খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম দ্বিতীয় খণ্ড ( পর্ব -২)

খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম দ্বিতীয় খণ্ড ( পর্ব -২)
পিডিএফ লিংক- https://drive.google.com/open?id=1J8Q2xa9L4YPKNWOWg7NJPm1HJBYdImLs









তৃতীয় প্রমাণ

عَنْ حَضْرَتْ ثَوْبَانَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَليْهِ وسَلَّمَ يُقْتَلُ عِنْدَ كَنْزِكُمْ هٰذَا ثَلاَثَةٌ كُلُّهُمُ ابْنُ خَلِيْفَةٍ وَفِىْ رِوَايَةٍ اُخْرٰى وُلْدُ خَلِيْفَةٍ ثُـمَّ لاَ يَصِيْرُ اِلـٰى وَاحِدٍ مِّـنْـهُـمْ وَفِىْ رِوَايَةٍ اُخْرٰى لاَ يَصِيْرُ الْاَمْرُ اِلـٰى وَاحِدٍ مِّـنْـهُـمْ ثُـمَّ تَطْلُعُ الرَّايَاتُ السُّوْدُ مِنْ قِبَلِ الْمَشْرِقِ فَيَقْتُلُوْنَكُمْ قَتْلًا لَـمْ يُقْتَلْهُ قَوْمٌ ثُـمَّ ذَكَرَ شَيْئًا لَا اَحْفَظُه فَقَالَ فَاِذَا رَاَيْتُمُوْهُ فَبَايِعُوْهُ وَلَوْ حَبْوًا عَلَى الثَّلْجِ فَاِنَّه خَلِيْفَةُ اللهِ الْمَهْدِىُّ.
অর্থ: “হযরত ছাওবান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিততিনি বলেননূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহহুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, )হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম তিনি প্রকাশ পাওয়ার পূর্বে) আপনাদের এই কেন্দ্রের নিকট তিনজন ব্যক্তি শহীদ হবেন। উনারা প্রত্যেকেই হবেন একজন মহান খলীফা আলাইহিস সালাম উনার আওলাদ বা সন্তান। অন্য বর্ণনায় এসেছে- وُلْدُ خَلِيْفَةٍতথা উনারা প্রত্যেকেই হবেন একজন আখাচ্ছুল খাছ বিশেষ খলীফা আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার মুবারক বংশধর। অতঃপর উনাদের একজনের নিকটও পৌঁছবেন না।
অন্য বর্ণনায় এসেছেঅতঃপর উনাদের একজনের নিকটও সম্মানিত খিলাফত মুবারক পৌঁছবেন না তথা উনাদের সম্মানিত খিলাফত মুবারক স্থায়ী হবে না। তারপর পূর্ব দেশ থেকে কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। অতঃপর তারা তোমাদেরকে এমনভাবে শহীদ করবেযেমনটি ইতঃপূর্বে কোনো জাতি করেনি। রাবী বলেনএরপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো কিছু আলোচনা মুবারক করেছেনযা আমার স্মরণে নেই। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহহুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেনতারপর তোমরা যখন (হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম) উনাকে দেখতে পাবেতখন উনার মুবারক হাতে বাইয়াত গ্রহণ করবেযদিও তোমাদেরকে বরফের উপর দিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে যেতে হয়। কেননা তিনিই হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার খলীফা হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম।” (বিদায়া-নিহায়া ৬/২৪৬দালাইলুন নুবুওওয়াহ লিল বাইহাক্বী ৬/৫১৫জামিউল আহাদীছ ৯/৩৩৩তারিখে দিমাশক্ব ৩২/২৮১খছাইছুল কুবরা ২/২০২ইযালাতুল খফা ১/৬০৭নিহায়া ফিল ফিতান- ২৬মুসনাদে বায্যার ২/১২০মুুসনাদে রুইয়ানী ১/২০৯মুস্তাদরকে হাকিম ৪/৪৬৩আস সুনানুল ওয়ারিদা ৫/১০৩২ফাতহুল কাবীর ৩/৪০২আহকামুশ শরীয়াহমুছান্নাফে আব্দির রাজ্জাকইবনে মাজাহ ইত্যাদি)
এই সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মাধ্যমেও দিবালোকের ন্যায় অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যেহযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম উনার পূর্বেবর্তমান যামানায় অবশ্য অবশ্যই সম্মানিত খিলাফত আ’লা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠিত হবেই হবে ইনশাআল্লাহ। সুতরাং যারা বলে থাকে যে, ‘সম্মানিত কুরআন শরীফসম্মানিত হাদীছ শরীফ উনাদের কোথাও নেই যেহযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম উনার পূর্বে খিলাফত কায়িম হবেঅর্থাৎ হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম তিনি এসে দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত খিলাফত মুবারক কায়িম করবেনএর আগে কখনোই দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত খিলাফত মুবারক কায়িম হবে না।’ না‘ঊযুবিল্লাহ! তাদের এই বক্তব্য আবারো ভুল এবং সম্মানিত কুরআন শরীফ ও সম্মানিত সুন্নাহ শরীফ উনাদের খিলাফ বলে প্রমাণিত হলো। এরপরেও এই বিষয়ে যদি কেউ চূ-চেরাক্বীল-ক্বাল করেতাহলে তা সম্মানিত কুরআন শরীফ ও সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনাদের খিলাফ হওয়ার কারণে সুস্পষ্ট কুফরী হবে। তাদেরকে খালিছ তাওবা-ইসতিগফার করতে হবে।
এখন কথা হলো যেহযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম উনার পূর্বে সম্মানিত খিলাফত মুবারক কায়িম যদি আর না-ই হয়তাহলে হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম উনার সময় একজন মহান খলীফা আলাইহিস সালাম উনার আওলাদ অথবা একজন আখাচ্ছুল খাছ মহান খলীফা আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার বংশধর মুবারক আসবেন কোথা থেকে?
অথচ উপরোক্ত সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে সুস্পষ্টভাবে বলে দেয়া হয়েছে যে,
يُقْتَلُ عِنْدَ كَنْزِكُمْ هٰذَا ثَلاَثَةٌ كُلُّهُمُ ابْنُ خَلِيْفَةٍ وَفِـىْ رِوَايَةٍ اُخْرٰى وُلْدُ خَلِيْفَةٍ....
          “আপনাদের এই কেন্দ্রের নিকট তিনজন ব্যক্তি শহীদ হবেন। উনারা প্রত্যেকেই হবেন একজন মহান খলীফা আলাইহিস সালাম উনার আওলাদ। অন্য বর্ণনায় এসেছেউনারা প্রত্যেকেই হবেন একজন আখাচ্ছুল খাছ বিশেষ খলীফা আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার মুবারক বংশধর।” সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ উনারাও খলীফা হবেন। তবে সম্মানিত কুরআন শরীফসম্মানিত হাদীছ শরীফ এবং পূর্ববর্তী আসমানী কিতাব মুবারক উনাদের মধ্যে যে খাছভাবে ১২ জন মহান খলীফা আলাইহিমুস সালাম উনাদের কথা বলা হয়েছে উনারা সেই সুমহান ১২ জন মহান খলীফা আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত ননকিন্তু উনারা সৎ ও ইনসাফগার খলীফা হবেন। উনারাও মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীবনূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের কর্তৃক মনোনীত। অতঃপর হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম তিনি খলীফা হিসেবে প্রকাশ পাবেন। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং এই সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার থেকে দিবালোকের ন্যায় অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হচ্ছে যেএকজন আখাচ্ছুল খাছ মহান খলীফা আলাইহিস সালাম তিনি হযরত ইমাম মাহদী আলাহিস সালাম উনার অনেক পূর্বেই দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেন। আর উনার প্রতিষ্ঠিত সেই মহাসম্মানিত খিলাফত মুবারকই উনার পরবর্তী মুবারক বংশধর আলাইহিমুস সালাম উনাদের মাধ্যম দিয়ে হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম উনার পর্যন্ত যেয়ে পৌঁছবে। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে এখন বলার বিষয় হচ্ছেকে সেই আখাচ্ছুল খাছ মহান খলীফা আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম যিনি হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম উনার অনেক পূর্বে দুনিয়ার যমীনেসারা পৃথিবীতেসারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেন এবং উনার প্রতিষ্ঠিত সেই মহাসম্মানিত খিলাফত মুবারকই উনার পরবর্তী মুবারক বংশধর আলাইহিমুস সালাম উনাদের মাধ্যম দিয়ে সর্বশেষ ইমাম ও খলীফা১২তম খলীফা হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম উনার পর্যন্ত যেয়ে পৌঁছবেকে সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারকআমরা জানিসম্মানিত হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে বর্ণিত ১২ জন মহান খলীফা আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে এই পর্যন্ত ৯ জন মহান খলীফা আলাইহমুস সালাম উনারা অতীত হয়েছেন।
 কিন্তু উনাদের কারো প্রতিষ্ঠিত সম্মানিত খিলাফত মুবারকই বর্তমানে স্থায়ী নেই। কেননা বর্তমানে সারা বিশ্বে চলছে গণতন্ত্র এবং চরম যালিম ও গুমরাহ শাসকদের শাসন ব্যবস্থা। পৃথিবীর কোথাও সম্মানিত ইনসাফ মুবারক ও ন্যায় বিচার উনাদের লেশমাত্র অবশিষ্ট নেইআর সম্মানিত খিলাফত মুবারক উনার তো প্রশ্নই উঠে না। হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন ১২তম খলীফা। আর ১০ম খলীফা হচ্ছেনযিনি সমস্ত খলীফাগণ উনাদের সাইয়্যিদসাইয়্যিদুল খুলাফা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস্ সাফ্ফাহ আলাইহিস সালাম তিনি এবং ও ১১তম খলীফা হচ্ছেন উনারই সুমহান আওলাদখলীফাতুল উমামআল মানছূর হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস্ সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! সুতরাং এই বিষয়টি দিবালোকের ন্যায় অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যেমূলত সেই সুমহান আখাচ্ছুল খাছ বিশেষ খলীফা আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন যিনি আমাদের প্রাণের আক্বা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি অতিশীঘ্রই দুনিয়ার যমীনেসারা পৃথিবীতেসারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেনই করবেন ইনশাআল্লাহ। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়উনার প্রতিষ্ঠিত সেই মহাসম্মানিত খিলাফত মুবারকই উনার সুমহান আওলাদ১১তম খলীফাখলীফাতুল উমামআল মানছূর হযরত শাহযাদাহ হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার এবং উনার পরবর্তী মুবারক বংশধর আলাইহিমুস সালাম উনাদের মাধ্যম দিয়ে ১২তম খলীফা হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম উনার পর্যন্ত যেয়ে পৌঁছবে। আর হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম তিনিও হবেন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার মুবারক বংশধর আলাইহিমুস সালাম উনাদের অর্ন্তভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! তাই মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম উনার একখানা বিশেষ লক্বব মুবারক হচ্ছে, ‘আবুল খুলাফা তথা হযরত খলীফা আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত পিতা।সুবহানাল্লাহ!








চতুর্থ প্রমাণ

বর্তমান সময়টা হচ্ছে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠিত হওয়ার নির্দিষ্ট সময়:
عَنْ حَضْرَتْ حُذَيْفَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَكُوْنُ النُّـبُوَّةُ فِيْكُمْ مَا شَاءَ اللهُ اَنْ تَكُوْنَ ثُـمَّ يَرْفَعُهَا اللهُ تَعَالـٰى ثُـمَّ تَكُوْنُ خِلَافَةً عَلـٰى مِنْهَاجِ النُّـبُوَّةِ مَا شَاءَ اللهُ اَنْ تَكُوْنَ ثُـمَّ يَرْفَعُهَا اللهُ تَعَالـٰى ثُـمَّ تَكُوْنُ مُلْكًا عَاضًّا فَتَكُوْنُ مَا شَاءَ اللهُ اَنْ تَكُوْنَ ثُـمَّ يَرْفَعُهَا اللهُ تَعَالـٰى ثُـمَّ تَكُوْنُ مُلْكًا جَبْرِيَّةً فَيَكُوْنُ مَا شَاءَ اللهُ اَنْ يَّكُوْنَ ثُـمَّ يَرْفَعُهَا اللهُ تَعَالـٰى ثُـمَّ تَكُوْنُ خِلَافَةً عَلـٰى مِنْهَاجِ النُّـبُوَّةِ.
অর্থ: “হযরত হুযায়ফা রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিততিনি বলেননূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেনমহান আল্লাহ পাক তিনি যতদিন ইচ্ছা করেন ততদিন আপনাদের মাঝে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক পরিপূর্ণভাবে বিদ্যমান থাকবে। অতঃপর তিনি এক সময় তা তুলে নিবেন। তারপর দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত খিলাফত আ’লা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠিত হবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি যতদিন ইচ্ছা করেন ততদিন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত খিলাফত আ’লা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠিত থাকবে। অতঃপর একসময় এই সম্মানিত খিলাফত মুবারক বিদায় নিয়ে এমন শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবেযেখানে অত্যাচারী রাজা-বাদশাহরা ক্ষমতা লাভের জন্য একে অপরের সাথে কামড়াকামড়ি করবে এবং তা টিকিয়ে রাখার জন্য যে কোনো উপায় বেছে নিবে। অর্থাৎ রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। তারপর হবে অত্যাচারঅবিচারযুলুম-নির্যাতনস্বৈরাচারগুমরাহীবিভ্রান্তিপথভ্রষ্টতা ও বেইনসাফীতে পরিপূর্ণ শাসন ব্যবস্থাজোর-জবরদস্তিমূলক শাসন ব্যবস্থাযুলুমতন্ত্র তথা সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্র। মহান আল্লাহ পাক তিনি এক সময় তা মিটিয়ে দিবেননিশ্চিহ্ন করে দিবেন। অতঃপর পুনরায় দুনিয়ার যমীনে ‘সম্মানিত খিলাফত আ’লা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক’ প্রতিষ্ঠিত হবে।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ ৪/২৭৩মুসনাদে ত্বয়ালসী ১/৩৪৯বাযযার ১/৪২৮বাইহাক্বী শরীফ ৬/৪৯১আল মু’জামুল কাবীর ১/১৫৯আহকামুশ শরী‘য়াহ ৪/৫২৫মাজমা‘উঝ ঝাওয়াইদ ৫/২২৬জামি‘উল আহাদীছ ৯/১৩২খছাইছুল কুবরা ২/১৯৭ইযালাতুল খফা ১/২৯৩মিশকাত শরীফ ইত্যাদি)
এই সম্মানিত হাদীছ শরীফখানা বিশুদ্ধ সনদ মুবারক-এ বর্ণিত হয়েছে। এই সম্পর্কে সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার বিশ্বখ্যাত ইমাম হাফিয নূরুদ্দীন আলী ইবনে আবূ বকর হাইছামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘মাজমাউঝ ঝাওয়াইদ শরীফ’ উনার ৫ম খ-ের ২২৬নং পৃষ্ঠায় বলেন,
وَرِجَالُهٗ ثِقَاتٌ
“এই সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার সকল বর্ণনাকারী বা রাবীগণ উনারা প্রত্যেকেই হচ্ছেনছিক্বাহ (তথা চরম বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য)।” অর্থাৎ এই সম্মানিত হাদীছ শরীফখানা ছহীহ এবং তা বিশুদ্ধ সনদ মুবারক-এ বর্ণিত।
এমনকি বাত্বিলপন্থীরাও এই সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনাকে ছহীহ হিসেবে মেনে নিয়েছে। যেমন- কাট্টা ওহাবী গুমরাহ নাছিরুদ্দীন আলবানী সেও তার পুস্তকে এই সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনাকে ছহীহ হিসেবে মেনেছে। (দলীল: আস সিলসিলাতুছ ছহীহাহ লিল আলবানী ১/৪)
 সুতরাং এই সম্মানিত হাদীছ শরীফখানা নিয়ে চূ-চেরাক্বীল-ক্বাল করার কোন সুযোগ নেই। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্মানিত হাদীছ শরীফ থেকে সুস্পষ্টভাবে বুঝা যাচ্ছেসম্মানিত নুুবুওওয়াত মুবারক উনার পর তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারকসম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক উনার পর রাজতন্ত্ররাজতন্ত্রের পর অত্যাচারঅবিচারযুলুম-নির্যাতনস্বৈরাচারগুমরাহীবিভ্রান্তিপথভ্রষ্টতা ও বেইনসাফীতে পরিপূর্ণ শাসন ব্যবস্থাজোর-জবরদস্তিমূলক শাসন ব্যবস্থাযুলুমতন্ত্র তথা সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্রতারপর পুনরায় দুনিয়ার যমীনে ‘সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ’ মুবারক প্রতিষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ।
আর এই কথা দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট সত্য যেসম্মানিত নুুবুওওয়াত মুবারক উনার পর তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠিত হয়েছেসম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক উনার পর এসেছে রাজতন্ত্র। রাজতন্ত্রের পর এসেছে অত্যাচারঅবিচারযুলুম-নির্যাতনস্বৈরাচারগুমরাহীবিভ্রান্তিপথভ্রষ্টতা ও বেইনসাফীতে পরিপূর্ণ শাসন ব্যবস্থাজোর-জবরদস্তিমূলক শাসন ব্যবস্থাযুলুমতন্ত্র তথা সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্র। আর মহান আল্লাহ পাক উনার ফযল ও করম মুবারকে অতিশীঘ্রই কাফির-মুশরিকদের প্রণীত হারাম সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্র নিশ্চিহ্ন হয়ে যেয়ে পুনরায় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠিত হবেই হবে ইনশাআল্লাহ।
আর বর্তমানে যেহেতু সারা বিশ্বে চলছে কাফির-মুশরিকদের প্রণীত হারাম সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্র।  অতএবউপরোক্ত সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার থেকে চির অকাট্য ও সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যেবর্তমান সময়টা হচ্ছে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠিত হওয়ার নির্দিষ্ট সময় এবং বর্তমান যামানায় অবশ্য অবশ্যই সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠিত হবেই হবে ইনশাআল্লাহ। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যে কোনো সম্মানিত ভবিষ্যৎ সুসংবাদ মুবারক উনার প্রতি বিন্দুমাত্র সন্দেহ পোষণ করা যেমন সুস্পষ্ট কুফরীঠিক তেমনিভবে আলোচ্য সম্মানিত বিশুদ্ধ হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ভবিষ্যৎ সুসংবাদ মুবারক- ‘যেঅবশ্য অবশ্যই সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠিত হবেই হবে ইনশাআল্লাহ।’ এই বিষয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ পোষণ করাটাও সুস্পষ্ট কুফরী।
এখন কথা হলোতাহলে কে সেই সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেনউনার পরিচয় কীএই সম্পর্কে সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ جَابِرِ ۨ الصَّدَفِـىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَكُوْنُ بَعْدِىْ خُلَفَاءُ وَبَعْدَ الْـخُـلَفَـاءِ اُمَرَاءُ وَبَعْدَ الْاُمَرَاءِ مُلُوْكٌ وَّبَعْدَ الْـمُلُوْكِ جَبَابِرَةٌ وَّبَعْدَ الْـجَـبَابِرَةِ يـَخْرُجُ رَجُلٌ مِّنْ اَهْلِ بَـيْـتِـىْ يَـمْلَاُ الْاَرْضَ عَدْلًاـ
অর্থ: “হযরত জাবির ছদাফী রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিততিনি বলেননূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেনআমার পরে হযরত খলীফা আলাইহিমুস সালাম উনাদের যুগহযরত খলীফা আলাইহিমুস সালাম উনাদের পর আমীর-উমরাদের যুগআমীর-উমারাদের পর রাজা-বাদশাহদের যুগ তথা রাজতন্ত্র। রাজতন্ত্রের পর হবে চরম অত্যাচারীযালিমস্বৈরাচারীনাফরমানগুমরাহপথভ্রষ্টবিভ্রান্তগুমরাহকারীপথভ্রষ্টকারীবিভ্রান্তকর শাসকদের শাসন ব্যবস্থা তথা জোর জবরদস্তিমূলক শাসন ব্যবস্থাযুলুমতন্ত্র তথা সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্র। অতঃপর আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে আমার একজন আখাচ্ছুল খাছ আওলাদএকজন মহান খলীফা আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক নিবেন।
 তিনি দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক নিয়ে পুরো পৃথিবীসারা কায়িনাত সম্মানিত ইনসাফ মুবারক দ্বারা পরিপূর্ণ করে দিবেন তথা সারা বিশ্বেসারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী শরীফ ৫/৪৫৬আল ইসতিয়াব ১/১৩৭)
আর সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারকই হচ্ছেন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! কেননা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর হযরত খলীফা আলাইহিমুস সালাম উনারা সম্মানিত খিলাফত মুবারক পরিচালনা করেছেন। এরপর আমীর-উমরাদের যুগ এসেছেআমীর-উমারাদের পর এসেছে রাজা-বাদশাহদের যুগ তথা রাজতন্ত্র। রাজতন্ত্রের পর বর্তমানে সারা বিশ্বে চলছে চরম অত্যাচারীযালিমস্বৈরাচারীনাফরমানগুমরাহপথভ্রষ্টবিভ্রান্তগুমরাহকারীপথভ্রষ্টকারীবিভ্রান্তকর শাসকদের শাসন ব্যবস্থা তথা জোর জবরদস্তিমূলক শাসন ব্যবস্থাযুলুমতন্ত্র তথা সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্র। এই শাসন ব্যবস্থার প্রত্যেক শাসকই হচ্ছে চরম অত্যাচারীযালিমলুটেরাস্বৈরাচারগোমরাহপথভ্রষ্টবিভ্রান্ত এবং ইহুদীখ্রিস্টানহিন্দুবৌদ্ধকাফিরমুশরিকদের পা চাটা গোলামতাদের একান্ত এজেন্ট বা দালাল। সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্র করে অথচ সে ইহুদীখ্রিস্টান ও কাফিরমুশরিকদের পা চাটা গোলাম নয়তাদের একান্ত এজেন্ট তথা দালাল নয়এরূপ শাসক বর্তমান বিশ্বে নেইএর আগেও ছিল না। আর না থাকাটাই স্বাভাবিক। কারণ যারা গণতন্ত্র করে তারা প্রত্যেকেই ইহুদীখ্রিস্টান ও কাফিরমুশরিকদের গোলাম হয়েতাদের একান্ত অনুগত ভৃত্য হয়েই গণতন্ত্র করে। আর একথা দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্টভাবে সত্য যেযারা ইহুদীখ্রিস্টান ও কাফিরমুশরিকদের গোলাম হতে পারে নাতাদের একান্ত অনুগত ভৃত্য হতে পারে নাতাদের একান্ত এজেন্ট তথা দালাল হতে পারে নাতারা কখনোই ক্ষমতায় আসতে পারে না। তাই এই কথা বলার আর অপেক্ষাই রাখে না যেসমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্রের প্রত্যেক শাসকই হচ্ছে চরম অত্যাচারীযালিমলুটেরাস্বৈরাচারগোমরাহপথভ্রষ্টবিভ্রান্তগোমরাহকারীপথভ্রষ্টকারীবিভ্রান্তকর। কারণ ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক তারা প্রত্যেকেই ইহুদীখ্রিস্টান ও কাফিরমুশরিকদের গোলামতাদের একান্ত অনুগত ভৃত্যতাদের একান্ত এজেন্ট তথা দালাল। আর যারা ইহুদীখ্রিস্টান ও কাফিরমুশরিকদের গোলামতাদের একান্ত অনুগত ভৃত্যতাদের একান্ত এজেন্ট তথা দালাল তারা কখনোই সৎ ও ইনসাফগার শাসক হতে পারে না। আর বর্তমানে সারা বিশ্বে গণতন্ত্র প্রবেশ করেছে অর্থাৎ বর্তমানে সারা বিশ্বে চলছে অত্যাচারীযালিমলুটেরাস্বৈরাচারগুমরাহপথভ্রষ্টবিভ্রান্তগুমরাহকারীপথভ্রষ্টকারীবিভ্রান্তকারী শাসকদের শাসন ব্যবস্থা।
আর যেখানে ইসলাম বিধ্বংসী গণতন্ত্র সরাসরি প্রবেশ করেনিসেখানেও রয়েছে ইহুদীখ্রিস্টান ও কাফিরমুশরিকদের খাছ গোলামতাদের একান্ত অনুগত ভৃত্যতাদের একান্ত এজেন্ট তথা দালাল- যারা তাদের পা চাটা গোলাম হয়ে দেশ পরিচালনা করে যাচ্ছে। তারাও চরম অত্যাচারীযালিমলুটেরাস্বৈরাচারগুমরাহপথভ্রষ্টবিভ্রান্তগুমরাহকারীপথভ্রষ্টকারীবিভ্রান্তকর শাসক। তারাও গণতান্ত্রিক শাসকদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়বরং ক্ষেত্র বিশেষ আরো বেশি। যেমন মুনাফিক্ব সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার। সে নিজেকে মুসলমানদের প্রাণকেন্দ্র পবিত্র মক্কা শরীফ ও পবিত্র মদীনা শরীফ উনাদের খাদিম দাবি করে। অথচ সে তার মুনীব ইহুদীখ্রিস্টান ও কাফিরমুশরিকদেরকে খুশি করার লক্ষ্যে তাদেরই একান্ত গোলাম হয়ে তাদেরই নির্দেশে ঠা-া মাথায় চাঁদের তারিখ পরিবর্তন করার মাধ্যমে প্রতি বছর বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমান উনাদের পবিত্র হজ্জ সহ অন্যান্য বিশেষ বিশেষ ইবাদত-বন্দেগীগুলো নষ্ট করে যাচ্ছে এবং পবিত্র কা’বা শরীফ ও রওযা শরীফ উনাদের ভিতর স্থাপন করেছে অসংখ্য সিসিটিভি। সে খোদ সবুজ গম্বুজ মুবারক ও সম্মানিত রওযা শরীফ গুঁড়িয়ে দিয়ে নূরে মুজাস্সামহাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জিসম মুবারক অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! তারই সহায়তায় পবিত্র মক্কা শরীফ ও পবিত্র মদীনা শরীফ উনাদের হোটেলগুলোতে চলছে সমস্ত প্রকার শরীয়ত গর্হিত হারাম নাজায়িয কার্যকলাপ। নাঊযুবিল্লাহ! সেখানকার মুসলমান উনারা স্বধীনভাবে ইসলাম পালন করতে পারছেন নাইসলাম উনার কথা বলতে পারছেন না। যদি কেউ পবিত্র কুরআন শরীফপবিত্র হাদীছ শরীফইজমা ও ক্বিয়াস শরীফ সম্মতও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার কোনো কথা বলেনআর তা যদি ওই মুনাফিক্ব ওহাবী ইহুদী সরকারের বিরুদ্ধে যায়তাহলে এই মুনাফিক্ব ওহাবী ইহুদী সরকার এতোই নিকৃষ্ট যেসে রাতারাতি ওই ব্যক্তি উনাকে গুম করে দেয়শহীদ করে ফেলে। নাঊযুবিল্লাহ! এই কাট্টা মুনাফিক্বকাট্টা কাফির ওহাবী ইহুদী সরকারের আমল-আখলাক্ব ইহুদীখ্রিস্টান ও কাফিরমুশরিকদের থেকেও অনেক অনেক গুণ বেশি নিকৃষ্ট। এমন কোনো হারাম ও নাজায়িয কাজ নেইযা সে করে না। এই স্বল্প পরিসরে তার সেই সমস্ত হারামনাজায়িয ও কুফরীশিরকীমূলক কার্যকলাপের ফিরিস্তি তুলে ধরা আদৌ সম্ভবপর নয়। মূলত সে দাজ্জালের চেয়েও অধিক নিকৃষ্টগুমরাহপথভ্রষ্ট। নাঊযুবিল্লাহ! এই যদি হয় মুসলমান উনাদের প্রাণকেন্দ্র পবিত্র ভূমি উনার মধ্যে অবস্থিত শাসক সউদী ওহাবী সরকারের অবস্থা! তাহলে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সরকারদের অবস্থা যে আরো কত করুণআরো কত নাজুকআরো কত নিকৃষ্টআরো কত খারাপআরো কত নীচআরো কত হীন! তা বলার অপেক্ষাই রাখে না।
সুতরাং এখান থেকে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠলো যেবর্তমান বিশ্বে যত সরকার রয়েছেযত শাসক রয়েছে- হোক মুসলমানদের দেশে অথবা কাফিরদের দেশেতারা প্রত্যেকেই চরম অত্যাচারীযালিমলুটেরাস্বৈরাচারগুমরাহপথভ্রষ্টবিভ্রান্ত। শুধু তাই নয়তারা গুমরাহপথভ্রষ্টবিভ্রান্ততো অবশ্যইএমন কি তারা জোরপূর্বক সাধারণ লোকদেরকেও গুমরাহপথভ্রষ্টবিভ্রান্ত করে যাচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ! তাই তারা নিঃসন্দেহে চরম গুমরাহকারীপথভ্রষ্টকারীবিভ্রান্তকারীও বটে। আর তাদেরই কারণে আজ পুরো পৃথিবী ফিতনা-ফাসাদবেপর্দা-বেহায়াঅত্যাচার-অবিচারযুুলুম-নির্যাতনেকুফরী-শিরকীহারাম-নাজায়িয কার্যকলাপেবেইনসাফীতে ভরে গেছে। কোথায়ও সম্মানিত ইনসাফ উনার লেশমাত্র অবশিষ্ট নেই।
আর এই কঠিন সময়েই দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে উনার একজন আখাচ্ছুল খাছ আওলাদ এবং সম্মানিত কুরআন শরীফসম্মানিত হাদীছ শরীফ এবং পূর্ববর্তী আসমানী কিতাব মুবারক উনাদের মধ্যে বর্ণিত ১২ জন মহান খলীফা আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে ১০ম খলীফা পবিত্র রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ ‘হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম’। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই উনার মুবারক উসীলায় বর্তমান যামানায় অতিশীঘ্রই এদেশেসারা পৃথিবীতেসারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠিত হবেই হবে ইনশাআল্লাহ। এখানে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। কেননা এটা বিশুদ্ধ হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত। আর এটা সকলেরই জানা রয়েছে যেবিশুদ্ধ সম্মানিত হাদীছ শরীফ দ্বারা ফায়ছালাকৃত কোনো বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করলেকোনো চূ-চেরাক্বিল-ক্বাল করলে কস্মিনকালেও ঈমাদার থাকা যায় নাবরং ঈমান হারা হয়ে কাফির হয়ে যেতে হয়। কাজেই কেউ যদি মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি যেঅতিশীঘ্রই এদেশেসারা পৃথিবীতেসারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেন- এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ পোষণ করেকোনো প্রকার চূ-চেরা ক্বিল-ক্বাল করে তাহলে সে সম্মানিত বিশুদ্ধ হাদীছ শরীফ উনাদের বিরোধিতা করার শামিল হবে। না‘ঊযুবিল্লাহ!
 তার পাশাপাশি এই বিষয়টিও অতি সুস্পষ্ট ও অকাট্যভাবে প্রমাণিত হলো যে১২তম খলীফা হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম তিনি কস্মিনকালেও আলোচ্য হাদীছ শরীফ মুবারক উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা আলাইহিস সালাম নন। কেননা তিনি যখন খলীফা হিসেবে প্রকাশ পাবেন তারপূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক থাকবে এবং খলীফাও থাকবেন। যেটা বিশুদ্ধ হাদীছ শরীফ মুবারক উনার দ্বারা প্রমাণিত। যেই সম্মানিত বিশুদ্ধ হাদীছ শরীফগুলো আমরা ইতঃপূর্বে উল্লেখ করেছি। যেমন- আলোচ্য সম্মানিত হাদীছ শরীফ মুবারক উনার মধ্যে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে,
 وَبَعْدَ الْـجَـبَابِرَة ِ يـَخْرُجُ رَجُلٌ مِّنْ اَهْلِ بَـيْتـِىْ يَـمْلَاُ الْاَرْضَ عَدْلًاـ
“চরম অত্যাচারীচরম স্বৈরাচারীচরম নাফরমানচরম উদ্ধতচরম গুমরাহচরম পথভ্রষ্টচরম বিভ্রান্তচরম পথভ্রষ্টকারীচরম বিভ্রান্তকর শাসকদের শাসন ব্যবস্থা তথা জোর জবরদস্তিমূলক শাসন ব্যবস্থাযুলুমতন্ত্র তথা সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্রের পর আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে আমার একজন খাছ আওলাদএকজন মহান খলীফা আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক নিবেন। তিনি দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক নিয়ে পুরো পৃথিবীসারা কায়িনাত সম্মানিত ইনসাফ মুবারক দ্বারা পরিপূর্ণ করে দিবেন তথা সারা বিশ্বেসারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আ’লা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠিা করবেন।” সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং এই কথা দিবালোকের ন্যায় অত্যন্ত সুস্পষ্ট ও অকাট্যভাবে প্রমাণিত হলো যেআলোচ্য সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা আলাইহিস সালামই হচ্ছেন সাইয়্যিদুল খুলাফা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি। হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম তিনি কস্মিনকালেও আলোচ্য হাদীছ শরীফ মুবারক উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা আলাইহিস সালাম নন। (সুবহানাল্লাহ)
  অতএবএই বিষয়টি অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যেসাইয়্যিদুল খুলাফা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফ্ফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার মুবারক উসীলায় বর্তমান যামানায় সারা পৃথিবীতেসারা কায়িনাতে অবশ্য অবশ্যই সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠিত হবেই হবে ইনশাআল্লাহ।

পঞ্চম প্রমাণ
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَلَقَدْ كَتَبْنَا فِى الزَّبُوْرِ مِنْ ۢ بَعْدِ الـذِّكْرِ اَنَّ الْاَرْضَ يَرِثُهَا عِبَادِىَ الصّٰلـِحُوْنَ.
অর্থ: “আর নিশ্চয়ই আমি সম্মানিত যাবূর শরীফ উনার মধ্যে সম্মানিত যিক্র মুবারক উনার পর এই কথা লিপিবদ্ধ করে দিয়েছি যেআমার সম্মানিত ছালিহীন বান্দাগণ উনারা সারা পৃথিবীরসারা কায়িনাতের সম্মানিত ওয়ারিছত্ব মুবারক লাভ করবেন। অর্থাৎ উনারা সারা পৃথিবীব্যাপীসারা কায়িনতব্যাপী সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক পরিচালনা করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা আম্বিয়া শরীফ: সম্মানিত আয়াত শরীফ ১০৫)
এই সম্মানিত আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় রঈসুল মুফাসসিরীন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন,
اَخْبَرَ اللهُ سُبْحَانَهٗ وَتَعَالـٰى فِى التَّوْرَاةِ وَالزَّبُوْرِ وَسَابِقِ عِلْمِهٖ قَبْلَ اَنْ تَكُوْنَ السَّمٰوَاتُ وَالْاَرْضُ اَنْ يُّـوَرِّثَ اُمَّةَ حَضْرَتْ مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْاَرْضَ.
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি সাত আসমানসাত যমীনসারা পৃথিবীসারা কায়িনাত সৃষ্টি করার পূর্বে সম্মানিত তাওরাত শরীফসম্মানিত যাবূর শরীফ এবং পূর্ববর্তী সম্মানিত আসমানী কিতাব মুবারক উনাদের মধ্যে এই কথা লিখে দিয়েছেন যেনিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীবনূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে উনার সম্মানিত উম্মতগণ উনাদেরকে সারা পৃথিবীরসারা কায়িনাতের সম্মানিত কর্তৃত্ব মুবারকসম্মানিত খিলাফত মুবারক হাদিয়া করেছেন। অর্থাৎ উনার সম্মানার্থে উনার সম্মানিত উম্মতগণ উনারা সারা পৃথিবীব্যাপীসারা কায়িনাতব্যাপী সম্মানিত কর্তৃত্ব মুবারক করবেনসম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক পরিচালনা করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে ত্ববারী ১৮/৫৪৯দুররে মানছুর ৫/৬৮৬ইবনে আবী হাতিম ৮/২৪৭১ফাতহু ক্বাদীর ৩/৫১২ইবনে কাছীর ৫/৩৮৫খছাইছুল কুবরা ১/৫১সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১০/২৭৭ ইত্যাদী)
১০ম হিজরী শতকের মুজাদ্দিদমুজাদ্দিদে যামান হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘খছাইছুল কুবরা শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন যেমহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত যাবূর শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেছেন,
يَا حَضْرَتْ دَاودُ عَليْهِ السَّلَامُ ِاِسْمـَعْ مَا اَقُوْلُ وَمُرْ حَضْرَتْ سُلَيْمَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَلْيَقُلْهُ لِلنَّاسِ مِنْ بَعْدِكَ اِنَّ الْاَرْضَ لِىْ اُوْرِثُهَا حَضْرَتْ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَوْ اُمَّتَهٗ
 অর্থ: “হে আমার সম্মানিত নবী এবং রসূল হযরত দাঊদ আলাইহিস সালামআমি যা বলি তা আপনি শুনুন এবং আপনি আমার পক্ষ থেকে আপনার যিনি সুমহান আওলাদ হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম যিনি আসমানের নিচেযমীনের উপরে সারা পৃথিবীতে সম্মানিত কর্তৃত্ব মুবারক করবেনউনাকে এই সম্মানিত নির্দেশ মুবারক জানিয়ে দেন যেতিনি যেন আপনার পর সমস্ত মানুষদেরকেসমস্ত জিন-ইনসানকে জানিয়ে দেন যেনিশ্চয়ই সারা পৃথিবীরসারা কায়িনাতের মালিক হচ্ছি আমি মহান আল্লাহ পাক। আর আমি এই সারা পৃথিবীরসারা কায়িনাতের সম্মানিত ওয়ারিছত্ব মুবারকসম্মানিত কর্তৃত্ব মুবারক হাদিয়া করেছি আমার যিনি হাবীবনূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং উনার সম্মানার্থে উনার সম্মানিত উম্মতগণ উনাদেরকে। অর্থাৎ উনার সম্মানার্থে উনার সম্মানিত উম্মতগণ উনারা সারা পৃথিবীব্যাপীসারা কায়িনাতব্যাপী সম্মানিত কর্তৃত্ব মুবারক করবেনসম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক পরিচালনা করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (খছাইছুল কুবরা ১/৫২ইযালাতুল খফা ১/১০১)
 অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে উনার সম্মানিত উম্মতগণ উনারা হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম উনার ন্যায় সারা পৃথিবীতো অবশ্যইএমনকি সারা কায়িনাতব্যাপী সম্মানিত কর্তৃত্ব মুবারক করবেনসম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক পরিচালনা করবেন। সুবহানাল্লাহ!
আর এই বিষয়টি আরো স্পষ্টভাবে সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে,
عَنْ حَضْرَتْ ثَوْبَانَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰی عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ اللهَ زَوٰى لِىَ الْاَرْضَ فَرَاَيْتُ مَشَارِقَهَا وَمَغَارِبَهَا وَاِنَّ اُمَّتِىْ سَيَبْلُغُ مُلْكُهَا مَا زُوِىَ لِىْ مِنْهَا.
অর্থ: “বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত ছাওবান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেননূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেননিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি (আমার সম্মানিত উম্মত উনাদের সম্মানিত শান-মান মুবারক উনাদের বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর জন্য) আমার সম্মুখে সারা কায়িনাত অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরলেন। অতঃপর আমি সারা কায়িনাতউনার মধ্যে যা কিছু রয়েছে এবং উনার যত প্রান্তসমূহ রয়েছে সমস্ত কিছু দেখে নিলাম। (কোন কিছুই বাকী রইলো না।) আর নিশ্চয়ই আমাকে যেই পর্যন্ত দেখানো হয়েছে অতিশীঘ্রই আমার সম্মানিত উম্মত উনাদের সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক সেখানে যেয়ে পৌঁছবে। অর্থাৎ আমার সম্মানিত উম্মত উনারা সারা পৃথিবীব্যাপীসারা কায়িনাতব্যাপী সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক পরিচালনা করবেন।” সুবহানাল্লাহ!
(মুসলিম শরীফআবূ দাঊদতিরমিযীমুসনাদে আহমদ ৫/২৭৮ইবনে হিব্বান ১৫/১০৯মুছান্নাফে আবী শায়বা ১১/৪৫৮রূয়ানী ১/১২০আহকামুশ শরীয়াহ ১/২১৫জামউল জাওয়ামি’জামিউল আহাদীছফাতহুল কাবীরজামিউল উছুল ইত্যাদি)
সুতরাং উপরোক্ত দলীল ভিত্তিক আলোচনা থেকে অত্যান্ত সুস্পষ্ট ও অকাট্যভাবে প্রমাণিত হলো যেনূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে উনার সম্মানিত উম্মতগণ উনারা হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম উনার ন্যায় সারা পৃথিবীতো অবশ্যইএমনকি সারা কায়িনাতব্যাপী সম্মানিত কর্তৃত্ব মুবারক করবেনসম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক পরিচালনা করবেন। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَلَكَ الْاَرْضَ اَرْبَعَةٌ مُّؤْمِنَانِ وَكَافِرَانِ فَالْمُؤْمِنَانِ حَضْـَرتْ ذُو الْقَرْنَيْنِ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَحَضْـَرتْ سُلَيْمَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَالْكَافِرَانِ نَـمْرُوْدُ وَبـُخْتَنَصَّرُ وَسَيَمْلِكُهَا خَامِسٌ مِّنْ اَهْلِ بَيْتِـىْ.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেননূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেনসারা পৃথিবী শাসন করেছেন চারজন। দুজন হচ্ছেন মু’মিন আর দুজন হচ্ছে কাফির। মু’মিন দুজন হচ্ছেন- হযরত সিকান্দার যুলক্বরনাঈন রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম। আর কাফির দুজন হচ্ছে- নমরূদ এবং বখতে নছর। আর অতিশীঘ্রই পঞ্চম একজন মহান ব্যক্তিত্ব মুবারকএকজন মহান খলীফা আলাইহিস সালাম তিনি সারা পৃথিবীব্যাপীসারা কায়িনাতব্যাপী সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক পরিচালনা করবেন। তিনি হবেন আমার পূত-পবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত।” সুবহানাল্লাহ!(ইবনে জাওযীমাকতূবাত শরীফশরহু ছহীহ বুখারী শরীফ ৮/৮৬ফাতওয়ায়ে হাদীছিয়্যাহ শরীফ লিলহাইতামী ১/৮১আল হাওই শরীফ লিসসুয়ূত্বী ২/৭৬ ইত্যাদী )
আমরা জানিনূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর এই পর্যন্ত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম তথা আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্য থেকে কেউ সারা পৃথিবীব্যাপীসারা কায়িনাতব্যাপী সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক পরিচালনা করেননি এবং সর্বশেষ ইমাম ও ১২তম খলীফা হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম তিনিও করবেন না। কারণ ছিহাহ সিত্তাহসহ আরো অন্যান্য বিশ্বখ্যাত কিতাব মুবারক-এ বর্ণিত সম্মানিত বিশুদ্ধ হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্টভাবে রয়েছে যেহযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম তিনি প্রকাশ পেয়ে খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে করতে যখন মোটামোটি একটা পর্যায় পৌঁছবেন তখন দাজ্জাল প্রকাশ পাবে। দাজ্জাল তার বিশাল এলাকা জুড়ে তার কুফরী-শিরকীমূলক কার্যকলাপ চালাতে থাকবে। এক পর্যায়ে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তিনি আসমান থেকে নাযিল হবেন এবং দাজ্জালকে হত্যা করবেন। তারপর সারা পৃথিবী সম্মানিত মুসলমান উনাদের অধীনে আসবে। তবে এটা হবে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার খিলাফত মুবারকএটা হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম উনার খিলাফত নয়। তাহলে এখান থেকে স্পষ্টভাবে বুঝা যাচ্ছে যেহযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম তিনিও সারা পৃথিবীব্যাপী খিলাফত মুবারক পরিচালনা করবেন না। কারণ দাজ্জাল তার বিশাল এলাকা নিয়ে তার কুফরী-শিরকীমূলক কার্যকলাপ চালানোর অর্থই হলোহযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম উনার খিলাফত মুবারক উনার অধীনে তখন সারা পৃথিবী থাকবে না।
এখন বলার বিষয় হচ্ছে১২ জন মহান খলীফা আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে ৯ জন খলীফা অতীত হয়েছেন উনারা কেউই সারা পৃথিবীব্যাপীসারা কায়িনাতব্যাপী সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক পরিচালনা করেননি এবং ১২তম খলীফা হযরত মাহদী আলাইহিস সালাম তিনিও করবেন না। তাহলে কে করবেনএটা বলার অপেক্ষাই রাখে না যেসেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারকই হচ্ছেন ১০ম খলীফাসাইয়্যিদুল খুলাফাআওলাদে রসূল মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি। তিনি শুধু বাংলাদেশ নয়পাকিস্তান নয়ভারত নয়বরং হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম উনার ন্যায় সারা পৃথিবী তো অবশ্যইএমনকি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে উনার হুবহু ক্বায়িম-মাক্বাম হয়ে সীমাহীন প্রতাপ ও ব্যাপকতার সাথে সারা কায়িনাতব্যাপী সুদীর্ঘ ৩০-৪০ বছর যাবৎ সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক পরিচালনা করবেন। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই এই বিষয়টি অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যেমামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি অতিশীঘ্রই সারা পৃথিবীতেসারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেনই করবেন ইনশাআল্লাহ।

ষষ্ঠ প্রমাণ

সম্মানিত হাদীছ শরীফ মুবারক উনাদের মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেহযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম উনার প্রকাশ পাওয়ার পূর্বে মুসলমান এবং খ্রিস্টানরা মিলে ইহুদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন। যুদ্ধে মুসলমান এবং খৃস্টানরা জয় লাভ করবেন আর ইহুদীরা পরাজিত হবে। তখন খৃস্টানদের এক ব্যক্তি ক্রুশ উত্তোলন করে বলবে যেক্রুশের বরকতে আমরা বিজয় লাভ করেছি। এই কথা শুনে একজন মুসলমান তিনি খুব ক্ষুব্ধ হয়ে ক্রুশটি ভেঙ্গে ফেলবেন। কেন সে বললো যেক্রুশের বরকতে তারা বিজয় লাভ করেছে। তখন এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে মুসলমান এবং খৃস্টানদের মাঝে কঠিন ভয়াবহ বিশ্ব যুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। যুদ্ধ করতে করতে সম্মানিত মুসলমান উনাদেরকে খায়বার পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে। সম্মানিত হাদীছ শরীফগুলো হচ্ছে,
عَنْ حَضْرَتْ ذِىْ مـِخْبَرٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ سـَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ سَتُصَالِـحُوْنَ الرُّوْمَ صُلْحًا اٰمِنًا فَتَغْزُوْنَ اَنْتُمْ وَهُمْ عَدُوًّا مِّنْ وَرَائِكُمْ فَتُنْصَرُوْنَ وَتَغْنَمُوْنَ وَتَسْلَمُوْنَ ثُـمَّ تَرْجِعُوْنَ حَتّٰى تَنْزِلُوْا بِـمَرْجٍ ذِىْ تُلُوْلٍ فَيَرْفَعُ رَجُلٌ مِّنْ اَهْلِ النَّصْرَانِيَّةِ الصَّلِيْبَ فَيَقُوْلُ غَلَبَ الصَّلِيْبُ فَيَغْضَبُ رَجُلٌ مِّنَ الْمُسْلِمِيْنَ فَيَدُقُّه فَعِنْدَ ذٰلِكَ تَغْدُرُ الرُّوْمُ وَتَـجْمَعُ لِـلْمَلْحَمَةِ وَزَادَ بَعْضُهُمْ فيَثُوْرُ الْمُسْلِمُوْنَ اِلـٰى اَسْلِحَتِهِمْ فَيُقْتَلُوْنَ فَيُكْرِمُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ تِلْكَ الْعِصَابَةَ مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ بِالشَّهَادَةِ.
অর্থ: “হযরত যূমিখবার রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিততিনি বলেননূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে আমি ইরশাদ মুবারক করতে শুনেছিঅদূর ভবিষ্যতে আপনারা রোমক তথা খৃষ্টানদের সহিত একটি শান্তি-চুক্তি করবেন। অতঃপর আপনারা এবং তারা যৌথভাবে অপর একটি শত্রুদল তথা ইহুদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন। এই যুদ্ধে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে আপনারা সাহায্যপ্রাপ্তগায়িবী মদদ প্রাপ্ত হবেনআপনারা গনীমতও লাভ করবেন এবং নিরাপদও থাকবেন। তারপর আপনারা (উভয় দল) প্রত্যাবর্তন করবেনঅবশেষে আপনারা টিলাযুক্ত একটি প্রশস্ত মনোরম বাগানে অবতরণ করবেন। তখন খৃষ্টানদের এক ব্যক্তি একটি ক্রুশ উত্তোলন করে বলবে যে,
غَلَبَ الصَّلِيْبُ فَيَغْضَبُ رَجُلٌ مِّنَ الْمُسْلِمِيْنَ فَيَدُقُّه.
“ক্রুশ আমাদেরকে জয়ী করেছে অর্থাৎ ক্রুশের বরকতে আমরা বিজয় লাভ করেছি। এই কথা শুনে সম্মানিত মুসলমান উনাদের মধ্য থেকে একজন খালিছ ঈমানদার ব্যক্তি তিনি খুব ক্ষুব্ধ হয়ে ক্রুশটি ভেঙ্গে ফেলবেন। ফলে রোমক খৃষ্টানরা চুক্তি ভঙ্গ করে ফেলবে এবং কঠিন ভয়াবহ যুদ্ধের জন্য বিরাট সেনাবাহিনী একত্রিত করবে।” কোনো কোনো বর্ণনাকারীগণ উনারা আরো সংযুক্ত করে বলেছেনতখন সম্মানিত মুসলমানগণ উনারা সাথে সাথে আপন অস্ত্রসমূহ ধারণ করবেন এবং জিহাদে লিপ্ত হয়ে পড়বেন। অবশেষে মহান আল্লাহ পাক তিনি এই দলকে শাহাদাত দ্বারা সম্মানিত করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (আবূ দাঊদ শরীফ ৪/১৮২সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ ৫/২১৫মুসনাদে আহমদ ৪/৯১ছহীহ ইবনে হাব্বান ১৫/১০১মু’জামুছ ছাহাবাহ ২/১৫৪সুনানুল কুবরা লিল বাইহাক্বী ৯/২২৩মুস্তাদরকে হাকিম ৪/৪৬৭মু’জামুল কাবীর ৪/৩১৪আল আহাদ ওয়াল মাছানী ৫/১২২আহকামুশ শরীয়াহ ৪/৫৫০মুছান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৫/৩২৫মা’রিফাতুছ ছাহাবা লি আবী না‘ঈম ৭/৩৫৪আল ফাতহুল কাবীর ২/১৪৮জামি‘উল আহাদীছ ১৩/৩৪৯জাম‘উল জাওয়ামি’জামি‘উল উছূল ১০/৭৪৭৯ ইত্যাদি)
আর অন্য সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُوْشِكُ الْمُسْلِمُوْنَ اَنْ يـُّحَاصَرُوْا اِلَى الْمَدِيْنَةِ حَتّٰى يَكُوْنَ اَبْعَدَ مَسَالِـحِهِمْ سَلاَحُ.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিতনূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেনঅদূর ভবিষ্যতে মুসলমানগণ উনারা সম্মানিত মদীনা শরীফ উনার মধ্যে অবরুদ্ধ হবেন এবং উনাদের দূর প্রান্ত-সীমা হবে সালাহ পর্যন্ত।” (আবূ দাঊদ শরীফ ৪/১৫৬ইবনে হিব্বান শরীফ ১৫/১৭৪মুস্তাদরকে হাকিম ৪/৫৫৬আল মু’জামুল কাবীর ১১/৩১৬আল মু’জামুল আওসাত্ব ৬/২৮৬ফাতহুল কাবীর ৩/৪০৯জামিউল আহাদীছ ২৪/২৮০জাম‘উল জাওয়ামি’জামিউল উছূল ১০৭৪৮৪ ইত্যাদি)
‘মিশকাত শরীফ’ উনার মধ্যে এসেছে,
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قال يُوْشِكُ الْمُسْلِمُوْنَ اَنْ يـُّحَاصَرُوْا اِلَى الْمَدِيْنَةِ حَتّٰى يَكُوْنَ اَبْعَدَ مَسَالِـحِهِمْ سَلَاحُ وَسَلَاحُ قَرِيْبٌ مِّنْ خَيْبَرَ.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিততিনি বলেনঅদূর ভবিষ্যতে মুসলমানগণ উনারা সম্মানিত মদীনা শরীফ উনার মধ্যে অবরুদ্ধ হবেন এবং উনাদের দূর প্রান্ত-সীমা হবে সালাহ পর্যন্ত। আর ‘সালাহ’ হলো খায়বারের নিকটবর্তী একটি জায়গার নাম।”
সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে বর্ণিত রয়েছে যেতখনো খিলাফত থাকবে এবং খলীফাও থাকবেন। কিন্তু এই কঠিন মুহূর্তে সম্মানিত মুসলমান উনারা আরো একজন শক্তিশালী রাহবার এবং বিশেষ খলীফা আলাইহিস সালাম উনার প্রয়োজন অনুভব করবেন। আর সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মাধ্যমে উনাদের এই বিষয়টি জানা থাকবে যেএই কঠিন সময়েই সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ১২ জন মহান খলীফা আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে অন্যতম একজন বিশেষ খলীফা১২ তম খলীফা হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম তিনি প্রকাশ পাবেন। উনাদের এই বিষয়টিও জানা থাকবে যেতিনি সম্মানিত মক্কা শরীফ উনার মধ্যেই প্রকাশ পাবেন। তাই উনারা সম্মানিত মক্কা শরীফ উনার মধ্যে যেয়ে হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম উনাকে খুঁজতে থাকবেন এবং উনাকে চিনতে পেরে উনার হাত মুবারক-এ সম্মানিত খিলাফত মুবারক উনার বায়াত গ্রহণ করবেন। অতঃপর সম্মানিত মুসলমান উনারা হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম উনার অধীনে থেকে খৃস্টানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবেন। তখন এমন ভয়াবহ কঠিন যুদ্ধ হবে যেকোনো মুসলমান পিতা উনার যদি একশত জন সন্তান থাকেনতাহলে যুদ্ধ শেষে গণনা করে দেখা যাবে যেমাত্র একজন সন্তান জীবিত আছেন। আর বাকী ৯৯ জন উনারা শাহাদাত বরণ করেছেন।
এখন কথা হলোবর্তমানে মুসলমানদের এমন ভয়াবহ অবস্থা যেবর্তমান যামানায় সম্মানিত কা’বা শরীফ ও সম্মানিত রওজা শরীফ উনাদের ভিতর সিসি টিভি রয়েছে। ইহুদী-নাছারাহিন্দুবৌদ্ধমজূসীমুশরিকরা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শান-মান নিয়ে চু-চেরাক্বিল-ক্বাল করছেউনার শান মুবারক উনার খিলাফ ব্যঙ্গচিত্র করে যাচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ! হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মুবারক শানের খিলাফ ব্যঙ্গচিত্র করে যাচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ! এমনকি তারা ‘সম্মানিত কুরআন শরীফ’ উনাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিতে চাচ্ছে এবং এই জন্য আলাদা দিবসও পালন করে যাচ্ছে। সাত শত আয়াত শরীফ বাদ দিয়ে পবিত্র কুরআন শরীফ ছাপিয়েছে। অথচ মুসলমানরা এর কোনো শক্ত প্রতিবাদ করছে নাবিশ্ব যুদ্ধ করার তো প্রশ্নই উঠে না। বরং নিজেরাই উল্টো দায়িমীভাবে ক্রুশ ব্যবহার করছে এবং তা ব্যবহার করে গর্ববোধও করছে। নাঊযুবিল্লাহ! তাহলে হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম উনার পূর্বে কে সেই সুমহান খলীফা আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক নিবেন যিনি সারা পৃথিবীতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেন এবং মুসলমান উনাদেরকে এমন ঈমানী জজবা মুবারক দান করবেন যে, ‘কেন খ্রিস্টান ব্যক্তি বলবে যেক্রুশের বরকতে তারা জয় লাভ করেছে। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে সম্মানিত মুসলমান উনারা বিশ্ব যুদ্ধ শুরু করে দিবে।’
 মূলত সেই সুমহান খলীফাই হচ্ছেন মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তিনি বর্তমান যামানায় যত অত্যাচার-অবিচারযুলুম-নির্যাতনঅশ্লীল-অশালীনহারাম-নাজায়িয ও কুফরী-শিরকীমূলক কার্যকলাপ রয়েছে তা মিটিয়ে দিয়ে সারা পৃথিবী সম্মানিত ইনসাফ ও ন্যায়বিচার মুবারক দ্বারা পরিপূর্ণ করে দিবেনসারা পৃথিবীতেসারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেন। উনার মুবারক ফায়েযে মুসলমান উনারা তখন এমন ঈমানী জজবা মুবারক লাভ করবেন যেউনারা কোনো প্রকার শরীয়ত গর্হিত কার্যকলাপ সহ্য করবেন না এবং সাথে সাথে এর শক্ত প্রতিবাদ করবেন। এই কারণেই উনার মুবারক শানে সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ سَعِيْدِ ۨ الْـخُدْرِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَـتُمْلَاَنَّ الْاَرْضُ ظُلْمًا وَّعُدْوَانًا ثُـمَّ لَيَخْرُجَنَّ رَجُلٌ مِّنْ اَهْلِ بَيْـتِـىْ حَتّٰـى يَـمْلَاَهَا قِسْطًا وَّعَدْلًا كَمَا مُلِــئَتْ ظُــلْمًا وَّعُدْوَانًا.
অর্থ: “হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেননূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেনঅবশ্য অবশ্যই সারা পৃথিবী যুলুম-নির্যাতন ও সীমালঙ্ঘন তথা অত্যাচার-অবিচারমারামারি-খুনাখুনিবেপর্দ-বেহায়ামদ-জুয়াব্যভিচারঅশ্লীল-অশালীনহারাম-নাজায়িয ও কুফরী-শিরকীমূলক কার্যকলাপেবেইনসাফীতে পরিপূর্ণ হয়ে যাবেকোথাও সম্মানিত ইনসাফ মুবারক উনার লেশমাত্র অবশিষ্ট থাকবে না। তখন আবশ্যই অবশ্যই আমার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে আমার একজন আখাচ্ছুল খাছ আওলাদআমার পক্ষ থেকে আমার একজন সর্বশ্রেষ্ঠ মহান খলীফা আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক নিবেন। তিনি দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক নিয়ে সমস্ত প্রকার যুলুম-নির্যাতন ও সীমালঙ্ঘন তথা অত্যাচার-অবিচারমারামারি-খুনাখুনিবেপর্দা-বেহায়ামদ-জুয়াব্যভিচারঅশ্লীল-অশালীনহারাম-নাজায়িয ও কুফরী-শিরকীমূলক কার্যকলাপবেইনসাফী মিটিয়ে দিয়ে সারা পৃথিবীকেসারা কায়িনাতকে সম্মানিত ইনসাফ মুবারক ও ন্যায়বিচার মুবারক দ্বারা পরিপূর্ণ করে দিবেনযেমনিভাবে অশ্লীল-অশালীনহারাম-নাজায়িয ও কুফরী-শিরকীমূলক কার্যকলাপেবেইনসাফীতে পুরো পৃথিবী পরিপূর্ণ ছিল। অর্থাৎ তিনি সারা পৃথিবীতেসারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল জামি‘উছ ছগীর ২/২২২ফাতহুল কাবীর ৩/১০হাওই লিস সুয়ূত্বী ২/৬০ ইত্যাদি)
সুতরাং এবারও অত্যন্ত সুস্পষ্ট ও অকাট্যভাবে প্রমাণিত হলো যেমামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি অতিশীঘ্রই সারা পৃথিবীতেসারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেনই করবেন ইনশাআল্লাহ।


সপ্তম প্রমাণ

সম্মানিত হাদীছ শরীফ মুবারক উনার থেকে এই বিষয়টিও সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত- বর্তমানে যে সমস্ত অত্যাধুনিক অস্ত্রএটম বোমাহাইড্রোজেন বোমানিউট্রন বোমাজীবাণু অস্ত্ররাসায়নিক অস্ত্রতেজষ্ক্রিয় অস্ত্রপিস্তলকামানট্যাঙ্কপারমাণবিক চুল্লি ইত্যাদি রয়েছেহযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম উনার সময় এই সমস্ত অত্যাধুনিক অস্ত্রপাতি থাকবে না। তখন থাকবে ঢালতলোয়ারতীরবল্লম এবং যুদ্ধের বাহন হিসেবে থাকবে ঘোড়াউট ইত্যাদি। ছহীহ হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছেহযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তিনি বর্শা দ্বারা দাজ্জালকে হত্যা করবেন। সম্মানিত হাদীছ শরীফখানা হচ্ছে,
فَيَنْزِلُ حَضْرَتْ عِيْسَى ابْنُ مَرْيـَمَ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ فَاَمَّهُمْ فَاِذَا رَاٰهٗ عَدُوُّ اللهِ ذَابَ كَمَا يَذُوْبُ الْمِلْحُ فِـى الْمَاءِ فَلَوْ تَرَكَهٗ لَانْذَابَ حَتّٰى يَهْلِكَ وَلٰكِنْ يَّقْتُلُهُ اللهُ بِيَدِهٖ فَيُرِيْهِمْ دَمَهٗ فِـىْ حَرْبَـتِهٖ.
অর্থ: “অতঃপর হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তিনি আকাশ হতে অবতরণ করবেন এবং সম্মানিত মুসলমান উনাদের ইমামতি করবেন। আর যখন মহান আল্লাহ পাক উনার দুশমন দাজ্জাল উনাকে দেখতে পাবেতখন সে এমনভাবে গলে যেতে থাকবে যেমনভাবে লবণ পানিতে গলে যায়। আর যদি হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি তাকে এমনিতেই ছেড়ে দিতেনতবুও সে এমনিতেই গলে ধ্বংস হয়ে যেতকিন্তু মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক হাতে হত্যা করাবেন। অতঃপর হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি যেই বর্শা মুবারক দ্বারা দাজ্জালকে হত্যা করবেনরক্তমাখা সেই বর্শাটি তিনি সমস্ত লোকদেরকে দেখাবেন।” (মুসলিম ৮/১৭৫মুস্তাদরকে হাকিম ৪/২২৯আহকামুশ শরীয়াহ ৪/৫৫৪ফাতহুল কাবীর ৩/৩২২জামি‘উল আহাদীছ ১৬/৩১৫জাম‘উল জাওয়ামি’মিশকাত ইত্যাদি)
মুসলমানদের যুদ্ধাস্ত্র থাকবে তরবারী এবং যুদ্ধের বাহন হবে ঘোড়া। এই সম্পর্কে সম্মানিত হাদীছ শরীফ মুবারক উনাদের মধ্যে এসেছে,
فَجَاءَهُمُ الصَّرِيْخُ اَنَّ الدَّجَّالَ قَدْ خَلَفَهُمْ فِـىْ ذَرَارِيّــِــهِمْ فَيَرْفُضُوْنَ مَا فـىْ اَيْدِيْهِمْ وَيُقْبِلُوْنَ فَيَبْعَثُوْنَ عَشَرَةَ فَوَارِسَ طَلِيْعَةً قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنِّىْ لَاَعْرِفُ اَسْـمـَاءَهُمْ وَاَسْـمـَاءَ اٰبَائِهِمْ وَاَلْوَانَ خُيُوْلِـهِمْ هُمْ خَيْرُ فَوَارِسَ عَلـٰى ظَهْرِ الْاَرْضِ يَوْمَئِذٍ.
অর্থ: “অতঃপর সম্মানিত মুসলমান উনারা এই ঘোষণা শুনতে পাবেন যেউনাদের অনুপস্থিতিতে দাজ্জাল (সদলবলে) উনাদের পরিবার-পরিজন উনাদের মধ্যে পৌঁছে গেছে। এই সংবাদ শোনামাত্রই উনাদের কাছে যা কিছু ছিল তা সেখানে ফেলে দিয়ে দাজ্জালের উদ্দেশ্যে ছুটে চলবেন এবং দশ জন সম্মানিত অশ্বারোহী উনাদেরকে অগ্রগামী হিসেবে প্রেরণ করবেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেনযেই দশজন সম্মানিত অশ্বারোহী উনাদেরকে অগ্রগামী হিসেবে পাঠানো হবেআমি নিশ্চিতভাবে উনাদের ও উনাদের বাপ-দাদা উনাদের নাম-ধাম এবং উনাদের অশ্বগুলির বর্ণ কিরূপ হবে তা অবগত আছি। উনারা হবেন সেই সময়ের সর্বোত্তম অশ্বারোহী।” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ ৮/১৭৭মুসনাদে আহমদ ১/৩৮৪মুস্তাদরকে হাকিম ৪/৪৭৭মুসনাদে আবী ইয়া’লা ৫/১৬৮মুছান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ ১৫/১৩৯জামি‘উল আহাদীছ ৩৭/২২৯জামি‘উল উছূল ১০/৭৮৭৪মুসনাদুছ ছহাবাহ ২৫/৪২৭মিশকাত শরীফ ইত্যাদি)
অন্য সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
فَبَيْنَمَا هُمْ يَقْتَسِمُوْنَ الْغَنَائِمَ قَدْ عَلَّقُوْا سُيُوْفَهُمْ بِالزَّيْتُوْنِ اِذْ صَاحَ فِيْهِمُ الشَّيْطَانُ اِنَّ الْمَسِيْحَ قَدْ خَلَفَكُمْ فِـىْ اَهْلِـيْكُمْ.
অর্থ: “অতঃপর যখন সম্মানিত মুসলমান উনারা গনীমতের মাল-সম্পদ বণ্টন করতে থাকবেন এবং উনাদের তরবারিসমূহ যাইতূন গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখবেনঠিক এমতাবস্থায় হঠাৎ শয়তান এই ঘোষণা দিবে যেআপনাদের অনুপস্থিতিতে মাসীহ দাজ্জাল আপনাদের বাড়ি-ঘরে ঢুকে পড়েছে।” (মুসলিম শরীফ ৮/১৭৫ইবনে হিব্বান ১৫/২২৪সুনানুল ওয়ারিদা ৬/১১১৫আহকামুশ শরীয়াহ ৪/৫৫৪আল ফাতহুল কাবীর ৩/৩২২জামি‘উল আহাদীছ ১৬/৩১৫জাম‘উল জাওয়ামি’মুসনাদুছ ছহাবাহ ৫/৩৭২মিশকাত শরীফ ইত্যাদি)
তাহলে এখানে কতগুলো প্রশ্ন আসে যেহযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম উনার পূর্বে এতো বড় ইনকিলাব বা পরিবর্তন কে করবেনকার মাধ্যমে বিষয়টি সংঘটিত হবেকে এই সমস্ত পরিবর্তন সাধন করবেন?
কে সেই মহান খলীফা আলাইহিস সালাম যিনি সারা বিশ্ব থেকে সমস্ত ফিতনা-ফাসাদ বেপর্দা-বেহায়া মিটিয়ে দিয়েকাফির-মুশরিকদের সমস্ত অত্যাধুনিক অস্ত্র-শস্ত্র ধ্বংস করে দিয়েতাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েতাদেরকে চির অপমানিত ও লাঞ্ছিত করেতাদেরকে পর্যুদস্ত করে দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত খিলাফত আ’লা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেনতিনি আর কেউ ননতিনি হচ্ছেন সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ১০ম খলীফাসাইয়্যিদুল খুলাফা পবিত্র রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!সেটাই আমরা দেখতে পাচ্ছিউনার মক্ববূল মুনাজাত শরীফ উনার বদৌলতে একের পর এক খোদায়ী অযাবে-গযবে পরে একশত কোটিরও অধিক কাফির-মুশরকিরা তাদের ঘর-বাড়িস্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি এবং অত্যাধুনিক অস্ত্র-সস্ত্রসহ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। বর্তমানে আরো লক্ষ লক্ষকোটি কোটি কাফির-মুশরকিরা নিশ্চিহ্ন হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে আরো হতেই থাকবে। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি উনার খোদায়ী জবান মুবারক-এ সম্মানিত ক্বওল মুবারক উচ্চারণ করেছেন, ‘কাফির-মুশরিকরা পরিপূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে এবং তারা পূর্বের ন্যায় সম্মানিত মুসলমান উনাদের গোলামী করবে।’ সুবহানাল্লাহ!
কাজেই তিনি কাফির-মুশরিকদের সমস্ত অত্যাধুনিক অস্ত্রপাতি ধ্বংস করে দিয়েতাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে অতিশীঘ্রই এদেশ ও সারা পৃথিবীতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেন। সেটাই আমরা দেখতে পাই উনার মুবারক শানে সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضَرَتْ اَبِىْ سَعِيْدِ ۨ الْـخُدْرِىِّ رَضِىَ اللّٰهُ تَعَالـٰی عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَـخْرُجُ رَجُلٌ مِّنْ اَهْلِ بَيْتِىْ عِنْدَ اِنْقَطَاعٍ مِّنَ الزَّمَانِ وَظُهُوْرٍ مِّنَ الْفِتَنِ رَجُلٌ يُّقَالُ لَهُ السَّفَاحُ فَيَكُوْنُ اِعْطَاؤُهُ الْمَالَ حَثْيًا.
অর্থ: “হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেনযামানার ক্রান্তিলগ্নেযামানার শেষের দিকে যখন ফিতনা-ফাসাদ চরমভাবে প্রকাশ পাবে তথা বেপর্দা-বেহায়াঅত্যাচার-অবিচারযুলুম-নির্যাতনেবেইনসাফীতে পুরো পৃথিবী ভরে যাবেকোথাও সম্মানিত ইনসাফ উনার লেশমাত্র অবশিষ্ট থাকবে নাতখন আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে আমার একজন খাছ আওলাদএকজন মহান খলীফা আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক নিবেন। তিনি এমন একজন মহান ব্যক্তিত্ব মুবারক এমন একজন মহান খলীফা আলাইহিস সালাম- উনাকে আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম বলা হবে। তিনি সমস্ত বাতিলী শক্তি তথা কাফির-মুশরিকইহুদী-খ্রিস্টানবৌদ্ধমজুসীমুনাফিক ও উলামায়ে সূ’দেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েসমস্ত ফিতনা-ফাসাদযুলুম-নির্যাতনঅত্যাচার-অবিচারবেইনসাফীকে মিটিয়ে দিয়ে দুনিয়ার যমীনে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করবেন তথা খিলাফত জারি করবেন। আর তিনি উনার দু’হাত মুবারক ভরে অঢেলবেহিসাব ধন-সম্পদ বিলিয়ে দিবেন।” সুবহানাল্লাহ! (দালায়িলুন ৬/৫১৪খাছায়িছুল কুবরা ২/২০৩আস সুনানুল ওয়ারিদাআবু নাঈমআল ফিতানমাজমাউঝ ঝাওয়াইদ ৭/৬১১সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১০/৯২বিদায়া-নিহায়া ৬/২৪৮ পৃষ্ঠা ইত্যাদি)
কাজেই আবারো অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যেমামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি অতিশীঘ্রই সারা পৃথিবীতেসারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেনই করবেন ইনশাআল্লাহ।

অষ্টম প্রমাণ

عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰی عَنْهُ قَالَ وَعَدَنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ غَزْوَةَ الْـهِنْدِ فَاِنْ اَدْرَكْتُهَا اُنْفِقْ فِيْهَا نَفْسِىْ وَمَالِىْ وَاِنْ قُتِلْتُ كُنْتُ اَفْضَلَ الشُّهَدَاءِ وَاِنْ رَجَعْتُ فَاَنَا حَضْرَتْ اَبُوْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰی عَنْهُ الْمُحَرَّرُ.
অর্থ: “সর্বাধিক সম্মানিত হাদীছ শরীফ বর্ণনাকারী বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেননূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের থেকে হিন্দুস্তান তথা ভারতের সম্মানিত জিহাদ মুবারক সম্পর্কে ওয়াদা তথা প্রতিশ্রুতি মুবারক গ্রহণ করেন। যদি আমি সেই সম্মানিত জিহাদ মুবারক পাইতাহলে আমি সেই সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ আমার সম্মানিত জান মুবারক এবং সমস্ত মাল-সম্পদ কুরবান করে দিবো। আর আমি যদি সেই সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ উপস্থিত হয়ে সম্মানিত শাহাদাত মুবারক গ্রহণ করি তাহলে আমি হবো সর্বশ্রেষ্ঠ শহীদ। আর আমি যদি সম্মানিত জিহাদ মুবারক উনার থেকে ফিরে আসি (বিজয়ী বেশে) তাহলে আমি হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত।” সুবহানাল্লাহ!
(নাসাঈ শরীফসুনানে সা‘ঈদ ইবনে মানছূর ২/১৪৫মুসনাদে বাযযার ১৫/৩০২সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ ৪/৩০২আস সুনানুল কুবরা লিলবাইহাক্বী ৯/১৭৬ ইত্যাদি)
‘পবিত্র নাসাঈ শরীফসহ’ আরো অন্যান্য বিশুদ্ধ হাদীছ শরীফ উনাদের বিশ্বখ্যাত কিতাবসমূহে বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত হয়েছে,
 عَنْ حَضْرَتْ ثَوْبَانَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰی عَنْهُ مَوْلـٰى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عِصَابَتَانِ مِنْ اُمَّتِىْ اَحْرَزَهُـمَا اللهُ مِنَ النَّارِ عِصَابَةٌ تَغْزُو الْـهِنْدَ وَعِصَابَةٌ تَكُوْنُ مَعَ عِيْسَى ابْنِ مَرْيَـمَ عَلَيْهِمَا السَّلاَمُ.
অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ খাদিম হযরত ছাওবান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেননূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেনমহান আল্লাহ পাক তিনি আমার সম্মানিত উম্মত উনাদের সম্মানিত দু’টি দল মুবারক উনাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দান করেছেন। সুবহানাল্লাহ! আর সেই সম্মানিত দুটি দল মুবারক হচ্ছেনএক. যাঁরা হিন্দুস্তান তথা ভারতের মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করবেন। সুবহানাল্লাহ! দুই. আর অপর দলটি হচ্ছেনযাঁরা জলীলুল ক্বদর রসূল হযরত ঈসা ইবনে মারইয়াম আলাইহাস সালাম উনার সাথে থাকবেন।” সুবহানাল্লাহ! (নাসাঈ শরীফমুসনাদে আহমদ ৫/২৬৮আস সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ ৪/৩৩০আস সুনানুল কুবরা লিল বাইহাক্বী ৯/১৭৬আল মু’জামুল আওসাত্ব লিত্ব ত্বিবরনী ৭/২৩আল জিহাদ লিইবনে আছিম ২/৬৬৫মুসনাদে শামিয়্যীন ৩/৯০ফায়যুল ক্বদীর ৪/৪১৯মাজমাউঝ ঝাওয়াইদ ৫/৩৩৮জামিউছ ছগীর ২/৯৩আল ফাতহুল কাবীর ২/২১৭দায়লামী শরীফ ৩/৩৮তুহফাতুল আশরাফ ২/১৩৩জামিউল আহাদীছ ১৪/২১২জামিউল উছূল ৯/৬৭৭১জামউল জাওয়ামি’ ১ম খ-আল তারীখুল কাবীর লিল বুখারী ৬/৭৩তাহযীবুল কামাল ৩৩/১৫২সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১০/৮০মুখতাছারে তারীখে দিমাশক্ব ৬/৪৬৭ ইত্যাদি)
          সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত হিন্দুস্তান তথা ভারতের মুশরিকদের বিরুদ্ধে যারা সম্মানিত জিহাদ মুবারক করবেনসেই সম্মানিত দল মুবারক উনার সাইয়্যিদ হচ্ছেনরাহবার হচ্ছেনখলীফাতুল মুসলিমীনমামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
তাইতো মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি উনার খোদায়ী জবান মুবারক-এ ইরশাদ মুবারক করেছেন, “মুসলমান উনাদের চিন্তার কোনো কারণ নেইআমরাই হিন্দুস্তান তথা ভারত জয় করবো।” সুবহানাল্লাহ!
বাংলাদেশে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এই সম্মানিত জিহাদ মুবারক পরিচালিত হবে। সেই সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার সম্মানিত পতাকা তলে থাকবেন পাকিস্তানআফগানিস্তানইরান তথা বিশ্বের সমস্ত ঈমানদারমুসলমানগণ উনারা। আর হিন্দু-মুশরিকদের সাথে থাকবে সমস্ত ইহুদীখ্রিস্টানকাফিরবৌদ্ধমজূসীমুশরিকওহাবীমুনাফিক্বরা। এটা হবে এক কঠিন ভয়াবহ জিহাদ মুবারক। পবিত্র রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি তো উনার মক্ববূল মুনাজাত শরীফ উনার মাধ্যমে একের পর এক খোদায়ী আযাব-গযব প্রেরণ করে কাফির-মুশরিকদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছেনইশুধু তাই নয়সেই সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ তিনি সরাসরি হিন্দু-মুশরিকদেরকে চিরতরে পরিপূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন করে দিবেন এবং নিশ্চিহ্ন করে দিবেন ওই সকল ইহুদীখ্রিস্টানকাফিরবৌদ্ধমজূসীমুশরিকওহাবীমুনাফিক্বদেরকেযারা এই সমস্ত অস্পৃশ্যযবনম্লেচ্ছনাপাক হিন্দু-মুশরিকদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করবে। হিন্দুধর্ম পৃথিবী থেকে চিরতরে বিদায় নিবে। সুবহানাল্লাহ!
 তখন হিন্দুস্তান তথা গোটা ভারত তো সম্মানিত মুসলমান উনাদের দখলে আসবেইশুধু তাই নয়এরপর অতিসহজেই সারা পৃথিবী সম্মানিত মুসলমান উনাদের দখলে চলে আসবে। সুবহানাল্লাহ! তখন গোটা বিশ্ব থাকবে সাইয়্যিদুল মুজাদ্দিদীনইমামুল মুজাদ্দিদীনসাইয়্যিদুল খুলাফাআবুল খুলাফাখলীফাতুল মুসলিমীনআমীরুল মু’মিনীনপবিত্র রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক উনার অধীনে। উনার সম্মানিত হুকুম মুবারক-এ চলবে সারা বিশ্বসারা কায়িনাত। বাংলাদেশ হবেসারা পৃথিবীরসারা কায়িনাতের কেন্দ্রবিন্দু। তখন এই পৃথিবী হবে সম্মানিত জান্নাত উনার একখানা অংশ। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি অতিশীঘ্রই সারা পৃথিবীতেসারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেনই করবেন ইনশাআল্লাহ।
اَلنِّـهَايَةُ (আন নিহায়াহ)
মূলকথা হচ্ছেউপরোক্ত সম্মানিত কুরআন শরীফসম্মানিত হাদীছ শরীফসম্মানিত ইজমা ও ক্বিয়াস শরীফ উনাদের বিস্তারিত সর্বজনমান্যগ্রহণযোগ্যনির্ভরযোগ্য ও অকাট্য সম্মানিত দলীল-আদিল্লাহ মুবারক উনাদের মাধ্যমে অত্যন্ত সুস্পষ্ট ও অকাট্যভাবে প্রমাণিত হলো যেখলীফায়ে আশিরমুজাদ্দিদে আ’যমসাইয়্যিদুল খুলাফা পবিত্র রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি অতিশীঘ্রই বাংলার পবিত্র ভূমিতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠিত করবেনই করবেন ইনশাআল্লাহ। অতঃপর সেই সম্মানিত আযীমুশ শান খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক পাকিস্তানআফগানিস্তানভারতএশিয়াএমনকি সারা পৃথিবীতেসারা কায়িনাতে ছড়িয়ে পড়বে। তিনি হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম উনার ন্যায় সারা পৃথিবীতো অবশ্যইএমনকি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিপূর্ণ হাক্বীক্বী ক্বায়িম-মাক্বাম হয়ে সীমাহীন প্রতাপ ও ব্যাপকতার সাথে সুদীর্ঘ ৩০-৪০ বছর যাবৎ সারা পৃথিবীব্যাপীসারা কায়িনাতব্যাপী সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক পরিচালনা করবেন। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়উনার প্রতিষ্ঠিত সেই মহাসম্মানিত খিলাফত মুবারকই উনার সুমহান আওলাদ১১তম খলীফাখলীফাতুল উমামআল মানছূর হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার এবং উনার পরবর্তী মুবারক বংশধর আলাইহিমুস সালাম উনাদের মাধ্যম দিয়ে ১২তম খলীফা হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম উনার পর্যন্ত যেয়ে পৌঁছবে। আর তিনিও হবেন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম উনার মুবারক বংশধর আলাইহিমুস সালাম উনাদের অর্ন্তভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
          সম্মানিত কুরআন শরীফসম্মানিত হাদীছ শরীফসম্মানিত ইজমা ও ক্বিয়াস শরীফ উনাদের এত অধিক সুস্পষ্টচির অকাট্যনির্ভরযোগ্য ও সর্বজনমান্য সম্মানিত দলীল-আদিল্লাহভিত্তিক প্রমাণের পরও যে সকল লোক আলিম-উলামাসূফী-দরবেশমাওলানামুফতীমুহাদ্দিসমুফাসসিরফক্বীহ নাম ধারণ করে এই ব্যাপারে চু-চেরাকী¡ল-ক্বাল করেতা মূলত অজ্ঞতার কারণেই। তাদের জন্য এরূপ করাটাই স্বাভাবিক। কারণ তাদের গুরু মুনাফিক্বরাও এরূপই করতো।
এ প্রসঙ্গে খন্দকের জিহাদের ইতিহাস বিশেষভাবে স্মরণযোগ্য। ওই সময় নূরে মুজাস্সামহাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পরিখা খননকালে ইরশাদ মুবারক করেছিলেনআমি রোম ও পারস্যের প্রাসাদগুলো দেখতে পাচ্ছি এবং এই রাজ্যগুলো আমাদের জয় হবে। কাজেই আপনারা সুসংবাদ গ্রহণ করুনখুশি প্রকাশ করুন। এতে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা পরম খুশি হন এবং বলেন উঠেন, ‘আলহামদুল্লিাহ’- এটা সত্য প্রতিশ্রুতি মুবারক। তখন মুনাফিক্বরা বলছিলো, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কা- কারখানা কি তোমাদের মনে বিস্ময়ের সঞ্চার করেছেএই সব মিথ্যা প্রলোভন ও মিথ্যা প্রতিশ্রুতি। উনার কা- দেখোমদীনা শরীফ-এ অবস্থান করে তিনি বলছেন যেতিনি হীরা রাজ্যের রাজ-প্রাসাদ ও পারস্য সাম্রাজ্যের শহরগুলো দেখছেন। শুধু কি তাইওই রাজ্যগুলো তোমরা জয় করবে। এগুলো মিথ্যা প্রলোভন ও মিথ্যা প্রতিশ্রুতি। নিজেদের দুরবস্থা তো সম্যক উপলব্ধি করতে পারছো। তোমরা ভীত ও সন্ত্রস্ত হয়ে এখন আত্মরক্ষার জন্যে খন্দক খুঁড়ছো। বাইরে বের হয়ে মুকাবিলার সাহস পাচ্ছো না। শত্রুর ভয়ে এদিক ওদিক বিচরণ করতে পারো না।” না‘ঊযুবিল্লাহ!
তারা ঠাট্টাচ্ছলে আরো বলছিলো যে, “আমরা জান বাঁচানোর জন্যে পরিখা খনন করছি আর উনি আমাদেরকে পারস্য ও রোমান সাম্রাজ্য বিজয়ের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।” না‘ঊযুবিল্লাহ!
 সত্যের বিজয় ও কাফির-মুশরিকদের নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে মুনাফিক্বদের এই অদ্ভুত বিশ্বাসসংকীর্ণ দৃষ্টি ও জিহালতীর প্রতিবাদ স্বরূপ মহান আল্লাহ পাক তিনি নাযিল করলেন,
قُلِ اللّٰهُمَّ مٰلِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِى الْمُلْكَ مَنْ تَشَاءُ وَتَنْزِعُ الْمُلْكَ مِـمَّنْ تَشَاءُ وَتُعِزُّ مَنْ تَشَاءُ وَتُذِلُّ مَنْ تَشَاءُ بِيَدِكَ الْـخَيْرُ اِنَّكَ عَلـٰى كُـلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ .
অর্থ: “হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামআপনি বলুনআয় আল্লাহ পাকআপনি সারা পৃথিবীসারা কায়িনাতের একক মালিক। আপনি যাকে ইচ্ছা তাকে রাজ্য বা পৃথিবীর কর্তৃত্ব মুবারক দান করেন এবং যার নিকট থেকে ইচ্ছা রাজ্য ছিনিয়ে নেন। আর যাকে ইচ্ছা শক্তিশালী করেন এবং যাকে ইচ্ছা পদানত করেন। আপনার হাত মুবারকেই সমস্ত কল্যাণ। নিশ্চয়ই আপনি সর্ববিষয়ের উপর ক্ষমতাবান।” (সম্মানিত সূরা আল ‘ইমরান শরীফ: সম্মানিত আয়াত শরীফ ২৬)
সুতরাং কাফিরমুশরিকমুনাফিক্ব ও তাদের অনুসারীরা যেটাই চিন্তা করুক না কেনবলে বেড়াক না কেনÑ মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি কাফির-মুশরিকমুনাফিক্ব ও উলামায়ে সূ’দেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে অতিশীঘ্রই বাংলাদেশ তো অবশ্যইএমনকি সারা পৃথিবীতেসারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেনই করবেন ইনশাআল্লাহ।
তাই আমরা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট প্রার্থনা করবোতিনি যেন আমাদের সবাইকে খলীফায়ে আশিরসাইয়্যিদুল খুলাফাআবুল খুলাফাআওলাদে রসূল মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনাকে চেনারউনাকে খলীফা হিসেবে মেনে নেয়ারউনার সম্মানিত হাত মুবারক-এ সম্মানিত খিলাফত মুবারক উনার বায়াত গ্রহণ করারউনাকে অনুসরণ-অনুকরণ করারউনার মুবারক আদেশ-নির্দেশ মুতাবিক চলারউনার হাক্বীক্বী গোলামী করার এবং হাক্বীক্বী রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করার তাওফীক্ব দান করুন। (আমীন)
পিছনের কভার পেইজের লেখা
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আমার পরে হযরত খলীফা আলাইহিমুস সালাম উনাদের যুগহযরত খলীফা আলাইহিমুস সালাম উনাদের পর আমীর-উমরাদের যুগআমীর-উমারাদের পর রাজা-বাদশাহদের যুগ তথা রাজতন্ত্র। রাজতন্ত্রের পর হবে চরম অত্যাচারীযালিমস্বৈরাচারীবিভ্রান্তকর শাসকদের শাসন ব্যবস্থা তথা জোর জবরদস্তিমূলক শাসন ব্যবস্থাযুলুমতন্ত্র তথা সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্র। অতঃপর আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে আমার একজন আখাচ্ছুল খাছ আওলাদএকজন মহান খলীফা আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক নিবেন। তিনি দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক নিয়ে পুরো পৃথিবীসারা কায়িনাত সম্মানিত ইনসাফ মুবারক দ্বারা পরিপূর্ণ করে দিবেন তথা সারা বিশ্বেসারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী শরীফ ৫/৪৫৬আল ইসতিয়াব ১/১৩৭)
সেটাই আমরা দেখতে পাচ্ছিনূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর হযরত খলীফা আলাইহিমুস সালাম উনারা সম্মানিত খিলাফত মুবারক পরিচালনা করেছেন। এরপর আমীর-উমরাদের যুগ এসেছেআমীর-উমারাদের পর এসেছে রাজা-বাদশাহদের যুগ তথা রাজতন্ত্র। রাজতন্ত্রের পর বর্তমানে সারা বিশ্বে চলছে চরম অত্যাচারীযালিমস্বৈরাচারীবিভ্রান্তকর শাসকদের শাসন ব্যবস্থা তথা জোর জবরদস্তিমূলক শাসন ব্যবস্থাযুলুমতন্ত্র তথা সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্র।
আর এই সময়েই দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ১০ম খলীফাসাইয়্যিদুল খুলাফাআবুল খুলাফাসম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! অতএবউনার সম্মানার্থে অতিশীঘ্রই এদেশেসারা পৃথিবীতেসারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠা হবেই হবে ইনশাআল্লাহ।
মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদের সবাইকে মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনাকে চেনারউনাকে খলীফা হিসেবে মেনে নেয়ারউনার সম্মানিত হাত মুবারক-এ সম্মানিত খিলাফত মুবারক উনার বায়াত গ্রহণ করারউনাকে অনুসরণ-অনুকরণ করারউনার মুবারক আদেশ-নির্দেশ মুতাবিক চলারউনার হাক্বীক্বী গোলামী করার এবং হাক্বীক্বী রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করার তাওফীক্ব দান করুন। (আমীন)

0 Comments: