হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ( ১ নং )

হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে
ফতওয়া দেয়ার কারণ

সুন্নতের পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলামের নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরিকী ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র-

মাসিক আল বাইয়্যিনাতপত্রিকায় এ যাবৎ যত লিখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ মাসিক আল বাইয়্যিনাতেএমন সব লিখাই পত্রস্থ  হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ করণে বিশেষ সহায়ক।

          তদ্রুপ মাসিক আল বাইয়্যিনাতেহিজাব বা পর্দার শরয়ী আহকাম ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার মাকছূদ বা উদ্দেশ্যও ঠিক তাই। কেননা,

          প্রথমতঃ কিছু লোক কিল্লতে ইল্ম ও কিল্লতে ফাহ্মঅর্থাৎ কম জ্ঞান ও কম বুঝের কারণে বক্তব্য ও লিখনীর মাধ্যমে পর্দা সম্পর্কে সমাজে, নানাবিধ বিভ্রান্তি ছড়িয়ে থাকে। যেমন কিছুদিন পূর্বে একটি দৈনিক পত্রিকায় পর্দা সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে লিখেছে যে, “....... মহিলারা মূখ বা চেহারা, হাত ও পা খোলা রেখে বাহিরে বের হতে পারবে।” (নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক)

          অথচ তাদের উক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ রূপেই কুরআন, সুন্নাহ, ইজ্মা ও ক্বিয়াসের খিলাফ। তারা মূলতঃ কুরআন শরীফের একখানা আয়াত শরীফের সঠিক অর্থ ও ব্যাখ্যা না বুঝার কারণেই এরূপ বিভ্রান্তিকর বক্তব্য পেশ করেছে।
          মূলতঃ মহিলারা সমস্ত শরীর ঢেকে বা পর্দা করে বের হবে এটাই শরীয়তের নির্দেশ। অতএব তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে যে অনেকেই পর্দা তরক করে কবীরা গুণাহে গুণাহ্গার হবে তা আর বলার অপেক্ষাই রাখেনা।
          দ্বিতীয়তঃ কতিপয় নামধারী পীর, আমীর, শাইখুল হাদীস, মুফতী, মুফাস্সীরে কুরআন ও মাওলানারা প্রকাশ্যে বেগানা মহিলাদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করে, ইফতার করে, মিটিং করে। আর এটাকে তারা বৃহত্তর স্বার্থের দোহাই দিয়ে জায়িয বলে প্রচার করছে। (নাউযুবিল্লাহ)

          মূলতঃ যুগে যুগে দুনিয়া লোভী উলামায়ে ছূরা দুনিয়াবী ফায়দা লুটার উদ্দেশ্যে হারামকে হালাল ও হালালকে হারাম ফতওয়া দিয়ে আসছে। যেমন, কাইয়্যূমে আউয়াল হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর যামানায় উলামায়ে ছূআবুল ফযল, ফৈজী ও মোল্লা মুবারক নাগরী গং বাদশা আকবরকে সন্তুষ্ট করে দুনিয়াবী কিছু ফায়দা লাভের উদ্দেশ্যে কুরআন-সুন্নাহর মনগড়া অপব্যাখ্যা করে বহু হারামকে হালাল ও হালালকে হারাম ফতওয়া দিয়েছিল।
          বর্তমান যামানার উলামায়ে ছূতথাকথিত পীর, আমীর, শাইখুল হাদীস, মুফতী, মুফাস্সীরে কুরআন ও তার গংরা যেন আবুল ফযল গংদেরই পূর্ণ মিছদাক। দুনিয়াবী ফায়দা লাভের উদ্দেশ্যে এবং খানিকটা পদ লাভের প্রত্যাশায় তারা হারাম কাজগুলো নিদ্বিধায় করে যাচ্ছে। সাথে সাথে হারাম কাজ গুলোকে হালাল বলে ফতওয়া দিচ্ছে। বস্তুতঃ এরাই হচ্ছে হাদীস শরীফে বর্ণিত দাজ্জালের চেলা। যেমন হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে,
عن ابى هريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم يكون فى اخر الزمان دجالون كذابون يأتونكم من الاحاديث بما لم تسمعوا انتم ولا اباؤكم فاياكم واياهم لايضلونكم ولايفتنونكم.
অর্থঃ- হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আখিরী যামানায় কিছু সংখ্যক মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে, তারা তোমাদের নিকট এমন সব (মিথ্যা-মনগড়া) কথা উপস্থাপন করবে, যা তোমরা কখনো শুননি এবং তোমাদের বাপ-দাদারাও শুনেনি। সাবধান! তোমরা তাদের থেকে দূরে থাকবে এবং তোমাদেরকে তাদের থেকে দূরে রাখবে। তবে তারা তোমাদেরকে গোমরাহ্ করতে পারবে না এবং ফিৎনায় ফেলতে পারবেনা।”(মুসলিম শরীফ)          
          স্মর্তব্য যে, ঐসকল দাজ্জালের চেলা নামক পীর, আমীর, শাইখুল হাদীস, মুফতী, মুফাস্সীরে কুরআন ও মৌলভীদের প্রকাশ্যে বেপর্দা হওয়ার কারণে আজ সাধারণ লোক, বিভ্রান্তিতে পরছে। সাধারণ লোক মনে কড়ছে পর্দার কোন প্রয়োজনীয়তা নেই। যদি থাকতোই তবে নামধারী মৌলভীরা বেপর্দা হয় কি করে?
          অতএব, উল্লিখিত উলামায়ে ছূদের বেপর্দা হওয়ার কারণে যে, সাধারণ লোকেরা পর্দা সম্পর্কীয় বিষয়ে ঈমান-আমলের ক্ষেত্রে বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে তা আর বলার অপেক্ষাই রাখেনা।

          অতএব, সকলেই যেন পর্দা সম্পর্কে সঠিক আক্বীদা পোষণ করতে পারে বা হিজাব তথা পর্দার ছহীহ্ আহকাম অবগত হতে পারে এবং যারা অজ্ঞতাহেতু ও নফ্সের তাড়নায় পর্দা সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এবং বেপর্দা হচ্ছে তারাও যেন বিভ্রান্তি ও বেপর্দা হতে হিদায়েত ও পর্দার ভিতর আসতে পারে, তাই মাসিক আল বাইয়্যিনাতে”“হিজাব বা পর্দার শরয়ী আহকাম ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়াদেয়া হলো। আল্লাহ্ পাক আমাদের সকলকে প্রদত্ত ফতওয়া মুতাবিক আমল করে মহান আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর রেযামন্দি হাছিল করার তাওফীক দান করুন। (আমীন)

কুরআন শরীফ, সুন্নাহ শরীফ,
ইজ্মা ও ক্বিয়াসের দৃষ্টিতে
পর্দা করা ফরযে আইন

দ্বীন ইসলামের ভিত্তি বা প্রধানতম ফরয হচ্ছে পাঁচটি (১) ঈমান বা আক্বীদা, (২) নামায, (৩) যাকাত, (৪) হজ্ব (৫) রমযানের রোযা।
          অতঃপর পুরুষদের জন্যে হালাল কামাই করা ফরয। আর মহিলাদের জন্যে হিজাব বা পর্দা করা ফরয। অর্থাৎ ফরযে আইন।
          কুরআন ও সুন্নাহর বহু স্থানেই হিজাব বা পর্দার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও ফযীলত বর্ণিত হয়েছে, পাশাপাশি বেপর্দা হওয়ার কারণে কঠিন আযাব ও অসন্তুষ্টির কথাও বর্ণিত হয়েছে।
          নিম্নে হিজাব বা পর্দা সম্পর্কিত উল্লিখিত বিষয়ে কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ, তাফসীর, শরাহ, ফিক্বাহ ফতওয়া ও লূগাতের কিতাব সমূহ থেকে বিস্তারিত দলীল-আদিল্লাহ পর্যায়ক্রমে উল্লেখ করা হলো-
লুগাতী বা আভিধানিক ও ইছতিলাহী বা পারিভাষিক অর্থের দ্বারা
হিজাব বা পর্দারপ্রমাণ
حجاب (হিজাব) এর লুগাতী বা আভিধানিক অর্থ- حجاب হিজাবুন ও حجابة হিজাবাতুন শব্দ দুটি اسم مصدر (ইস্মে মাছদার)। শব্দটি واحد বা একবচন, جمع বা বহুবচন হলো حجب হুজুবুন। শব্দটি حجب থেকেও এসেছে। এর লুগাতী বা আভিধানিক অর্থ হলোঃ পর্দা, ঘোমটা, অবগুণ্ঠন, আবরণ, আচ্ছাদন, ছদ্মবেশ, যবনিকা, বিনয়, লজ্জা, দুই বস্তুর মধ্যবর্তী আঁড়াল ইত্যাদি। سترء عورة- فرج، غطاء শব্দগুলোও পর্দার অর্থ প্রদান করে।
নিম্নে বিশ্ব বিখ্যাত লুগাত এর কিতাব থেকে حجاب হিজাবুন এর শাব্দিক অর্থ আলোচনা করা হলো।
[১]
حجاب: پردہ، اوٹ، جمع حجب (قاموس  القران ص 204)
অর্থঃ- হিজাব অর্থ হলোঃ পর্দা, আঁড়াল। বহুবচন হলো ম্নভ্রব্দ হুজুবুন।”(কামূসুল কুরআন ২০৪ পৃষ্ঠা)
[২]
حجب الحجب والحجاب المنع من الوصول، يقال حجبه حجبا وحجابا. (المفردات فى غريب القران ص108)
অর্থঃ- الحجب : حجب  الحجاب
অর্থ কোন ভিত্তি (কিছু) থেকে নিষেধ করা, বাঁধা দান। যেমন বলা হয়, সে পর্দা করার মত পর্দা করেছে।”(আল মুফরাদাত ফী গারীবিল্ কুরআন ১০৮ পৃষ্ঠা)
[৩]
حجاب (হিজাবুন) পর্দা। حجب বহুবচন (লুগাতুল্ কুরআন ১১০ পৃষ্ঠা)
[৪]
حجاب (হিজাবুন) পর্দা, حجب হুজুবুনপর্দা (বহুবচন) (কুরআনের অভিধান ১৮৩ পৃষ্ঠা)
[৫]
حجب: یا حجاب. ڈھانپنا، روکنا، ڑکرنا، محروم کرنا. حاجب. دربان، ابرو، اسکی جمع حواجب اور حواجیب. (لغات الحدیث  ج 1 ص 20)
অর্থঃ- حجب হাজবুনحجاب হিজাবুনঅর্থ হলোঃ ঢেঁকে দেয়া, আবৃত করা, লুকায়িত করা; বাঁধা দেয়া, আটকানো, থামান, বন্দী করা, আবদ্ধ করা; দেয়াল দেয়া, পর্দা করা, আঁড়াল করা, বঞ্চিত করা, নিরাশ করা। حاجب হাজিবুন অর্থঃ দ্বাররক্ষক, দারোয়ান; সম্মান, ইজ্জত, সুনাম, সুখ্যাতি, সুচরিত্র। এর বহুবচন حواجب এবং حواجيب”(লুগাতুল হাদীস ১ম জিঃ ২০ পৃষ্ঠা)
[৬]
حجب (الحجب) المنع. منه (الحجاب). (المغرب فى ترتيب المعرب ج1 ص180)
অর্থঃ- الحجب : حجب অর্থ বাঁধা দেয়া, ফিরিয়ে রাখা। حجب থেকে الحجاب শব্দটি এসেছে।” (আল মাগরিব ফী তারতীবিল্ মারিব ১ম জিঃ ১৮০ পৃষ্ঠা)
[৭]
(حجب) وهو المنع. يقال حجبه عن كذا، اى منعته. (معجم مقاييس اللغة ج2 ص143)
অর্থঃ- “(حجب হাজবুন) হচ্ছে বাঁধা দান, প্রতিহত করা, ফিরিয়ে রাখা ইত্যাদি। যেমন, বলা হয়- সে এটা থেকে পর্দা করেছে। অর্থাৎ সে বাঁধা দিয়েছে, নিষেধ করেছে বা ফিরিয়ে রেখেছে।”(মুজামে মাক্বাঈসুল লুগাহ্ ২য় জিঃ ১৪৩ পৃষ্ঠা)
[৮]
الحجابة والحجاب ما احتجب به جمع حجب. (القاموس المحيط ج1 ص54)
অর্থঃ- الحجابة আল হিজাবাতুالحجاب আল হিজাবুহচ্ছেঃ যা কিছুর দ্বারা পর্দা বা আঁড়াল করা হয়। শব্দটির جمع বহুবচনহলো حجب হুজুবুন। (আল কামূসূল মুহীত্ব ১ম জিঃ ৫৪ পৃষ্ঠা)
[৯]
الحجاب: الساتر (ج) حجب الحجابة : حرفة الحاجب الحجب : المنع. (القاموس الفقهى ص76)
অর্থঃ- الحجاب আল হিজাবঅর্থঃ আবৃত, গোপন, আবরণ, লজ্জাস্থান, লজ্জা-শরম। বহুবচন حجب হুজুবুন الحجابة আল্ হিজাবাতুঅর্থঃ দারোয়ানের পেশা। الحجب আল হাজবু অর্থঃ নিষেধ করা, বাঁধা দেয়া, প্রতিহত করা, ফিরিয়ে রাখা, পর্দা করা।” (আল্ কামূসুল ফিকহী ৭৬ পৃষ্ঠা)
[১০]
الحجاب : بكسر الحاء مصدر حجب، ج حجب : الستر. الحجابة : مهنة الحاجب، (معجم لغة الفقهاء ص 174-175)
অর্থঃ- الحجاب আল্ হিজাবুحاء এর নিচে যের সহযোগে। যার মাছদার حجب হাজবুন’, বহুবচন حجب হুজুবুনঅর্থঃ পর্দা, লজ্জাস্থান, আবরণ, শরীরের যে অংশ ঢেকে রাখার আদেশ শরীয়ত কর্তৃক প্রদত্ত হয়েছে। الحجابة আল হিজাবতুঅর্থঃ দারোয়ানের চাকুরী।” (মুজামে লুগাতুল ফুক্বাহা ১৭৪, ১৭৫ পৃষ্ঠা)
[১১]
الحجاب : الستر. حجب الشئ يحببه حجبا وحببا وحجبه : ستره. (لسان العرب ج2 ص777)
অর্থঃ- الحجاب আল্ হিজাবুঅর্থঃ আড়াল, আবরণ, অবগুণ্ঠন, পর্দা। কোন কিছু থেকে পর্দা করা। সে পর্দা করার মত পর্দা করেছে। حجبه হাজ্জাবাহুঅর্থঃ- সে পর্দা করেছে।” (লিসানুল্ আরব ২য় জিঃ ৭৭৭ পৃষ্ঠা)
[১২]
(الحجاب) : الساتر. (ج) حجب، و (الحجاب الحاجز) مايفصل بين الصدر والبطن (الحجب) : المنع. (المعجم الوجيز ص 135)
অর্থঃ- (الحجاب আল হিজাবু’) অর্থঃ আবৃত, গোপন, আবরণ, লজ্জাস্থান। বহুবচন হুজুবুন। (الحجاب الحاجز বাধা দানকারী পর্দা) হচ্ছে; যা বক্ষদেশ ও পেটকে আড়াল করে রাখে বা গোপন রাখে। (الحجب আল্ হাজবু’) অর্থঃ পর্দা করা, নিষেধ করা, বাঁধা দেয়া, প্রতিহত করা, ফিরিয়ে রাখা।”(আল্ মুজামুল্ ওয়াজীয ১৩৫ পৃষ্ঠা)
[১৩]
حجبه : حجبا من باب قتل منعه ومنه قيل للستر (حجاب) لانه يمنع المشاهدة وقيل للبواب (حاجب) لانه يمنع من الدخول والاصل فى (الحجاب) جسم حائل بين جسدين وقد استعمل فى المعانى فقيل (العجز حجاب) بين الانسان ......... و (الحاجبان) العظعان فوق العين بالشعر واللحم قاله ابن فارس والجمع (حواجب). (المصباح المنير ص121)
অর্থঃ- (حجبه حجبا সে পর্দা করার মত পর্দা করেছে) শব্দটি বাবেقتل - يقتل  থেকে। অর্থঃ সে পর্দা করেছে বা বাঁধা দান করেছে। সে অনুযায়ী কেউ কেউ ستر ছিতরতথা আবরণ, গোপন, লজ্জাস্থানকে (حجاب হিজাব’) বলেন। কেননা, আবরণ বা পর্দা দৃষ্টি বা নজরকে বাঁধাদান করে। কেউ কেউ بواب বাওওয়াবদ্বাররক্ষীকে (حاجي হাজিবুন’) বলেন। যেহেতু দ্বাররক্ষী প্রবেশে বাঁধা দান করে থাকে।
          মূলতঃ حجاب হচ্ছে এমন পর্দা যা দুই শরীরের মধ্য অন্তরায় করে থাকে। আর حجاب শব্দটি এই অর্থেই ব্যবহৃত হয়। কেউ বলেন, (বাঁধা দান করাই পর্দা বা হিজাব) (গাইরে মাহরাম) ব্যক্তির মধ্যে যা সংঘঠিত হবে। ......... (الحاجبان) হলো চোখের উপরে চুল ও গোস্ত দ্বারা ঢাকা হাড়। ইবনে ফারিস বলেন, এর বহুবচন حواجب হাওয়াজিব”(আল্ মিছবাহুল্ মুনীর ১২১ পৃষ্ঠা)
[১৪]
(الحجاب) الستر و (حجبه) منعه من الدخول وبابه نصر ومنه (الحجب) فى الميراث. و(المحجوب) الضرير. (مختار الصحاح ص52)
অর্থঃ- “(الحجاب আল হিজাবু) লজ্জাস্থান, পর্দা, আবরণ, লজ্জা-শরম এবং (حجبه সে পর্দা করেছে) অর্থাৎ প্রবেশ করতে বাঁধা দিয়েছে। এর বাবে نصر ينصر থেকে এসেছে। তা হতে (الحجب বঞ্চিত হওয়া) ওয়ারিশ সত্ত্ব থেকে। আর (المحجوب) অর্থ অন্ধ, দূর্বল। (মুখতারুছ্ ছিহ্হাহ্ ৫২ পৃষ্ঠা)
[১৫]
حجاب-پردہ. حجاب پردہ داران، دربانان جمع حاجب کی. (کریم اللغات ص 47)
অর্থঃ- حجاب হিজাবুনঅর্থ পর্দা-পুশিদা। حجاب হুজ্জাবুনঅর্থ পর্দা -পুশিদা দ্বারী। যা حاجب হাজিবুনশব্দের বহুবচন। (কারীমুল্ লুগাত ৪৭ পৃষ্ঠা)
[১৬]
حجاب: پردہ، اڑ، چلمن، شرم جمع حجابات  وحجب، حجاب اٹھنا: پردہ اٹھنا. (جامع  اردو لغات ص 279)
অর্থঃ- حجاب হিজাবঅর্থ পর্দা, আড়াল, বারান্দায় ব্যবহৃত বাঁশের ফালিতে প্রস্তুত পর্দা বিশেষ, শরম-লজ্জা-বিনয়। বহুবচন حجابات হুজ্জাবাতুনحجب হুজ্জাবুন হিজাব উঠ্না,’ অর্থ পর্দা উঠানো, পর্দা ভঙ্গ করা।” (জামেউর্দূ লুগাত ২৭৯ পৃষ্ঠা)
[১৭]
حجاب (حجاب) پردہ جمع حجب- حجاب حا جب کی جمع- حجابت (حجابت) پردہ داری، دربانی، ایلچی کری. (فرھنگ عامرہ ص 180)
অর্থঃ- حجاب (حجاب হিজাবুন) অর্থ পর্দা। বহুবচন حجب হুজুবুন حجاب হুজ্জাবুনশব্দটি حاجب হাজিবুনশব্দের বহুবচন। حجابت (حجابت হিজাবাতুন’) অর্থ পর্দাদারী, দারওয়ানী, দূতগীরী করা।”(ফরহঙ্গে আমেরা ১৮০ পৃষ্ঠা)
[১৮]
حجاب (হিজাব) পর্দা। নেকাব। লজ্জা। তথা শরম। আদব। লেহাজ।
حجاب انا (হিজাব আনা) শরম আসা। লজ্জাশীল হওয়া। حجابى (হিজাবী) পর্দানশীন, লজ্জাশীলা। حجب (হুজুব) حجب এর বহুবচন। (ফরহাঙ্গে জাদীদ উর্দূ-বাংলা অভিধান ৩৭২ পৃষ্ঠা)
[১৯]
حجاب: مذکر -پردہ، اڑ، چلمن، شرم، لحاظ. حجاب اٹھنا:- پردہ اٹھنا، روک نہ رھنا. حجاب ٹوٹنا:- شرم  دور ھونا. (فیروز اللغات اردو ص 581)
অর্থঃ- حجاب শব্দটি مذكر (পুঃ লিঙ্গ) অর্থঃ পর্দা, আঁড়াল, গোপন, বারান্দায় ব্যবহৃত বাঁশের ফালিতে প্রস্তুত পর্দা বিশেষ, লজ্জা-শরম, সম্মান, বিনয়। حجاب اٹھنا অর্থঃ পর্দা ভঙ্গ করা, বাতিল করা, পর্দা না করা। حجاب ٹوٹنا অর্থঃ লজ্জা-শরম দূর হওয়া। (ফীরোযুল্ লুগাত উর্দূ ৫৮১ পৃষ্ঠা)
[২০]
الحجاب. مص. ج حجب: پردہ، ھروہ چیز جودو چیزون کے در میان حانل ھو، تعویذ. حجاب  الشمس: افتاب کی روشنی. حجاب قلب پردہ جو  دل اور پیٹ کے درمیان حائل ھے.(مصباح اللغات ص 137)
অর্থঃ- الحجاب শব্দটি مصدر এর বহুবচন حجب হুজুবুনঅর্থঃ পর্দা, এমন জিনিস যা দুটি ব্যক্তির মাঝখানে বাঁধা সৃষ্টি করে, আশ্রয়। حجاب الشمس অর্থঃ সূর্যের আলো। حجاب قلب হলো এমন পর্দা যা দিল্ অথবা পাকস্থলী-এর মধ্যে বাঁধা স্বরূপ।”(মিছবাহুল্ লুগাত ১৩৭ পৃষ্ঠা)
[২১]
الحجاب ج حجب الستر وكل ما احتجب به حجب – حجبا وحجاب : منعه من الدخول. المنجد فى اللغة ص117)
অর্থঃ- الحجاب আল্ হিজাবুশব্দের বহুবচন حجب হুজুবুনঅর্থ হলোঃ পর্দা, আবরণ, লজ্জা-শরম। প্রত্যেক সেই জিনিষকে হিজাব বলে, যার দ্বারা পর্দা বা আঁড়াল হওয়া যায়। ......... حجب হাজাবাশব্দটি حجبا হাজবানحجابا হিজাবানশব্দ থেকে। যার অর্থঃ সে প্রবেশ করতে বাঁধা দিয়েছে।”(আল্ মুনজিদ ফিল্ লুগাহ্ ১১৮ পৃষ্ঠা)
[২২]
حجاب: پردہ. اوٹ، نقاب (2) حیا، شرم، لحاظ،  حجاب انا: شرم انا، حیا انا، حجاب اٹھنا: پردہ اٹھنا، روک ھٹ جانا (2) غیرت، شرم نہ  ھونا. حجاب ٹوٹنا: شرمدور ھونا، لاج نہ رھنا، حجاب حاجز: پردہ شکم. حجاب کرنا: پردہ کرنا، چھپنا، لحاظ کرنا. (فیروز اللغات اردو ص 563)
অর্থঃ- حجاب হিজাবুনঅর্থঃ- পর্দা, আঁড়াল, নেকাব, লজ্জা, শরম, সম্মান, বিনয়। حجاب انا হিজাব আনাঅর্থঃ শরম হওয়া, লজ্জা হওয়া। حجاب اٹھنا হিজাব উঠ্নাঅর্থঃ পর্দা ভঙ্গ করা, পর্দা সরে যাওয়া, লজ্জা, অবজ্ঞা, শরম না থাকা। حجاب ٹوتنا হিজাব টুট্নালজ্জা-শরম দূর হওয়া, সম্মান না থাকা। حجاب حاجز হিজাবু হাজিয্অর্থঃ পেটের পর্দা। حجاب كرنا হিজাব করনাঅর্থঃ পর্দা করা, লুকিয়ে রাখা, লজ্জা-শরম করা।” (ফীরোযুল্ লুগাত উর্দূ ৫৬৩ পৃষ্ঠা)
[২৩]
حجاب: پردہ- حجب جمع. حجاب: دربان، ایلچی حاجب واحد- (عربی لغات فیروزی  ص 101)
অর্থঃ- حجاب হিজাবুনঅর্থ পর্দা। বহুবচন حجب হুজুবুন। حجاب হুজ্জাবুনঅর্থঃ দ্বাররক্ষক, দারোয়ান, দূত, রাজদূত। ইহার একবচন حاجب হাজিবুন। (আরবী লুগাতে ফীরোযী ১০১ পৃষ্ঠা)
[২৪]
حجاب: پردہ، اوٹج: حجب ھرچیز دو چیزوں کے درمیان حانل ھو. حجاب: حجب (ن) پردہ میں کرنا. أ نے سے روک دینا. حجابۃ: دربانی. (بیان اللسان ص 219)
অর্থঃ- حجاب হিজাবুনঃ পর্দা, আঁড়াল, আবরণ। বহুবচন حجب হুজুবুনদুটি জিনিসের মাঝখানে বাঁধাস্বরূপ কোন জিনিস। বাঁধা সৃষ্টি হওয়া। حجاب শব্দটির মাছদার حجب হাজবুনবাবে نصر পর্দা করা, পর্দা দেয়া حجابة হিজাবাতুনঅর্থঃ দারোয়ানগীরী।” (বয়ানুল্ লিসান ২১৯ পৃষ্ঠা)
[২৫]
حجاب بکسر اول وفتح دوم بمعنی پردہ. حجب جمع.  حجاب بمعنی دربان لوک یاپردے دار. یہ حاجب کی جمع ھے. حجابت: پردہ داری. دربانی. ایلچی گری. (لغات ھیرا ص  361)
অর্থঃ- حجاب হিজাবحاء যের এবং جيم যবর সহযোগে। অর্থঃ পর্দা, বহুবচণ حجب হুজুবুন حجاب হুজ্জাবুনঅর্থ দারোয়ান অথবা পর্দা ওয়ালা। শব্দটি حاجب হাজিবুনশব্দের বহুবচন। حجابت হিজাবাতঅর্থঃ পর্দাদারী, দারওয়ানী, দূতগীরী।”(লুগাতে হীরা ৩৬১ পৃষ্ঠা)
[২৬]
حجاب: پردہ. حجاب جمع حاجب بمعنی پردہ دار  ودربانکی. حجابت: پردہ داری، دربانی. ایلچی گری. (لغات کشوری ص 148)
অর্থঃ- حجاب হিজাবুনঅর্থঃ পর্দা। حجاب হুজ্জাবুনশব্দটি حاجب হাজিবুনএর বহুবচন। অর্থ হলোঃ পর্দা ওয়ালা এবং দারোয়ানী। حجابت হিজাবাতঅর্থঃ পর্দাদারী, দারওয়ানী, দূতগীরী।”(লুগাতে কিশওয়ারী ১৪৮ পৃষ্ঠা)
[২৭]
حاجب: دربان ج: حجاب (القاموس الاصطلاحى الجديد ص219)
অর্থঃ حاجب হাজিবুনঅর্থঃ দারোয়ান, দ্বাররক্ষক। বহুবচন حجاب হুজ্জাবুন” (আল্ ক্বামূসুল্ ইছত্বিলাহীল্ জাদীদ ২১৯ পৃষ্ঠা)
[২৮]
حجب. حجبا: چھپانا، رکاوٹ بنتا، وراثت سے محروم کرنا،  کور کرنا.
احتجاب: چھپ جانا، غائب ہوجانا پردہ کرنا  حجاب ج: حجب: پردہ، رکاوٹ اڑ، پاڑیشن کی دیوار (2) تعویذ. حاجب الۃ التصویر: کیمرہ کاپردہ.  (حجاب) ج حجب: نقاب، پردہ، اڑ. (القاموس الجدید  عربی اردو ص 106)
অর্থঃ- حجب হাজাবাএর মাছদার حجبا অর্থ হলোঃ গোপন করা, লুকানো, বাঁধা সৃষ্টি করা, ওয়ারিস সত্ত্ব থেকে মাহরূম করা, আঁড়াল করা, পর্দা করা। احتجاب ইহতিজাবঅর্থঃ গোপন হয়ে যাওয়া, অদৃশ্য-গাইব হয়ে যাওয়া, পর্দা করা। حجاب হিজাব এর বহুবচন حجب হুজুবুন, অর্থঃ পর্দা, বাঁধা, আঁড়াল, দেয়ালের পাটিশন, আশ্রয়। حاجب الة التصوير. অর্থঃ ক্যামেরার পর্দা। (حجاب হিজাবুন) বহুবচন حجب হুজুবুনঅর্থঃ নেকাব, পর্দা, আঁড়াল। (আল্ কামূসুল্ জাদীদ আরবী উর্দূ ১৫৬ পৃষ্ঠা)
[২৯]
حجاب: حجاب، مانع، حاجز، ستار، حياء، (القاموس الجديد ص 386)
অর্থঃ- حجاب : حجاب হিজাবুনঅর্থ বাঁধা, বিঘœ, প্রতিবন্ধক, নিষেধ, বেড়া, অবরোধ, ঢাকা, পর্দা, লজ্জা-শরম।”(আল্ ক্বামূসু জাদীদ ৩৮৬ পৃষ্ঠা)
[৩০]
حجاب: پردہ. حجب جمع. حجاب الحاجز: پردہ شکم. حجابۃ. در بانی. (اسلامک جدید لغات ص 104)
অর্থঃ- حجاب হিজাবঅর্থঃ পর্দা বহুবচন حجب হুজুবুন حجاب الحاجز হিজাবুল্ হাজিয্অর্থঃ উদর বা পেটের পর্দা। حجابة হিজাবাতুনঅর্থ দ্বার রক্ষক, দারোয়ান।” (ইসলামিক জাদীদ লুগাত ১০৪ পৃষ্ঠা)
[৩১]
حجاب. ستر.  veil. cover(القاموس المجرسى ص80)
অর্থঃ- حجاب হিজাবুনঅর্থঃ পর্দা, আড়াল, আবরণ, cover (কভার) veil (ভেইল) (আল কামূসুল্ মাদারিসী ৮০ পৃষ্ঠা)
[৩২]
حجاب (হিজাবুন) পর্দা, দুই বস্তুর মধ্যবর্তী আঁড়াল। حجب (হাজবুন) আবৃত করে দেয়া, আড়াল সৃষ্টি করা। حجابة (হিজাবাতুন) দ্বাররক্ষণের কাজ।
حجب (হাজবুন) ঢেকে ফেলা, লুকিয়ে ফেলা, বিরত রাখা, বাঁধা হয়ে দাঁড়ানো। حجبة (হাজাবাতুন) দ্বাররক্ষীর কাজ। (আল-কাওসার ১৫৭ পৃষ্ঠা)
[৩৩]
حجب: حجاب - حجب এর مصى পর্দা, আঁড়াল। অন্তরায়, তাবিয। কবচ, উঁচু পাহাড়, বোরকা। حجاب ال شمس. সূর্যরশ্মি। রবিকর। الحجاب الحاجر মধ্যচ্ছদা। حجاب القلب হৃদ-আবরণ। حجابة দ্বার রক্ষীর পেশা বা কর্তব্য বা পদ। কাবা ঘরের বিভিন্ন প্রকার সেবার একটি। (আল্ মানার আরবী-বাংলা অভিধান ৫৭৬ পৃষ্ঠা)
[৩৪]
حجاب (হিজাব/hejab) পর্দা; অবগুণ্ঠন; হিজাব। veil curlain.(ফার্সী-বাংলা-ইংরেজী অভিধান ২৭৭ পৃষ্ঠা)
[৩৫]
حجاب (হিজাবুন)- অবগুণ্ঠন, ঘোমটা, পর্দা, ছদ্মবেশ, আচ্ছাদন, আবরণ, দুই বস্তুর মধ্যবর্তী আড়াল; الشمس সূর্যের আলো। (বাংলা একাডেমী আরবী-বাংলা অভিধান ১১৪৯ পৃষ্ঠা)
[৩৬]
حجب (হজব)-আবৃত করিয়াছে, গোপন করিয়াছে, পর্দা করিয়াছে, ঢাকিয়াছে, ভিতরে আসিতে বিরত রাখিয়াছে। بينهما উভয়ের মধ্যে প্রতিবন্ধক হইয়াছে। صدره তাহার বক্ষ সংকীর্ণ হইয়াছে। (বাংলা একাডেমী আরবী বাংলা অভিধান ১১৫০ পৃষ্ঠা)
حجاب হিজাব এর ইছতিলাহী বা পারিভাষিক অর্থ-
[৩৭]
الحجاب كل ما حال بين شيئين. (معجم لغة الفقهاء 174)
অর্থঃ- প্রত্যেক ঐ জিনিষকে হিজাব বলে, যা দুটি জিনিসের মধ্যে অন্তরায় সৃষ্টি করে।” (মুজামে লুগাতুল্ ফুক্বাহা ১৭৪ পৃষ্ঠা)
[৩৮]
الحجاب ما تلبسه المرأة من الثياب لستر العورة عن الاجانب. (معجم لغة الغقهاء ص 174)
অর্থঃ- হিজাব হচ্ছে, মহিলাগণ কাপড় থেকে যা পরিধান করে, অন্যপুরুষ থেকে এড়িয়ে লজ্জাস্থান আবৃত করার জন্য।‘ (মুজামে লুগাতুল্ ফুক্বাহা ১৭৪ পৃষ্ঠা)
[৩৯]
الحجابة والحجاب ما احتجب به. (القاموس المحيط ج1 ص54)
অর্থঃ- হিজাবা ও হিজাব তাকেই বলে, যার দ্বারা আড়াল বা পর্দায় থাকা যায়।”(আল্ ক্বামূসুল মুহীত্ব ১ম জিঃ ৫৪ পৃষ্ঠা)
[৪০]
قوله فى حديث الصلاة: حين توارت بالحجاب ههنا. (لسان العرب ج2 ص 777)
অর্থঃ- ছলাত (নামায) বিষয়ক হাদীস শরীফে রয়েছে, توارت بالحجاب অর্থাৎ যখন তোমরা নামায পড়, তখন নিজকে পর্দার মধ্যে লুকিয়ে রাখএটাই হচ্ছে পর্দা’ (লিসানুল্ আরব ২য় জিঃ ৭৭৭ পৃষ্ঠা)
[৪১]
ھر چیز دو چیزوں کے در میا ن حائل ھو. (بیان. اللسان ص 219)
অর্থঃ- দুটি জিনিসের- ব্যক্তির মাঝখানে বাঁধা সৃষ্টিকারী কোন জিনিস।”(বয়ানুল্ লিসান ২১৯ পৃষ্ঠা)
[৪২]
الحجاب: العظم الذى فوق العين بما عليه من لحم. (المعجة الوجيز ص135)
অর্থঃ- হিজাবহচ্ছেঃ চোখের উপর অবস্থিত এমন হাড্ডি, যার উপরে গোস্ত দ্বারা পরিবেষ্টিত।”(আল্ মুজামুল্ ওয়াজীয ১৩৫ পৃষ্ঠা)
[৪৩]
(الحجاب) جسم حائل بين جسدين وقد استعمل فى المعانى. (المصباح المنير ص141)
অর্থঃ- “(হিজাব) হচ্ছে এমন পর্দা, যা দুই শরীরের মধ্যে অন্তরায় করে থাকে। আর হিজাবশব্দটি এই অর্থেই ব্যবহৃত হয়।” (আল্ মিছবাহুল্ মুনীর ১২১ পৃষ্ঠা)
[৪৪]
ھر وہ چیز جو دو چیزون کے درمیان حائل ھو. (مصباح اللغات ص 137)
অর্থঃ- পর্দা এমন জিনিস যা দুব্যক্তির মাঝখানে বাঁধা সৃষ্টি করে থাকে।” (মিছবাহুল্ লুগাত ১৩৭ পৃষ্ঠা)
[৪৫-৪৬]
الحجاب ....... كل ما احتجب به. (المنجد فى اللغة ص 118، لسان العرب ج2 ص777)
অর্থঃ- প্রত্যেক সেই জিনিষকে হিজাব বলে, যার মাধ্যমে পর্দা বা আড়াল হওয়া যায়।” (আল মুনজিদ ফিল্ লুগাহ্ ১১৮ পৃষ্ঠা, লিসানুল্ আরব ২য় জিঃ ৭৭৭ পৃষ্ঠা)
হাদীস শরীফের কিতাব থেকে হিজাব-এর লুগাতী বা আভিধানিক অর্থ-
[৪৭]
(من وراء حجاب) اى ستر. (ارشاد السنارى ج7 ص299)
অর্থঃ- “(তোমরা তাঁদের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাবেএখানে ম্নভ্রব্জব্দ অর্থ) পর্দা, আড়াল, ছতর। (ইরশাদুস্ সারী ৭ম জিঃ ২৯৯ পৃষ্ঠা)
[৪৮]
(الحجاب) اى الستر (ارشاد السارى ج7 ص302)
অর্থঃ- “(আল হিজাব) অর্থঃ ছতর, আবরণ, লজ্জাস্থান, পর্দা, আড়াল, শরীরের যে স্থান ঢেকে রাখার আদেশ শরীয়ত কর্তৃক প্রদত্ত হয়েছে।” (ইরশাদুস্ সারী ৭ম জিঃ ৩০২ পৃষ্ঠা)
[৪৯]
ان المراد بالحجاب التستر (ارشاد السارى ج7 ص302)
অর্থঃ- حجاب হিজাবুনদ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে; ছতর, পর্দা, লজ্জাস্থান ইত্যাদি। (ইরশাদুস্ সারী ৭ম জিঃ ৩০২ পৃষ্ঠা)
[৫০]
الستر وهو الحجاب (فتح الملهم للشبير احمد عثمانى ج2 ص60)
অর্থঃ- الستر আস্ সিতরুহচ্ছে হিজাব বা পর্দা। (ফতহুল্ মুলহিম লিশ্ শিব্বীর আহমদ উসমানী ২য় জিঃ ৬০ পৃষ্ঠা)
[৫১]
ان المراد بالحجاب حجاب النور. (تحفة الاحوذى ج7 ص267)
অর্থঃ- আল্ হিজাবদ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে নূরের পর্দা বা আবরণ।”(তুহফাতুল্ আহওয়াযী ৭ম জিঃ ২৬৭ পৃষ্ঠা)
[৫২]
قيل للستر حجاب (ذخيرة العقبى فى شرح المجتبى ج4 ص558)
অর্থঃ- ছতরকেই حجاب হিজাববা পর্দা, আবরণ ইত্যাদি বলা হয়।”(যখীরাতুল্ উক্ববা ফী শরহিল্ মুজতবা ৪র্থ জিঃ ৫৫৮ পৃষ্ঠা)
হাদীস শরীফের কিতাব থেকে হিজাব এর ইছতিলাহী বা পারিভার্ষিক অর্থ-
[৫৩-৫৮]
عن عائشة رضى الله عنها ان ازواج النبى صلى الله عليه وسلم كن يخرجن بالليل اذا تبرزن الى المناصع وهو صعيد افيح فكان عمر يقول للنبى صلى الله عليه وسلم احجب نسائك فلم يكن رسول الله صلى الله عليه وسلم يفعل فخرجت سودة بنت زمعة زوج النبى صلى الله عليه وسلم ليلة من الليالى عشاء وكانت امرأة طويلة فناداها عمر الا قد عرفناك ياسودة حرصا على ان ينزل الحجاب فانزل الله اية الحجاب. (بخارى شريف كتاب الوضوء باب خروج النساء الى البراز، فتح البارى، عمدة القارى، ارشاد السارى، شرح الكرمانى، تيسير البارى)
অর্থঃ- হযরত আয়িশা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্ণিত। হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর স্ত্রীগণ রাতের বেলায় হাজত পূরণের জন্যে খোলা মাঠে যেতেন। আর হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (প্রায়ই) নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতেন, “আপনার বিবিগণকে পর্দায় রাখা দরকার।কিন্তু হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা করেননি। একরাতে ইশার সময় নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর স্ত্রী হযরত সাওদা বিনতে যায়মা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা হাজত পূরণে বের হলেন। তিনি ছিলেন লম্বা মহিলা। হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাঁকে ডেকে বললেন, হে হযরত সাওদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা! আমি কিন্তু আপনাকে চিনে ফেলেছি।এটা এ আশায় বলেছিলেন, যাতে পর্দার হুকুম নাযিল হয়। অতপর আল্লাহ্ পাক পর্দার আয়াত শরীফ নাযিল করেন।”(বুখারী শরীফ- কিতাবুল্ উযূ বাবু খুরুজিন্ নিসা ইলাল্ বারায. ফতহুল বারী, উমদাতুল ক্বারী, ইরশাদুস্ সারী, শরহুল্ কিরমানী, তাইসীরুল্ বারী)
উক্ত হাদীস শরীফএর ব্যাখ্যায় ব্যাখ্যা গ্রন্থসমূহে হিজাবের ইছতিলাহী বা পারিভাষিক অর্থ সম্পর্কে যা উল্লেখ আছে তা নিম্নে তুলে ধরা হলো-
[৫৯]
قوله (احجب) اى امنعهن من الخروج من بيوتهن. (فتح البارى ج1 ص249)
অর্থঃ- হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর উক্তি (احجب আপনার পর্দায় রাখা দরকার’) অর্থাৎ তাঁদেরকে তাঁদের ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করা দরকার।”(ফতহুল্ বারী ১ম জিঃ ২৪৯ পৃষ্ঠা)
[৬০]
(احجب نسائك) اى امنعهم من الخروج من البيوت. (عمدة القارى ج2 ص283)
অর্থঃ- “(আপনার স্ত্রীগণকে পর্দায় রাখা দরকার) অর্থাৎ তাঁদেরকে ঘর থেকে বাইরে বের হতে নিষেধ করা দরকার।”(উমদাতুল্ কারী ২য় জিঃ ২৮৩ পৃষ্ঠা)
[৬১]
(يقول للنبى صلى الله عليه وسلم احجب نسائك) اى امنعهن من الخروج من البيوت. (ارشاد السارى ج1 ص237)
অর্থঃ- “(হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললেন, আপনার স্ত্রীগণকে পর্দায় রাখা দরকার) অর্থাৎ তাঁদেরকে ঘর থেকে বাইরে বের হতে নিষেধ করা দরকার।”(ইরশাদুস্ সারী ১ম জিঃ ২৩৭ পৃষ্ঠা)
উক্ত ইবারত গুলো থেকে স্পষ্টভাবেই বুঝা যায় যে, “মহিলাগণকে বাইরে বের না হয়ে ঘরের প্রকোষ্ঠে অবস্থান করাকেই حجاب হিজাববলা হয়।
[৬২-৬৭]
وقال عمروبن على حدثنا ابو عاصم قال ابن جريج اخبرنا قال اخبرنى عطاء اذ منع ابن هشام النساء الطواف مع الرجال قال كيف يمنعهن وقد طاف نساء النبى صلى الله عليه وسلم مع الرجال قلت ابعد الحجاب او قبل قال اى لعمرى لقد ادركته بعد الحجاب قلت كيف يخالطن الرجال قال لم يكن يخالطن كانت عائشة رضى الله عنها تطوف حجرة من الرجال لا تخالطهم فقالت امرأة انطلقى نستلم ياام المؤمنين قالت عنك وابت يخرجن متنكرات بالليل فيطفن مع الرجال ولكنهن كن اذا دخلن البيت قمن حتى يدخلن واخرج الرجال وكنت اتى عائشة انا وعبيد بن عمير وهى مجاورة فى جوف ثبير قلت وما حجابها قال هى فى قبل تركية لها غشاء وما بيننا وبينها غير ذلك ورايت عليها درعا موردا. (بخارى شريف كتاب الحج باب طواف النساء مع الرجال، فتح البارى، عمدة القارى، ارشاد السارى، شرح الكرمانى، تيسير البارى)
অর্থঃ- “(হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন) হযরত আমর ইবনে আলী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমাদের কাছে হাদীস বর্ণনা করেন, হযরত আবূ আছিম রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি বলেন, আমাদের কাছে খবর পৌঁছান হযরত ইবনু জুরাইজ রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি বলেন, আমার কাছে খবর দেন হযরত আত্বা রহমতুল্লাহি আলাইহি। (হযরত আত্বা রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন) যখন হযরত ইবনু হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি মহিলাদের পুরুষের সাথে তাওয়াফ করতে নিষেধ করেন, তখন হযরত আত্বা রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আপনি কি করে নিষেধ করছেন? অথচ হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সহধর্মীনীগণ পুরুষগণের সাথে তাওয়াফ করেছেন। আমি (ইবনু হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি) তাঁকে (হযরত আত্বা রহমতুল্লাহি আলাইহিকে) প্রশ্ন করলাম, তা কি পর্দার আয়াত নাযিল হওয়ার পরে, না পূর্বে? তিনি বললেন, হাঁ, আমার জীবনের কসম, আমি পর্দার আয়াত নাযিল বা অবতীর্ণ হওয়ার পরের কথাই বলছি। আমি জানতে চাইলাম, পুরুষগণ মহিলাগণের সাথে মিশে কিভাবে তাওয়াফ করতেন? (উত্তরে বললেন) বরং হযরত আয়িশা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা পুরুষগণের পাশ কাটিয়ে তাওয়াফ  করতেন? তাদের মাঝে মিশে যেতেন না। একদা জনৈকা মহিলা হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহাকে বললেন, চলুন, উম্মুল মুমিনীন তাওয়াফ করে আসি। তিনি জবাব দিলেন, “তোমার মন চাইলে তুমি যাওনিজে যেতে অস্বীকার করলেন। তাঁরা রাতের বেলা পর্দা করে বের হয়ে (সম্পূর্ণ না মিশে) পুরুষগণের পাশাপাশি থেকে তাওয়াফ করতেন। উম্মুল মুমিনীনগণ বাইতুল্লাহ শরীফের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে চাইলে সকল পুরুষ বের করে না দেয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতেন। হযরত আত্বা রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হযরত উবাইদ ইবনে উমাইর রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং আমি হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা-এর কাছে গেলাম। তিনি তখন ছবীরপর্বতে অবস্থান করছিলেন। (হযরত ইবনু জুরাইজ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন) আমি প্রশ্ন করলাম, তখন তিনি কি দিয়ে পর্দা করেছিলেন? হযরত আত্বা রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, তখন তিনি পর্দা ঝুলান তুর্কী তাঁবুতে ছিলেন, এছাড়া তাঁর ও আমাদের মাঝে অন্য কোন পর্দা ছিলোনা। (হঠাৎ দৃষ্টি পড়ায়) আমি তাঁর গায়ে গোলাপী রং-এর চাদর দেখতে পেলাম।”(বুখারী শরীফ কিতাবুল হজ্জ্ব বাবু তাওয়াফিন নিসা মার্য়া রিজাল, ফতহুল বারী, উমদাতুল ক্বারী, ইরশাদুস্ সারী, শরহুল্ কিরমানী, তাইসীরুল্ বারী)
উল্লিখিত হাদীস শরীফে বর্ণিত-
قلت وما حجابها قال هى فى قبل تركية لها غشاء وما بيننا وبينها غير ذلك.
অর্থাৎ “(হযরত ইবনু জুরাইজ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন) আমি প্রশ্ন করলাম, তখন তিনি কি দিয়ে পর্দা করেছিলেন? হযরত আত্বা রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, তখন তিনি পর্দা ঝুলান তুর্কী তাবুতে ছিলেন। এছাড়া তাঁর ও আমাদের মধ্যে অন্য কোন পর্দা ছিলনা।এ বাক্যাংশের ব্যাখ্যায় ব্যাখ্যাকারগণ বলেন,
[৬৮]
(وما حجابها؟) زاد الفاكهى (حينئذ). قوله (تركية) قال عبد الرزاق هى قبة صغير من لبود تضرب فى الارض. (فتح البارى ج3 ص481)
অর্থঃ- “(وما حجابها؟ তখন তার মধ্যে কি রকম পর্দা ছিল) ফাকিহী এখানে حينئذ তখনশব্দটি বৃদ্ধি করেছেন। হযরত আত্বা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর উক্তি (تركية তুর্কী তাবু) হযরত আব্দুর রায্যাক রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, তা এমন ছোট ধরণের তাবু যার নিম্নাংশ মাটির সাথে লেপ্টে থাকে।”(ফতহুল্ বারী ৩য় জিঃ ৪৮১ পৃষ্ঠা)
[৬৯]
قوله (وما حجبها؟) زاد الفاكهى حينئذ. قوله (هى قبة) اى عائشة فى قبة وهى خيمة فى الاصل والقبة التركية تعمل من لبود تضرب فى الارض. (عمدة القارى ج9 ص262)
অর্থঃ- হযরত ইবনু জুরাইজ রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর উক্তি (وما حجابها؟ তখন তার মধ্যে কিরকম পর্দা ছিল?) ‘ফাকিহী এখানে حينئذ তখনশব্দটি বৃদ্ধি করেছেন। হযরত আত্বা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর উক্তি (هى قبة) অর্থাৎ হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তাবুরভিতরে ছিলেন। আর তা হচ্ছে মূলতঃ একটি তুর্কী তাবু, যার নিম্নাংশ মাটির সাথে লেপ্টে ছিল।”(উমদাতুল ক্বারী ৯ জিঃ ২৬২ পৃষ্ঠা)
[৭০]
قال ابن جريج (قلت) لعطاء (وما حجابها) يومئذ (قال) عطاء (هى) اى عائشة (فى قبة تركية) اى خيمة صغيرة من لبود تضرب فى الارض (لها) اى للقبة (غشاء وما بيننا وبينها غير ذلك) اى كانت محجوبة عنا بهذه الخيمة. (ارشاد السارى ج3 ص173)
অর্থঃ- হযরত ইবনু জুরাইজ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, (আমি জিজ্ঞাসা করলাম) হযরত আত্বা রহমতুল্লাহি আলাইহিকে (তাঁর মধ্যে কি রকম পর্দা ছিল?) তখন। (বললেন) হযরত আত্বা রহমতুল্লাহি আলাইহি, (তিনি) অর্থাৎ হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা (তুর্কী তাবুর ভিতরে ছিলেন) অর্থাৎ এমন ছোট ধরণের তাবু যার নিম্নাংশ মাটির সাথে লেপ্টে ছিল। (لها) অর্থাৎ তার তাবু ছিল পর্দা স্বরূপ (এটা ছাড়া তাঁর ও আমাদের মধ্যে অন্য কোন পর্দা ছিল না) অর্থাৎ তিনি এই তাবুর মাধ্যমে আমাদের থেকে পর্দা-আঁড়াল অবস্থায় ছিলেন।”(ইরশাদুস্ সারী ৩য় জিঃ ১৭৩ পৃষ্ঠা)
[৭১]
واصل الحجاب الستر الحائل بين الرائى والمرئى والمراد به هنا منع الابصار. (تحفة الاحوذى ج7 ص268)
অর্থঃ- হিজাব’-এর মূল হচ্ছে দৃষ্টিকারী এবং দৃষ্টিনিপতিত ব্যক্তির মধ্যে অন্তরায়, পর্দা, আড়াল সৃষ্টি করা। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো চোখের দৃষ্টিকে বাঁধা, প্রতিবন্ধক করা।” (তুহফাতুল্ আহওয়াযী ৭ম জিঃ ২৬৮ পৃষ্ঠা)
[৭২-৭৪]
عن ام سلمة رضى الله عنها قالت كنت عند النبى صلى الله عليه وسلم وعنده ميمونة فاقبل ابن ام مكتوم وذلك بعد ان امرنا بالحجاب فقال احتجبا منه فقلنا يا رسول الله صلى الله عليه وسلم اليس اعمى لايبصرنا ولا يعرفنا فقال النبى صلى الله عليه وسلم افعميا وان انتما الستما تبصرانه. (ابو داود شريف كتاب اللباس باب فى قوله تعالى وقل للمؤمنات يغضضن من ابصارهن، بذل المجهود، عون المعبود)
অর্থঃ- হযরত উম্মু সালামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্ণিত।  তিনি বলেন, একদা আমি এবং হযরত মাইমুনা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট ছিলাম। তখন সেখানে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মু মাকতূম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আসেন। আর এটি ছিল পর্দার আয়াত নাযিলের পর। তখন তিনি বলেন, তোমরা দুজন তাঁর থেকে পর্দা কর। তখন আমরা বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তিনি কি অন্ধ নন? তিনি তো আমাদের দেখতে পাননা। তখন হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরাও কি অন্ধ? তোমরা দুজন কি তাঁকে দেখতে পাচ্ছ না?” (আবূ দাউদ শরীফ কিতাবুল লিবাস, বযলুল্ মাজহুদ, আউনুল মাবূদ)
অত্র হাদীস শরীফটিতে احتجبا منه এর ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসগণ বলেন,
[৭৫]
احتجبا منه اى ارخيا على وجوهكم وصدوركم الجلباب. (بذل المجهود ج6 ص60)
অর্থঃ- তোমরা তাঁর থেকে পর্দা কর। অর্থাৎ তোমরা তোমাদের চেহারা ও বক্ষের উপর চাদর বা ওড়না ঝুলিয়ে রাখ।”(বযলুল্ মাজহুদ ৬ষ্ঠ জিঃ ৬০ পৃষ্ঠা) অসমাপ্ত

0 Comments: