আজ থেকে প্রায় ১৩০০ বছর পুর্বে আব্বাসীয় খিলাফতে ঈদে মিলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম পালন হত।

আজ থেকে প্রায় ১৩০০ বছর পুর্বে আব্বাসীয় খিলাফতে ঈদে মিলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম পালন হত।
=================================================
আজ থেকে প্রায় ১৩০০ বছর পুর্বে আব্বাসীয় খিলাফতে ঈদে মিলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম পালন হত।
আব্বাসীয় খিলাফতের খলীফা হারুন অর রশীদের আম্মা আল খায়যুরান(মৃত্যু ১৭২ হিজরি ২য় শতক /৭৮৯ খৃষ্টাব্দ – ৮ম শতক) হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত মুবারকের স্থানে ইবাদত বন্দেগী করার জন্য উন্মুক্ত করে দেন। যেখানে মুসলমানগণ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ঈদে মিলাদে হাবীবি(ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পালন করতেন।
সুত্রঃ
১. Encyclopaedia of Islam, Second Edition. Brill Online Reference Works
২. Mawlid or Mawlud”, Encyclopedia of Islam
The basic earliest accounts for the observance of Mawlid can be found in 8th-century Mecca, when the house in which Muhammad was born was transformed into a place of prayer by Al-Khayzuran (mother of Harun al-Rashid, the fifth and most famous Abbasid caliph)
Source: “Mawlid or Mawlud”., Encyclopedia of Islam, Second Edition. Brill Online Reference Works.
জেনে রাখা দরকার, আব্বাসীয় খিলাফত ইসলামী খিলাফতগুলোর মধ্যে তৃতীয় খিলাফত। আব্বাসীয় খিলাফত হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চাচা হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়া আনহু উনার বংশধরদের কর্তৃক ১৩২ হি/৭৫০ খ্রিস্টাব্দে কুফায় প্রতিষ্ঠিত হয় যা ৬৫৬ হি/১২৫৮ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত শাসন ক্ষমতায় থাকেন। ৯২২ হি/ ১৫১৭ সালে ইহা বিলুপ্ত ঘোষনা করা হয়।
এ খিলাফত ইসলাম এবং মুসলমানগন উনাদের জন্য অনেক অবদান রেখেছেন।
এছাড়াও বাদশা হরুনুর রশীদের সময়কার ঘটনা যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, পবিত্র রবিউল আউয়াল শরীফ মাসে পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার সম্মানার্থে পবিত্র মীলাদ শরীফ মাসকে তাযীম করায় এক ব্যক্তি ওলী আল্লাহ হিসাবে আখ্যায়িত হয়েছিলেন,
আল্লামা সাইয়্যিদ আবু বকর মক্কী আদ দিময়াতী আশ শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত: ১৩০২ হিজরী) উনার বিখ্যাত “ইয়নাতুল ত্বলেবীন” কিতাবে বর্ণনা করেন, বর্ণিত রয়েছে, খলীফা হারুনুর রশীদের যামানায় (১৪৮-১৯৩ হিজরী) বছরা শহরের এক যুবক সে নফসের অনুসরন করে চলতো। শহরের লোকেরা নিন্দনীয় আমলের জন্য তাকে নিন্দার চোখে দেখতো। তবে যখন পবিত্র রবিউল আউয়াল শরীফ মাস আসতো, এই যুবক কাপড় ধৌত করতেন, সুগন্ধি ব্যবহার করতেন ও খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতেন। সেই সাথে ভালো খাবারের ব্যবস্থাও করতেন। এবং পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার মাসে এ আমল লম্বা সময়ব্যাপী করতেন। অতপর যখন তিনি ইন্তেকাল করেন তখন শহরবাসীগণ গায়েবী আহ্বান শুনতে পান। সেখানে বলা হচ্ছিলো, হে বসরাবাসী! আপনারা আল্লাহ পাক উনার ওলীদের মধ্যে অর্ন্তভুক্ত একজন ওলীর জানাজায় শরীক হন। নিশ্চয়ই তিনি আমার কাছে খুবই প্রিয়। অতপর শহরবাসী উনার জানাজায় উপস্থিত হলেন এবং দাফন সম্পন্ন করলেন। উনারা (শহরবাসী) স্বপ্নে দেখলেন, উক্ত যুবক কারুকার্যপূর্ণ রেশমী কাপড় পরিহিত অবস্থায় ঘোরাফেরা করছেন। উনাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, এ ফযিলত আপনি কি করে লাভ করলেন? তিনি বললেন, পবিত্র মীলাদ শরীফ উনাকে তাযীম করার কারনে।” (ইয়নাতুল ত্বলেবীন ৩য় খন্ড ৬১৩ পৃষ্ঠা ; প্রকাশনা: দারুল হাদীছ , কাহেরা, মিশর)
এখানে কয়েকটি বিষয় উল্লেখযোগ্যঃ
১. যখন আব্বাসীয় খিলাফত শুরু হয় তখন তাবেয়ী উনাদের যুগ। তার মানে তাবেয়ী উনাদের সময়ে ঈদে মিলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালিত হত।
২. খলিফা হারুন অর রশিদের আম্মা যেহেতু পালন করেছেন সেহেতু অন্যরাও পালন করেছেন। যা উপরে উল্লিখিত ঘটনাদ্বারা প্রমাণিত হয়।
৩. ইহা নতুন কোন আমল নয়, ইসলামের শুরু থেকেই পালিত একটি আমল। যা মূলত সুন্নাত মুবারক উনার অন্তর্ভূক্ত।
তথ্যসূত্রওঃ
১. https://goo.gl/IO9bCs
২. আল খায়যুরান – https://goo.gl/b7kpm5
৩. আব্বাসীয় খিলাফত –https://goo.gl/OYoCSl
৪. ইয়নাতুল ত্বলেবীন ৩য় খন্ড ৬১৩ পৃষ্ঠা ; প্রকাশনা: দারুল হাদীছ , কাহেরা, মিশর