১০০টি চমৎকার ঘটনা - পর্ব-১১ (সবচেয়ে মূল্যবান ও উপকারী দোয়া)



সবচেয়ে মূল্যবান ও উপকারী দোয়া- পর্ব-১১

মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী হযরত সুফিয়ান ছাওরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি একবার হজ্জ করতে গেলেন। সেখানে তিনি দেখলেন, এক যুবক হজ্জের প্রতিটি রুকনে পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠ করছে। তিনি তাকে বললেন, 'হে যুবক! হজ্জের বিভিন্ন স্থানে তো বিভিন্ন দোয়া পাঠ করতে হয়। তুমি তা না করে সব জায়গায় শুধু দরূদ শরীফ পাঠ করছো, তার কারণ কি?' যুবক উত্তর দিলো, আমি হজ্জের কাজ সম্পাদন করে আপনাকে এর কারণ খুলে বলবো।

এরপর যুবকটি তার হজ্জের কাজ সম্পন্ন করে হযরত সুফিয়ান ছাওরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বিষয়টি সম্পর্কে বললো, “হুযূর! আমি আমার জীবনে দরূদ শরীফের চেয়ে মূল্যবান ও উপকারী কোনো দোয়া পাইনি। কেন একথা বলছি শুনুন। আমি একবার আমার আব্বার সাথে কাফেলাবদ্ধ হয়ে হজ্জের উদ্দেশ্যে সফর করছিলাম। মরুভূমির ভিতর দিয়ে যাবার সময় আমার আব্বা খুব অসুস্থ হয়ে মারা যান। মারা যাবার পর উনার চেহারা বিকৃত হয়ে যায়। নাঊযুবিল্লাহ! এটা দেখে আমি খুবই চিন্তিত হয়ে পড়ি। কাফেলার লোকেরা আব্বার এই চেহারা দেখলে কি বলবে! আর মরুভূমিতে আব্বাকে দাফন কাফনের ব্যবস্থা কিভাবে হবে ইত্যাদি চিন্তা করতে করতে আমি ঘুমিয়ে পড়লাম। স্বপ্নে দেখলাম একজন অত্যন্ত নূরানী চেহারার ব্যক্তি আমাদের নিকট তাশরীফ এনেছেন। উনার নূর মুবারকে সমগ্র মরুভূমি উদ্ভাসিত হয়ে গিয়েছে। আমি উনার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বললেন, ‘আমি হলাম তোমাদের নবী ও রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তোমার আব্বা প্রতিদিন আমার প্রতি দরূদ শরীফ পাঠ করতো। আজকে তার দরূদ শরীফ না পেয়ে আমি দেখতে এসেছি, তার কি হলো।' এই বলে তিনি আব্বার মুখের উপর উনার পবিত্রতম হাত মুবারক বুলিয়ে দিলেন। সাথে সাথে আব্বার চেহারা সুন্দর হয়ে গেলো। এরপর আমার ঘুম ভেঙে গেলো। আমি দেখলাম সত্যি আব্বার চেহারা সুন্দর হয়ে গিয়েছে। আমি এবার কাফন-দাফনের জন্য লোক খুঁজতে বের হলাম। কিন্তু সামান্য একটু যেতেই দেখতে পেলাম দলে দলে লোক আমার দিকে আসছে। তাদেরকে এই বিরান মরুভূমিতে আসার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা বললো, তারা একটা গায়েবী নেদা শুনেছে যে, ‘কেউ যদি কোনো জান্নাতি মানুষের জানাজা পড়তে চায় তবে যেন সে অমুক স্থানে যায়।' সুবহানাল্লাহ! সেজন্য তারা অনেক দূর থেকে এসেছে। হুযূর! এই ঘটনার পর থেকে আমি আমার জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে দরূদ শরীফকে সাথী করে নিয়েছি।” সুবহানাল্লাহ!

পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠকারী প্রতিটি ব্যক্তিকে আমাদের নবী হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চিনেন এবং জানেন। যিনি শাফায়াতের মালিক উনার নিসবত হাসিল করতে পারলে আর কোনো চিন্তা আছে কি?


0 Comments: