অনন্তকালব্যাপী পবিত্র সায়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল জারি এবং উনার কার্যক্রম।
যামানার যিনি সুমহান মুজাদ্দিদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম তিনি অনন্তকালব্যাপী সময়ের জন্য যে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ'ইয়্যাদ শরীফ মাহফিল জারী করলেন তা কি কেবল আক্ষরিক অর্থে মাহফিল পালন অনুষ্ঠান ? মোটেও তা নয় । পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ পালন অনুষ্ঠান অর্থ হচ্ছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার সঙ্গে নিবিড় নিসবত হাসিল করার এক অনুপম যোগাযোগ মাধ্যম। অথবা বলা যায় পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ পালন অনুষ্ঠান অর্থ হচ্ছে এক মুহূর্তের জন্যও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হূযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার পবিত্র স্মরণ থেকে আত্মবিস্মৃত না হবার এক নিয়ামত প্রাপ্ত পথ। পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ পালন অনুষ্ঠান অর্থ হচ্ছে অন্তরে, অনুভবে, চিন্তায়, চেতনায়, বক্ষে, মস্তিস্কে কেবল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক সল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার মুহব্বত মুবারক উনাকে ধারণ করা। সুবহানাল্লাহ।
পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ উনার মাঝে ইরশাদ মুবারক হয়েছে " মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হযরত ফিরিশ্তা আলাইহিমুস সালাম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ , হূযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার প্রতি ছলাত শরীফ তথা দরুদ শরীফ পাঠ করেন হে মুমিনগ, আপনারাও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার প্রতি পবিত্র ছলাত শরীফ তথা পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠ করুন এবং পবিত্র সালাম শরীফ পেশ করুন পেশ করার মত"।
এখান থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার অনুসরনে পবিত্র দরুদ শরীফ এবং পবিত্র সালাম শরীফ পেশ করে যাচ্ছেন সকল হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম, হযরত সাহাবায়ে কিরাম রদীয়াল্লাহু আমহুম, হযরত আউলিয়া কিরাম আলাইহিমুস সালাম উনারা। কিন্তু উনাদের মর্যাদা ও নৈকট্য অনুসারে এই দরুদ শরীফ পাঠ ও সালাম পেশের মাঝে ভিন্নতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু সাধারণ মানুষকে এই বিষয়ে অভ্যস্ত করানোর লক্ষ্যে যুগে যুগে আউলিয়া কিরাম আলাইহিমুস সালাম মানুষকে বিশেষ তালীম তালকিন দিয়েছেন উনাদের যার যার অবস্থান থেকে উনাদের যোগ্যতা অনুযায়ী। ১৫ শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ, হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম তিনি সাধারণ মানুষকে এই নিয়ামত হাছিলের লক্ষ্যে বিভিন্নভাবে তালীম দিয়েছেন । মানুষ যেন কোনভাবেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হূযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার স্মরণ থেকে বিচ্যুত না হন সে কারণে তিনি বিভিন্ন অভিনব পদ্ধতির প্রচলন ঘটিয়েছেন যার কিছু নীচে বর্ণনা করা হল।
১) সারা বছর পবিত্র সুন্নতি জামে মাসজিদে পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ মাহফিল চালু করেছেন। কিন্তু পবিত্র সাইয়্যদুশ শহুর উনার সম্মানার্থে এবং পবিত্র ১২ই শরীফ উনার সম্মানার্থে জারী করেছেন ৬৩ দিন বিশেষ মাহফিল।
২) পর্যায়ক্রমে সকল জেলার মানুষ যেন এই মুবারক মাহফিলে অংশগ্রহণ করতে পারেন সে কারণে জারী করেছেন মাহফিলে হাজির হবার বিশেষ তরতীব।
৩) পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ যারা এই মুবারক অনুষ্ঠানে সরাসরি অংশগ্রহণ করতে পারবেনা তাদের জন্য চালু করেছেন "ভয়েস আল হিকমাহ"। ঘরে বসেই উনারা এই মাহফিলে অংশগ্রহণ করতে পারেন সুবহানাল্লাহ।
৪) কেউ যদি প্রতিদিন ঘরে কিছু আলোচনা করে মিলাদ শরীফ পাঠ করে ঘরের খাবার তারারুক হিসেবে গ্রহন করেন এতেও তিনি পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ পালন করার নিয়ামত লাভ করবেন। সুবহানাল্লাহ।
৫) যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুস্তাহিদ, মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম তিনি নির্মাণ করেছেন "পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ ফটক"। রাস্তায় চলতে ফিরতে মানুষের স্মরণ হবে এই বিশেষ দিন মুবারকের অর্থাৎ স্মরণ হবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হূযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার। সুবহানাল্লাহ।
৬) পবিত্র ১২ই শরীফ উপলক্ষ্যে প্রকাশ করা হয় পোস্টার, ফেস্টুন, হ্যান্ডবিল, ব্যানার ইত্যাদি। দেশব্যাপী তা ছড়িয়ে দেয়া হয়।
৭) সম্মানিত সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ উপলক্ষে প্রকাশ করা হয় নানা দ্রব্য সামগ্রী যেখানে পবিত্র "সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ" "১২ই শরীফ"ইত্তাদি লেখা হয়ে থাকে ফলে তা ব্যবহার করার মধ্য দিয়ে মানুষ পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ পালন করার নিয়ামত হাছিল করেন। সুবহানাল্লাহ।
৮) পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ উপলক্ষ্যে প্রকাশ করা হয় বিশেষ রেসালা সমূহ।
মুলত এরকম বিষয়ের শেষ নেই আর এখানে যাও যৎকিঞ্চিত আলোচনা করা হল সেই প্রতিটি বিষয় বিস্তারিত আলোচনার দাবী রাখে যা আমরা উপযুক্ত স্থানে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ। তবে এক কথায় বলতে গেলে পবিত্র রাজারবাগ দরবার শরীফ থেকে যত রকমের কার্যক্রম গ্রহন করা হয় তা সকল কিছুই হয়ে থাকে পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ উনার সুমহান সম্মানার্থে। সুবহানাল্লাহ।
৯) পবিত্র ১২ই শরীফ সম্মানার্থে অর্থাৎ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আদাদ শরীফ সম্মানার্থে প্রতি মাসে পালিত হয় কোটি কোটি কন্ঠে মিলাদ শরীফ পাঠ উনার অনুষ্ঠান এবং শহর প্রদক্ষিণ। সুবহানাল্লাহ।
0 Comments:
Post a Comment