উত্তম আচরণ-পর্ব-২
এক বৃদ্ধা আপনমনে গজগজ করতে করতে তার বাক্স পেটরা গুছাচ্ছে আর রাগে দুঃখে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে কাফিরদেরকে যেসব এলোমেলো কথা বলতে শুনেছিল, তাই আওড়াচ্ছিল।
যখন মুসলমানগণ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক দিক নির্দেশনায় পবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় করেছেন তখন অনেক কাফিরই পবিত্র মক্কা শরীফ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছিলো। যদিও কাফিরদের প্রতি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছে, তবুও অনেকে নিরাপত্তার দিক থেকে আশ্বস্ত হতে পারলো না। তেমনই ভেবে সেই বৃদ্ধাও চলে যেতে মনঃস্থির করেছে। কিন্তু এই বয়সে একাকী দেশান্তরী হওয়া কি সোজা কথা! সেই পথ ধরে আসছিলেন। স্বয়ং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। বৃদ্ধাকে একাকী কথা বলতে দেখে তিনি তার নিকটে গেলেন, তার খোঁজখবর নিলেন। বৃদ্ধা উনাকে চিনতো না। সে তার অবস্থা উনাকে খুলে বললো। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্যই যে তাদের দেশত্যাগ করতে হচ্ছে তাও জানালো। তিনি সব শুনে বৃদ্ধাকে সাহায্য করতে চাইলেন। বৃদ্ধা রাজি হলে তার মালপত্রগুলো তিনি বয়ে নিয়ে চললেন। বৃদ্ধা কিন্তু সারা রাস্তা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকের খিলাফ কথা বলতে বলতেই গেলো। তারপর শহরের কিনারে আসার পর সে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এই ইহসান মুবারকের শুকরিয়া আদায় করে উনার পরিচয় জানতে চাইলো। তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, 'তুমি যার ভয়ে পালিয়ে যাচ্ছো, আমিই সেই ব্যক্তি!” সুবহানাল্লাহ! বৃদ্ধা এবার তার ভুল বুঝতে পারলো। সে বুঝলো, কাফিররা উনার শান মুবারকে যা প্রচার করেছিল তা নিতান্তই মিথ্যা, বানোয়াট।
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদেরকে উত্তম আচরণ শিক্ষা দিয়েছেন। ভদ্র মানুষের সাথে ভদ্র আচরণ করাটাই স্বাভাবিকতা; কিন্তু তা উত্তম আচরণ নয়। উত্তম আচরণ হলো, বিরূপ ব্যবহার পেয়েও বিনিময়ে উত্তম ব্যবহার করা। সুবহানাল্লাহ!
0 Comments:
Post a Comment