পঞ্চদশ হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদুর রসূল, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-উনার সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মহা সম্মানিতা আম্মা আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদাতুনা আমাদের- হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম
উনার সীমাহীন ফাদ্বায়িল-ফদ্বীলত, বুযূর্গী-সম্মান, মান-শান, বৈশিষ্ট্য
এবং উনার অনুপম মাক্বাম সম্পর্কে কিঞ্চিৎ আলোকপাত-
ইন্তিকাল মহান
আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা উনার সঙ্গে মহা মিলনের সেতু হিসেবে নির্ধারিত হওয়ায়
মাহবূব ওলীআল্লাহগণ উনারা নিবিষ্ট মনে উনাদের বিছাল শরীফ-এর পরম মুহূর্তের প্রত্যাশায়
নিজেদেরকে প্রস্তুত করতে থাকেন। সাধারণ মানুষের কেউই মৃত্যুকে মুহব্বত করে না। মেনেও
নেয়না। মুত্যু অবধারিত হওয়ায় এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনে মানুষ বাধ্য হয়। আপনজনের বিয়োগ
ব্যথায় মানুষ যন্ত্রণাকাতর হয়। প্রিয়জনের বিদায়ে মানুষ শূন্যতাবোধ করে। প্রিয়জনের বিয়োগ
যাতনা দুর্বিষহ হলেও সময়ের অতিক্রান্তিতে মানুষ একসময় তা’ ভুলে যায়।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন: “মুত্যু মহান
আল্লাহ পাক উনার সান্নিধ্যে যাবার সেতু।” তিনি আরো ইরশাদ করেন: “মু’মিনের উপঢৌকন
হলো মৃত্যু।” মৃত্যুরূপ সেতু অতিক্রমণের কঠিন বাস্তবতা নৈকট্যপ্রাপ্ত
ওলীআল্লাহগণ উনাদেরকেও বিশেষ ধরণের উদ্বিগ্ন করলেও মৃত্যু উনাদের কাম্য বস্তু। সাধারণের
কাছে মৃত্যু একান্তভাবেই অবাঞ্ছিত। মাহবূব ওলীআল্লাহ উনাদের মুবারক জীবনব্যাপী সব আয়োজন, প্রয়াস ও প্রচেষ্টা
কেবলই দুনিয়া বিরাগী মানসিকতায় মহান আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, নূরে মুজাসসাম, মাশুকে মাওলা
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি হাছিলের মহান লক্ষ্যে।
অবিচ্ছেদ্য নৈকট্য প্রত্যাশী সূক্ষ্মদর্শী ওলীআল্লাহগণ উনারা ক্রমান্বয়ে এমন এক উৎকর্ষমণ্ডিত
শীর্ষ মাক্বামে উপনীত হন, যেখানে দুনিয়া ও আখিরাত একাকার হয়ে যায়। পরকালে অনুক্ষণ
আল্লাহ পাক উনার অতুলনীয় দিদারের অবর্ণনীয় ইতমিনানলাভে বিভোর থাকার অনুকূল ক্ষেত্র
প্রস্তুতে মশগুল থাকায় নৈকট্যশীল ওলীআল্লাহ উনাদের দৃষ্টিতে জীবন ও মৃত্যুর ভেদ রেখা
মুছে যায়। অবশ্য এমন ওলীআল্লাহ উনাদের সংখ্যা বিরল।
মানুষের হিদায়েত
ও নছীহতের জন্য পুরুষ ওলীআল্লাহ উনাদের পাশাপাশি মহিলা ওলীআল্লাহ উনাদের মুবারক বিদ্যমানতাও
অপরিহার্য। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, হক্কানী-রব্বানী মহিলা আলিমা, ওলীআল্লাহ উনাদের
সংখ্যা দুনিয়ায় অপ্রতুল। ফলে তুলনামূলকভাবে পুরুষের চেয়ে মহিলারা শরীয়ত পালনে অজ্ঞ
ও অনীহ। মহিলা ওলীআল্লাহ উনাদের মুবারক ছোহবত-এর অভাবে প্রয়োজনীয় ইলম না থাকায় তারা
ইসলাম পালনে অনগ্রসর। তাই দেখা যায়, অনেক মহিলা রোযা পালনে উৎসাহী
ও অভ্যস্ত। কিন্তু যিকির-ফিকির ও নামাযে অনুৎসাহী ও অনভ্যস্ত। ধর্মব্যবসায়ী তথাকথিত
তাবৎ মাওলানারা এজন্য প্রবলভাবে দায়ী। মগজধোলাইকৃত এবং অল্পদামে কেনা ধর্মব্যবসায়ী
দুনিয়াদার আলিমে দুনিয়া ভরে গেছে।
ইসলামী শিক্ষার নামে বাংলাদেশসহ সারা দুনিয়ায় বর্তমানে
তথাকথিত মহিলা মাদরাসাগুলোয় যে শিক্ষা দেয়া হয়, তা’ মূলত মহিলাদেরকে
বেদ্বীন, বদদ্বীন, বেপর্দা ও বেশরা করার নামান্তর।
নাঊযুবিল্লাহ! শীর্ষ মাক্বামে অধিষ্ঠিত একজন ওলীআল্লাহ, তিনি পুরুষই
হোন অথবা মহিলাই হোন, দুনিয়ায় উনার মুবারক অবস্থান মানুষের জন্য পরম নিয়ামত
হিসেবে ধার্য। তাই ওলীআল্লাহগণ উনাদের দুনিয়া থেকে বিদায় উনাদের জন্য আনন্দের হলেও
সমকালীন জীবিত মানুষের জন্য তা সীমাহীন ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। উনাদের শারীরিক অনুপস্থিতি
প্রত্যক্ষ হিদায়েত, নছীহত, ফায়েজ, কামিয়াবী ও কামালতের
অন্তরায় সৃষ্টি করে। মহান আল্লাহ পাক তিনি কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “আমার রহমত মুহসিন
বান্দা (মাহবূব ওলীআল্লাহ) উনাদের নিকটবর্তী।
এমন একজন সুমহান
ও সীমাহীন মর্যাদা, মাক্বাম ও অতুলনীয় বৈশিষ্ট্যসম্পন্না ওলীআল্লাহ ছিলেন
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, ক্বায়িম মাক্বামে হযরত মা আমিনা
আলাইহাস সালাম, বাহরুল উলূম, নূরে মদীনা, গুলে মুবীনা, উম্মুল খইর, আফদ্বালুন নিসা, ফক্বীহাতুন নিসা, ত্বাহিরা ওয়াত
ত্বইয়্যিবা, মাখযানুল মা’রিফাহ, হামিদাতুন নিসা, মাজীদাতুন নিসা, নাজিয়াতুন নিসা, রাহনুমায়ে দ্বীন, ছিদ্দীক্বায়ে
কুবরা, ছাহিবাতুল ইলম ওয়াল হিকাম ওয়াল কাশফ ওয়াল কারামত, মিছদাক্বে কুরআন
ওয়াল হাদীছ, মাহবূবায়ে ইলাহী, হাবীবাতুল্লাহ, হাবীবাতু রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ওলীয়ে মাদারজাদ, জাদ্দাতু খলীফাতুল
উমাম আলাইহিস সালাম, উম্মু মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম, আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদাতুনা
হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম আলহাসানী ওয়ালহুসাইনী ওয়ালকুরাইশী।
(চলবে)
আবা-২১১
0 Comments:
Post a Comment