কেউ বলে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি নূরের তৈরী আবার কেউ বলে তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাটির তৈরী।

Related imageকেউ বলে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি নূরের তৈরী আবার কেউ বলে তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাটির তৈরী।।
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি নূরের তৈরীকেউ বলে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি নূরের তৈরী আবার কেউ বলে তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাটির তৈরীঃ আসুন আল্লাহু পাক কোরআন উল কারিম উনার মধ্যে কি বলেছেন যেনে নেই – আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তায়া’লা ইরশাদ মোবারক করেনঃ নিশ্চয়ই আপনাদের নিকট আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে একটা নূর(রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবং স্পষ্ট কিতাব(আল-কোরআন) এসেছে।। (সূরা মায়িদা শরিফঃ আয়াত শরিফ ১৫)

আলোচ্য আয়াত শরিফ উনার বর্ণনায় নূর মোবারক দ্বারা নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উনাকে বুঝানো হয়েছে। নিম্নে আরো কয়েকটি প্রসিন্ধ তাফসীরের আলোকে দলিল উপস্থাপন করা হলঃ-

দলিল নং একঃ জগত বিখ্যাত মুফাসসিরে কোরআন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বিশ্ব বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ ইবনে আববাস উনার মধ্যে আছেঃ قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين يعني محمدا صلي الله عليه ؤسلم-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক উনার নিকট হতে আপনাদের কাছে নূর অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছেন। (তাফসীরে ইবনে আববাস পৃষ্ঠা ৭২)।

দলিল নং দুইঃ জগত বিখ্যাত ইমাম আবু জাফর মুহাম্মদ ইবনে জারীর আত্-তবারী (রা) উনার সকলের গ্রহণযোগ্য জগত বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ ইবনে জারীর এর মধ্যে বলেনঃ
قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين يعني باالنؤر محمدا صلي الله عليه ؤسلم الذي انار الله به الحق واظهربه الاسلام ومحق به الشرك-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক উনার নিকট হতে আপনাদের কাছে নূর অর্থাৎ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি এসেছেন, যে নূর দ্বারা আল্লাহ পাক সত্যকে উজ্জ্বল ও ইসলামকে প্রকাশ করেছেন এবং শিরিককে নিশ্চিহ্ন করেছেন। (তাফসীরে ইবনে জারীর ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা ৮৬, সূরা মায়িদা শরিফঃ আয়াত শরিফ ১৫)।

দলিল নং তিনঃ মুহীউস্সুন্নাহ আল্লামা আলাউদ্দীন আলী ইবনে মুহাম্মদ (রাঃ) (যিনি ‘খাজিন’ নামে পরিচিত) তাফসীরে খাজেনের মধ্যে বলেনঃ قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين يعنى باالنؤر محمدا صلي الله عليه وسلم انما سماه الله نور الانه يهداى بالنور في الظلام-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক উনার নিকট হতে আপনাদের কাছে নূর অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি এসেছেন। আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তায়া’লা উনার নামকরণ করেছেন নূর, কারণ উনার নূরেতে হেদায়ত লাভ করা যায়। যেভাবে অন্ধকারে নূর দ্বারা পথ পাওয়া যায়। (তাফসীরে খাজিন ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৪১৭)।

দলিল নং চারঃ ইমাম হাফেজ উদ্দীন আবুল বারাকাত আব্দুল্লাহ ইবনে আহমদ আন- নাসাফী (রা) এই আয়াত শরীফ ( قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين) প্রসঙ্গে বলেন-
والنور محمد عليه والسلام لانه يهتداي به كما سمي سراجا منيرا-
আর নূর হলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। কেননা উনার নূরেতে হেদায়ত লাভ করা যায়, যেমন উনাকে উজ্জ্বল প্রদীপ বলা হয়েছে। (তাফসীরে মাদারিক ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৪১৭)।

দলিল নং পাঁচঃ ইমামুল মুতাকাল্লেমীন আল্লামা ফখরুদ্দীন রাযী (রা) এই আয়াত শরীফ (قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين) প্রসঙ্গে বলেনঃ ان المراد بالنور محمد صلي الله عليه و سلم وبالكتاب القران-
অর্থঃ নিশ্চয়ই নূর দ্বারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং কিতাব দ্বারা আল কোরআন উল কারিম উনাকে বুঝানো হয়েছে। (তাফসীরে কবীর ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৯৫, সূরা মায়িদা আয়াত ১৫)।
আর যারা বলে যে ‘নূর ও কিতাবে মুবীন’ দ্বারা কুরআন মজীদকেই বুঝানো হয়েছে, ইমাম রাযী (রা) তাদের সম্পর্কে বলেনঃ هذا ضعيف لان العطف يوجب المغايرة بين المعطوف والمعطوف عليه-
এই অভিমত দুর্বল, কারণ আতফ (ব্যাকরণগত সংযোজিত) মা‘তুফ (সংযোজিত) ও মা‘তুফ আলাইহি (যা তার সাথে সংযোজন কারা হয়েছে ) এর মধ্যে ভিন্নতা প্রমাণ করে। (তাফসীরে কবীর ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৯৫)।

দলিল নং ছয়ঃ ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী (রা) বলেনঃ قد جاءكم من الله نور هو نور النبى صلي الله عليه وسلم-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক উনার নিকট হতে আপনাদের কাছে নূর এসেছে, তা হল নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মোবারক। (তাফসীরে জালালাইন শরীফ পৃষ্ঠা ৯৭)

দলিল নং সাতঃ আল্লামা মাহমূদ আলূসী বাগদাদী (রা) বলেনঃ قد جاءكم من الله نور هو نورعظيم هو نور الانوارالنبى المختار صلى الله عليه وسلم الى ذهب قتادة والزجاج-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক উনার নিকট হতে আপনাদের কাছে মহান নূর এসেছেন। আর তিনি হলেন নূরুল আনোয়ার নবী মোখতার সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এটাই হযরত কাতাদাহ ও যুজাজের অভিমত। (তাফসীরে রুহুল মাআনী ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা ৯৭)।

দলিল নং আঁটঃ আল্লামা ইসমাঈল হক্কী (রা) বলেনঃ قيل المراد باالاول هو الرسول صلى الله عليه وسلم وبالثانى القران-
অর্থঃ বলা হয়েছে যে, প্রথমটা অর্থাৎ নূর দ্বারা রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বুঝানো হয়েছে এবং দ্বিতীয়টা অর্থাৎ কিতাবে মুবীন দ্বারা কুরআন উল কারিম উনাকে বুঝানো হয়েছে। (তাফসীরে রুহুল বয়ান ২খন্ড, পৃষ্ঠা ২৬৯)
আর অগ্রসর হয়ে বলেনঃ سمى الرسول نورا لان اول شيئ اظهره الحق بنور قدرته من ظلمة العدم كان نور محمد صلي الله عليه و سلم كما قال اول ما خلق الله نورى-
অর্থ: আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তায়া‘লা উনার রসূল আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার নাম মোবারক রেখেছেন নূর। কেননা আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তায়া‘লা উনার কুদরতের নূর থেকে সর্বপ্রথম যা প্রকাশ করেছেন তা তো মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মোবারক। যেমন তিনি ফরমায়েছেন- আল্লাহ তায়া‘লা সর্বপ্রথম আমার নূর মোবারক কে সৃষ্টি করেছেন। (তাফসীরে রুহুল বয়ান ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৬৯)।

দলিল নং নয়ঃ ইমাম মুহীউস সুন্নাহ আবু মুহাম্মদ আল- হোসাইন আল-ফাররা আল-বাগাভী (রা) বলেনঃ قد جاءكم من الله نور يعنى باالنؤر محمدا صلي الله عليه وسلم-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক উনার নিকট হতে তোমাদের কাছে নূর অর্থাৎ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি এসেছেন। (তাফসীরে মাআলিমুত তান্যীল, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ২৩, তাফসীরে খাযিনের পাদ টীকা)

এ ছাড়া আরো অনেক তাফসীর গ্রন্থর মধ্যে আছে যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টি নুর নূরঃ-
সুরা মায়েদা পারা ৬, ১৫ নং আয়াতে নূরের ব্যাখ্যাঃ-
১। তাফসীরে মারেফুল কোরআন পৃষ্ঠা ৫৪। ২। তাফসীরে আবি সউদ ২য় খন্ড, পৃ- ২৫১, ৩। তাফসীরে রুহুল বয়ান ২য় খন্ড, পৃ- ৩৬৯, ৪। তাফসীরে রুহুল মায়ানী ১ম খন্ড, পৃ- ৩৬০, ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা ৯৭, ৫।তাফসীরে ইবনে জারীর ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃ- ৮৬, ৬। তাফসীরে কবীর ১১তম খন্ড, পৃ- ১৬৩, ৭। তাফসীরে কুরতুবী ৬ষ্ঠ খন্ড পৃ- ১১৮, ৯। তাফসীরে বায়জাভী ১ম খন্ড, পৃ- ৬৪, ১০। তাফসীরে মাজহারী ৩য় খন্ড, পৃ- ৬৮, ১১। তাফসীরে কবীর ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃ- ৪৬২, ১২। ছফওয়াতুত তাফাসীর ২য় খন্ড, পৃ- ১৪০, ১৩।তাফসীরে দুররে মানসুর ২য় খন্ড, পৃ- ১৮৭, তাফসীরে নূরুল কোরআন ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা ১৬১, তাফসীরে নঈমী ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা ২৯৫।

সূরা তাওবা পারা ১০, ৩২ নং আয়াতে নূরের ব্যাখ্যাঃ-
১। তাফসীরে দুররে মানসুর ৩ খন্ড, পৃ- ২০১,
২। তাফসীরে কবীর ১৬ম খন্ড, পৃ- ৩৪,
৩। তাফসীরে রুহুল মায়ানী ১৪ম খন্ড, পৃ- ৪৮।

সুরা নূর পারা ১৮, আয়াত নং ৩৫ঃ-
১। তাফসীরে ইবনে আববাস ৪র্থ খন্ড, পৃ- ২৪,
২। তাফসীরে রুহুল মায়ানী ১০ম খন্ড, পৃ- ১৬৬।
সুরা আহযাব আয়াত নং ৪৬:-
১। তাফসীরে আহকামুল কোরআন লিল ইবনুল আরাবী ৩য় খন্ড, পৃ- ১৫৪৬, ২। তাফসীরে মাওয়ারদী ৪র্থ খন্ড, পৃ- ৪১১।
হাদীস শরীফের আলোকেঃ
দলিল নং দশঃ
হযরত জাবের রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবেদন করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার মা-বাবা আপনার কদম মোবারকে উৎসর্গিত, আপনি দয়া করে বলুন, সকল বস্ত্তর পূর্বে সর্বপ্রথম আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তায়া’লা কোন বস্ত্তটি সৃষ্টি করেছিলেন? নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তায়’লা সমস্ত কিছুর পূর্বে আপনার নবীর নূর মোবারক উনার কুদরতের নূর মোবারক হতে সৃষ্টি করেছেন অতঃপর সেই নূর মোবারক আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তায়’লা উনার মর্জি মুতাবেক উনারই কুদরতি শক্তিতে পরিভ্রমণ করতে লাগলো। সেই সময় না ছিল বেহেশ্ত-দোযখ, আর ছিলনা আসমান-যমীন, চন্দ্র-সূর্য, মানব ও দানব। এক পর্যায়ে মহান আল্লাহ পাক যখন সৃষ্টিজগত পয়দা করার মনস্থ করেছিলেন, প্রথমেই ওই নূর মোবারককে চারভাগে বিভক্ত করে প্রথম অংশ দিয়ে কলম, দ্বিতীয় অংশ দিয়ে লওহ মাহফুজ, তৃতীয় অংশ দিয়ে আরশ, সৃষ্টি করে চুতুর্থাংশকে পুণরায় চারভাগে বিভক্ত করে প্রথমাংশ দিয়ে আরশবহনকারী ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের দ্বিতীয় অংশ দ্বারা কুরসী, তৃতীয় অংশ দ্বারা অন্যান্য ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের সৃষ্টি করে চুতুর্থাংশকে আবারও চারভাগে বিভক্ত করে প্রথম ভাগ দিয়ে সপ্ত আসমান, দ্বিতীয় ভাগ দিয়ে সপ্ত যমীন, তৃতীয় ভাগ দিয়ে বেহেশত-দোযখ এবং পরবর্তী ভাগ দিয়ে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য সকল বস্ত্ত সৃষ্টি করেন। (আল মাওয়াহিবুল লাদুনিয়া ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৭১)।

দলিল নং এগারোঃ হযরত কাব আহবার রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহ পাক রাববুল আলামিন যখন সৃষ্টি জগত সৃজন করার ইচ্ছা করলেন তখন মাটিকে সস্প্রসারিত করলেন, আকাশকে উঁচু করলেন এবং আপন নূও হতে এক মুষ্ঠি নূর গ্রহন করলেন। তারপর উক্ত নূরকে নির্দেশ দিলেন‘ তুমি মুহাম্ম্দ হয়ে যাও।’ অতএব সে নূও স্তম্ভের ন্যায় উপরের দিকে উঠতে থাকল এবং মহত্বের পর্দা পর্যন্ত পৌঁছে সিজদায় পরে বলল, ‘আলহামদুলিল্লাহ্’ তখন আল্লাহ্ পাক উনার পক্ষ থেকে ইরশাদ মোবারক হলো, এজন্যই তোমাকে সৃষ্টি করেছি আর তোমার নাম মুহাম্ম্দ রেখেছি।তোমার হতেই সৃষ্টি কাজ শুরু করব এবং তোমাতেই রিসালাতের ধারা সমাপ্ত করব । (সিরাতুল হালাভিয়া ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৫০)।

দলিল নং বারোঃ হযরত আয়েশা সিদ্দিকা আলাইহাস সালাম তিনি হতে বর্ণিত- তিনি বলেন, আমি রাত্রে বাতির আলোতে বসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাপড় মোবারক সেলাই করেছিলাম। এমন সময় প্রদীপটি (কোন কারণে) নিভে গেল এবং আমি সুচটি হারিয়ে ফেললাম। এরপরই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্ধকার ঘরে প্রবেশ করলেন। উনার চেহারা মোবারকের নূরের জ্যোতিতে আমার অন্ধকার ঘর আলোময় হয়ে গেলো এবং আমি (ঐ আলোতেই) আমার হারানো সুচটি খুজে পেলাম’’। (ইমাম ইবনে হায়তামী (রাঃ) এর আন-নে’মাতুল কোবরা আলার আলম গ্রন্থে ৪১ পৃষ্ঠা)।

দলিল নং তেরোঃ হযরত ইবনে আলী ওমর আল-আদানী স্বীয় মুসনাদে হযরত ইবনে আববাস রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেন, হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি করলেন, তখন উনাকে উনার সন্তানদের পরস্পরের মধ্যে মর্যাদার তারতম্যটুকুও দেখাতে লাগলেন। তিনি (আদম আলাইহিস সালাম) উনাদের মধ্যে শেষপ্রান্তে একটা উজ্জ্বল নূর মোবারক দেখাতে পেলেন। তখন তিনি বললেন, ‘হে রব! ইনি কে? (যাকে সবার মধ্যে প্রজ্জ্বলিত নূর হিসাবে দেখতে পাচ্ছি?) উত্তরে মহান রববুল আলামীন ইরশাদ করলেন,‘‘ ইনি হলেন আপনার পুত্র-সন্তান হযরত আহমদ মুজ্তবা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি প্রথম, তিনি শেষ, তিনি হবেন আমার দরবারে প্রথম সুপারিশকারী (ক্বিয়ামতের দিনে)। (আল-খাসাইসুল কুবরা ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৯)

দলিল নং চৌদ্দঃ ইমাম হাফেজ আবুল ফযল ক্বাযী আয়ায (রা) বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তায়া‘লা কোরআন উল করীমে উনার নাম রেখেছেন নূর ও সিরাজুম্ মুনীর। যেমন তিনি ফরমায়েছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক উনার নিকট হতে তোমাদের কাছে নূর ও স্পষ্ট কিতাব এসেছে। আরো ফরমাইয়াছেন, আমি তো আপনাকে পাঠিয়েছি হাজের ও নাজেররূপে, আল্লাহর অনুমক্রিমে উনার দিকে আহবানকারীরূপে এবং উজ্জ্বল প্রদীপ (সিরাজুম মুনীর) রূপে। নিশ্চয়ই উনার ছায়া ছিল না. না সূর্য়ালোকে না চন্দ্রালোকে কারণ তিনি ছিলেন নূর। তাঁর শরীল ও পোশাক মোবারকে মাছি বসত না। (শিফা শরীফ ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ২৪২)।

দলিল নং পনেরোঃ হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদা জিবরাঈল আলায়হিস সালাম উনাকে জিজ্ঞেসা করলেন, ওহে জিবরাঈল আলায়হিস সালাম! আপনার বয়স কত? উত্তরে জিবরাঈল আলায়হিস সালাম বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমি তো সঠিক জানি না। তবে এতটুকু বলতে পারি (সৃষ্টি জগত সৃষ্টির পূর্বে) আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তায়‘লা উনার নূরানী আযমতের পর্দা সমূহের চতুর্খ পর্দায় একটি নূরানী তারকা সত্তর হাজার বছর পরপর উদিত হত। আমি আমার জীবনে সেই নূরানী তারকা বাহাত্তর হাজার বার উদিত হতে দেখেছি। অতঃপর নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লাম ইরশাদ করলেন মহান রাববুল আলামী উনার ইজ্জতের কসম করে বলছি, সেই অত্যুজ্জ্বল নূরানী তারকা আমিই ছিলাম। (সীরাতে হালাভীয়া পৃষ্ঠা ৪৯, তাফসীরে রুহুল বয়ান পৃষ্ঠা ৫৪৩)।

দলিল নং ষোলঃ সূর্য চন্দ্রের আলোতে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার দেহ মোবারকের ছায়া পড়তোনা। কেননা, তিনি ছিলেন আপদমস্তক নূর’’। (যুরকানী শরীফ ৪র্থ খন্ড, পৃষ্ঠা ২২০)।

এ ছাড়া আরো অনেক হাদীস শরীফ গ্রন্থের মধ্যে আছে যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর নূর তা নিম্নরূপঃ-
১। মিশকাত শরীফ পৃষ্ঠা ৫১৩, ২৪ এর ১০নং হাশিয়া, ৫১১ এর ৬নং হাশিয়া, তিরমিজি শরীফ ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৭, মাওয়াহিবে লাদুনিয়া পৃষ্ঠা ৪৫, শরহে সুন্নাহ ১০ম খন্ড, পৃষ্ঠা ২০৭, মিরকাত ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ১৪৬,১৬৬,১৯৪। তিরমিজি শরীফ ২য় খন্ড, প- ৩৭, মাজমুওয়ায়ে ফাতাওয়ার ২য় খন্ড, পৃ- ২৮৬, ১৮।নশরুততীব পৃ- ৫, কৃতঃ আশরাফ আলী থানবী, ১৯। এমদাদুছ ছুলূক পৃষ্ঠা কৃতঃ রশিদ আহমেদ গাংগুহী ।২০। শুকরে নিয়ামত কৃতঃ কাসেম নানুতুবী, গাওহারে সিরাজী পৃষ্ঠা ৬৯, কৃতঃ সিরাজুল ইসলাম।



এখন প্রমান হয়ে গলো আল্লাহু পাক নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নূর দ্বারা তৈরী করেছেন। এখন যারা বলে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মাঠি মানুষ বলে তারা জাহান্নামী যাহিল মূর্খ উতবা, সায়বা, অলিদ, আবু জেহেল, আবু লাহাব এর মতো খিঞ্জিরদের আওলাদ বেতিত কিছুই নয়।

0 Comments: