আদ্ দুরারুল মুখতারাহ্ (ফী নিসবাতি সুলত্বানিন নাছীর-২য় খণ্ড) উম্মু সুলত্বানিন নাছীর আলাইহিস সালাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত দাদী হুযুর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল নিসবত মুবারক প্রকাশ -পর্ব-৫

উম্মু সুলত্বানিন নাছীর আলাইহিস সালাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত দাদী হুযুর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল নিসবত মুবারক প্রকাশ -পর্ব-৫

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ১৪৪৩ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ১৪ই মুহররমুল হারাম শরীফ লাইলাতুছ ছুলাছা শরীফ (মঙ্গলবার রাত) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক-এ ইরশাদ মুবারক করেন, “কালকে একটা ঘটনা মুবারক ঘটেছেন। বুঝতে পারলে? বললে ঈমান থাকবে তোমাদের? বলো দেখি। হ্যাঁ? ঈমান থাকবে? 

(আরজী: অবশ্যই থাকবে।)

আমি দেখতেছি এটা ১২ তারীখে অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই মুহররমুল হারাম শরীফ-এ। একটা দোতালা বাড়ী। আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মা আলাইহাস সালাম যিনি উনি আছেন ওখানে। উনি কি একটা কাজ করতেছেন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে। আমি গেলাম। উনার বাম পাশে একটা বাচ্চা মেয়ে। মেয়েটিকে আমি দেখিনি। আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মা আলাইহাস সালাম উনাকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘কে এইটা?’ উনি বললেন, ‘খাদিমা।’ আচ্ছা; ঠিক আছে। উনার ডান দিকে ফকীহুল উম্মত হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাস‘ঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনি। উনার বয়স সাত-আট বছর। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মা আলাইহাস সালাম উনি আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন যে, ‘উনি হচ্ছেন ফক্বীহুল উম্মত হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাস‘ঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু।’ আমি খুব খুশি হলাম। ভালো। আমি বললাম, ‘ভালো হয়েছে।’ আমি ফক্বীহুল উম্মত হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে বললাম, ‘আপনি তো আপনার হাত মুবারক দ্বারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্পর্শ করেছেন, তাই আপনার হাত মুবারক-এ বুছা দেয়া দরকার। আপনার হাতটা দেখি।’ উনি বললেন, ‘না।’ হাত মুবারক দিলেন না বুছা দিতে। তারপর আমি বললাম, ‘আপনি তো ইমামুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ শিখেছেন। তাহলে এখান থেকে আমাকে কিছু জানান। আমি বুঝতে না বুঝতেই উনি এসে আমার ক্বদম বুছি মুবারক করলেন। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!) উনার কাছে একটা কি জিনিস ছিলো। উনি ঐটা রেখে এসে এই কাজ করেছেন। আমি বাধা দিয়েছিলাম। উনি বললেন, ‘না; আমার করতে হবে।’ উনি জোর করেই করলেন। পরে বসলাম। আলাপ করতেছিলাম। আমি বললাম, ‘আপনি তো ইমামুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার কাছ থেকে পুরো তফসীর পড়েছেন। আমাকে কিছু তফসীর বলেন।’ উনি বললেন, ‘আচ্ছা; বলবো।’ এমন সময় দেখি আবার হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনি আসছেন। উনার বয়স ৯-১০ হবে। উনি একটু দূরে। একটা কল আছে ওখানে হাত পা মুবারক ধুইতেছেন। এই অবস্থাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলো। ফক্বীহুল উম্মত হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাস‘ঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনি হালকা-পাতলাই ছিলেন, হালকা-পাতলা, ৭-৮ বছর বয়স। বললাম- ‘আপনি শিখেছেন ওখান থেকে।’ উনি বললেন- ‘হ্যাঁ; শিখেছি তো।’ আমাদেরকে বলেন কিছু। আমি বললাম- ‘আমরা তো মহাসমস্যায় আছি। কোন সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ কখন নাযিল হয়েছেন, কি নাযিল হয়েছে, কোনো কিতাবে পাওয়া যায় না। তাফসীরটা কি বলেন।’ উনি বললেন- ‘হ্যাঁ; বলবো।’ পরে আর বলার সময় হয়নি। তখন ঘুম ভেঙ্গে গেলো। উনি নিজেই বলেছেন যে, উনি ইমামুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার কাছে পুরা তফসীর পড়েছেন। বলেছিলাম- ‘আপনার হাত মুবারকটা একটু দেন, আমি বুছা দেই। যেহেতু এই হাত মুবারক দিয়ে আপনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্পর্শ মুবারক করেছেন।’ বুছা আর দেওয়া হয়নি পরে। এখন নিসবত-কুরবত ছাড়া তো হয় না। হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনি এবং হযরত ফক্বীহুল উম্মত রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনি অর্থাৎ উনারা দুইজন। আর ঐদিকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনি। উনারা এই তিনজন সরাসরি বলেছেন, ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ কোথায়, কখন, কি নাযিল হয়েছেন, সব আমরা জানি।’ উনাদের তিনজনের থেকে এই বক্তব্য মুবারক আছে। অন্যান্যদেরও আছে। উনারা ৩ জন সরাসরি বলেছেন। 

(আরজী: দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার দুনিয়াবী দৃষ্টিতে বয়স মুবারক তো অনেক ছিলেন। কেমন দেখেছেন?) 

জবাব মুবারক: স্বাভাবিকই দেখেছি। স্বাভাবিক মানে পঞ্চাশ-ষাট বছর এই রকম।

(আরজী: দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনি পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন?)

জবাব মুবারক: হ্যাঁ; পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। আমি গেলাম, দেখলাম।

বললাম, ‘কে?’ উনি বললেন যে, ‘উনি ফক্বীহুল উম্মত হযরত আব্দুল্লাহ বিন  মাস‘ঊদ রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু।’ এইভাবে বলেছেন। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!) আমি দেখলাম, খুশি হলাম। উনিও খুশি হলেন। খুব ভালো। উনার বয়স ৭-৮ বছর হবে।

(আরজী: মেয়েটা তো দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার খেদমত করতে এসেছেন। উনি কে?)

জবাব মুবারক: উনি দেখা করতে এসেছেন। ঐ যে বাচ্চা মেয়াটাকে আমি দেখিনি। মহাসম্মানিত আম্মা আলাইহাস সালাম উনি বলেছেন, ‘খাদেমা।’

বাড়িটা অনেক বড়। বারান্দাটাও বেশ বড়, খোলামেলা মোটামুটি। সামনে হাত-মুখ ধোওয়ার জন্য জায়গা আছে। মানুষের বাড়ি-ঘরে যেরকম থাকে না?

বেসিন, কল থাকে যেরকম। একটা খোলা বারান্দা। ওখানে কোনো লোকজন নেই। উনি সেখানে দাঁড়ানো। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মা আলাইহাস সালাম উনি পরিচয় করিয়ে দিলেন, উনি ফক্বীহুল উম্মত হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাস‘ঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু। দেখলাম, উনি আমার দিকে তাকালেন। উনি খুশি হলেন। আমি খুশি হলাম। সব ঠিক আছে। খুব ভলো হয়েছে। উনার কাছে একটা কি জিনিস ছিলো। উনি ঐটা রেখে এসে এই কাজ করেছেন। আমি বাধা দিয়েছিলাম। পরে উনাকে নিয়ে এক জায়গায় বসলাম। বসে আলাপ করতেছিলাম। এর মধ্যে দেখি সামনে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনি আসছেন। ওখানে সামনে গিয়ে একটা কল আছে। ওখানে উনি হাত-পা ধুইতেছেন। এরপর ঘুম ভেঙ্গে গেছে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার বয়স ৯-১০ বছর। মূলত আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন ক্বায়িম মাক্বামে উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের মালিক হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! তাই উনার সম্পর্কে জানা এবং সেই অনুযায়ী উনার তা’যীম-তাকরীম মুবারক, ছানা-ছিফত মুবারক করা এবং গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু সুলত্বানিন নাছীর আলাইহিস সালাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার প্রতি হাক্বীক্বী বিশুদ্ধ আক্বীদাহ্ ও হুসনে যন মুবারক পোষণ করার, উনার যথাযথ তা’যীম-তাকরীম মুবারক করার, ছানা-ছিফত মুবারক করার এবং গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!


0 Comments: