পিডিএফ লিংক - https://drive.google.com/open?id=14Opfey_ftWL9iOZuNwNnVPDcqMw13N-x
সুওয়াল-৮
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ উনার জমি রাস্তা-ঘাট, ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল নির্মাণ, নদী রক্ষণাবেক্ষণ বা যে কোনো সরকারী বেসরকারী প্রয়োজনে বিক্রি করা জায়িয আছে কি? দলীল ভিত্তিক জাওয়াব জানতে চাই।
জাওয়াব: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শরীয়ত উনার ছহীহ ও গ্রহণযোগ্য ফতওয়া হচ্ছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ উনার জমি বা জায়গা যত বড় প্রয়োজনেই হোক না কেন কোনো অবস্থাতেই বিক্রয় করা জায়িয তো নয়ই বরং হারাম ও কবীরা গুনাহ আর বিক্রয় করাকে জায়িয বলা বা মনে করা কুফরী। কারণ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ উনার একমাত্র মালিক হচ্ছেন খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি।
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَاَنَّ الْمَسَاجِدَ لِلّٰهِ
অর্থ: “আর নিশ্চয়ই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ সমূহ মহান আল্লাহ পাক উনার।” (পবিত্র সূরা জ্বিন শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ- ১৮)
অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ সমূহ মহান আল্লাহ পাক উনার এ কথার অর্থ হচ্ছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ সমূহ উনার মালিক হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক তিনি। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
اَلْـمَسْجِدُ بَيْتُ اللهِ
অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ সমূহ মহান আল্লাহ পাক উনার ঘর।” সুবহানাল্লাহ!
এখন প্রশ্ন হচ্ছে অন্যের মালিকানাধীন জমি বা ঘর কারো জন্য বিক্রি করা, ভাঙ্গা বা স্থানান্তর করা জায়িয আছে কি? কস্মিনকালেও জায়িয নেই, তাহলে কারো জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ উনার জমি বিক্রি করা কি করে জায়িয হতে পারে? সে তো এই জমির মালিক না।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّ اللهَ اشْتَرَىٰ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ اَنْفُسَهُمْ وَاَمْوَالَـهُمْ بِاَنَّ لَـهُمُ الْـجَنَّةَ ۚ
অর্থ: “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি মু’মিনদের জান ও মাল খরীদ করে নিয়েছেন সম্মানিত জান্নাত উনার বিনিময়ে।” (পবিত্র সূরা তওবা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১১১)
এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার উপর ভিত্তি করে ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ফতওয়া দিয়েছেন যে, কারো জন্য তার শরীরের রক্ত বা কোনো অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিক্রি করা জায়িয নেই। কারণ এগুলোর মালিক সে নয় বরং মহান আল্লাহ পাক তিনি এগুলোর মালিক। ঠিক একইভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ উনার একচ্ছত্র মালিক হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক তিনি। তাই অন্য কারো জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ উনার জমি বিক্রয় করা জায়িয নয়।
এ প্রসঙ্গে ফিক্বাহের বিখ্যাত কিতাব কুদূরীর মধ্যে উল্লেখ আছে-
وَاِذَا بَنٰى مَسْجِدًا لَـمْ يَزَلْ مُلْكَهٗ عَنْهُ حَتّٰى يُفَرِّزَهٗ عَنْ مُلْكِهٖ بِطَرِيْقِهٖ وَيَاْذَنُ لِلنَّاسِ بِالصَّلٰوةِ فَاِذَا صَلّٰى فِيْهِ وَاحِدٌ زَالَ مُلْكُهٗ عِنْدَ اَبِـىْ حَنِيْفَةَ رَحْـمَةُ اللهِ تَعَالٰى وَقَالَ اَبِـىْ يُوْسُفَ رَحْـمَةُ اللهِ تَعَالٰى يَزُوْلُ مُلْكُهٗ عَنْهُ بِقَوْلِهٖ جَعَلْتُ مَسْجِدًا
অর্থ: যদি কেউ কোনো মসজিদ নির্মাণ করে, তবে ততক্ষণ পর্যন্ত উহার মালিকানা দূরীভূত হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত সে লোকদেরকে উক্ত মসজিদের মধ্যে ছলাত বা নামায পড়ার অনুমতি না দিবে। অতঃপর যখন উক্ত মসজিদে একজন মুছল্লীও ছলাত বা নামায পড়বে তখন ইমামে আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মতে মালিকানা দূর হয়ে যাবে। আর ইমাম আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, তার এ কথার দ্বারা মালিকানা দূর হয়ে যাবে যে, আমি উহাকে মসজিদ বানিয়েছি।
অর্থাৎ কোনো জমি বা স্থানে মসজিদ নির্মাণ করে ছলাত বা নামায আদায় করলে বা ইযনে আম থাকলেই সে স্থানে ওয়াকফ কার্যকর হয়ে যাবে। আর ওয়াকফকৃত স্থানের মালিক হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক তিনি। উক্ত স্থান বিক্রি করতে হলে মহান আল্লাহ পাক উনার থেকে অনুমতি নিতে হবে, যা কস্মিনকালেও সম্ভব না। সুতরাং মসজিদের জায়গা বা জমি বিক্রি করাও যাবে না।
এ প্রসঙ্গে ফিক্বহের বিখ্যাত কিতাব ‘কুদূরীর’ মধ্যে উল্লেখ আছে-
لَـمْ يَـجُزْ بَيْعُهٗ
অর্থাৎ এ ব্যাপারে সকল ইমাম মুজতাহিদ একমত যে, ওয়াকফকৃত সম্পদ বিক্রি করা বা অন্যকে মালিক বানানো জায়িয নেই।
এ প্রসঙ্গে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
تَصَدَّقْ بِاَصْلِهَا لَا يُبَاعُ وَلَا يُوْرَثُ وَلَا يُوْهَبُ
অর্থ: “মূল যমীনটি এমনভাবে ছদক্বা বা ওয়াক্ফ কর যেন উহা বিক্রয় করা না যায়, মিরাছ সাব্যস্ত না হয় এবং উহা যেনো হিবা বা দান করা না যায়।” (কুদুরী)
অর্থাৎ ওয়াকফকৃত মসজিদের জমি বিক্রয় করা যাবে না। উক্ত জমির ওয়ারিছ সাব্যস্ত হবে না এবং উক্ত জমি হেবা বা দানও করা যাবে না, এটাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শরীয়ত উনার ফতওয়া।
উপরোক্ত দলীল ভিত্তিক আলোচনা দ্বারা সুস্পষ্ট ও অকাট্যভাবেই প্রমাণিত হলো যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ উনার জমি রাস্তা-ঘাট, ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল, নদী সংরক্ষণ বা সরকারী-বেসরকারী যে কোন প্রয়োজনে বিক্রয় করা সম্পূর্ণরূপে হারাম ও কবীরা গুনাহ। হালাল বা জায়িয বলা কুফরী।
দলীলসমূহ: ১. তাফসীরে ত্ববারী শরীফ, ২. তাফসীরে খাযিন শরীফ, ৩. তাফসীরে বাগবী শরীফ, ৪. তাফসীরে মাযহারী শরীফ, ৫. তাফসীরে আহমদী শরীফ, ৬. তাফসীরে সামারকন্দী শরীফ, ৭. তাফসীরে জালালাইন শরীফ, ৮. তাফসীরে দুররে মানছূর শরীফ, ৯. তাফসীরে নিশাপুরী, ১০. ফতওয়ায়ে আলমগীরী, ১১. ফতওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১২. ফতহুল ক্বাদীর, ১৩. জাওহারাতুন নাইয়্যারাহ, ১৪. বাহরুর রায়িক, ১৫. আইনী, ১৬. ইনায়া, ১৭. আইনুল হিদায়া, ১৮. হিদায়া মায়াদ দিরায়াহ, ১৯. দুররুল মুখতার, ২০. কুদরী, ২১. ফতওয়ায়ে দেওবন্দ ইত্যাদি।
বি: দ্র: এখানে সংক্ষিপ্তাকারে জাওয়াব দেয়া হলো। প্রয়োজনে আরো দলীলসহ বিস্তারিতভাবে ফতওয়া প্রদান করা হবে। ইনশাআল্লাহ!
সুওয়াল-৯
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদের জমি রাস্তা-ঘাট, ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল, নদী রক্ষণাবক্ষেণ বা সরকারী-বেসরকারী যে কোনো প্রয়োজনে স্থানান্তর করা জায়িয আছে কি?
জাওয়াব: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদের জমি রাস্তা-ঘাট, ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল, নদী রক্ষণাবক্ষেণ বা সরকারী-বেসরকারী যে কোনো প্রয়োজনে স্থানান্তর করা জায়িয নেই। কারণ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদের জমি বা মসজিদের জন্য ওয়াকফকৃত জমি উনার একমাত্র মালিক হচ্ছেন স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি। এখানে যদি কখনো মসজিদ ঘর নাও থাকে কিন্তু জমিটি কিয়ামত পর্যন্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদের জমি হিসেবেই থাকবে এবং মহাপবিত্র ও মহাসম্মানিত মসজিদ হিসেবে সংরক্ষণ করা ফরয। ব্যতিক্রম করা কাট্টা কুফরী। উক্ত স্থানে রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ি ইত্যাদি করা, উক্ত জমি স্থানান্তর বা বিক্রি করা, পরিবর্তন করা কখনোই জায়িয হবেনা বরং কাট্টা হারাম ও কুফরী হবে।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَنْ اَظْلَمُ مِـمَّنْ مَّنَعَ مَسٰجِدَ اللهِ اَنْ يُّذْكَرَ فِيْهَا اسْـمُهٗ وَسَعٰى فِـىْ خَرَابِـهَا اُولٰٓئِكَ مَا كَانَ لَـهُمْ اَنْ يَّدْخُلُوْهَا اِلَّا خَآئِفِيْنَ لَـهُمْ فِـى الدُّنْيَا خِزْىٌ وَّلَـهُمْ فِى الْاٰخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيْمٌ.
অর্থ: “ওই ব্যক্তির চেয়ে বড় যালিম আর কে? যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহে উনার যিকির মুবারক করতে, উনার সম্মানিত নাম মুবারক উচ্চারণ করতে বাধা দেয় এবং সেগুলোকে বিরান করতে চেষ্টা করে। (অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ ভেঙ্গে ফেলে বা বন্ধ করে রাখে, হক্ব আদায় করে না তা’যীম-তাকরীম করে না) তাদের জন্য ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় অর্থাৎ খালিছ তওবা-ইস্তিগফার করা ব্যতীত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহে প্রবেশ করা জায়িয নেই। তাদের জন্য রয়েছে ইহকালে লাঞ্ছনা এবং পরকালে কঠিন শাস্তি।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১১৪)
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় বিখ্যাত ও নির্ভরযোগ্য তাফসীর “তাফসীরে আহমদী” উনার ১৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
اِنَّـهَا تَدُلُّ عَلٰى اَنَّ هَدْمَ الْمسَاجِدِ وَ تَخْرِيْبَهَا مَمْنُوْعٌ وَ كَذَا الْمَنْعٌ عَنِ الصَّلٰوةِ وَ الْعِبَادَةِ وَ اِنْ كَانَ مَمْلُوْكَاَ لِلْمَانِعِ
অর্থ: “উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারা বুঝা যায় যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ ধ্বংস করা বা বিরান করা নিষিদ্ধ। অনুরূপ উহাতে নামায ও ইবাদত করতে নিষেধ করাও হারাম ও কুফরী, যদিও মসজিদটি নিষেধকারীর অধীনে থাকে।”
ফিক্বাহের বিখ্যাত কিতাব “ফতওয়ায়ে আলমগীরীর” ২য় খন্ডের ৪৪৪ পৃষ্ঠায়-
وَلَوْ كَانَ مَسْجِدٌ فِىْ مَـحَلَّةٍ ضَاقَ عَلٰى اَهْلِهٖ وَلَا يَسَعُهُمْ اِنْ سَاَلَـهُمْ بَعْضُ الْـجِيْرَانِ اَنْ يَّـجْعَلُوْا ذَالِكَ الْـمَسَجِدَ لَهٗ لَيَدْخُلُهٗ فِىْ دَارِهٖ وَ يُعْطِيْهِمْ مَكَانَهٗ عَرْضًا مَا هُوَ خَيْرٌ لَهٗ فَيَسَعُ فِيْهِ اَهْلُ الْـمَحَلَّةِ قَالَ مُـحَمَّدٌ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ لَايَسَعُهُمْ ذَالِكَ كَذَا فِى الذَّخِيْرَةِ
অর্থ: যদি কোন মহল্লায় একটি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ থাকে, তথাকার অধিবাসীদের পক্ষে উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে স্থান সংকুলান না হয়, এবং তারা উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদের আয়তন বৃদ্ধি করতে সক্ষম না হয়, আর এই কারণে কোন প্রতিবেশী যদি তাদের নিকট আবেদন করে যে, তারা যেন উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদটি তার অধিকারভুক্ত করে দেন, যাতে করে সে ব্যক্তি উহা আপন বাড়ির অন্তর্ভুক্ত করে নিতে পারে এবং তার পরিবর্তে সে ব্যক্তি তাদেরকে তদাপেক্ষা একটি উৎকৃষ্ট স্থান প্রদান করবে, যার মধ্যে মহল্লাবাসীদের (নামাযের) স্থান সংকুলান হবে। হযরত ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, এরূপ করাটা তাদের জন্য জায়িয হবে না। জখীরা কিতাবেও অনুরূপ বর্ণিত আছে।
ফিক্বাহের বিখ্যাত কিতাব “ফতওয়ায়ে আলমগীরীর” ২য় খন্ডের ৪৪৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
فِـىْ فَتَاوَى الْـحُجَّةِ لَوْ صَارَ اَحَدُ مَسْجِدَيْنِ قَدِيـْمًا وَتَدَاعِىْ اِلَـى الْـخَرَابِ فَاَرَادَ اَهْلُ السّكة بِبَيْعِ الْقَدْيـْمِ وَ صَرْفِهِ الْـمَسْجِدِ الْـجَدِيْدِ فَاِنَّه لَا يَـجُوْزُ اَمَّا عَلٰى قَوْلِ اَبِـىْ يُوْسُفَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ فُلَانٌ الْـمَسْجِدِ وَاِنْ خَرَبَ وَاسْتَغْنٰـى عَنْهُ اَهْلُه لَا يَعُوْدُ اِلٰى مِلْكِ الْبَانِـىِّ وَ الْفَتْوٰى عَلٰى قَوْلِ اَبِـىْ يُوْسُفَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ اِنَّه لَايَعُوْدُ اِلٰى مِلْكِ مَالِكٍ اَبَدًا كَذَا فِى الْـمُضْمِرَاتِ
অর্থ: ফতওয়ায়ে হুজ্জত নামক কিতাবে আছে, যদি দুইটি মসজিদ উনার মধ্যে একটি পুরাতন হয় ও বিরাণ হয়ে যায়, অতঃপর গ্রামবাসীরা মসজিদটি বিক্রি করে উহার মূল্য নতুন মসজিদে ব্যায় করার ইচ্ছা পোষণ করে, হযরত ইমাম আবূ ইউসূফ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মতানুসারে উহা জায়িয হবেনা। কেননা যদিও একটি মসজিদ বিরান হয়ে যায় এবং উহার পরিচালকগণ উহার পরিচালনা ছেড়ে দেন তাহলেও উক্ত মসজিদ উহার নির্মানকারীর অধিকারভুক্ত হতে পারেনা। ইমাম আবূ ইউসূফ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মতের উপরেই ফতওয়া। এক্ষেত্রে উক্ত মসজিদ কখনো কোন ব্যক্তি মালিকের অধিকারভুক্ত হবেনা। ইহা মুজমারাত কিতাবেও আছে। অর্থাৎ কারো পক্ষেই উক্ত মসজিদ বিক্রি বা স্থানান্তর করার অধিকার নেই। কারণ ওয়াক্বফকৃত স্থানে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ থাকুক বা না থাকুক সে স্থানটির মালিক হচ্ছেন স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি। (উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র স্থানটুকু সংরক্ষণ করা সকলের জন্যই ফরয বিপরীত করা কাট্টা কুফরী ও হারাম)
“ফতওয়ায়ে শামী”, ৩য় খন্ড ৭৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে
( وَلَوْ خَرَبَ مَا حَوْلُه الخ) اَىْ وَلَوْ مَعَ بَقَائِهٖ عَامِرًا وَكَذَا لَوْ خَرَبَ وَلَيْسَ لَه مَا يَعْمُرُبِهٖ وَقَدْ اِسْتَغْنَى النَّاسَ عَنْهُ لِبِنَاءِ مَسْجِدٍ اٰخَرٍ (حَوْلَه عِنْدَ الْاِمَامِ وَالثَّانِـىِّ) فَلَا يَعُوْدُ مِيْرَاثًا وَلَا يـَجُوْزُ نَقْلُه وَ نَقْلُ مَالِهٖ اِلٰـى مَسْجِدٍ اُخَرٍ سِوَاءٍ كَانُوْا يُصَلُّوْنَ فِيْهِ اَوْ لَا وَهُوَ الْفَتْوٰى حَاوِىٍ قُدْسِىٍّ وَاَكْثَرُ الْـمَشَائِخِ عَلَيْهِ مُـجْتَبٰـى وَ اِلَّا وَجْهَ فَتْحٍ بـَحْرٍ
অর্থ: যদি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ উনার পার্শ্ববর্তী স্থান বিরাণ হয়ে যায়, কিন্তু মসজিদটি স্থায়ী থাকে, এমনভাবে যে, যদি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ বিরাণ হয়ে যায় এবং উহার সংস্কার করার কোন উপায় না থাকে, লোকজন অন্য মসজিদ তৈরী করেছে এজন্য উহাতে নামায পড়া ত্যাগ করে থাকে, তবে ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি ও ইমাম আবূ ইউসূফ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের মতে উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ কোনো উত্তরাধিকারীর অধিকারভুক্ত হবেনা। এবং উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ এবং উহার সম্পত্তি অন্য কোনো মসজিদে স্থানান্তরিত করাও জায়িয হবেনা। লোকজন উহাতে নামায পড়–ক আর নাই পড়–ক। হাবী কুদছী এর উপরেই ফতওয়া দিয়েছেন। মুজতবা বলেন- অধিকাংশ প্রাচীন আলিম উনারা এই মত সর্মথন করেছেন। ফতহুল ক্বদীরে আছে ইহাই সমধিক যুক্তিযুক্ত মত। ইহা বাহরুর রায়েকেও আছে। যদি বিরান মসজিদও স্থানান্তরিত করা জায়িয না হয় তবে চালু বা সচল মসজিদ স্থানান্তরিত করা জায়িয হয় কিভাবে?
উপরোক্ত দলীল ভিত্তিক আলোচনা দ্বারা অকাট্যভাবেই প্রমাণিত হলো যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ উনার একচ্ছত্র মালিক যেহেতু মহান আল্লাহ পাক তিনি, তাই কোনো অবস্থাতেই অন্য কারো জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ উনার জায়গা স্থানান্তরিত করা অর্থাৎ রাস্তা-ঘাট, ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল, নদী রক্ষণাবক্ষেণ বা সরকারী-বেসরকারী যে কোনো প্রয়োজনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ উনার জায়গা স্থানান্তরিত করা জায়িয নেই বরং হারাম ও কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
দলীলসমূহ: ১. তাফসীরে ত্ববারী শরীফ, ২. তাফসীরে খাযিন শরীফ, ৩. তাফসীরে বাগবী শরীফ, ৪. তাফসীরে মাযহারী শরীফ, ৫. তাফসীরে আহমদী শরীফ, ৬. তাফসীরে সামারকন্দী শরীফ, ৭. তাফসীরে জালালাইন শরীফ, ৮. তাফসীরে দুররে মানছূর শরীফ, ৯. তাফসীরে নিশাপুরী, ১০. তাফসীরে মাওয়ারাদী, ১১. মাজমাউয যাওয়াইদ, ১২. জামি‘উছ ছগীর, ১৩. ফাতহুল কাবীর, ১৪. জামি‘উল আহাদীছ, ১৫. কাশফুল খফা, ১৬. আল মাত্বালিবুল আলিয়াহ, ১৭. কানযুল ‘উম্মাল, ১৮. সুনানুল কুবরা লিল বাইহাক্বী, ১৯. মুছান্নাফে আবী শায়বা, ২০. শুয়াবুল ঈমান, ২১. ত্ববারানী শরীফ, ফতওয়ায়ে আলমগীরী, ২২. ফতওয়ায়ে হিন্দিয়া, ২৩. ফতহুল ক্বাদীর, ২৪. জাওহারাতুন নাইয়্যারাহ, ২৫. বাহরুর রায়িক, ২৬. আইনী, ২৭. ইনায়া, ২৮. আইনুল হিদায়া, ২৯. হিদায়া মায়াদ দিরায়াহ, ৩০. দুররুল মুখতার, ৩১. কুদরী, ৩২. ফতওয়ায়ে দেওবন্দ ইত্যাদি।
বি: দ্র: এখানে সংক্ষিপ্তাকারে জাওয়াব দেয়া হলো। প্রয়োজনে আরো দলীলসহ বিস্তারিতভাবে ফতওয়া প্রদান করা হবে। ইনশাআল্লাহ!
সুওয়াল-১০
একটি মসজিদকে রাস্তা বানিয়ে অন্যত্র যদি একাধিক বহুতল মসজিদ বানিয়ে দেয়া হয়, তবে সেটা কি শরীয়ত সম্মত হবে?
জাওয়াব : না, কখনোই শরীয়তসম্মত হবে না। রাস্তা, বাড়ী, ঘর ইত্যাদিকে মসজিদ বানানো যাবে। কিন্তু মসজিদকে কখনোই রাস্তা বানানো যাবে না। মসজিদের জন্য নির্ধারিত স্থান ক্বিয়ামত পর্যন্ত মসজিদই থাকবে। সেখানে বিভিন্ন অজুহাত দাঁড় করিয়ে দুনিয়াবী ক্ষমতা খাটিয়ে জোড় করে রাস্তা বানালেই যে উক্ত স্থান মসজিদের হুকুম থেকে রহিত হবে তা নয়। আর অন্যত্র একাধিক বহুতল মসজিদ বানানোর অজুহাতেও কোন মসজিদ ভাঙ্গা যাবে না।
মূলকথা হচ্ছে, মসজিদ হিসেবে যা নির্ধারিত ও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা কোন অজুহাতেই ভাঙ্গা যাবে না। এটাই সম্মানিত শরীয়ত উনার ফায়ছালা।
দলীলসমূহ: তাফসীরে কবীর, তাফসীরে তাবারী, তাফসীরে মাযহারী, তাফসীরে আহমদী এবং সমূহ ফিক্বাহর কিতাব।
সুওয়াল-১১
নদী/রাস্তার সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য মসজিদ স্থানান্তর করার দ্বারা কি ছাবিত হয় না যে, মসজিদ তথা মহান আল্লাহ পাক উনার ঘর কদাকার এবং সেটা কোন কিছুর সৌন্দর্যহানীর কারণ? নাঊযুবিল্লাহ!
জাওয়াব : হ্যাঁ, নদী ও রাস্তার সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য মসজিদ স্থানান্তর করার দ্বারা সেটাই ছাবিত বা প্রমাণিত হয়। শুধু তাই নয়, বরং নদী বা রাস্তার সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য মসজিদ স্থানান্তর করার দ্বারা মসজিদের প্রতি ইহানতও করা হয়। যা সম্পূর্ণরূপে কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
উল্লেখ্য, মসজিদ হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র ঘর এবং যমীনের বুকে সর্বোত্তম ও সুন্দরতম স্থান। তাই কোন স্থানে মসজিদ থাকাটা পার্শ্ববর্তী স্থানের জন্য তথা রাস্তা-ঘাট, নদী-নালা, হাট-বাজার ইত্যাদির জন্য সৌন্দর্যহানির কারণ নয়। বরং সৌন্দর্য ও শোভাবর্ধনেরই কারণ। সাথে সাথে বরকত লাভেরও কারণ। সুবহানাল্লাহ!
যেমন এ প্রসঙ্গে সূরা বাণী ইসরাঈল শরীফ উনার ১ নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
سُبْحَانَ الَّذِيْ اَسْرٰى بِعَبْدِه لَيْلًا مِّنَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ اِلَى الْمَسْجِدِ الْاَقْصَى الَّذِيْ بَارَكْنَا حَوْلَهُ لِنُرِيَهُ مِنْ آيَاتِنَا ۚ اِنَّهُ هُوَ السَّمِيْعُ الْبَصِيْرُ
অর্থ: পরম পবিত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি যিনি উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে রাত্রি বেলায় ভ্রমণ করিয়েছেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদুল হারাম শরীফ থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদুল আকসা শরীফ উনার দিকে। যার চারদিক আমি বরকতময় করেছি, যাতে আমি উনাকে কুদরতের কিছু নিদর্শন মুবারক দেখিয়ে দেই। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা এবং সর্বদ্রষ্টা।
অর্থাৎ মসজিদ মহান আল্লাহ পাক উনার এতটাই সম্মানিত, মর্যাদাম-িত, মহাপবিত্র, পছন্দনীয়, রহমতপূর্ণ ও বরকতপূর্ণ ঘর বা স্থান যে, উনার সম্মানার্থে উনার আশ-পাশের সমস্ত কিছুই বরকতপূর্ণ হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং যে স্থানে মসজিদ রয়েছে সে স্থানে বা এলাকায় মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত বরকত বিরাজ করছে। তাহলে সেই রহমত ও বরকত লাভের ঘর মসজিদ কি করে সরানো যাবে বা স্থানান্তরিত করা যাবে। বরং মসজিদ যাতে স্থানান্তরিত করতে না হয় সে ব্যবস্থাই গ্রহণ করতে হবে। কারণ যেখানে মসজিদ থাকবে সেখানে মসজিদ উনার উসীলায় মানুষ ইহকালীন ফায়দা লাভ করার সাথে সাথে পরকালীন ফায়দাও লাভ করে থাকে। এজন্য দেখা যায়, অনেকে ইন্তিকাল করার সময় ওসীয়ত করে থাকে, তাকে যেন মসজিদের পাশে দাফন করা হয় বা কবর দেয়া হয়। এক্ষেত্রে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম উনার কবিতার ছন্দমালা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য-
“মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই,
যেনো গোরে থেকেও মুয়াজ্জিনের আযান শুনতে পাই।”
কাজেই, মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র ঘর মসজিদ উনার পবিত্রতা রক্ষা করা মুসলমান মাত্রই প্রত্যেকের জন্য ফরয এবং ফযীলত, মর্তবা হাছিলের কারণ।
ফলে, মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র ঘর মসজিদের হুরমত বা সম্মান ও পবিত্রতা রক্ষা করতে গিয়ে প্রয়োজনে নদী হোক, রাস্তা হোক তা ঘুরিয়ে নিতে হবে। কারণ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ উনার হুরমত ও পবিত্রতা রক্ষা করার মধ্যে মুসলমানের নাজাত, ফযীলত ও কামিয়াবী হাছিলের বিষয় জড়িত।
পক্ষান্তরে নদী ও রাস্তার উন্নয়নের মধ্যে দুনিয়াবী কিছু ফায়দা রয়েছে বটে। তবে নদী ও রাস্তার মাধ্যমে পরকালীন ফায়দা হতেও পারে আবার নাও হতে পারে।
কাজেই ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার জন্য স্থায়ী আখিরাতের ফায়দাকে প্রাধান্য দেয়া মুসলমানদের কাজ নয়।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
بَلْ تُؤْثِرُوْنَ الْـحَيَاةَ الدُّنْيَا. وَالْاٰخِرَةُ خَيْرٌ وَاَبْقٰى.
অর্থ : “তোমরা দুনিয়াবী জিন্দেগীকে প্রাধান্য দিচ্ছ। অথচ আখিরাত হচ্ছে শ্রেষ্ঠ ও চিরস্থায়ী।” (পবিত্র সূরা আ’লা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৬,১৭)
অতএব, নদী ও রাস্তার জন্য কখনই মসজিদ স্থানান্তর করা যাবে না। বরং মসজিদ রক্ষার জন্য নদী ও রাস্তা সরাতে হবে বা স্থানান্তর করতে হবে।
দলীলসমূহ: (১) তাফসীরে আহ্কামুল কুরআন- লিল জাস্সাস, (২) তাফসীরে কুরতুবী, (৩) তাফসীরে বায়যাবী, (৪) তাফসীরে রূহুল মায়ানী, (৫) তাফসীরে খাযিন, (৬) তাফসীরে ইবনে কাছীর, (৭) তাফসীরে বাগবী, (৮) তাফসীরে মাদারিক, (৯) তাফসীরে ফতহুল ক্বাদীর, (১০) তাফসীরে রুহুল বয়ান, (১১) তাফসীরে মাযহারী, (১২) তাফসীরে কবীর, (১৩) তাফসীরে দুররে মনছূর, (১৪) তাফসীরে তাবারী, (১৫) মায়ালিমুত তানযীল, (১৬) তাফসীরে আবিস সউদ (১৭) মাআরিফুল কুরআন ইত্যাদি।
সুওয়াল-১২
নদী রক্ষার্থে মসজিদ ভাঙ্গা বা স্থানান্তর করা কতটুকু শরীয়ত সম্মত?
জাওয়াব: নদী রক্ষার্থে মসজিদ ভাঙ্গা বা স্থানান্তর করা জায়িয তো হবেই না বরং কাট্টা হারাম, নাজায়িয ও কুফরী হবে। কারণ মসজিদ ভাঙ্গার আগে আমাদেরকে জানতে হবে মসজিদ কিভাবে হলো এবং মসজিদের মালিক কে? উল্লেখ্য যে, কোন সম্পত্তি বা জায়গা মসজিদের জন্য ওয়াক্ফ করার পর মসজিদ কর্তৃপক্ষ সে জায়গাতে নামায আদায় করার জন্য মসজিদ নির্মাণ করে এবং আযান দিয়ে নামায আদায় করে ফেললেই উক্ত জায়গা হাক্বীক্বীভাবে ওয়াক্ফকৃত মসজিদ হিসেবে গণ্য হবে।
আর এই ওয়াক্ফকৃত মসজিদে আযান- ইক্বামত দিয়ে নামায আদায় করলেই মসজিদ হস্তান্তর সাব্যস্ত হয়ে যাবে।” অর্থাৎ খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ্্ পাক উনার মালিকানায় চলে যাবে অর্থাৎ উক্ত মসজিদের মালিক স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি।
যেমন “ফতওয়ায়ে আলমগীরী” কিতাবের ১ম খ-ের ৩৫৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
اَلتَّسْلِيْمُ فِـى الْـمَـسْجِدِ اَنْ تُصَلِّىْ فِيْهِ الْـجَمَاعَةِ بِاِذْنِهٖ
অর্থ: “দাতার অনুমতিক্রমে জামায়াতের সাথে নামায আদায় করার দ্বারা মসজিদ হস্তান্তর সাব্যস্ত হয়ে যাবে।”
অর্থাৎ মসজিদ খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ্্ পাক উনার মালিকানায় চলে যাবে অর্থাৎ উক্ত মসজিদের মালিক স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি হয়ে যান।
শুধু তাই নয় যদি একজন ব্যক্তিকে ইমাম ও মুয়াজ্জিন নিযুক্ত করা হয় এবং তিনি যদি আযান- ইক্বামত দিয়ে একাকী নামায আদায় করেন, তাহলেও সকল ইমাম মুজতাহিদ ও উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের ঐক্যমতে মসজিদ হয়ে যাবে। অর্থাৎ মসজিদের মালিকানা খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ্্ পাক উনার মালিকানায় চলে যাবে তথা উক্ত মসজিদের মালিক স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি হয়ে যান।
যেমন, বিশ্বখ্যাত ফতওয়ার কিতাব “ফতওয়ায়ে আলমগীরী” কিতাবের ১ম খ-ের ৪৫৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
لَوْ جُعِلَ رَجُلًا وَاحِدًا مُؤَذِّنًا وَاِمَامًا فَاَذَّنَ وَأَقَامَ وَصَلَّى وَحْدَه صَارَ مَسْجِدًا بِالْاِتِّفَاقِ كَذَا فِـى الْكِفَايَةِ وَفَتْحِ الْقَدِيْرِ.
অর্থ: “যদি একজন ব্যক্তিকে ইমাম ও মুয়াজ্জিন হিসাবে নিযুক্ত করা হয় এবং তিনি যদি আযান-ইক্বামত দিয়ে একাকী নামায আদায় করেন, তাহলেও সকল ইমাম মুজতাহিদ ও উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের ঐক্যমতে ওয়াক্ফকৃত মসজিদ হয়ে যাবে।”
অর্থাৎ মসজিদের মালিকানা খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ্্ পাক উনার মালিকানায় চলে যাবে তথা উক্ত মসজিদের মালিক স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি হয়ে যান। অনুরূপভাবে কিফায়া ও ফতহুল ক্বাদীর কিতাবেও উল্লেখ আছে।
“মুখতাছারুল কুদূরী” কিতাবের ১৪০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
وَاِذَا بُنِـىَ مَسْجِدًا ...بِطَرِيْقِهٖ وَيُاَذِّنُ لِلنَّاسِ بِالصَّلٰوةِ فِيْهِ فَاِذَا صَلَّى فِيْهِ وَاحِدًا زَالَ مِلْكُه عِنْدَ اَبِـىْ حَنِيْفَةَ رَحِمَهُ اللهُ تَعَالٰى .
অর্থ: “যখন যাতায়াতের রাস্তাসহ মসজিদ নির্মাণ করা হবে...এবং মানুষদেরকে সেই মসজিদে নামায পড়ার অনুমতি দেয়া হবে। তখন একজন ব্যক্তিও যদি উক্ত মসজিদে নামায আদায় করেন, তাহলে ইমামে আ’যম আবূ হানীফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার মতেও ওয়াক্ফকারীর মালিকানা দূরীভূত হবে। অর্থাৎ মসজিদ খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ্্ পাক উনার মালিকানায় চলে যাবে তথা উক্ত মসজিদের মালিক স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি হয়ে যান।”
“ঈনায়া” কিতাবে উল্লেখ আছে-
فَاِنْ أَذَّنَ رَجُلٌ وَاحِدٌ وأَقَامَ وَصَلَّى وَحْدَه صَارَ مَسْجِدًا بِالْاِتِّفَاقِ لِاَنَّ صَلَاتَه عَلٰى هٰذَا الْوَصْفِ كَالْـجَمَاعَةِ
অর্থ: “যদি একই ব্যক্তি আযান ও ইক্বামত দিয়ে একাকী নামায আদায় করেন, তাহলে সকল ইমাম-মুজতাহিদ ও উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের ঐক্যমতে তা ওয়াক্্ফকৃত মসজিদ হয়ে যাবে। কেননা এভাবে আযান-ইক্বামত দিয়ে নামায আদায় করলে তা জামায়াতের সাথে নামায আদায়েরই অনুরূপ।”
“হেদায়া মা’য়াদ দেরায়া” কিতাবের ২য় খ-ের ৬৪৪ পৃষ্ঠার ৩নং হাশিয়ায় উল্লেখ আছে-
عِنْدَهُمَا وَلَوْ جُعِلَ لَه مُوَذِّنًا وَاِمَامًا فَاَذَّنَ وَاَقَامَ وَصَلَّى وَحْدَه صَارَ مَسْجِدًا بِالْاِتِّفَاقِ لِاَنَّ اَدَاءَ الصَّلٰوةِ عَلٰى هٰذَا الْوَجْهِ كَالْـجَمَاعَةِ .
অর্থ: “হযরত ছাহেবাইন রহমতুল্লাহি আলাইহিমা উনাদের মতে যদি মসজিদের জন্য একজন ব্যক্তিকে ইমাম ও মুয়াজ্জিন হিসাবে নিযুক্ত করা হয় এবং তিনি যদি আযান-ইক্বামত দিয়ে একাকী নামায আদায় করেন, তাহলেও সকল ইমাম মুজতাহিদ ও উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের ঐক্যমতে তা ওয়াক্্ফকৃত মসজিদ হয়ে যাবে। কেননা এভাবে আযান ইক্বামত দিয়ে নামায আদায় করলে তা জামায়াতের সাথে নামায আদায়েরই অনুরূপ।”
“ফতহুল ক্বাদীর” কিতাবের ৫ম খ-ের ৪৪৩ পৃষ্ঠার হাশিয়ায় উল্লেখ আছে-
فَاِنْ أَذَّنَ رَجُلٌ وَاحِدٌ وأَقَامَ وَصَلَّى وَحْدَه صَارَ مَسْجِدًا بِالْاِتِّفَاقِ لِاَنَّ صَلَاتَه عَلٰى هٰذَا الْوَصْفِ كَالْـجَمَاعَةِ
অর্থ: “যদি একই ব্যক্তি আযান ও ইক্বামত দিয়ে একাকী নামায আদায় করেন, তাহলে সকল ইমাম-মুজতাহিদ ও উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের ঐক্যমতে তা ওয়াক্্ফকৃত মসজিদ হয়ে যাবে। কেননা এভাবে আযান-ইক্বামত দিয়ে নামায আদায় করলে তা জামায়াতের সাথে নামায আদায়েরই অনুরূপ।”
আরো উল্লেখ্য যে, শুধুমাত্র মৌখিকভাবে ওয়াক্ফকৃত মসজিদেরও মালিকানা ওয়াক্ফকারীর মালিকানা থেকে হস্তান্তর হয়ে মহান খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ্্ পাক উনার মালিকানায় চলে যাবে অর্থাৎ মহান আল্লাহ্ পাক তিনি মালিক হয়ে যান।”
যেমন, “মুখতাছারুল কুদূরী” কিতাবের ১৩৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
وَقَالَ اَبُوْ يُوْسُفَ رَحِمَهُ اللهُ تَعَالٰى يَزُوْلُ الْـمِلْكُ بِمُجَرَّدِ الْقَوْلِ وَ عَلَيْهِ الْفَتْوٰى.
অর্থ: “হযরত ইমাম আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “ওয়াক্ফ-এর কথা মৌখিকভাবে বললেই ওয়াক্্ফকৃত বস্তু ওয়াক্ফকারীর মালিকানা থেকে দূরীভুত হয়ে যাবে। আর এটার উপরেই ফতওয়া দেয়া হয়েছে।”
“আল জাওহারাতুন নাইয়্যারাহ” কিতাবের ১ম খ-ের ৪৩০ পৃষ্ঠার হাশিয়ায় উল্লেখ আছে-
وَقَالَ اَبُوْ يُوْسُفَ رَحِمَهُ اللهُ تَعَالٰى يَزُوْلُ الْـمِلْكُ بِمُجَرَّدِ الْقَوْلِ
অর্থ: “হযরত ইমামআবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “ওয়াক্ফ-এর কথা মৌখিকভাবে বললেই ওয়াক্্ফকৃত বস্তু ওয়াক্ফকারীর মালিকানা থেকে দূরীভূত হয়ে যাবে।”
“আল লুবাব লিল মায়দানী” কিতাবে উল্লেখ আছে-
وَقَالَ اَبُوْ يُوْسُفَ رَحِمَهُ اللهُ تَعَالٰى يَزُوْلُ الْـمِلْكُ بِمُجَرَّدِ الْقَوْلِ
অর্থ: “হযরত ইমাম আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “ওয়াক্ফ-এর কথা মৌখিকভাবে বললেই ওয়াক্্ফকৃত বস্তু ওয়াক্ফকারীর মালিকানা থেকে দূরীভূত হয়ে যাবে।”
“আল জাওহারাতুন নাইয়্যারাহ” কিতাবের ১ম খ-ের ৪৩০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
وَقَالَ اَبُوْ يُوْسُفَ رَحِمَهُ اللهُ تَعَالٰى يَزُوْلُ الْـمِلْكُ بِمُجَرَّدِ الْقَوْلِ ৃ وَ عَلَيْهِ الْفَتْوٰى.
অর্থ: “হযরত ইমামআবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “ওয়াক্ফ-এর কথা মৌখিকভাবে বললেই ওয়াক্্ফকৃত বস্তু ওয়াক্ফকারীর মালিকানা থেকে দূরীভূত হয়ে যাবে। .... আর এটার উপরেই ফতওয়া দেয়া হয়েছে।”
“আল জাওহারাতুন নাইয়্যারাহ” কিতাবের ১ম খ-ের ৪৩৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
وَقَالَ اَبُوْ يُوْسُفَ رَحِمَهُ اللهُ تَعَالٰى يَزُوْلُ مِلْكُه بِقَوْلِهٖ جَعَلْتُهَ مَسْجِدًا.
অর্থ: “হযরত ইমামআবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “আমি জায়গাটিকে মসজিদ বানালাম” ওয়াক্ফকারীর এমন কথার দ্বারাই মসজিদ থেকে তার মালিকানা দূরীভূত হয়ে যাবে। ”
“আল জাওহারাতুন নাইয়্যারাহ” কিতাবের ১ম খ-ের ৪৩৫ পৃষ্ঠার হাশিয়ায় উল্লেখ আছে-
( وَقَالَ اَبُوْ يُوْسُفَ رَحِمَهُ اللهُ تَعَالٰى يَزُوْلُ مِلْكُه عَنْهُ) اَىِ الْـمَسْجِدِ (بِقَوْلِهٖ جَعَلْتُهَ مَسْجِدًا) لِاَنَّ التَّسْلِيْمَ عَنْدَه لَيْسَ بَشَرْطٍ لِاَنَّه اِسْقَاطُ لْـمِلْكِهٖ فَيَصِيْرُ خَالِصًا لِلّٰهِ تَعَالٰى بِسُقَوْطِ حَقِّهٖ.
অর্থ: “ইমাম আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “আমি জায়গাটিকে মসজিদ বানালাম” ওয়াক্ফকারীর এমন কথার দ্বারাই মসজিদ থেকে তার মালিকানা দূরীভূত হয়ে যাবে। কেননা ইমাম আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট ওয়াক্্ফকারীর মালিকানা দূরীভূত হওয়ার জন্য সোপর্দ করা শর্ত নয়, মালিকানা সাকেত হওয়াই যথেষ্ট। অত:পর ওয়াক্্ফকারীর হক্ব সাকেত হওয়ার দ্বারাই উক্ত মসজিদ মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য খালেছভাবে হয়ে যাবে।” অর্থাৎ মহান আল্লাহ্ পাক তিনি মালিক হয়ে যান।
“আল লুবাব লিল মায়দানী” কিতাবে উল্লেখ আছে-
( وَقَالَ اَبُوْ يُوْسُفَ رَحِمَهُ اللهُ تَعَالٰى يَزُوْلُ مِلْكُه عَنْهُ) اَىِ الْـمَسْجِدِ (بِقَوْلِهٖ جَعَلْتُهَ مَسْجِدًا) لِاَنَّ التَّسْلِيْمَ عَنْدَه لَيْسَ بَشَرْطٍ لِاَنَّه اِسْقَاطُ الْـمِلْكِهٖ فَيَصِيْرُ خَالِصًا لِلّٰهِ تَعَالٰى بِسُقَوْطِ حَقِّهٖ.
অর্থ: “ইমাম আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “আমি জায়গাটিকে মসজিদ বানালাম” ওয়াক্ফকারীর এমন কথার দ্বারাই মসজিদ থেকে তার মালিকানা দূরীভূত হয়ে যাবে। কেননা ইমাম আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট ওয়াক্্ফকারীর মালিকানা দূরীভূত হওয়ার জন্য সোপর্দ করা শর্ত নয়, মালিকানা সাকেত হওয়াই যথেষ্ট। অত:পর ওয়াক্্ফকারীর হক্ব সাকেত হওয়ার দ্বারাই উক্ত মসজিদ মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য খালেছভাবে হয়ে যাবে। অর্থাৎ মহান আল্লাহ্ পাক তিনি পরিপূর্ণ মালিক হয়ে যান।”
“হেদায়া মা’য়াদ দেরায়া” কিতাবের ২য় খ-ের ৬৩৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
وَقَالَ اَبُوْ يُوْسُفَ رَحْمَةُ اللهُ تَعَالٰى يَزُوْلُ مِلْكُه بِمُجَرَّدِ الْقَوْلِ وَبِهٖ اَخَذَ مَشَايِخُ بـُخَارَا.
অর্থ: “হযরত ইমামআবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “ওয়াক্ফ-এর কথা মৌখিকভাবে বললেই ওয়াক্্ফকৃত বস্তুর মালিকানা ওয়াক্ফকারীর নিকট থেকে দূরীভুত হয়ে যাবে।” আর এই মতটিকেই বুখারার মাশায়িখে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা গ্রহণ করেছেন।”
“ফতহুল ক্বাদীর” কিতাবের ৫ম খ-ের ৪১৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
وَقَالَ اَبُوْ يُوْسُفَ رَحْمَةُ اللهُ تَعَالٰى يَزُوْلُ مِلْكُه بِمُجَرَّدِ الْقَوْلِ.
অর্থ: “হযরত ইমামআবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “ওয়াক্ফ-এর কথা মৌখিকভাবে বললেই ওয়াক্্ফকৃত বস্তুর মালিকানা ওয়াক্ফকারীর নিকট থেকে দূরীভুত হয়ে যাবে।”
“ফতওয়ায়ে আলমগীরী” কিতাবের ২য় খ-ের ৩৫১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
وَاِذَا كَانَ الْـمِلْكُ يَزُوْلَ عِنْدَهُمَا يَزُوْلُ بِالْقَوْلِ عِنْدَ اَبِـىْ يُوْسُفَ رَحِمَهُ اللهُ تَعَالٰى وَهُوَ قَوْلِ الْاَئِمَّةِ الثَّلَاثَةِ وَهُوَ قَوْلُ أَكْثَرَ أَهْلِ الْعِلْمِ وَعَلٰى هٰذَا مَشَائِخُ بَلَخ وَفِـىْ الْـمُنِيَةِ وَعَلَيْهِ الْفَتْوٰى كَذَا فِـى فَتْحِ الْقَدِيْرِ وَعَلَيْهِ الْفَتْوٰى كَذَا فِـى السِّرَاجِ الْوَهَّاجِ.
অর্থ : “হযরত তরফাইন রহমতুল্লাহি আলাইহিমা উনাদের মতে ওয়াক্ফকৃত মালের মালিকানা ওয়াক্ফকারীর নিকট থেকে দূর হয়ে যাবে। আর ইমাম আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “ওয়াক্ফ-এর কথা মৌখিকভাবে বললেই ওয়াক্্ফকৃত বস্তুর মালিকানা ওয়াক্ফকারীর নিকট থেকে দূরীভুত হয়ে যাবে।” আর এটাই তিনজন ইমাম অর্থাৎ হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের মত। আর এটাই অধিকাংশ উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরও অভিমত। আর এই মতের উপরেই বলখের মাশায়িখে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারাও একমত পোষণ করেছেন। “মুনিয়া” কিতাবেও অনুরূপ বর্ণনা রয়েছে। আর এই মতের উপরেই ফতওয়া দেয়া হয়েছে। যেমন, “সিরাজুল ওয়াহ্হাজ” কিতাবেও উল্লেখ আছে।”
“কিফায়া” কিতাবে উল্লেখ আছে-
وَعِنْدَهُمَا زَوَالُ الْعَيْنِ اِلَى اللهِ تَعَالٰى فَيَصِيْرُ مَـحْبُوْسًا فِـىْ مِلْكِ اللهِ تَعَالٰى.
অর্থ: “হযরত ছাহেবাইন রহমতুল্লাহি আলাইহিমা উনাদের মতে ওয়াক্ফকৃত মাল মহান আল্লাহ্ পাক উনার মালিকানায় চলে যাবে। অত:পর উক্ত ওয়াক্ফকৃত মাল মহান আল্লাহ্ পাক উনার মালিকানায় আবদ্ধ থাকবে। অর্থাৎ এই মালিকানা আর হস্তান্তরের কোন সুযোগ নেই।”
“ফতহুল ক্বাদীর” কিতাবের ৫ম খ-ের ৪২৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
وَاِذَا كَانَ الْـمِلْكُ يَزُوْلَ عِنْدَهُمَا يَزُوْلُ بِالْقَوْلِ عِنْدَ اَبِـىْ يُوْسُفَ رَحِمَهُ اللهُ تَعَالٰى وَهُوَ قَوْلِ الْاَئِمَّةِ الثَّلَاثَةِ وَقَوْلُ أَكْثَرَ أَهْلِ الْعِلْمِ لِاَنَّه اِسْقَاطُ الْـمِلْكِهٖ... وَفِـىْ الْـمُنِيَةِ الْفَتْوٰى عَلٰى قَوْلِ أَبِـىْ يُوْسُفَ وَهٰذَا قَوْلُ مَشَايِخِ بَلَخ.
অর্থ: “হযরত তরফাইন রহমতুল্লাহি আলাইহিমা উনাদের মতে ওয়াক্ফকৃত মালের মালিকানা ওয়াক্ফকারীর নিকট থেকে দূর হয়ে যাবে। আর ইমাম আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “ওয়াক্ফ-এর কথা মৌখিকভাবে বললেই ওয়াক্্ফকৃত বস্তুর মালিকানা ওয়াক্ফকারীর নিকট থেকে দূরীভুত হয়ে যাবে। আর এটাই তিনজন ইমাম অর্থাৎ হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের মত। আর এটাই অধিকাংশ উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরও অভিমত। কেননা ওয়াক্্ফ করলে মালিকানা ছাকেত হয়ে যায়। ... আর “মুনিয়া” কিতাবে ইমাম আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মতের উপরেই ফতওয়া দেয়া হয়েছে। আর এই মতের উপরেই বলখের মাশায়িখে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারাও একমত পোষণ করেছেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ওয়াক্ফ কাকে বলে? এর জবাবে বলতে হয় যে, সম্মানিত হানাফী মাযহাব উনার ইমাম, হযরত আবূ ইউসুফ রহমাতুল্লাহি আলাইহি এবং ইমাম মুহম্মদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাদের মতে কোন মাল-সম্পদ বা জায়গাকে খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ্্ পাক উনার মালিকানায় দিয়ে দেয়ার নামই ওয়াক্ফ।”
যেমন এ প্রসঙ্গে “হেদায়া মা’য়াদ দেরায়া” কিতাবের ২য় খ-ের ৬৩৮ পৃষ্ঠার ৭নং হাশিয়ায় উল্লেখ আছে-
اَلْوَقْفُ تَـمْلِيْكٌ لِلّٰهِ تَعَالٰى وَهُوَ مَالِكَ الْاَشْيَاءِ
অর্থঃ “ওয়াক্ফ হচ্ছে খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ্্ পাক উনার জন্য মালিকানা নির্দিষ্ট করে দেয়া। যদিও তিনি সমস্ত কিছুর মালিক। অর্থাৎ উক্ত ওয়াক্ফকৃত সম্পদের মালিক স্বয়ং খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ্ পাক তিনি।
“বাহরুর রায়েক” কিতাবের ৫ম খ-ের ১৭৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
(قَوْلُهٗ حَبْسُ الْعَيْنِ عَلٰى مِلْكِ الوَاقِفِ وَالتَّصَدَّقَ بِالْـمَـنْفَعَةِ) يَعْنِي عِنْدَ أَبِي حَنِيْفَةَ رَضَيَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ وَعِنْدَهُمَا هُوَ حَبْسُ الْعَيْنِ عَلٰى حُكْمِ مِلْكِ اللهِ تَعَالٰى.
অর্থ: “কোনো মাল-সম্পদ বা জায়গাকে ওয়াক্ফকারীর মালিকানায় আবদ্ধ রেখে মুনাফা ছদ্ক্বা করে দেয়াকেই ওয়াক্ফ বলে। এটাই ইমাম আ’যম হযরত আবূ হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মত। আর ছহেবাইন রহমতুল্লাহি আলাইহিমা তথা ইমাম হযরত আবূ ইউসুফ রহমাতুল্লাহি আলাইহি এবং ইমাম মুহম্মদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাদের মতে কোন মাল-সম্পদ বা জায়গাকে খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ্্ পাক উনার মালিকানার বিধানের ভিত্তিতে আবদ্ধ করার নামই ওয়াক্ফ।” আর ছহেবাইন রহমতুল্লাহি আলাইহিমা উনাদের উপরই ফতওয়া।
“কিফায়া” কিতাবে উল্লেখ আছে-
وَ مَا قَالَاهُ وَ هُوَ حَبْسُ الْعَيْنِ عَلٰى حُكْمِ مِلْكِ اللهِ تَعَالٰى.
অর্থ: “ওয়াক্ফ সম্পর্কে হযরত ছহেবাইন রহমাতুল্লাহি আলাইহিমা তথা হযরত ইমাম আবূ ইউসুফ রহমাতুল্লাহি আলাইহি এবং ইমাম মুহম্মদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনারা যা বলেছেন তাহলো, কোন মাল-সম্পদ, বস্তু বা জায়গাকে খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ্্ পাক উনার মালিকানার বিধানের ভিত্তিতে আবদ্ধ করার নামই ওয়াক্ফ।” অর্থাৎ উক্ত সম্পদের মালিক স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি। “ঈনায়া” কিতাবেও অনুরূপ উল্লেখ আছে।
আরো উল্লেখ্য যে, ওয়াক্ফকৃত স¤পদের মালিকানা ওয়াক্ফকারীর নিকট থেকে রহিত হয়ে মহান আল্লাহ্ পাক উনার মালিকানায় এমনভাবে চলে য়ায় যে, তা বিক্রি করা যাবে না, হিবা করা যাবে না, বন্ধক রাখা যাবে না এবং মীরাছ রূপে বণ্টন করাও যাবে না। এমনকি রাস্তা বর্ধনের নামে, নদী রক্ষার নামে, শহর পরিকল্পনার নামে ইত্যাদি অজুহাত দিয়ে মসজিদ স্থানান্তর করা বা মসজিদ ভাঙ্গা যাবে না। যা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শরীয়ত উনার মধ্যে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিখ্যাত ফতওয়ার কিতাব “হেদায়া মা’য়াদ দেরায়া” কিতাবের ২য় খ-ের ৬৩৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
وَعِنْدَهُمَا حَبْسُ الْعَيْنِ عَلٰى حُكْمِ مِلْكِ اللهِ تَعَالٰى فَيَزُوْلُ مِلْكُ الْوَاقِفِ عَنْهٗ إِلٰى اللهِ تَعَالٰى عَلَى وَجْهِ تَعُوْدُ مَـْنفَعَتُهٗ إِلَى الْعِبَادِ فَيَلْزَمُ وَلَايُبَاعُ وَلَايُوْهَبُ وَلَايُوْرَثُ ... لَـهُمَا قَوْلُ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِـحَضْرَتْ عُمَرَ عَلَيْهِ السَّلَامُ حِيْنَ اَرَادَ اَنْ يَّتَصَدَّقَ بِاَرْضٍ لَهُ تُدْعَى ثَـمغ تَصَدَّقْ بِاَصْلِهَا لَايُبَاعُ وَلَايُوْرَثُ وَلَايُوْهَبُ وَلَاِنَّ الْـحَاجَةَ مَاسَّةٌ اِلَى أَنْ يَلْزَمَ الْوَقْفُ مِنْهُ لِيَصِلَ ثَوَابُهٗ اِلَيْهِ عَلَى الَّدوَامِ وَقَدْ أَمْكَنَ دَفْعَ حَاجَتُهٗ بِاِسْقَاطِ الْـمِلْكِ وَجَعَلَهُ لِلّٰهِ تَعَالٰى اِذْ لَهٗ نَظِيْرٌ فِى الشَّرْعِ وَهُوَ الْـمَسْجِدُ فَيُجْعَلُ كَذَلِكَ.
অর্থ: “আমাদের সম্মানিত হানাফী মাযহাব উনার ইমাম, হযরত আবূ ইউসুফ রহমাতুল্লাহি আলাইহি এবং ইমাম মুহম্মদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাদের মতে কোন মাল-সম্পদ বা জায়গাকে খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ্্ পাক উনার মালিকানার বিধানের ভিত্তিতে আবদ্ধ করার নামই ওয়াক্ফ। আর ওয়াক্্ফ হওয়া মাত্রই ওয়াক্ফকৃত স¤পদ থেকে ওয়াক্ফকারীর মালিকানা রহিত হয়ে মহান আল্লাহ্ পাক উনার মালিকানায় এমনভাবে চলে য়ায় যে, উক্ত ওয়াক্ফকৃত সম্পদের মুনাফা বান্দাদের দিকে প্রত্যাবর্তিত হয়। সুতরাং তার মালিকানা মহান আল্লাহ্্ পাক উনার হয়ে যায়। অতএব তা বিক্রি করা যাবে না, হিবা করা যাবে না এবং মীরাছ রূপে বণ্টন করাও যাবে না। ... হযরত ছহেবাইন রহমাতুল্লাহি আলাইহিমা উনাদের দলীল হলো এই যে, একদা ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি যখন উনার মালিকানাধীন খায়বরের ‘ছামাগ’ নামক জমিটি ছদকা করতে ইচ্ছা পোষণ করলেন, তখন নূরে মুজাস্্সাম হাবীবুল্লাহ্্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে বলেছিলেন যে, “আপনি মূল জমিটিকে এমনভাবে ছদক্বা করুন, যা কখনোই বিক্রি করা যাবে না, মীরাছ রূপে বণ্টন করা যাবে না এবং হিবাও করা যাবে না। কেননা ওয়াক্্ফকারীর দিক থেকে ওয়াক্্ফ বাধ্যতামূলক হওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, যাতে ওয়াক্ফ-এর ছওয়াব দায়েমীভাবে তার দিকে পৌঁছতে থাকে।
আর ওয়াক্্ফকারীর মালিকানা রহিত করে মহান আল্লাহ্্ পাক উনার জন্য মালিকানা নির্দিষ্ট করে দেয়ার মাধ্যমে তার প্রয়োজনকে পূর্ণ করা সম্ভব। কেননা সম্মানিত শরীয়তে এর নজীর রয়েছে। যেমন মসজিদ । সুতরাং এটাকেও সেরূপ করা হবে। অর্থাৎ খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ্্ পাক উনার জন্য মসজিদ উনার মালিকানা নির্দিষ্ট করে দিতে হবে। যদিও তিনি সমস্ত কিছুর মালিক। সুতরাং মসজিদ উনার মালিক স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি নিজেই।”
আর মহান আল্লাহ্্ পাক উনার সম্পদ বিক্রি করা বা অপর কাউকে উক্ত সম্পদের মালিক বানানো কোনোটিই বৈধ হবে না।
যেমন “হেদায়া মা’য়াদ দেরায়া” কিতাবের ২য় খ-ের ৬৩৭ পৃষ্ঠার ৪নং হাশিয়ায় উল্লেখ আছে-
নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন,
تَصَدَّقَ بِاَصْلِهِ لَايُبَاعُ وَلَايُوْهَبُ وَلَايُوْرَثُ
অর্থাৎ “মূল ভূমিকে ছদকা করো, যা কখনো বিক্রি করা যাবে না, হিবা (দান) করা যাবে না এবং মীরাছরূপে বণ্টন করা যাবে না।”
“ঈনায়া” কিতাবে উল্লেখ আছে-
وَعِنْدَهُمَا هُوَ حَبْسُ الْعَيْنِ عَلٰى حُكْمِ مِلْكِ اللهِ تَعَالٰى فَيَزُوْلُ مِلْكُ الَوَاقِفِ عَنْهُ اِلَى اللهِ تَعَالٰى عَلٰى وَجْهٍ تَعُوْدُ الْـمَـنْفَعَةُ اِلَى الْعِبَادِ فَيَلْزَمُ وَلَايُبَاعُ وَلَايُوْرَثُ.
অর্থ: “সম্মানিত হানাফী মাযহাব উনার ইমাম, হযরত আবূ ইউসুফ রহমাতুল্লাহি আলাইহি এবং ইমাম মুহম্মদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাদের মতে কোন মাল-সম্পদ বা জায়গাকে খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ্্ পাক উনার মালিকানার বিধানের ভিত্তিতে আবদ্ধ করার নামই ওয়াক্ফ। আর ওয়াক্্ফ হওয়া মাত্রই ওয়াক্ফকৃত স¤পদ থেকে ওয়াক্ফকারীর মালিকানা রহিত হয়ে মহান আল্লাহ্ পাক উনার মালিকানায় এমনভাবে চলে যায় যে, উক্ত ওয়াক্ফকৃত সম্পদের মুনাফা বান্দাদের দিকে প্রত্যাবর্তিত হয়। সুতরাং তার মালিকানা মহান আল্লাহ্্ পাক উনার হয়ে যায়। অতএব তা বিক্রি করা যাবে না এবং মীরাছ রূপে বণ্টন করাও যাবে না।”
কেননা উক্ত সম্পদের মালিক স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি নিজেই।
“ফতহুল ক্বাদীর” কিতাবের ৫ম খ-ের ৪১৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
قَالَ الْـمُـصَنِّفُ وَعِنْدَهُمَا هُوَ حَبْسُ الْعَيْنِ عَلَى حُكْمِ مِلْكِ اللهِ تَعَالٰى فَيَزُوْلُ مِلْكُ الوَاقِفِ عَنْهُ اِلَى اللهِ تَعَالٰى عَلَى وَجْهِ تَعُوْدُ مَـنْفَعَتُهٗ اِلَى الْعِبَادِ ... لَكِنْ لَايُبَاعُ وَلَايُوْرَثُ وَلَايُوْهَبُ.
অর্থ: “ফতহুল ক্বাদীর কিতাবের মুছান্নিফ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ছাহেবাইন রহমাতুল্লাহি আলাইহিমা তথা হযরত ইমাম আবূ ইউসুফ রহমাতুল্লাহি আলাইহি এবং হযরত ইমাম মুহম্মদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাদের মতে কোন মাল-সম্পদ বা জায়গাকে খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ্্ পাক উনার মালিকানার বিধানের ভিত্তিতে আবদ্ধ করার নামই ওয়াক্ফ। আর ওয়াক্্ফ হওয়া মাত্রই ওয়াক্ফকৃত স¤পদ থেকে ওয়াক্ফকারীর মালিকানা রহিত হয়ে মহান আল্লাহ্ পাক উনার মালিকানায় এমনভাবে চলে য়ায় যে, উক্ত ওয়াক্ফকৃত সম্পদের মুনাফা বান্দাদের দিকে প্রত্যাবর্তিত হয়। .... সুতরাং তা বিক্রি করা যাবে না, মীরাছ রূপে বণ্টন করা যাবে না এবং হিবা বা দান করাও যাবে না।” কেননা উক্ত সম্পদের মালিক স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি নিজে। (“ফতহুল ক্বাদীর” ৫ম খ- ৪১৯ পৃষ্ঠার “হাশিয়া” )
“মুখতাছারুল কুদূরী” কিতাবের ১৩৮ পৃষ্ঠার ৭নং হাশিয়ায় উল্লেখ আছে-
وَقَالَ أَبُوْ يُوْسُفَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَمُـحَمَّدٌ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ هُوَ عِبَارَةٌ عَنْ حَبْسِ الْعَيْنِ عَلٰى حُكْمِ مِلْكِ اللهِ تَعَالٰى عَلَى وَجْهٍ تَصِلُ الْـمَـنْفَعَةُ إِلَى اْلعِبَادِ‘ فَيَزُوْلُ مِلْكُ الْوَقْفِ عَنْهُ إِلَى اللهِ تَعَالٰى فَيَلْزَمُ وَلَايُبَاعُ وَلَايَرْهَنُ وَلَايُوْارَثُ.
অর্থ: “হযরত আবূ ইউসুফ রহমাতুল্লাহি আলাইহি এবং ইমাম হযরত মুহম্মদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাদের মতে কোন মাল-সম্পদ বা জায়গাকে খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ্্ পাক উনার মালিকানার বিধানের ভিত্তিতে আবদ্ধ করার নামই ওয়াক্ফ। ওয়াক্্ফকৃত সম্পদের মুনাফা বান্দাদের দিকে প্রত্যাবর্তিত হয়। আর ওয়াক্্ফ হওয়া মাত্রই ওয়াক্ফকৃত স¤পদের মালিকানা ওয়াক্ফকারীর নিকট থেকে রহিত হয়ে মহান আল্লাহ্ পাক উনার মালিকানায় এমনভাবে চলে য়ায় যে, তার মালিকানা মহান আল্লাহ্্ পাক উনার হয়ে যায়। অতএব তা বিক্রি করা যাবে না, বন্ধক রাখা যাবে না এবং মীরাছ রূপে বণ্টন করাও যাবে না।” অর্থাৎ উক্ত সম্পদের মালিক স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি নিজে।” (“আল লুবাব লিল মায়দানী” কিতাবে এবং “আল জাওহারাতুন নাইয়্যারাহ” কিতাবের ১ম খ-ের ৪৩০ পৃষ্ঠায়ও আছে)
“ফতওয়ায়ে আলমগীরী” কিতাবের ২য় খ-ের ৩৫০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
وَعِنْدَهُمَا حَبْسُ الْعَيْنِ عَلٰى حُكْمِ مِلْكِ اللهِ تَعَالٰى عَلَى وَجْهٍ تَعُوْدُ مَنْفَعَتُهٗ اِلَى العِبَادِ فَيَلْزَمُ وَلَا يُبَاعُ وَلَا يُوْهَبُ وَلَايُوْرَثُ.كَذَا فِى الـهِدَايَةِ وَفِى الْعُيُوْنِ وَالْيَتِيْمَةِ اَنَّ الْفَتْوٰى عَلَى قَوْلِـهِمَا.
অর্থ: “সম্মানিত হানাফী মাযহাব উনার ইমাম, হযরত আবূ ইউসুফ রহমাতুল্লাহি আলাইহি এবং ইমাম মুহম্মদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাদের মতে কোন মাল-সম্পদ বা জায়গাকে খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ্্ পাক উনার মালিকানার বিধানের ভিত্তিতে আবদ্ধ করার নামই ওয়াক্ফ। ওয়াক্্ফকৃত সম্পদের মুনাফা বান্দাদের দিকে প্রত্যাবর্তিত হয়। আর ওয়াক্্ফ হওয়া মাত্রই ওয়াক্ফকৃত স¤পদের মালিকানা ওয়াক্ফকারীর নিকট থেকে রহিত হয়ে মহান আল্লাহ্ পাক উনার মালিকানায় এমনভাবে চলে য়ায় যে, তার মালিকানা মহান আল্লাহ্্ পাক উনার হয়ে যায়। অতএব তা বিক্রি করা যাবে না, বন্ধক রাখা যাবে না এবং মীরাছ রূপে বণ্টন করাও যাবে না।” অর্থাৎ উক্ত সম্পদের মালিক স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি।
অনুরূপ হেদায়া কিতাবে বর্ণিত আছে। আর উয়ূন ও ইয়াতিমা কিতাবে উল্লেখ আছে নিশ্চয়ই ফতওয়া হলো ছহেবাইন রহমাতুল্লাহি আলাইহিমা উনাদের ক্বওল শরীফের উপর।
“ফতহুল ক্বাদীর” কিতাবের ৫ম খ-ের ৪২৪ পৃষ্ঠার হাশিয়ায় উল্লেখ আছে-
اِذَا صَحَّ الْوَقْفُ..... خَرَجَ عَنْ مِلْكِ الوَاقِفِ
অর্থ: “ওয়াক্ফ যখন ছহীহ হয়ে যাবে, তখন ওয়াক্ফকৃত সম্পদ থেকে ওয়াক্ফকারীর মালিকানা থেকে বের হয়ে যাবে। অর্থাৎ মহান আল্লাহ্ পাক উনার মালিকানায় চলে য়াবে তথা উক্ত সম্পদের মালিক স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি নিজে হয়ে যান।” (অনুরূপ “ঈনায়া” কিতাবে উল্লেখ আছে।)
“ফতহুল ক্বাদীর” কিতাবের ৫ম খ-ের ৪২১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
وَالْـخُرُوْجُ عَنْ مِلْكِهٖ وَقَوْلُهُ كَالْـمَسْجِدِ نَظِيْرٌ مَا خَرَجَ عَنِ الـمِلْكِ بِالْاِجْمَاعِ.
অর্থ: “ওয়াক্ফকৃত সম্পদ থেকে ওয়াক্ফকারীর মালিকানা থেকে বের হয়ে যাবে। যেমন মসজিদ ওয়াক্ফ করলে ওয়াক্ফকারীর মালিকানা বের হয়ে যাওয়ার নজীর রয়েছে। যা ইজমা দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে।” অর্থাৎ মহান আল্লাহ্ পাক উনার মালিকানায় মসজিদ চলে য়াবে তথা উক্ত মসজিদ-এর মালিক স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি নিজেই হয়ে যান।”
“ঈনায়া” কিতাবে উল্লেখ আছে-
بِـخُرُوْجِ الْوَقْفِ عَنْ مِلْكِ الوَاقِفِ اِذَا صَحَّ الْوَقْفُ قَوْلُـهُمَا.
অর্থ: “হযরত ছহেবাইন রহমাতুল্লাহি আলাইহিমা তথা ইমাম আবূ ইউসুফ রহমাতুল্লাহি আলাইহি এবং ইমাম হযরত মুহম্মদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাদের মতে ওয়াক্ফ যখন ছহীহ হয়ে যাবে, তখন ওয়াক্ফকৃত সম্পদ থেকে ওয়াক্ফকারীর মালিকানা থেকে বের হয়ে যাবে। অর্থাৎ মহান আল্লাহ্ পাক উনার মালিকানায় চলে য়াবে তথা উক্ত সম্পদের মালিক স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি নিজেই হয়ে যান।”
(অনুরূপ “ফতহুল ক্বাদীর” কিতাবের ৫ম খ-ের ৪২৫ পৃষ্ঠার হাশিয়ায় উল্লেখ আছে।)
“ফতহুল ক্বাদীর” কিতাবের ৫ম খ-ের ৪২০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
فَقَالَ عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ تَصَدَّق بِاَصْلِهِ لَايُبَاعُ وَلَايُوْهَبُ وَلَايُوْرَثُ.
অর্থ: “নূরে মুজাস্্সাম হাবীবুল্লাহ্্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, “মূল জমিটিকে এমনভাবে ছদক্বা করুন, যা কখনোই বিক্রি করা যাবে না, হিবা করা যাবে না এবং মীরাছ রূপে বণ্টন করাও যাবে না।” (কেননা উক্ত সম্পদের মালিক স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি নিজেই হয়ে যান। (অনুরূপ “কিফায়া” কিতাবে উল্লেখ আছে।)
“ফতহুল ক্বাদীর” কিতাবের ৫ম খ-ের ৪২০ পৃষ্ঠার হাশিয়ায় উল্লেখ আছে-
لَـهُمَا قَوْلُ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِعُمَرَ عَلَيْهِ السَّلَامُ ....... قَالَ تَصَدَّق بِاَصْلِهِ لَايُبَاعُ وَلَايُوْهَبُ وَلَايُوْرَثُ.
অর্থ: “হযরত ছহেবাইন রহমাতুল্লাহি আলাইহিমা উনাদের দলীল হলো এই যে, একদা নূরে মুজাস্্সাম হাবীবুল্লাহ্্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ফারূকে আযম আলাইহিস সালাম উনাকে বলেছিলেন যে, “আপনি মূল জমিটিকে এমনভাবে ছদক্বা করুন, যা কখনোই বিক্রি করা যাবে না, হিবা করা যাবে না এবং মীরাছ রূপে বণ্টন করা যাবে না।” কেননা উক্ত সম্পদের মালিক স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি নিজে। (অনুরূপ “ঈনায়া” কিতাবে উল্লেখ আছে।)
“মুখতাছারুল কুদূরী” কিতাবের ১৩৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
وَاِذَا صَحَّ الْوَقْفُ لَـمْ يَـجُزْ بَيْعُهٗ وَلَاتَـمْلِيْكُهٗ.
অর্থ: “আর ওয়াক্ফ যখন ছহীহ হয়ে যাবে, তখন ওয়াক্ফকৃত সম্পদ বিক্রয় করা জায়িয হবে না এবং কাউকে মালিক বানানোও জায়িয হবে না।” কেননা উক্ত সম্পদের মালিক স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি নিজেই।
“ফতহুল ক্বাদীর” কিতাবের ৫ম খ-ের ৪৩২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
وَاِذَا صَحَّ الْوَقْفُ خَرُجَ عَنْ مِلْكِ الْوَاقِفِ ثُـمَّ قَوْلُهٗ (لَـمْ يَـجُزْ بَيْعُهٗ وَلَاتَـمْلِيْكُهٗ) هُوَ بِاِجْمَاعِ الْفُقَهَاءِ.
অর্থ: “ওয়াক্ফ যখন ছহীহ হয়ে যাবে, তখন ওয়াক্ফকৃত সম্পদ থেকে ওয়াক্ফকারীর মালিকানা থেকে বের হয়ে যাবে। অর্থাৎ মহান আল্লাহ্ পাক উনার মালিকানায় চলে য়াবে তথা উক্ত সম্পদের মালিক স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি। অত:পর ইমাম কুদূরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার ভাষায় উক্ত ওয়াক্্ফকৃত সম্পদ বিক্রি করা জায়িয হবে না এবং কাউকে মালিক বানানোও জায়িয হবে না। এটা সমস্ত ফুক্বাহায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের ইজমা দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে।” কেননা উক্ত সম্পদের মালিক স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি নিজেই।
“ফতওয়ায়ে আলমগীরী” কিতাবের ২য় খন্ডের ৪৫৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
فِي الْكُبْرَى مَسْجِدٌ مَبْنِيٌّ اَرَادَ رَجُلٌ اَنْ يَنْقُضَهُ وَيَبْنِيَهُ ثَانِيًا اَحْكَمَ مِنْ الْبِنَاءِ الْاَوَّلِ لَيْسَ لَهُ ذَلِكَ؛ لِاَنَّهُ لَا وِلَايَة لَهُ.
অর্থ: “ফতওয়ায়ে কুরবা” কিতাবে উল্লেখ আছে যে, যদি কোন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠিত কোন মসজিদ ভেঙ্গে তদস্থলে প্রথম মসজিদটির চেয়ে আরো মজবুত করে দ্বিতীয়বার মসজিদ তৈরী করতে চায়। এমতাবস্থায় প্রতিষ্ঠিত মসজিদটি ভেঙ্গে ফেলার অধিকার তার নেই। কেননা এ ব্যাপারে তার কোন মালিকানা বা কর্তৃত্ব নেই।”
“মুযমিরাত” কিতাবে উল্লেখ আছে-
مَسْجِدٌ مَبْنِيُّ أَرَادَ رَجُلٌ أَنْ يَنْقُضَهُ وَيَبْنِيَهُ ثَانِيًا أَحْكَمَ مِنَ الْبِنَاءِ الأَوَّلِ لَيْسَ لَهٗ ذَلِكَ؛ لِأَنَّهُ لَا وِلَايَةَ لَهُ.
অর্থ: “ফতওয়ায়ে কুরবা” কিতাবে উল্লেখ আছে যে, যদি কোন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠিত কোন মসজিদ ভেঙ্গে তদস্থলে প্রথম মসজিদটির চেয়ে আরো মজবুত করে দ্বিতীয়বার মসজিদ তৈরী করতে চায়। এমতাবস্থায় প্রতিষ্ঠিত মসজিদটি ভেঙ্গে ফেলার অধিকার তার নেই। কেননা এ ব্যাপারে তার কোন মালিকানা বা কর্তৃত্ব নেই।”
“ফতওয়ায়ে হিন্দিয়া” কিতাবের ৪র্থ খন্ডের ১৭১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
کبرے مین ہی کہ ایک مسجد بنی ہوئی ہی پس ایک شخص نےچاہا کہ اسکو توڑ کردوبارہ اسکو اس عمارت سے مضبوط عمارت کے ساتھ بناوے تو اسکو اختیار نہیں ہی کیونکہ اسکو کوئی ولایت حاصل نہیں ہی
অর্থ: “ফতওয়ায়ে কুরবা” কিতাবে উল্লেখ আছে, একটি মসজিদ বানানো হয়েছে, কোন এক ব্যক্তি চাচ্ছে যে, মসজিদকে ভেঙ্গে পুনরায় মজবুত করে বানাতে। কিন্তু এই ইখতিয়ার তার নেই। কেননা মসজিদের উপর তার কোন কর্তৃত্ব নেই।” এটা “মুযমারাত” কিতাবে উল্লেখ আছে।
উপরোক্ত দলীল-আদিল্লাহর ভিত্তিতে সুস্পষ্টভাবে এটাই প্রমাণিত হলো যে, যেখানে মজবুত করে মসজিদ তৈরী করার উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত মসজিদ ভাঙ্গাই জায়িয নাই। সেক্ষেত্রে নদী রক্ষার নামে, মেট্রোরেল, রাস্তা বর্ধণের নামে সৌন্দর্য বর্ধণের নামে মসজিদ ভাঙ্গা, স্থানান্তর করা জায়িয তো নয়ই বরং কাট্টা হারাম ও কুফরির অন্তর্ভুক্ত এবং জাহান্নামী হওয়ার কারণ।
সুওয়াল-১৩
মসজিদের জায়গায় দোকান-পাট ও ঘর-বাড়ি তৈরি করে ভাড়া দেয়ার ব্যাপারে সম্মানিত শরীয়তের হুকুম কি?
জাওয়াব: মসজিদের কোন অংশকে মসজিদ থেকে আলাদা করে সেখানে অন্য কিছু তৈরি করা জায়িয নেই।
যেমন “ফতওয়ায়ে আলমগীরী” কিতাবের ২য় খন্ডের ৪৬২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
قَيِّمُ الْمَسْجِدِ لَا يَجُوزُ لَهُ أَنْ يَبْنِيَ حَوَانِيتَ فِي حَدِّ الْمَسْجِدِ أَوْ فِي فِنَائِهِ؛ لِأَنَّ الْمَسْجِدَ إذَا جُعِلَ حَانُوتًا وَمَسْكَنًا تَسْقُطُ حُرْمَتُهُ وَهَذَا لَا يَجُوزُ، وَالْفِنَاءُ تَبَعُ الْمَسْجِدِ فَيَكُونُ حُكْمُهُ حُكْمَ الْمَسْجِدِ ، كَذَا فِي مُحِيطِ السَّرَخْسِيِّ
অর্থ: “মসজিদের মুতাওয়াল্লীর জন্য মসজিদের সীমানায় বা মসজিদের চত্বরে দোকান-পাট তৈরী করা জায়িয নেই। কেননা মসজিদের সীমানায় বা মসজিদের চত্বরে দোকান-পাট তৈরী করলে অথবা বাসস্থান নির্মাণ করলে মসজিদের হুরমত নষ্ট হয় তথা মসজিদের মর্যাদাহানী হয়। বিধায় মসজিদের সীমানায় বা মসজিদের চত্বরে দোকান-পাট তৈরী করা বা বাসস্থান নির্মাণ করা জায়িয নেই। কেননা মসজিদের চত্বরটি মসজিদের অনুগামী হিসেবে মসজিদেরই হুকুম রাখে। অনুরূপভাবে “মুহীতে সারাখসী” কিতাবেও উল্লেখ আছে।”
“ফতওয়ায়ে হিন্দিয়া” কিতাবের ৪র্থ খন্ডের ১৭৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
مسجد کے قیم کوروا نہیں ہی کہ حد مسجد مین يافناے مسجد مین دوکانین بنودے کیوکہ مسجد جب دوکان و مسکان کی گئی تو اسکی حرمت ساقط ہو جائگی اوریہ جائز نہیں ہی اور فناے مسجد تابع مسجد ہی پس اسکا حکم بھی مسجد کا حکم ہی یہ محیط سرخسی مین ہی-
অর্থ: “মসজিদের মুতাওয়াল্লীর জন্য জায়িয নেই যে, মসজিদের সীমানায় অথবা মসজিদের চত্বরে দোকান-পাট তৈরী করা। কেননা মসজিদের সীমানায় বা মসজিদের চত্বরে যখন দোকান বা বাসস্থান নির্মাণ করা হবে তখন মসজিদের হুরমত বা সম্মান নষ্ট হবে। যা জায়িয নেই। আর মসজিদের চত্বর মসজিদেরই অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং মসজিদের যেই হুকুম মসজিদের চত্বরের সেই একই হুকুম। অনুরূপভাবে “মুহীতে সারাখসী” কিতাবেও উল্লেখ আছে।”
“ফতওয়ায়ে আলমগীরী” কিতাবের ২য় খন্ডের ৪৬৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
أَرْضُ وَقْفٍ عَلَى مَسْجِدٍ صَارَتْ بِحَالٍ لَا تُزْرَعُ فَجَعَلَهَا رَجُلٌ حَوْضًا لِلْعَامَّةِ لَا يَجُوزُ لِلْمُسْلِمِينَ انْتِفَاعٌ بِمَاءِ ذَلِكَ الْحَوْضِ، كَذَا فِي الْقُنْيَةِ .
অর্থ: “মসজিদের জন্য ওয়াক্ফ জমি চাষাবাদের অনুপযোগী হওয়ায়, কোন ব্যক্তি জনসাধারণের পানির জন্য হাউজ, কুপ, নলকুপ বা পুকুর খনন করলে, ঐ হাউজ, কুপ, নলকুপ বা পুকুরের পানি থেকে ফায়দা হাছিল করা কোন মুসলমানদের জন্য জায়িয হবে না। অনুরূপভাবে “কুনিয়া” কিতাবেও উল্লেখ আছে।”
“ফতওয়ায়ে হিন্দিয়া” কিতাবের ৪র্থ খন্ডের ১৭৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
مسجد پر وقف کی زمین ایسی ہو گئی کہ زراعت نہیں کیجاتی ہی اسکو ایک شخص نے عامئہ مسلمین کے لئے حوض کردیا تو مسلمانون کو اس حوض کے پانی سے انتفاع نہیں جائز ہی -
অর্থ: “মসজিদের জন্য ওয়াক্ফকৃত জমি চাষাবাদের জন্য অনুপযোগী হওয়ায়, কোন এক ব্যক্তি সে জমিতে সাধারণ মুসলমানদের জন্য হাউজ, কুপ, নলকুপ বা পুকুর নির্মাণ করে দিলো। মুসলমানদের জন্য উক্ত হাউজ, কুপ, নলকুপ বা পুকুরের পানি দ্বারা ফায়দা হাছিল করা জায়িয হবে না।”
সুতরাং, মসজিদের জন্য ওয়াক্ফকৃত জায়গা অথচ মসজিদ হয়নি, নামাযও হয়নি এমন জায়গাতেও যদি জনকল্যাণমূলক কাজ করা এবং তা থেকে ফায়দা হাছিল করা কাট্টা হারাম ও নাজায়িয।
স্মরণীয় যে, ওয়াকফ করার সময় ওয়াকফকারী যদি মসজিদের আয়ের উৎস হিসেবে মসজিদের নিচে বা আশে-পাশে দোকান-পাট বা বসস্থান নির্মাণের কথা উল্লখ করেন বা শর্তারোপ করেন, অর্থাৎ মসজিদের জমি ওয়াকফের সাথে দোকান-পাট বা বাসস্থান নির্মানের কথা উল্লেখ থাকে, তাহলে মসজিদের নিচে বা আশে পাশে দেকান-পাট ও বাসস্থান নির্মাণ করা জায়িয হবে।
একইভাবে কেউ যদি তার বহুতল ভবনের কোন ফ্লোর মসজিদের জন্য ওয়াকফ করে তাহলে শুধু সেই ফ্লোরটিই ওয়াকফ হিসেবে গন্য হবে। জমি ওয়াকফ হবে না। যেমন-কারো ১০ তলা একটি ভবন রয়েছে। সেই ব্যক্তি উক্ত ভবনের ৫ম ফ্লোর মসজিদের জন্য ওয়াকফ করে দিলো। এমতাবস্থায় উক্ত ভবনের ৫ম ফ্লোর ব্যতিত অন্যান্য ফ্লোরগুলো বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে পারবে। তবে মসজিদের জন্য নির্ধারিত ৫ম ফ্লোর ভাঙ্গা জায়িয হবে না।
0 Comments:
Post a Comment