যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত নতুন হুজরা শরীফ
সাইয়্যিদাতুন
নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, উম্মু
আবীহা সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সাথে
সম্মানিত নিসবতে আ’যীম শরীফ সম্পাদন হওয়ার পূর্বে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু
ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করতেন। ২য় হিজরী সনের
সম্মানিত যিলহজ্জ শরীফ মাসে উনাদের সম্মানিত নিসবতে আ’যীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়। তখন
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে আলাদাভাবে সম্মানিত
হুজরা শরীফ ব্যবস্থা করার জন্য বললেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন,
اُطْلُبْ
مَنْزِلا
فَطَلَبَ
حضرت عَلِىٌّ
عليه السلام
مَنْزِلا
فَأَصَابَهُ
مُسْتَأْخِرًا
عَنِ النَّبِيِّ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
قَلِيلا.
فَبَنَى
بِهَا
فِيهِ
فَجَاءَ
النَّبِيُّ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
إِلَيْهَا
قَالَ
إِنِّي
أُرِيدُ
أَنْ أُحَوِّلَكِ
إِلَيَّ.
فَقَالَتْ
لِرَسُولِ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
فَكَلِّمْ
حَارِثَةَ
بْنَ النُّعْمَانِ
رَضِىَ
اللهُ
تَعَالى
عَنْهُ
أَنْ يَتَحَوَّلَ
عَنِّي.
تُرِيدُ
أَنْ يَتَحَوَّلَ
لِي عَنْ
مَنْزِلِهِ.
فَقَالَ
رَسُولُ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
قَدْ تَحَوَّلَ
حَارِثَةُ
رَضِىَ
اللهُ
تَعَالى
عَنْهُ
عَنَّا
حَتَّى
قَدِ اسْتَحْيَيْتُ.
فَبَلَغَ
حَارِثَةَ
رَضِىَ
اللهُ
تَعَالى
عَنْهُ
فَتَحَوَّلَ
وَجَاءَ
إِلَى
النَّبِيِّ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
فَقَالَ
يَا رَسُولَ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
إِنَّهُ
بَلَغَنِي
أَنَّكَ
تُحَوِّلُ
حضرت فَاطِمَةَ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
إِلَيْكَ
وَهَذِهِ
مَنَازِلِي
وَهِيَ
أَسْقَبُ
بُيُوتِ
بَنِي
النَّجَّارِ
بِكَ. وَإِنَّمَا
أَنَا
وَمَالِي
لِلَّهِ
وَلِرَسُولِهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ.
وَاللَّهِ
يَا رَسُولَ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
لَلَّذِي
تَأْخُذُ
مِنِّي
أَحَبُّ
إِلَيَّ
مِنَ الَّذِي
تَدَعُ.
فَقَالَ
رَسُولُ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
صَدَقْتَ
بَارَكَ
اللهُ
عَلَيْكَ
فَحَوَّلَهَا
إِلَى
بَيْتِ
حَارِثَةَ
رَضِىَ
اللهُ
تَعَالى
عَنْهُ.
অর্থ: “(হ হযরত কাররামাল্লাহু
ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম) আপনি সম্মানিত হুজরা শরীফ তথা গৃহ বা বাসস্থান তালাশ
করুন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত
হুজরা শরীফ তালাশ করতে থাকলেন। তারপর তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার (সম্মানিত হুজরা শরীফ) থেকে কিছুটা দূরে একটি
সম্মানিত হুজরা শরীফ (গৃহ) পেলেন। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ
আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার
সাথে সেই সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ ‘সম্মানিত লাইলাতুয যাফাফ শরীফ’ বা সম্মানিত
নিসবতে আযীম শরীফ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সম্মানিত প্রথম রাত মুবারক অবস্থান মুবারক
করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার লখতে জিগার সাইয়্যিদাতুনা আন
নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার নিকট (উক্ত হুজরা শরীফ বা বাড়ি
মুবারক-এ) সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখলেন। তিনি (সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ
হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে) ইরশাদ মুবারক করলেন, নিশ্চয়ই আমি আপনাকে আমার কাছাকাছি রাখতে চাই। অর্থাৎ আমি
চাই আমার সম্মানিত হুজরা শরীফ উনার পাশাপাশি বা নিকটে আপনার সম্মানিত হুজরা শরীফ
হোক। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম
তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে
বললেন, তাহলে আপনি হযরত হারিছাহ
ইবনে নু’মান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সাথে এই বিষয়ে আলোচনা মুবারক করুন, (কারণ হযরত হারিছাহ ইবনে নু’মান রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু
উনার তো অনেকগুলো বাড়ি মুবারক সম্মানিত মসজিদে নববী শরীফ উনার পাশে তথা আপনার
সম্মানিত হুজরা শরীফ উনার পাশে রয়েছে। সুবহানাল্লাহ! ) তিনি যেন আমার জন্য উনার
(বাড়ি থেকে) একটি বাড়ি খালি করে দেন। (অর্থাৎ তিনি যেন আমার সম্মানিত হুজরা শরীফ
স্থানান্তরের বিষয়ে আমার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য উনার
একটি বাড়ি মুবারক আমাকে সম্মানিত হাদিয়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!) আপনি এটা
পছন্দ করেন যে, তিনি যেন উনার
একটি বাড়ি আমার জন্য খালি করে দেন। (অর্থাৎ তিনি আমাকে উনার একটি বাড়ি মুবারক
হাদিয়া মুবারক করে আমার সম্মানিত হুজরা শরীফ স্থানান্তরের বিষয়ে আমার সম্মানিত খিদমত
মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ!) তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হযরত হারিছাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি আমাদের জন্য
ইতঃপূর্বে অনেকগুলো বাড়ি মুবারক ছেড়ে দিয়েছেন, আমাদেরকে অনেকগুলো বাড়ি মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন।
সুবহানাল্লাহ! তাই আমি এখন উনাকে এই বিষয়ে বলতে লজ্জাবোধ করছি। তারপর (যে
কোনোভাবে) সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছাহ ইবনে নু’মান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার
নিকট এই সংবাদ মুবারক পৌঁছলো। তখন তিনি উনার একটি বাড়ি মুবারক খালি করে দিলেন এবং
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এসে বললেন,
يَا
رَسُولَ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
إِنَّهُ
بَلَغَنِي
أَنَّكَ
تُحَوِّلُ
سَيِّدَتنَا
حَضْرَتْ
فَاطِمَةَ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
إِلَيْكَ
وَهَذِهِ
مَنَازِلِي
وَهِيَ
أَسْقَبُ
بُيُوتِ
بَنِي
النَّجَّارِ
بِكَ. وَإِنَّمَا
أَنَا
وَمَالِي
لِلَّهِ
وَلِرَسُولِهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ.
وَاللَّهِ
يَا رَسُولَ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
لَلَّذِي
تَأْخُذُ
مِنِّي
أَحَبُّ
إِلَيَّ
مِنَ الَّذِي
تَدَعُ.
অর্থ: “ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার নিকট এই সম্মানিত সংবাদ মুবারক পৌঁছেছে যে, নিশ্চয়ই আপনি উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম
উনাকে আপনার কাছাকাছি রাখতে চান। এইগুলো হচ্ছে আমার বাড়ি মুবারক। এই বাড়ি
মুবারকগুলো বনু নাজ্জার গোত্রের যেকোন বাড়ি থেকে আপনার তথা আপনার সম্মানিত হুজরা
শরীফ উনার অধিক নিকটবর্তী। নিশ্চয়ই আমি এবং আমার সমস্ত সম্পদ মহান আল্লাহ পাক উনার
এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
অর্থাৎ উনাদের জন্য। মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম! আপনি আমার যে সম্পদ মুবারক গ্রহণ করবেন, তা আমার নিকট অধিকতর প্রিয় যে সম্পদ আমার জন্য রেখে দিবেন
তা থেকে।” সুবহানাল্লাহ!
তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করলেন,
صَدَقْتَ
بَارَكَ
اللهُ
عَلَيْكَ
অর্থ: “আপনি সত্য কথাই বলেছেন। মহান
আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে সম্মানিত বরকত মুবারক দান করুন!” সুবহানাল্লাহ!
অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছাহ ইবনে নু’মান রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু উনার একটি
বাড়ি মুবারক-এ সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে
নিয়ে আসেন।” সুবহানাল্লাহ! (ত্ববাক্বাতে ইবনে সা’দ, তারীখে ত্ববারী শরীফ ইত্যাদি)
সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনিতখন থেকে হযরত
হারিছাহ ইবনে নু’মান রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু উনার উক্ত বাড়িখানা উনার সম্মানিত
হুজরা শরীফ হিসেবে ক্ববূল করেন এবং সেখানে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করতে থাকেন।
সুবহানাল্লাহ!
না’তু বিনতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতিনা আন
নূরির রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর উনার সম্মানিত লখতে জিগার
মুবারক সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালামতিনি প্রায় ১২টিরও
অধিক সম্মানিতনা’ত শরীফ পাঠ করেন। যেগুলো‘না’তুয যাহরা আলাইহাস সালাম’হিসেবে
খ্যাত। নিম্নে সেই সকল সম্মানিত না’ত শরীফ থেকে কয়েকখানা সম্মানিত না’ত শরীফ ও
উনাদের অনুবাদ তুলে ধরা হলো।
১ম সম্মানিত না’ত শরীফ ও উনার অনুবাদ:
عَنْ
حَضْرَتْ
عَلِيٍّ
كَرَّمَ
اللهُ
وَجْهَهٗ
عَلَيْهِ
السَّلَامُ
قَالَ
لَمَّا
رُمِسَ
رَسُوْلُ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
جَاءَتْ
حَضْرَتْ
فَاطِمَةُ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
فَوَقَفَتْ
عَلٰى
قَبْرِهٖ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
وَاَخَذَتْ
قَبْضَةً
مِنْ تُرَابِ
الْقَبْرِ
فَوَضَعَتْهٗ
عَلٰى
عَيْنَيْهَا
وَبَكَتْ
وَاَنْشَاَتْ
تَقُوْلُ:
مَاذَا
عَلٰى
مَنْ شَمَّ
تُرْبَةَ
اَحْمَدَ ৃৃ
أَنْ
لَا يَشَمَّ
مَدَى
الزَّمَانِ
غَوَالِيَا
صُبَّتْ
عَلَيَّ
مَصَائِبُ
لَوْ اَنَّهَاৃৃ
صُبَّتْ
عَلَى
الْاَيَّامِ
صِرْنَ
لَيَالِيَا
অর্থ:“সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত রওযা
শরীফ উনার মধ্যে রাখা হলো, তখন
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনিএসেনূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনারসম্মানিত রওযা শরীফ উনার নিকটে অবস্থান মুবারক করলেন। তারপরতিনি সম্মানিত রওযা
শরীফ উনার মাটি মুবারক থেকে এক মুষ্টি মাটি মুবারক নিয়ে উনার দুই চোখ
মুবারক-এমাখলেনএবং সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রকাশ করতে করতে এই বলে
সম্মানিত না’ত শরীফ রচনা মুবারক করলেন এবং পাঠ করলেন,
مَاذَا
عَلٰى
مَنْ شَمَّ
تُرْبَةَ
اَحْمَدَ ৃৃ
أَنْ
لَا يَشَمَّ
مَدَى
الزَّمَانِ
غَوَالِيَا
صُبَّتْ
عَلَيَّ
مَصَائِبُ
لَوْ اَنَّهَاৃৃ
صُبَّتْ
عَلَى
الْاَيَّامِ
صِرْنَ
لَيَالِيَا
অর্থ: “যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত রওযা শরীফ উনার মাটি মুবারক বা ধূলি-বালি মুবারক উনাদের
ঘ্রাণ মুবারক নেয়, তার জন্য আর কি
চাই? তার জন্য সারা জীবন বা
অনন্তকাল যাবৎ আর কোন খোশবুর ঘ্রাণ নেয়ার প্রয়োজন নেই। সুবহানাল্লাহ!
(নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
সম্মানিত জুদায়ী মুবারক উনার কারণে) আমার উপর যেসব মুসিবত আপতিত হয়েছে, তা যদি দিনসমূহের উপর আপতিত হতো, তাহলে দিনগুলো রাতে পরিণত হয়ে যেতো।” সুবহানাল্লাহ! {(১) সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১২/২৮৯, (২) তুহফাহ, (৩) শরহে কাফিয়াহ, (৪)
তাফসীরে রূহুল মা‘আনী ১০/১৪৬, (৫) ইত্তিহাফুয যায়ির ১/১৬৭, (৬) আদ দুররাতুছ ছামীনাহ ফী আখবারিল মাদীনাহ ১/১৩৯, (৭) জামউল ওসায়িল ফী শরহিশ শামায়িল, (৮) মিরক্বাত শরীফ ৩য় খ-, (৯) ইরশাদুস সারী ২/৩৭৮, (১০) ফাতাওয়ায়ে ফিক্বহিয়্যাহ ২/১৮, (১১) তুহফাতুল হাবীব ৭/৪৭৮, (১২) আশ শরহুল কাবীর লিইবনে কুদামাহ ২/৪৩০, (১৩) আল মুগনী ফী ফিক্বহ ৫/৪৫, (১৪) আল মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ ৩/৫৮২, (১৫) শারহুয যারক্বনী আলাল মাওয়াহিব ১২/১৬৮, (১৬) ‘ঊয়ূনুল আছার ২/৪০৯, (১৭) নুযহাতুল মাজালিস ১/৩২৭, (১৮) ওয়াফাউল ওয়াফা ৪/২১৮ ইত্যাদি)
শব্দার্থ:مَاذَا কি? عَلٰىউপর, مَنْযে, যারা, شَمَّঘ্রাণ নিয়েছে, تُرْبَةَ মাটি মুবারক, ধূলি-বালি মুবারক, ধুলা, ধুলো, اَحْمَدَ অধিকতর প্রশংসাকারী, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
সম্মানিত ইসম বা নাম মুবারক, مَدَى দুরত্ব, আওতা, প্রসার, ব্যাপ্তি, পরিধি, সময়কাল, মেয়াদ, শেষ সীমা, الزَّمَانِ সময়, কাল, যুগ, যামানা, صُبَّتْ আপতিত হয়েছে, ঢলে পড়েছে, عَلَيَّ আমার উপর, مَصَائِبُ মুসিবতসমূহ, বিপদসমূহ, لَوْ যদি, اَنَّهَا নিশ্চয়ই তা, উহা, الْاَيَّامِ দিনসমূহ, صِرْنَ ফিরে এসেছে, পরিণত হয়েছে, হতো, لَيَالِيَا রাতসমূহ।
২য় না’ত শরীফ ও উনার অনুবাদ :
وَلَمّا
تُوُفِّـىَ
رَسُوْلُ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
وَدُفِنَ
وَرَجَعَ
الْمُهَاجِرُوْنَ
وَالْاَنْصَارُ
اِلـٰى
رِحَالِـهِمْ
وَرَجَعَتْ
حَضْرَتْ
فَاطِمَةُ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
اِلـٰى
بَيْتِهَا
اجْتَمَعَ
اِلَيْهَا
نِسَاؤُهَا
فَقَالَتْ
اِغْبَرَّ
اٰفَاقُ
السَّمَاءِ
وَكُوّرَتْ ...
شَمْسُ
النَّهَارِ
وَاَظْلَمَ
الْعَصْرَانٖ
فَالْاَرْضُ
مِنْ بَعْدِ
النَّبِىِّ
كَئِيبَةٌ ...
اَسَفًا
عَلَيْهِ
كَثِيْرَةَ
الرَّجَفَانٖ
فَلْيَبْكِهٖ
شَرْقُ
الْبِلَادِ
وَغَرْبُهَا
... ..
وَلْتَبْكِهٖ
مُضَرُ
وَكُلُّ
يَـمَانٖ
وَلْيَبْكِهِ
الطَّوْدُ
الْمُعَظَّمُ
جُوْدُهٗ ...
وَالْبَيْتُ
ذُو الْاَسْتَارِ
وَالْاَرْكَانٖ
يَا
خَاتَـمَ
الرُّسُلِ
الْمُبَارَكُ
قَبْرُهٗ ...
صَلّٰى
عَلَيْكَ
مُنَزِّلُ
الْقُرْاٰنٖ
نَفْسِىْ
فِدَاؤُكَ
مَا لِرَأْسِكَ
مَائِلًا
...
مَا
وَسَّدُوْكَ
وِسَادَةُ
الْوَسْنَانٖ
অর্থ: “আর যখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ
করার পর উনাকে সম্মানিত রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখা হলো, তখন হযরত মুহাজির ও আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহুম উনারা উনাদের বাড়ি ফিরে আসলেন। আর সায়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস
সালাম তিনি উনার সম্মানিত হুজরা শরীফ উনার মধ্যে প্রত্যাবর্তন করলেন। উনার চারপাশে
হযরত মহিলা ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা জমা হলেন। তখন
সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি বললেন (না’ত শরীফ পাঠ করলেন)
اِغْبَرَّ
اٰفَاقُ
السَّمَاءِ
وَكُوّرَتْ ...
شَمْسُ
النَّهَارِ
وَاَظْلَمَ
الْعَصْرَانٖ
فَالْاَرْضُ
مِنْ بَعْدِ
النَّبِىِّ
كَئِيبَةٌ ...
اَسَفًا
عَلَيْهِ
كَثِيْرَةَ
الرَّجَفَانٖ
فَلْيَبْكِهٖ
شَرْقُ
الْبِلَادِ
وَغَرْبُهَا
... ..
وَلْتَبْكِهٖ
مُضَرُ
وَكُلُّ
يَـمَانٖ
وَلْيَبْكِهِ
الطَّوْدُ
الْمُعَظَّمُ
جُوْدُهٗ ...
وَالْبَيْتُ
ذُو الْاَسْتَارِ
وَالْاَرْكَانٖ
يَا
خَاتَـمَ
الرُّسُلِ
الْمُبَارَكُ
قَبْرُهٗ ...
صَلّٰى
عَلَيْكَ
مُنَزِّلُ
الْقُرْاٰنٖ
نَفْسِىْ
فِدَاؤُكَ
مَا لِرَأْسِكَ
مَائِلًا
...
مَا
وَسَّدُوْكَ
وِسَادَةُ
الْوَسْنَان
অর্থ: “আকাশের দিগন্তসমূহ ধূলায় ধূসরিত হয়েছে, দিবসের সূর্য হয়েছে আলোক শূন্য, আর যামানা হয়েছে অন্ধাকারাচ্ছন্ন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
সম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর সারা পৃথিবী, সারা কায়িনাত শুধু দুঃখ-মলিনই হয়নি; বরং দুঃখ ভারে প্রকম্পিতও হয়েছে। অতঃপর যেন ক্রন্দন করে
উনার জন্য প্রাচ্য-পাশ্চাত্য, আরো যেন ক্রন্দন করে মুদ্বার ও প্রত্যেক ইয়ামেনবাসী। যেন ক্রন্দন করে উনার
জন্য মহান বদান্যতার অধিকারী বিরাট পাহাড় এবং রুকন ও গিলাফ বিশিষ্ট ঘর তথা
সম্মানিত কা’বা শরীফ। ইয়া খ¦াতামার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যাঁর সম্মানিত রওযা শরীফ বরকতময়, সম্মানিত কুরআন শরীফ অবতীর্ণকারী মহান আল্লাহ আপনার প্রতি
ছলাত পাঠ করুন। সুবহানাল্লাহ! আমার জীবন আপনার জন্য কুরবান হোক, আপনার সম্মানিত শির বা মাথা মুবারক কাত হয়নি, তন্দ্রাচ্ছন্নের বালিশ আপনাকে বালিশে শয়ন করায়নি। অর্থাৎ
আপনি সম্মানিত রওযা শরীফ উনার মাঝে তন্দ্রাচ্ছন্ন নন; বরং আপনি সদা-সর্বদা সবকিছু অবলোকন করছেন এবং শুনছেন তথা
আপনি সর্বাস্থায় সর্বত্র হাযির এবং নাযির।” সুবহানাল্লাহ! (আর রওদ্বুল উনফ ৪/৪৫৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ ১২/২৮৯, ইত্তিহাফুয যায়ির ১/১৭১,ইরশাদুস সারী ৬/৪৭২, সালওয়াতুল কায়ীব বিওয়াফাতিল হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম ১/২৭, ‘উইয়ূনুল আছার
২/৪৩৪, আল মুক্বতাফা মিন সীরাতিল
মুছত্বফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১/২৪৩, আল ইকতিফা ২/৬১, বাহজাতুল মাহাফিল ২/১২০, নিহায়াতুর আরাব ১৮/২৮৫, আল হামাসাহ ১/৭৮, যাহরুর
আদাব ১/৪২ ইত্যাদি)
শব্দার্থ: اِغْبَرّধুলায় ঢেকে গেছে, ধূসরবর্ণ হয়েছে, ধূলিময় হয়েছে, اٰفَاقُ দিগন্তসমূহ, সুদূর প্রান্তসমূহ, দূরবর্তী
অঞ্চলসমূহ,السَّمَاءِ আসমান, আকাশ, গগন, كُوّرَتْ অন্ধকার হয়েছে, অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়েছে, কিরণবিহীন
হয়েছে, আলোক শূন্য হয়েছে, شَمْس সূর্য, النَّهَارِ দিবস, দিবা, দিন, اَظْلَمَ অন্ধকার হয়েছে, তমসাচ্ছন্ন হয়েছে, তিমিরাচ্ছন্ন
হয়েছে, الْعَصْرَانٖ সময়, যুগ, কাল, শতাব্দী, الْاَرْضُ পৃথিবী, কায়িনাত, بَعْدِ পরে, পরবর্তীতে, النَّبِىِّ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, كَئِيْبَةٌবিষণœ, দুঃখপূর্ণ, অবসাদগ্রস্ত, اَسَفًا দুঃখ করা, দুঃখিত
হওয়া, অনুতপ্ত হওয়া, মনক্ষুণœ হওয়া, عَلٰى উপর, ه উনার, كَثِيْرَةَ অনেক, বেশি, অধিক, বহু, প্রচুর, পর্যাপ্ত, الرّجَفَانٖ কেঁপে উঠা, কম্পিত হওয়া, فَ অতঃপর, لْيَبْكِه যেন উনার জন্য কাঁদে, شَرْقُ পূর্ব, প্রাচ্য, الْبِلَاد ভূখ-সমূহ, ভূমিসমূহ, শহরসমূহ, غَرْبُ পশ্চিম, পাশ্চাত্য, هَا তার, وَ আর, আরো, لْتَبْكِهٖ যেন কাঁদে উনার জন্য, مُضَرُ মুদ্বার, كُلُّপ্রত্যেক, يَـمَانِ ইয়ামেনবাসী, الطّوْدُ উচ্চ পর্বত, বিরাট পাহাড়, الْمُعَظَّمُ সম্মানিত, শ্রদ্ধেয়, মর্যাদাবান, মহান, جُوْدُ দান, দানশীলতা, বদান্যতা, উদারতা, الْبَيْتُ ঘর, ذُو অধিকারী, বিশিষ্ট,الْاَسْتَارِ পর্দাসমূহ, আবরণসমূহ, الْاَرْكَان রুকনসমূহ, স্তম্ভসমূহ, খুঁটিসমূহ, يَا হে, خَاتَـمَ শেষ, الرُّسُلِ রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা, الْمُبَارَكُ বরকতময়, বরকতপূর্ণ, কল্যাণময়, قَبْرُসম্মানিত রওযা শরীফ, هٗ উনার, صَلّى তিনি ছলাত পাঠ করুন, عَلٰى উপর, كَ আপনার, مُنَزِّلُ নাযিলকারী, অবতীর্ণকারী, الْقُرْاٰنٖ সম্মানিত কুরআন শরীফ, نَفْسِ আত্মা, প্রাণ, জীবন, ىْ আমার, فِدَاؤُكَ আপনার জন্য উৎসর্গ হোক, আপনার জন্য কুরবান হোক, مَا নেই, নাই, لِ জন্য, رَأْسِ শির মুবারক, মাথা মুবারক, كَআপনার, مَائِلًا কাত, مَا
وَسَّدُوْكَ বালিশে শোয়ায়নি, وِسَادَةُ বালিশ, الْوَسْنَانٖ তন্দ্রাচ্ছন্ন, নিদ্রাচ্ছন্ন, তন্দ্রালু, নিদ্রালু।
৩য় না’ত শরীফ ও উনার অনুবাদ:
বিশ্বখ্যাত কিতাব সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ উনার ১২তম খ-ের পৃষ্ঠায় উল্লেখ
রয়েছে,
وَقَالَتْحَضْرَتْ
فَاطِمَةُ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ:
اِذَا
اِشْتَدَّ
شَوْقِىْ
زُرْتُ
قَبْرَكَ
بَاكِيًا ..
اَنُوْحُ
وَاَشْكُوْ
لَا اَرَاكَ
مُجَاوِبِـىْ
فَيَا
سَاكِنَ
الصَّحْرَاءِ
عَلَّمْتَنِىْ
الْبُكَا ..
وَذِكْرُكَ
اَنْسَانِـىْ
جَمِيْعَ
الْـمَصَائِبٖ
فَاِنْ
كُنْتَ
عَنّـِىْ
فِـى التُّرَابِ
مَغِيْبًا ..
فَمَا
كُنْتَ
مِنْ قَلْبِ
الْـحَزِنِ
بِغَائِبٖ
অর্থ: সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন,
اِذَا
اِشْتَدَّ
شَوْقِىْ
زُرْتُ
قَبْرَكَ
بَاكِيًا ..
اَنُوْحُ
وَاَشْكُوْ
لَا اَرَاكَ
مُجَاوِبِـىْ
فَيَا
سَاكِنَ
الصَّحْرَاءِ
عَلَّمْتَنِىْ
الْبُكَا ..
وَذِكْرُكَ
اَنْسَانِـىْ
جَمِيْعَ
الْـمَصَائِبٖ
فَاِنْ
كُنْتَ
عَنّـِىْ
فِـى التُّرَابِ
مَغِيْبًا ..
فَمَا
كُنْتَ
مِنْ قَلْبِ
الْـحَزِنِ
بِغَائِبٖ
অর্থ: “যখন আমার আগ্রহ, মুহব্বত মুবারক প্রবল আকারে প্রকাশ পায়, তখন আমি ক্রন্দনরত অবস্থায় আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
রওযা শরীফ যিয়ারত করি। আমি কান্না মুবারক করি এবং আমার কষ্ট মুবারক ব্যক্তি করি, কিন্তু আপনাকে আমার সাড়াদানকারীরূপে দেখতে পাই না। অতঃপর হে
নির্জন প্রান্তরের প্রবাসী তথা সম্মানিত রওযা শরীফ উনার মাঝে অবস্থানকারী, আপনিই আমাকে কান্না মুবারক শিক্ষা দিয়েছেন। অর্থাৎ আপনার
সম্মানিত জুদায়ী মুবারক উনার কারণেই আমি আজ কান্না মুবারক করছি। আপনার সম্মানিত
যিকর তথা স্মরণ মুবারক আমাকে সমস্ত বালা-মুসিবত, বিপদ-আপদ ভুলিয়ে দিয়েছে।
অতঃপর যদিও আপনি আমার থেকে সম্মানিত মাটি মুবারক তথা সম্মানিত রওযা শরীফ উনার
মধ্যে অদৃশ্য। কিন্তু আপনি আমার সম্মানিত ব্যথিত ও চিন্তিত হৃদয়ে সর্বদা দৃশ্যমান, উপস্থিত, হাযির।” সুবহানাল্লাহ!
শাব্দিক অর্থ: اِذَا যখন, اِشْتَدَّ তীব্র হয়েছে বা হয়, কঠিন হয়েছে বা হয়, বেড়ে যায়, প্রবল হয়, شَوْقِىْ আগ্রহ, ইচ্ছা, আকাঙ্খা, زُرْتُ আমি যিয়ারত করেছি বা করি, قَبْرَ সম্মানিত রওযা শরীফ, كَ আপনার, بَاكِيًا ক্রন্দনরত অবস্থায়, اَنُوْحُ আমি কান্না মুবারক করি, আমি আর্তনাদ মুবারক করি, اَشْكُوْ আমি অভিযোগ করি, আমি কষ্ট ব্যক্তি করি, لَا
اَرَاكَ আমি আপনাকে দেখি না, مُجَاوِبِ সাড়াদানকারী, জাওয়াবদানকারী, ىْ আমার, فَ অতঃপর, يَا হে, سَاكِنَ বাসিন্দা, নিবাসী, বসবাসকারী, অধিবাসী, الصَّحْرَاءِ নির্জন প্রান্তর, জনমানবহীন, عَلَّمْتَ আপনি শিক্ষা দিয়েছেন, نِىْ আমাকে, الْبُكَا কান্না মুবারক, ক্রন্দন মুবারক, وَ আর, ذِكْرُ সম্মানিত যিকর মুবারক, আলোচনা মুবারক, স্মরণ মুবারক, كَ আপনার, اَنْسَانِـىْ আমাকে ভুলিয়ে দিয়েছে, جَمِيْعَ সমস্ত, সকল, الْـمَصَائِب বালা-মুসিবতসমূহ, বিপদ-আপদসমূহ, اِنْ যদি, كُنْتَ আপনি হন, عَنّـِىْ থেকে আমার, فِـى মধ্যে, التُّرَابِ সম্মানিত মাটি মুবারক, সম্মানিত রওযা শরীফ, مَغِيْبًا অদৃশ্য, فَ অতঃপর, مَا
كُنْتَ আপনি নন, مِنْ হতে, থেকে, قَلْبِ সম্মানিত অন্তর মুবারক, সম্মানিত হৃদয় মুবারক, الْـحَزِنِ দুঃখিত, ব্যথিত, বিষণ, শোকাকুল, শোকাতুর غَائِب অদৃশ্য, অনুপস্থিত।
আল মু‘য়াল্লিমাহ, মু‘য়াল্লিমাতু
উম্মাহ, আল মুগীছাহ, মালিকাতুল কায়িনাত, আল মুনীরহ, নি’মাতুল্লাহ, বিনতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত
পবিত্রতা মুবারক
যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اِنَّـمَا
يُرِيْدُ
اللهُ
لِيُذْهِبَ
عَنْكُمُ
الرِّجْسَ
اَهْلَ
الْبَيْتِ
وَيُـطَـهِّـرَكُمْ
تَطْهِيْرًا.
অর্থ: “হে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম!
নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি চান আপনাদের থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা দূর করে
আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করতে। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাদেরকে
পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও
পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)
এ সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
هُمْ
اَهْلُ
بَيْتٍ
طَهَّرَهُمُ
اللهُ
مِنَ السُّوْءِ
وَاخْتَصَّهُمْ
بِرَحْمَتِهٖ.
অর্থ: “উনারা হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস
সালাম। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা ও পাপ থেকে
পূত-পবিত্র রেখেছেন এবং উনার সম্মানিত রহমত মুবারক দ্বারা খাছ করে নিয়েছেন, উনার সম্মানিত খাছ রহমত মুবারক দ্বারা আবৃত করে নিয়েছেন।”
সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো
ইরশাদ মুবারক করেন,
فَاَنَا
وَاَهْلُ
بَيْتِىْ
مُطَهَّرُوْنَ
مِنَ الذُّنُوْبِ.
অর্থ: “আমি এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস
সালাম আমরা সকলেই যুনূব তথা সমস্ত প্রকার ছগীরা-কবীরা এবং যাবতীয় অপছন্দনীয় কাজ
থেকে পূত-পবিত্র।” সুবহানাল্লাহ! (দালায়িলুন নুবুওওয়াহ লিল বায়হাক্বী, শিফা ১/৩২৫, সীরাতে হালবিয়্যাহ ১/৪২, আল মা’রিফাতু ওয়াত তারীখ ১/৪৯৮, খছাইছুল কুবরা ১/৬৬, সুবুলুল
হুদা ওয়ার রশাদ ১/২৩৫, তাফসীরে
দুররে মানছূর লিস সুয়ূত্বী ৬/৬০৬, তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩ ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اَنَّ
النَّبِـىَّ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
كَانَ
يَقُوْلُ
نَـحْنُ
اَهْلُ
بَيْتٍ
طَهَّرَهُمُ
اللهُ
مِنْ شَجَرَةِ
النُّبُوَّةِ
وَمَوْضِعِ
الرِّسَالَـةِ
وَمُـخْتَلِفِ
الْمَلَائِكَةِ
وَبَيْتِ
الرَّحْمَةِ
وَمَعْدِنِ
الْعِلْمِ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ
মুবারক করতেন, আমরা
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান
আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম
উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম
মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর ৬/৬০৬, ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)
ইমামুল মুহাদ্দিছীন মিনাল আউওয়ালিন ইলাল আখিরীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম
খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আলোচ্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে- اَهْلُ
بَيْتٍ
نَـحْنُ (আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস
সালাম) বলেÑ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম
উনাদেরকে উনার নিজের অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আর طَهَّرَهُمُ
اللهُ - মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত
শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে পবিত্র করেছেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থ হলো- মহান
আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম
উনাদেরকে ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস
সালাম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুহতাজ ও উনাদের সম্মানার্থে উনারা সম্মানিত এবং
উনাদের প্রতিই উনারা দায়েমীভাবে রুজু। সুবহানাল্লাহ! ফলে উনারা সমস্ত কিছু থেকেই
বেনিয়াজ। সুবহানাল্লাহ! কাজেই সম্মানিত নুবুওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের ও উনাদের সম্মানিত
খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত
মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক ইত্যাদি বরকতময়
নিয়ামত মুবারক উনাদের প্রতি রুজু হওয়ার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত
শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কোন সুযোগ নেই। অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত
আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সমস্ত কিছু থেকে পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) । সুবহানাল্লাহ!
সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ
আলাইহিমুস সালাম উনাদের কারণেই সম্মানিত নুবুওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, সমস্ত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা, সম্মানিত রহমত মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারকসহ সমস্ত
কিছুই ফযীলতপ্রাপ্ত হয়েছেন, সম্মানিত হয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اَللهُ
الصَّمَدُ .
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)।” সুবহানাল্লাহ!
(সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ইখলাছ শরীফ, সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২)
ইমামুল মুফাসসিরীন মিনাল আউওয়ালিন ইলাল আখিরীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম
খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি যেমন সমস্ত মাখলূকাত
থেকে, সমস্ত কিছু থেকে ছমাদ তথা
বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! ঠিক তেমনিভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একমাত্র যিনি খ¦ালিক্ব
মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত সমস্ত মাখলূকাত থেকে, সমস্ত কিছু থেকে ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)।
সুবহানাল্লাহ! আর ঠিক একইভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ
আলাইহিমুস সালাম উনারা যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত কায়িনাত থেকে, সমস্ত কিছু থেকে ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)।
সুবহানাল্লাহ! উনারা সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের ও উনাদের সম্মানিত
খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত
মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম উনার খনি মুবারক ইত্যাদি সমস্ত কিছু থেকে
পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায
(অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযুর্গী-সম্মান মুবারক এক কথায় উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার
হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন। এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছেন, সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন উনারা।
সুবহানাল্লাহ! তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম
উনাদের সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কত বেমেছাল, তা এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ
ব্যক্তিত্বা মুবারক উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত
পবিত্রতা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। যা
কস্মিনকালেও ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ! মূলত নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যেরূপ পবিত্রতা মুবারক, উনার লখতে জিগার হওয়ার কারণে, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক অর্থাৎ পবিত্র
নূরুল মুজাসসাম (জিস্ম) মুবারক উনার সম্মানিত নূর মুবারক অর্থাৎ পবিত্র গোশত
মুবারক উনার একখানা সম্মানিত টুকরো মুবারক হওয়ার কারণে উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম
উনারও ঠিক একই পবিত্রতা মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ
حَضْرَتْ
عُمَرَ
بْنِ اَبِـىْ
سَلَمَةَ
رَضِىَ
اللهُ
تَعَالـٰى
عَنْهُ
رَبِيْبِ
النَّبِـىِّ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
قَالَ
لَمَّا
نَزَلَتْ
هٰذِهِ
الْاٰيَةُ
عَلَى
النَّبِـىِّ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
اِنَّـمَا
يُرِيْدُ
اللهُ
لِيُذْهِبَ
عَنْكُمُ
الرِّجْسَ
اَهْلَ
الْبَيْتِ
وَيُطَهِّرَكُمْ
تَطْهِيْرًا
فِـىْ
بَيْتِ
حَضْرَتْ
اُمِّ
سَلَمَةَ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
فَدَعَا
النُّوْرَ
الرَّابِعَةَ
سَيِّدَتَنَا
حَضْرَتْ
اَلزَّهْرَاءَ
(حَضْرَتْ
فَاطِمَةَ)
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
وَحَضْرَتْ
حَسَنًا
عَلَيْهِ
السَّلَامُ
وَحَضْرَتْ
حُسَيْنًا
عَلَيْهِ
السَّلَامُ
فَجَلَّلَهُمْ
بِكِسَاءٍ
وَّحَضْرَتْ
عَلِـىٌّ
عَلَيْهِ
السَّلَامُ
خَلْفَ
ظَهْرِهٖ
فَجَلَّلَهٗ
بِكِسَاءٍ
ثُـمَّ
قَالَ
اللّٰهُمَّ
هٰؤُلَاءِ
اَهْلُ
بَيْتِـىْ
فَاَذْهِبْ
عَنْهُمُ
الرِّجْسَ
وَطَهِّرْهُمْ
تَطْهِيْرًا.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার পালক সন্তান হযরত উমর ইবনে আবী সালামা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মুল মু’মিনীন
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ (উম্মু সালামা বিনতে আবী উমায়্যাহ) আলাইহাস সালাম
উনার সম্মানিত ও পবিত্র হুজরা শরীফ-এ অবস্থানকালীন সময়ে যখন নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর এই আয়াত শরীফখানা
নাযিল হলেন, “হে মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি
চান আপনাদের থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা দূর করে আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো
পবিত্র করতে। অর্থাৎ তিনি আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক
করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, উম্মু আবীহা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম
উনাকে, সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে ডেকে একটি কম্বল মুবারক-এ
আবৃত করে নিলেন। আর হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম তিনি তখন নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পশ্চাতে
ছিলেন, উনাকেও কম্বল মুবারক-এ আবৃত
করে নিলেন। এরপর বললেন, আয় বারে
এলাহী, মহান আল্লাহ পাক! উনারা হচ্ছেন
আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আপনি উনাদের
থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা দূর করে দিন এবং উনাদেরকে পবিত্র করার মত পবিত্র
করুন।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, মুসনাদে আহমদ শরীফ, বাইহাক্বী
শরীফ, মুস্তাদরাকে হাকিম শরীফ, ত্ববারনী শরীফ ইত্যাদি)
উপরোক্ত দলীলভিত্তিক বর্ণনা দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ
যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন।
সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, উনার সম্মানিত স্পর্শ মুবারক-এ যা এসেছে, তাও পবিত্র থেকে পবিত্রতম হয়ে গেছে। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার যাঁরা
মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনারা যমীনে তাশরীফ মুবারক
নিয়েছেন, উনাদের সম্পর্কে বলা হয়, উনারা বাদ আছর যমীনে আগমন করেছেন। তিনি সম্মানিত আছর নামাযও
পড়েছেন আবার উনারা তাশরীফ মুবারক নেয়ার পর তিনি সম্মানিত মাগরিব নামাযও আদায়
করেছেন। সুবহানাল্লাহ! সাধারণভাবে মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
অর্থাৎ উনারা যাঁরা মাতা হয়ে থাকেন উনাদেরকে বিষয়টা রুখছত দিয়েছেন। অর্থাৎ মাতাদের
সন্তান আগমনের পরে কিছুকাল কিছু ইবাদত বন্দেগী থেকে রুখছত দেয়া হয় বিশেষ কারণে।
কিন্তু সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম
তিনি সম্মানিত আছর নামায পড়েছেন উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম ও
আলাইহিন্নাস সালাম উনারা সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন এরপর তিনি সম্মানিত
মাগরিব নামাযও আদায় করেছেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ উনাকে ইবাদত বন্দেগী থেকে কোন
প্রকার রুখছত নিতে হয়নি। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ
حَضْرَتْ
اِبْنِ
عَبَّاسٍ
رَضِىَ
اللهُ
تَعَالـٰى
عَنْهُ
قَالَ
قَالَ
رَسُوْلُ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
اِبْنَتِـىْ
حَضْرَتْ
فَاطِمَةُ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
حَوْرَاءُ
اٰدَمِيَّةٌ
لَـمْ
تَـحِضْ
وَلَـمْ
تَطْمِثْ
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে), লখতে জিগার সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা
আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন ‘মহাসম্মানিতা মানবীয় হুর মুবারক’। সুবহানাল্লাহ!
মহিলাদের যে স্বাভাবিক মাজূরতা রয়েছে সেটা উনার নেই।” সুবহানাল্লাহ! (তারীখে বাগদাদ
১২/৩৩১, কানযুল ‘উম্মাল ১২/১০৯, মু‘জামুশ শুয়ূখ ২/২১৬)
উপরোক্ত বর্ণনা দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম
তিনি হচ্ছেন আত ত্বাহিরাহ। সুবহানাল্লাহ! এত পবিত্রা তিনি, সেটা বেমেছাল। সুবহানাল্লাহ!
আঝ ঝাকিইয়্যাহ, আস সাবিক্বাতু
বিল খইরাত, আস সাখিইয়্যাহ, সাইয়্যিদাতুল কাওনাঈন, আশ শাকিরহ, আত্ব ত্বাহিরহ, আত্ব
ত্বইয়্যিবাহ, আত ত্ববীবাহ, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম সম্মানিত ছূরত
মুবারক
বিদ্ব‘য়াতুম মির রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা
আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারিণী। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত
আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনারা প্রত্যেকেই প্রত্যেকের মাক্বাম মুবারক-এ অনন্যা।” সুবহানাল্লাহ!
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন
নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত
কুবরা আলাইহাস সালাম উনার হুবহু নকশা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি
‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু
নিসায়ি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম
তিনি ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার হুবহু নকশা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন
নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন
নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের নিসবত মুবারক ছিলো উভয় দিক
থেকে। অর্থাৎ উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ
উনাদের উভয়ের থেকে সমানভাবে সম্মানিত নিসবত মুবারক পেয়েছিলেন।” সুবহানাল্লাহ!
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা প্রত্যেকেই
সম্মানিত জামালী ত্ববী‘য়ত মুবারক উনার অধিকারী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! হযরত বানাতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানিত জামালী
ত্ববী‘য়ত মুবারক উনার অধিকারিণী ছিলেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস
সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার প্রায় অনুরূপ সম্মানিত জামালী ত্ববী‘য়ত মুবারক
উনার অধিকারিণী ছিলেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি।
সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার
সম্মানিত ত্ববীয়ত মুবারক উনার মধ্যে সম্মানিত জামালী ও সম্মানিত জালালী উভয় প্রকার
শান মুবারক মিশ্রিত ছিলেন, তবে
সম্মানিত জালালী শান মুবারক উনার কিছুটা প্রাধান্য ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! আর
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ত্ববীয়ত মুবারক
উনার মধ্যে সম্মানিত জামালী ও সম্মানিত জালালী উভয় প্রকার শান মুবারক মিশ্রিত
ছিলেন, তবে সম্মানিত জালালী ত্ববীয়ত
মুবারক উনার শান মুবারক বেশি প্রকাশ পেতেন।” সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ
اُمِّ
الْمُؤْمِنِيْنَ
الثَّالِثَةِ
سَيِّدَتِنَا
حَضْرَتْ
اَلصِّدِّيْقَةِ
(حَضْرَتْ
عَائِشَةَ)
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
قَالَتْ
مَا رَاَيْتُ
اَحَدًا
اَشْبَهَ
سَـمْتًا
وَّدَلًّا
وَّهَدْيًا
بِرَسُوْلِ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
مِنْ حَضْرَتْ
فَاطِمَةَ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
بِنْتِ
رَسُوْلِ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
فِـىْ
قِيَامِهَا
وَقُعُوْدِهَا.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস
সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
সম্মানিত চাল-চলন মুবারক, আচার-ব্যবহার
মুবারক, কথা-বার্তা মুবারক, স্বভাব-চরিত্র মুবারক, কাজ-কর্ম মুবারক, উঠা-বসা মুবারক-এ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম
উনার চেয়ে অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ আর কাউকে আমি দেখিনি।” সুবহানাল্লাহ!
অপর বর্ণায় রয়েছে-
كَلَامًا
وَّحَدِيْثًا.
অর্থাৎ “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার সম্মানিত কথাবার্তা মুবারক-এ, বর্ণনা ভঙ্গি মুবারক-এ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস
সালাম তিনি ছিলেন অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, আবূ দাউদ শরীফ, নাসায়ী শরীফ, মুস্তাদরকে
হাকিম, বাইহাক্বী, ইবনে সা’দ, মিশকাত শরীফ ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ
اُمِّ
الْمُؤْمِنِيْنَ
الثَّالِثَةِ
سَيِّدَتِنَا
حَضْرَتْ
اَلصِّدِّيْقَةِ
(حَضْرَتْ
عَائِشَةَ)
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
قَالَتْ
اِنَّا
كُنَّا
اَزْوَاجَ
النَّبِـىِّ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
عِنْدَهٗ
جَمِيْعًا
لَّـمْ
تُغَادِرْ
مِنَّا
وَاحِدَةٌ
فَاَقْبَلَتْ
اَلنُّوْرُ
الرَّابِعَةُ
سَيِّدَتُنَا
حَضْرَتْ
اَلزَّهْرَاءُ
)حَضْرَتْ
فَاطِمَةُ(
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
تَـمْشِىْ
لَا وَاللهِ
مَا تَـخْفٰى
مِشْيَتُهَا
مِنْ مِّشْيَةِ
رَسُوْلِ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস
সালাম তিনি বলেন, একদা আমরা হযরত
উম্মাহাতুল মু‘মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা প্রত্যেকেই নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত
মুবারক-এ উপস্থিত ছিলাম। আমাদের মধ্য হতে কেউ অনুপস্থিত ছিলেন না। এমতাবস্থায়
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রাবি‘য়হ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি
সেখানে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিলেন। যিনি খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! উনার চলার ভঙ্গি মুবারক ও নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চলার ভঙ্গি মুবারক
উনার মধ্যে বিন্দু পরিমাণও পার্থক্য ছিলো না।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, ফাযায়িলুছ ছাহাবা লিন নাসায়ী, মুসনাদে ত্বায়ালসী, ইবনে
সা’দ, দুলাবী, হিলইয়াতুল আউলিয়া, সিয়ারু আ’লামিন নুবালা)
আল মু‘য়াল্লিমাহ, মু‘য়াল্লিমাতু
উম্মাহ, মুক্বীমাতুস সুন্নাহ, আল মুরশিদাহ, আল ওয়াসীলাহ, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম
উনার সম্মানিত ইলম মুবারক
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ
যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত তা’লীম মুবারক দিয়েছেন স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক
তিনি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা
কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা। সুবহানাল্লাহ! তাহলে তিনি কত বেমেছাল
সম্মানিত ইলম মুবারক উনার অধিকারিণী ছিলেন, সেটা জিন-ইনসান ও তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার
বাইরে। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اِنَّـمَا
اَنَا
قَاسِمٌ
وَّاللهُ
يُعْطِىْ.
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি হচ্ছেন দাতা আর আমি হচ্ছি বণ্টনকারী।”
সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ ১/২৭, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
মূলত, মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস
সালাম উনাকে সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত প্রকার সম্মানিত ইলম মুবারক
হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! প্রকৃতপক্ষে উনার সম্মানার্থেই সমস্ত
জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী
সম্মানিত ইলম, আমল, ইখলাছ, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারকসহ সমস্ত প্রকার সম্মানিত নিয়ামত মুবারক লাভ করেছেন, করছেন এবং অনন্তকাল যাবৎ লাভ করতেই থাকবেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ
حَضْرَتْ
عَلِىٍّ
كَرَّمَ
اللهُ
وَجْهَهٗ
عَلَيْهِ
السَّلَامُ
اَنَّهٗ
كَانَ
عِنْدَ
رَسُوْلِ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
فَقَالَ
اَىُّ
شَيْءٍ
خَيْرٌ
لِّلْمَرْاَةِ
فَسَكَتُوْا
فَلَمَّا
رَجَعْتُ
قُلْتُ
لِسَيِّدَةِ
نِسَاءِ
اَهْلِ
الْـجَنَّةِ
اَلنُّوْرِ
الرَّابِعَةِ
سَيِّدَتِنَا
حَضْرَتْ
اَلزَّهْرَاءِ
)حَضْرَتْ
فَاطِمَةَ)
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
اَىُّ
شَىْءٍ
خَيْرٌ
لِّلنِّسَاءِ
اَوْ لِلْمَرْاَةِ
قَالَتْ
اَلَّا
يَرَاهُنَّ
الرِّجَالُ
وَلَا
يَرَوْنَـهُمْ
فَذَكَرْتُ
ذٰلِكَ
لِلنَّبِـىِّ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
فَقَالَ
مِـمَّنْ
قُلْتُ
مِنْ سَيِّدَةِ
نِسَاءِ
اَهْلِ
الْـجَنَّةِ
اَلنُّوْرِ
الرَّابِعَةِ
سَيِّدَتِنَا
حَضْرَتْ
اَلزَّهْرَاءِ
(حَضْرَتْ
فَاطِمَةَ)
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
فَقَالَ
رَسُوْلُ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
حَضْرَتْ
فَاطِمَةُ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
بِضْعَةٌ
مِّـنِّـىْ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে
বর্ণিত। একদিন তিনি (এবং অনেক বিশিষ্ট ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম
উনারা) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত
খিদমত মুবারক-এ (সম্মানিত দরবারে নববী শরীফ-এ) বসে ছিলেন। তখন নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (সবাইকে উদ্দেশ্য করে)
জিজ্ঞাসা মুবারক করলেন- মেয়েদের জন্য কোন আমলটা সবচেয়ে উত্তম? সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম
তিনি বলেন, সকলেই চুপ
থাকলেন। আমি (আস্তে করে পিছন থেকে উঠে) সম্মানিত ও পবিত্র হুজরা শরীফ-এ এসে
সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে জিজ্ঞাসা
করলাম- মেয়েদের জন্য কোন আমলটা সবচাইতে উত্তম? তিনি বললেন, মেয়েদের জন্য সবচাইতে উত্তম আমল হচ্ছে, কোন পুরুষ সে মহিলাকে দেখবে না এবং সে মহিলা কোন পুরুষকে
দেখবে না। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম
তিনি বলেন, আমি সেখান থেকে
এটা শুনে সরাসরি যেয়ে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মেয়েদের জন্য শ্রেষ্ঠ আমল
হচ্ছে তারা কোন পুরুষকে দেখবে না এবং তাদেরকেও কোন পুরুষ দেখবে না। (এটা শুনে)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খ¦াতামুন
নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন-
আপনি কার কাছ থেকে জেনে এটা বললেন? তিনি বলেন, আমি
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার থেকে জেনে এটা
বলেছি। সুবহানাল্লাহ! সেটা শুনে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (খুশি মুবারক প্রকাশ করলেন) এবং বললেন- সাইয়্যিদাতু
নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি তো আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
নূর মুবারক অর্থাৎ পবিত্র নূরুল মুজাসসাম (জিস্ম) মুবারক উনার সম্মানিত নূর মুবারক
অর্থাৎ পবিত্র গোশত মুবারক উনার একখানা সম্মানিত টুকরো মুবারক, আমার মহাসম্মানিত লখতে জিগার মুবারক (সেজন্য তিনি হাক্বীক্বী
বিষয়টা বলে দিয়েছেন, জানিয়ে
দিয়েছেন)।” সুবহানাল্লাহ! (মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ ২০৮ এবং ২০৯তম সংখ্যা)
তাহলে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত
ইলম মুবারক যে কত বেমেছাল সে বিষয়টা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা-কল্পনার উর্ধ্বে তা আর বলার
অপেক্ষাই রাখেনা। সুবহানাল্লাহ!
নূরুল কায়িনাত, আন নূরুল
মুত্বহ্হারহ, নূরুল্লাহ, নূরুল উমাম, আন নূরুল মুকাররামহ, উম্মু
আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর
রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার
সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত
আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশ
পাওয়ার পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি তা সর্বপ্রথম উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম
উনার নিকট প্রকাশ করেন। উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস
সালাম তিনি পুরুষ-মহিলা সকলের পূর্বে সর্বপ্রথম সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন
এবং সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সাথে সাথে উনার
মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিন্নাস সালাম বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং বিনতু রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা
আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারাও সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন।
সুবহানাল্লাহ! অতঃপর সামান্য সময়ের ব্যবধানে খাইরু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনিও সংবাদ
মুবারক পাওয়ার সাথে সাথে এসে সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
উনারাই হচ্ছেন পুরুষ-মহিলা সকলের মাঝে সর্বপ্রথম সম্মানিত ঈমান মুবারক
প্রকাশকারিণী। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
اَوَّلُ
مَنْ اَسْلَمَ
وَاٰمَنَ
فِـىْ
خَلْقِ
اللهِ
عَزَّ
وَجَلَّ
لَـمْ
يَتَقَدَّمْهَا
رَجُلٌ
وَّلَا
امْرَاَةٌ
اُمُّ
الْـمُؤْمِنِيْنَ
الْاُوْلـٰى
سَيِّدَتُنَا
حَضْرَتْ
اَلْكُبْرٰى
(حَضْرَتْ
خَدِيـْجَةُ)
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
ثُـمَّ
اَسْلَمَ
وَاٰمَنَ
بِنْتٌ
مِّنْۢ
بَنَاتِ
رَسُوْلِ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
سَيِّدَتُنَا
حَضْرَتْ
اَلنُّوْرُ
الثَّانِيَةُ
عَلَيْها
السَّلَامُ
وَاَسْلَمَ
وَاٰمَنَ
بِنْتٌ
مِّنْۢ
بَنَاتِ
رَسُوْلِ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
سَيِّدَتُنَا
حَضْرَتْ
اَلنُّوْرُ
الثَّالِثَةُ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
وَاَسْلَمَ
وَاٰمَنَ
بِنْتٌ
مِّنْۢ
بَنَاتِ
رَسُوْلِ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
اَلنُّوْرُ
الرَّابِعَةُ
سَيِّدَتُنَا
حَضْرَتْ
اَلزَّهْرَاءُ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
ثُـمَّ
اَسْلَمَ
وَاٰمَنَ
بِنْتٌ
مِّنْۢ
بَنَاتِ
رَسُوْلِ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
سَيِّدَتُنَا
حَضْرَتْ
اَلنُّوْرُ
الْاُوْلـٰى
عَلَيْهَا
السَّلَامُ .
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনিই
মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টি জগতে সর্বপ্রথম সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন ও
সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার পূর্বে কোন পুরুষ মহিলা
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেনি এবং সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেনি। অতঃপর
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন এবং সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন।
সুবহানাল্লাহ! তারপর খাইরু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন এবং
সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াজ
শরীফ থেকে সংকলিত)
তাই মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সায়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ
হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “উনারাই যেহেতু পুরুষ-মহিলা সকলের মাঝে সর্বপ্রথম সম্মানিত
ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন। কাজেই, ক্বিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ ঈমান আনবেন এবং যত নেক আমল করবেন, সমস্ত ফযীলত উনাদের সম্মানিত আমল নামা মুবারক-এ যেয়ে
পৌঁছবে। যদিও উনারা কোন কিছুর মুহতাজ নন, তারপরেও সাধারণভাবে উনাদের সম্মানিত ফযীলত মুবারক উনার
বিষয়টা বুঝতে সহজ হয়।” সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
পক্ষ থেকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার জন্য
সম্মানিত বিশেষ দো‘আ মুবারক
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَن
حَضْرَتْ
بُرَيْدَةَ
رَضِىَ
اللهُ
تَعَالى
عَنْهُ
قَالَ
فَلَمَّا
كَانَ
لَيْلَةُ
الْبِنَاءِ
قَالَ
يَا عَلِيُّ
لاَ تُحْدِثْ
شَيْئًا
حَتَّى
تَلْقَانِي
فَدَعَا
النَّبِيُّ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
بِـمَاءٍ
فَتَوَضَّأَ
مِنْهُ
ثُـمَّ
أَفْرَغَهُ
عَلَى
عَلِيٍّ
فَقَالَ
اللَّهُمَّ
بَارِكْ
فِيهِمَا
وَبَارِكْ
عَلَيْهِمَا
وَبَارِكْ
لَهُمَا
فِي شِبْلِهِمَا.
وفى رواية
وَبَارِكْ
فِي نَسْلِهِمَا
অর্থ:“হযরত বুরায়দাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার
এবং সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের
‘সম্মানিত লাইলাতুল বিনা’ শরীফ’ (অর্থাৎ উনাদের সম্মানিত নিসবতে আ’যীম শরীফ
অনুষ্ঠিত হওয়ার পর সম্মানিত প্রথম রাত্রি মুবারক-এ) সাইয়্যিদুনা হযরত
কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন, হে হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম! আপনি আমার
সম্মানিত আদেশ মুবারক ব্যতীত কোনো কাজ করবেন না। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পানি মুবারক তলব করেন। তারপর তা
দিয়ে সম্মানিত ওযু মুবারক করেন। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ
আলাইহিস সালাম উনার উপর পানি ঢেলে দেন। তারপর সম্মানিত দু’য়া মুবারক করেন,
اللَّهُمَّ
بَارِكْ
فِيهِمَا
وَبَارِكْ
عَلَيْهِمَا
وَبَارِكْ
لَهُمَا
فِي شِبْلِهِمَا
আয় বারে ইলাহী! আপনি উনাদের মধ্যে বরকত দান করুন এবং উনাদের উভয়ের জন্য উনাদের
মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে বরকত দান
করুন।
অন্য আরেকটি বর্ণনায় রয়েছে,
وَبَارِكْ
فِي نَسْلِهِمَا
উনাদের উভয়ের জন্য উনাদের বংশধর আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের
মধ্যে বরকত দান করুন।”(মুসনাদুল বাযযার-১০/৩৩৯, আস সুনানুল কুবরা-৯/১০৬, আল মু’জামুল কাবীর-১/৪৯৫, মুসনাদুর রূয়ানী-১/১৪, আত ত্ববাক্বাতুল কুবরা-৮/২১, আস সীরতুল হালবিয়্যাহ-২/৪৭৩, যাখাইরুল ‘উক্ববা-১/৩৩, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ-১১/৪৩ ইত্যাদি।)
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ
যাহরা আলাইহাস সালামউনার কর্তৃক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক
মহান আল্লাহ পাক তিনি বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা
আলাইহাস সালাম উনাকে সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য মু‘য়াল্লিমাহ হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
তিনি নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়ে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম
রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকেসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীকে শিক্ষা দিয়েছেন যে, কিভাবে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিতে হয়। সুবহানাল্লাহ! যখন মুশরিকরা
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে তাকলীফ
(কষ্ট) দিতো এবং উনার উপর যুলুম নির্যাতন করতো, তখন একজন মা তার সন্তানকে যেভাবে স্নেহভরে আদর-যতœ করে থাকে, ঠিক সেইভাবে
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা
আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিতেন। সুবহানাল্লাহ! এই জন্য
উনার একখানা সম্মানিত লক্বব মুবারক হচ্ছেন “উম্মু আবীহা”। সুবহানাল্লাহ! এই
সম্মানিত লক্বব মুবারক উনার অর্থ মুবারক হচ্ছেন “তিনি উনার স্বীয় পিতা নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা
মাতা আলাইহাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ!
তিনি যে কত বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, এই বিষয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে
ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ
حَضْرَتْ
عَبْدِ
اللهِ
بْنِ مَسْعُوْدٍ
رَضِىَ
اللهُ
تَعَالـٰى
عَنْهُ
قَالَ
بَيْنَمَا
رَسُوْلُ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
يُصَلِّىْ
عِنْدَ
الْكَعْبَةِ
وَجَمَعَ
قُرَيْشٌ
فِـىْ
مَـجَالِسِهِمْ
اِذْ قَالَ
قَائِلٌ
اَيُّكُمْ
يَقُوْمُ
اِلـٰى
جَزُوْرِ
اٰلِ فُلَانٍ
فَيَعْمَدُ
اِلـٰى
فَرْثِهَا
وَدَمِهَا
وَسَلَاهَا
ثُـمَّ
يـُمْهِلُهٗ
حَتّٰى
اِذَا
سَجَدَ
وَضَعَهٗ
بَيْنَ
كَتِفَيْهِ
فَانْبَعَثَ
اَشْقَاهُمْ
فَلَمّاَ
سَجَدَ
وَضَعَهٗ
بَيْنَ
كَتِفَيْهِ
وَثَبَتَ
النَّبِـىُّ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
سَاجِدًا
فَضَحِكُوْا
حَتّٰى
مَالَ
بَعْضُهُمْ
عَلـٰى
بَعْضٍ
مِّنَ
الضِّحْكِ
فَانْطَلَقَ
مُنْطَلِقٌ
اِلـٰى
سَيِّدَةِ
النِّسَاءِ
اَلنُّوْرِ
الرَّابِعَةِ
سَيِّدَتِنَا
حَضْرَتْ
اَلزَّهْرَاءِ
(حَضْرَتْ
فَاطِمَةَ)
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
فَاَقْبَلَتْ
تَسْعٰى
وَثَبَتَ
النَّبِىُّ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
سَاجِدًا
حَتّٰى
اَلْقَتْهُ
عَنْهُ
وَاَقْبَلَتْ
عَلَيْهِمْ
تَسُبُّهُمْ
وَدَعَتْ
عَلـٰى
مَنْ صَنَعَ
ذٰلِكَ
فَلَمَّا
قَضٰى
رَسُوْلُ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
اَلصَّلـٰوةَ
رَفَعَ
صَوْتَهٗ
ثُـمَّ
دَعَا
عَلَيْهِمْ
فَقَالَ
اَللّٰهُمَّ
عَلَيْكَ
بِقُرَيْشٍ
ثَلَاثًا
وَّكَانَ
اِذَا
دَعَا
دَعَا
ثَلَاثًا
وَّاِذَا
سَاَلَ
سَاَلَ
ثَلَاثًا
ثُـمَّ
سَـمّٰى
اَللّٰهُمَّ
عَلَيْكَ
بِاَبِىْ
جَهْلٍ
وَعَلَيْكَ
بِعُتْبَةَ
بْنِ رَبِيْعَةَ
وَشَيْبَةَ
بْنِ رَبِيْعَةَ
وَالْوَلِيْدِ
بْنِ عُتْبَةَ
وَاُمَيَّةَ
بْنِ خَلْفٍ
وَّعُقْبَةَ
بْنِ اَبِـىْ
مُعَيْطٍ
وَّعُمَارَةَ
بْنِ الْوَلِيْدِ.
قَالَ
حَضْرَتْ
عَبْدُ
اللهِ
رَضِىَ
اللهُ
تَعَالـٰى
عَنْهُ
فَوَاللهِ
لَقَدْ
رَاَيْتُهُمْ
صَرْعٰى
يَوْمَ
بَدْرٍ
ثُـمَّ
سُحِبُوْا
اِلَـى
الْقَلِيْبِ
قَلِيْبِ
بَدْرٍ
ثُـمَّ
قَالَ
رَسُوْلُ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
وَاُتْـبِــعَ
اَصْحَابُ
الْقَلِيْبِ
لَعْنَةً.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে
বর্ণিত তিনি বলেন, একবার নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার পাশে সম্মানিত ছলাত (নামায) মুবারক আদায় করছিলেন। এই
সময় কুরাইশদের একদল লোক সেখানে বসা ছিল। তখন তাদের মধ্য থেকে একটা (সর্ব নিকৃষ্ট
লোক আবূ জাহল) বললো, তোমাদের মধ্যে
এমন কে আছে, যে অমুক গোত্রের
উটের নাড়িভুঁড়ি এনে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করবে, অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ইঙ্গিত করে বললো, ঐ ব্যক্তি তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন সম্মানিত সিজদা মুবারক-এ যাবেন তখন তা
উনার সম্মানিত দুই কাঁধ মুবারক উনাদের মাঝখানে রেখে দিবে? নাঊযুবিল্লাহ! তখন তাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বড় পাপিষ্ঠ
লোকটি (উক্ববা) উঠে গেল (এবং তা নিয়ে এসে অপেক্ষা করতে থাকলো)। অতঃপর যখন নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত
সিজদা মুবারক-এ গেলেন তখন সে তা (উটের নাড়িভুঁড়ি) উনার সম্মানিত দুই কাঁধ মুবারক
উনাদের মাঝখানে রেখে দিলো। নাউযুবিল্লাহ! এমতাবস্থায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত সিজদা মুবারক অবস্থায়
রইলেন। এই অবস্থা দেখে সেই পাপিষ্ঠ লোকগুলো খুব হাসাহাসি করতে লাগলো, এমন কি হাসতে হাসতে একে অন্যের উপর লুটিয়ে পড়তে লাগলো।
নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! এমন সময় এক ব্যক্তি উম্মু আবীহা
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে গিয়ে সংবাদ দিলেন,
فَاَقْبَلَتْ
تَسْعٰى
وَثَبَتَ
النَّبِىُّ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
سَاجِدًا
حَتّٰى
اَلْقَتْهُ
عَنْهُ
وَاَقْبَلَتْ
عَلَيْهِمْ
تَسُبُّهُمْ
وَدَعَتْ
عَلـٰى
مَنْ صَنَعَ
ذٰلِكَ.
তিনি শোনামাত্র খুব দ্রুত ছুটে আসেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তখনও সম্মানিত সিজদা মুবারক অবস্থায় ছিলেন। উম্মু আবীহা
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর থেকে উটের
নাড়িভুঁড়ি সরিয়ে দেন। অতঃপর কাফিরদের দিকে মুখ করে তাদের ধ্বংস কামনা করেন এবং যে
ব্যক্তি এই সর্বনিকৃষ্ট কাজটি করেছে তার বিরুদ্ধে বদদু‘য়া মুবারক করেন।
সুবহানাল্লাহ!
অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি সম্মানিত নামায মুবারক শেষ করে উচ্চ আওয়ায মুবারক-এ তাদের বিরুদ্ধে বদদু‘য়া
মুবারক করেন। তিনি বলেন, আয় বারে
এলাহী মহান আল্লাহ পাক! আপনি কুরাইশদেরকে ধ্বংস করে দিন। এরূপ তিনবার বলেন। আর
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একখানা
বিশেষ সম্মানিত সুন্নত মুবারক ছিলেন যে, তিনি যখন কোনো বিষয়ে দু‘য়া মুবারক বা বদদু‘য়া মুবারক করতেন অথবা মহান আল্লাহ
পাক উনার নিকট কোনো বিষয়ে আরজি মুবারক পেশ করতেন, তখন বাক্য মুবারকগুলো তিনবার উচ্চারণ করতেন। সুবহানাল্লাহ!
এরপর তিনি নাম ধরে ধরে বদদু‘য়া মুবারক করেন, আয় বারে এলাহী মহান আল্লাহ পাক! আপনি আবু জাহিলকে ধ্বংস করে
দিন এবং উতবা ইবনে রবী‘য়াহ, শায়বা ইবনে রবী‘য়াহ, ওয়ালীদ
ইবনে উতবা, উমাইয়া ইবনে
খালফ, উক্ববা ইবনে আবী মুআইত এবং
উমারাহ ইবনুল ওয়ালীদকে ধ্বংস করে দিন। হযরত ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু
তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক
উনার কসম! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি যাদের নাম উচ্চারণ করে বদদু‘য়া মুবারক করেছিলেন, আমি তাদের প্রত্যেককে সম্মানিত বদর জিহাদ উনার দিন নিহত
অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছি। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর তাদেরকে টেনে হিঁচড়ে বদরের একটি
অনাবাদ (তথা ময়লা-আবর্জনাযুক্ত) কূপের মধ্যে নিক্ষেপ করা হয়েছে। এরপর নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক
করেন, এই কূপের অধিবাসীদের উপর
অন্ততঃকালের জন্য লা’নত বর্ষিত হোক।” (আমীন!) (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আল আহকামুশ শর‘ইয়্যাহ ২/৩০৭, শরহুস সুন্নাহ ১৩/৩৩০)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা
আলাইহাস সালাম তিনি কতো বেমেছালভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক
দিয়েছেন, যেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে।
সুবহানাল্লাহ!
আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক প্রকাশ পাওয়ার সপ্তম (৭ম)
বছর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি শি‘বে আবী ত্বালিবে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। তিনি
সেখানে তিন বছর সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। শি‘বে আবী ত্বালিবে কাফির-মুশরিকরা
খাবার পৌঁছাতে বাধা সৃষ্টি করে। তাদের বাধার কারণে সেখানে সাধারণত খাবার পৌঁছতো
না বিধায় হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের এরূপ অবস্থা
হয়েছিলো যে, উনারা খাদ্য
হিসেবে গাছের লতা-পাতা, ছাল-বাকল
পর্যন্ত খেয়েছিলেন। এমনকি উনারা চামড়ার না’লাঈন শরীফ (জুতা মুবারক) পানিতে
সিদ্ধ করে চিবিয়েছেন। গাছের লতা-পাতা, ছাল-বাকল খাবার হিসেবে গ্রহণ করার ফলে উনাদের ইস্তিঞ্জা মুবারক বকরীর লেদের মত
হয়ে গিয়েছিলো। ক্ষুধার্ত শিশু উনাদের কান্না মুবারক-এ আশে-পাশের লোকেরা রাতে
ঘুমাতে পারতো না। তারপরও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে দূরে
সড়ে যাননি। কি অপূর্ব আত্মত্যাগ! সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উম্মুল
মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক
ছিলেন অনেক বেশি। তিনি কখনও কখনও সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করতেন
(অসুস্থতা মুবারক গ্রহণ করতেন) আবার কখনও কখনও সম্মানিত ছিহ্হাতী শান মুবারক
প্রকাশ করতেন (সুস্থতা মুবারক গ্রহণ করতেন)। সুবহানাল্লাহ! সেই সময় খাইরু বানাতি
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা
আলাইহাস সালাম তিনি, সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর
রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা প্রত্যেকেই নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত
খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ! যা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা-কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
মূলত, উনাদের কাছ থেকেই হযরত
ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা শিক্ষা মুবারক গ্রহণ করেছেন কিভাবে
সমস্ত কিছু ত্যাগ করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার মাঝে ফানা-বাক্বা হতে হয়, উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিতে হয়। সুবহানাল্লাহ!
তৃতীয় হিজরী সনে সম্মানিত উহুদ জিহাদ মুবারক সংঘটিত হয়। এই সম্মানিত জিহাদ
মুবারক-এ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার একখানা সম্মানিত দান্দান মুবারক শহীদ হন। ‘মুসনাদে আহমদ শরীফ’ উনার মধ্যে
বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ
أَنَسٍ
أَنَّ
رَسُولَ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
كسرت رباعيته
وشجّ في
وجهه حَتَّى
سَالَ
الدَّمُ
عَلَى
وَجْهِه.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত, সম্মানিত উহুদ যুদ্ধ মুবারক-এ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
নূরুল্লাহ (দান্দান) মুবারক শহীদ হন, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুর রহমত মুবারক (মুখম-ল মুবারক) জখম হন এবং
উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুর রহমত মুবারক (মুখম-ল মুবারক) হতে মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র নূরুন নাজাত মুবারক (রক্ত মুবারক) প্রবাহিত হন।” (মুসনাদে আহমদ শরীফ)
তখন উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার
আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ! এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার
মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ
حَضْرَتْ
سَهْلَ
بْنَ سَعْدٍ
رَضِىَ
اللهُ
تَعَالى
عَنْهُ
وَهُوَ
يُسْأَلُ
عَنْ جُرْحِ
رَسُوْلِ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
فَقَالَ
أَمَا
وَاللَّهِ
إِنِّي
لَاَعْرِفُ
مَنْ كَانَ
يَغْسِلُ
جُرْحَ
رَسُوْلِ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
وَمَنْ
كَانَ
يَسْكُبُ
الْـمَاءَ
وَبِـمَا
دُووِىَ
قَالَ
كَانَتْ
فَاطِمَةُ
عَلَيْهَا
السَّلاَمُ
بِنْتُ
رَسُولِ
اللَّهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
تَغْسِلُهُ
وَعَلِيُّ
بْنُ أَبِي
طَالِبٍ
يَسْكُبُ
المَاءَ
بِالْمِجَنِّ
فَلَمَّا
رَأَتْ
فَاطِمَةُ
أَنَّ
المَاءَ
لاَ يَزِيدُ
الدَّمَ
إِلَّا
كَثْرَةً
أَخَذَتْ
قِطْعَةً
مِنْ حَصِيرٍ
فَأَحْرَقَتْهَا
وَأَلْصَقَتْهَا
فَاسْتَمْسَكَ
الدَّمُ
وَكُسِرَتْ
رَبَاعِيَتُهُ
يَوْمَئِذٍ
وَجُرِحَ
وَجْهُهُ
وَكُسِرَتِ
البَيْضَةُ
عَلَى
رَأْسِهِ.
অর্থ: “হযরত সাহল ইবনে সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত।
উনাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
সম্মানিত ‘জুরহী শান মুবারক’ প্রকাশ (আহত হওয়া) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো।
জবাবে তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক
উনার কসম! (সম্মানিত উহুদ প্রান্তরে) কে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত জখম মুবারক ধুয়েছিলেন এবং কে পানি
ঢেলে ছিলেন উনাদেরকে আমি অবশ্যই অবশ্যই চিনি। আর কি দ্বারা উনাকে চিকিৎসা মুবারক করা হয়েছিলো, সে সম্পর্কেও আমি ভালোভাবে অবগত রয়েছি। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার লখতে জিগার, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত জখম মুবারক ধুয়ে
দিচ্ছিলেন এবং সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি ঢালে
করে পানি এনে ঢালছিলেন। সুবহানাল্লাহ! উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম
তিনি যখন দেখলেন যে, সম্মানিত নূরুন
নাজাত মুবারক (রক্ত মুবারক) ঝরা বন্ধ হচ্ছেন না; বরং তা বেড়েই চলছেন, তখন তিনি এক টুকরা চাটাই নিয়ে তা পুড়িয়ে তার ছাই সম্মানিত
জখম মুবারক-এ লাগিয়ে দিলেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর সম্মানিত নূরুন নাজাত মুবারক
(রক্ত মুবারক) ঝরা বন্ধ হয়ে যান। সুবহানাল্লাহ! সেদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মুখের ডান দিকের একখানা
সম্মানিত দান্দান মুবারক শহীদ হয়েছিলেন, সম্মানিত নূরুর রহমত মুবারক (মুখম-ল মুবারক) জখম হয়েছিলেন। সম্মানিত
শিরস্ত্রাণ মুবারক ভেঙ্গে সম্মানিত সির বা মাথা মুবারক-এ ঢুকে গিয়েছিলো।” (বুখারী
শরীফ, সুননানে সা‘ঈদ ইবনে মানছূর, মুস্তাখরজে আবী আওয়ানাহ, বিদয়াহ-নিহায়াহ ইত্যাদি)
সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত হুজরা
শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার সময় উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম
উনার বেমেছাল সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান
মুবারক উনাদের বহিঃপ্রকাশ
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ সম্পন্ন হওয়ার পর
সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত হুজরা
শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার সময় উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম
উনার বেমেছাল সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান
মুবারক উনাদের বহিঃপ্রকাশ মুবারক ঘটে। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ
حَضْرَتْ
اِبْنِ
عَبَّاسٍ
رَضِىَ
اللهُ
تَعَالى
عَنْهُ
قَالَ
كَانَتِ
اللَّيْلَة
التى زفت
فيها فاطمة
إلى على
عليهما
السلام
كان النبي
صلى الله
عليه وسلم
أمامها
وجبريل
عن يمينها
وميكائيل
عن يسارها
وسبعون
الف ملك
من خلفها
يسبحون
الله ويقدسونه
حتى طلع
الفجر.
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস
রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যেই সম্মানিত রাত্রি মুবারক-এ উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম
উনাকে সুসজ্জিত করে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার
সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো, তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছিলেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর
রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সামনে। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন
নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার ডান দিক মুবারক-এ ছিলেন হযরত জিবরীল
আলাইহিস সালাম তিনি এবং বাম দিক মুবারক-এ ছিলেন হযরত মীকাঈল আলাইহিস সালাম তিনি।
সুবহানাল্লাহ! আর সত্তর (৭০) হাজার হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা ছিলেন
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার পিছনে।
সুবহানাল্লাহ! সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা সকলেই ফজর উদিত হওয়া
পর্যন্ত মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত তাসবীহ মুবারক পাঠ করছিলেন এবং উনার
সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক বর্ণনা করছিলেন।” সুবহানাল্লাহ! (যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ
শরীফ ১/৩২)
উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমাস
সালাম উনাদের সম্পর্কে সম্মানিত সুসংবাদ মুবারক
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عن
على كرم
الله وجهه
قال قال
رسول الله
صلى الله
عليه وسلم
أتانى
ملك فقال
يا محمد
إن الله
تعالى
يقول لك
إنى قد
امرت شجرة
طوبى أن
تحمل الدر
والياقوت
والمرجان
وان تنثره
على من
قضى عقد
نكاح فاطمة
من الملائكة
والحور
العين
وقد سر
بذلك سائر
أهل السموات
وانه سيولد
بينهما
ولدان
سيدان
في الدينا
وسيسودان
على كهول
أهل الجنة
وشبابها
وقد تزين
أهل الجنة
لذلك فاقرر
عينا يا
محمد فانك
سيد الاولين
والآخرين
صلى الله
عليه وسلم.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার নিকট একজন সম্মানিত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি
এসেছেন। তারপর তিনি আমাকে বলেছেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নিশ্চয়ই যিনি খ¦ালিক্ব
মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে বলেছেন যে, নিশ্চয়ই আমি (মহান আল্লাহ পাক) সম্মানিত তূবা বৃক্ষকে
সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিয়েছি মুক্তা, ইয়াকূত ও মারজান বহন করার জন্য এবং হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম
উনাদেরওচিত্তাকর্ষী নয়ন বিশিষ্টাহুর উনাদেরমধ্য থেকে যাঁরা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন
নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান
নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন উনাদের উপর ছিটায়। সুবহানাল্লাহ! আর
এই কারণে সমস্ত আসমানবাসী খুশি মুবারক প্রকাশ করেছে। সুবহানাল্লাহ! আর অতিশীঘ্রই (
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদুনা
হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার অর্থাৎ) উনাদের উভয়ের মাধ্যমে
উনাদের দুই মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমাস সালাম উনারা মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী
শান মুবারক প্রকাশ করবেন। সুবহানাল্লাহ! উনারা জগতবাসী সকলের সাইয়্যিদ।
সুবহানাল্লাহ! আর উনারা দু’জন সম্মানিত জান্নাতবাসী সকল পৌঢ় এবং যুবক উনাদের
প্রত্যেকের সাইয়্যিদ হবেন। সুবহানাল্লাহ! এই কারণে সম্মানিত জান্নাতবাসীগণ
সুসজ্জিত হয়েছেন। ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি সম্মানিত
চক্ষু মুবারক শিতল করুন। কেননা আপনি হচ্ছেন ‘সাইয়্যিদুল আউওয়ালীন ওয়াল আখিরীন’ তথা
শুরু-শেষসহ সকলের সাইয়্যিদ।” সুবহানাল্লাহ! (যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ শরীফ ১/৩২)
উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান
মুবারক প্রকাশ, সম্মানিত গোসল
মুবারক, সম্মানিত জানাযা উনার নামায
মুবারক এবং সম্মানিত রওযা শরীফ
মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী
শান মুবারক প্রকাশের প্রায় ৬ মাস পর অর্থাৎ ১১ হিজরী সনের ৩রা রমাদ্বান শরীফ
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম) শরীফ বা’দ আছর
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত গোসল মুবারক:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি উনার
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পূর্বে সম্মানিত
গোসল মুবারক সম্পন্ন করেন এবং নতুন পোশাক মুবারক পরিধান করে ক্বিবলামুখী হয়ে শুয়ে
সম্মানিত বিছালী শান প্রকাশ করার কথা বলতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! তখন সম্মানিত
ওছীয়ত মুবারক করেন যে, উনার
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর উনাকে যেন কেউ আর
সম্মানিত গোসল মুবারক না করান। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তাই সাইয়্যিদুনা হযরত
কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ওছীয়ত
মুবারক অনুযায়ী পূণরায় সম্মানিত গোসল মুবারক না করিয়েই উনাকে সম্মানিত রওযা শরীফ
উনার মধ্যে রাখেন। সুবহানাল্লাহ! (ত্ববাক্বাতে ইবনে সা’দ শরীফ)
সম্মানিত জানাযা উনার নামায মুবারক:
আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত
জানাযা উনার নামায মুবারক কে পড়িয়েছেন, এই সম্পর্কে কিতাবে কয়েকটি মত রয়েছে। কেউ বলেছেন, সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি পড়িয়েছেন। আবার
কেউ কেউ বলেছেন, সাইয়্যিদুনা
হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি পড়িয়েছে। আবার কেউ কেউ বলেছেন, সাইয়্যিদুনা হযরত কাররমাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি
পড়িয়েছেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত
আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, বিশুদ্ধ অভিমত হচ্ছে আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত
যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত জানাযা উনার নামায মুবারক সাইয়্যিদুনা হযরত
কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি পড়িয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে ‘ত্ববাক্বাতে ইবনে সা’দ শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে,
عَنْ
عُرْوَةَ
أَنَّ
عَلِيًّا
صَلَّى
عَلَى
فَاطِمَةَ.
অর্থ: “হযরত ‘উরওয়াহ রহমতুললাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই উম্মু আবীহা, আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম
উনার সম্মানিত জানাযা উনার নামায মুবারক পড়ান সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু
ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি।” সুবহানাল্লাহ! (ত্ববাক্বাতে ইবনে সা’দ ৮/২৯)
মহাসম্মানিতন ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ
حَضْرت
عَائِشَةَ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
أَنَّ
عَلِيًّا
دَفَنَ
حَضْرت
فَاطِمَةَ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
لَيْلا.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস
সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা
আলাইহাস সালাম উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি
রাতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনর মধ্যে রাখেন।” সুবহানাল্লাহ!
(ত্ববাক্বাতে ইবনে সা’দ ৮/২৯)
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত
আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে যখন
সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও
মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনর মধ্যে রাখেন, তখন উনার সাথে উনার সম্মানিত দুই আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী আলাইহিস
সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারাও
ছিলেন।” সুবহানাল্লাহ!
উম্মু আবীহা, আন নূরুর
রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
রওযা শরীফ ‘সম্মানিত জান্নাতুল বাকী’ শরীফ’-এ অবস্থিত। সুবহানাল্লাহ!
সায়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত
আওলাদ আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনারাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আখাচ্ছুল খাছ খুছুছিয়াত মুবারক
উনাদের উত্তরাধিকারী
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ
حَضْرت
فَاطِمَةَ
عليها
السلام
بِنْتِ
رَسُولِ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
أَنَّهَا
أَتَتْ
بِالْـحَسَنِ
وَالْـحُسَيْنِ
إِلَى
رَسُولِ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
فِي شَكْوَاهُ
الَّذِي
تُوُفِّيَ
فِيهِ،
فَقَالَتْ:
يَا رَسُولَ
اللهِ
هَذَانِ
ابْنَاكَ
فَوَرِّثْهُمَا
شَيْئًا،
فَقَالَ: ্রأَمَّا
الْحَسَنُ
فَلَهُ
هَيْبَتِي
وَسُؤْدُدِي
وَأَمَّا
حُسَيْنٌ
فَلَهُ
جُرْأَتِي
وَجُودِي.
অর্থঃ “ উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত বিছালী
শান করার সময় সাইয়্যিদুনা হযর ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে নিয়ে নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত
খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেন। অতঃপর তিনি সম্মানিত আরজি মুবারক পেশ
করেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! উনারা
দু’জন আপনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমাস সালাম (হাফাদাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। আপনি দয়া করে উনাদেরকেআপনার সম্মানিত ওয়ারিসত্ত্ব হাদিয়া
করুন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন, সাইয়্যিদুনা হযর
ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য
আমার সম্মানিত হায়বাত বা প্রতাপ বা রোব মুবারক ও সম্মানিত সু’দাদী বা কতৃত্ব বা
সাইয়্যিদীশান মুবারকএবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার জন্য আমার সম্মানিত জুরয়াত বা বীরত্ব মুবারক ও সম্মানিত জূদী বা বদান্যতা
বা দানশীলতা মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল কাবীর লিত ত্ববারনী ২২/৪২৩, আল আহাম ওয়াল মাছানী ১/২৯৯)
কাজেই উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস
সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনারাই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
আখাচ্ছুল খাছ খুছুছিয়াত মুবারক উনাদের উত্তরাধিকারী। সুবহানাল্লাহ!
উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমাস
সালাম উনাদের মাধ্যম দিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নসবনামা মুবারক জারি থাকবে। সুবহানাল্লাহ!
উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমাস সালম
উনাদের মাধ্যম দিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার সম্মানিত নসবনামা মুবারক (সম্মানিত বংশ মুবারক) জারি থাকবে।
সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ
حَضْرَتْ
فَاطِمَةَ
الْكُبْرَى
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
قَالَتْ
: قَالَ
رَسُولُ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
كُلُّ
بني أُمٍّ
يَنْتَمُونَ
إِلَى
عَصَبَةٍ
إِلا وَلَدَ
حَضْرَتْ
فَاطِمَةَ
عَلَيْهَ
السَّلَامُ
فَأَنَا
وَلِيُّهُمْ
وَأَنَا
عَصَبَتُهُمْ.
অর্থ “উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, প্রত্যেক মায়ের সন্তান স্বীয় পিতার দিকে সম্পর্কিত হয় কিন্তু উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম
উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমাস সালাম উনারা ব্যতীত। আমিই উনাদের সম্মানিত
অবিভাবক এবং আমিই উনাদের সম্মানিত পিতৃপুরুষ।” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল কাবীর
লিত ত্ববারনী ৩/৭৪, মুসনাদে আবী
ইয়া’লা ১২/১০৯, মাজমাউয
যাওয়ায়িদ ৯/৯৯, আল ফাতহুল কাবীর
৩/২২ ইত্যাদী)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ
حَضْرَتْ
عُمَرَ
عَلَيْهَ
السَّلَامُ
قَالَ
سَمِعْتُ
رَسُولَ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
يَقُولُ
كُلُّ
بني أُنْثَى
فَإِنَّ
عَصَبَتَهُمْ
لأَبِيهِمْ
مَا خَلا
وَلَدَ
حَضْرَتْ
فَاطِمَةَ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
فَإِنِّي
أَنَا
عَصَبَتَهُمْ
وَأَنَا
أَبُوهُمْ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এ কথা মুবারক ইরশাদ
মুুবারক করতে শুনেছি যে,প্রত্যেক
মহিলার সন্তানদের সম্পর্ক স্বীয় পিতার দিকে হয়ে থাকে; কিন্তু উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম
উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমাস সালাম উনারা ব্যতীত। আমিই উনাদের সম্মানিত
পিতৃপুরুষ এবং আমিই উনাদের সম্মানিত অভিভাবক।” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল কাবীর
৩/৭৩, মাজমাউয যাওয়ায়িদ ৪/২৬০, আল জামি‘উছ ছগীর ২/১৫৯, আল ফাতহুল কাবীর ২/৩০৪, জামি‘উল আহাদীছ ১৫/৩২৫, কানযুল ‘উম্মাল ১২/১৬ ইত্যাদী)
0 Comments:
Post a Comment