১০০টি চমৎকার ঘটনা - পর্ব-১৬ (কে তিনি এই সম্মানিতা মহিলা)

 কে তিনি এই সম্মানিতা মহিলা-পর্ব-১৬

কে এই সম্মানিতা মহিলা? কি উনার পরিচয়? কোথা থেকে এসেছেন তিনি? উনাকে নিয়ে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহুম উনাদের মনে তখন অনেক প্রশ্ন। কিন্তু কোনো উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না।

সম্মানিতা মহিলা উনাকে আসতে দেখে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ব্যস্ত হয়ে উঠলেন। আলোচনা বন্ধ রেখে সোজা দরজার কাছে গিয়ে দাঁড়ালেন। দরজা হতে সম্মানিতা মহিলা উনাকে সাথে নিয়ে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহুম উনাদের মধ্য দিয়ে ধীরপায়ে হেঁটে দু'জনে এলেন মজলিসের মাঝখানটায়। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার শরীর মুবারকে জড়িয়ে রাখা চাদর মুবারক খুলে আসনের উপর বিছিয়ে দিলেন এবং সম্মানিতা মহিলা উনাকে বসালেন। আর তিনিও কোনো আপত্তি না করে চাদর মুবারকের উপর আরাম করে বসলেন। উনার পরনের কাপড়-চোপড় দেখতে খুবই সাধারণ। কোন ছাহাবীই উনাকে চিনতে পারলেন না। কেউ কোনদিন দেখেছেন বলেও মনে করতে পারলেন না। কিন্তু এই সম্মানিতা মহিলা উনাকে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এত আদর-যত্ন করছেন কেন? এত সম্মান দেখাচ্ছেন কেন? তিনি কি তাহলে বিশেষ কেউ?

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিতা মহিলা উনার সাথে হাসিমুখে কথা বলছেন। কথা বলছেন খুবই আন্তরিকতার সাথে। অনেকদিন পর আপনজনকে দেখলে শিশুরা যেমন খুশি হয়, সম্মানিতা মহিলা উনাকে দেখে তিনিও তেমন খুশি হলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চোখ মুবারকে আনন্দের ছাপ দেখা যাচ্ছিলো।

মজলিসে সবাই চুপচাপ। কারো মুখে কোনো কথা নেই। বেয়াদবি হয় কিনা সেই ভয়ে কেউ কোনো কথা বলছেন না। নীরবে সবাই বসে রইলেন। মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করছেন ঘটনা।

এভাবে বেশ কিছুক্ষণ কেটে গেলো। সম্মানিতা মহিলা তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে প্রয়োজনীয় কথা শেষ করলেন। তিনি চলে যাওয়ার জন্য তৈরী হলেন। নূরে মুজাসসাম

হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিতা মহিলা উনার সাথে কিছুদূর এগিয়ে গেলেন। হাসিমুখে উনাকে বিদায় দিয়ে ফিরে এলেন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহুম উনাদের মাঝে।

হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহুম উনারা আর চুপ করে বসে থাকতে পারলেন না। সম্মানিতা মহিলা উনার পরিচয় জানার আগ্রহের কথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জানালেন। উনারা বললেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কে এই সম্মানিতা মহিলা? যিনি এত বেমেছাল সম্মানের অধিকারিণী?”

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মৃদু হাসলেন। ধীরে ধীরে খুলে বললেন সব কথা। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহুম উনাদেরকে তিনি জানিয়ে দিলেন যে, সম্মানিতা মহিলা তিনি হচ্ছেন উনার সম্মানিতা দুধমাতা সাইয়্যিদাতুনা হযরত হালিমা সাদিয়া আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

আদ্ দুরারুল মুখতারাহ্ - ফী নিসবাতি সুলত্বানিন নাছীর (১ম খণ্ড)মহাসম্মানিত ও মহাপৰিত্ৰ হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক-এ 'মুত্বহার' (পূত পবিত্র) এবং মুত্বহহির' (পূত পবিত্রতাদানকারী) বলতে হবে -পর্ব-১২

 মহাসম্মানিত ও মহাপৰিত্ৰ হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক-এ 'মুত্বহার' (পূত পবিত্র) এবং মুত্বহহির' (পূত পবিত্রতাদানকারী) বলতে হবে-পর্ব-১২

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এক অনন্য বেমেছাল বিস্ময়কর মহাসম্মানিত ফায়ছালা মুবারক হচ্ছেন, “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ (মুতুহ্হার) তথা পূত-পবিত্র এবং (মুত্বহির) তথা পূত-পবিত্রতাদানকারী বলতে হবে”। সুবহানাল্লাহ! তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি একটি বিষয় ফিকির করতে থাকলাম যে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ বলা হয় 'মা'ছূম' তথা নিস্পাপ। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহুম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ বলা হয় ‘মা’ তথা সংরক্ষিত। তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ কী বলা হবে? আমি বিষয়টি যখন ফিকির করতে থাকলাম, তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন,

فأنا وأهل بيتي مطهرون من الذنوب

অর্থ: ‘আমি এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম আমরা সকলে যুনূব তথা সমস্ত প্রকার ছগীরা-কবীরা এবং যাবতীয় অপছন্দনীয় কাজ থেকে পূত-পবিত্র।'

সুবহানাল্লাহ!

আমার এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ abi (মুত্বহ্হার) তথা পূত-পবিত্র এবং b (মুত্বহহির) তথা পূত পবিত্রতাদানকারী বলতে হবে। সুবহানাল্লাহ!

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করলেন, আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ স্বয়ং যিনি খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ত্বহারাত তথা পবিত্রতা মুবারক উনার বিষয়টি সম্পৃক্ত করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন,

إنما يريد الله ليذهب عنكم الرجس اهل البيت ويطهركم تطهيرا

অর্থ: 'হে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি চান আপনাদের থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা দূর করে পবিত্র করার মতো পবিত্র করতে। অর্থাৎ তিনি আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন।' সুবহানাল্লাহ!

আমি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে আমার নিজের অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছি। সুবহানাল্লাহ্! তাই আমার এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ : (মুত্বহ্হার) তথা পূত-পবিত্র এবং b (মুতহির) তথা পূত-পবিত্রতাদানকারী বলতে হবে।” সুবহানাল্লাহ!

এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,

عن إمام الأول سيدنا حضرت كرم الله وجهه عليه السلام قال إنّ النبي صلى الله عليه وسلم كان يقول نحن أهل بيت طهرهم الله من شجرة النبوة وموضع الرسالة ومختلف الملائكة وبيت الرحمة ومعدن

অর্থ: “ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলিম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছুর ৬/৬০৬, তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)

অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুহতাজ এবং উনাদের সম্মানার্থে উনারা সম্মানিত এবং উনাদের প্রতিই উনারা দায়েমীভাবে রুজু। সুবহানাল্লাহ! ফলে উনারা সমস্ত কিছু থেকেই পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! কাজেই সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, বিভিন্ন হযরত ফেরেশতা

আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলিম মুবারক উনার খনি মুবারক ইত্যাদি বরকতময় নিয়ামত মুবারক উনাদের প্রতি রুজু হওয়ার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কোন সুযোগ নেই। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!! সুবহানাল্লাহ!!! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কারণেই সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা, সম্মানিত রহমত মুবারক এবং সম্মানিত ইলিম মুবারকসহ সমস্ত কিছুই ফযীলতপ্রাপ্ত হয়েছেন, সম্মানিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,

عن حضرت انس رضی الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم نحن أهل بيت لا يقاس بنا أحد.

অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম । আমাদের সাথে কারো কোনো ক্বিয়াস বা তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, কানজুল উম্মাল ১২/১০৪, জাম—উল জাওয়ামি’ ১/২৪৯৫০, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭ ইত্যাদি)

কাজেই, সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত শান

মুবারক-এ (মুত্বহ্হার) তথা পূত-পবিত্র এবং (মুত্বহির) তথা পূত-পবিত্রতাদানকারী বলা, উনাদের মহাসম্মানিত শান মুবারক-এ এই মহাসম্মানিত পরিভাষা মুবারক ব্যবহার করা। সুবহানাল্লাহ!


নছীহতে উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম -(১ম খণ্ড) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পেয়ে খুশি প্রকাশ করা-পর্ব-১


নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পেয়ে খুশি প্রকাশ করা-পর্ব-১

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন

رضوان من الله أكبر (٧٢) سورة التوبة

খলিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক সবচেয়ে বড়। [সূরা তওবা শরীফ: ৭২]

মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন

والله ورسوله أحق أن يرضوه إن كانوا مؤمنين (٦٢) سورة التوبة

মহান আল্লাহ পাক এবং উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (উনারাই সন্তুষ্টি লাভের) অধিক হক্বদার বা উপযুক্ত, যদি তারা মু'মিন হয়ে থাকে, তাহলে যেন (নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উনাকে সন্তুষ্ট করে। [সূরা তওবা শরীফ: ৬২]

অর্থাৎ প্রত্যেক মু'মিনের দায়িত্ব কর্তব্য হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে সন্তুষ্ট করা বা খুশী করা। কেননা উনারাই এ বিষয়ে অধিক হক্বদার।

যেহেতু মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারকই বড়। আর এই সন্তুষ্টি মুবারক পেতে হলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সন্তুষ্ট করতে হবে। তাই এই আয়াত শরীফ দ্বারা মহান আল্লাহ পাক তিনি মু'মিনদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনাকে সন্তুষ্ট করার সাথে সাথে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকেও সন্তুষ্ট করার আদেশ মুবারক করে উনার দিকে রুজু করে দিয়েছেন।

এজন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

إن الله وملائكته يصلون على النّبي : يا أيها الذين آمنوا صلوا عليه وسلموا تسليما (۵۶) سورة الأحزاب

নিশ্চয়ই খলিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ছলাত মুবারক পাঠ করেন। হে ঈমানদারগণ! তোমরাও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম নূরানী শান মুবারকে ছলাত মুবারক পাঠ করো এবং সালাম দেয়ার মতো সালাম দাও। [সূরা আহযাব শরীফ: ৫৬]

মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সৃষ্টি করে খুশি প্রকাশার্থে নিজেও ছলাত মুবারক পাঠ করেন এবং হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে দিয়ে ছলাত মুবারক পাঠ করান এবং মু'মিনদেরকেও নির্দেশ মুবারক দান করেছেন উনারা যেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পেয়ে খুশি প্রকাশের লক্ষ্যে উনার দিকে রুজু হয়ে ছলাত মুবারক পাঠ করার মাধ্যমে উনার সন্তুষ্টি মুবারক অর্জন করার কোশেশ করেন।

মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো বলেন,

إنا أرسلناك شاهدا ومبشرا ونذيرا (۸) لتؤمنوا بالله ورسوله وتعززوه وثوقروة وتسبحوه بكرة وأصيلا (9) سورة الفتح

(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিশ্চয়ই আমি আপনাকে উপস্থিত বা সাক্ষ্যদাতা, সুসংবাদ দানকারী এবং সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেছি। যাতে তোমরা (বান্দারা) মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি এবং উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান আনো এবং উনার গোলামীর আনজাম দাও এবং উনাকে সম্মান করো এবং ছানা-ছিফত করো সকাল-সন্ধ্যা অর্থাৎ দায়েমীভাবে। [সূরা ফাত্হ শরীফ: ৮-৯]

এখানে বলা হয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উপস্থিত বা সাক্ষ্যদাতা, যারা খুশি প্রকাশের লক্ষ্যে উনার দিকে রুজু হয় তাদের জন্য তিনি সুসংবাদ প্রদান করেন আর যারা রুজু হয় না তাদেরকে ভয় প্রদর্শন বা সতর্ক করেন। তারা (বান্দারা) যেন মহান আল্লাহ পাক উনাকে বিশ্বাস করার সাথে সাথে উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকেও বিশ্বাস করে এবং সম্মান করে, উনার গোলামীতে আনজাম দেয় এবং সকাল-সন্ধ্যা উনার ছানা-ছিফতে মশগুল থাকে। যারা এরূপ আমল করবে তাদের পক্ষে মহান আল্লাহ পাক ও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করা সম্ভব হবে। বান্দাদের স্মরণ রাখতে হবে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উপস্থিত বা হাযির-নাযির। তিনি প্রত্যেকের আমল দেখেন, কে আমল করে আর কে করে না। এ প্রসঙ্গে অন্যত্র ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

وقل اعملوا فسيرى الله عملكم ورسوله والمؤمنون ، وستردون إلى

عالم الغيب والشهادة فينبئكم بما كنتم تعملون (۱۰۵)

আপনি বলুন, তোমরা আমল করো। অবশ্যই মহান আল্লাহ পাক ও উনার রসূল শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা এবং যারা হাক্বীক্বী মু'মিন উনারাও তোমাদের আমল দেখেন। যিনি দৃশ্য-অদৃশ্য সম্পর্কে জানেন উনার নিকট অচিরেই তোমরা প্রত্যাবর্তন করবে। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে তোমাদের আমল সম্পর্কে অবহিত করবেন। [সূরা তওবা শরীফ: ১০৫]

পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

عن حضرت عبد الله ابن عمر رضی الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم إن الله عز وجل قد رفع لي الدنيا فأنا أنظر إليها وإلى ما هو كائن فيها إلى يوم القيامة كانّما أنظر إلى كافي (i) Seine ও sirb o19) ) is و

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, শাহিদুন নবী, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি এ দুনিয়াকে আমার সামনে এরূপভাবে তুলে ধরেছেন যে, এই দুনিয়া ও তার মধ্যে যা কিছু সৃষ্টি হয়েছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু সৃষ্টি হবে সবকিছু আমি এরূপভাবে দেখি, যেভাবে আমার হাতের তালু মুবারককে দেখে থাকি। সুবহানাল্লাহ! [ত্ববারানী ও মিশকাত শরীফ]

অপর হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে,

عن أنس رضي الله تعالى عنه أن النبي صلى الله عليه وسلم كان يقول إستؤوا إستووا إستووا فوالذي نفسي بيده إني لأراكم من

خلفي كما أراكم من بين يدي. (رواه ابو داود)

হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রায়ই বলতেন, তোমরা কাতার সোজা করো, তোমরা কাতার সোজা করো, তোমরা কাতার সোজা করো। ঐ মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! যার কুদরতি হাত মুবারকে আমার প্রাণ মুবারক। নিশ্চয়ই আমি আমার পিছনে আপনাদেরকে দেখি যেরূপ আমার সামনে আপনাদেরকে দেখি। [আবূ দাউদ শরীফ]

তাই বান্দাদের উচিত হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাযির-নাযির জেনে, উনাকে পাওয়ার কারণে আমল করার মাধ্যমে খুশি প্রকাশ করা। আর বান্দাদের পক্ষে আমল করা তখনই সম্ভব হবে যখন তারা পবিত্র দ্বীন ইসলামে পরিপূর্ণভাবে দাখিল হবে। আর এজন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন,

يا أيها الذين آمنوا ادخلوا في السلم كافة ولا تتبعوا خطوات الشيطان ، إنه لكم عدو مبين (۲۰۸) سورة البقرة

হে ঈমানদারগণ! তোমরা দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ করো। শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করোনা, কেননা সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। [সূরা বাক্বারা শরীফ: ২০৮]

মহান আল্লাহ পাক তিনি জানিয়ে দিয়েছেন যে, শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু, তার ধোঁকায় পড়ে তার অনুসরণ করে দ্বীন ইসলামে মধ্যে পরিপূর্ণভাবে দাখিল হওয়া থেকে বিরত থেকো না। কেননা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে নিয়ামত স্বরূপ দ্বীন ইসলাম নিয়ে আমাদের মাঝে তাশরীফ মুবারক এনেছেন।

خلفي كما أراكم من بين يدي. (رواه ابو داود)

হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রায়ই বলতেন, তোমরা কাতার সোজা করো, তোমরা কাতার সোজা করো, তোমরা কাতার সোজা করো। ঐ মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! যার কুদরতি হাত মুবারকে আমার প্রাণ মুবারক। নিশ্চয়ই আমি আমার পিছনে আপনাদেরকে দেখি যেরূপ আমার সামনে আপনাদেরকে দেখি। [আবূ দাউদ শরীফ]

তাই বান্দাদের উচিত হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাযির-নাযির জেনে, উনাকে পাওয়ার কারণে আমল করার মাধ্যমে খুশি প্রকাশ করা। আর বান্দাদের পক্ষে আমল করা তখনই সম্ভব হবে যখন তারা পবিত্র দ্বীন ইসলামে পরিপূর্ণভাবে দাখিল হবে। আর এজন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন,

يا أيها الذين آمنوا ادخلوا في السلم كافة ولا تتبعوا خطوات الشيطان ، إنه لكم عدو مبين (۲۰۸) سورة البقرة

হে ঈমানদারগণ! তোমরা দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ করো। শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করোনা, কেননা সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। [সূরা বাক্বারা শরীফ: ২০৮]

মহান আল্লাহ পাক তিনি জানিয়ে দিয়েছেন যে, শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু, তার ধোঁকায় পড়ে তার অনুসরণ করে দ্বীন ইসলামে মধ্যে পরিপূর্ণভাবে দাখিল হওয়া থেকে বিরত থেকো না। কেননা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে নিয়ামত স্বরূপ দ্বীন ইসলাম নিয়ে আমাদের মাঝে তাশরীফ মুবারক এনেছেন।

বলেছেন। কারণ এই দ্বীন ইসলাম নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে নিয়ে এসেছেন। এছাড়াও উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার রচিত পবিত্র না'ত শরীফে ভবিষ্যৎবাণী করেছেন, “আপনাকে পবিত্র মদীনা শরীফ, পবিত্র মক্কা শরীফ ও সারা দুনিয়াবাসীদের মাঝে হক্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য এবং সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠা করার জন্য মহাসম্মানিত নবী এবং রসূলরূপে প্রেরণ করা হয়েছে”। সুবহানাল্লাহ!

সুতরাং এ সমস্ত দলীল আদিল্লাহ দ্বারা এটাই প্রমানিত হয় যে, সত্য দ্বীন প্রতিষ্ঠা করার জন্যই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তাশরীফ মুবারক হয়েছে। তাই আমাদের উচিৎ হবে উনাকে পাওয়ার কারণে খুশি প্রকাশ করা। আর হাক্বীক্বী খুশি প্রকাশ করা হবে উনার আদর্শ মুবারক গ্রহণ করে তা নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। অর্থাৎ চলা-ফেরা, উঠা-বসা, খাওয়া-দাওয়া, কথা-বার্তা, আমল-আখলাক্ব, স্বভাব-চরিত্র ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই উনার আদর্শ মুবারক গ্রহণ করতে হবে। কাজেই, উনার দিকে রুজু না হয়ে উনার আদর্শ মুবারক গ্রহণ করা কখনো সম্ভব হবে না। উনার আদর্শ মুবারকই সম্মানিত দ্বীন ইসলামের বিধান তথা সম্মানিত শরীয়ত ।

মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদেরকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে রুজু হয়ে উনার আদর্শ মুবারক গ্রহণ করার তাওফীক্ব দান করেন। (আমীন)








১০০টি চমৎকার ঘটনা - পর্ব-১৫ (বিস্ময়কর এক মু'জিযা শরীফ)

বিস্ময়কর এক মু'জিযা শরীফ - পর্ব-১৫

জর্ডানের মরুভূমির অভ্যন্তরে সাফাঈ নামক এলাকায় এমন একটি গাছ আছে, যে গাছটি কুদরতীভাবে শত বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত মরুভূমিতে গত ১৫০০ বছর ধরে দাঁড়িয়ে আছে। গাছটি দেখতে খুবই সুন্দর। শুনতে অবাক লাগলেও এখনো কিন্তু বেঁচে আছে গাছটি। জর্ডানের বাদশাহ আব্দুল্লাহ সর্বপ্রথম এই স্থানটিকে পবিত্র স্থান হিসেবে ঘোষণা দেন।

৫৮২ ঈসায়ী সনে সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বয়স মুবারক যখন ১২ বছর, তিনি উনার চাচা আবূ তালিব উনার সঙ্গে বাণিজ্য উপলক্ষে মক্কা শরীফ থেকে তৎকালীন শাম বা সিরিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। যাত্রাপথে উনারা সিরিয়ার অদূরে জর্ডানে এসে উপস্থিত হন।

জর্ডানের সেই এলাকাটি ছিল শত শত মাইলব্যাপী বিস্তৃত উত্তপ্ত বালুকাময় এক মরুভূমি। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার চাচা আবু তালিব মরুভূমি পাড়ি দেয়ার সময় ক্লান্ত হয়ে পড়েন। তখন উনারা একটু বিশ্রামের জায়গা খুঁজছিলেন। কিন্তু আশপাশে উনারা কোনো বসার জায়গা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। চারদিকে যত দূর চোখ যায় কোনো বৃক্ষরাজির সন্ধান পাচ্ছিলেন না।

কিন্তু দূরে একটি মৃতপ্রায় গাছ দেখতে পেলেন উনারা। উত্তপ্ত মরুভূমির মাঝে গাছটি ছিল লতাপাতাহীন শীর্ণ ও মৃতপ্রায়। উনারা মরুভূমির উত্তাপে শীর্ণ পাতাহীন সেই গাছটির তলায় বিশ্রাম নিতে বসেন।

উল্লেখ্য, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন পথ চলতেন তখন মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশে মেঘমালা উনাকে ছায়া দিত এবং বৃক্ষরাজি উনার দিকে হেলে পড়ে ছায়া দিত। সুবহানাল্লাহ!

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার চাচাকে নিয়ে যখন গাছের তলায় বসেছিলেন তখন উনাদের ছায়া দিতে মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশে মৃতপ্রায় গাছটি সজীব হয়ে উঠে এবং গাছটির সমস্ত ডালপালা সবুজ পাতায় ভরে যায়।

এদিকে এ অভূতপূর্ব বিষয়টি জারজিস ওরফে বুহাইরা নামক একজন খ্রিস্টান পাদ্রি খেয়াল করলেন। তিনি দূরে দাঁড়িয়ে সবকিছু দেখছিলেন। আবূ তালিব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ে পাদ্রীর কাছে গেলে পাদ্রী বলেন, আমি কোনোদিন এই গাছের নিচে কাউকে বসতে দেখিনি। পাদ্রী আরও বললেন, গাছটি ছিল পাতাহীন কিন্তু আজ গাছটি পাতায় পরিপূর্ণ। এই ছেলেটির নাম কি? চাচা আবূ তালিব উত্তর দিলেন: ইনি আমার সম্মানিত ভাতিজা মুহম্মদ (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। পাদ্রী আবার জিজ্ঞাসা করলেন, উনার বাবার নাম কি?

: হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম।

: মাতার নাম?

: হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম।

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখে এবং উনার পরিচয় শুনে দূরদৃষ্টি সম্পন্ন পাদ্রীর চিনতে আর বাকি রইলো না যে, ইনিই সেই বহু প্রতীক্ষিত শেষ নবী! চাচা আবূ তালিবকে ডেকে পাদ্রী বললেন, আপনার সঙ্গে বসা এই সম্মানিত বালক হচ্ছেন সারা জগতের নবী ও রসূল এবং এই জগতের শেষ নবী। তিনি বলেন, আমি উনার সম্পর্কে ইনজিল শরীফে পড়েছি এবং আমি ঘোষণা দিচ্ছি, ইনিই শেষ নবী।

চাচা আবূ তালিব ও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা যেই গাছের নিচে বসে বিশ্রাম নিয়েছিলেন সেই গাছটি ১৫০০ বছর আগে যে অবস্থায় ছিল আজো সেই অবস্থায় জর্ডানের মরুভূমিতে দাঁড়িয়ে আছে। সুবহানাল্লাহ!

গাছটি সবুজ লতা-পাতায় ভরা এবং সতেজ ও সবুজ। আশ্চর্যের বিষয় এই যে, গাছটি যেখানে অবস্থিত তেমন মরুদ্যানে কোনো গাছ বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। গাছটির আশপাশের কয়েকশ' কিলোমিটার এলাকার মধ্যে আর কোনো গাছ নেই। গাছটির চারিদিকে দিগন্ত জোড়া শুধুই মরুভূমি আর মরুভূমি। মরুভূমির রুক্ষ পরিবেশের কারণে জন্ম থেকেই গাছটি ছিল পাতাবিহীন শুকনো কিন্তু একসময় মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুমে গাছটি সবুজ পাতায় ভরে উঠে এবং আজও পর্যন্ত গাছটি সবুজ শ্যামল অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। উত্তপ্ত বালুকাময় মরুভূমির মাঝে গাছটি দাঁড়িয়ে থেকে মহান আল্লাহ পাক উনার অসীম ক্ষমতার সাক্ষ্য দিয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার স্মৃতি মুবারক আঁকড়ে ধরে রেখেছে, যা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার কুদরতী ক্ষমতার নিদর্শন। সুবহানাল্লাহ!



১০০টি চমৎকার ঘটনা - পর্ব-১৪ (বালাগাল উলা বি কামালিহী)

বালাগাল উলা বি কামালিহী- পর্ব-১৪

হযরত শেখ সাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন বিশিষ্ট বুযুর্গ ও প্রখ্যাত ফারসী কবি। উনার সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে, একবার তিনি নূরে মুজাসসাম,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে নাত শরীফ লিখতে শুরু করলেন। তিনি লিখলেন,

‘বালাগাল ঊলা বি কামালিহী'

অর্থাৎ ‘নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তো মাক্বামাতের চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত।'

‘কাশাফাদ্দুজা বি জামালিহী'

অর্থাৎ ‘উনার মুবারক জামালিয়তে সমস্ত আঁধার বিদূরিত হয়েছে।' ‘হাসুনাত জামিয়ু খিছলিহি

অর্থাৎ, ‘উনারই মুবারক উসীলায় সমস্ত কিছু সৌন্দর্য মন্ডিত হয়েছে।'

এতটুকু লিখে হযরত শেখ সাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি থেমে গেলেন। চতুর্থ লাইন কি হবে, তা ভাবতে লাগলেন। চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্তেই উপনীত হতে পারছিলেন না। তিনি বেকারার পেরেশান হয়ে গেলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে পুরোপুরি রুজু হয়ে চতুর্থ লাইন মিলানোর কোশেশে নিজেকে ব্যাপৃত রাখলেন। এক পর্যায়ে নিজের অজান্তেই ঘুমিয়ে গেলেন। তিনি স্বপ্নে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিশেষ সাক্ষাৎ মুবারক লাভ করলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, 'হে শেখ সাদী! আপনি এত অস্থির কেন? কি হয়েছে আপনার?' হযরত শেখ সাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি মুবারক খিদমতে নিজের অক্ষমতা ও অপারগতার বিষয়ে আরজি করলেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, “আপনি চতুর্থ লাইন লিখুন,

‘ছল্লু আলাইহি ওয়া আলিহী'

অর্থাৎ, ‘উনার প্রতি এবং উনার সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি ছলাত পাঠ করুন।' সুবহানাল্লাহ! হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা কতই না মর্যাদাবান যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজের সাথে উনাদের প্রতিও ছলাত মুবারক পাঠ করতে উম্মতকে নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন।



১০০টি চমৎকার ঘটনা - পর্ব-১৩ (দশবার পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠকারীর জন্য সুসংবাদ)

দশবার পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠকারীর জন্য সুসংবাদ-পর্ব-১৩

একবার হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে চারজন প্রধান ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম তাশরীফ আনলেন এবং বললেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার খিদমত মুবারকে আমাদের একটি আরজু আছে, যদি আপনি দয়া করে কবুল করেন।' হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাদের আরজু মুবারক জানতে চাইলেন।

প্রথমে হযরত আজরাইল আলাইহিস সালাম বললেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ ইয়া

হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার আরজু হলো, প্রতিদিন

আপনার যে উম্মত আপনার প্রতি মাত্র দশবার দরূদ শরীফ পাঠ করবে,

আমি মৃত্যুর সময় তার রূহ এমনভাবে কবজ করবো যেভাবে পূর্ববর্তী হযরত

নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রূহ মুবারক গ্রহণ করতাম।”

সুবহানাল্লাহ!

তারপর হযরত ইসরাফীল আলাইহিস সালাম বললেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার আরজু এই যে, প্রতিদিন আপনার যে উম্মত আপনার প্রতি কমপক্ষে দশবার দরূদ শরীফ পাঠ করবে, আমি হাশরের ময়দানে সিজদায় পড়ে তার সমস্ত গুনাহখতা ক্ষমা করিয়ে দিব।” সুবহানাল্লাহ!

তারপর হযরত মিকাঈল আলাইহিস সালাম বললেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার আরজু এই যে, প্রতিদিন আপনার যে উম্মত আপনার প্রতি মাত্র দশবার দরূদ শরীফ পাঠ করবে, আমি হাশরের ময়দানে তাকে নিজ হাতে হাউজে কাউসারের পানি পান করাবো।” সুবহানাল্লাহ! তারপর হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম বললেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার আরজু হলো, প্রতিদিন আপনার যে উম্মত আপনার প্রতি মাত্র দশবার দরূদ শরীফ পাঠ করবে হাশরের দিন আমি নিজ হাতে তাকে পুলসিরাত পার করে দিব।” সুবহানাল্লাহ!

চারজন প্রধান ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের এই আরজু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কবুল করে নিলেন। সুবহানাল্লাহ!



১০০টি চমৎকার ঘটনা - পর্ব-১২ (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ লিখার ফযীলত)

ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ লিখার ফযীলত - পর্ব-১২

হযরত ইমাম আবূ যুরআ রহমাতুল্লাহি আলাইহি অনেক বড় মুহাদ্দিছ ছিলেন। তিনি ইন্তিকাল করার পর একজন বুযুর্গ ব্যক্তি উনাকে স্বপ্নে দেখলেন যে, তিনি আসমানের উপর হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের ইমাম হয়ে নামায পড়াচ্ছেন। উনাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, ‘হে হযরত আবূ যুরআ রহমাতুল্লাহি আলাইহি! আপনি কোন আমলের কারণে এই মর্যাদা-মর্তবা মুবারক হাছিল করলেন?” তিনি বললেন, “আমার জীবনে আমি দশ লক্ষ পবিত্র হাদীছ শরীফ লিখেছি এবং লেখার মধ্যে আমি প্রত্যেকবার ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম' স্পষ্ট করে ও সুন্দর করে লিখেছি। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, ‘আমার প্রতি যে একবার ছলাত পাঠ করবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তার প্রতি দশবার রহমত মুবারক নাযিল করবেন।' আমি দশ লক্ষবার ছলাত শরীফ (দরূদ শরীফ) লিখেছি, যার কারণে আমার প্রতি মহান আল্লাহ পাক তিনি এক কোটিবার রহমত মুবারক নাযিল করেছেন এবং উক্ত ছলাত শরীফ লেখার সম্মানার্থে আমাকে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের ইমাম বানিয়ে দিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুতরাং পবিত্র হাদীছ শরীফ লিখার মধ্যে যারা সুন্দর করে ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম' পুরোটা লিখেন তাদের জন্য সুসংবাদ! আর যারা লিখে না, তাদের জন্য আফসোস!



অবশেষে সৌদি আরব হ্যালোইন নামক শিরক ও বিদয়াতি দিবসও পালন করলো


অবশেষে সৌদি আরব হ্যালোইন নামক শিরক ও বিদয়াতি দিবসও পালন করলো 

হ্যালোইন কি?

হ্যালোইন শব্দের উৎপত্তি ১৭৪৫ সালের দিকে। খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে এর উৎপত্তি। হ্যালোইন’ বা ‘হ্যালোউইন’ শব্দটি এসেছে স্কটিশ ভাষার শব্দ ‘অল হ্যালোজ’ ইভ থেকে। হ্যালোইন শব্দের অর্থ ‘শোধিত সন্ধ্যা বা পবিত্র সন্ধ্যা’। সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হয়ে ‘হ্যালোজ’ ইভ’ শব্দটি এক সময় ‘হ্যালোইন’এ রূপান্তরিত হয়। হ্যালোইন উৎসবের মূল থিম হলো, ‘হাস্যরস ও উপহাসের মাধ্যমে মৃত্যুর ক্ষমতার মুখমুখি হওয়া’।

অবাক করা বিষয় হলো, কেল্টিক জাতির ধারণা ছিলো অক্টোবরের শেষ দিনের রাত সবচেয়ে খারাপ। যে রাতে সব প্রেতাত্মা ও অতৃপ্ত আত্মারা মানুষের ক্ষতি করতে পারে। আর তাই কেল্টিক জাতির সদস্যরা এই রাতে বিভিন্ন ধরনের ভূতের মুখোশ ও কাপড় পরতো।
এখনকার  তি কেল্টিক ভাষী দেশগুলোর লোকজ রীতিনীতি ও বিশ্বাস দ্বারা প্রভাবিত বলে ধারণা করা হয়; সেসব দেশের কয়েকটি প্যাগান বা পৌত্তলিক ধর্মাবলম্বি আর অন্যান্যগুলো কেলটিক খ্রিস্টধর্ম অবলম্বন করে থাকে।

তারা নির্ঘুম রাত কাটাতে আগুন জ্বালিয়ে মুখোশ পরে বৃত্তাকারে একসঙ্গে ঘুরতেন ও মন্ত্র যপতেন। আর সময়ের পরিক্রমায় কেল্টিক জাতির ‘সাহ-উইন’ উৎসবই বর্তমানে ‘হ্যালোইন’ উৎসব হিসেবে পালিত হচ্ছে। হ্যালোইনের রাত নিয়ে অনেক ধরনের মিথ আছে। তেমনই এক প্রচলিত মিথ হলো, এই রাতে দেবতা সামান সব মৃত আত্মাদের পৃথিবীতে আহ্বান জানান। উড়ন্ত ঝাড়ুতে করে হ্যালোইন ডাইনি উড়ে বেড়ায় আকাশ জুড়ে। কখনো বা তিনি কড়া নাড়েন বিভিন্ন বাড়ির দরজায়।
আইরিশ, যুক্তরাজ্য, ওয়েলশ সম্প্রদায়ের লোকেরা বিশ্বাস করতো যে প্রত্যেক নতুন বছরের আগের রাতে (৩১শে অক্টোবর) সাহেইন, মৃত্যুর দেবতা, আঁধারের রাজ পুত্র, সব মৃত আত্মা ডাক দেয়। এই দিন মহাশূন্য এবং সময়ের সমস্ত আইনকানুন মনে হয় স্থগিত করা হয় এবং জীবিতদের বিশ্ব যোগদান করতে মৃত আত্মাদের অনুমোদন করে। তারা আরও বিশ্বাস করতো যে মৃত্যুর কারণে তারা অমর যুবক হয়ে একটি জমিতে বসবাস করতো এবং আনন্দে ডাকা হতো "Tir nan Oge"। মাঝে মাঝে বিশ্বাস করতো যে স্কটল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ড অঞ্চলের ছোট পাহাড়ে কখনো কখনো মৃতরা পরীদের সাথে থাকে। একটি লোককাহিনী থেকে বর্ণিত আছে যে সমস্ত মৃত ব্যক্তিরা ৩১শে অক্টোবর রাত্রিতে জীবিতদের বিশ্বে আসে আগামী বছরের নতুন দেহ নেওয়ার জন্য। (লিংক ২ কমেন্টসসে)

হ্যালোইনের ইতিহাস কি বলে? 
শিরকি দেবতাদের ভূত প্রেতের দিবস পালন করা কি শিরক নয়?
এটা কি বিদয়াত নয়?

যারা ঈদে মীলাদুন্নবী পালন বিদয়াত বলে তারা হ্যালোইন পালনকে কি বলবে?

 লিংক ১  https://cutt.ly/yNbulg9
লিংক ২  https://cutt.ly/bNbuvQ4
১০০টি চমৎকার ঘটনা - পর্ব-১১ (সবচেয়ে মূল্যবান ও উপকারী দোয়া)


সবচেয়ে মূল্যবান ও উপকারী দোয়া- পর্ব-১১

মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী হযরত সুফিয়ান ছাওরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি একবার হজ্জ করতে গেলেন। সেখানে তিনি দেখলেন, এক যুবক হজ্জের প্রতিটি রুকনে পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠ করছে। তিনি তাকে বললেন, 'হে যুবক! হজ্জের বিভিন্ন স্থানে তো বিভিন্ন দোয়া পাঠ করতে হয়। তুমি তা না করে সব জায়গায় শুধু দরূদ শরীফ পাঠ করছো, তার কারণ কি?' যুবক উত্তর দিলো, আমি হজ্জের কাজ সম্পাদন করে আপনাকে এর কারণ খুলে বলবো।

এরপর যুবকটি তার হজ্জের কাজ সম্পন্ন করে হযরত সুফিয়ান ছাওরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বিষয়টি সম্পর্কে বললো, “হুযূর! আমি আমার জীবনে দরূদ শরীফের চেয়ে মূল্যবান ও উপকারী কোনো দোয়া পাইনি। কেন একথা বলছি শুনুন। আমি একবার আমার আব্বার সাথে কাফেলাবদ্ধ হয়ে হজ্জের উদ্দেশ্যে সফর করছিলাম। মরুভূমির ভিতর দিয়ে যাবার সময় আমার আব্বা খুব অসুস্থ হয়ে মারা যান। মারা যাবার পর উনার চেহারা বিকৃত হয়ে যায়। নাঊযুবিল্লাহ! এটা দেখে আমি খুবই চিন্তিত হয়ে পড়ি। কাফেলার লোকেরা আব্বার এই চেহারা দেখলে কি বলবে! আর মরুভূমিতে আব্বাকে দাফন কাফনের ব্যবস্থা কিভাবে হবে ইত্যাদি চিন্তা করতে করতে আমি ঘুমিয়ে পড়লাম। স্বপ্নে দেখলাম একজন অত্যন্ত নূরানী চেহারার ব্যক্তি আমাদের নিকট তাশরীফ এনেছেন। উনার নূর মুবারকে সমগ্র মরুভূমি উদ্ভাসিত হয়ে গিয়েছে। আমি উনার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বললেন, ‘আমি হলাম তোমাদের নবী ও রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তোমার আব্বা প্রতিদিন আমার প্রতি দরূদ শরীফ পাঠ করতো। আজকে তার দরূদ শরীফ না পেয়ে আমি দেখতে এসেছি, তার কি হলো।' এই বলে তিনি আব্বার মুখের উপর উনার পবিত্রতম হাত মুবারক বুলিয়ে দিলেন। সাথে সাথে আব্বার চেহারা সুন্দর হয়ে গেলো। এরপর আমার ঘুম ভেঙে গেলো। আমি দেখলাম সত্যি আব্বার চেহারা সুন্দর হয়ে গিয়েছে। আমি এবার কাফন-দাফনের জন্য লোক খুঁজতে বের হলাম। কিন্তু সামান্য একটু যেতেই দেখতে পেলাম দলে দলে লোক আমার দিকে আসছে। তাদেরকে এই বিরান মরুভূমিতে আসার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা বললো, তারা একটা গায়েবী নেদা শুনেছে যে, ‘কেউ যদি কোনো জান্নাতি মানুষের জানাজা পড়তে চায় তবে যেন সে অমুক স্থানে যায়।' সুবহানাল্লাহ! সেজন্য তারা অনেক দূর থেকে এসেছে। হুযূর! এই ঘটনার পর থেকে আমি আমার জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে দরূদ শরীফকে সাথী করে নিয়েছি।” সুবহানাল্লাহ!

পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠকারী প্রতিটি ব্যক্তিকে আমাদের নবী হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চিনেন এবং জানেন। যিনি শাফায়াতের মালিক উনার নিসবত হাসিল করতে পারলে আর কোনো চিন্তা আছে কি?


১০০টি চমৎকার ঘটনা - পর্ব-১০ (দুইশত বছরের গুনাহ-খতা ক্ষমা)

দুইশত বছরের গুনাহ-খতা ক্ষমা- পর্ব- ১০

বনী ইসরাইলের এক ব্যক্তি ছিল যে দু'শ বছর হায়াত পেয়েছিল। ওই ব্যক্তি তার এই দীর্ঘ হায়াতে কোনো নেক কাজই করেনি। মহান আল্লাহ পাক উনার নাফরমানীতে পুরো যিন্দেগী কাটিয়েছে। যখন তার ইন্তেকাল হলো, তখন তার প্রতিবেশী ও এলাকার লোকেরা, তার কাফন-দাফনের কোনো ব্যবস্থা করলো না; বরং তাকে একটি আবর্জনার স্তুপে ফেলে রাখলো।

এদিকে মহান আল্লাহ পাক তিনি ওই যামানার জলীলুল ক্বদর রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার নিকট ওহী মুবারক করলেন, 'হে আমার নবী ও রসূল হযরত মূসা আলাইহিস সালাম! অমুক এলাকায় অমুক গ্রামে একজন লোক ইন্তেকাল করেছে, এলাকাবাসী তাকে ফেলে রেখেছে। তার গোসল, কাফন-দাফনের ব্যবস্থা কেউ করছে না। আপনি সেখানে যান, গিয়ে ওই ব্যক্তির গোসল-কাফন দাফনের ব্যবস্থা করুন।’

হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সে এলাকায় গেলেন। এলাকাবাসীদেরকে বললেন, 'এখানে কি একজন লোক ইন্তেকাল করেছে?” এলাকাবাসী বললো, ‘হ্যাঁ, একজন লোক ইন্তেকাল করেছে, যে লোকটা দু’শ বছর হায়াত পেয়েছিল। কিন্তু সে কোনো নেক কাজ করেনি। মহান আল্লাহ পাক উনার নাফরমানীতে ইন্তেকাল অবধি দৃঢ় ছিল। আমরা তাকে পছন্দ করি না! কারণ, সে একটা বড় বদকার, বড় নাফরমান বান্দা।'

হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম একথা শুনে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট আরজ করলেন, ইয়া রব্বুল আলামীন! এই লোকটা আপনার নাফরমান বান্দা, বড় গুনাহগার। এলাকার লোকেরা তাকে পছন্দ করে না। কারণ, সে দু'শ বছর হায়াত পেয়েছিল কিন্তু সে কোনো নেক কাজ করেনি। পুরো যিন্দেগী নাফরমানীতে কাটিয়ে দিয়েছে।'

তখন মহান আল্লাহ পাক বললেন, 'হ্যাঁ। তারপরও তার একটা আমলের কারণে তার জীবনের সমস্ত গুনাহ মাফ করে, তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে, আমি জান্নাত ওয়াজিব করে দিয়েছি এবং আপনার মতো একজন জলীলুল ক্বদর রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে পাঠিয়েছি তার গোসল, কাফন-দাফন করার জন্য।'

তখন হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম বললেন, 'হে মহান আল্লাহ পাক! এই লোকটা এমন কি আমল করেছে যার কারণে তার দু'শত বছরের গুনাহখতা মাফ করে দিয়ে আমাকে পাঠিয়েছেন তার গোসল, কাফন-দাফনের জন্য! আপনি আমাকে দয়া করে সেই আমলটি জানিয়ে দিন। সেই আমল আমি নিজে করবো এবং আমার উম্মতকে শিক্ষা দিবো।'

মহান আল্লাহ পাক বললেন, 'হে আমার রসূল হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম! আপনাকে আমি সেই আমলটির কথা জানাচ্ছি। তা হচ্ছে, আপনার প্রতি নাযিলকৃত কিতাব তাওরাত শরীফ লোকটা একদিন খুলেছিল। খুলেই সে দেখতে পেলো, আমার যিনি রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক। সেখানে উনার ছানা ছিফত মুবারক লিপিবদ্ধ ছিল। তা দেখার সাথে সাথে সেই লোকটির অন্তরে উনার প্রতি গভীর মুহাব্বত পয়দা হলো। সে ওই নাম মুবারক চুম্বন করলো, চোখে লাগালো এবং সাথে সাথে আমার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ছলাত তথা দরূদ শরীফ পাঠ করলো। তার এই আমল আমার অত্যন্ত পছন্দ হলো এবং আমি তা কবুল করে নিলাম। এই আমলের বিনিময়েই আমি তার দু'শ বছরের গুনাহখতা ক্ষমা করে আপনার মতো একজন জলীলুল ক্বদর রসূলকে পাঠিয়েছি তার গোসল, কাফন-দাফনের জন্য। সেই সাথে আমি সত্তরজন জান্নাতী হুরের সাথে তার বিবাহ সম্পাদন করবো।' সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কি অতুলনীয় শান মুবারক! উনাকে যদি কেউ এক পলকের তরেও হাক্বীক্বীভাবে মুহাব্বত করতে পারে, তাহলে তার যিন্দেগী কামিয়াব হয়ে যাবে। সুবহানাল্লাহ।



১০০টি চমৎকার ঘটনা - পর্ব-৯ (দরূদ শরীফ উনার ফযীলত)

দরূদ শরীফ উনার ফযীলত- পর্ব- ৯

কিতাবে বর্ণিত আছে, হাশরের দিন এক ব্যক্তির আমলনামা ওজন করে দেখা যাবে যে, তার নেকীর চেয়ে বদীর পাল্লা অনেক ভারী অর্থাৎ সে জাহান্নামী। লোকটি এটা দেখে খুব কান্নাকাটি শুরু করে দিবে। বারবার ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের কাছে কাকুতি মিনতি করতে থাকবে। লোকটির ব্যাকুলতা দেখে উনারা বলবেন, 'আমাদের কাছে কান্নাকাটি করে তো কোনো লাভ নেই তারচেয়ে বরং যিনি সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে গিয়ে আরজু পেশ করো। সেটাই তোমার জন্য ফায়দাজনক হবে।' তারপরে উনারা লোকটিকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কোথায় অবস্থান করছেন তাও দেখিয়ে দিবেন।

লোকটি তখন দ্রুত হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকটে গিয়ে আরজু পেশ করবে, ‘ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার তো জায় ঠিকানা জাহান্নাম হয়ে গিয়েছে! এখন আমার কি উপায় হবে! আপনি যদি দয়া না করেন তবে আমি ধ্বংস হয়ে যাবো;’ ইত্যাদি অনেক কাকুতি মিনতি সে করবে।

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তো রহমাতুল্লিল আলামীন রউফুর রহীম, উম্মতদেরকে সবচেয়ে বেশি মুহাব্বতকারী। তিনি লোকটির ফরিয়াদ শুনে তার আমলনামা পুনরায় ওজন করার জন্য বলবেন, তাই করা হবে। দেখা যাবে সত্যি লোকটির নেকীর পাল্লার চেয়ে বদীর পাল্লা অনেক ভারী। তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক টুকরা কাগজ সেই নেকীর পাল্লায় দিয়ে দিবেন। সাথে সাথে নেকীর পাল্লা বদীর পাল্লার চেয়ে অনেক অনেক গুণ ভারী হয়ে যাবে। একটু আগে যে লোকটির জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব ছিল, তার জন্য এখন জান্নাত ওয়াজিব হয়ে গিয়েছে। সুবহানাল্লাহ!

লোকটি এতে মহাখুশি হয়ে যাবে। সে বারবার হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শুকরিয়া আদায় করবে। তারপর বিনীতভাবে জানতে চাইবে, ‘ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! বেয়াদবি মাফ করবেন! আপনি কি এমন কাগজ আমার নেকীর পাল্লায় রেখেছিলেন, যার কারনে নেকীর পাল্লা এত ভারী হয়ে গেলো?' তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলবেন, ‘তুমি দুনিয়াতে থাকতে আমার প্রতি যে পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠ করেছিলে, সেটাই আমি তোমার নেকীর পাল্লায় দিয়ে দিয়েছি।' সুবহানাল্লাহ!

দরুদ শরীফ পাঠকারী সকলকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চিনেন। একদা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, 'আপনার থেকে দূরে অবস্থানকারী ও পরবর্তীকালে পৃথিবীতে আগমনকারী উনাদের পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠ আপনার দৃষ্টিতে কি রকম হবে?' তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘মুহাব্বত সহকারে দরূদ শরীফ পাঠকারীদের দরূদ শরীফ আমি নিজেই শুনি এবং তাদেরকে চিনি। আর যারা মুহাব্বত সহকারে পাঠ করে না, তাদের দরূদ শরীফও আমার কাছে পেশ করা হয়।' সুবহানাল্লাহ!



১০০টি চমৎকার ঘটনা - পর্ব-৮ (দানশীল ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার বন্ধু)

দানশীল ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার বন্ধু- পর্ব- ৮

একবার একজন মহিলা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে এসে আরয করলেন, উনার অবশ হাতটি ভালো করে দিতে। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তো সবই জানেন, সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত ইলমই উনাকে হাদিয়া মুবারক করা হয়েছে। তবুও উম্মতদের নছীহতের জন্য তিনি জিজ্ঞাসা মুবারক করলেন যে, উনার এই হাতটির এমন অবস্থা হলো কিভাবে?

মহিলা বললেন, 'আমি একদিন স্বপ্নে দেখি কিয়ামত কায়িম হয়ে গিয়েছে। কোটি কোটি মানুষ তাদের আমল অনুযায়ী একেক হালতে আছে। আমি ভাবলাম আমার পিতা-মাতা তো ইন্তিকাল করেছেন। উনারা কি অবস্থায় আছেন? আমি খুঁজতে খুঁজতে আমার আম্মাকে দেখলাম যে, তিনি জাহান্নামের কঠিন আগুন পরিবেষ্টিত হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তার হাতে কেবল এক টুকরা চর্বি আর এক টুকরা কাপড়। সেগুলো দিয়ে তিনি সেই ভয়াবহ আগুন থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন। তার এই অবস্থা হয়েছে কারণ তিনি দুনিয়াতে থাকতে নামায রোযা করেছেন, স্বামীর খেদমত করেছেন ঠিকই; কিন্তু শুধু সেই চর্বি আর কাপড়ের টুকরাটি ছাড়া আর কিছুই দান খয়রাত করেননি। নাঊযুবিল্লাহ! তাই কৃপণদের জন্য নির্ধারিত আযাবে তিনি গ্রেফতার হয়েছেন। নাঊযুবিল্লাহ! আমি তখন আব্বার কথা জানতে চাইলাম। আম্মা বললেন যে, যেহেতু তিনি অনেক দানশীল ছিলেন, নিশ্চয়ই জান্নাতে আছেন।

আমি এবার আব্বাকে খুঁজতে লাগলাম। দেখলাম যে তিনি হাউজে কাওছারের পাশে অত্যন্ত ইতমিনানের সাথে পানি পান করছেন এবং লোকজনকে পানি পান করাচ্ছেন। আমি দৌড়ে আব্বার কাছে গেলাম এবং দুঃসংবাদ দিয়ে পানি চাইলাম। কিন্তু আব্বা অপারগতা প্রকাশ করে জানালেন যে, কোনো জাহান্নামীর জন্য জান্নাতের নিয়ামত জায়িয নেই। তাই তিনি দিতে পারবেন না। তখন আমি আব্বার অগোচরে কিছু পানি নিয়ে আম্মার কাছে গেলাম। কিন্তু আম্মাকে পানি দেয়া মাত্র আমার হাতটি অবশ হয়ে গেলো। তারপর থেকে এটা সেই অবস্থাতেই আছে।'

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তো রহমাতুল্লিল আলামীন। তিনি তখন সেই মহিলা ছাহাবী উনার হাতটি ভালো করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ!


১০০টি চমৎকার ঘটনা - পর্ব-৭ (মু'মিন বান্দাদের কবরের জীবন)

মু'মিন বান্দাদের কবরের জীবন- পর্ব-৭

একদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ইন্তেকাল করলেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার জানাযা পড়ালেন। তারপর একদল ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সাথে মৃতদেহ দাফন করার জন্য কবরস্থানে আসলেন ।

দুই জন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা কবর খুঁড়তে শুরু করলেন। সবাই চুপচাপ মৃতদেহকে ঘিরে বসে আছেন। কবর খনন শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গভীর মনোযোগ দিয়ে কবর খোঁড়া দেখছিলেন। একটু পরে সবার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আপনারা কি জানেন, মানুষ মারা যাওয়ার পর, তার আত্মার কি হয়?' সবাই খুব আগ্রহ নিয়ে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বললেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দয়া করে আমাদেরকে বলুন।'

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রথমে কবরের দিকে তাকালেন, তারপর আকাশের দিকে তাকালেন। তারপর ইরশাদ মুবারক করলেন, “যখন মানুষ একেবারে মৃত্যু শয্যায় শায়িত থাকে, তখন সে মৃত্যুর ফেরেশতা আলাইহিস সালাম উনাকে দেখে ভয় পেয়ে যায়। কিন্তু যে হাক্বীক্বী মু'মিন, তাকে মৃত্যুর ফেরেশতা আলাইহিস সালাম হাসি মুখে সালাম দেন, অভয় দেন এবং তার মাথার পাশে এসে বসেন। তারপর মৃতপ্রায় মানুষটির দিকে তাকিয়ে বলেন, 'হে পবিত্র আত্মা! আপনি আপনার পালনকর্তা উনার ক্ষমা ও মুহাব্বত গ্রহণ করুন এবং এই দেহ থেকে বের হয়ে আসুন।' মু'মিনের আত্মা যখন বের হয়ে আসে তখন সে কোনো ধরণের ব্যথা-বেদনা অনুভব করে না।”

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিষয়টি উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে বললেন, “মনে করুন একটা পানির জগ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর, তা থেকে এক ফোঁটা পানি যেমন নিঃশব্দে নিচে গড়িয়ে নেমে আসে, ঠিক তেমনি নীরবে ও বিনা কষ্টে আত্মাটি তার দেহ থেকে বের হয়ে আসে। সেই সময় আরো দুই জন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম বেহেশত থেকে সুগন্ধি মাখানো একটা নরম সুতোর সাদা চাদর নিয়ে আসেন এবং আত্মাটিকে সেই চাদরে আবৃত করে আকাশের দিকে নিয়ে যান। উনারা যখন আকাশে পৌঁছেন তখন অন্যান্য ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ সেই আত্মাটিকে দেখার জন্য এগিয়ে আসেন। কাছে এসে সবাই বলেন, 'সুবহানাল্লাহ!

কত সুন্দর আত্মা! কি সুন্দর তার ঘ্রাণ!' তারপর সবাই জানতে চান, ‘এই আত্মাটি কার?' উত্তরে আত্মা বহনকারী ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ বলেন, 'তিনি হলেন, ফুলান ইবনে ফুলান অর্থাৎ অমুকের সন্তান অমুক।' তখন অন্যান্য ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ আত্মাটিকে সালাম দেন। তারপর আবার জিজ্ঞেস করেন, 'তিনি কি আমল করেছেন? উনার আত্মায় এতো সুঘ্রাণ কেন?' আত্মা বহনকারী ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ তখন বলেন, 'আমরা শুনেছি মানুষজন নিচে বলাবলি করছে, তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার ভালো বান্দা ছিলেন, অনেক দয়ালু ছিলেন, মানুষের অনেক উপকার করেছেন।'

এতটুকু বলার পর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একটু থামলেন। তারপর সবার দিকে দৃষ্টি মুবারক দিয়ে, কণ্ঠ মুবারক একটু বাড়িয়ে বললেন, 'এই কারণেই বলছি, সাবধান! আপনারা কিন্তু মানুষের সাথে কখনো খারাপ ব্যবহার করবেন না। আপনারা ইন্তেকাল করার পর মানুষ আপনাদের সম্পর্কে যা যা বলবে, আত্মা বহনকারী ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণও আকাশে গিয়ে ঠিক একই কথা অন্যদেরকে বলবেন।'

তারপর তিনি আবার একটু চুপ করলেন; কবরটার দিকে দৃষ্টি মুবারক দিয়ে আবার বলতে শুরু করলেন, “এই সময় মানুষ যখন পৃথিবীতে মৃতদেহকে কবর দেয়ার জন্য গোসল দিয়ে প্রস্তুত করবে, তখন মহান আল্লাহ তা'য়ালা আত্মা বহনকারী ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণকে বলবেন, “আপনারা যান, এখন আবার এই আত্মাকে তার শরীরে রেখে আসুন।' তারপর মৃতদেহকে কবরে রেখে যাওয়ার পর দুই জন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম আসবেন। উনাদের নাম মুনকার ও নাকির আলাইহিমাস সালাম। উনারা মৃত ব্যক্তিকে তার সৃষ্টিকর্তা, তার দ্বীন ও তার নবী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন। তারপর চলে যাবেন।

উনারা চলে যাওয়ার পর, আত্মাটি আবার কবরে একাকী হয়ে যাবে। সে এক ধরণের অজানা আশংকায় অপেক্ষা করবে। এমন সময় সে দেখবে, খুব সুন্দর একজন তার কবরে তার সাথে দেখা করতে এসেছে। তাকে দেখার পর আত্মাটি ভীষণ মুগ্ধ হবে। এতো মায়াবী ও সুন্দর চেহারা সে জীবনে

কোনদিন দেখেনি। আত্মাটি তাকে জিজ্ঞেস করবে, ‘আপনি কে?' সেই সুন্দর ব্যক্তি বলবে, 'আমি আপনার জন্য অনেক বড় সুসংবাদ নিয়ে এসেছি। আপনি দুনিয়ার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। আপনার জন্য মহান আল্লাহ তা'য়ালা জান্নাতের ব্যবস্থা করেছেন। আপনি কি সেটা একটু দেখতে চান?' আত্মাটি ভীষণ খুশি হয়ে বলবে, 'অবশ্যই আমি দেখতে চাই, আমাকে একটু জান্নাত দেখান।' সুন্দর ব্যক্তি বলবে, 'আপনার ডান দিকে তাকান।' আত্মাটি ডানে তাকিয়ে দেখবে কবরের দেয়ালটি সেখানে আর নেই। সেই দেয়ালের দরজা দিয়ে অনেক দূরে সুন্দর বেহেশত দেখা যাচ্ছে। বেহেশতের এই রূপ দেখে আত্মাটি মুগ্ধ হবে ও প্রশান্তি লাভ করবে এবং সেখানে যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে সুন্দর ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করবে, 'আমি সেখানে কখন যাবো? কিভাবে যাবো?' সুন্দর ব্যক্তি মৃদু হেসে বলবে, ‘যখন সময় হবে, তখনই আপনি সেখানে যাবেন ও সেখানেই থাকবেন। আপাততঃ কিয়ামত পর্যন্ত আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে। ভয় পাবেন না। আমি আপনার সাথেই আছি। আপনাকে আমি শেষ পর্যন্ত সঙ্গ দিবো।' আত্মাটি তখন তাকে আবারো জিজ্ঞেস করবে, ‘কিন্তু আপনি কে?' তখন সুন্দর ব্যক্তি বলবে, ‘আমি আপনার এতদিনের আমল। পৃথিবীতে আপনার সব ভালো কাজের, আপনার সব পুণ্যের রূপ আমি। আজ আপনি আমাকে একজন সঙ্গী রূপে দেখছেন। মহান আল্লাহ তা'য়ালা আমাকে পাঠিয়েছেন আপনাকে সঙ্গ দেয়ার জন্যই।' এই কথা বলে, সে আত্মাটির উপর যত্ন করে হাত বুলিয়ে দিবে এবং বলবে, 'হে পবিত্র আত্মা! এখন আপনি শান্তিতে ঘুমান। নিশ্চিন্তে বিশ্রাম নিন।' তারপর আত্মাটি এক নযরে বেহেশতের দিকে তাকিয়ে থাকবে এবং একসময় এই তাকানো অবস্থায় গভীর প্রশান্তিতে ঘুমিয়ে পড়বে।”

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এতটুকু বলে থামলেন। আর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা নিজেদের ভেজা চোখ মুছলেন।




১০০টি চমৎকার ঘটনা - পর্ব-৬ (বনের হরিণীও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আজ্ঞাবহ)

বনের হরিণীও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আজ্ঞাবহ- পর্ব-৬

একবার এক ইহুদী একটা হরিণীকে শিকারের পর গাছের সাথে আটকে রাখলো। সেই হরিণীর ছোট ছোট বাচ্চা ছিল। একে তো বন্দি হওয়ার দুর্বিষহ যন্ত্রণা, তদুপরি ছোট বাচ্চাদের মমতায় ওই হরিণী উদ্বেলিত হয়ে উঠছিল। ক্ষুধার্ত ছোট বাচ্চাদেরকে দুধ পান করাতে হবে। তাই সে মুক্তি চায়। কিন্তু মুক্তির উপায় কি? হরিণীর চোখে পানি। অঝোর ধারায় সে কাঁদছে। ওই পথ দিয়েই যাচ্ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি তো সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত কিছুই জানেন । তবুও কায়িনাতবাসীর ইবরত-নছীহতের লক্ষ্যে হরিণীকে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, 'কী হয়েছে তোমার?' হরিণীর বিনীত নিবেদন, ‘ইয়া রহমাতুল্লিল আলামীন, রউফুর রহীম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এক ইহুদী আমাকে আটকে রেখেছে। আমার ছোট বাচ্চারা ক্ষুধার্ত। ওদেরকে দুধ পান করাতে হবে। দয়া করে যদি আপনি কিছু সময়ের জন্য আমার বাঁধন খুলে দিতেন, তাহলে বাচ্চাদেরকে দুধ পান করিয়েই আমি আবার এখানে চলে আসবো।'

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ওই হরিণীকে মুক্ত করে দেন। হরিণী অতি দ্রুত বাচ্চাদের কাছে গিয়ে বলে, *আজ এক মুবারক ঘটনার অবতারণা হয়েছে। এক ইহুদী আমাকে আটকে রেখেছিল। আমার খোশ নসীব। ইতোমধ্যে আমি রহমাতুল্লিল আলামীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক সাক্ষাৎ লাভ করি। তোমাদেরকে দুধ পান করানোর লক্ষ্যে সাময়িক মুক্তির জন্য আমি উনার ক্বদম মুবারকে সবিনয়ে প্রার্থনা জানাই। তিনি অল্প সময়ের জন্য আমাকে বন্দীদশা থেকে মুক্ত করে দিয়েছেন। তখন ইহুদী সেখানে উপস্থিত ছিল না। দ্রুত ফিরে যাবো বলে আমি উনাকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছি। প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে। তোমরা অতিসত্বর দুধপান করে আমাকে যেতে দাও।' বাচ্চারা শুনে বলে, ‘মাগো! আমাদের দুধপান করার প্রয়োজন নেই। এতে বিলম্ব হবে। বিলম্ব হলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে চরম বেয়াদবি হবে। আমরা দুধ পান করবো না। চলো আমরা একসঙ্গে এখনই উনার মুবারক খিদমতে গিয়ে হাযির হই।'

ইতোমধ্যে ইহুদীটি ঘটনাস্থলে ফিরে এসে দেখতে পায়, তার আটককৃত হরিণী যথাস্থানে নেই। সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খতামুন নাবিয়্যীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইহুদীকে বলেন, 'বাচ্চাকে দুধ পান করানোর জন্য হরিণীকে আমি অল্প সময়ের জন্য ছেড়ে দিয়েছি। সে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরে আসবে।' বিষয়টি ইহুদীর বিশ্বাস হয়নি। ক্ষুব্ধ ইহুদী মনে মনে ভাবে, ‘হরিণী কি মানুষ? সে কিভাবে প্রতিশ্রুতি দিবে? কিভাবে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে? আর কেনই বা সে ফিরে আসবে?' আসলে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে ওই হরিণীরও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হরিণী যে উনার একান্ত আজ্ঞাবহ, তা অজ্ঞ ইহুদী বুঝবে কি করে?

কিন্তু দেখা গেলো, ইহুদীর ক্ষোভ মিশ্রিত দুর্ভাবনা শেষ না হতেই হরিণী তার বাচ্চাসহ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে ফিরে আসলো! এ অভাবিত ঘটনা দেখে ইহুদী মুসলমান হয়ে গেলো। সুবহানাল্লাহ।