পিডিএফ লিংক- https://drive.google.com/open?id=1BVNRKm1mdZD8r0zdui4WzMVhv3JwZJCX
খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম প্রথম খণ্ড ( পর্ব -২) |
মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আওলাদে রসূল মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম উনার মুবারক শানে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ سَعِيْدِ ۨ الْـخُدْرِىّ رَضِىَ اللهُ تَعَالىٰ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَـخْرُجُ رَجُلٌ مّـِنْ اَهْلِ بَيْتِىْ عِنْدَ اِنْقَطَاعٍ مّـِنَ الزَّمَانِ وَظُهُوْرٌ مّـِنَ الْفِتَنِ رَجُلٌ يُّقَالُ لَهُ السَّفَّاحُ فَيَكُوْنُ اِعْطَاؤُهُ الْمَالَ حَثْيًا.
অর্থ : “হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যামানার ক্রান্তিলগ্নে, যামানার শেষের দিকে যখন ফিতনা-ফাসাদসমূহ চরমভাবে প্রকাশ পাবে তথা বেপর্দা-বেহায়া, অত্যাচার-অবিচার, যুুলুম-নির্যাতনে, বে-ইনসাফীতে পুরো পৃথিবী ভরে যাবে, কোথাও পবিত্র ইনসাফ উনার লেশ মাত্র অবশিষ্ট থাকবে না। তখন আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে আমার একজন খাছ আওলাদ, একজন মহান খলীফা আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক নিবেন। তিনি এমন একজন মহান ব্যক্তিত্ব, এমন একজন মহান খলীফা উনাকে ‘হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম’ বলা হবে। অর্থাৎ তিনি সমস্ত বাতিলী শক্তি তথা কাফির-মুশরিক, ইহুদী-খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, মজুসী, মুনাফিক্ব¡ ও উলামায়ে সূ’দেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে, সমস্ত ফিতনা-ফাসাদ, যুুলুম-নির্যাতন, অত্যাচার-অবিচার, বে-ইনসাফীকে মিটিয়ে দিয়ে সারা পৃথিবীতে, সারা কায়িনাতে পবিত্র ইনসাফ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেন, সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক জারি করবেন। আর তিনি উনার দু’হাত মুবারক ভরে অঢেল, বেহিসাব ধন-সম্পদ বিলিয়ে দিবেন।” (সুবহানাল্লাহ) (দালায়িলুন নুবুওওয়াহ লিল বাইহাক্বী ৬ষ্ঠ জিলদ ৫১৪ পৃষ্ঠা, খাছায়িছুল কুবরা লিস সুয়ূত্বী ২য় জিলদ ২০৩ পৃষ্ঠা, আস সুনানুল ওয়ারিদা ফিল ফিতান, আহমদ, জামিউল আহদীছ, আবূ নাঈম, আল ফিতান, বিদায়া-নিহায়া ৬ষ্ঠ জিলদ ২৪৮ পৃষ্ঠা ইত্যাদি)
আলোচ্য হাদীছ শরীফ মুবারক উনার মধ্যে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে ‘আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম’ বলা হয়েছে। তিনিই হচ্ছেন আলোচ্য সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা আওলাদে রসূল হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম। (সুবহানাল্লাহ)
আমরা যদি পবিত্র হাদীছ শরীফখানা নিয়ে একটু চিন্তা-ফিকির করি তাহলেই বিষয়টি সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে। আলোচ্য হাদীছ শরীফ মুবারক উনার মধ্যে বলা হয়েছে-
এক. عِنْدَ اِنْقَطَاع ٍ مّـِنَ الزَّمَانِ “যামানার ক্রান্তিলগ্নে, যামানার শেষের দিকে।”
অর্থাৎ মহান খলীফা আওলাদে রসূল হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি যামানার ক্রান্তিলগ্নে, যামানার শেষের দিকে তাশরীফ মুবারক নিবেন। এই কথা মুবারক দ্বারা এই বিষয়টি রদ বা বাতিল করে দেয়া হলো যে, মহান খলীফা আওলাদে রসূল হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি যামানার শুরুর দিকেও আসবেন না, যামানার মাঝখানেও আসবেন না অথবা যামানার একবারে শেষেও আসবেন না। কারণ যামানার একবারে শেষে তো হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম তিনি আসবেন। আর মহান খলীফা, আওলাদে রসূল, হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি যামানার শেষের দিকে তাশরীফ মুবারক নিবেন। (সুবহানাল্লাহ)
আমরা জানি, কোন রাস্তা, কোন কাঠি বা কোন বস্তুর শেষের দিক বলতে বুঝায় উক্ত রাস্তা, কাঠি বা বস্তুর চার ভাগের তৃতীয় ভাগের শেষের দিক অথবা চতুর্থ ভাগের শুরুর দিক। তাহলে এখানে যামানার শেষের দিক কোনটি?
আখিরী যামানা শুরু হয়েছে এক হাজার হিজরীর পর থেকে। তাহলে যামানার শেষের দিক বলতে এখানে অবশ্যই অবশ্যই এক হাজার হিজরীর পর বর্তমান পঞ্চদশ হিজরীর দিকে ইঙ্গিত করতেছে। কারণ এক হাজার হিজরীর আগে কখনও যামানার শেষের দিক হতে পারে না। যামানার শেষের দিক হতে হলে অবশ্যই অবশ্যই এক হাজার হিজরীর পরে হতে হবে। আর এই বিষয়টি সকলের জানা রয়েছে যে, এক হাজার হিজরীর পর থেকে এই পর্যন্ত ‘আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম’ লক্বব মুবারক উনার অধিকারী কোন খলীফা দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ নেননি; খিলাফত মুবারক পরিচালনাও করেননি। তাহলে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত, সেই মহান খলীফা, আওলাদে রসূল, হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি কে? সুতরাং বর্তমান পঞ্চদশ হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা ‘হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম’। (সুবহানাল্লাহ)
দুই. আলোচ্য সম্মানিত হাদীছ শরীফ মুবারক উনার মধ্যে আরো বলা হয়েছে, ظُهُوْرٌ مّـِنَ الْفِتَنِ “যখন ফিতনা-ফাসাদসমূহ চরমভাবে প্রকাশ পাবে।”
এখানে اَلْفِتَنُ শব্দটি উল্লেখ করা হয়েছে। আর اَلْفِتَنُ শব্দটি হচ্ছেÑ اَلْفِتْنَةُ শব্দের জমা’ বা বহুবচন। যার অর্থ হচ্ছে, ফিতনা-ফাসাদসমূহ। অর্থাৎ আলোচ্য হাদীছ শরীফ মুবারক উনার মধ্যে বলা হয়েছে, যখন ফিতনা-ফাসাদসমূহ চরমভাবে প্রকাশ পাবে তখন মহান খলীফা, আওলাদে রসূল হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক নিবেন। (সুবহানাল্লাহ)
এখন বলার বিষয় হচ্ছে, বর্তমান যামানায় যেভাবে ফিতনা-ফাসাদসমূহ চরমভাবে প্রকাশ পেয়েছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিছাল শরীফ মুবারক উনার পর আর কখনও কি এরূপ চরমভাবে ফিতনা-ফাসাদসমূহ প্রকাশ পেয়েছিল? না কস্মিনকালেও নয়। আমরা যদি আজ থেকে ৩০/৪০ বছর পূর্বের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাবো যে, বর্তমানে যেরূপ বেপর্দা-বেহায়া, খেলাধুলা, মদ-জুয়া, সুদ-ঘুষ, গান-বাজনা, টিভি, ছবি ইত্যাদি হারাম-নাজায়িয কার্যকলাপ হচ্ছে তখন এরূপ হারাম-নাজায়িয কার্যকলাপ ছিল না।
তখন বেপর্দা-বেহায়া, টিভি, ছবি, গান-বাজনা, সুদ-ঘুষ ছিল না বললেই চলে। শুধু তাই নয়, বর্তমান যামানায় পবিত্র কা’বা শরীফ ও রওজা শরীফ উনাদের ভিতর সিসি টিভি রয়েছে। ইহুদী-নাছারা, হিন্দু, বৌদ্ধ, মজূসী, মুশরিকরা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শান-মান নিয়ে চু-চেরা, ক্বিল-ক্বাল করছে, উনার শান মুবারক উনার খিলাফ ব্যঙ্গচিত্র করে যাচ্ছে। (নাঊযুবিল্লাহ) হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মুবারক শানের খিলাফ ব্যঙ্গচিত্র করে যাচ্ছে। (নাঊযুবিল্লাহ) এমনকি তারা ‘পবিত্র কুরআন শরীফ’ উনাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাড়খার করে দিতে চাচ্ছে এবং এই জন্য আলাদা দিবসও পালন করে যাচ্ছে। (নাঊযুবিল্লাহ)
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিছাল শরীফ মুবারক উনার পর পৃথিবীর ইতিহাসে আর কখনও কি এরূপ কঠিন ফিতনার অবতারণা হয়েছিল? একজন মুসলমানের জন্য, একজন ঈমানদারের জন্য এর চেয়েও কি আর কোন বড় কঠিন ফিতনা থাকতে পারে?
এর জবাবে অবশ্যই প্রত্যেক বিবেকবান ব্যক্তি বলবেন যে, না, কস্মিনকালেও এরূপ হয়নি এবং একজন মুসলমান উনার জন্য, একজন ঈমানদার উনার জন্য এর চেয়েও আর কোন বড় কঠিন ফিতনা থাকতে পারে না। যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে একথা অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছাল শরীফ মুবারক উনার পর পৃথিবীর ইতিহাসে বর্তমান যামানার ফিতনাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কঠিন এবং ভয়ঙ্কর ফিতনা।
শুধু তাই নয়, বর্তমান যামানার যে ফিতনা-ফাসাদ রয়েছে তা দাজ্জালের ফিতনার চেয়েও অনেক বড় কঠিন এবং ভয়ঙ্কর। এ সম্পর্কে হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত ইমাম গাযযালী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার লিখিত বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘বিদায়াতুল হিদায়া’তে এসেছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اَنَا مِنْ غَيْرِ الدَّجَّالِ اَخْوَفُ عَلَيْكُمْ مّـِنَ الدَّجَّالِ فَقِيْلَ وَمَا هُوَ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ عُلَمَاءُ السُّوْءِ.
অর্থ : “আমি তোমাদের ব্যাপারে এক সম্প্রদায়কে দাজ্জালের চেয়েও অধিক বেশি ভয়ঙ্কর মনে করি এবং এই ব্যাপারে অধিক চিন্তিত রয়েছি (যাদের ফিতনা হবে দাজ্জালের ফিতনার চেয়ে অনেক বড় কঠিন ও ভয়ঙ্কর)। তখন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের থেকে একজন জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সেটা কোন সম্প্রদায়? জবাবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, উলামায়ে সূ’। অর্থাৎ উলামায়ে সূ’ বা ধর্মব্যবসায়ী মাওলানাদের ফিতনা দাজ্জালের ফিতনার চেয়ে অনেক বড় কঠিন ও ভয়ঙ্কর।”
এখান থেকে স্পষ্টভাবে বুঝা যাচ্ছে যে, উলামায়ে সূ’ বা ধর্মব্যবসায়ী মাওলানাদের ফিতনা দাজ্জালের ফিতনার চেয়ে অনেক অনেক বেশি ভয়ঙ্কর ও কঠিন। কারণ দাজ্জালের কপালে কাফির লেখা থাকবে আর প্রত্যেক ঈমানদার, মুসলমান উনারা তা পড়তে পারবেন এবং দাজ্জালের ফিতনা থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করবেন। কিন্তু বর্তমানে উলামায়ে সূ’রা মুসলমানদের সম্মানিত ঈমান উনাকে এমনভাবে হরণ করে নিচ্ছে যে, তারা কোন টেরই পাচ্ছে না। তাদের অজান্তেই তাদের ঈমান বিনষ্ট করে দিচ্ছে। তারা উলামায়ে সূ’দের ফিতনা থেকে বাঁচার চেষ্টাও করছে না। (নাঊযুবিল্লাহ)
সুতরাং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিছাল শরীফ মুবারক উনার পর পৃথিবীর ইতিহাসে বর্তমান যামানার ফিতনাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কঠিন এবং ভয়ঙ্কর ফিতনা। শুধু তাই নয়, বর্তমান যামানায় যে ফিতনা-ফাসাদ রয়েছে তা দাজ্জালের ফিতনার চেয়েও অনেক বড় কঠিন এবং ভয়ঙ্কর।
আর এই চরম ফিতনা বেষ্টিত যামানাতেই দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি।
সুতরাং মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আওলাদে রসূল মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন পবিত্র হাদীছ শরীফ মুবারক উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা ‘হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম’। (সুবহানাল্লাহ)
তিন. رَجُلٌ مّـِنْ اَهْلِ بَيْتِىْ অর্থ : নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “(মহান খলীফা, আওলাদে রসূল হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম) তিনি আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে আমার একজন খাছ আওলাদ হবেন।”
অর্থাৎ তিনি আওলাদে রসূল হবেন তথা ইমামুছ ছানী হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম এবং ইমামুছ ছালিছ হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদের মুবারক বংশধর হবেন। (সুবহানাল্লাহ)
আর ইতোপূর্বে যামানার ক্রান্তিলগ্নও আসেনি, বর্তমান যামানার মতো চরম ফিতনা-ফাসাদের যুগও আসেনি এবং আওলাদে রসূল তথা ইমামুছ ছানী হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম এবং ইমামুছ ছালিছ হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদের মুবারক বংশধর থেকে ‘আস সাফফাহ’ লক্বব মুবারক উনার অধিকারী কোন খলীফা দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ নেননি; সম্মানিত খিলাফত মুবারক পরিচালনাও করেননি।
অন্যদিকে বর্তমান যামানাটা হচ্ছে- (১) যামানার ক্রান্তিলগ্ন, যামানার শেষের দিক, (২) বর্তমান যামানায় চরমভাবে ফিতনা-ফাসাদসমূহ প্রকাশ পেয়েছে; ইতোপূর্বে আর কখনও এরূপ চরমভাবে ফিতনা-ফাসাদসমূহ প্রকাশ পায়নি। (৩) আর এই কঠিন পরিস্থিতিতে, এই কঠিন সময়েই হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যমণি, আওলাদে রসূল, আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী মহান খলীফা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন। (সুবহানাল্লাহ)
সুতরাং এবারও সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা আওলাদে রসূল হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম। (সুবহানাল্লাহ)
চার. আলোচ্য হাদীছ শরীফ মুবারক উনার মধ্যে আরো বলা হয়েছে, رَجُلٌ يُّقَالُ لَهُ السَّفَّاحُ “তিনি এমন একজন মহান ব্যক্তিত্ব মুবারক, এমন একজন মহান খলীফা হবেন যে, উনাকে ‘হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম’ বলা হবে।”
যা একখানা লক্বব মুবারক। এই লক্বব মুবারক উনার অসংখ্য অগণিত সুন্দর সুন্দর অর্থ মুবারক রয়েছে- তার মধ্যে দুটি বিশেষ অর্থ মুবারক হচ্ছে- অসীম দাতা এবং কাফির-মুশরিক, ইহুদী-নাছারা, গুমরাহ, মুনাফিক্ব¡ ও উলামায়ে সূ’দেরকে নিশ্চিহ্নকারী। (সুবহানাল্লাহ)
আমরা এদিক থেকে লক্ষ্য করলেও দেখতে পাবো যে, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আস সাফফাহ মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষে পৃথিবীর ইতিহাসে এই প্রথম ১৪৩৪ হিজরীতে ৫৬ দিনব্যাপী এবং ১৪৩৫ হিজরীতে ৫৮ দিনব্যাপী সম্মানিত মাহফিল মুবারক উনার ইন্তিজাম করেছেন এবং এক সময় সারা বছরব্যাপী সম্মানিত মাহফিল মুবারক উনার ইন্তিজাম করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন এবং কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের হাক্বীক্বী শান-মান মুবারক ফুটিয়ে তোলার লক্ষ্যে দৈনিক আল ইহসান শরীফ, মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ এবং আরো অন্যান্য পত্র-পত্রিকা ও কিতাবাদি মুবারক প্রকাশ করে যাচ্ছেন। (সুবহানাল্লাহ)
আর অপর দিকে তিনি উনার মক্ববূল মুনাজাত শরীফ উনার মাধ্যমে একের পর এক খোদায়ী আযাব-গযবের দ্বারা কাফির-মুশরিক, ইহুদী, খ্রিস্টান, হিন্দু, বৌদ্ধ, মজুসী, মুনাফিক্ব¡ ও উলামায়ে সূ’দেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছেন। তাই তো বিশ্বের তথাকথিত সুপার পাওয়ার ইউরোপ, আমেরিকা, চীন, জাপান, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, জার্মান তথা সমস্ত কাফির-মুশরিকরা আজ সুপার ফকিরে পরিণত হয়েছে। তারা আজ খাদ্যের অভাবে মারামারি করছে, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই করছে, পোকামাকড় খাচ্ছে, কুকুরের সাথে ডাস্টবিন থেকে খাবার খাচ্ছে। শুধু তাই নয়, এমনকি তারা নিজেদের ইস্তিঞ্জা (প্রস্রাব-পায়খানা) পর্যন্ত খাচ্ছে এবং একে অপরকে হত্যা করে সেই গোশত পর্যন্ত খাচ্ছে। (না‘ঊযুবিল্লাহ)
তারা আজ সম্মানিত মুসলমান উনাদের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করছে। বন্যা, তুফান, ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডো, ভূমিকম্প, ভূমিধস, দাবানল, তুষারপাত, শিলাবৃষ্টি, অর্থনৈতিক মন্দা প্রভৃতি খোদায়ী আযাব-গযবে পড়ে তাদের কোটি কোটি লোক জাহান্নামের অতল গহ্বরে নিমজ্জিত হয়েছে, হচ্ছে এবং হবে ইনশাআল্লাহ। (সুবহানাল্লাহ)
ইনশাআল্লাহ আমরা একটা সময় আরো দেখতে পাবো যে, এই সমস্ত কাফির, মুশরিক, ইহুদী, খ্রিস্টানরা পূর্বের ন্যায় মুসলমান উনাদের গোলামী করবে। (সুবহানাল্লাহ)
আর অপর দিকে মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার মুবারক রোবের দাপটে বাংলাদেশ থেকে শুরু করে বিশ্বের সমস্ত উলামায়ে সূ’ তথা ওহাবী, খারিজী, রাফিজী, সালাফী, লা-মাযহাবী, জামাতী, দেওবন্দী, তাবলিগী তাবৎ ধর্মব্যবসায়ীদের হাক্বীক্বত ফাঁস হচ্ছে। তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। মরার পর তাদের আকৃতি বিকৃতি ঘটছে। যেমন, ফজলু, আনসার, নূরুদ্দীন, উবাইদুল, আজিজুল, কমিনী এবং তাদের সমমনা যারা রয়েছে এই সমস্ত উলামায়ে সূ’দের মৃত্যুর পর আকৃতি-বিকৃতি ঘটেছে, ঘটছে এবং ঘটবে। (না‘ঊযুবিল্লাহ)
পৃথিবীর ইতিহাসে অন্য কোন ওলীআল্লাহ ও খলীফা উনাদের জীবনী মুবারক-এ এরূপ দেখা যায় না।
সুতরাং এখান থেকেও সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠলো যে, সাইয়্যিদুল খুলাফা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম। তাই তো উনার মুবারক শানে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-
وَاَمَّا السَّفَّاحُ فَهُوَ يَسْفَحُ الْمَالَ وَالدَّمَ.
অর্থ : “আর যিনি মহান খলীফা আওলাদে রসূল হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম হবেন, তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাক্বীক্বী শান-মান মুবারক ফুটিয়ে তোলার লক্ষ্যে, পবিত্র ইনসাফ মুবারক প্রতিষ্ঠা করতে যেয়ে অঢেল, বেহিসাব ধন-সম্পদ বিলিয়ে দিবেন এবং রক্ত প্রবাহিত করবেন অর্থাৎ কাফির-মুশরিক, ইহুদী, খ্রিস্টান, হিন্দু-বৌদ্ধ, মজূসী, মুনাফিক্ব¡ ও উলামায়ে সূ’দেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে দুনিয়ার যমীনে, সারা পৃথিবীতে, সারা কায়িনাতে পবিত্র ইনসাফ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেন, সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক জারি করবেন।” (সুবহানাল্লাহ) (জামিউল আহাদীছ শরীফ ৭/৪২০ ও ১৭/২৫৭, বাইহাক্বী শরীফ ও আবূ নাঈম শরীফ উনাদের বরাতে সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ ১০/৯২)
আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاِذْ تَاَذَّنَ رَبُّكَ لَيَبْعَثَنَّ عَلَيْهِمْ اِلىٰ يَوْمِ الْقِيٰمَةِ مَنْ يَّسُوْمُهُمْ سُوْءَ الْعَذَابِ
অর্থ : “(হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনার রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ঘোষণা দিচ্ছেন যে, তিনি অবশ্যই অবশ্যই তাদের উপর (ইহুদী) তথা ইহুদী, খ্রিস্টান, কাফির, হিন্দু, বৌদ্ধ, মজূসী, মুশরিক, মুনাফিক্ব¡¡ ও উলামায়ে সূ’দের উপর ক্বিয়ামত অবধি সময়ের মধ্যে এমন একজন মহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাকে প্রেরণ করবেন। যিনি তাদেরকে কঠিন শাস্তি প্রদান করবেন।” (সম্মানিত সূরা আ’রাফ শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ ১৬৭)
আর সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারকই হচ্ছেন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম। তিনি ইহুদী, খ্রিস্টান, কাফির, হিন্দু, বৌদ্ধ, মজূসী, মুশরিক, মুনাফিক্ব¡ ও উলামায়ে সূ’দেরকে কঠিন শাস্তি প্রদান করে যাচ্ছেন, তাদেরকে দুনিয়ার যমীন থেকে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছেন। এমন একটি সময় আসবে যখন তিনি তাদেরকে পরিপূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে সারা বিশ্বে, সারা কায়িনাতে পবিত্র ইনসাফ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেন, সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক জারি করবেন। (সুবহানাল্লাহ)
এই প্রসঙ্গে উনার মুবারক শানে সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ جَابِرِ ۨ الصَّدَفـِـىّ ِ رَضِىَ اللهُ تَعَالىٰ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَكُوْنُ بَعْدِىْ خُلَفَاءُ وَبَعْدَ الْـخُـلَفَـاءِ اُمَرَاءُ وَبَعْدَ الْاُمَرَاءِ مُلُوْكٌ وَبَعْدَ الْـمُلُوْكِ جَبَابِرَةٌ وَبَعْدَ الْـجَـبَابِرَةِ يـَخْرُجُ رَجُلٌ مّـِنْ اَهْلِ بَـيْـتِـىْ يَـمْلَاُ الْاَرْضَ عَدْلًاـ
অর্থ : “হযরত জাবির ছদাফী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার পরে হযরত খলীফা আলাইহিমুস সালাম উনাদের যুগ, হযরত খলীফা আলাইহিমুস সালাম উনাদের পর আমীর-উমরাদের যুগ, আমীর-উমারাদের পর রাজা-বাদশাহদের যুগ তথা রাজতন্ত্র। রাজতন্ত্রের পর হবে চরম অত্যাচারী, চরম যালিম, চরম অহঙ্কারী, চরম প্রতাপশালী, চরম লুটেরা, চরম সৈ¦রাচারী, চরম নাফরমান, চরম উদ্ধত, চরম গুমরাহ, চরম পথভ্রষ্ট, চরম বিভ্রান্ত, চরম গুমরাহকারী, চরম পথভ্রষ্টকারী, চরম বিভ্রান্তকর শাসকদের শাসনব্যবস্থা তথা জোর জবরদস্তিমূলক শাসন ব্যবস্থা, যুলুমতন্ত্র তথা সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্র। (তখন অবাধ্যতা, ঔদ্ধত্যতা, কঠোরতা, অহমিকা, ধৃষ্টতা, উচ্ছৃঙ্খলতা, ফিতনা-ফাসাদ, বেপর্দা-বেহায়া, অত্যাচার-অবিচার, যুলুম-নির্যাতন ও বে-ইনসাফীতে পুরো পৃথিবী ভরে যাবে। কোথাও পবিত্র ইনসাফ মুবারক উনার লেশমাত্র অবশিষ্ট থাকবে না।) অতঃপর আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে আমার একজন খাছ আওলাদ, একজন মহান খলীফা আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক নিবেন। তিনি দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুাবরক নিয়ে পুরো পৃথিবী, সারা কায়িনাত পবিত্র ইনসাফ মুবারক দ্বারা পরিপূর্ণ করে দিবেন তথা সারা বিশ্বে, সারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেন।” (সুবহানাল্লাহ) (দায়লামী শরীফ ৫/৪৫৬, ইসতিয়াব ১ম জিলদ ১৩৭ পৃষ্ঠা)
সুতরাং সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আওলাদে রসূল মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা ‘হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম’ উনার মুবারক উসীলায় বর্তমান যামানায় অবশ্যই অবশ্যই সম্মানিত খিলাফত আ’লা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠিত হবেই হবে ইনশাআল্লাহ।
পাঁচ. আলোচ্য হাদীছ শরীফ মুবারক উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক করা হয়েছে যে, فَيَكُوْنُ اِعْطَاؤُهُ الْمَالَ حَثْيًا “(মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম) তিনি উনার দু’হাত মুবারক ভরে অঢেল, বেহিসাব ধন-সম্পদ বিলিয়ে দিবেন।” (সুবহানাল্লাহ)
সেটাই আমরা দেখতে পাচ্ছি, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আওলাদে রসূল মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক লাভের উদ্দেশ্যে উনার দু’হাত মুবারক ভরে অঢেল, বেহিসাব ধন-সম্পদ বিলিয়ে দিচ্ছেন। (সুবহানাল্লাহ)
পৃথিবীর ইতিহাসে তিনিই একমাত্র সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক যিনি এই প্রথম কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষে ১৪৩৪ হিজরীতে ৫৬ দিনব্যাপী এবং ১৪৩৫ হিজরীতে ৫৮ দিনব্যাপী সম্মানিত মাহফিল মুবারক উনার ইন্তিজাম করেছেন এবং এক সময় সারা বছরব্যাপী সম্মানিত মাহফিল মুবারক উনার ইন্তিজাম করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন এবং পৃথিবীর ইতিহাসে তিনিই একমাত্র সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক যিনি কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র নাম মুবারক-এ, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের ও হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্র নাম মুবারক-এ এবং সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের, সমস্ত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহুম উনাদের এবং বিশেষ বিশেষ সকল হযরত আওলিয়ায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের পবিত্র নাম মুবারক-এ কুরবানী করে যাচ্ছেন এবং কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের হাক্বীক্বী শান-মান মুবারক ফুটিয়ে তোলার লক্ষ্যে দৈনিক আল ইহসান শরীফ, মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ এবং আরো অন্যান্য পত্র-পত্রিকা ও কিতাবাদি মুবারক প্রকাশ করে যাচ্ছেন। (সুবহানাল্লাহ)
আর এটা তো উনার যাহিরীভাবে খলীফা হিসেবে প্রকাশ পেয়ে খিলাফত মুবারক পরিচালনা করার পূর্বের কথা। তাহলে তিনি যখন যাহিরীভাবে খলীফা হিসেবে প্রকাশ পেয়ে সারা পৃথিবীব্যাপী, সারা কায়িনাতব্যাপী সুদীর্ঘ ৩০-৪০ বছর যাবৎ সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক পরিচালনা করবেন, তখন তিনি উনার দু’হাত মুবারক ভরে কি পরিমাণ অঢেল, বেহিসাব ধন-সম্পদ বিলিয়ে দিবেনÑ সেটা সমস্ত জিন-ইনসান ও মাখলূকাতের চিন্তা ও কল্পনার বাইরে। (সুবহানাল্লাহ)
আর উনারই পবিত্র শান মুবারক সম্পর্কে সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالىٰ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَلَكَ الْاَرْضَ اَرْبَعَةٌ مُّؤْمِنَانِ وَكَافِرَانِ فَالْــمُؤْمِنَانِ حَضْـَرتْ ذُو الْقَرْنَيْنِ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَحَضْـَرتْ سُلَيْمَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَالْكَافِرَانِ نَـمْرُوْدُ وَبـُخْتُ نَصَّرَ وَسَيَمْلِكُهَا خَامِسٌ مّـِنْ اَهْلِ بَيْتِـىْ.
অর্থ : “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সারা পৃথিবী শাসন করেছেন চারজন। দুজন হচ্ছেন মু’মিন আর দুজন হচ্ছে কাফির। মু’মিন দুজন হচ্ছেন- হযরত সিকান্দার যুলক্বরনাঈন রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম। আর কাফির দুজন হচ্ছে- নমরূদ এবং বখতে নছর। আর অতিশীঘ্রই পঞ্চম একজন মহান ব্যক্তিত্ব মুবারক, একজন মহান খলীফা আলাইহিস সালাম তিনি সারা পৃথিবীব্যাপী, সারা কায়িনাতব্যাপী সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক পরিচালনা করবেন। তিনি হবেন আমার পূত-পবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত।” (সুবহানাল্লাহ) (ইবনে জাওযী, মাকতূবাত শরীফ, শরহু ছহীহ বুখারী শরীফ ৮/৮৬, ফাতওয়ায়ে হাদীছিয়্যাহ শরীফ লিলহাইতামী ১/৮১, আল হাওই শরীফ লিসসুয়ূত্বী ২/৭৬ ইত্যাদী )
আর সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক তিনিই হচ্ছেন মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি। তিনি শুধু বাংলাদেশ নয়, পাকিস্তান নয়, ভারত নয়; বরং হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম উনার ন্যায় সারা পৃথিবী তো অবশ্যই, এমনকি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুবহু ক্বায়িম-মাক্বাম হয়ে সীমাহীন প্রতাপ ও ব্যাপকতার সাথে সারা কায়িনাতব্যাপী সুদীর্ঘ ৩০-৪০ বছর যাবৎ সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক পরিচালনা করবেন। (সুবহানাল্লাহ)
উনার মুবারক শানে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
عَنْ حَضْرَتْ جَابِرٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالىٰ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَكُوْنُ فِىْ ا ٰخِرِ اُمَّتِـىْ خَلِيْـفَةٌ يَـحْثِى الْمَالَ حَثْيًا وَلَا يَعُدُّه عَدَدًا.
অর্থ : “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আখেরী যামানায় আমার উম্মতের মাঝে একজন মহান খলীফা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক আবির্ভাব ঘটবে। তিনি উনার দু’হাত মুবারক ভরে বেহিসাব, অঢেল ধন-সম্পদ বিলিয়ে দিবেন, কোন গণনা করবেন না।” (সুবহানাল্লাহ) (মুসলিম শরীফ, রিয়াদুছ ছালেহীন, বাইহাক্বী শরীফ ৬/৩৩০, মুসনাদে আহমদ শরীফ ১০/১৯০, মিশকাত শরীফ ৪৬৯, বিদায়া-নিহায়া ৬/ ২৪৮ ইত্যাদি)
উল্লেখ্য যে, মুসনাদে আহমদ উনার ১০ম জিলদের ২৫০ পৃষ্ঠার প্রান্তটিকায় রয়েছে যে, এই পবিত্র হাদীছ শরীফখানা হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম উনার মুবারক শানে। আর সেটাই অন্য সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে-
وَاَمَّا السَّفَّاحُ فَهُوَ يَسْفَحُ الْـمَالَ
অর্থ : “আর যিনি মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম হবেন, তিনি অঢেল, বেহিসাব ধন-সম্পদ বিলিয়ে দিবেন।” (সুবহানাল্লাহ) (জামিউল আহাদীছ শরীফ ৭/৪২০ ও ১৭/২৫৭, বাইহাক্বী শরীফ ও আবূ নাঈম শরীফ উনাদের বরাতে সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ ১০/৯২)
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি যাহিরীভাবে খলীফা হিসেবে প্রকাশ হওয়ার পূর্বে, আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক পরিচালনা করার পূর্বে বর্তমানেই উনার দু’হাত মুবারক ভরে অঢেল, বেহিসাব ধন-সম্পদ বিলিয়ে দিচ্ছেন। আর যখন তিনি যাহিরীভাবে খলীফা হিসেবে প্রকাশ পেয়ে সারা পৃথিবীব্যাপী, সারা কায়িনাতব্যাপী সুদীর্ঘ ৩০-৪০ বছর যাবৎ সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক পরিচালনা করবেন, তখন তিনি আরো কল্পনাতীত অধিক পরিমাণে উনার দু’হাত মুবারক ভরে অঢেল, বেহিসাব ধন-সম্পদ বিলিয়ে দিবেন। যা সমস্ত জিন-ইনসান ও মাখলূকাতের চিন্তা ও কল্পনার বাইরে। (সুবহানাল্লাহ)
শুধু তাই নয়, উনার মুবারক উসীলায় সমস্ত বিশ্ববাসী সীমাহীন বরকত লাভ করবেন। ধন-সম্পদের এত অধিক পরিমাণ প্রাচুর্য হবে যে, কোন ব্যক্তিকে অধিক পরিমাণ ধন-সম্পদ প্রদান করলেও সে এটাকে নগণ্য মনে করবে। এটা পবিত্র হাদীছ শরীফ মুবারক উনার দ্বারাই প্রমাণিত। (সুবহানাল্লাহ)
সুতরাং পবিত্র হাদীছ শরীফ মুবারক উনার মধ্যে যে, ইরশাদ মুবারক করা হয়েছে, فَيَكُوْنُ اِعْطَاؤُهُ الْمَالَ حَثْيًا “(মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম) তিনি উনার দু’হাত মুবারক ভরে অঢেল, বেহিসাব ধন-সম্পদ বিলিয়ে দিবেন।” (সুবহানাল্লাহ)
এবং আরো ইরশাদ মুবারক করা হয়েছে যে-
وَاَمَّا السَّفَّاحُ فَهُوَ يَسْفَحُ الْـمَالَ
অর্থ : “আর যিনি মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম হবেন, তিনি অঢেল, বেহিসাব ধন-সম্পদ বিলিয়ে দিবেন।” (সুবহানাল্লাহ) (জামিউল আহাদীছ শরীফ ৭/৪২০ ও ১৭/২৫৭, বাইহাক্বী শরীফ ও আবূ নাঈম শরীফ উনাদের বরাতে সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ ১০/৯২)
মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আওলাদে রসূল আমাদের প্রাণের আক্বা মামদূহ হযরত মুুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন, সেই সুমহান খলীফা ‘হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম’। (সুবহানাল্লাহ)
اَلنّـِهَايَةُ (আন নিহায়াহ)
পরিশেষে বলতে হয় যে, আলোচ্য হাদীছ শরীফ মুবারক উনার মধ্যে যে, মহান খলীফা আওলাদে রসূল হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম উনার বিশেষ পাঁচখানা খুছূছিয়াত মুবারক বা বৈশিষ্ট্য মুবারক বর্ণনা করা হয়েছে
এক. عِنْدَ اِنْقَطَاع ٍ مّـِنَ الزَّمَانِ তথা “মহান খলীফা আওলাদে রসূল হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি যামানার ক্রান্তিলগ্নে, যামানার শেষের দিকে তাশরীফ মুবারক নিবেন।” আর عِنْدَ اِنْقَطَاع ٍ مّـِنَ الزَّمَانِ তথা যামানার ক্রান্তিলগ্নে, যামানার শেষের দিকে বলতে পঞ্চদশ হিজরী শতক তথা বর্তমান যামানার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।
দুই. ظُهُوْرٌ مّـِنَ الْفِتَنِ “যখন ফিতনা-ফাসাদসমূহ চরমভাবে প্রকাশ পাবে।”
তিন. رَجُلٌ مّـِنْ اَهْلِ بَيْـتِـىْ অর্থাৎ “মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত হবেন তথা তিনি আওলাদে রসূল তথা সাইয়্যিদা শাবাবি আহলিল জান্নাহ, ইমামুছ ছানী হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম এবং ইমামুছ ছালিছ হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদের মুবারক বংশধর হবেন।” (সুবহানাল্লাহ)
চার. رَجُلٌ يُّقَالُ لَهُ السَّفَّاحُ অর্থ : “তিনি এমন একজন মহান ব্যক্তিত্ব মুবারক, এমন একজন মহান খলীফা হবেন- উনাকে ‘হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম’ বলা হবে।” ইহা একখানা বিশেষ লক্বব মুবারক।
এই বিশেষ লক্বব মুবারকখানা উনার অসংখ্য অগণিত সুন্দর সুন্দর অর্থ মুবারক রয়েছে- তার মধ্যে কয়েকটি বিশেষ অর্থ মুবারক হচ্ছে-
১. অধিক খুন বা রক্ত বহানেওয়ালা, ২. সর্বশ্রেষ্ঠ মুক্তিদানকারী,
৩. মুক্তির দিশারী, ৪. সর্বশ্রেষ্ঠ আযাদদানকারী,
৫. অসীম দাতা, ৬. বড় উদার,
৭. অসীম ইলম মুবারক উনার অধিকারী, ৮. সুবক্তা,
৯. সর্বোত্তম ওয়ায়িজ, ১০. সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারী,
১১. সর্বোত্তম ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণকারী, ১২. সর্বোত্তম বর্ণনাকারী,
১৩. মিষ্টভাষী, ১৪. বিশুদ্ধভাষী,
১৫. বাগ্মী, ১৬. সাখী বা সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল,
১৭. কাফির-মুশরিক, ইহুদী-নাছারা, গুমরাহ, মুনাফিক্ব¡ ও উলামায়ে সূ’দেরকে ধ্বংসকারী,
১৮. নাহক্বকে নিশ্চিহ্নকারী, ১৯. তাগুতী শক্তিকে বিলীনকারী,
২০. বিশুদ্ধ, ২১. খাঁটি, ২২. পূত-পবিত্র,
২৩. সর্বোত্তম ও সুমহান চরিত্র মুবারক উনার অধিকারী,
২৪. অনুসরণীয়, ২৫. উসওয়াতুন হাসানাহ,
২৬. পবিত্র অর্থাৎ নূরে মুকাররাম, নূরে মুয়ায্যাম,
২৭. মহান আল্লাহ পাক উনার গুণে গুণান্বিত হয়ে কথা মুবারক বলনেওয়ালা,
২৮. সাখী বা হাবীবুল্লাহ, ২৯. অপরিসীম ফায়িযদানকারী,
৩০. বেমেছাল ইছলাহদানকারী ইত্যাদি। (সুবহানাল্লাহ)
এই কথা বলার অপেক্ষাই রাখে না যে, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি এই সকল ছিফত বা গুণাবলী মুবারক উনাদের পরিপূর্ণরূপে অধিকারী। প্রকৃতপক্ষে বলতে গেলে এই সকল ছিফত বা গুণাবলী মুবারকগুলোই উনার অধীন। (সুবহানাল্লাহ)
সুতরাং মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা মামদূহ হযরত মুুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা আওলাদে রসূল ‘হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম’। (সুবহানাল্লাহ)
পাঁচ. فَيَكُوْنُ اِعْطَاؤُهُ الْمَالَ حَثْيًا “তিনি উনার দু’হাত মুবারক ভরে অঢেল, বেহিসাব ধন-সম্পদ বিলিয়ে দিবেন।”
আলোচ্য হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত প্রতিটি খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারকই মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম উনার সাথে পরিপূর্ণরূপে মিলে যায়। এছাড়া অতীতের অন্য কোন মুজাদ্দিদ, গাউছ, কুতুব, নক্বীব-নুক্বাবা, ওলী-আবদাল, ইমাম ও খলীফা উনাদের সাথে আলোচ্য হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত উপরোক্ত খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য বা শর্ত মুবারকগুলো মিলে না। আর না মিলাটাই স¦াভাবিক এবং মিলাটাই হচ্ছে অস¦াভাবিক, অসম্ভব এবং অবান্তর।
কেননা ইতোপূর্বে যামানার শেষের দিক আসেনি, বর্তমান যামানার ন্যায় ফিতনা-ফাসাদসমূহ চরমভাবে প্রকাশ পায়নি, আওলাদে রসূল তথা সাইয়্যিদা শাবাবি আহলিল জান্নাহ, ইমামুছ ছানী হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম এবং ইমামুছ ছালিছ হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদের মুবারক বংশধর উনাদের মধ্য থেকে ‘আস সাফফাহ’ লক্বব মুবারক উনার অধিকারী কোন খলীফাও আসেননি এবং যামানার শেষের দিকে তথা বর্তমান পঞ্চদশ হিজরী শতকে তথা বর্তমান যামানায় মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আমাদের প্রাণের আক্বা মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি ব্যতীত আস সাফফাহ লক্বব মুবারক উনার অধিকারী তথা-
১. অধিক খুন বা রক্ত বহানেওয়ালা, ২. সর্বশ্রেষ্ঠ মুক্তিদানকারী,
৩. মুক্তির দিশারী, ৪. সর্বশ্রেষ্ঠ আযাদদানকারী,
৫. অসীম দাতা, ৬. বড় উদার,
৭. অসীম ইলম মুবারক উনার অধিকারী, ৮. সুবক্তা,
৯. সর্বোত্তম ওয়ায়িজ, ১০. সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারী,
১১. সর্বোত্তম ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণকারী, ১২. সর্বোত্তম বর্ণনাকারী,
১৩. মিষ্টভাষী, ১৪. বিশুদ্ধভাষী,
১৫. বাগ্মী, ১৬. সাখী বা সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল,
১৭. কাফির-মুশরিক, ইহুদী-নাছারা, গুমরাহ, মুনাফিক্ব¡ ও উলামায়ে সূ’দেরকে ধ্বংসকারী,
১৮. নাহক্বকে নিশ্চিহ্নকারী, ১৯. তাগুতী শক্তিকে বিলীনকারী,
২০. বিশুদ্ধ, ২১. খাঁটি, ২২. পূত-পবিত্র,
২৩. সর্বোত্তম ও সুমহান চরিত্র মুবারক উনার অধিকারী,
২৪. অনুসরণীয়, ২৫. উসওয়াতুন হাসানাহ,
২৬. পবিত্র অর্থাৎ নূরে মুকাররাম, নূরে মুয়ায্যাম,
২৭. মহান আল্লাহ পাক উনার গুণে গুণান্বিত হয়ে কথা মুবারক বলনেওয়ালা,
২৮. সাখী বা হাবীবুল্লাহ, ২৯. অপরিসীম ফায়িযদানকারী,
৩০. বেমেছাল ইছলাহদানকারী ইত্যাদি সম্মানিত ছিফত বা গুণ মুবারক উনাদের অধিকারী অন্য কোন খলীফা প্রকাশ পাননি- যিনি মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম উনার ন্যায় দু’হাত মুবারক ভরে অঢেল, বেহিসাব ধন-সম্পদ বিলিয়ে দিচ্ছেন এবং কাফির-মুশরিক, ইহুদী, খ্রিস্টান, হিন্দু-বৌদ্ধ, মজূসী, মুনাফিক্ব¡ ও উলামায়ে সূ’দেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছেন। সুতরাং এই কথা আবারও দিবালোকের ন্যায় অত্যন্ত সুস্পষ্ট ও অকাট্যভাবে প্রমাণিত হলো যে, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আওলাদে রসূল মামদূহ হযরত মুুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন আলোচ্য সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা ‘হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম’। (সুবহানাল্লাহ)
সম্মানিত কুরআন শরীফ, সম্মানিত হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস শরীফ উনাদের এত সুস্পষ্ট বর্ণনার পরও যারা মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, খলীফাতুল মুসালিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, আওলাদে রসূল, আমাদের প্রাণের আক্বা মামদূহ হযরত মুুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা ‘হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম’ হিসেবে মেনে নিবে না এবং এই ব্যাপারে চু-চেরা, ক্বিল-ক্বাল করবে, তারা মূলত অজ্ঞ-মূর্খ, নাদান-জাহিল, গুমরাহ এবং মুনাফিক্ব¡ ও উলামায়ে সূ’দের অন্তর্ভুক্ত এবং চতুষ্পদ জন্তুর চেয়েও নিকৃষ্ট। (নাঊযুবিল্লাহ)
এদের ব্যাপারেই মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
لَـهُمْ قُلُوْبٌ لَّا يَفْقَهُوْنَ بِـهَا وَلَـهُمْ أَعْيُنٌ لَّا يُبْصِرُوْنَ بِـهَا وَلَـهُمْ ا ٰذَانٌ لَّا يَسْمَعُوْنَ بِـهَا ۚ اُولـٰــــــــئِكَ كَالْاَنْعَامِ بَلْ هُمْ أَضَلُّۚ اُولـٰــــــــئِكَ هُمُ الْغَافِلُوْنَ
অর্থ : “তাদের অন্তর রয়েছে; কিন্তু তারা উপলব্ধি করতে পারে না। তাদের চক্ষু রয়েছে; কিন্তু তারা দেখতে পায় না। তাদের কান রয়েছে; কিন্তু তারা শুনতে পায় না। তারা হচ্ছে চতুষ্পদ জন্তুর ন্যায়; বরং তার চেয়েও নিকৃষ্ট। তারা হচ্ছে গাফিল।” (সম্মানিত সূরা আ’রাফ শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ ১৭৯)
সুতরাং মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন পবিত্র রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন, পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ এবং পূর্ববর্তী আসমানী কিতাব মুবারক উনাদের মধ্যে বর্ণিত ১২ জন মহান খলীফা আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে অন্যতম একজন বিশেষ খলীফা আওলাদে রসূল হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম। উনার মুবারক উসীলায় অতিশীঘ্রই অবশ্যই অবশ্যই খিলাফত আ’লা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ প্রতিষ্ঠিত হবেই হবে ইনশাআল্লাহ। (সুবহানাল্লাহ)
তাই প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ-মহিলা সকলের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- উনাকে চেনা, উনাকে খলীফা হিসেবে মেনে নেয়া, উনাকে ইতিয়াত তথা অনুসরণ-অনুকরণ করা, উনার মুবারক আদেশ-নির্দেশ মুতাবিক চলা।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা, মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, আওলাদে রসূল আমাদের প্রাণের আক্বা মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনাকে চেনার, উনার মুবারক নির্দেশিত পথে চলার, উনার হাক্বীক্বী সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক লাভ করার এবং উনার হাক্বীক্বী গোলাম হওয়ার তাওফীক্ব দান করুন। (আমীন)
0 Comments:
Post a Comment