সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চিকিৎসা পদ্ধতি- ঝাড়-ফুঁক ও তাবিজ
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক
করেন-
وَنُنَزِّلُ
مِنَ الْقُرْاٰنِ مَا هُوَ شِفَاءٌ وَّرَحْـمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِيْنَ
অর্থ: আমি পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিল
করেছি যার মধ্যে রয়েছে শিফা তথা রোগ মুক্তি। আর মু’মিনগণের জন্য রহমত। (পবিত্র সূরা বানী ইসরাঈল শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮২)
পবিত্র কুরআন শরীফ, যাহিরী ও
বাতিনী উভয় রোগের শিফা দানকারী তথা রোগ মুক্তি। বাতিনী তথা রাগ হিংসা, বিদ্বেষ, অহংকার, তাকাব্বুরী, পরশ্রীকাতরতা, রিয়া বা
লৌকিকতা কাম-লোভ ইত্যাদি। পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত দ্বারা সে সকল বদ খাছলত তথা
বাতিনী রোগ দূর হয়। তবে একজন অভিজ্ঞ ও যোগ্য চিকিৎসক তথা কামিল শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা উনার দিক নির্দেশনা
তথা ছোহবত মুবারক আবশ্যক। একইভাবে যাহিরী রোগ তথা শারীরিক ও মানষিক রোগের শিফা তথা
রোগ মুক্তিও রয়েছে সেখানে। তবে সেক্ষেত্রেও ব্যক্তির অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা পূর্ব
শর্ত। কেননা অনভিজ্ঞ ও ফাসিক লোক সারাদিন যদি কুরআন শরীফ পড়ে কোন রোগীর গায়ে ফুঁ
দেয় তাহলে তা’ছীর নাও করতে পারে।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি ঝাড়-ফুঁক মুবারক। কেউ অসুস্থ হলে তিনি পবিত্র কুরআন
শরীফ উনার কোন পবিত্র আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করে রোগীর শরীরে ফুঁক মুবারক দিতেন। অথবা
কোন দোয়া-কালাম শরীফ পড়ে ফুঁক মুবারক দিতেন সে ব্যক্তি সুস্থ হয়ে যেত।
সুবহানাল্লাহ! আর এ বিষয়টি উম্মাহকে সুস্পষ্টভাবে শিক্ষা দেয়ার জন্য তিনি নিজে যখন
মারিদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করতেন তখন পবিত্র আয়াত শরীফ কিংবা দোয়া-কালাম শরীফ পড়ে
নূরুছ ছিহাহ বা ফুঁক মুবারক দিতেন। পবিত্র সূরা নাস শরীফ ও পবিত্র সূরা ফালাক শরীফ
পড়ে ফুঁক মুবারক দেয়ার কথা তো সর্বজন বিদিত।
কখনো কখনো তিনি কোন দোয়া শরীফ পড়ে
নূরুছ ছিহাহ বা ফুঁক মুবারক দিতেন। কখনো কাউকে শিখিয়ে দিতেন। যা পড়ে উনারা ফুঁক
দিতেন। এমনকি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি উনাদেরকে ঝাড়-ফুঁক মুবারক করার তারগীব (উৎসাহ) ও আদেশ মুবারক করতেন।
কিন্তু আইয়্যামে জাহিলিয়াতের
সময়কালীন দোয়া-কালাম যা কুফরী-শিরকী কালাম (বাক্য) মিশ্রিত তা পরিহার করার জন্য
কঠোরভাবে নির্দেশ মুবারক দিতেন।
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহুম উনারা প্রতিটি কাজে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পরিপূর্ণভাবে অনুসরণ-অনুকরণ করতেন। উনারা সেই
অনুসরণ-অনুকরণে আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করে, দোয়া-কালাম পড়ে ঝাড়-ফুঁক করতেন। তাবিজ
ব্যবহার করতেন।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক অনুমোদিত এবং দিক নির্দেশিত
দোয়া-কালাম শরীফ পড়ে ঝাড় ফুঁক করতেন। উনারা আগত ব্যক্তি বা রোগীকে দোয়া কালাম
শিখিয়ে দিতেন। আবার কোন ক্ষেত্রে সেই আয়াত শরীফ,
দোয়া-কালাম
লিখে গলায় কিংবা হাতে ঝুলিয়ে দিতেন। সুবহানাল্লাহ!
পরবর্তীতে হযরত ইমাম মুজতাহিদ ও
আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ সেই পথই অনুসরণ করছেন। কাজেই ঝাড়-ফুঁক করা, তাবিজ
ব্যবহার করা, করানো খাছ সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন
খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে ঝাড় ফুঁক মুবারক করেছেন তা
ছিহাহ ছিত্তাহসহ অসংখ্য হাদীছ শরীফ উনার কিতাবে উল্লেখ আছে।
বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত আনাস বিন মালিক
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হযরত ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে
বললেন-
اَلَا
اَرْقِيْكَ بِرُقْيَةِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ بَلٰى.
قَالَ اللّٰهُمَّ رَبَّ النَّاسِ مُذْهِبَ الْبَاسِ اشْفِ اَنْتَ الشَّافِيْ لَا شَافِيَ
إِلَّا أَنْتَ، شِفَاءً لَايُغَادِرُ سَقَمًا
অর্থ: আমি কি আপনাকে নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক ঝাড়-ফুঁকের
দোয়া সম্পর্কে খবর দিবনা? তিনি বললেন,
হ্যাঁ
অবশ্যই। আপনি আমাকে বলুন। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এ
দোয়া মুবারক পড়ে ঝাড়-ফুঁক দিতেন-
اللّٰهُمَّ
رَبَّ النَّاسِ مُذْهِبَ الْبَاسِ اشْفِ اَنْتَ الشَّافِيْ لَا شَافِيَ إِلَّا أَنْتَ،
شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقَمًا
(আবূ দাউদ
শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো
বর্ণিত আছে-
عَنْ
حَضْرَتْ عُثْمَانَ بْنِ أَبِـي الْعَاصِ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ اَنَّه أَتٰى رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ عُثْمَانُ
وَبِيْ وَجَعٌ قَدْ كَادَ يُهْلِكُنِـيْ قَالَ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِمْسَحْهُ بِيَمِيْنِكَ سَبْعَ مَرَّاتٍ وَقُلْ أَعُوْذُ بِعِزَّةِ
اللهِ وَقُدْرَتِهٖ مِنْ شَرِّ مَا أَجِدُ. قَالَ فَقُلْتُ
ذٰلِكَ فَأَذْهَبَ اللهِ مَا كَانَ بِـيْ فَلَمْ أَزَلْ اٰمُرُ بـِهَا أَهْلِيْ وَغَيْرَهُمْ
.
অর্থ: হযরত উসমান ইবনে আবুল আস
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। একদিন হযরত উসমান ইবনে আবুল আস
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আসলেন। বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ব্যাথা আমাকে অস্থির করে তুলেছে। মনে হয় যেন
ইন্তিকালই করবো। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনি আপনার ব্যাথার স্থান ডান হাত মুবারক দ্বারা
সাতবার মাসেহ (হাত সঞ্চালন) করুন। আর বলুন-
أَعُوْذُ
بِعِزَّةِ اللهِ وَقُدْرَتِهٖ مِنْ شَرِّ مَا أَجِدُ
রাবী হযরত উসমান ইবনে আবুল আস
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি এরূপ করার সাথে সাথেই মহান আল্লাহ
পাক তিনি আমার কষ্ট দূর করে দেন। তারপর থেকে আমি পরিবার-পরিজন ও অন্যান্যদেরকে
এরূপ করার নির্দেশ দিতাম। (আবূ দাউদ শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত
আছে-
عَنْ
حَضْرَتْ أَبِي الدَّرْدَاءِ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ سَـمِعْتُ رَسُوْلَ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ مَنِ اشْتَكٰى مِنْكُمْ شَيْئًا أَوِ
اشْتَكَاهُ أَخٌ لَّه فَلْيَقُلْ رَبُّنَا اللهُ الَّذِيْ فِـي السَّمَاءِ تَقَدَّسَ
اسْـمُكَ أَمْرُكَ فِي السَّمَاءِ وَالأَرْضِ كَمَا رَحْـمَتُكَ فِي السَّمَاءِ فَاجْعَلْ
رَحْـمَتَكَ فِي الْأَرْضِ اِغْفِرْ لَنَا حُوْبَنَا وَخَطَايَانَا أَنْتَ رَبُّ الطَّيِّبِيْنَ
أَنْزِلْ رَحْـمَةً مِّنْ رَّحْـمَتِكَ وَشِفَاءً مِّنْ شِفَائِكَ عَلٰى هٰذَا الْوَجَعِ
فَيَبْرَأُ
অর্থ: হযরত আবূ দারদ্বা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি, তোমাদের কেউ
যদি অসুস্থতার কথা বলে কিংবা কোন ভাই যদি দুঃখ কষ্ট,
মুছীবতের
কথা বলে তাহলে সে যেন এই দোয়া পড়ে ফুঁক দেয়-
رَبُّنَا
اللهُ الَّذِيْ فِـي السَّمَاءِ تَقَدَّسَ اِسْـمُكَ أَمْرُكَ فِي السَّمَاءِ وَالأَرْضِ
كَمَا رَحْـمَتُكَ فِي السَّمَاءِ فَاجْعَلْ رَحْـمَتَكَ فِي الْأَرْضِ اِغْفِرْ لَنَا
حُوْبَنَا وَخَطَايَانَا أَنْتَ رَبُّ الطَّيِّبِيْنَ أَنْزِلْ رَحْـمَةً مِّنْ رَّحْـمَتِكَ
وَشِفَاءً مِّنْ شِفَائِكَ عَلٰى هٰذَا الْوَجَعِ فَيَبْرَأُ
তাহলে সে ব্যক্তি সুস্থ হয়ে যাবে।
সুবহানাল্লাহ! (আবূ দাউদ শরীফ: বাবু কাইফার রুক্বা)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত
আছে-
عَنْ
حَضْرَتْ يَزِيْدَ بْنِ أَبِـيْ عُبَيْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ، قَالَ رَأَيْتُ
أَثَرَ ضَرْبَةٍ فِي سَاقِ سَلَمَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ، فَقُلْتُ يَا أَبَا
مُسْلِمٍ، مَا هٰذِهِ الضَّرْبَةُ قَالَ هٰذِهِ ضَرْبَةٌ أَصَابَتْنِي يَوْمَ خَيْبَرَ،
فَقَالَ النَّاسُ أُصِيْبَ سَلَمَةُ. فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ فَنَفَثَ فِيْهِ ثَلاَثَ نَفَثَاتٍ، فَمَا اشْتَكَيْتُهَا حَتَّـى السَّاعَةِ.
অর্থ: হযরত ইয়াযীদ ইবনে আবী উবায়দ
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি হযরত সালামা রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু উনার পায়ের গোছা মুবারকে একটি মারাত্মক ক্ষত চিহ্ন দেখতে পেলাম। উনার
এই ক্ষত চিহ্নের কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বলেন, ইহা খায়বর
জিহাদের আঘাতের চিহ্ন। এটা দেখে মানুষ বলাবলি করছিল যে, হযরত সালামা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার জীবনের আশা নেই। তারপর আমাকে নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে হাযির
করা হলো। তিনি তিনবার কিছু পড়ে সেখানে নূরুছ ছিহাহ মুবারক বা ফু মুবারক দিলেন। যার
ফলে এতে আজ পর্যন্ত আমি কোন ব্যাথা অনুভব করিনি। সুবহানাল্লাহ! (আবূ দাউদ শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো
বর্ণিত আছে-
عَنْ
حَضْرَتْ اُمِّ الْـمُؤْمِنِيْنَ عَائِشَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ، قَالَتْ كَانَ النَّبِـيُّ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ لِلإِنْسَانِ اِذَا اشْتَكٰى يَقُوْلُ بِرِيْقِهٖ ثُمَّ قَالَ بِهٖ فِي التُّرَابِ تُرْبَةُ أَرْضِنَا بِرِيْقَةِ بَعْضِنَا يُشْفٰى سَقِيْمُنَا
بِإِذْنِ رَبِّنَا
অর্থ: হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, যখন কোন লোক
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক
খিদমতে অসুস্থতার কথা বলতো তখন তিনি নিজের নূরুল বারাকাত তথা থুথু মুবারক নিয়ে
তাতে লাগিয়ে এই দোয়া পড়তেন-
تُرْبَةُ
أَرْضِنَا بِرِيْقَةِ بَعْضِنَا يُشْفٰى سَقِيْمُنَا بِإِذْنِ رَبِّنَا
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত
আছে-
عَنْ
حَضْرَتْ اُمِّ الْـمُؤْمِنِيْنَ عَائِشَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ، أَنَّ النَّبِيَّ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا اشْتَكٰى يَقْرَأُ عَلٰى نَفْسِهٖ بِالْمُعَوِّذَاتِ وَيَنْفُثُ فَلَمَّا اشْتَدَّ وَجَعُه كُنْتُ
أَقْرَأُ عَلَيْهِ وَأَمْسَحُ عَنْهُ بِيَدِهٖ رَجَاءَ بَرَكَتِهَا .
অর্থ: উম্মুল মু’মিনীন আছছালিছাহ ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বর্ণনা করেন, যখনই নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মারিদ্বী শান
মুবারক প্রকাশ করতেন তখনই (উম্মতকে তা’লীম দেয়ার জন্য) তিনি বিভিন্ন দোয়া-কালাম
শরীফ পাঠ করে স্বীয় নূরুল মুজাসসাম শরীফ বা জিসম মুবারকে নূরুছ ছিহাহ মুবারক দম বা
ফুঁক মুবারক দিতেন। তারপর যখন মারিদ্বী শান মুবারক বৃদ্ধি পায়, তখন আমি তা
পাঠ করে উনার নূরুল মাগফিরাত (হাত মুবারকে) দিয়ে নূরুল মুজাসসাম শরীফ বা জিসম
মুবারকে বরকতের উদ্দেশ্যে মাসেহ করে দিতাম। (আবূ দাউদ শরীফ: বাবু কাইফার রুক্বা)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো
বর্ণিত আছে-
عَنْ
حَضْرَتْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ
جَدِّهٖ، أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ
يُعَلِّمُهُمْ مِّنَ الْفَزَعِ كَلِمَاتٍ أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّةِ مِنْ
غَضَبِهٖ وَشَرِّ عِبَادِهٖ وَمِنْ هَـمَزَاتِ الشَّيَاطِيْنِ وَأَنْ يَّـحْضُرُوْنِ. وَكَانَ
عَبْدُ اللهِ بْنُ عَمْرٍو رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ يُعَلِّمُهُنَّ مَنْ عَقَلَ
مِنْ بَنِيْهِ وَمَنْ لَّـمْ يَعْقِلْ كَتَبَه فَأَعْلَقَه عَلَيْهِ
অর্থ: হযরত আমর ইবনে শুয়াইব
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনার সম্মানিত পিতা ও দাদা থেকে বর্ণনা করেন। নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিপদণ্ডআপদের
সময় এ দোয়া পড়ার শিক্ষা দিতেন।
أَعُوْذُ
بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّةِ مِنْ غَضَبِهٖ وَشَرِّ عِبَادِهٖ وَمِنْ هَـمَزَاتِ الشَّيَاطِيْنِ
وَأَنْ يَّـحْضُرُوْنِ
আর হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনার বয়স্ক সন্তানদেরকে এই দোয়া শিখিয়ে দিতেন। আর
ছোট বাচ্চাদের গলায় তাবিজ বানিয়ে ঝুলিয়ে দিতেন। (আবূ দাউদ শরীফ: বাবু কাইফার
রুক্বা)
পরবর্তীতে হযরত ইমাম মুজতাহিদ ও
আউলিয়ায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনারা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহুম উনাদের সেই পন্থা-পদ্ধতি, পথকেই অনুসরণ করেছেন। অদ্যাবধি তা
অব্যাহত রয়েছে।
কাজেই,
তাবিজ
ব্যবহার করা যে সুন্নত, তা অকাট্য ও স্পষ্টভাবে প্রমাণিত।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো
বর্ণিত আছে-
عَنْ
حَضْرَتْ عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ، قَالَ كُنَّا نَرْقِيْ
فِي الْـجَاهِلِيَّةِ فَقُلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
كَيْفَ تَرَى فِي ذٰلِكَ فَقَالَ اَعْرِضُوْا عَلَىَّ رُقَاكُمْ لاَ بَأْسَ بِالرُّقٰى
مَا لَـمْ يَكُنْ فِيْهِ شِرْكٌ .
অর্থ: হযরত আওফ ইবনে মালিক
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
আমরা জাহিলী
যুগে ঝাড়-ফুঁক করতাম। আমরা বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমাদের এ ঝাড়-ফুঁক বিষয়ে আপনি কি বলেন? তিনি ইরশাদ
মুবারক, আপনাদের ঝাড়-ফুঁক করার দোয়া আমার কাছে পেশ করুন। কেননা, যে
দোয়া-কালাম শিরকমুক্ত তাতে কোন ক্ষতি নেই।
কাজেই,
দোয়া কালাম
যা পড়ে ঝাড় ফুঁক করা হয় তা অবশ্যই কুফরী শিরিকী মুক্ত হতে হবে। কেননা শিরকী কুফরী
বাক্য দ্বারা ঝাড় ফুঁক করা কিংবা তাবিজরূপে তা ব্যবহার করা জায়িয নেই। বরং তা
কুফরী শিরকীর অন্তর্ভুক্ত।
অতএব,
ঝাড়-ফুঁক
করা এবং তাবিজ দেয়া ও ব্যবহার করা খাছ সুন্নত উনার অন্তর্ভুক্ত। এ বিষয়ে ইখতিলাফের
কোন অবকাশ নেই।
মহান আল্লাহ পাক তিনি মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক উসীলায়
উম্মাহকে সঠিক ইলম দান করুন এবং ঝাড়-ফুঁক ও তাবীজের যাবতীয় বরকত-নিয়ামত নসীব করুন।
আমীন।
0 Comments:
Post a Comment