একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-৮৪

 


ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছহিবে কাশফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছহিবে ইসমে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে-

একজন কুতুবুয্ যামান-উনার দিদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান- ৮৫

 পরোপকার ও দানশীলতা-

উপরোক্ত আয়াত শরীফের মিছদাক্ব হয়ে সাইয়্যিদুল মুয়াল্লিমীন, ছাহিবে শাফায়াতে কুবরা, সিরাজুম মুনীরা, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সুন্নত মুতাবিক এবং শরীয়তের অনুশাসনে মানুষকে হিকমত শিক্ষাদান এবং তাদের অন্তর পরিশুদ্ধ করে প্রকৃত হিদায়েতের পথে নিয়ে আসাই আল্লাহ পাক-উনার মাহবুব ওলীগণের মূল কাজ। মানব কল্যাণ ও পরোপকার সাধনে দুনিয়ায় যতো প্রকার বিষয়-কর্ম ও দান-খয়রাতের প্রক্রিয়া বিদ্যমান রয়েছে, সে সবের মধ্যে দুনিয়ার প্রতি আসক্ত মানুষের অন্তর ইছলাহ করে তাদেরকে পরিপূর্ণরূপে আল্লাহওয়ালা করে তোলাই সর্বোত্তম।

 সুন্নত অনুসরণে এবং পূর্বের ওলীআল্লাহগণের অনুসৃত পন্থায় হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম মানুষের মন ও মননকে পরিশুদ্ধ করে অন্যায় ও গর্হিত ঈমান, আক্বীদা, আমল ও আখলাক্ব থেকে ফিরিয়ে তাদেরকে হক্ব মত ও পথে দায়িম-ক্বায়িম করেছেন। অকাতরে তিনি যতো প্রকার দান-খয়রাত করেছেন এবং জনকল্যাণে মুবারক জীবনব্যাপী যতো কাজ করেছেন, তার মধ্যে অবুঝ, বিপন্ন ও বিপথগামী মানুষের অন্তর হিদায়েতের আলোয় উদ্ভাসিত করাই সর্বোৎকৃষ্ট।

আসাদুল্লাহিল গালিব, হযরত আলী র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহু রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে হিদায়েতের কাজে ইয়েমেন প্রেরণকালে সাইয়্যিদুল কাওনাইন, রউফুর রহীম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, “হে হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, ইয়েমেন গিয়ে একজন মানুষকেও যদি আপনি হিদায়েতের পথে আনতে পারেন, তবে আসমান ও যমীনের সবকিছু দান করার বিনিময়ে যে ছাওয়াব হাছিল হতো, তার চেয়ে বেশী ছাওয়াব হবে।

এ হাদীছ শরীফের মর্মবাণী হলো, প্রকৃত হিদায়েত দানের মাধ্যমে মানুষকে বিশুদ্ধ ঈমান, আক্বীদা ও আমলে দায়িমীভাবে অভ্যস্ত করে তোলাই সর্বাপেক্ষা উৎকৃষ্ট কাজ এবং এই উৎকৃষ্ট কাজটি আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার কাছে সর্বোত্তম আমল হিসেবে গণ্য।

প্রত্যেক মানুষই প্রকৃত হিদায়েতের মুখাপেক্ষী, যদিও সাধারণ মানুষ (মূর্খ এবং বিদ্যা অর্জন করেও যারা অজ্ঞ) হিদায়েতের অবধারিত প্রয়োজন এবং উনার অন্তর্নিহিত তাৎপর্য সম্পর্কে ওয়াকিফহাল নয়। হিদায়েতের জন্য অবুঝ মানুষের এই অজানা মুখাপেক্ষিতার প্রয়োজন পূরণে কুতুবুয্ যামান, আওলাদে রসূল, লিসানুল হক্ব, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম অনুক্ষণ ব্যাপৃত থেকেছেন। হিদায়েতপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণে ইন্তিকাল অবধি অবিরাম প্রয়াসের জন্য তিনি চরম পর্যায়ের দানশীল হিসাবে গণ্য। মানুষের ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কল্যাণকামিতায় হিদায়েতরূপ মহোত্তম দান-উনার সঙ্গে সঙ্গে স্বভাব-সহজতায় তিনি অঢেল অর্থ-বিত্তও দান করেছেন। মন্দ আখলাক্ব দূর করে মানুষের মাঝে তিনি অনুপম চারিত্রিক গুণাবলীর বিকাশ ঘটিয়েছেন। সৎ স্বভাব গঠনসহ মানুষের অন্তরের সুস্থতা দানে তিনি আল্লাহ পাক-উনার মনোনীত হাদী-উনার দায়িত্ব পালন করেছেন আজীবন। মানুষের প্রয়োজন পূরণ ও কল্যাণ সাধনে আপন প্রয়োজনকে তিনি তুচ্ছ জ্ঞান করেছেন। আল্লাহ পাক-উনার এমন মাহবুব ওলী ছাড়া অন্য কারো পক্ষেই প্রকৃত দানশীলতার এরূপ শীর্ষ মাক্বামে অধিষ্ঠিত হওয়া সম্ভব নয়।

অসমাপ্ত

আবা-১৪৪

0 Comments: