সতেরবার ভারত বিজয়ী গজনীর সুলতান মাহমুদের খেয়াল হলো তিনি ওলী আল্লাহর জিয়ারতে যাবেন। এদিকে-সেদিকে অনেক নামধারীর সাক্ষাতই হলো। তারা তাকে অনেক তাযীম-তাকরীমও করলো। কিন্তু সুলতান মাহমুদের ব্যাকুল মন তাতে শান্তি পেলনা। তিনি উজীরে আযমকে বললেন, অন্য কোথাও নিয়ে যেতে।
উজীরে আযম এবার তাকে নিয়ে আসলেন হযরত আবুল হাসান খারক্বানী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর আছে। অন্যান্যদের মত ইনি, তাকে দেখে উঠে দাঁড়ালেন না, এমনকি মোসাফাহ্ করার জন্য হাতও বাড়িয়ে দিলেন না। অতঃপর সুলতান মাহমুদ নিজেই সেখানে যথা নিয়মে বসে পড়লেন। তার তাক্বওয়া, রূহানী জ্ঞান তথা ইলমে লাদুন্নী সমৃদ্ধ তত্ত্বমূলক কথা সুলতান মাহমুদকে অভিভূত করলো। এক পর্যায় হযরত আবুল হাসান খারক্বানী রমহতুল্লাহি আলাইহি স্বীয় পীর ছাহেব সুলতানুল আরিফীন, হযরত বায়েযীদ বোস্তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর প্রশংসা করতে গিয়ে বললেন, “আমার পীর ছাহেব সুলতানুল আরিফীন হযরত বায়েযীদ বোস্তামী রহমতুল্লাহি আলাইহিকে যারা দেখেছেন তারা নাযাত পেয়েছেন, জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেয়েছেন।” দ্বিগ্বীজয়ী সুলতান মাহমুদ এবার আর চুপ থাকতে পারলেননা। তিনি বলে উঠলেন, “হুযূর! আপনার পীর ছাহেব কি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, রহমাতুল্লিল আ’লামীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকেও বড় হয়ে গেলেন? আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আবূ জেহেল, আবূ লাহাব সারাজীবনে লাখ-লাখ বার দেখলো এতদ্বসত্ত্বেও তারা জাহান্নামী বলে সাব্যস্ত হলো, আর আপনার পীর ছাহেবকে যেই দেখেছে সেই জামান্নাম থেকে নাযাত পেয়েছে, এটা কেমন কথা হলো?” সুলতান মাহমুদের প্রশ্ন শেষ না হতেই হযরত আবুল হাসান খারক্বানী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর বদনমন্ডলে ফুটে উঠলো রক্তিম আভা। তিনি জ্বালালী তবিয়তে বলে উঠলেন, “মুখ সামলে কথা বলো হে সুলতান।” আবূ জেহেল, আবূ লাহাব কখনও মহান আল্লাহ্ পাক-এর রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, রহমাতুল্লিল আ’লামীন, হাবীবুল্লাহ্, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দেখেনি। তারা দেখেছে তাদের ভাতিজা মুহম্মদকে (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।
গাছ, পাথর, বনের হরিণী, মেঘমালা মহান আল্লাহ্ পাক-এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে চিনেছে। তারা ছালাম দিয়েছে, ঈমান এনেছে। কিন্তু মক্কার কাফিরদের বেলায় কি তাই হয়েছে? বরং মহান আল্লাহ্ পাক-এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে তাদের জিহালতি ও গোমরাহী প্রকাশ পেয়েছে। নিন্মোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফে, “উনি কেমন রসূল, যিনি বাজারে যান, খাদ্য খান” অর্থাৎ কাফিররা মহান আল্লাহ্ পাক-এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বাজার এবং খাদ্য ক্রয়ের মাঝে জ্যান্ত একজন সাধারণ মানুষ হিসেবেই দেখেছে। (নাউযুবিল্লাহ্)
0 Comments:
Post a Comment