। সুবহানাল্লাহ! কারণ উনারা হচ্ছেন পূত-পবিত্রা। শুধু তাই নয়, উনারা হচ্ছেন পূত-পবিত্রতাদানকারিণী। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনিই ছিলেন উনাদের সম্মানিত খিদমত
মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার একমাত্র উপযুক্ত ব্যক্তিত্ব মুবারক। তাই মহান
আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে উনাদের সম্মানিত
খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ
আহলু
বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত
আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক প্রকাশ
পাওয়ার পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি তা সর্বপ্রথম উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার নিকট
প্রকাশ করেন। উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি পুরুষ-মহিলা
সকলের পূর্বে সর্বপ্রথম সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন এবং সম্মানিত ঈমান মুবারক
প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
উনার
সাথে সাথে উনার মহাসম্মানিতা আওলাদ আলাইহিন্নাস সালাম বিনতু রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস
সালাম তিনি, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ
হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারাও সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন।
সুবহানাল্লাহ! অতঃপর বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনিও সংবাদ মুবারক পাওয়ার সাথে
সাথে এসে সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনারাই হচ্ছেন
পুরুষ-মহিলা সকলের মাঝে সর্বপ্রথম সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশকারিণী।”
সুবহানাল্লাহ!
এই
সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
اَوَّلُ
مَنْ اَسْلَمَ
وَاٰمَنَ فِـىْ
خَلْقِ اللهِ
عَزَّ وَجَلَّ
لَـمْ يَتَقَدَّمْهَا
رَجُلٌ وَّلَا
امْرَاَةٌ اُمُّ
الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى
سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ
خَدِيـْجَةُ الْكُبْرٰى
عَلَيْهَا السَّلَامُ
ثُـمَّ اَسْلَمَ
وَاٰمَنَ بِنْتٌ
مِّنْ بَنَاتِ
رَسُوْلِ اللهِ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ
اَلنُّوْرُ اَلثَّانِيَةُ
عَلَيْها السَّلَامُ
ثُـمَّ اَسْلَمَ
وَاٰمَنَ بِنْتٌ
مِّنْ بَنَاتِ
رَسُوْلِ اللهِ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ
اَلنُّوْرُ اَلثَّالِثَةُ
عَلَيْهَا السَّلَامُ
ثُـمَّ اَسْلَمَ
وَاٰمَنَ بِنْتٌ
مِّنْ بَنَاتِ
رَسُوْلِ اللهِ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
اَلنُّوْرُ الرَّابِعَةُ
سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ
فَاطِمَةُ الزَّهْرَاءِ
عَلَيْهَا السَّلَامُ
ثُـمَّ اَسْلَمَ
وَاٰمَنَ بِنْتٌ
مِّنْ بَنَاتِ
رَسُوْلِ اللهِ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ
اَلنُّوْرُ اَلْاُوْلـٰى
عَلَيْهَا السَّلَامُ
অর্থ:
“উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনিই মহান
আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টি জগতে সর্বপ্রথম সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন ও
সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার পূর্বে কোন পুরুষ মহিলা
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেনি এবং সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেনি। অতঃপর
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন এবং সম্মানিত ঈমান
মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত দ্বীন
ইসলাম গ্রহণ করেন এবং সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা
হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন এবং সম্মানিত ঈমান
মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর খাইরু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত
দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন এবং সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ!
(সম্মানিত ওয়াজ শরীফ থেকে সংকলিত)
তাই মুজাদ্দিদে
আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ
আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “উনারাই যেহেতু পুরুষ-মহিলা সকলের মাঝে সর্বপ্রথম সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ
করেছেন। কাজেই, ক্বিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ ঈমান
আনবেন এবং যত নেক আমল করবেন, সমস্ত ফযীলত
উনাদের সম্মানিত আমল নামা মুবারক-এ যেয়ে পৌঁছবে। সুবহানাল্লাহ! যদিও উনারা এ
সমস্ত কিছুর মুহতাজ নন; তারপরেও
সাধারণভাবে উনাদের সম্মানিত ফযীলত মুবারক বুঝতে সহজ হয়।” সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত
খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া
মহান
আল্লাহ পাক তিনি বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য মু‘য়াল্লিমাহ হিসেবে সৃষ্টি
করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়ে
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকেসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীকে শিক্ষা দিয়েছেন যে, কিভাবে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক
উনার আনজাম মুবারক দিতে হয়। সুবহানাল্লাহ!
যখন মুশরিকরা নানাভাবে নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট-তাকলীফ দিতো এবং
উনার উপর যুলুম নির্যাতন করতো, তখন একজন মা তার
সন্তানকে যেভাবে স্নেহভরে আদর-যতœ করে থাকেন, ঠিক সেইভাবে
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক
উনার আনজাম মুবারক দিতেন। সুবহানাল্লাহ!
শি‘আবে আবী ত্বালিবে সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম
সাইয়্যিদুল
মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত
ও রিসালাত মুবারক প্রকাশ পাওয়ার সপ্তম (৭ম) বছর শি‘আবে আবী ত্বালিবে সম্মানিত
তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। তিনি সেখানে তিন বছর সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন।
শি‘আবে আবী ত্বালিবের কথা। যখন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা
আলাইহাস সালাম তিনি সেখানে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেন, তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন
প্রায় ৬১ বছর। শি‘আবে আবী ত্বালিবে কাফির-মুশরিকরা খাবার পৌঁছাতে বাধা সৃষ্টি
করে। তাদের বাধার কারণে সেখানে সাধারণত খাবার পৌঁছতো না বিধায় হযরত ছাহাবায়ে
কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের এরূপ অবস্থা হয়েছিলো যে, উনারা খাদ্য হিসেবে গাছের লতা-পাতা, ছাল-বাকল পর্যন্ত খেয়েছিলেন। এমনকি উনারা চামড়ার না’লাঈন
শরীফ (জুতা মুবারক) পানিতে সিদ্ধ করে চিবিয়েছেন। গাছের লতা-পাতা, ছাল-বাকল খাবার হিসেবে গ্রহণ করার ফলে উনাদের ইস্তিঞ্জা
মুবারক বকরীর লেদের মত হয়ে গিয়েছিলো। সুবহানাল্লাহ! ক্ষুধার্ত শিশু উনাদের কান্না
মুবারক-এ আশে-পাশের লোকেরা রাতে ঘুমাতে পারতো না।তারপরও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম
রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে দূরে সড়ে যাননি। কি অপূর্ব আত্মত্যাগ!
সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস
সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন অনেক বেশি। সেই সময় বিনতু রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম
তিনি ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূর (আবুল আছ) আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত হুজরা
শরীফ-এ। তারপরেও তিনি সেখান থেকে এসে শি‘আবে আবী ত্বালীবে সম্মানিত অবস্থান মুবারক
করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার মূল আনজাম মুবারক দেন। আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি তখন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার
সাথে হাবশায় সম্মানিত হিজরত মুবারক-এ গিয়েছিলেন।
এমতাবস্থায়
শি‘আবে আবী ত্বালিবে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনিও
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার মূল আনজাম মুবারক দেন এবং শি‘আবে ত্বালিবের এই
প্রতিকূল অবস্থার মুকাবিলা করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন উনার সম্মানিত বয়স মুবারক
ছিলেন প্রায় ১২ বছর। এই অল্প বয়স মুবারক-এ শি‘আবে আবী ত্বালিবে থেকে সমস্ত
প্রতিকূল অবস্থার মুকাবিলা করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার মাধ্যমে
তিনি কায়িনাতের মাঝে এক বেনজীর দৃষ্টান্ত মুবারক স্থাপন করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
তিনি শি‘আবে আবী ত্বালিবে যে কষ্ট মুবারক স্বীকার করেছেন, তা কায়িনাতের মাঝে তুলনাহীন। সুবহানাল্লাহ! মূলত, উনার কাছ থেকেই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা
আনহুম উনারা শিক্ষা গ্রহণ করেছেন কিভাবে সমস্ত কিছু ত্যাগ করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ওজুদ মুবারক উনার মধ্যে
ফানা-বাক্বা হতে হয়, উনার সম্মানিত
খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিতে হয়। সুবহানাল্লাহ! পাশাপাশি সাইয়্যিদাতুনা আন
নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনিও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার
আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ! তবে দুনিয়াবী দৃষ্টিতে তখন উনার সম্মানিত বয়স
মুবারক ছিলেন অল্প অর্থাৎ ১০ বছর।
উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও
মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পূর্বে এবং পরে
নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক প্রকাশের দশম (১০ম) বর্ষে
শি‘আবে আবী ত্বালিব থেকে প্রত্যাবর্তন করেন। শি‘আবে আবী ত্বালিবে অবস্থানকালীন
সময়েই উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি কখনো কখনো সম্মানিত
মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করতেন (অসুস্থতা মুবারক গ্রহণ করতেন) আবার কখনো কখনো
ছিহ্হাতী শান মুবারক প্রকাশ করতেন (সুস্থতা মুবারক গ্রহণ করতেন)। শি‘আবে আবী
ত্বালিব থেকে প্রত্যাবর্তনের পর উনার সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক বেশি আকারে
প্রকাশ পায়।
ফলে তখন
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত হুজরা শরীফ উনার
কাজসহ উনার মহাসম্মানিত পিতা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিতা মাতা উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা
আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের যাবতীয় সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার বেমেছাল
আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ! উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম
উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পূর্ব মুহূর্তে
যখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুন
নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন
আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত মাথা মুবারক উনার পাশে বসে উনাকে
সান্তনা মুবারক দিচ্ছিলেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতিশ্রুত সম্মানিত জান্নাত
মুবারক ও রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক উনাদের বিষয়ে সুসংবাদ মুবারক দিচ্ছিলেন, তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি
এবং সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা
পাশে বসে এই দৃশ্য মুবারক অবলোকন করছিলেন। তখন উনাদের মাঝে কিরূপ কঠিন মুহূর্ত
অতিবাহিত হয়েছে, তা সহজেই অনুমেয়। তখন উনাদের কারো
সম্মানিত বয়স মুবারক প্রায় ১৯ বছর, কারো সম্মানিত বয়স মুবারক প্রায় ১৫ বছর, কারো সম্মানিত বয়স মুবারক প্রায় ১৩ বছর। অবশেষে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত
কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিতা বানাত আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের থেকে
বিদায় নিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করে মহান
আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত দীদার মুবারক-এ তশরীফ মুবারক নেন। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল
মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত জুদায়ী মুবারক উনার কারণে
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অজস্র
ধারায় সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ! বানাতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা
আলাইহাস সালাম তিনি, সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ
হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারাও উনাদের মহাসম্মানিত পিতা নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উনাদের
মহাসম্মানিতা মাতা উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত
জুদায়ী মুবারক উনার কারণে অজস্র ধারায় সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত
করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার
সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ১৫ বছর। সময়টি ছিলো শি‘আবে আবী ত্বালিব থেকে
ফেরার কয়েক মাস পর। অর্থাৎ আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক
প্রকাশের ১০ম বৎসর ১৭ই রমাদ্বান শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল
মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময়
বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস
সালম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক
উনার আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ!
‘উম্মু আবীহা’ সম্মানিত লক্বব মুবারক উনার মালিকাহ
আহলু
বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত
আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “শুধু শি‘আবে আবী ত্বালিবে নয়; বরং এর পূর্বে এবং পরে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম
তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছিলেন। বিশেষত উম্মুল
মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময়
বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস
সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার তুলনাহীন সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
একজন মা তার সন্তানকে যেভাবে দেখা-শোনা করে থাকেন; ঠিক সেইভাবে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল
সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তাই উনার
একখানা সম্মানিত লক্বব মুবারক হচ্ছেন ‘উম্মু আবীহা’। সুবহানাল্লাহ! এই সম্মানিত
লক্বব মুবারক উনার অর্থ মুবারক হচ্ছেন ‘তিনি উনার স্বীয় পিতা নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মা’। সুবহানাল্লাহ!
যেভাবে
তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছিলেন
উম্মুল
মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি এবং আবূ ত্বালিব উনারা প্রায় কাছাকাছি
সময়ে অর্থাৎ প্রায় ২ মাস পার্থক্যে দুনিয়ার যমীন থেকে বিদায় মুবারক গ্রহণ করেন।
আবূ ত্বালিবের ইন্তেকালের পর কুরাইশরা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর সীমাহীন যুলুম-নির্যাতন শুরু করে দেয়।
না‘ঊযুবিল্লাহ! এই সম্পর্কে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
مَا
بَيْنَ ذٰلِكَ
مَا نَالَتْ
مِنِّـىْ قُرَيْشٌ
شَيْئًا اَكْرَهُهٗ
حَتّٰى مَاتَ
اَبُوْ طَالِبٍ.
অর্থ:
“আবূ তালিবের ইন্তেকালের পূর্বে আমি কষ্ট পাই এমন কোনো কাজ কুরাইশরা করতে সাহস
পেতো না। এখন তারা তা শুরু করেছে।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (দালাইলুন নুবুওওয়াহ
লিলবাইহাক্বী ২/৩৫০, সিয়ারু আ’লামিন
নুবালা ১/১৯৩, তারীখুল ইসলাম ১/২৩৫, খছাইছুল কুবরা ১/১৪৮, তারীখে দিমাশক্ব ইত্যাদি)
এই কঠিন
মুহূর্তে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি ছায়ার মতো
অত্যন্ত বেমেছালভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ!
এই
সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ
حَضْرَتْ عَبْدِ
اللهِ بْنِ
جَعْفَرٍ رَضِىَ
اللهُ تَعَالـٰى
عَنْهُ قَالَ
لَمَّا مَاتَ
اَبُوْ طَالِبٍ
عَرَضَ لِرَسُوْلِ
اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ سَفِيْهٌ
مِّنْ سُفَهَاءِ
قُرَيْشٍ فَاَلْقٰـى
عَلَيْهِ تُرَابًا
فَرَجَعَ اِلـٰى
بَيْتِهٖ فَاَتَتِ
امْرَاَةٌ مِّنْۢ
بَنَاتِهٖ تَـمْسَحُ
عَنْ وَّجْهِهِ
التُّرَابَ وَتَبْكِىْ
قَالَ فَجَعَلَ
يَقُوْلُ اَىْ
بُنَيَّةُ لَا
تَبْكِيَنَّ فَاِنَّ
اللهَ عَزَّ
وَجَلَّ مَانِعٌ
اَبَاكِ.
অর্থ:
“হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন,
আবূ ত্বালিবের ইন্তিকালের পর কুরাইশদের এক মূর্খ-বদবখত
ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
সামনে এসে উনার উপর ধূলি-বালি নিক্ষেপ করে।
ধূলি-ধূসরিত
জিসম মুবারক উনার দিকি তিনি সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ ফিরে আসেন। তখন উনার একজন
মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে) আলাইহাস সালাম তিনি এসে অত্যন্ত কঠিনভাবে সম্মানিত
নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করতে থাকেন এবং সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক
প্রবাহিত করতে করতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার সম্মানিত নূরুর রহমত মুবারক (চেহারা মুবারক) থেকে ধূলি-বালি মুবারক পরিষ্কার
করতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! (রাবি) বলেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
উনাকে সান্তনা মুবারক দিয়ে বলতে লাগলেন,
اَىْ
بُنَيَّةُ لَا
تَبْكِيَنَّ فَاِنَّ
اللهَ عَزَّ
وَجَلَّ مَانِعٌ
اَبَاكِ.
অর্থ:
“হে আমার মহাসম্মানিতা প্রিয় বানাত (মেয়ে) আলাইহাস সালাম! আপনি সম্মানিত নূরুল
মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করবেন না (কান্না মুবারক করবেন না)। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ
পাক তিনিই আপনার মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হিফাযত
মুবারক করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (দালাইলুন নুবুওওয়াহ লিলবাইহাক্বী ২/৩৫০, সিয়ারু আ’লামিন নুবালা ১/১৯৩, তারীখুল ইসলাম ১/২৩৫, খছাইছুল কুবরা
১/১৪৮,
তারীখে দিমাশক্ব ইত্যাদি)
আলোচ্য
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত সেই সুমহান ব্যক্তিত্বা
মুবারকই ছিলেন বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস
সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তাহলে তিনি যে কতো বেমেছালভাবে নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক
উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, তা এখান থেকেই
স্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত
মি’রাজ শরীফ
আনুষ্ঠানিকভাবে
সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ১১তম বছরের ২৭শে রজবুল হারাম শরীফ
লাইলাতুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
সম্মানিত মি’রাজ শরীফ-এ তশরীফ মুবারক নেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একখানা বিশেষ শান মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ
মুবারক ঘটে। সুবহানাল্লাহ! তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে উম্মতের জন্য ৫
ওয়াক্ত ছলাত (নামায) মুবারক হাদিয়াস্বরূপ নিয়ে আসেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত
মি’রাজ শরীফ উনার বিষয়টি বিশ্বাস করে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস
সালাম তিনি ‘ছিদ্দীক্বে আকবর’ লক্বব মুবারক-এ ভূষিত হন। সুবহানাল্লাহ! আর কাফিরেরা
চরম বিরোধিতা করতে থাকে। না‘ঊযুবিল্লাহ! সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ
আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিশেষ শান মুবারক প্রকাশে যেমন অত্যন্ত খুশি
মুবারক প্রকাশ করেন তেমনিভাবে এই বিষয়ে কাফিরদের বিরোধিতায় নিজ মহাসম্মানিত পিতা
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে
সান্তনা মুবারকও দেন। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশের ন্যায়
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং উনার অন্যান্য
মহাসম্মানিতা বোন অর্থাৎ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি এবং
সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা
পুরুষ-মহিলা সকলের মাঝে সর্বপ্রথম ৫ ওয়াক্ত ছলাত মুবারক আদায় শুরু করেন।
সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত হিজরত মুবারক
মহান
আল্লাহ পাক উনার মুবারক নির্দেশে যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত হিজরত মুবারক
করার প্রায় এক থেকে দেড় মাস পর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম
তিনি,
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি, সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম
তিনি,
উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম
তিনি এবং উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়াহ (সাওদা) আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ
উনারা এক সাথে সম্মানিত মদীনা শরীফ উনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। সুবহানাল্লাহ! নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক
নির্দেশক্রমে নির্দিষ্ট স্থান থেকে হযরত জায়িদ ইবনে হারিছাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা
আনহু তিনি এবং হযরত আবূ রাফি’ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অর্থাৎ উনারা
উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দিয়ে সম্মানিত মদীনা শরীফ-এ নিয়ে যান।
সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত তা’লীম-তালক্বীন মুবারক
সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি যখন সম্মানিত মদীনা শরীফ সম্মানিত হিজরত
মুবারক করেন, তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উনার
সম্মানিত বয়স মুবারক প্রায় ১৮ বছর। সম্মানিত মক্কা শরীফ অবস্থান মুবারক করা
অবস্থাতেই তিনি হযরত মহিলা ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুন্না
উনাদেরকে সম্মানিত তা’লীম-তালক্বীন মুবারক দিয়ে আসতেছিলেন। অতঃপর তিনি যখন
সম্মানিত মদীনা শরীফ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন, তখন আরো ব্যাপকভাবে সমস্ত মহিলা ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা
আনহুন্না উনাদেরকে সম্মানিত তা’লীম-তালক্বীন মুবারক দিতে থাকেন। উনার সম্মানিত
তা’লীম-তালক্বীন মুবারক ও সম্মানিত ছোহবত মুবারক উনাদের মাধ্যমে হযরত মহিলা
ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুন্নাগণ বেমেছাল নি‘য়ামত মুবারক লাভে
ধন্য হন। সুবহানাল্লাহ!
চূড়ান্ত বিজয়ী শান মুবারক অবলোকন
বিনতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ
আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত মক্কা শরীফ বিজয় ও হুনাইন বিজয় প্রত্যেকটিই অবলোকন
করেন। একে একে কাফিররা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। উনার সামনে উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনীত
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম পৃথিবীর বুকে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। যেই কুরাইশরা উনার
মহাসম্মানিত আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চরম বিরোধিতা করতো।
উনারা এখন ছাহাবী হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস
সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এই চূড়ান্ত বিজয়ী শান মুবারক দেখে বেমেছাল
খুশি মুবারক প্রকাশ করেন। সুবাহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ
সাইয়্যিদাতুন
নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু
নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, বিনতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ
আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার
পূর্বে কিছু দিন সম্মানিত মারিদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করেন। অতঃপর এই সম্মানিত
মারিদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করা অবস্থায় তিনি ৯ম হিজরী সনের ৬ রমাদ্বান শরীফ
ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফবা’দ ফজর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান
মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ২৬ বছর ৩ মাস ২৫ দিন দুনিয়ার যমীনে
সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত গোসল মুবারক এবং সম্মানিত কাফন মুবারক
নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত
দিক-নির্দেশনা মুবারক অনুযায়ী সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম
উনার সম্মানিত গোসল মুবারক ও সম্মানিত কাফন মুবারক সম্পন করা হয়। সুবহানাল্লাহ!
‘আবূ দাঊদ শরীফ’ উনার মধ্যে এসেছে,
اَنَّ
حَضْرَتْ لَيْلـٰى
بِنْتَ قَانِفِۣ
الثَّقَفِيَّةَ رَضِىَ
اللهُ تَعَالـٰى
عَنْهَا قَالَتْ
كُنْتُ فِـيْمَنْ
غَسَّلَ حَضْرَتْ
اُمَّ كُلْثُوْمٍ
عَلَيْهَا السَّلَامُ
بِنْتَ رَسُوْلِ
اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ عِنْدَ
وَفَاتـِهَا فَكَانَ
اَوَّلُ مَا
اَعْطَانَا رَسُوْلُ
اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ الْـحِقَاءَ
ثُـمَّ الـدِّرْعَ
ثُـمَّ الْـخِمَارَ
ثُـمَّ الْمِلْحَفَةَ
ثُـمَّ اُدْرِجَتْ
بَعْدُ فِـى
الثَّوْبِ الْاٰخَرِ
قَالَتْ وَرَسُوْلُ
اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ جَالِسٌ
عِنْدَ الْبَابِ
مَعَهٗ كَفَنُهَا
يُنَاوِلُنَاهَا ثَوْبًا
ثَوْبًا.
অর্থ:
“হযরত লায়লাহ বিনতে ক্বানিফ ছাকাফিয়্যাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি বলেন, বিনতু রসূলিল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর যারা উনার সম্মানিত গোসল মুবারক করান, আমি উনাদের মধ্যে ছিলাম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রথমে আমাদেরকে ইযার মুবারক দিয়েছিলেন।
অতঃপর ক্বমীছ বা কোর্তা মুবারক, ওড়না বা সেরবন্দ
মুবারক এবং লেফাফা বা চাদর মুবারক দিয়েছিলেন। পরে উনাকে একটি কাপড় মুবারক বা
ছিনাবন্দ মুবারক দ্বারা জড়ানো হয়েছিলো। যখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ
আলাইহাস সালাম উনাকে গোসল মুবারক করানো হচ্ছিলো, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
সম্মানিত দরজা মুবারক-এ সম্মানিত কাফন মুবারক উনার কাপড় মুবারকসহ বসা ছিলেন এবং
একটি একটি করে সম্মানিত কাপড় মুবারক সরবরাহ করে যাচ্ছিলেন।” সুবহানাল্লাহ! (আবূ
দাঊদ শরীফ, মুসনাদে আহমদ, আল আহাদ ওয়াল মাছানী, আস সুনানুল কুবরা লিলবাইহাক্বী, মা’রিফাতুস সুনান ওয়াল আছার ইত্যাদি)
সম্মানিত জানাযা উনার নামায মুবারক পড়া এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ
উনার মধ্যে রাখা
স্বয়ং
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিইয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
সম্মানিত ইমামতী মুবারক করে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম
উনার সম্মানিত জানাযা উনার নামায মুবারক পড়ান। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নির্দেশ
মুবারক অনুযায়ী সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখা হয়। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার জন্য নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক
প্রকাশ
সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময়
বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন উনার
সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ, উনার সম্মানিত
জুদায়ী মুবারক উনার কারণে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত দু’চোখ মুবারক দিয়ে অজস্র ধারায় সম্মানিত নূরুল
মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করেন। এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ
উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ
حَضْرَتْ اَنَسٍ
رَضِىَ اللهُ
تَعَالـٰى عَنْهُ
قَالَ شَهِدْنَا
بِنْتَ رَسُوْلِ
اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ وَرَسُوْلُ
اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ جَالِسٌ
عَلَى القَبْرِ
فَرَاَيْتُ عَيْنَيْهِ
تَدْمَعَانِ.
অর্থ:
“হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে
যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখা হয়, তখন আমরা উপস্থিত ছিলাম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ
আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার নিকট বসা ছিলেন। আর
আমি দেখেছি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার সম্মানিত দু’চোখ মুবারক দিয়ে অজস্র ধারায় সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক
প্রবাহিত হচ্ছেন।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ)
উল্লেখ্য
যে,
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার
কোনো আওলাদ ছিলেন না।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম উনার হযরত
আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে সম্মানিত লক্বব মুবারক দ্বারা সম্বোধন
করার ব্যাপারে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম
খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার এক অনন্য বেমেছাল
মহাসম্মানিত তাজদীদ মুবারক
মুজাদ্দিদে
আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ
আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি শুধু মুজাদ্দিদই নন; বরং তিনি হচ্ছেন পূর্বের এবং পরের সমস্ত মুজাদ্দিদগণ উনাদের সাইয়্যিদ।
সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু যিনি খ¦ালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান
মুবারক রয়েছে, সমস্ত কিছুর অধিকারী হচ্ছেন তিনি।
সুবহানাল্লাহ! উনার বেমেছাল তাজদীদ মুবারকসমূহই উনার সেই শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক উনার
পরিচায়ক। যেখানে কায়িনাতবাসী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহিওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনাদের, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং
উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের
সম্পর্কে বেখবর সেখানে তিনি কায়িনাতের বুকে এক অভূতপূর্ব বেমেছাল মহাসম্মানিত
তাজদীদ মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস
সালাম উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন উনারা।
সুবহানাল্লাহ!
তিনি এই
বিষয়ে অনেক দলীল-আদিল্লা মুবারকও বর্ণনা মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! যেমন, সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক
হয়েছে-
اَنَّ
النَّبِـىَّ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ كَانَ
يَقُوْلُ نَـحْنُ
اَهْلُ بَيْتٍ
طَهَّرَهُمُ اللهُ
مِنْ شَجَرَةِ
النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ
الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ
الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ
الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ
الْعِلْمِ.
অর্থ:
“নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ
মুবারক করতেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে (আমাদেরকে)
সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক
(ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর ৬/৬০৬, ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)
মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক
উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহতাজ। এছাড়া
কায়িনাতের অন্য কারো মুহতাজ নন; বরং কায়িনাতের
সকলেই উনাদের মুহতাজ। সুবহানাল্লাহ! মূলত সমগ্র সৃষ্টি জগতের মাঝে একমাত্র নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরেই উনাদের
শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক, ফযীলত মুবারক।
সুবহানাল্লাহ!
এই
সম্পর্কে সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ
حَضْرَتْ عَلِـىٍّ
كَرَّمَ الله
وَجْهَهٗ عَلَيْهِ
السَّلَامُ قَالَ
قَالَ رَسُوْلُ
اللهِ صَلَّى
الله عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ نَحْنُ
اَهْلُ بَيْتٍ
شَجَرَةُ النُّبُوَّةِ
وَمَعْدِنُ الرِّسَالَةِ
لَيْسَ اَحَدٌ
مِّنَ الْـخَلَائِقِ
يَفْضُلُ اَهْلَ
بَيْـتِـىْ غَيْرِىْ.
অর্থ:
“সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন,
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমরা
সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার সম্মানিত বৃক্ষ মুবারক এবং সম্মানিত রিসালাত
মুবারক উনার সম্মানিত খনি মুবারক। সুবহানাল্লাহ! সমগ্র সৃষ্টি জগতে একমাত্র আমি
ব্যতীত দ্বিতীয় আর কেউ নেই যে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ
আলাইহিমুস সালাম উনাদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করে। অর্থাৎ সমগ্র সৃষ্টি জগতে আমার
পরেই আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের
শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক, ফযীলত মুবারক।”
সুবহানাল্লাহ!
কাজেই
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সম্মানিত
লক্বব মুবারক দ্বারা সম্বোধন করাটাই হচ্ছে আদব এবং রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক
লাভের কারণ। সবুহানাল্লাহ! আর উনাদেরকে সরাসরি উনাদের নাম মুবারক দ্বারা সম্বোধন
করা চরম আদবের খিলাফ এবং অসন্তুষ্টি লাভের কারণ। না‘ঊযুবিল্লাহ!
মহান
আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَلِلّٰهِ
الْاَسْـمَاءُالْـحُسْنٰـى
فَادْعُوْهُ بِـهَا
অর্থ:“মহান
আল্লাহ পাক উনার অনেক সুন্দর সুন্দর সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক তথা
সম্মানিত লক্বব মুবারক রয়েছেন, তোমরা উনাকে সেই
সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক তথা সম্মানিত লক্বব মুবারক দ্বারা আহ্বান
করো।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আ’রাফ শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত
শরীফ ১৮০)
এই
সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে বা ব্যাখ্যায় বর্ণিত রয়েছে-
وَلرسُوْلِ
اللهِ صَلَّى
الله عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ الْاَسْـمَاءُ
الْـحُسْنٰـى فَادْعُوْهُ
بِـهَا
অর্থ:
“এবং যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনারও অনেক সুন্দর সুন্দর সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক তথা লক্বব মুবারক
রয়েছেন,
তোমরা উনাকে সেই সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক তথা
সম্মানিত লক্বব মুবারক দ্বারা সম্বোধন করো।” সুবহানাল্লাহ!
এবং ঠিক একইভাবে
وَلِاَهْلِ
بَيْتِ رَسُوْلِ
اللهِ صَلَّى
الله عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ الْاَسْـمَاءُالْـحُسْنٰـى
فَادْعُوْهُمْ بِـهَا.
অর্থ:
“নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরও অনেক সুন্দর
সুন্দর সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক তথা সম্মানিত লক্বব মুবারক রয়েছেন, তোমরা উনাদেরকে সেই সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক
তথা সম্মানিত লক্বব দ্বারা সম্বোধন করো।” সুবহানাল্লাহ!
সুতরাংসম্মানিত
ও পবিত্র আয়াত শরীফ, সম্মানিত ও
পবিত্র হাদীছ শরীফ এবং ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের দ্বারা প্রমাণিত যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস
সালাম উনাদেরকে উনাদের সম্মানিত লক্বব মুবারক দিয়ে সম্বোধন করাটাই আদব, সুন্নত এবং রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক লাভের কারণ।
সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম
উনাদের মধ্যে তিনটি স্তর রয়েছেন। উনাদের মধ্যে প্রথম স্তরে হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
মহাসম্মানিত হযরত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ! দ্বিতীয় স্তরে
হচ্ছেন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ! তৃতীয়
স্তরে হচ্ছেন হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (নূরে
মুজাসসাম,
হাবীল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
ছেলে সন্তান আলাইহিমুস সালাম) উনারা এবং হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম (নূরে মুজাসসাম, হাবীল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মেয়ে সন্তান
আলাইহিন্নাস সালাম) উনারা এবং উনাদের আওলাদ আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালামগণ
উনারা। সুবহানাল্লাহ! তাই উনাদেরকে উনাদের সম্মানিত লক্বব মুবারক দিয়ে সম্বোধন
করাটাই আদব, সুন্নত এবং রেযামন্দি-সন্তুষ্টি
মুবারক লাভের কারণ। সুবহানাল্লাহ!
হযরত
আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে যেই সম্মানিত লক্বব মুবারক দ্বারা
সম্বোধন করতে হবে :
সাইয়্যিদুল
মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন
নাবিয়্যীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
মহাসম্মানিত আবনা তথা ছেলে আওলাদ আলাইহিমুস সালাম এবং মহাসম্মানিতা বানাত তথা মেয়ে
আওলাদ আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ছিলেন মোট আট (৮) জন। সুবহানাল্লাহ! উনাদের মধ্যে
হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা হচ্ছেন চার (৪) জন
এবং হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন চার (৪) জন।
সুবহানাল্লাহ!
হযরত
আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে যেই সম্মানিত লক্বব
মুবারক দ্বারা সম্বোধন করতে হবে:
১. ইবনু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুল আউওয়াল
(হযরত ক্বাসিম) আলাইহিস সালাম,
২. ইবনু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী (হযরত
ত্বইয়িব) আলাইহিস সালাম,
৩. ইবনু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছ (হযরত
ত্বাহির) আলাইহিস সালাম এবং
৪. ইবনু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রাবি’ (হযরত
ইবরাহীম) আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
হযরত
বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে যেই সম্মানিত লক্বব
মুবারক দ্বারা সম্বোধন করতে হবে :
১. বিনতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা (হযরত
যাইনাব) আলাইহাস সালাম,
২. বিনতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ
(হযরত রুক্বইয়্যাহ) আলাইহাস সালাম,
৩. বিনতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ
(হযরত উম্মু কুলছূম) আলাইহাস সালাম এবং
৪. বিনতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আন নূরুর
রাবি‘য়াহ (হযরত ফাত্বিমা) আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে
আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ
আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি আমাদেরকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত
শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারকসহ সমস্ত বিষয়ে যেরূপ সম্মানিত
আদব মুবারক শিক্ষা দিচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ফালইয়াফরহূ তথা
সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে সমস্ত বিষয়ে সেরূপ
সম্মানিত আদব মুবারক বজায় রাখার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার আযীমুশ শান সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ
সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ উনার পূর্বাভাস
দ্বিতীয়
হিজরী সনের ১৭ই রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুল জুমুয়াহ শরীফ সম্মানিত বদর জিহাদ সংঘটিত হয়।
আর ১৮ই রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুস সাব্ত শরীফ বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। এই দিকে উম্মুল মু’মিনীন আর রাবি‘য়াহ হযরত
ইবনাতু আবীহা (হযরত হাফছাহ) আলাইহাস সালাম উনার যাওজুম মুকাররম (স্বামী) বিশিষ্ট
বদরী ছাহাবী সাইয়্যিদুনা হযরত খুনাইস ইবনে হুযাফাহ সাহমী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা
আনহু তিনিও সম্মানিত মদীনা শরীফ-এ বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তখন সাইয়্যিদুনা
হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন আর রাবি‘য়াহ হযরত ইবনাতু
আবীহা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ উনার প্রস্তাব মুবারক নিয়ে
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে
আকবর আলাইহিস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের নিকট যান। কিন্তু উনারা প্রস্তাবে সাড়া
দেননি। ফলে তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ বিষয়টি উপস্থাপন করেন।
তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
يَتَزَوَّجُ
حَضْرَتْ حَفْصَةَ
عَلَيْهَا السَّلَامُ
مَنْ هُوَ
خَيْرٌمِّـنْحَضْرَتْ
عُثْمَانَ عَلَيْهِ
السَّلَامُ وَيَتَزَوَّجُ
حَضْرَتْ عُثْمَانُ
عَلَيْهِ السَّلَامُ
مَنْ هِىَ
خَيْرٌمِّـنْحَضْرَتْ
حَفْصَةَ عَلَيْهَا
السَّلَامُ.
অর্থ:
“উম্মুল মু’মিনীন আর রাবি‘য়াহ হযরত ইবনাতু আবীহা (হযরত হাফছাহ) আলাইহাস সালাম
উনাকে হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার চেয়ে উত্তম ব্যক্তিত্ব মুবারক তিনি
সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ (শাদী মুবারক) করবেন। আর হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম
তিনি উম্মুল মু’মিনীন আর রাবি‘য়াহ হযরত ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম উনার থেকে
উত্তম ব্যক্তিত্বা মুবারক উনাকে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ করবেন।” সুবহানাল্লাহ!
নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এই
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ থেকেই সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ
আলাইহাস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত
নিসবতে আযীম শরীফ উনার পূর্বাভাস ফুটে উঠে। সুবহানাল্লাহ!
অপর
বর্ণনায় রয়েছে, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
هَلْ
اَدُلُّكَ عَلـٰى
خَيْرٍ مِّنْ
ذٰلِكَ اَتَزَوَّجُ
اَنَا حَضْرَتْ
حَفْصَةَ عَلَيْهَا
السَّلَامُ وَاُزَوِّجُ
حَضْرَتْ عُثْمَانَ
عَلَيْهِ السَّلَامُ
خَيْرًا مِّـنْـهَـا
حَضْرَتْ اُمَّ
كُلْثُوْمٍ عَلَيْهَا
السَّلَامُ.
অর্থ:
“আমি কি আপনাকে এর চেয়ে উত্তম বিষয় অবহিত করবো না? আমি উম্মুল মু’মিনীন আর রাবি‘য়াহ হযরত ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম উনাকে
সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ করবো এবং হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে উনার
চেয়ে উত্তম ব্যক্তিত্বা মুবারক সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম আলাইহাস সালাম
উনার সাথে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ দিবো।” সুবহানাল্লাহ! (সিমতুন নুজূম)
ثُـمَّ
خَطَبَهَا مِنْهُ
فَزَوَّجَهٗ حَضْرَتْ
عُمَرُ عَلَيْهِ
السَّلَامُ.
অর্থ:
“অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
উম্মুল মু’মিনীন আর রাবি‘য়াহ হযরত ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত
নিসবতে আযীম শরীফ করার জন্য সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার
নিকট প্রস্তাব মুবারক দেন এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি
উম্মুল মু’মিনীন আর রাবি‘য়াহ হযরত ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম উনাকে নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সম্মানিত নিসবতে
আযীম শরীফ দেন। অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম হিসেবে গ্রহণ করেন।”
সুবহানাল্লাহ!
আযীমুশ শান সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ
সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী
শান মুবারক প্রকাশ করার প্রায় ৬ মাস পর সাইয়্যিদুশ শুহূর মহাসম্মানিত রবীউল আউওয়াল
শরীফ মাস উনার ৩ তারিখ লাইলাতুল জুমুয়াহ শরীফ (জুমুয়াবার রাত) তথা ইয়াওমুল খমীস
দিবাগত বাদ মাগরিব মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত ওহী মুবারক প্রাপ্ত
হয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
উনার মহাসম্মানিতা বানাত সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার
সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ
প্রদান করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস
সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ২০ বছর। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদুনা
হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ৪৯ বছর।
সুবহানাল্লাহ! প্রকৃতপক্ষে মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ
বিশেষভাবে অনুষ্ঠান করে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার
সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ
সুসম্পন্ন করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর তিনি উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনাকে উনাদের আযীমুশ শান সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ দুনিয়ার যমীনে
সুসম্পন্ন করার জন্য সম্মানিত ওহী মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
এই
সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ
حَضْرَتْ اَبِىْ
هُرَيْرَةَ رَضِىَ
اللهُ تَعَالـٰى
عَنْهُ اَنَّ
رَسُوْلَ اللهِ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
لَقِىَ حَضْرَتْ
عُثْمَانَ بْنَ
عَفَّانَ عَلَيْهِ
السَّلَامُ وَهُوَ
مَغْمُوْمٌ فَقَالَ
مَا شَاْنُكَ
يَا حَضْرَتْ
عُثْمَانُ عَلَيْهِ
السَّلَامُ قَالَ
بِاَبِـىْ اَنْتَ
يَا رَسُوْلَ
اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ وَاُمِّـىْ
هَلْ دَخَلَ
عَلـٰى اَحَدٍ
مِّـنَ النَّاسِ
مَا دَخَلَ
عَلَىَّ تُوُفِّـيَتْ
بِنْتُ رَسُوْلِ
اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ رَحِمَهَا
اللهُ وَانْقَطَعَ
الصِّهْـرُ فِيْمَا
بَيْنِـىْ وَبَيْنَكَ
اِلـٰى اٰخِرِ
الْاَبَدِ فَقَالَ
رَسُوْلُ اللهِ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
اَتَقُوْلُ ذٰلِكَ
يَا حَضْرَتْ
عُثْمَانُ عَلَيْهِ
السَّلَامُ وَهٰذَا
حَضْرَتْ جِبْرِيْلُ
عَلَيْهِ الصَّلَاةُ
وَالسَّلَامُ يَاْمُرُنِـىْ
عَنْ اَمْرِ
اللهِ عَزَّ
وَجَلَّ اَنْ
اُزَوِّجَكَ اُخْتَهَا
حَضْرَتْ اُمَّ
كُلْثُوْمٍ عَلَيْهَا
السَّلَامُ عَلـٰى
مِثْلِ صَدَاقِهَا
وَعَلـٰى مِثْلِ
عِدَّتِـهَا فَزَوَّجَهٗ
رَسُوْلُ اللهِ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
اِيَّاهَا.
অর্থ:
“হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। (তিনি বলেন, একদা) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে চিন্তিত
অবস্থায় দেখলেন। তারপর তিনি উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করলেন, হে হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম! আপনার কী অবস্থা? (আপনাকে এরূপ চিন্তিত দেখা যাচ্ছে কেন?) তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আপনার জন্য আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক! আমার উপর যে মুছীবত এসেছে, সেটা কী অন্য কারো উপর অর্পিত হয়েছে? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা আওলাদ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস
সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। মহান
আল্লাহ পাক তিনি উনার উপর রহম করুন! আর আমার এবং আপনার মাঝে যে, আত্মীয়তার সম্পর্ক মুবারক ছিলো, সেটা চিরতরে শেষ হয়ে গেছে। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন
আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনি এই কথা বলছেন?
এইতো ইনি
হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম, তিনি মহান
আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে আমার নিকট এই সম্মানিত সংবাদ মুবারক নিয়ে এসেছেন যে, আমি যেন, সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা বোন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার অনুরূপ এবং সমপরিমাণ
মোহরানাসহ আপনার সাথে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ সুসম্পন্ন করি। সুবহানাল্লাহ!
অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন
নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার অনুরূপ সম্মানিত মোহরানা মুবারক অনুযায়ী হযরত
যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ দেন।”
সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম শরীফ, ৪/৫৪)
মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ
اُمِّ الْـمُؤْمِنِيْنَ
الثَّالِثَةِ حَضْرَتْ
اَلصِّدِّيْقَةِ (حَضْرَتْ
عَائِشَةَ) عَلَيْهَا
السَّلَامُ قَالَتْ
قَالَ رَسُوْلُ
اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ اَتَانِـىْ
حَضْرَتْ جِبْرِيْلُ
عَلَيْهِ السَّلَامُ
فَقَالَ اِنَّ
اللهَ يَاْمُرُكَ
اَنْ تُـزَوِّجَ
حَضْرَتْ عُثْمَانَ
عَلَيْهِ السَّلَامُ
حَضْرَتْ اُمَّ
كُلْثُوْمٍ عَلَيْهَا
السَّلَامُ عَلـٰى
مِثْلِ صَدَاقِ
حَضْرَتْ رُقَيَّةَ
عَلَيْهَا السَّلَامُ
وَعَلـٰى مِثْلِ
صَحْبَتِهَا.
অর্থ:
“উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম
তিনি এসেছেন। অতঃপর তিনি বলেছেন, নিশ্চয়ই মহান
আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে জানাচ্ছেন যে, আপনি যেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার অনুরূপ সম্মানিত মোহরানা
মুবারক অনুযায়ী হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে সম্মানিত নিসবতে আযীম
শরীফ দেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম শরীফ, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ, ইবনে আসাকির)
মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ
اُمِّ الْـمُؤْمِنِيْنَ
الثَّالِثَةِ حَضْرَتْ
اَلصِّدِّيْقَةِ (حَضْرَتْ
عَائِشَةَ) عَلَيْهَا
السَّلَامُ قَالَتْ
قَالَ رَسُوْلُ
اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ اِنَّ
اللهَ عَزَّ
وَجَلَّ اَوْحٰـى
اِلَـىَّ اَنْ
اُزَوِّجَ كَرِيـْمَتَـىَّ
مِنْ حَضْرَتْ
عُثْمَانَ عَلَيْهِ
السَّلَامُ حَضْرَتْ
رُقَيَّةَ عَلَيْهَا
السَّلَامُ وَحَضْرَتْ
اُمَّ كُلْثُوْمٍ
عَلَيْهَا السَّلَامُ.
অর্থ:
“উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার নিকট
সম্মানিত ওহী মুবারক প্রেরণ করেছেন, আমি যেন আমার মহাসম্মানিতা দুইজন আওলাদ আলাইহিমাস সালাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন
নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার ও সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস
সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ হযরত যুন নূরাইন
আলাইহিস সালাম উনার সাথে সুসম্পন্ন করি।” সুবহানাল্লাহ! (মা’রিফাতুছ ছাহাবা লিআবী
নাঈম ২২/২২৪)
মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ
حَضْرَتْ اِبْنِ
عَبَّاسٍ رَضِىَ
اللهُ تَعَالـٰى
عَنْهُ قَالَ
قَالَ رَسُوْلُ
اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ اِنَّ
اللهَ تَعَالـٰى
اَوْحـٰى اِلَـىَّ
اَنْ اُزَوِّجَ
كَرِيـْمَتَـىَّ مِنْ
حَضْرَتْ عُثْمَانَ
عَلَيْهِ السَّلَامُ
يَعْنِىْ حَضْرَتْ
رُقَيَّةَ عَلَيْهَا
السَّلَامُ وَحَضْرَتْ
اُمَّ كُلْثُوْمٍ
عَلَيْهَا السَّلَامُ.
অর্থ:
“হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন,
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার নিকট সম্মানিত ওহী মুবারক
প্রেরণ করেছেন, আমি যেন আমার মহাসম্মানিতা দুইজন
আওলাদ আলাইহিমাস সালাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার ও
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের
সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে সুসম্পন্ন
করি।” সুবহানাল্লাহ! (ফাদ্বাইলুছ ছাহাবা ১/১১২, আল মু’জামুল আওসাত্ব ৪/১৮, আল মু’জামুছ
ছগীর ১/২৫৩, মাজমাউয যাওয়াইদ ৫/৩৮৯, আল ফাতহুল কাবীর ১/৩০৪, জামিউল আহাদীছ ৭/৪৭৬, ইবনে আদী ৫/৭০, ইবনে আসাকির ৩৯/৪১, জামউল জাওয়ামি’ ১/৮৩৭২, যাখায়েরুল
উক্ববা লি-মুহিব্বে ত্ববরী ১/১৬৩, সুবুলুল হুদা
ওয়ার রশাদ ১১/৩৩, আর রিয়াদ্বুন
নাদ্বরাহ ১/২০২ ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ
حَضْرَتْ اَنَسِ
بْنِ مَالِكٍ
رَضِىَ اللهُ
تَعَالـٰى عَنْهُ
قَالَ قَالَ
رَسُوْلُ اللهِ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
خَيْرُ الشَّفِيْعِ
لِـحَضْرَتْ عُثْمَانَ
عَلَيْهِ السَّلَامُ
مَا اَنَا
اُزَوِّجُ بَنَاتِىْ
وَلٰكِنَّ اللهَ
تَعَالـٰى يُـزَوِّجُـهُـنَّ.
অর্থ:
“হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন,
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার জন্য সর্বোত্তম সুপারিশকারী রয়েছেন। আমি
আমার মহাসম্মানিতা আওলাদ আলাইহিমাস সালাম উনাদের সাথে হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস
সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ সুসম্পন্ন করিনি; বরং মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং নিজেই সেটা সুসম্পন্ন
করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম)
অপর
বর্ণনায় রয়েছে,
عَنْ
حَضْرَتْ اَبِـىْ
هُرَيْرَةَ رَضِىَ
اللهُ تَعَالـٰى
عَنْهُ قَالَ
قَالَ حَضْرَتْ
عُثْمَانُ عَلَيْهِ
السَّلَامُ لَمَّا
مَاتَتِ امْرَاَتِـىْ
حَضْرَتْ رُقَيَّةُ
عَلَيْهَا السَّلَامُ
بِنْتُ رَسُوْلِ
اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ بَكَيْتُ
بُكَاءً شَدِيْدًا
فَقَالَ عَلَيْهِ
الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ
مَا يُبْكِيْكَ
قُلْتُ اَبْكِـىْ
عَلَـى انْقِطَاعِ
صِهْرِىْ مِنْكَ
قَالَ فَهٰذَا
حَضْرَتْ جِبْرِيلُ
عَلَيْهِ السَّلَامُ
يَاْمُرُنِـىْ بِاَمْرِ
اللهِ اَنْ
اُزَوِّجَكَ اُخْتَهَا
وَالَّذِىْ نَفْسِىْ
بِيَدِهٖ لَوْ
اَنَّ عِنْدِىْ
مِائَةَ بِنْتٍ
يَّـمُتْـنَ وَاحِدَةٌ
ۢبَعْدَ وَاحِدَةٍ
زَوَّجْتُكَ اُخْرٰى
حَتّٰى لَا
يَبْقٰى بَعْدَ
الْمِائَةِ شَيْءٌ
هٰذَا حَضْرَتْ
جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ
السَّلَامُ اَخْبَرَنِـىْ
اَنَّ اللهَ
يَاْمُرُنِـىْ اَنْ
اُزَوِّجَكَ اُخْتَهَا
وَاَنْ اَجْعَلَ
صَدَاقَهَا مِثْلَ
صَدَاقِ اُخْتِهَا.
অর্থ:
“হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি (আমাকে)
বলেছেন,
যখন আমার মহাসম্মানিতা যাওজাতুম মুকাররমাহ বিনতু রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস
সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, আমি অত্যন্ত কঠিনভাবে কান্না মুবারক করতে থাকি। তখন নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে
উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন, কোন্ বিষয়
আপনাকে কাঁদাচ্ছে? অর্থাৎ আপনি কি
কারণে কান্না মুবারক করছেন? আমি বললাম, আমি কান্না মুবারক করছি এই জন্য যে, আমার এবং আপনার মাঝে যে, আত্মীয়তার সম্পর্ক মুবারক ছিলো, সেটা নিঃশেষ হয়ে গেছে। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে
উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন, এইতো ইনি হযরত
জিবরীল আলাইহিস সালাম, তিনি মহান
আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে আমাকে এই সংবাদ মুবারক দিয়েছেন যে, আমি যেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত
আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা বোন (সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন
নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম) উনাকে আপনার নিকট সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ দেই।
যেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরতী হাত মুবারক-এ আমার সম্মানিত রূহ মুবারক (প্রাণ
মুবারক) উনার কসম! যদি আমার নিকট একশত বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম উনারা
থাকতেন এবং একজন উনার পর অপরজন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক
প্রকাশ করতেন, তাহলে আমি একজন একজন করে উনাদের
প্রত্যেককে আপনার নিকট সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ দিতাম। এমনকি আমার একশত বানাত (মেয়ে)
আলাইহিন্নাস সালাম উনারা কেউ বাকী থাকতেন না। সুবহানাল্লাহ! এইতো ইনি হযরত জিবরীল
আলাইহিস সালাম, তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ
থেকে আমার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এই সংবাদ মুবারক পেশ করেছেন যে, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে জানাচ্ছেন যে, আমি যেন, সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা বোন (সাইয়্যিদাতুনা হযরত
আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম) উনাকে আপনার নিকট সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ দেই
এবং উনার মহাসম্মানিতা বোন উনার মোহরানা মুবারক উনার অনুরূপ উনার মোহরানা মুবারক
নির্ধারণ করি। সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খমীস ১/২৭৬, সিমতুন নুজূম ২/৫৩৭)
এই সকল
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মাধ্যমে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান
মুবারক উনার বিষয়টি অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ উনার বর্ণনা
মুবারক
মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ
حَضْرَتْ اِبْنِ
عَبَّاسٍ رَضِىَ
اللهُ تَعَالـٰى
عَنْهُ قَالَ
سَـمِعْتُ رَسُوْلَ
اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ يَقُوْلُ
مَا زَوَّجْتُ
حَضْرَتْ عُثْمَانَ
عَلَيْهِ السَّلَامُ
حَضْرَتْ اُمَّ
كُلْثُوْمٍ عَلَيْهَا
السَّلَامُ اِلَّا
بِوَحْـىٍ مِّنَ
السَّمَاءِ.
অর্থ:
“হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি শুনেছি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করেছেন, আমি সম্মানিত
ওহী মুবারক প্রাপ্ত হয়েই সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার
সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ
সুসম্পন্ন করেছি।” সুবহানাল্লাহ! (আশ শরী‘য়াহ ৪/১৯৩৯, আল মু’জামুল আওসাত্ব ৫/২৬৪, আল মু’জামুল কাবীর ২৫/৯২ ইত্যাদি)
সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ উনার বর্ণনা
মুবারক দিতে যেয়ে উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি
বলেছেন,
যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার লখতে জিগার সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ
আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ দেন, তখন তিনি হযরত উম্মু আইমন আলাইহাস সালাম উনাকে বলেন, আপনি আমার মহাসম্মানিতা আওলাদ আলাইহাস সালাম উনাকে প্রস্তুত
করুন এবং উনাকে হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত হুজরা শরীফ উনার
মধ্যে নিয়ে যান। সুবহানাল্লাহ! হযরত উম্মু আইমন আলাইহাস সালাম তিনি তাই করলেন।
অতঃপর সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ সম্পন্ন হওয়ার তিন দিন পর নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার লখতে জিগার
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে দেখার জন্য সাইয়্যিদুনা
হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত হুজরা শরীফ উনার মধ্যে সম্মানিত
তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ!
তারপর
তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ
মুবারক করেন,
يَا
بُنَيَّةُ كَيْفَ
وَجَدْتِّ بَعْلَكِ
قَالَتْ خَيْرُ
بَعْلٍ فَقَالَ
النَّبِـىُّ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ اَمَا
اِنَّهٗ اَشْبَهُ
النَّاسِ بِـجَدِّكِ
حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمَ
عَلَيْهِ السَّلَامُ
وَاَبِيْكِ مُحَمَّدٍ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ:
“হে আমার মহাসম্মানিতা প্রিয় আওলাদ আলাইহাস সালাম! আপনি আপনার সম্মানিত আহাল উনাকে
কিরূপ পেয়েছেন? জবাবে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন
নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, আমি উনাকে সর্বোত্তম আহাল হিসেবে পেয়েছি। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সাবধান! তিনি মানুষের মাঝে আপনার সম্মানিত দাদা সাইয়্যিদুনা
হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাথে এবং আপনার মহাসম্মানিত আব্বাজান
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে
সর্বাধিক সম্মানিত সাদৃশ্যতা মুবারক রাখেন।” সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত যুন নূরাইন লক্বব মুবারক
উনার বহিঃপ্রকাশ
সাইয়্যিদুনা
হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি এই সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ উনার ফলশ্রুতিতে
একখানা সম্মানিত বিশেষ লক্বব মুবারক-এ ভূষিত হন। আর সেই সম্মানিত বিশেষ লক্বব
মুবারকখানা হলেন ‘যুন নূরাইন’ অর্থাৎ মহাসম্মানিত দুই নূর মুবারক উনাদের অধিকারী, উনাদের খাদিম।’ সুবহানাল্লাহ! এই মহাসম্মানিত দুই নূর
মুবারক হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার দুইজন মহাসম্মানিতা আওলাদ আলাইহিমাস সালাম তথা বিনতু রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস
সালাম তিনি এবং বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
এই
সম্পর্কে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
وَاِنِّـىْ
زَوَّجْتُهُ ابْنَتَىَّ
فَذٰلِكَ سَـمَّاهُ
اللهُ عِنْدَ
الْمَلَائِكَةِ ذَا
النُّوْرِ وَسَـمَّاهُ
فِى الْـجِنَانِ
ذَا النُوْرَيْنِ
فَمَنْ شَتَمَ
حَضْرَتْ عُثْمَانَ
عَلَيْهِ السَّلَامُ
فَقَدْ شَتَمَنِـىْ.
অর্থ:
“আর নিশ্চয়ই আমি আমার দুইজন মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে) আলাইহিমাস সালাম উনাদেরকে
সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান আলাইহিস সালাম উনার সাথে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ
দিয়েছি। তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের নিকট হযরত
উছমান আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নাম মুবারক রেখেছেন ‘যুন নূর’ এবং সম্মানিত
জান্নাত মুবারক-এ উনার সম্মানিত নাম মুবারক রেখেছেন ‘যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম’। সুবহানাল্লাহ!
ফলে যে ব্যক্তি উনাকে তিরস্কার করলো, সে মূলত আমাকেই তিরস্কার করলো।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (কানযুল উম্মাল ১৩/৫৩)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
اِنَّـمَا
يُسَمّٰى حَضْرَتْ
عُثْمَانُ عَلَيْهِ
السَّلَامُ ذَا
النُّوْرَيْنِ لِاَنَّهٗ
لَـمْ يـَجْمَعْ
بَيْنَ ابْنَتَـىْ
نَبِـىٍّ فِى
التَّزْوِيْجِ وَاحِدَةً
ۢبَعْدَ الْاُخْرٰى
مِنْ لَّدُنْ
حَضْرَتْ اٰدَمَ
عَلَيْهِ السَّلَامُ
اِلَّا حَضْرَتْ
عُثْمَانُ بْنُ
عَفَّانَ عَلَيْهِ
السَّلَامُ فَلِذٰلِكَ
سُـمِّـىَ ذَا
النُّوْرَيْنِ.
অর্থ: সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান যুন নূরাইন
আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নাম করণ মুবারক করা হয়েছে তথা উনাকে সম্মানিত লক্বব
মুবারক দেয়া হয়েছে, ‘যুন নূরাইন’।
কেননা সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার আদম ছফীউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার থেকে এই
পর্যন্ত একমাত্র সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি ব্যতীত
অন্য কোন ব্যক্তিত্ব মুবারক উনার নিকট কোন হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের
দুই মেয়েকে নিসবতে আযীম শরীফ দেয়া হয়নি। সুবহানাল্লাহ! আর এই কারণেই সাইয়্যিদুনা
হযরত উছমান আলাইহিস সালাম উনাকে ‘যুন নূরাইন’ লক্বব মুবারক হাদিয়া মুবারক করা
হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! (আশ শরী‘য়াহ ৩/৩২৭)
এই
সম্পর্কে বিশ্বখ্যাত সীরাত বিশারদ হাফিয আবুল ফিদা আল্লামা ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি
আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ’ উনার মধ্যে উল্লেখ
করেন,
ثُـمَّ
زَوَّجَهٗ بِاُخْتِهَا
الْاُخْرٰى حَضْرَتْ
اُمِّ كُلْثُوْمٍ
عَلَيْهَا السَّلَامُ
بِنْتِ رَسُوْلِ
اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ وَلِـهٰذَا
كَانَ يُقَالُ
لِـحَضْرَتْ عُثْمَانَ
بْنِ عَفَّانَ
عَلَيْهِ السَّلَامُ
ذُو النُّوْرَيْنِ.
অর্থ:
“নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ পাওয়ার পর উনার অপর মহাসম্মানিতা বোন
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান
ইবনে আফ্ফান আলাইহিস সালাম উনার সাথে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ দেন। এই জন্য
উনাকে ‘যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম’ বলা হয়।” সুবহানাল্লাহ! (বিদায়াহ-নিহায়াহ ৩/৪১৯)
সাইয়্যিদুনা
হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনিই একমাত্র সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক যিনি
পর পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
দুইজন মহাসম্মানিতা আওলাদ আলাইহিমাস সালাম উনাদেরকে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ করে, উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার
সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছালিছাহ আলাইহাস সালাম সম্মানিত লক্বব মুবারক
মহান আল্লাহ পাক
তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَ
لِلّٰهِ الْاَسْـمَاءُ
الْـحُسْنٰـى فَادْعُوْهُ
بِـهَا.
অর্থ:
“মহান আল্লাহ পাক উনার অনেক সুন্দর সুন্দর সম্মানিত নাম মুবারক তথা সম্মানিত লক্বব
মুবারক রয়েছেন, তোমরা উনাকে সেই সম্মানিত নাম
মুবারক তথা সম্মানিত লক্বব মুবারক দ্বারা আহ্বান করো।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা
আ’রাফ শরীফ: সম্মানিত আয়াত শরীফ ১৮০)
মহান
আল্লাহ পাক তিনি যেমন অসীম, ঠিক তেমনিভাবে
উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনার সংখ্যাও অসীম। সুবহানাল্লাহ! অনুরূপভাবে মহান
আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
সম্মানিত লক্বব মুবারক উনার সংখ্যাও অসংখ্য-অসীম। এক কথায় তিনি শুধু মহান আল্লাহ
পাক তিনি নন; এছাড়া সমস্ত সম্মানিত লক্বব
মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! ঠিক একইভাবে আফদ্বালুন নাস ওয়ান
নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন
নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত সম্মানিত লক্বব মুবারক রয়েছেন সমস্ত সম্মানিত
লক্বব মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!
এখানে
উনার কতিপয় সম্মানিত বরকতময় লক্বব মুবারক উল্লেখ করা হলো:
১. بِنْتُ
رَسُوْلِ اللهِ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা
বানাত (মেয়ে) আলাইহাস সালাম।
২. اَهْلُ
بَيْتِ رَسُوْلِ
اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ (আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত
হযরত আহলু বাইত শরীফ।
৩. سَيِّدَةُ
النِّسَاءِ عَلَي
الْعَالَمِيْنَ (সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন)- সমস্ত আলমের সকল মহিলা
উনাদের সাইয়্যিদাহ।
৪. سَيِّدَةُ
نِسَاءِ اَهْلِ
الْـجَنَّةِ (সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ)- সম্মানিত জান্নাতবসী সমস্ত
মহিলা উনাদের সাইয়্যিদাহ।
৫. بِضْعَةٌ
مِّنْ رَّسُوْلِ
اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ (বিদ্ব‘আতুম মির রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত জিসম মুবারক উনার সম্মানিত গোশত
মুবারক উনার একখানা টুকরো মুবারক, লখতে জিগার
মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
৬. اَلنُّوْرُ
الثَّالِثَةُ (আন নূরুছ ছালিছাহ): আন নূরুছ ছালিছাহ।
৭. اَفْضَلُ
الـنِّـسَاءِ وَالنَّاسِ
بَعْدَ رَسُوْلِ
اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ (আফদ্বলুন নিসা ওয়ান নাস বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার পর সমস্ত মহিলা এবং সমস্ত পুরুষ উনাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠা ও সর্বোত্তম
ব্যাক্তিত্বা মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
৮. اُمُّ
اَبِيْهَا (উম্মু আবীহা)- উনার মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম।
৯. اَلسَّيِّدَةُ (আস সাইয়্যিদাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠা।
১০. اَلْـبُشْرٰى (আল বুশরা)- সম্মানিত সুসংবাদ মুবারক ।
১১. اَلْـحَافِظَةُ (আল হাফিয¦হ)- সর্বোত্তম হিফাযতকারিণী, সর্বশ্রেষ্ঠ সংরক্ষণকারিণী।
১২. اَلْـحَامِدَةُ (আল হামিদাহ)- সর্বোত্তম প্রশংসাকারিণী।
১৩. حَبِيْبَةُ
اللهِ (হাবীবাতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীবাহ।
১৪. اَلْـحَلِيْمَةُ (আল হালীমাহ)- পরম ধৈর্যশীলা, মহাসহনশীলা ।
১৫. اَلْـخَالِصَةُ (আল খ¦ালিছহ)- খালিছাহ, পূত-পবিত্রা।
১৬. اَلْـخَبِيْرَةُ (আল খ¦বীরহ)- মহাবিচক্ষণা।
১৭. اَلْـخَلِيْلَةُ (আল খ¦লীলাহ)- আখাচ্ছুল খাছ মাহবূবাহ।
১৮. خَلِيْلَةُ
الرَّحْـمٰنِ (খ¦লীলাতুর রহমান)- মহান আল্লাহ উনার আখাচ্ছুল খাছ মাহবূবাহ।
১৯. ذَاتُ
السَّكِيْنَةِ (যাতুস সাকীনাহ)- সাকীনাহ, শান্তি, প্রশান্তি, ইতমিনান মুবারক উনাদের মালিকাহ।
২০. اُسْوَةٌ
حَسَنَةٌ (উসওয়াতুন হাসানাহ্)- সর্বোত্তম আদর্শ মুবারক, অনুসরণীয় এবং অনুকরণীয়।
২১. ذَاتُ
الـصِّـرَاطِ الْمُسْتَقِيْمِ (যাতুছ ছিরাত্বিল মুস্তাক্বীম)- ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার
মালিকাহ।
২২. ذَاتُ
الْعِزَّةِ (যাতুল ‘ইযযাহ)- সম্মানিত ইজ্জত মুবারক উনার মালিকাহ।
২৩. ذَاتُ
الْفَضْلِ (যাতুল ফাদ্বল)- সম্মানিত ফযল মুবারক উনার মালিকাহ,
২৪. ذَاتُ
الْكَرَامَةِ (যাতুল কারামাতি)- সম্মানিত কারামত মুবারক উনার মালিকাহ।
২৫. ذَاتُ
الْوَسِيْلَةِ (যাতুল ওয়াসীলাহ)- সম্মানিত ওসীলাহ মুবারক উনার মালিকাহ।
২৬. اَلرَّاضِيَةُ (আর রাদ্বিয়াহ)- আখাচ্ছুল খাছ সন্তুষ্টি মুবারক প্রাপ্তা, সুউচ্চ মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনার অধিকারিণী এবং সুউচ্চ
মর্যাদা-মর্তবা মুবারক দানকারিণী, সন্তুষ্টি মুবারক
প্রদানকারিণী।
২৭. رَحْـمَةُ
الْاُمَّةِ (রহমাতুল উম্মাহ)- সমস্ত উম্মতের জন্য রহমত মুবারক।
২৮. لِّـلْـعَـالَـمِيْنَ
رَحْـمَةٌ (রহমাতুল্লিল ‘আলামীন)- সমস্ত আলমের জন্য সম্মানিত রহমত মুবারক।
২৯. اَلرَّشِيْدَةُ (আর রশীদাহ)- সৎপথপ্রাপ্তা, সৎপথ প্রদর্শনকারিণী, ন্যায়পরায়ণা।
৩০. اَلـزَّكِـيَّةُ (আঝ ঝাকিইয়্যাহ)- পূত-পবিত্রা, মহাবিচক্ষণা।
৩১. اَلسَّابِقَةُ
بِالْـخَيْرَاتِ (আস সাবিক্বতু বিল খইরাত)- খইর, কল্যাণ, ভালাই ইত্যাদি সর্ববিষয়ে
অগ্রগামিণী।
৩২. اَلسَّخِيَّةُ (আস সাখিইয়্যাহ)- মহাদানশীলা।
৩৩. سَـيِّـدَةُ
الْكَوْنَيْنِ (সাইয়্যিদাতুল কাওনাঈন)- দুই জগতের সাইয়্যিদাহ।
৩৪. اَلشَّافِعَةُ (আশ শাফি‘য়াহ)- সর্বোত্তম সুপারিশকারিণী, সর্বশ্রেষ্ঠ শাফায়াতকারিণী।
৩৫. اَلشَّاكِرَةُ (আশ শাকিরহ)- যথার্থ পুরস্কারদানকারিণী, যথাযথ শুকরিয়া আদায়কারিণী।
৩৬. اَلصَّابِرَةُ (আছ ছাবিরহ)- চরম ধৈর্যশীলা।
৩৭. صَاحِبَةُ
الشَّفَاعَةِ (ছাহিবাতুশ শাফা‘আহ)- সম্মানিত শাফায়াত মুবারক উনার মালিকাহ।
৩৮. صَاحِبَةُ
الْفَضِيْلَةِ (ছাহিবাতুল ফাদ্বীলাহ)- সম্মানিত ফযীলত মুবারক উনার মালিকাহ।
৩৯. صَاحِبَةُ
الْـخَيْرِ (ছাহিবাতুল খইর)- সমস্ত কল্যাণ মুবারক উনাদের মালিকাহ।
৪০. صَاحِبَةُ
الْكَوْثَرِ (ছাহিবাতুল কাওছার)- সম্মানিত কাওছার মুবারক উনার মালিকাহ, সম্মানিত খাইরে কাছীর মুবারক তথা সমস্ত সম্মানিত ভালাই বা
কল্যাণ মুবারক উনাদের মালিকাহ।
৪১. صَاحِبَةُ
الْـحَوْضِ (ছাহিবাতুল হাউদ্ব)- সম্মানিত হাউযে কাওছার মুবারক উনার মালিকাহ।
৪২. صَاحِبَةُ
الدَّرَجَةِ الْعَالِيَةِ
الرَّفِيْعَةِ (ছাহিবাতুদ দারাজাতিল ‘আলিয়াতির রফী‘য়াহ) সুউচ্চ সুমহান সম্মানিত
দারাজাত তথা সম্মান ও মাক্বামাত মুবারক উনার মালিকাহ।
৪৩. صَاحِبَةُ
السُّلْطَانِ (ছাহিবাতুস সুলত্বান)- যাহিরী-বাতিনী সর্বদিক থেকে সর্বোচ্চ
কর্তৃত্ব মুবারক উনার মালিকাহ।
৪৪. الصِّدِّيْقَةُ (আছ ছিদ্দীক্বহ)- চরম সত্যবাদী।
৪৫. اَلطَّاهِرَةُ (আত্ব ত্বাহিরহ)- পূত-পবিত্রা, পূত-পবিত্রতাদানকারিণী।
৪৬. اَلطَّبِيْبَةُ (আত ত্ববীবাহ)- যাহিরী-বাতিনী, জিসমানী-রূহানী সর্বশ্রেষ্ঠ শিফাদানকারিণী, আরোগ্যদানকারিণী।
৪৭. اَلـطَّـيِّـبَةُ (আত্ব ত্বইয়্যিবাহ)- মহাপবিত্রা, সর্বশ্রেষ্ঠা।
৪৮. اَلْعَابِدَةُ (আল ‘আবিদাহ)- একনিষ্ঠ ইবাদাতকারিণী, মহান আল্লাহ পাক উনার চরম অনুগতা ও আখাচ্ছুল খাছ মাহবূবা
ব্যক্তিত্বা মুবারক।
৪৯. اَلْعَادِلَةُ (আল ‘আদিলাহ)- চরম ন্যায়বিচারকারিণী, চরম ন্যায়পরায়ণা।
৫০. اَلْعِصْمَةُ (আল ‘ইছমাহ)- মহাপবিত্রা, পূত-পবিত্রা।
৫১. عِصْمَةُ
اللهِ تَعَالـٰى (‘ইছমাতুল্লাহি তা‘য়ালা) মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে
সর্বপ্রকার পাপ থেকে মুক্ত, মহাপবিত্রা, পূত-পবিত্রা।
৫২. اَلْعَظِيْمَةُ (আল ‘আযীমাহ)- মহাসম্মানিতা, সুমহান মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনার অধিকারিণী।
৫৩. اَلْعَزِيْزَةُ (আল ‘আযীযাহ)- মাহবূবাহ, মহাসম্মানিতা, বেমেছাল
মর্যাদা-মর্তবা ও প্রভাব-প্রতিপত্তি মুবারক উনার অধিকারিণী, মালিকাহ।
৫৪. اَلْغَنِيَّةُ (আল গ¦নিয়্যাহ)- মহাসম্পদশালিনী, মহাধনী, অমুখাপেক্ষী।
৫৫. اَلْفَاضِلَةُ (আল ফাদ্বিলাহ)- মহাসম্মানিতা, সুউচ্চ মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনার অধিকারিণী, সর্বশ্রেষ্ঠা, সর্বসেরা।
৫৬. اَلْفَائِقَةُ (আল ফায়িক্বহ)- সর্বশ্রেষ্ঠা, অনন্যা।
৫৭. اَلْفَصِيْحَةُ (আল ফাছীহাহ)- সুভাষিণী, বিশুদ্ধভাষিণী।
৫৮. اَلْقَاسـِمَةُ (আল ক্বাসিমাহ)- বণ্টনকারিণী।
৫৯. اَلْقَاضِـيَةُ (আল ক্বাদ্বিয়াহ)Ñ ফায়সালাকারিণী।
৬০. اَلْقَائِدَةُ (আল ক্বায়িদাহ)- সাইয়্যিদাহ, মহানপরিচালিকা, হিদায়াত উনার
পথে পরিচালনাকারিণী।
৬১. قَائِدَةُ
الْـخَيْرِ (ক্বায়িদাতুল খইর)- কল্যাণের দিকে পরিচালনাকারিণী, যিনি সবাইকে কল্যাণের দিকে নিয়ে যান।
৬২. اَلْقَرِيْبَةُ (আল ক্বরীবাহ)- চিরনিকটবর্তী, অতি নিকটস্থ, অতি ঘনিষ্ঠ।
৬৩. اَلْكَرِيْـمَةُ (আল কারীমাহ)- মহাসম্মানিতা, মহামর্যাদাবান, মহাদানশীলা।
৬৪. اَلْمُؤْتَـمَنَةُ (আল মু’তামানাহ)- চির বিশ্বস্ত, সর্বশ্রেষ্ঠ আমানতদার, আমানতের যথাযথ
হিফাযতকারিণী।
৬৫. اَلْمَأْمُوْنَةُ (আল মা’মূনাহ)- নিরাপদ, চির বিশ্বস্ত।
৬৬. اَلْمَعْصُوْمَةُ (আল মা’ছূমাহ)- নিষ্পাপ, মা’ছূমাহ।
৬৭. اَلْمَاجِدَةُ (আল মাজিদাহ)- গৌরবময়ী, মহামর্যাদাবান, মহান, গৌরবান্বিত।
৬৮. اَلْمُعَظَّمَةُ (আল মু’য়ায্যমাহ)- মহাসম্মানিতা, মহামর্যাদাবান।
৬৯. اَلْمُعِيْنَةُ (আল মু‘ঈনাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ সাহায্যকারিণী।
৭০. اَلْمُكَرَّمَةُ (আল মুর্কারমাহ)- মহাসম্মানিতা।
৭১. اَلْمَوْعِظَةُ (আল মাও‘িয়যহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারিণী।
৭২. اَلْمُهَذَّبَةُ (আল মুহায্যাবাহ)- পূত-পবিত্রা, মহাপবিত্রা।
৭৩. اَلنَّاصِحَةُ (আল নাছিহাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারিণী, উপদেশদানকারিণী।
৭৪. اَلْمَانِعَةُ (আল মানি‘আহ)- (সম্মানিত শরীয়ত উনার খিলাফ সমস্ত কাজে)
সর্বশ্রেষ্ঠ বাধা দানকারীণী, নিষেধকারীণী।
৭৫. اَلْمُبَارِكَةُ (আল মুবারিকাহ)- বরকতদানকারিণী, কল্যাণদানকারিণী।
৭৬. اَلْمُبَلِّغَةُ (আল মুবাল্লিগহ)- সম্মানিত দ্বীন উনার প্রতি আহ্বানকারিণী।
৭৭. اَلْمُتَـبَسِّمَةُ (আল মুতাবাসসিমাহ)- হাস্যোজ্জ্বল, যিনি মুচকি হাসি মুবারক দেন।
৭৮. اَلْمُتَّقِيَةُ (আল মুত্তাক্বিয়াহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ মুত্তাক্বী, সর্বশ্রেষ্ঠ পরহেযগার।
৭৯. اَلْمُتَوَكِّلَةُ (আল মুতাওয়াক্কিলাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ তাওয়াক্কুলকারিণী।
৮০. اَلْمَتِيْنَةُ (আল মাতীনাহ)- মহাশক্তিমান, মহাশক্তিধর।
৮১. اَلْمُجَاهِدَةُ (আল মুজাহিদাহ)- মুজাহিদাহ, জেহাদকারিণী।
৮২. اَلْمُجِيْبَةُ (আল মুজীবাহ)- সাড়া দানকারিণী।
৮৩. اَلْمُجِيْرَةُ (আল মুজীরহ)- আশ্রয়দানকারিণী, সাহায্যকারিণী, রক্ষাকারিণী, উদ্ধারকারিণী।
৮৪. اَلْمَجِيْدَةُ (আল মাজীদাহ)- মহামর্যাদাবান, মহীয়ান, গৌরবান্বিত, গৌরবময়ী।
৮৫. اَلْمَحْفُوْظَةُ (আল মাহফূযহ)- সংরক্ষিত।
৮৬. اَلْمَحْمُوْدَةُ (আল মাহমূদাহ)- চরম প্রশংসিত।
৮৭. اَلْمُخْبِرَةُ (আল মুখবিরহ)- সুসংবাদ দানকারিণী।
৮৮. اَلْمُخْتَارَةُ (আল মুখ¦তারহ)- মনোনীত, সর্বশ্রেষ্ঠা।
৮৯. اَلْمُخْتَصَّةُ (আর মুখতাচ্ছহ)- বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক, আখাচ্ছুল খাছ ব্যক্তিত্বা মুবারক।
৯০. مَدِيْنَةُ
الْعِلْمِ (মাদীনাতুল ‘ইলম)- সম্মানিত ইলম মুবারক উনার শহর, সমস্ত ইলম মুবারক উনার মালিকাহ।
৯১. اَلْمُذَكِّـرَةُ (আল মুযাক্কিরহ)- উপদেশ দানকারিণী, নছীহতকারিণী, তা’লীমদানকারিণী, শিক্ষা দানকারিণী।
৯২. اَلْمُسْتَعِيْذَةُ (আল মুস্তা‘য়ীযাহ)- আশ্রয় প্রার্থনাকারিণী।
৯৩. اَلْمُسْتَقِيْمَةُ (আল মুস্তাক্বীমাহ)- সরল, সঠিক।
৯৪. اَلْمَسْعُوْدَةُ (আল মাস‘ঊদাহ)- সৌভাগ্যশীলা, সর্বশ্রেষ্ঠ ভাগ্যবান।
৯৫. اَلْمَشْهُوْدَةُ (আল মাশহূদাহ)- উপস্থিত, হাযির-নাযির।
৯৬. اَلْمُصَدِّقَةُ (আল মুছদ্দিক্বহ)- সত্যায়নকারিণী।
৯৭. اَلْمُصْلِحَةُ (আল মুছলিহাহ)- ইছলাহকারিণী, সংশোধনকারিণী।
৯৮. اَلْمَعْرُوْفَةُ (আল মা’রূফাহ)- পরিচিত, প্রসিদ্ধ।
৯৯. اَلْمُعَلِّمَةُ (আল মু‘য়াল্লিমাহ)- মু‘য়াল্লিমাহ, তা’লীমদানকারিণী।
১০০. مُعَلِّمَةُ
الْاُمَّةِ (মু‘য়াল্লিমাতু উম্মাহ)- সমস্ত উম্মতকে তা’লীমদানকারিনী।
১০১. مُقِيْمَةُ
السُّنَّةِ (মুক্বীমাতুস সুন্নাহ)- সম্মানিত সুন্নত মুবারক প্রতিষ্ঠাকারিণী, আবাদকারিণী।
১০২. اَلْمُرْشِدَةُ (আল মুরশিদাহ)- পথ প্রদর্শনকারিণী, হিদায়াতদানকারিণী।
১০৩. مَالِكَةُ
الْـجَنَّةِ (মালিকাতুল জান্নাহ)- সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মালিকাহ।
১০৪. مَالِكَةُ
الْكَائِنَاتِ (মালিকাতুল কায়িনাত)- সমস্ত কায়িনাতের মালিকাহ।
১০৫. اَلْمُنْتَصِرَةُ (আল মুনতাছিরহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ বিজয়িনী, মহাশক্তিধর।
১০৬. نَاصِرَةُ
الـدِّيْنِ (নাছিরতুদ্দীন)- সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে সাহায্যকারিণী।
১০৭. اَلنَّاهِيَةُ (আন নাহিয়াহ)- নিষেধকারিণী, বারণকারিণী।
১০৮. اَلنِّعْمَةُ (আল নি’মাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত মুবারক।
১০৯. اَلنَّقِيْبَةُ (আন নাক্বীবাহ)- সাইয়্যিদাহ।
১১০. نِعْمَةُ
اللهِ (নি’মাতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ
নিয়ামত মুবারক।
১১১. اَلنُّوْرُ (আন নূর)- নূর মুবারক।
১১২. اَلنُّوْرُ
الْمُكَرَّمَةُ (আন নূরুল মুকাররমাহ)- সম্মানিত নূর মুবারক।
১১৩. اَلنُّوْرُ
الْمُطَهَّرَةُ (আন নূরুল মুত্বহ্হারহ)- মহাপবিত্র নূর মুবারক।
১১৪. نُوْرُ
اللهِ (নূরুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নূর মুবারক।
১১৫. نُوْرُ
الْاُمَم (নূরুল উমাম)- সমস্ত উম্মতের নূর মুবারক, নূরুল উমাম।
১১৬. نُوْرُ
الْكَائِنَات (নূরুল কায়িনাত)- সমস্ত কায়িনাতের নূর মুবারক।
১১৭. اَلْوَاسِعَةُ (আল ওয়াসি‘আহ)- সীমাহীন ইলম মুবারক উনার অধিকারিণী, মহাদানশীলা।
১১৮. اَلْوَاعِظَةُ (আল ওয়া‘য়িযাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ ওয়ায়েজ, নছীহতকারিণী, উপদেশদানকারিণী।
১১৯. اَلْوَافِـيَةُ (আল ওয়াফিয়াহ)- পরিপূর্ণ, পরিপূর্ণতাদানকারিণী।
১২০. اَلْوَاجِدَةُ (আল ওয়াজিদাহ)- যা চান তাই পান এমন সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক।
১২১. اَلْوَسِيْلَةُ (আল ওয়াসীলাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ ওসীলা, সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম।
১২২. اَلْوَهَّابَةُ (আল ওহ্হাবাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীলা, সীমাহীন দানকারিণী।
১২৩. اَلْـهَادِيَةُ (আল হাদিয়াহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ হিদায়াতকারিণী।
১২৪. هَدِيَّةُ
اللهِ عَلَيْها
السَّلَامُ (হাদিয়্যাতুল্লাহ আলাইহাস সালাম)- মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে
মহাসম্মানিত হাদিয়া মুবারক, তোহফা মুবারক।
সুবহানাল্লাহ!
ইত্যাদি
উনার বিশেষ সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ
উতবাহ ও উতাইবার কঠিন পরিণতি
উসদুল
গাবাহ’তে উল্লেখ রয়েছে,
فَلَمَّا
اَنْزَلَ اللهُ
عَزَّ وَجَلَّ
تَبَّتْ يَدَا
اَبِـىْ لَـهَبٍ
قَالَ اَبُوْ
لَـهَبٍ لِّابْـنَـيْـهِ
رَاْسِىْ مِنْ
رُءُوْسِكُمَا حَرَامٌ
اِنْ لَّـمْ
تُطْلِقَا ابْنَتَىْ
سَيِّدِنَا نَـبِـيِّـنَا
حَبِيْبِنَا شَفِيْعِنَا
مَوْلَانَا مُـحَمَّدٍ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ:
“যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি নাযিল করলেন, ‘আবূ লাহাবের দু’হাত ধ্বংস হোক’। অর্থাৎ সম্মানিত সূরা লাহাব শরীফ নাযিল মুবারক
করলেন,
তখন আবূ লাহাব সে তার দুই পুত্রকে বললো, আমি পুনরায় তোমাদের চেহারা দেখবো না, যদি না তোমরা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা দুই বানাত (মেয়ে) আলাইহিমাস
সালাম উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক থেকে মাহরূম হয়ে না যাও।” না‘ঊযুবিল্লাহ!
(উসদুল গাবাহ)
আর তাদের
মা উম্মে জামীল বলেছিলো,
فَطَـلِّـقَـاهُـمَا
فَفَعَلَا فَطَلَّقَاهُـمَا
قَبْلَ الدُّخُوْلِ
بِـهِمَا.
অর্থ:
“তোমরা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের থেকে জুদা হয়ে যাও। তারা
তাদের মায়ের কথা অনুযায়ী কাজ করলো। ফলশ্রুতিতে উতবাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক থেকে মাহরূম হয়ে গেলো এবং
উতাইবাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত
মুবারক থেকে মাহরূম হয়ে গেলো। উনারা তখনও তাদের ঘরে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক
রাখেননি।” (উসদুল গাবাহ)
কিতাবে
আরো বর্ণিত রয়েছে,
وَكَانَتْ
قَدْ تَزَوَّجَهَا
عُتَيْبَةُ بْنُ
اَبِـىْ لَـهَبٍ
اَخُوْ عُتْبَةَ
الَّذِىْ تَزَوَّجَ
اُخْتَهَا حَضْرَتْ
رُقَيَّةَ عَلَيْهَا
السَّلَامُ وَلَـمْ
يَدْخُلَا بِـهِمَا
فَاَمَرَهٗ اَبُوْهُ
وَاُمُّهٗ اَنْ
يُّفَارِقَهَا كَمَا
اَمَرَا اَخَاهُ
اَنْ يُّفَارِقَ
اُخْتَهَا وَجَاءَ
اِلَى النَّبِىِّ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
فَقَالَ لَهٗ
كَفَرْتُ بِدِيْنِكَ
وَفَارَقْتُ ابْنَتَكَ
لَا تُـحِبُّنِـىْ
وَلَا اُحِبُّكَ
ثُـمَّ سَطَا
عَلَيْهِ فَشَقَّ
قَمِيْصَ النَّبِىِّ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ:
“সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সাথে উতাইবার এবং
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সাথে উতাইবার ভাই উতবার
সম্মানিত আক্বদ শরীফ হয়েছিলো। কিন্তু উনারা তখনও তাদের গৃহে তাশরীফ মুবারক
রাখেননি। এর পূর্বেই উতাইবার বাবা-মা তাকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ
আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক থেকে মাহরূম হয়ে যাওয়ার নির্দেশ
দিয়েছিলো,
যেমনিভাবে তারা উতবাকে নির্দেশ দিয়েছিলো সাইয়্যিদাতুনা হযরত
আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক থেকে মাহরূম হয়ে
যাওয়ার জন্য। উতাইবাহ তার বাবা-মার নির্দেশ পেয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত হয়ে নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বললো,
كَفَرْتُ
بِدِيْــنِكَ وَفَارَقْتُ
ابْنَتَكَ لَا
تُـحِبُّنِـىْ وَلَا
اُحِبُّكَ ثُـمَّ
سَطَا عَلَيْهِ
فَشَقَّ قَمِيْصَ
النَّبِـىِّ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ.
অর্থ:
“আমি আপনার সম্মানিত দ্বীন উনাকে অস্বীকার করলাম এবং আপনার মহাসম্মানিতা আওলাদ
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক
থেকে মাহরূম হয়ে গেলাম। না‘ঊযুবিল্লাহ! আপনি আমাকে মুহব্বত করেন না, আমিও আপনাকে মুহব্বত করি না। নাঊযুবিল্লাহ! অর্থাৎ আপনার
সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। না‘ঊযুবিল্লাহ! অতঃপর সে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং উনার সম্মানিত
কোর্তা মুবারক ছিঁড়ে ফেলে।” না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ!
নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উতাইবার এই
আচরণে চরম অসন্তুষ্ট হন এবং তার বিরুদ্ধে বদদোয়া মুবারক করেন,
اَمَا
اِنِّـىْ اَسْاَلُ
اللهَ اَنْ
يُّـسَـلِّـطَ عَلَيْكَ
كَلْبًا مِّنْ
كِلَابِهٖ .
অর্থ:
“সাবধান! নিশ্চয়ই আমি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট দোয়া মুবারক করছি, তিনি যেন উনার কুকুরসমূহ থেকে একটি কুকুরকে তোমার উপর প্রবল
বা গালিব করে দেন।” সুবহানাল্লাহ!
অপর
বর্ণনায় এসেছে,
فَقَالَ
رَسُوْلُ اللهِ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
اَللّٰهُمَّ سَـلِّـطْ
عَلَيْهِ كَلْبًا
مِّـنْ كِلَابِكَ.
অর্থ: “অতঃপর
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ
মুবারক করেছেন, আয় আল্লাহ পাক! আপনি আপনার
কুকুরসমূহ থেকে একটি কুকুরকে তার উপর প্রবল বা গালিব করে দিন।” সুবহানাল্লাহ!
(দালাইলুন নুবুওওয়াহ লিল বাইহাক্বী, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ)
অন্য
বর্ণনায় রয়েছে,
اَللّٰهُمَّ
سَـلِّـطْ عَلَيْهِ
اَسَدًا.
অর্থ:
“আয় আল্লাহ পাক! আপনি একটি সিংহকে তার উপর প্রবল বা গালিব করে দিন।” সুবহানাল্লাহ!
অপর
বর্ণনায় এসেছে,
اِنَّ
عُتْبَةَابْنَ اَبِـىْ
لَـهَبٍ كَانَ
يَسُبُّ الرَّسُوْلَ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
وَيُؤْذِيْهِ وَيَسْخَرُ
مِنَ الرَّسُوْلِ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
وَمِنَ الْقُرْاٰنِ
فَدَعَا عَلَيْهِ
الرَّسُوْلُ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ وَقَالَ
اللّٰهُمَّ سَـلِّـطْ
عَلَيْهِ كَلْـبًامِّـنْ
كِلَابِكَ.
অর্থ:
“উতবাহ ইবনে আবূ লাহাব সে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনাকে গালি দিয়েছিলো, উনাকে কষ্ট
দিয়েছিলো এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাকে ও সম্মানিত কুরআন শরীফ উনাকে নিয়ে উপহাস করেছিলো, ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করেছিলো। না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ!
ফলশ্রুতিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি উতবার বিরুদ্ধে বদদোয়া মুবারক করেছিলেন।
তিনি
ইরশাদ মুবারক করেছেন,
اَللّٰهُمَّ
سَـلِّـطْ عَلَيْهِ
كَلْـبًا مِّـنْ
كِلَابِكَ.
অর্থ:
“আয় আল্লাহ পাক! আপনি আপনার কুকুরসমূহ থেকে একটি কুকুরকে তার উপর প্রবল বা গালিব
করে দিন।” সুবহানাল্লাহ!
অন্য
বর্ণনায় রয়েছে,
اَللّٰهُمَّ
سَـلِّـطْ عَلَيْهِ
اَسَدًا.
অর্থ:
“আয় আল্লাহ পাক! আপনি একটি সিংহকে তার উপর প্রবল বা গালিব করে দিন।” সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুল
মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূত-পবিত্র যবান মুবারক নিঃসৃত
উপরোক্ত বদদোয়া মুবারক শুনে উতবাহ ও উতাইবার মনে ভীষণ ত্রাসের সঞ্চার হলো। এমনকি
তাদের পিতা আবূ লাহাবের মনেও সেদিন থেকে একটি প্রবল ভীতির সৃষ্টি হলো। সেদিন থেকে
উতবাহ,
উতাইবাহ এবং আবূ লাহাবের চেহারায় সেই ত্রাস ও ভীতির নিদর্শন
এমনভাবে ফুটে উঠলো যে, যেকোনো লোক
তাদেরকে দেখেই মনে করতো যে, নিশ্চয়ই আবূ
লাহাব ও তার দুই পুত্র উতবাহ ও উতাইবাহ কোনো অশুভ চিন্তায় আক্রান্ত হয়েছে। এভাবে
কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর আবূ লাহাব তার দুই পুত্রকে নিয়ে সিরিয়ায় বাণিজ্য সফরের
জন্য প্রস্তুত হলো। কিন্তু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাদের বিরুদ্ধে বদদোয়া মুবারক করার পর তারা যে ত্রাস ও
ভীতির শিকার হয়েছিলো, তা তখনও তাদের
মধ্যে পূর্ণরূপে বিরাজমান ছিলো। সিরিয়ায় বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে তারা
পথিমধ্যে একস্থানে রাত যাপনের জন্য তাঁবু খাটালো। কেউ কেউ উক্ত স্থানের নাম
যারক্বা’ বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু এ সময় তাদের সেই ভীতি ও ত্রাস আরো প্রবল আকার
ধারণ করলো। যার কারণে তারা নিরাপত্তার জন্য তাঁবুর চারদিকে তাদের ব্যবসায়িক
পণ্যসমূহ উঁচু করে স্তূপাকারে রাখলো এবং তার মাঝখানে উতবাহ ও উতাইবার জন্য শোয়ার
ব্যবস্থা করলো। যাতে করে কোনো জীবজন্তু তা অতিক্রম করে উতবাহ ও উতাইবার উপর হঠাৎ
করে হামলা করতে না পারে। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক তিনি যদি কাউকে নিশ্চিহ্ন করতে
চান,
ধ্বংস করতে চান, তাহলে কায়িনাতের বুকে দ্বিতীয় কেউ নেই তাকে রক্ষা করে। গভীর রাতে সবাই যখন
ঘুমে অচেতন, তখন অত্যন্ত ভয়ঙ্কর গর্জন করে
দুইটি সিংহ লাফ দিয়ে পণ্যের উঁচু স্তূপ ডিঙ্গিয়ে উতবাহ ও উতাইবাহর ঘাড়ের উপর যেয়ে
পড়লো এবং চোখের পলকে তাদের ঘাড় মটকিয়ে তাদেরকে পিঠে নিয়ে উধাও হয়ে গেলো।
সুবহানাল্লাহ! কাফিলার যেসব লোক তাঁবু পাহারায় নিযুক্ত ছিলো তারা সবাই ভীত চকিত
নয়নে এই ভয়ানক দৃশ্য দেখলো; কিন্তু তাদের
কিছুই করার ছিলো না। মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে যখন গযব আসে, তখন এভাবেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে হয়। মুহূর্তের মধ্যে কাফিলার
লোকজনের মাঝে হুলুস্থ’ুল পড়ে গেলো। কান্নার রোল উঠলো। কিন্তু করার কিছুই অবশিষ্ট
থাকলো না। আবূ লাহাবের এ সফরে আর সিরিয়া গমন করা হলো না। সে সেখান থেকেই বিষাদ
ভারাক্রান্ত চিত্তে সম্মানিত মক্কা শরীফ ফিরে এলো।
মূলত, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে
এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে
কষ্ট দেয়ার কারণেই তাদের এই ভয়াবহ কঠিন পরিণতি হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ
পাক তিনি খাছ গযব নাযিল করে তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে কষ্ট দেয়ার পরিণতি এরূপ
ভয়ঙ্করই হয়ে থাকে। সুবহানাল্লাহ!
এক নজরে উম্মু আবীহা, বিনতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ
আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত পরিচিতি মুবারক
সাইয়্যিদাতুন
নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, উম্মু আবীহা
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সবচেয়ে বড় পরিচয় মুবারক
হচ্ছেন,
তিনি হলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লখতে জিগার, মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে) আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা হযরত
বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে তিনি হচ্ছেন ‘ছালিছাহ তথা তৃতীয়া’।
সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি।
সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ!
নিম্নে
এক নজরে উনার সম্মানিত পরিচিতি মুবারক তুলে ধরা হলো:
সম্মানিত
ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক: সাইয়্যিদাতুনা হযরত উমাইয়্যাহ আলাইহাস সালাম।
সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত
কুনিয়াত মুবারক: উম্মু কুলছূম আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত
লক্বব মুবারক: বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, আন নূরুছ ছালিছাহ, উম্মু আবীহা ইত্যাদি ইত্যাদি। সুবহানাল্লাহ!
যেই
সম্মানিত লক্বব মুবারক-এ সম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছেন: সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত
আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন
নাবিইয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিতা
আম্মাজান আলাইহাস সালাম: উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি।
সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত
ও রিসালাত মুবারক প্রকাশের ৫ বছর পূর্বে ১১ই জুমাদাল ঊলা শরীফ লাইলাতুস সাবত শরীফ।
সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সম্মানিত স্থান মুবারক:
সম্মানিত মক্কা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত
অবস্থান মুবারক: সম্মানিত মক্কা শরীফ এবং সম্মানিত মদীনা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত
ভাই-বোন আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম: চার ভাই আলাইহিমুস সালাম এবং চার
বোন আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিতা
বোন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে উনার সম্মানিত অবস্থান মুবারক: ছালিছাহ তথা
তৃতীয়া। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত
ভাই-বোন আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে উনার সম্মানিত অবস্থান
মুবারক: ষষ্ঠ। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত
নিসবতে আযীম শরীফ : ৩য় হিজরী সনের ৩রা রবীউল আউওয়াল শরীফ লাইলাতুল জুমুয়াহ
(জুমুয়াহবার রাত) তথা ইয়াওমুল খমীস দিবাগত বাদ মাগরিব। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত
যাওজুম মুকাররমআলাইহিস সালাম: আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন
আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা
হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত
হওয়ার সময় উনার সম্মানিত বয়স মুবারক: প্রায় ২০ বছর। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত
আওলাদ আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম: নেই।
সম্মানিত
ঈমান মুবারক প্রকাশ: আনুষ্ঠানিকভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নুবুওওয়াতী ও রিসালতী শান মুবারক
প্রকাশ পাওয়ার সাথে সাথে। সুবহানাল্লাহ! তখন উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায়
৫ বছর। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত
হিজরত মুবারক: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক করার এক থেকে দেড় মাস পর। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ৯ম হিজরী সনের ৬ রমাদ্বান শরীফ
ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা’দ ফজর। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার স্থান মুবারক: সম্মানিত মদীনা
শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
দুনিয়ার
যমীনে অবস্থান মুবারক: ২৬ বছর ৩ মাস ২৫ দিন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ: জান্নাতুল বাক্বী’ শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য
যে,
শুধুমাত্র উনার সম্মানিত পরিচিতি মুবারক লাভ করার জন্য অত্র
কিতাব মুবারক উনার কয়েক জায়গায় উনার সরাসরি সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক
পত্রস্থ হয়েছে। এছাড়া বাকী সব জায়গায় উনার সম্মানার্থে এবং আদব রক্ষার্থে উনার
সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক উনার পরিবর্তে “সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছালিছাহ আলাইহাস সালাম” লেখা হয়েছে।
মহান
আল্লাহ পাক তিনি মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম
খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের
সবাইকে হাক্বীক্বী রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক, ছহীহ সমঝ, ইলম-আমল, ইখলাছ মুবারক দান করুন। আমীন!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
নিকট সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সুওয়াল
মুবারক
মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে,
عَنْ
حَضْرَتْ اِبْنِ
عَبَّاسٍ رَضِىَ
اللهُ تَعَالـٰى
عَنْهُمَا عَنْ
حَضْرَتْ اُمِّ
كُلْثُوْمٍ عَلَيْهَا
السَّلَامُ بِنْتِ
النَّبِـىِّ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ اَنَّهَا
قَالَتْ يَا
رَسُوْلَ اللهِ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
زَوْجِىْ خَيْرٌ
اَوْ زَوْجُ
حَضْرَتْ فَاطِمَةَ
عَلَيْهَا السَّلَامُ
قَالَتْ فَسَكَتَ
النَّبِـىُّ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ ثُـمَّ
قَالَ زَوْجُكِ
مِـمَّنْ يـُّحِبُّ
اللهَ وَرَسُوْلَهٗ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
وَيُـحِبُّهُ اللهُ
وَرَسُوْلُهٗ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ فَوَلَّتْ
فَقَالَ لَـهَا
هَـلُـمِّـىْ مَاذَا
قُلْتُ قَالَتْ
قُلْتَ زَوْجِىْ
مِـمَّنْ يـُّحِبُّ
اللهَ وَرَسُوْلَهٗ
صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
وَيُـحِبُّهُ اللهُ
وَرَسُوْلُهٗ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ قَالَ
نَعَمْ وَاَزِيْدُكِ
دَخَلْتُ الْـجَنَّةَ
فَرَاَيْتُ مَنْزِلَهٗ
وَلَـمْ اَرَ
اَحَدًا مِّنْ
اَصْحَابِـىْ يَعْلُوْهُ
فِـىْ مَنْزِلِهٖ.
অর্থ:
“হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত
আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন
নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার সম্মানিত যাওজুম মুকাররম তথা হযরত যুন
নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি শ্রেষ্ঠ অথবা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম
উনার সম্মানিত যাওজুম মুকাররম তথা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি
শ্রেষ্ঠ?
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি
বলেন,
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (আমার কথা মুবারক
শুনে কিছুক্ষণ সময়) চুপ থাকলেন। তারপর তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনার সম্মানিত যাওজুম মুকাররম সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন
আলাইহিস সালাম তিনি সেই সকল সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের অন্তর্ভুক্ত যেই সকল
সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনারা মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্র্র্থাৎ
উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করেন এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্র্র্থাৎ উনারাও
উনাকে মুহব্বত মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি (জওয়াব শুনে) চলে যেতে থাকলেন। এমতাবস্থায় নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ
মুবারক করলেন, আপনি এখানে আসুন। আমি আপনাকে কী
বলেছি?
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি
বললেন,
আপনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, আমার সম্মানিত যাওজুম মুকাররম (হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম) তিনি সেই সকল
সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের অন্তর্ভুক্ত যেই সকল সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক
উনারা মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্র্র্থাৎ উনাদেরকে মুহব্বত
মুবারক করেন এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্র্থাৎ উনারাও
উনাকে মুহব্বত মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হ্যাঁ (আমি তাই বলেছি)। আর এখন আমি আপনাকে আরো অবহিত করছি, (আমি সম্মানিত মি’রাজ শরীফ উনার রাতে) সম্মানিত জান্নাত
মুবারক উনার মধ্যে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রেখে আপনার সম্মানিত যাওজুম মুকাররম
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত মনযিল তথা মাক্বাম
মুবারক দেখেছি। সুবহানাল্লাহ! উনাকে এমন এক সম্মানিত সুউচ্চ মানযিল তথা মাক্বাম
মুবারক দেয়া হয়েছে, যেটা অন্য কাউকে
দেয়া হয়নি। সুবহানাল্লাহ! আমি আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহুম উনাদের মধ্যে অন্য কারো মনযিল তথা মাক্বাম মুবারক এতো সুউচ্চ দেখিনি।”
সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম ৪/৪৯, মুসনাদে শামিয়্যীন ১/৯৯, ইযালাতুল খফা
৬/২৭৯)
0 Comments:
Post a Comment