আদ্ দুরারুল মুখতারাহ্ - ফী নিসবাতি সুলত্বানিন নাছীর (১ম খণ্ড) প্রায় সাড়ে ১৪০০ বছর পর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ لِىْ مَعَ اللهِ وَقْتٌ উনার হাক্বীক্বত মুবারক প্রকাশ-পর্ব-২৭

 

প্রায় সাড়ে ১৪০০ বছর পর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ لِىْ مَعَ اللهِ وَقْتٌ উনার হাক্বীক্বত মুবারক প্রকাশ-পর্ব-২৭

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ১৪৪০ হিজরী শরীফ উনার ১৭ই রমাদ্বান শরীফ লাইলাতুল খামীস শরীফ (বৃহস্পতিবার রাত) সম্মানিত তারাবীহ নামায উনার পর সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক-এ ইরশাদ মুবারক করেন, “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

لِىْ مَعَ اللهِ وَقْتٌ لَّ يَسْٰنِىْ فِيْهِ مَلَكٌ مُّقَرَّبٌ وَلَ نَبِىٌّ مُّرْسَلٌ

প্রকৃতপক্ষে মানুষ এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অর্থ বুঝে না। তারা অর্থ করে থাকে যে, لِىْ مَعَ اللهِ وَقْتٌ  যিনি খালিক্ব যিনি

মালিক যিনি রব উনার সাথে আমার একটা সময় রয়েছে। এখানে وَقْتٌ বলতে মানুষ মনে করে- একটা সময় রয়েছে। না‘ঊযুবিল্লাহ!

প্রকৃতপক্ষে وَالْعَصْرِ বলতে যেমন সমস্ত সময় বুঝানো হয়, وَقْتٌ দ্বারাও

সমস্ত সময় বুঝানো হয়।

لِىْ مَعَ اللهِ وَقْتٌ لَّ يَسْعٰنِْ فِيْهِ مَلَكٌ مُّقَرَّبٌ وَلَ نَبِىٌّ مُّرْسَلٌ

এমন নিসবত-কুরবত এর মধ্যে কোনো নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতা, কোনো নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রবেশ করার কোনো পথ সেখানে নেই। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! অর্থাৎ দায়িমী যে নিসবত। এখন এর মধ্যে অনেক ফিকির রয়েছে, অনেক সূক্ষ্ম ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ রয়েছে। যেটা সাধারণভাবে মানুষের পক্ষে উপলব্ধি করা কঠিন। এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মিছদাক্ব মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারাও। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা আমি একদিন ফিকির করতেছিলাম। বিষয়টা রূহানীভাবে।

لَ يَسْعٰنِىْ فِيْهِ مَلَكٌ مُّقَرَّبٌ وَلَ نَبِىٌّ مُّرْسَلٌ

এখানে সংযোগের কোনো রাস্তা নেই। যখন আমি ফিকির করলাম, এর হাক্বীক্বতে প্রবেশ করার কোশেশ করলাম, তখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন যে, ‘ وَقْتٌ (ওয়াক্বতুন) শব্দের আসলে অর্থ

হচ্ছে- অনন্তকাল।’ সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এখানে কারো কোনো প্রবেশ করার সুযোগ নেই। ঠিক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালিমা শরীফ যেমন রয়েছেন, উনার মধ্যে প্রবেশ করার সুযোগ নেই, এখানেও কোনো সুযোগ নেই। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

لَ اِلٰهَ اِلَّ اللهُ مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

(‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।’) এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালিমা শরীফ উনার মধ্যে কারো প্রবেশ করার কোনো সুযোগ নেই। ঠিক যিনি খালিক্ব যিনি মালিক রব মহান আল্লাহ পাক, যিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে কারো প্রবেশ করার কোনো সুযোগ নেই। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! শুধু এতটুকু নয়; বরং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিনড়বাস সালাম, হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের যে বিষয়টা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যে একটা বিশেষ নৈকট্য মুবারক, নিসবত মুবারক এর মধ্যে কারো প্রবেশ করার কোনো সুযোগ নেই। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! বিষয়টা অত্যন্ত সূক্ষ্ম ফিকিরের বিষয়। কাজেই উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত মুবারক মানুষ কতটুকু বর্ণনা করবে? সেজন্যই বলা হচ্ছে,

نَحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّ يقَُاسُ بِنَا اَحَدٌ

অর্থ: “আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভূক্ত। আমাদের সাথে কারো কোনো ক্বিয়াস করা চলবে না।”

لَيْسَ اَحَدٌ مِّنَ الْخَلَئِقِ يفَْضُلُ اَهْلَ بَيْتِىْ غَيْرِىْ

অর্থ: “সৃষ্টির কোনো সৃষ্টি নেই, যাকে তুলনা করা যেতে পারে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে। কেউ তুল্য নেই একমাত্র মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ব্যতীত।” সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ফিকির করতে হবে। বিষয়টা অত্যন্ত সূক্ষ্ম, ফিকিরের বিষয়। কাজেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলছেন,

اَنَ وَاَهْلُ بَيْتِىْ مُطَهَّرُوْنَ مِنَ الذُّنوُْبِ

অর্থ: “আমি এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সমস্ত কিছু থেকে পবিত্র। অর্থাৎ পবিত্রতা দানকারী।” সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

এখন উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত মুবারক মানুষ কতটুকু বর্ণনা করবে? অনেক সূক্ষ্ম ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ রয়েছে, এর অনেক হাক্বীক্বত রয়েছে। তবে আপাতত বুঝার জন্য এতটুকু। যে আসলে এমন নিসবত, এমন কুরবত, এমন নৈকট্য এর পরে আর কোনো নৈকট্য নেই।” সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিনড়বাস সালাম উনাদের সাথে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কত বেমেছাল মহাসম্মানিত তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। এক কথায় তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!


0 Comments: