পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল অনন্তকালব্যাপী জারি এবং উনার কার্যক্রম
পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল জারি হয়েছে অনন্তকাল সময়ের জন্য; কিন্তু তারপরেও পবিত্র সাইয়িদুশ শুহূর পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস যেহেতু সমস্ত মাসের মাঝে শ্রেষ্ঠ, তাই এই মাসের জন্য চাই আলাদা কিছু কার্যক্রম। আর তাই এই অনন্তকালব্যাপী মাহফিল উনার শান মুবারককে প্রস্ফুটিত করার লক্ষ্যেই ১৫ শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ, হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি জারি করেন বিশেষ ব্যবস্থাপনায় আলাদাভাবে ৬৩ দিন বিশেষ মাহফিল। এই ৬৩ দিনের ব্যাখ্যা খুবই সহজ। যেহেতু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ৬৩ বছর বয়স মুবারক পর্যন্ত এই দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ নিয়ে অবস্থান মুবারক করেছিলেন, তাই সেই মুবারক সংখ্যার দিকে লক্ষ্য রেখেই বিশেষ ব্যবস্থাপনায় আয়োজন করা হচ্ছে ৬৩ দিনব্যাপী বিশেষ মাহফিল। এই ৬৩ দিনে বিশেষ মাহফিল শুরুর প্রথম ৩০ দিন বিশেষ প্রতিযোগিতার মাহফিল, পরের ৩০ দিন বিশেষ আলোচনা (বিশেষ ওয়াজ) মাহফিল এবং শেষ ৩ দিন বিশেষ সামা মাহফিল হিসেবে।
৩০ দিন বিশেষ প্রতিযোগিতা মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় এক অভিনব পদ্ধতিতে। মূলত, সব বয়সের অর্থাৎ শিশু-কিশোর-ছাত্র (কিশোর ও যবুক বয়সের যারা) যুবক-বয়স্ক সকলের জন্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করা হয়। আবার ভালো ফলাফলের ঘোষণা বয়স ভিত্তিকই দেয়া হয়ে থাকে। এখানে ভালো করা বা খারাপ করার বিষয়টি মুখ্য থাকে না, বরং অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ‘ফাল ইয়াফরাহু’ বা খুশি প্রকাশের বিষয়টিই থাকে উল্লেখযোগ্য। এছাড়া এই প্রতিযোগিতাকে উপলক্ষ করে মানুষ বিভিন্ন বিষয়, যেমন- তিলোয়াতে কালামে পাক, জানাযার নামায, খুতবা, মীলাদ শরীফ-ক্বিয়াম শরীফ, শাজরা শরীফ ইত্যাদি শিখে থাকেন এবং শিখে আমল করে নিয়ামত লাভ করার সৌভাগ্য অর্জন করেন। সুবহানাল্লাহ!
৩০ দিনব্যাপী বিশেষ আলোচনা (বিশেষ ওয়াজ) মাহফিলে থাকে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা। আলোচনার বিষয় নির্বাচন করাটা হচ্ছে যামানার সুমহান ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহি সালাম উনার গভীর হিকমতপূর্ণ এক নিদর্শন। মানুষের যে বিষয়গুলো জানা ঈমানী দায়িত্ব, যে বিষয়গুলো নিয়ে বাতিল ফিরকাগুলো বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে ঈমান হরণ করে, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার যে বিষয়গুলো নিয়ে কাফির-নাস্তিকরা মনগড়া লেখালেখি করে মানুষকে কাফির বানায়, সে রকম অনেক উল্লেখযোগ্য বিষয় নিয়ে সাজানো হয় ৩০ দিনব্যাপী বিশেষ আলোচনা মাহফিল। সম্মানিত শরীয়ত উনার বিভিন্ন শাখার আলোচনা থেকে শুরু করে থাকে সমসাময়িক বিষয় পর্যন্ত। এখানে একেকজন বক্তা বা আলোচক (ওয়ায়িজ) হাজার হাজার কিতাব ঘেটে, গবেষণা করে, ফিকির করে উনাদের আলোচনায় উপস্থাপন করেন। সুবহানাল্লাহ!
দীর্ঘ ৬০ দিনব্যাপী বিশেষ প্রতিযোগিতা ও আলোচনা পর্বের পর সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার অনুসরণে হিজরী ১৫ শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বিশেষভাবে সামা শরীফ মাহফিল আয়োজন করেন। উল্লেখ্য, গান-বাজনা শোনা, লেখা, পাঠ করা হারাম; কিন্তু হামদ শরীফ, না’ত শরীফ ও ক্বছীদা শরীফ শোনা খাছ সুন্নতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! মানুষের অন্তর থেকে গানের প্রতি মুহব্বত দূর করার লক্ষ্যে এবং ক্বাছীদা শরীফ শোনা-লেখা-পাঠ করা-আয়োজন করার আগ্রহ সৃষ্টি ইত্যাদিসহ আরো গভীর উদ্দেশ্য নিয়েই এই বিশেষ সামা শরীফ মাহফিল আয়োজন। সুবহানাল্লাহ!
0 Comments:
Post a Comment